তানিম আহমেদ, ঢাকা
তৃণমূলের রাজনৈতিক অবস্থানের পাশাপাশি শিক্ষাগত যোগ্যতা, দলীয় আনুগত্য, জনসম্পৃক্ততা, অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত রয়েছেন কি না, সে বিষয়গুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই-বাছাই করে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের প্রার্থী চূড়ান্ত করা হচ্ছে বলে আওয়ামী লীগ জানিয়েছে। কিন্তু প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পরে কিছু জায়গায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। তাঁরা অনেক জায়গায় দলীয় মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগও জমা দিয়েছেন।
আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, তৃণমূল থেকে পাঠানো তালিকাগুলো যাচাই-বাছাই করেই প্রার্থী চূড়ান্ত করা হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে তৃণমূল থেকেও বিতর্কিতদের নাম পাঠানো হচ্ছে। কিছু জায়গায় দেখা গেছে তথ্য গোপন করে নাম পাঠানো হয়েছে। সেই অভিযোগগুলো বিচার-বিশ্লেষণও করা হচ্ছে। প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা প্রায় এক হাজার মনোনয়ন দিয়েছি। এর মধ্যে ৩০টা মতো অভিযোগ এসেছে। সেগুলো আমরা যাচাই-বাছাই করে দেখছি। যেগুলোর বেশির ভাগেরই ভিত্তি নেই। কেউ পায়নি বলে এমন অভিযোগ করেছেন। দু-এক জায়গায় ভুল হয়েছে, সেগুলো আমরা বিবেচনা করছি।’
আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার কারণে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী বেড়েছে অনেক।
এবারও প্রায় সাড়ে চার হাজার মনোনয়নপ্রত্যাশী আছেন। এর মধ্যে পাবেন ৮৪৮ জন। এখন যিনি মনোনয়ন পাননি, তিনি আবেগতাড়িত হয়ে অনেক অভিযোগ করেন।
জেলার নেতারা বলছেন, ইউনিয়ন থেকে পাঠানো নামই তাঁরা কেন্দ্রে পাঠান। নাম পাঠানোর আগে কেন্দ্রীয় নেতারাও অনেকের নাম সুপারিশ করেন। আর স্থানীয় সাংসদের পছন্দ তো আছেই। এত সুপারিশ রাখতে গিয়ে অনেক বিতর্কিত নাম তালিকায় ঢুকে পড়ে।
সাবেক বিএনপি নেতার হাতে নৌকা
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানা বিএনপির বহিষ্কৃত সহসভাপতি মনিরুল ইসলাম সেন্টু এবার কুতুবপুর ইউপিতে নৌকার টিকিট পেয়েছেন। সেন্টুর বিরুদ্ধে নাশকতার কয়েকটি মামলাও রয়েছে। বিএনপি থেকে বহিষ্কার হওয়ার পরে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম সাইফুল্লাহ বাদল বলেন, ‘কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ থেকে শুধু সেন্টুর নাম পাঠিয়েছে। আমরা সেই নাম জেলায় পাঠিয়েছি।’
নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ইউপি ও উপজেলা থেকে শুধু সেন্টুর নামই পাঠানো হয়েছিল। আমরা তখন জিজ্ঞেস করেছিলাম সে কখন দলে যোগ দিয়েছে। কিন্তু স্পষ্ট করে উত্তর দিতে পারে নাই। তাই আমি চিঠিতে সই করিনি।’
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার বাঁশবাড়ী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সদস্যসচিব আশরাফুল হক। তাঁর বাবা প্রয়াত সিরাজুল হকও বাঁশগাড়ি ইউপির চেয়ারম্যান ছিলেন। একই সঙ্গে তিনি রায়পুরা উপজেলা বিএনপি সহসভাপতিও ছিলেন।
রায়পুরা উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইমান উদ্দিন ভূঁইয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের অনিচ্ছা সত্ত্বেও সাংসদ রাজিউদ্দিন রাজু ভাইয়ের ইচ্ছায় আশরাফুলের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করি এবং তা কেন্দ্রে পাঠাই। তবে আমি তাঁর নামের পাশে অনুপ্রবেশকারী কথাটা লিখে দিয়েছিলাম। এর পরও দলের মনোনয়ন বোর্ড তাঁকে কীভাবে দলের পক্ষে বাছাই করেছে, তা আমার বোধগম্য নয়।’
পটুয়াখালীর মরিচবুনিয়া ইউপিতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন আসাদুল ইসলাম আসাদ। আসাদের পরিবারের সদস্যরা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। ৯ অক্টোবর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আলমগীর হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক ভিপি আব্দুল মান্নান স্বাক্ষরিত একটি চিঠি ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, মনোনয়নপ্রত্যাশী আসাদুল ইসলাম আসাদের বড় ভাই রফিকুল ইসলাম মুন্সি মরিচবুনিয়া ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক। এ ছাড়া আসাদের আপন মামাশ্বশুর মরিচবুনিয়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক। আসাদের পরিবার ও আত্মীয়স্বজন সবাই বিএনপির মতাদর্শে বিশ্বাসী।
এ বিষয়ে মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য ‘আবদুর রহমান বলেন, ঢালাও অভিযোগের কথা চিন্তা করে তো আর কাজ ফেলে রাখা যাবে না। অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেব।’
বিদ্রোহী প্রার্থীর হাতে নৌকা
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে, অতীতে যাঁরা নৌকার বিরুদ্ধে নির্বাচন করেছেন, তিনি জনপ্রিয় হলেও তাঁকে আর মনোনয়ন দেওয়া হবে না। প্রথম ধাপের ইউপি নির্বাচনের প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বিষয়টি বিবেচনাও করা হয়েছিল। বিদ্রোহী প্রার্থীর মনোনয়নও বাতিল করা হয়েছিল সে সময়। কিন্তু এবার পটুয়াখালীর দুটি ইউপিতে বিদ্রোহী প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। যদিও আওয়ামী লীগ থেকে বলা হচ্ছে, তাঁরা ডামি প্রার্থী ছিলেন ওই নির্বাচনে।
২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নওমালা ইউপিতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে পরাজিত হয়েছিলেন কামাল হোসেন বিশ্বাস। তিনি ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকার বিপক্ষে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন। সেই নির্বাচনে তিনি মাত্র ১৩৫ ভোট পান।
পটুয়াখালীর দশমিনা ইউনিয়নে গতবারের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে বিজয়ী হওয়া ইকবাল মাহমুদ লিটন এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। মনোনয়নের তালিকায় তাঁর নাম পাঠানোর বিষয়ে জেলা সভাপতি আলমগীর হোসেন বলেন, ‘আওয়ামী লীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতা আমাকে মনোনয়নপ্রত্যাশীর তালিকায় তাঁর (লিটন) নাম পাঠানোর জন্য বলেছেন। আমি সেভাবে পাঠিয়ে দিয়েছি। এখন মাননীয় নেত্রী তাঁকে মনোনয়ন দিয়েছেন। সেখানে আমার তো কিছু করার নাই।’
তবে আওয়ামী লীগের কাজী জাফর উল্লাহ বলেন, ‘বিদ্রোহী প্রার্থীকে কোনোমতেই মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। সে একেবারেই বাদ। পটুয়াখালীতে যিনি মনোনয়ন পেয়েছিলেন তিনি ছিলেন আমাদের ডামি প্রার্থী। সেটা আমাদের জানিয়ে রাখা হয়েছিল।’
চাঁদাবাজি, হত্যা ও মাদক মামলার আসামি
বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলা বিহার ইউপিতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মহিদুল ইসলাম। তাঁর বিরুদ্ধে যুবলীগ কর্মী ওমর ফারুক, আওয়ামী লীগের কর্মী শিমুল হত্যাসহ তিনটি মামলা রয়েছে। একটি চাঁদাবাজির মামলাও রয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় তিনি যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি।
একই উপজেলার বুড়িগঞ্জ ইউপিতে মনোনয়ন পাওয়া রেজাউল করিম চঞ্চলকে র্যাব ফেনসিডিল পাচারের দায়ে গ্রেপ্তার করে।
প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তা আত্মসাতে অভিযুক্ত
বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার ময়দানহাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম রুপম। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তার অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় তাঁকে চেয়ারম্যান পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়। পরে তিনি উচ্চ আদালতে আপিল করলে সেই আদেশ স্থগিত হয়।
রায়নগর ইউনিয়নে মনোনয়ন পাওয়া শাহজাহান কাজী স্থানীয় বাঘমারা মাদ্রাসা পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সহসভাপতি। সেই মাদ্রাসার গাছ চুরি করে কাটার অপরাধে জেল খাটেন তিনি।
শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজার রহমান বলেন, মনোনীত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ মিথ্যা নয়। দলের তৃণমূল থেকে তিনজন করে প্রার্থীর যে তালিকা পাঠানো হয়েছে, তা কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছিল। এবং সেখান থেকেই এসব প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
(প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন নারায়ণগঞ্জ, শিবগঞ্জ (বগুড়া) ও রায়পুরা (নরসিংদী) প্রতিনিধি।)
তৃণমূলের রাজনৈতিক অবস্থানের পাশাপাশি শিক্ষাগত যোগ্যতা, দলীয় আনুগত্য, জনসম্পৃক্ততা, অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত রয়েছেন কি না, সে বিষয়গুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই-বাছাই করে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের প্রার্থী চূড়ান্ত করা হচ্ছে বলে আওয়ামী লীগ জানিয়েছে। কিন্তু প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পরে কিছু জায়গায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। তাঁরা অনেক জায়গায় দলীয় মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগও জমা দিয়েছেন।
আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, তৃণমূল থেকে পাঠানো তালিকাগুলো যাচাই-বাছাই করেই প্রার্থী চূড়ান্ত করা হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে তৃণমূল থেকেও বিতর্কিতদের নাম পাঠানো হচ্ছে। কিছু জায়গায় দেখা গেছে তথ্য গোপন করে নাম পাঠানো হয়েছে। সেই অভিযোগগুলো বিচার-বিশ্লেষণও করা হচ্ছে। প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা প্রায় এক হাজার মনোনয়ন দিয়েছি। এর মধ্যে ৩০টা মতো অভিযোগ এসেছে। সেগুলো আমরা যাচাই-বাছাই করে দেখছি। যেগুলোর বেশির ভাগেরই ভিত্তি নেই। কেউ পায়নি বলে এমন অভিযোগ করেছেন। দু-এক জায়গায় ভুল হয়েছে, সেগুলো আমরা বিবেচনা করছি।’
আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার কারণে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী বেড়েছে অনেক।
এবারও প্রায় সাড়ে চার হাজার মনোনয়নপ্রত্যাশী আছেন। এর মধ্যে পাবেন ৮৪৮ জন। এখন যিনি মনোনয়ন পাননি, তিনি আবেগতাড়িত হয়ে অনেক অভিযোগ করেন।
জেলার নেতারা বলছেন, ইউনিয়ন থেকে পাঠানো নামই তাঁরা কেন্দ্রে পাঠান। নাম পাঠানোর আগে কেন্দ্রীয় নেতারাও অনেকের নাম সুপারিশ করেন। আর স্থানীয় সাংসদের পছন্দ তো আছেই। এত সুপারিশ রাখতে গিয়ে অনেক বিতর্কিত নাম তালিকায় ঢুকে পড়ে।
সাবেক বিএনপি নেতার হাতে নৌকা
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানা বিএনপির বহিষ্কৃত সহসভাপতি মনিরুল ইসলাম সেন্টু এবার কুতুবপুর ইউপিতে নৌকার টিকিট পেয়েছেন। সেন্টুর বিরুদ্ধে নাশকতার কয়েকটি মামলাও রয়েছে। বিএনপি থেকে বহিষ্কার হওয়ার পরে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম সাইফুল্লাহ বাদল বলেন, ‘কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ থেকে শুধু সেন্টুর নাম পাঠিয়েছে। আমরা সেই নাম জেলায় পাঠিয়েছি।’
নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ইউপি ও উপজেলা থেকে শুধু সেন্টুর নামই পাঠানো হয়েছিল। আমরা তখন জিজ্ঞেস করেছিলাম সে কখন দলে যোগ দিয়েছে। কিন্তু স্পষ্ট করে উত্তর দিতে পারে নাই। তাই আমি চিঠিতে সই করিনি।’
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার বাঁশবাড়ী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সদস্যসচিব আশরাফুল হক। তাঁর বাবা প্রয়াত সিরাজুল হকও বাঁশগাড়ি ইউপির চেয়ারম্যান ছিলেন। একই সঙ্গে তিনি রায়পুরা উপজেলা বিএনপি সহসভাপতিও ছিলেন।
রায়পুরা উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইমান উদ্দিন ভূঁইয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের অনিচ্ছা সত্ত্বেও সাংসদ রাজিউদ্দিন রাজু ভাইয়ের ইচ্ছায় আশরাফুলের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করি এবং তা কেন্দ্রে পাঠাই। তবে আমি তাঁর নামের পাশে অনুপ্রবেশকারী কথাটা লিখে দিয়েছিলাম। এর পরও দলের মনোনয়ন বোর্ড তাঁকে কীভাবে দলের পক্ষে বাছাই করেছে, তা আমার বোধগম্য নয়।’
পটুয়াখালীর মরিচবুনিয়া ইউপিতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন আসাদুল ইসলাম আসাদ। আসাদের পরিবারের সদস্যরা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। ৯ অক্টোবর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আলমগীর হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক ভিপি আব্দুল মান্নান স্বাক্ষরিত একটি চিঠি ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, মনোনয়নপ্রত্যাশী আসাদুল ইসলাম আসাদের বড় ভাই রফিকুল ইসলাম মুন্সি মরিচবুনিয়া ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক। এ ছাড়া আসাদের আপন মামাশ্বশুর মরিচবুনিয়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক। আসাদের পরিবার ও আত্মীয়স্বজন সবাই বিএনপির মতাদর্শে বিশ্বাসী।
এ বিষয়ে মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য ‘আবদুর রহমান বলেন, ঢালাও অভিযোগের কথা চিন্তা করে তো আর কাজ ফেলে রাখা যাবে না। অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেব।’
বিদ্রোহী প্রার্থীর হাতে নৌকা
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে, অতীতে যাঁরা নৌকার বিরুদ্ধে নির্বাচন করেছেন, তিনি জনপ্রিয় হলেও তাঁকে আর মনোনয়ন দেওয়া হবে না। প্রথম ধাপের ইউপি নির্বাচনের প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বিষয়টি বিবেচনাও করা হয়েছিল। বিদ্রোহী প্রার্থীর মনোনয়নও বাতিল করা হয়েছিল সে সময়। কিন্তু এবার পটুয়াখালীর দুটি ইউপিতে বিদ্রোহী প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। যদিও আওয়ামী লীগ থেকে বলা হচ্ছে, তাঁরা ডামি প্রার্থী ছিলেন ওই নির্বাচনে।
২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নওমালা ইউপিতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে পরাজিত হয়েছিলেন কামাল হোসেন বিশ্বাস। তিনি ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকার বিপক্ষে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন। সেই নির্বাচনে তিনি মাত্র ১৩৫ ভোট পান।
পটুয়াখালীর দশমিনা ইউনিয়নে গতবারের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে বিজয়ী হওয়া ইকবাল মাহমুদ লিটন এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। মনোনয়নের তালিকায় তাঁর নাম পাঠানোর বিষয়ে জেলা সভাপতি আলমগীর হোসেন বলেন, ‘আওয়ামী লীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতা আমাকে মনোনয়নপ্রত্যাশীর তালিকায় তাঁর (লিটন) নাম পাঠানোর জন্য বলেছেন। আমি সেভাবে পাঠিয়ে দিয়েছি। এখন মাননীয় নেত্রী তাঁকে মনোনয়ন দিয়েছেন। সেখানে আমার তো কিছু করার নাই।’
তবে আওয়ামী লীগের কাজী জাফর উল্লাহ বলেন, ‘বিদ্রোহী প্রার্থীকে কোনোমতেই মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। সে একেবারেই বাদ। পটুয়াখালীতে যিনি মনোনয়ন পেয়েছিলেন তিনি ছিলেন আমাদের ডামি প্রার্থী। সেটা আমাদের জানিয়ে রাখা হয়েছিল।’
চাঁদাবাজি, হত্যা ও মাদক মামলার আসামি
বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলা বিহার ইউপিতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মহিদুল ইসলাম। তাঁর বিরুদ্ধে যুবলীগ কর্মী ওমর ফারুক, আওয়ামী লীগের কর্মী শিমুল হত্যাসহ তিনটি মামলা রয়েছে। একটি চাঁদাবাজির মামলাও রয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় তিনি যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি।
একই উপজেলার বুড়িগঞ্জ ইউপিতে মনোনয়ন পাওয়া রেজাউল করিম চঞ্চলকে র্যাব ফেনসিডিল পাচারের দায়ে গ্রেপ্তার করে।
প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তা আত্মসাতে অভিযুক্ত
বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার ময়দানহাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম রুপম। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তার অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় তাঁকে চেয়ারম্যান পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়। পরে তিনি উচ্চ আদালতে আপিল করলে সেই আদেশ স্থগিত হয়।
রায়নগর ইউনিয়নে মনোনয়ন পাওয়া শাহজাহান কাজী স্থানীয় বাঘমারা মাদ্রাসা পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সহসভাপতি। সেই মাদ্রাসার গাছ চুরি করে কাটার অপরাধে জেল খাটেন তিনি।
শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজার রহমান বলেন, মনোনীত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ মিথ্যা নয়। দলের তৃণমূল থেকে তিনজন করে প্রার্থীর যে তালিকা পাঠানো হয়েছে, তা কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছিল। এবং সেখান থেকেই এসব প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
(প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন নারায়ণগঞ্জ, শিবগঞ্জ (বগুড়া) ও রায়পুরা (নরসিংদী) প্রতিনিধি।)
‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ’ আদর্শকে ধারণ করে ‘সাম্য, ন্যায্যতা, প্রগতি’ স্লোগানে নতুন রাজনৈতিক দল ‘জনতার দল’ আত্মপ্রকাশ করেছে। অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম কামাল দলটির আহ্বায়ক, আর মেজর (অব.) ডেল এইচ খান প্রধান সমন্বয়ক ও মুখপাত্র। সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে গঠিত এই দল সমাজের বিভি
৩ ঘণ্টা আগেরাষ্ট্রীয় বিভিন্ন কর্মসূচিতে আসনে প্রটোকল অনুযায়ী অনেকে বসেন না বলে অভিযোগ করেছেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ। তিনি বলেছেন, সিট দখলের জন্য অনেকে ৫টার কর্মসূচিতে ১টার সময় হাজির হয়ে যান। তিন নম্বর সারির লোক বসেন এক নম্বরে। পরে তাঁকে উঠিয়ে বসতে হয়।
৪ ঘণ্টা আগে‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ’ আদর্শকে ধারণ করে ‘সাম্য, ন্যায্যতা, প্রগতি’ স্লোগানে নতুন রাজনৈতিক দল ‘জনতার দল’ আত্মপ্রকাশ করেছে। অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম কামাল দলটির আহ্বায়ক, আর মেজর (অব.) ডেল এইচ খান প্রধান সমন্বয়ক ও মুখপাত্র। সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে গঠিত এই দল...
৪ ঘণ্টা আগেরাষ্ট্র সংস্কারে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে ১৬৬টি প্রশ্নমালার যে স্প্রেডশিট পাঠিয়েছে, তার মধ্যে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) ১২০টিতে একমত বলে জানিয়েছেন দলটির প্রেসিডেন্ট অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল অলি আহমেদ। দলটির মতামত অন্য কোনো দলকে না দেখানোর প্রস্তাব করেন।
৮ ঘণ্টা আগে