Ajker Patrika

ইসি শিগগির নিবন্ধন ও দাঁড়িপাল্লা প্রতীক বুঝিয়ে দেবে, প্রত্যাশা শিশির মনিরের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০১ জুন ২০২৫, ১৫: ২২
আপিল বিভাগের রায়ের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আইনজীবী শিশির মনির। ছবি: আজকের পত্রিকা।
আপিল বিভাগের রায়ের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আইনজীবী শিশির মনির। ছবি: আজকের পত্রিকা।

আপিল বিভাগের রায়ের পর জামায়াতের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেছেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলার মাধ্যমে জামায়াতের নিবন্ধন কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায়কে বাতিল ঘোষণা করেছেন। নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন এবং অন্য যে ইস্যু নির্বাচন কমিশনের সামনে আসবে সেগুলো যাতে দ্রুত নিষ্পত্তি করে। এখানে অন্য ইস্যু বলতে প্রতীক বোঝানো হয়েছে।

জামায়াতের নিবন্ধন নিয়ে রোববার আপিল বিভাগের রায়ের পর এসব কথা বলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। এর আগে রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বাতিল ঘোষণা করেছেন আপিল বিভাগ। সেই সঙ্গে নিবন্ধন ও অন্য ইস্যু নিয়ে জামায়াতের করা আবেদন দ্রুত নিষ্পত্তি করতে নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আজ রোববার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ এই রায় দেন। গত ১৪ মে শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য এই দিন ধার্য করা হয়েছিল।

শিশির মনির বলেন, ‘এই রায়ের মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামী নিবন্ধন ফিরে পেল এবং প্রতীকের বিষয়টিও নির্বাচন কমিশনের সামনে পাঠানো হলো অন্য ইস্যু হিসেবে। আমরা সংক্ষিপ্ত আদেশ চেয়েছি। আশা করি, আগামী কালকের মধ্যেই আদেশ হাতে পাব। সংক্ষিপ্ত আদেশ নির্বাচন কমিশনের কাছে নিয়ে যাব। কমিশন অতি দ্রুত নিবন্ধন ও দাঁড়িপাল্লা প্রতীক বুঝিয়ে দেবেন বলে প্রত্যাশা করি।’

শিশির মনির আরও বলেন, ‘আপিল বিভাগের এই রায়ের মাধ্যমে বহুদলীয় গণতান্ত্রিক এবং অংশগ্রহণমূলক সংসদ প্রাপ্তি নিশ্চিত হলো। আমরা আশা করি, এই রায়ের পরে বাংলাদেশে সঠিক নির্বাচনের মাধ্যমে প্রাণবন্ত সংসদ গঠিত হবে। জাতি, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী ভোটাধিকার প্রয়োগ করে জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের বেছে নেবেন এটা আমরা প্রত্যাশা করি। আমরা এটাও প্রত্যাশা করি বাংলাদেশের আগামী সংসদে গঠনমূলক বিতর্ক হবে। যার মাধ্যমে গণতন্ত্র একটি স্থায়ী রূপ লাভ করবে।’

নিবন্ধন নিয়ে জামায়াতের করা আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিক। সঙ্গে ছিলেন মোহাম্মদ শিশির মনির। আর নির্বাচন কমিশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তৌহিদুল ইসলাম।

নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ তা বাতিল করে দিয়েছেন। এর ফলে হাইকোর্টের রায়ের আগে যে অবস্থা ছিল এখন সেটা ফেরত আসলো।

২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে নিবন্ধন দেওয়া হয়। পরের বছর তরিকত ফেডারেশনের তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীসহ কয়েকজন জামায়াতের নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন। ওই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট জামায়াতকে দেওয়া নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে অবৈধ বলে রায় দেন হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ। একই সঙ্গে আদালত জামায়াতে ইসলামীকে আপিল করারও অনুমোদন দিয়ে সার্টিফিকেট দেন।

হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলে জামায়াতে ইসলামী আপিল করে। ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় জামায়াতের আপিল খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। এরপর ২৮৬ দিন বিলম্ব মার্জনা করে আপিল এবং ২৯৪ দিন বিলম্ব মার্জনা করে লিভ টু আপিল পুনরুজ্জীবিত চেয়ে জামায়াতের পক্ষ থেকে পৃথক আবেদন করা হয়।

গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত শুনানির জন্য নিয়মিত বেঞ্চে পাঠান। পরে ২২ অক্টোবর রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন ফিরে পেতে জামায়াতে ইসলামীর আপিল পুনরুজ্জীবিত করে আদেশ দেন আপিল বিভাগ। এরপর গত বছরের ৩ ডিসেম্বর আপিল শুনানি শুরু হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত