ঢাবি সংবাদদাতা
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িত ছাত্রলীগের শতাধিক নেতা-কর্মীকে চিহ্নিত করেছে ‘সত্যানুসন্ধান কমিটি’। চিহ্নিত হামলাকারীদের মধ্যে ১২২ জন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এ হামলায় ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সহস্রাধিক নেতা–কর্মী জড়িত থাকলেও পর্যাপ্ত প্রমাণের অভাবে তাঁদের চিহ্নিত করা যায়নি বলে জানিয়েছে কমিটি।
সত্যানুসন্ধান কমিটির আহ্বায়ক আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মাহফুজুল হক সুপণ প্রতিবেদন হস্তান্তরের সময় এ তথ্য জানিয়েছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বিকেলে উপাচার্যের সভাকক্ষে উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খানের হাতে তদন্ত প্রতিবেদন হস্তান্তর করে কমিটি।
পাঁচ শতাধিক পৃষ্ঠার এ প্রতিবেদনে শতাধিক ছাত্রলীগকর্মীকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রায় ৭০ জন শিক্ষকের বিপক্ষে হামলায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগ উঠে এসেছে। বহিরাগত ছাত্রলীগ–যুবলীগ কর্মীদের হামলার অনেক প্রমাণ উঠে এসেছে। তবে পর্যাপ্ত তথ্যের অভাবে তাঁদের চিহ্নিত করা যায়নি। সব মিলিয়ে ২৫ শতাংশের মতো হামলাকারী চিহ্নিত হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিবেদনে ১৫ জুলাইয়ের হামলা সুপরিকল্পিত ছিল বলে উঠে আসে। হামলার ব্যাপারে হল এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আগেই জানত বলে ধারণা করছেন কমিটির সদস্যরা।
তদন্তের ব্যাপারে অধ্যাপক মাহফুজুল হক সুপণ জানান, তদন্তের কার্যক্রম আন্তর্জাতিক মান অনুসরণ করে সম্পন্ন করা হয়েছে। নির্দোষ কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়নি। যাদের দোষী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে তাদের নির্দোষ প্রমাণ করার কোনো সুযোগ নেই।
মাহফুজুল হক সুপণ বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে কোনো তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জনসম্মুখে এভাবে হস্তান্তর এটিই প্রথম। এর আগে কোনো কমিটি এমনটি করতে পারেনি। ১৯৭২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে ৭৩টি খুন হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র একটি খুনের বিচার হয়েছে। বাকিগুলোর বিষয়ে তদন্ত কমিটি ঠিকমতো প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি।’
তিনি বলেন, ‘বিগত সময়ে তদন্ত কমিটিগুলোর সাফল্য না থাকায় শিক্ষার্থীরা তথ্য–উপাত্ত দিয়ে সাহায্য করতে আগ্রহ দেখায়নি। ফলে আশানুরূপ প্রমাণ হাতে আসেনি। এতে তুলনামূলক কমসংখ্যক হামলাকারীকে শনাক্ত করা গেছে। আনুমানিক হিসেবে ২৫ শতাংশ হামলাকারী চিহ্নিত হয়েছে। তবে হামলায় জড়িত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই শনাক্ত হয়েছে।’
সত্যানুসন্ধান কমিটির এ আহ্বায়ক আরও বলেন, ‘নারীদের ওপর হামলাকারী, আহতদের হামলাকারী এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী—এ তিন ক্যাটাগরিতে হামলাকারীদের ভাগ করা হয়েছে। এ ছাড়া জড়িত যাদের ব্যাপারে সরাসরি হামলা করার প্রমাণ পাওয়া গেছে তাদের এক ক্যাটাগরিতে রাখা হয়েছে। আবার যারা কেবল অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলাকারীদের সঙ্গে ছিল কিন্তু হামলা করেছে বলে প্রমাণ নেই তাদের এক ক্যাটাগরিতে রাখা হয়েছে।’
১৫ জুলাইয়ের হামলা সুপরিকল্পিত ছিল এবং প্রশাসন এ ব্যাপারে আগেই অবগত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ হামলায় প্রশাসন কোনো বাধা দেয়নি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের পকেট গেট দিয়ে হামলাকারীদের অনেকে প্রবেশ করেছে, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের মাঠে বহিরাগত ছাত্রলীগের কর্মীরা গাড়ি পার্কিং করেছে। হল প্রশাসন এ সব জায়গায় বাধা দিতে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। হামলার সময়ে ক্যাম্পাসে নানা জায়গায় পুলিশও উপস্থিত ছিল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের কোনো নির্দেশনা দেয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমও নিষ্ক্রিয় ছিল।’
প্রতিবেদনে চিহ্নিত হামলাকারীদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে কমিটি সুপারিশ করেছেন বলে জানিয়েছেন অধ্যাপক মাহফুজুল হক। এ পর্যন্ত হামলার ঘটনায় থানায় দুটি মামলায় অনেককে আসামি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘পুলিশ এ মামলাগুলোতে এখন পর্যন্ত একটুও আগাতে পারেনি। আমাদের অনুসন্ধান অনুযায়ী মামলা যাদের আসামি করা হয়েছে তাদের অনেকেই হামলার দিন ক্যাম্পাসে ছিল না।’
তদন্ত কমিটির সদস্য উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমোজাদ্দেদী আলফেছানি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাইরের যারা তাদের চিহ্নিত করা হয়নি। তাদের ব্যাপারে সংগৃহীত তথ্য–উপাত্ত এবং প্রমাণগুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করেছি। বহিরাগত এ হামলাকারীদের ব্যাপারে আমরা রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপের সুপারিশ করেছি। পুলিশ প্রশাসন এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে আমাদের সংগৃহীত প্রমাণগুলো দেওয়া হবে। তারা হামলাকারীদের চিহ্নিত করে যথাযথ পদক্ষেপ নিবে।’
তদন্ত কমিটির কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ‘১৫ জুলাইয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের নৃশংস হামলা গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম মাইলফলক হিসেবে কাজ করেছে। এ হামলার ধারাবাহিকতায় গণ-অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে। হামলাকারীদের চিহ্নিত করতে আমরা যোগ্য লোকদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করেছি। নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও তারা আন্তর্জাতিক মান রক্ষা করে এ কাজ সম্পন্ন করেছে।’
তিনি বলেন, ‘কমিটির জমা দেওয়া এ প্রতিবেদন সিন্ডিকেটে উত্থাপন করা হবে। সিন্ডিকেটে আলোচনার ভিত্তিতে ট্রাইব্যুনাল গঠন এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সিন্ডিকেটে আলোচনার প্রেক্ষিতেই তদন্তে উঠে আসা সকল তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মোচন করা হবে।’
এর আগে গত বছরের গত ৮ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সংঘটিত বেআইনি ও সহিংস ঘটনার সত্যানুসন্ধান করে জড়িতদের চিহ্নিত করে প্রশাসনিক ব্যবস্থার আওতায় নিয়ে আসার জন্য সত্যানুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়। আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাহফুজুল হক সুপণকে প্রধান করে আইন অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইকরামুল হক, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক ড. নাদিয়া নেওয়াজ রিমি, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমোজাদ্দেদী আলফেছানী, শামসুন নাহার হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. নাসরিন সুলতানা, সহকারী প্রক্টর শেহরীন আমিন ভূঁইয়াকে সদস্য করা হয়। ডেপুটি রেজিস্ট্রার (তদন্ত) শেখ আইয়ুব আলীকে কমিটির সচিব পদে রাখা হয়।
সত্যানুসন্ধান কমিটির সদস্যরা জানান, অনলাইন এবং অফলাইনে সহিংসতায় আক্রান্ত, আহত এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ গ্রহণ করেছেন তাঁরা। অভিযোগের সমর্থনে ভিডিও, ছবি এবং প্রিন্ট ও সোশ্যাল মিডিয়ার কনটেন্টও সংগ্রহ করেছে। কমিটি বিভিন্ন দেশি–বিদেশি ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া থেকে বিভিন্ন ধরনের তথ্য সংগ্রহ করেছে। এ ছাড়া এ কমিটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে কয়েকটি এলাকায় ভাগ করে প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্যও গ্রহণ করেছে। সবকিছুর সমন্বয়ে এ তদন্ত সম্পন্ন করেছেন তাঁরা।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১৫ জুলাই কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ এবং যুবলীগের নেতা–কর্মীরা হামলা করে। এতে প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থী আহত হয়। অনেক নারী শিক্ষার্থীকেও আহত করা হয়। আহতরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে গেলে সেখানেও হামলা করা হয়। ১৬ ও ১৭ জুলাই শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করা হয়। ১৭ জুলাই বিকেল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে প্রশাসন।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িত ছাত্রলীগের শতাধিক নেতা-কর্মীকে চিহ্নিত করেছে ‘সত্যানুসন্ধান কমিটি’। চিহ্নিত হামলাকারীদের মধ্যে ১২২ জন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এ হামলায় ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সহস্রাধিক নেতা–কর্মী জড়িত থাকলেও পর্যাপ্ত প্রমাণের অভাবে তাঁদের চিহ্নিত করা যায়নি বলে জানিয়েছে কমিটি।
সত্যানুসন্ধান কমিটির আহ্বায়ক আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মাহফুজুল হক সুপণ প্রতিবেদন হস্তান্তরের সময় এ তথ্য জানিয়েছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বিকেলে উপাচার্যের সভাকক্ষে উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খানের হাতে তদন্ত প্রতিবেদন হস্তান্তর করে কমিটি।
পাঁচ শতাধিক পৃষ্ঠার এ প্রতিবেদনে শতাধিক ছাত্রলীগকর্মীকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রায় ৭০ জন শিক্ষকের বিপক্ষে হামলায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগ উঠে এসেছে। বহিরাগত ছাত্রলীগ–যুবলীগ কর্মীদের হামলার অনেক প্রমাণ উঠে এসেছে। তবে পর্যাপ্ত তথ্যের অভাবে তাঁদের চিহ্নিত করা যায়নি। সব মিলিয়ে ২৫ শতাংশের মতো হামলাকারী চিহ্নিত হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিবেদনে ১৫ জুলাইয়ের হামলা সুপরিকল্পিত ছিল বলে উঠে আসে। হামলার ব্যাপারে হল এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আগেই জানত বলে ধারণা করছেন কমিটির সদস্যরা।
তদন্তের ব্যাপারে অধ্যাপক মাহফুজুল হক সুপণ জানান, তদন্তের কার্যক্রম আন্তর্জাতিক মান অনুসরণ করে সম্পন্ন করা হয়েছে। নির্দোষ কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়নি। যাদের দোষী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে তাদের নির্দোষ প্রমাণ করার কোনো সুযোগ নেই।
মাহফুজুল হক সুপণ বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে কোনো তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জনসম্মুখে এভাবে হস্তান্তর এটিই প্রথম। এর আগে কোনো কমিটি এমনটি করতে পারেনি। ১৯৭২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে ৭৩টি খুন হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র একটি খুনের বিচার হয়েছে। বাকিগুলোর বিষয়ে তদন্ত কমিটি ঠিকমতো প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি।’
তিনি বলেন, ‘বিগত সময়ে তদন্ত কমিটিগুলোর সাফল্য না থাকায় শিক্ষার্থীরা তথ্য–উপাত্ত দিয়ে সাহায্য করতে আগ্রহ দেখায়নি। ফলে আশানুরূপ প্রমাণ হাতে আসেনি। এতে তুলনামূলক কমসংখ্যক হামলাকারীকে শনাক্ত করা গেছে। আনুমানিক হিসেবে ২৫ শতাংশ হামলাকারী চিহ্নিত হয়েছে। তবে হামলায় জড়িত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই শনাক্ত হয়েছে।’
সত্যানুসন্ধান কমিটির এ আহ্বায়ক আরও বলেন, ‘নারীদের ওপর হামলাকারী, আহতদের হামলাকারী এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী—এ তিন ক্যাটাগরিতে হামলাকারীদের ভাগ করা হয়েছে। এ ছাড়া জড়িত যাদের ব্যাপারে সরাসরি হামলা করার প্রমাণ পাওয়া গেছে তাদের এক ক্যাটাগরিতে রাখা হয়েছে। আবার যারা কেবল অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলাকারীদের সঙ্গে ছিল কিন্তু হামলা করেছে বলে প্রমাণ নেই তাদের এক ক্যাটাগরিতে রাখা হয়েছে।’
১৫ জুলাইয়ের হামলা সুপরিকল্পিত ছিল এবং প্রশাসন এ ব্যাপারে আগেই অবগত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ হামলায় প্রশাসন কোনো বাধা দেয়নি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের পকেট গেট দিয়ে হামলাকারীদের অনেকে প্রবেশ করেছে, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের মাঠে বহিরাগত ছাত্রলীগের কর্মীরা গাড়ি পার্কিং করেছে। হল প্রশাসন এ সব জায়গায় বাধা দিতে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। হামলার সময়ে ক্যাম্পাসে নানা জায়গায় পুলিশও উপস্থিত ছিল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের কোনো নির্দেশনা দেয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমও নিষ্ক্রিয় ছিল।’
প্রতিবেদনে চিহ্নিত হামলাকারীদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে কমিটি সুপারিশ করেছেন বলে জানিয়েছেন অধ্যাপক মাহফুজুল হক। এ পর্যন্ত হামলার ঘটনায় থানায় দুটি মামলায় অনেককে আসামি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘পুলিশ এ মামলাগুলোতে এখন পর্যন্ত একটুও আগাতে পারেনি। আমাদের অনুসন্ধান অনুযায়ী মামলা যাদের আসামি করা হয়েছে তাদের অনেকেই হামলার দিন ক্যাম্পাসে ছিল না।’
তদন্ত কমিটির সদস্য উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমোজাদ্দেদী আলফেছানি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাইরের যারা তাদের চিহ্নিত করা হয়নি। তাদের ব্যাপারে সংগৃহীত তথ্য–উপাত্ত এবং প্রমাণগুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করেছি। বহিরাগত এ হামলাকারীদের ব্যাপারে আমরা রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপের সুপারিশ করেছি। পুলিশ প্রশাসন এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে আমাদের সংগৃহীত প্রমাণগুলো দেওয়া হবে। তারা হামলাকারীদের চিহ্নিত করে যথাযথ পদক্ষেপ নিবে।’
তদন্ত কমিটির কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ‘১৫ জুলাইয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের নৃশংস হামলা গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম মাইলফলক হিসেবে কাজ করেছে। এ হামলার ধারাবাহিকতায় গণ-অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে। হামলাকারীদের চিহ্নিত করতে আমরা যোগ্য লোকদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করেছি। নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও তারা আন্তর্জাতিক মান রক্ষা করে এ কাজ সম্পন্ন করেছে।’
তিনি বলেন, ‘কমিটির জমা দেওয়া এ প্রতিবেদন সিন্ডিকেটে উত্থাপন করা হবে। সিন্ডিকেটে আলোচনার ভিত্তিতে ট্রাইব্যুনাল গঠন এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সিন্ডিকেটে আলোচনার প্রেক্ষিতেই তদন্তে উঠে আসা সকল তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মোচন করা হবে।’
এর আগে গত বছরের গত ৮ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সংঘটিত বেআইনি ও সহিংস ঘটনার সত্যানুসন্ধান করে জড়িতদের চিহ্নিত করে প্রশাসনিক ব্যবস্থার আওতায় নিয়ে আসার জন্য সত্যানুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়। আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাহফুজুল হক সুপণকে প্রধান করে আইন অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইকরামুল হক, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক ড. নাদিয়া নেওয়াজ রিমি, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমোজাদ্দেদী আলফেছানী, শামসুন নাহার হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. নাসরিন সুলতানা, সহকারী প্রক্টর শেহরীন আমিন ভূঁইয়াকে সদস্য করা হয়। ডেপুটি রেজিস্ট্রার (তদন্ত) শেখ আইয়ুব আলীকে কমিটির সচিব পদে রাখা হয়।
সত্যানুসন্ধান কমিটির সদস্যরা জানান, অনলাইন এবং অফলাইনে সহিংসতায় আক্রান্ত, আহত এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ গ্রহণ করেছেন তাঁরা। অভিযোগের সমর্থনে ভিডিও, ছবি এবং প্রিন্ট ও সোশ্যাল মিডিয়ার কনটেন্টও সংগ্রহ করেছে। কমিটি বিভিন্ন দেশি–বিদেশি ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া থেকে বিভিন্ন ধরনের তথ্য সংগ্রহ করেছে। এ ছাড়া এ কমিটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে কয়েকটি এলাকায় ভাগ করে প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্যও গ্রহণ করেছে। সবকিছুর সমন্বয়ে এ তদন্ত সম্পন্ন করেছেন তাঁরা।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১৫ জুলাই কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ এবং যুবলীগের নেতা–কর্মীরা হামলা করে। এতে প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থী আহত হয়। অনেক নারী শিক্ষার্থীকেও আহত করা হয়। আহতরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে গেলে সেখানেও হামলা করা হয়। ১৬ ও ১৭ জুলাই শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করা হয়। ১৭ জুলাই বিকেল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে প্রশাসন।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে কক্সবাজার সফরে গিয়ে সেখানকার একটি জলবায়ু উদ্বাস্তু পুনর্বাসন প্রকল্প পরিদর্শন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
৪২ মিনিট আগেমরক্কোয় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ হারুন আল–রশিদ ফেসবুকে অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করেছেন। আজ শুক্রবার তিনি নিজের ফেসবুক আইডি থেকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ সমালোচনা করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হারুন আল–রশিদ সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে।
১ ঘণ্টা আগেরোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় মানবিক সহায়তা তহবিলের তীব্র সংকট এবং বৈশ্বিক অগ্রাধিকার পরিবর্তনের কারণে এই সংকট আরও গভীর হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের বাংলাদেশ সফরের প্রেক্ষাপটে জরুরি ও সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বাংলাদেশে কর্মরত আন্তর্জাতিক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা
৪ ঘণ্টা আগেঅন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলো যদি ‘সংস্কারের সংক্ষিপ্ত প্যাকেজ’ গ্রহণ করে, তবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই। আর ‘বৃহত্তর প্যাকেজ’ গ্রহণ করলে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে জুলাইয়ে।
৫ ঘণ্টা আগে