Ajker Patrika

১৫ জুলাই ঢাবিতে হামলায় শতাধিক ছাত্রলীগ কর্মী চিহ্নিত, ৭০ শিক্ষকের বিরুদ্ধে উসকানির অভিযোগ

ঢাবি সংবাদদাতা
আপডেট : ১৪ মার্চ ২০২৫, ১৬: ৩৯
গত বছরের ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে ছাত্রলীগ–যুবলীগ নেতাকর্মীরা। ছবি: সংগৃহীত
গত বছরের ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে ছাত্রলীগ–যুবলীগ নেতাকর্মীরা। ছবি: সংগৃহীত

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িত ছাত্রলীগের শতাধিক নেতা-কর্মীকে চিহ্নিত করেছে ‘সত্যানুসন্ধান কমিটি’। চিহ্নিত হামলাকারীদের মধ্যে ১২২ জন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এ হামলায় ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সহস্রাধিক নেতা–কর্মী জড়িত থাকলেও পর্যাপ্ত প্রমাণের অভাবে তাঁদের চিহ্নিত করা যায়নি বলে জানিয়েছে কমিটি।

সত্যানুসন্ধান কমিটির আহ্বায়ক আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মাহফুজুল হক সুপণ প্রতিবেদন হস্তান্তরের সময় এ তথ্য জানিয়েছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বিকেলে উপাচার্যের সভাকক্ষে উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খানের হাতে তদন্ত প্রতিবেদন হস্তান্তর করে কমিটি।

পাঁচ শতাধিক পৃষ্ঠার এ প্রতিবেদনে শতাধিক ছাত্রলীগকর্মীকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রায় ৭০ জন শিক্ষকের বিপক্ষে হামলায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগ উঠে এসেছে। বহিরাগত ছাত্রলীগ–যুবলীগ কর্মীদের হামলার অনেক প্রমাণ উঠে এসেছে। তবে পর্যাপ্ত তথ্যের অভাবে তাঁদের চিহ্নিত করা যায়নি। সব মিলিয়ে ২৫ শতাংশের মতো হামলাকারী চিহ্নিত হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিবেদনে ১৫ জুলাইয়ের হামলা সুপরিকল্পিত ছিল বলে উঠে আসে। হামলার ব্যাপারে হল এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আগেই জানত বলে ধারণা করছেন কমিটির সদস্যরা।

তদন্তের ব্যাপারে অধ্যাপক মাহফুজুল হক সুপণ জানান, তদন্তের কার্যক্রম আন্তর্জাতিক মান অনুসরণ করে সম্পন্ন করা হয়েছে। নির্দোষ কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়নি। যাদের দোষী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে তাদের নির্দোষ প্রমাণ করার কোনো সুযোগ নেই।

মাহফুজুল হক সুপণ বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে কোনো তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জনসম্মুখে এভাবে হস্তান্তর এটিই প্রথম। এর আগে কোনো কমিটি এমনটি করতে পারেনি। ১৯৭২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে ৭৩টি খুন হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র একটি খুনের বিচার হয়েছে। বাকিগুলোর বিষয়ে তদন্ত কমিটি ঠিকমতো প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি।’

তিনি বলেন, ‘বিগত সময়ে তদন্ত কমিটিগুলোর সাফল্য না থাকায় শিক্ষার্থীরা তথ্য–উপাত্ত দিয়ে সাহায্য করতে আগ্রহ দেখায়নি। ফলে আশানুরূপ প্রমাণ হাতে আসেনি। এতে তুলনামূলক কমসংখ্যক হামলাকারীকে শনাক্ত করা গেছে। আনুমানিক হিসেবে ২৫ শতাংশ হামলাকারী চিহ্নিত হয়েছে। তবে হামলায় জড়িত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই শনাক্ত হয়েছে।’

সত্যানুসন্ধান কমিটির এ আহ্বায়ক আরও বলেন, ‘নারীদের ওপর হামলাকারী, আহতদের হামলাকারী এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী—এ তিন ক্যাটাগরিতে হামলাকারীদের ভাগ করা হয়েছে। এ ছাড়া জড়িত যাদের ব্যাপারে সরাসরি হামলা করার প্রমাণ পাওয়া গেছে তাদের এক ক্যাটাগরিতে রাখা হয়েছে। আবার যারা কেবল অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলাকারীদের সঙ্গে ছিল কিন্তু হামলা করেছে বলে প্রমাণ নেই তাদের এক ক্যাটাগরিতে রাখা হয়েছে।’

১৫ জুলাইয়ের হামলা সুপরিকল্পিত ছিল এবং প্রশাসন এ ব্যাপারে আগেই অবগত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ হামলায় প্রশাসন কোনো বাধা দেয়নি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের পকেট গেট দিয়ে হামলাকারীদের অনেকে প্রবেশ করেছে, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের মাঠে বহিরাগত ছাত্রলীগের কর্মীরা গাড়ি পার্কিং করেছে। হল প্রশাসন এ সব জায়গায় বাধা দিতে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। হামলার সময়ে ক্যাম্পাসে নানা জায়গায় পুলিশও উপস্থিত ছিল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের কোনো নির্দেশনা দেয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমও নিষ্ক্রিয় ছিল।’

প্রতিবেদনে চিহ্নিত হামলাকারীদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে কমিটি সুপারিশ করেছেন বলে জানিয়েছেন অধ্যাপক মাহফুজুল হক। এ পর্যন্ত হামলার ঘটনায় থানায় দুটি মামলায় অনেককে আসামি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘পুলিশ এ মামলাগুলোতে এখন পর্যন্ত একটুও আগাতে পারেনি। আমাদের অনুসন্ধান অনুযায়ী মামলা যাদের আসামি করা হয়েছে তাদের অনেকেই হামলার দিন ক্যাম্পাসে ছিল না।’

তদন্ত কমিটির সদস্য উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমোজাদ্দেদী আলফেছানি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাইরের যারা তাদের চিহ্নিত করা হয়নি। তাদের ব্যাপারে সংগৃহীত তথ্য–উপাত্ত এবং প্রমাণগুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করেছি। বহিরাগত এ হামলাকারীদের ব্যাপারে আমরা রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপের সুপারিশ করেছি। পুলিশ প্রশাসন এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে আমাদের সংগৃহীত প্রমাণগুলো দেওয়া হবে। তারা হামলাকারীদের চিহ্নিত করে যথাযথ পদক্ষেপ নিবে।’

তদন্ত কমিটির কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ‘১৫ জুলাইয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের নৃশংস হামলা গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম মাইলফলক হিসেবে কাজ করেছে। এ হামলার ধারাবাহিকতায় গণ-অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে। হামলাকারীদের চিহ্নিত করতে আমরা যোগ্য লোকদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করেছি। নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও তারা আন্তর্জাতিক মান রক্ষা করে এ কাজ সম্পন্ন করেছে।’

তিনি বলেন, ‘কমিটির জমা দেওয়া এ প্রতিবেদন সিন্ডিকেটে উত্থাপন করা হবে। সিন্ডিকেটে আলোচনার ভিত্তিতে ট্রাইব্যুনাল গঠন এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সিন্ডিকেটে আলোচনার প্রেক্ষিতেই তদন্তে উঠে আসা সকল তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মোচন করা হবে।’

এর আগে গত বছরের গত ৮ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সংঘটিত বেআইনি ও সহিংস ঘটনার সত্যানুসন্ধান করে জড়িতদের চিহ্নিত করে প্রশাসনিক ব্যবস্থার আওতায় নিয়ে আসার জন্য সত্যানুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়। আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাহফুজুল হক সুপণকে প্রধান করে আইন অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইকরামুল হক, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক ড. নাদিয়া নেওয়াজ রিমি, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমোজাদ্দেদী আলফেছানী, শামসুন নাহার হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. নাসরিন সুলতানা, সহকারী প্রক্টর শেহরীন আমিন ভূঁইয়াকে সদস্য করা হয়। ডেপুটি রেজিস্ট্রার (তদন্ত) শেখ আইয়ুব আলীকে কমিটির সচিব পদে রাখা হয়।

সত্যানুসন্ধান কমিটির সদস্যরা জানান, অনলাইন এবং অফলাইনে সহিংসতায় আক্রান্ত, আহত এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ গ্রহণ করেছেন তাঁরা। অভিযোগের সমর্থনে ভিডিও, ছবি এবং প্রিন্ট ও সোশ্যাল মিডিয়ার কনটেন্টও সংগ্রহ করেছে। কমিটি বিভিন্ন দেশি–বিদেশি ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া থেকে বিভিন্ন ধরনের তথ্য সংগ্রহ করেছে। এ ছাড়া এ কমিটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে কয়েকটি এলাকায় ভাগ করে প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্যও গ্রহণ করেছে। সবকিছুর সমন্বয়ে এ তদন্ত সম্পন্ন করেছেন তাঁরা।

উল্লেখ্য, গত বছরের ১৫ জুলাই কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ এবং যুবলীগের নেতা–কর্মীরা হামলা করে। এতে প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থী আহত হয়। অনেক নারী শিক্ষার্থীকেও আহত করা হয়। আহতরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে গেলে সেখানেও হামলা করা হয়। ১৬ ও ১৭ জুলাই শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করা হয়। ১৭ জুলাই বিকেল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে প্রশাসন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাগেরহাটের ৪টি আসন বহাল, ফিরল না গাজীপুর ৬

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ৪৯
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বাগেরহাটের ৪টি আসন পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা লিভ টু আপিল খারিজ করে আজ বুধবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগ সর্বসম্মতিতে এ আদেশ দেন।

এর ফলে বহাল থাকল বাগেরহাটের চারটি আসন। বাদ পড়েছে গাজীপুর-৬ আসনটিও।

এর আগে বাগেরহাটের আসন একটি কমিয়ে তিনটি করা এবং গাজীপুরে একটি বাড়ানো-সংক্রান্ত নির্বাচন কমিশনের গেজেট চ্যালেঞ্জ করে রিট করা হয়। শুনানি শেষে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত বাতিল করে গত ১০ নভেম্বর হাইকোর্ট রায় দেন।

হাইকোর্টের রায় ঘোষণার পরপরই তা স্থগিত চেয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) এবং গাজীপুর-৬ আসন থেকে জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী ড. হাফিজুর রহমান ও বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী মো. সালাহ উদ্দিন সরকার আপিল বিভাগে পৃথক আবেদন করেন।

নির্বাচন কমিশনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। ড. হাফিজুর রহমানের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার বেলায়েত হোসেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে বঙ্গভবনে সিইসি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৪
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছেন সিইসি। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছেন সিইসি। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনাররা বঙ্গভবনে পৌঁছেছেন।

বঙ্গভবনের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন, আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ইসির বৈঠকের শিডিউল রাখা আছে।

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট উপলক্ষে নির্বাচন কমিশনের সার্বিক প্রস্তুতি ও তফসিল ঘোষণা বিষয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে আলোচনা করতে বঙ্গভবনে গেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন। সিইসি দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে বঙ্গভবনে পৌঁছান।

এর আগে ১০টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন ভবন থেকে বঙ্গভবনের উদ্দেশে রওনা হন তিনি।

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে রয়েছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ (অবসরপ্রাপ্ত), তাহমিদা বেগম, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার ও আব্দুর রহমানেল মাছউদ এবং ইসি সচিব আখতার আহমেদ।

উল্লেখ্য, চলতি সপ্তাহেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা রয়েছে। তফসিল-সংক্রান্ত ভাষণ রেকর্ড করতে ইতিমধ্যে বিটিভি ও বাংলাদেশ বেতারকে চিঠিও দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাংলাদেশের ‘টাঙ্গাইল শাড়ি বুনন শিল্প’ অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, ইউনেসকোর স্বীকৃতি

বাসস, ঢাকা  
টাঙ্গাইল শাড়িতে অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা মিম। ছবি: ফেসবুক
টাঙ্গাইল শাড়িতে অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা মিম। ছবি: ফেসবুক

টাঙ্গাইলের শাড়ি বুনন শিল্পকে অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেসকো। গতকাল মঙ্গলবার ভারতের নয়াদিল্লিতে ইউনেসকো কনভেনশনের চলমান ২০তম আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এই কনভেনশনের আওতায় এটি বাংলাদেশের ষষ্ঠ একক নিবন্ধন। সভায় প্রথমবারের মতো সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর বিগত চার বছরে এটি দ্বিতীয় নিবন্ধন।

সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের প্রধান এবং ইউনেসকো সাধারণ পরিষদের সভাপতি ও বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জানান, ‘এই স্বীকৃতি বাংলাদেশের জন্য অসামান্য গৌরবের বিষয়। দীর্ঘ দুই শতকের বেশি সময় ধরে টাঙ্গাইলের তাঁতিদের অনবদ্য শিল্পকর্মের বৈশ্বিক স্বীকৃতি এটি।’

তিনি আরও বলেন, ‘টাঙ্গাইল শাড়ি বাংলাদেশের সকল নারীর নিত্য পরিধেয়, যা এই শাড়ি বুনন শিল্পের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনের পেছনে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে।’

এই অর্জনকে বাংলাদেশের সকল তাঁতি ও নারীদের প্রতি উৎসর্গ করেছেন রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা।

বাংলাদেশের অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সামগ্রিক সুরক্ষায় এই স্বীকৃতি নতুন মাত্রা যোগ করবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত তালহা বলেন, ঐতিহ্য হিসেবে ইউনেসকোর স্বীকৃতি অর্জনের মতো বাংলাদেশের অপরিমেয় সাংস্কৃতিক উপাদান রয়েছে।

নথি প্রস্তুত করার সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং কনভেনশন সংক্রান্ত অভিজ্ঞ জনবল তৈরি করার মাধ্যমে আরও অনেক ঐতিহ্যের ইউনেসকো-স্বীকৃতি অর্জনের সুযোগ রয়েছে।

এর আগে, গত ৭ ডিসেম্বর আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের চলমান ২০তম সভা উদ্বোধন করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শংকর। অনুষ্ঠানে ইউনেসকোর নবনিযুক্ত মহাপরিচালক খালেদ এল. এনানি উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজ সংবাদ সম্মেলনে আসছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ৩৪
ভারতকে হারানোর পর ২ কোটি টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।ছবি: ফাইল ছবি
ভারতকে হারানোর পর ২ কোটি টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।ছবি: ফাইল ছবি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তোড়জোড়ের মধ্যে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে আসছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

সমসাময়িক বিষয়ে আজ বুধবার বেলা ৩টায় স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলনকক্ষে আসিফ মাহমুদের সংবাদ সম্মেলন হবে বলে মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।

সমসাময়িক কোন বিষয়ে আসিফ মাহমুদ সংবাদ সম্মেলনে কথা বলবেন, মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণপত্রে তা উল্লেখ করা হয়নি। তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজকের সংবাদ সম্মেলন থেকে উপদেষ্টা পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিতে পারেন তিনি।

আজ রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করার পর ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার জন্য ভাষণের রেকর্ড করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। আজ সন্ধ্যায় বা আগামীকাল বৃহস্পতিবার এই তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমও আজ পদত্যাগের ঘোষণা দিতে পারেন বলে আলোচনা রয়েছে।

উপদেষ্টার পদে থেকে নির্বাচন করতে আইনি বাধা না থাকলেও তফসিল ঘোষণার আগে সরকারে থাকা দুজন ছাত্র উপদেষ্টা পদত্যাগ করবেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনে অন্যতম সমন্বয়ক হিসেবে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আসিফ মাহমুদ। তাঁদের আন্দোলন একপর্যায়ে সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনে রূপ নেয়। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয় আওয়ামী লীগ সরকার। এরপর ওই বছরের ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। এই সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন আসিফ মাহমুদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত