শহীদুল ইসলাম, ঢাকা
জনস্বার্থে প্রয়োজনীয় না হলেও দলীয় সরকারের সময় অনুগত কর্মকর্তাদের অবসরে যাওয়ার ঠিক আগে পদোন্নতি দিয়ে আর্থিক সুবিধা দেওয়া হয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বদলে যাওয়ার পর আসা অন্তর্বর্তী সরকারও সে ধারা অব্যাহত রেখেছে। অবসরে যাওয়ার ঠিক আগে পদোন্নতি পেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মীর কিছু প্রাপ্তিযোগ ঘটলেও সরকারের কোনো লাভ হচ্ছে না।
অবসরের আগে আগে পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তাদের নিয়মিত চাকরি শেষে চুক্তিতে সরকারি প্রতিষ্ঠানে এবং সরাসরি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বড় পদে যোগ দেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়। সরকারের কাছ থেকে পাওয়া পেনশনেও বাড়তি আর্থিক সুবিধা ভোগ করেন তাঁরা।
চাকরির মেয়াদ কত দিন বাকি থাকতে ওপরের স্তরের পদে পদোন্নতি দেওয়া যাবে, তার নির্দিষ্ট নিয়ম নেই। ফলে সরকার চাইলে যেকোনো সময় যে কাউকে পদোন্নতি দিতে পারে। এ রকম পদোন্নতির পরিসংখ্যান জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে নেই। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের সময় অন্তত এক ডজন কর্মকর্তা অবসরে যাওয়ার ঠিক আগে সচিব, গ্রেড-১ এবং অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি পেয়েছেন।
গত বছরের ২৫ নভেম্বর বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকা (বেপজা) কর্তৃপক্ষের সদস্য, অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ ফারুক আলমকে সচিব পদে পদোন্নতি দিয়ে একই প্রজ্ঞাপনে ওএসডি করা হয়। ফলে পদোন্নতি পাওয়া পদে যোগ দেওয়ার সুযোগই পাননি তিনি। কিন্তু সচিবের বেতন স্কেল অনুযায়ী তাঁর পেনশন হিসাব করা হবে। গত বছরের ২১ নভেম্বর ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দিক, ২৫ নভেম্বর খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. হাবিবুর রহমান হোছাইনী, ২৯ ডিসেম্বর মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ টি এম মোস্তফা কামাল, ১২ ফেব্রুয়ারি প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. শেখাবুর রহমান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুল হাকিম, ১৮ ফেব্রুয়ারি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. রবিউল ইসলাম এবং ২ মার্চ ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. নায়েব আলী মণ্ডলকে অবসরে যাওয়ার ঠিক আগে গ্রেড-১ পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। অবসরে যাওয়ার সুবিধার জন্য তাঁদের পদোন্নতির প্রজ্ঞাপনেই ওএসডি করা হয়।
বিষয়টি নিয়ে জনপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের মধ্যে নানা ধরনের আলোচনা রয়েছে। তবে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে নাম-পরিচয় প্রকাশ করে কেউ মন্তব্য করতে রাজি হননি।
একজন অতিরিক্ত সচিব বলেন, একটি ব্যাচে প্রশাসন ক্যাডারের ১৫০ জন কর্মকর্তা থাকলে তাঁদের সঙ্গে ২৫ শতাংশ কোটায় অন্য ক্যাডার থেকে আরও কিছু কর্মকর্তা যোগ হন। তাঁদের মধ্যে অন্তত ৭০ জন কর্মকর্তা সচিব পদে পদোন্নতির যোগ্যতা অর্জন করেন; কিন্তু পদোন্নতি পান হাতে গোনা কয়েকজন। তিনি আরও বলেন, কাউকে যদি প্রাইজ প্রমোশন দেওয়া হয়, তা নিয়ে সমালোচনা হবেই। কিন্তু এসব নিয়ে কথা বললে জটিলতায় পড়তে হবে। কারণ এসব পদোন্নতিতে বিধিবিধানের কোনো লঙ্ঘন হয় না; কিন্তু এমন পদোন্নতি দেওয়া কতটুকু যৌক্তিক, সে প্রশ্ন আছে।
অবসরের আগে আগে পদোন্নতির বিষয় নিয়ে গত সরকারের সময় আলোচনা হয়েছিল। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব জানান, একজন কর্মকর্তাকে চাকরির শেষ সময়ে সচিব করে একটি মন্ত্রণালয়ে পদায়ন করা হয়েছিল। ওই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বিষয়টি জানতে পেরে তা নিয়ে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। তখন সরকারপ্রধান বলেন, চাকরির মেয়াদ দুই বছরের কম রয়েছে এমন কাউকে সচিব না করা হলেই ভালো হবে। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনার কথা কয়েকজন কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন। তবে এ নিয়ে কোনো লিখিত নির্দেশনা নেই।
কয়েকটি আলোচিত পদোন্নতি
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক মুস্তাকিম বিল্লাহ ফারুকীকে অবসরে যাওয়ার মাত্র দুই দিন আগে গত বছরের ৮ মে সচিব পদে পদোন্নতি দেয় সরকার। চাকরির মেয়াদ না থাকায় নতুন কোনো দপ্তরে তাঁকে পদায়ন না করে পদোন্নতির প্রজ্ঞাপনেই ওএসডি করা হয়।
স্থানীয় সরকার বিভাগে সংযুক্ত অতিরিক্ত সচিব মো. খাইরুল ইসলামকে গত বছরের ২ জুলাই পদোন্নতি সচিব করা হয়। কিন্তু একই প্রজ্ঞাপনে তাঁকে ওএসডি করা হয়। বিসিএস অডিট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস ক্যাডারের কর্মকর্তা খাইরুল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহকারী একান্ত সচিবের (এপিএস-১) দায়িত্বে ছিলেন। পদোন্নতির পর গত বছরের ১ অক্টোবর তাঁকে এক বছরের চুক্তিতে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী সদস্যপদে নিয়োগ দেয় সরকার।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমানকে অবসরে পাঠানোর আগের দিন ২০২৪ সালের ২৩ মে জ্যেষ্ঠ সচিব করা হয়। পরদিন তাঁকে চুক্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়।
২০১৬ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি কৃষি মন্ত্রণালয়ের বীজ উইংয়ের মহাপরিচালক আনোয়ার ফারুককে ভারপ্রাপ্ত কৃষিসচিব করা হয়। তখন অতিরিক্ত সচিবদের মধ্য থেকে প্রথমে ভারপ্রাপ্ত সচিব করে মন্ত্রণালয় বা বিভাগে বদলি করা হতো। এরপর আলাদা আদেশে সচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হতো। অবসরে যাওয়ার এক দিন আগে ২০১৬ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি আনোয়ার ফারুককে কৃষি মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব থেকে সচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। পরদিন চাকরি থেকে অবসরে যান তিনি।
এ পদোন্নতিতে যেসব লাভ
অবসরের ঠিক আগে সচিব, গ্রেড-১ বা অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতির পর আর কোনো দপ্তরে পদায়ন না হলেও কর্মকর্তারা আর্থিকভাবে লাভবান হন। সামাজিক মর্যাদাও বাড়ে। অবসরের পর বিভিন্ন করপোরেশন ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বড় পদে চাকরি পান তাঁরা।
বেতন কাঠামোয় সচিবদের মূল বেতন নির্ধারিত রয়েছে ৭৮ হাজার টাকা। আর অতিরিক্ত সচিবদের সর্বোচ্চ মূল বেতন ৭৬ হাজার ৪৯০ টাকা। কোনো অতিরিক্ত সচিব অবসরের আগে যত কম সময়ের জন্যই হোক, সচিব পদে পদোন্নতি পেলে তাঁর পেনশন সুবিধা ১ হাজার ৫১০ টাকা বেড়ে ৭৮ হাজার টাকায় হিসাব করা হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব, মুখ্য সচিব ও সমমর্যাদার কর্মকর্তাদের মূল বেতন ৮৬ হাজার টাকা। জ্যেষ্ঠ সচিব ও সমমর্যাদার কর্মকর্তাদের মূল বেতন ৮২ হাজার টাকা। কোনো সচিব যদি জ্যেষ্ঠ সচিব হিসেবে অবসরে যান, তাঁর মূল বেতন ৭৮ হাজার থেকে বেড়ে ৮২ হাজার হবে এবং ৮২ হাজার টাকা মূল বেতন ধরে তাঁকে পেনশন সুবিধা দেওয়া হবে।
জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ফিরোজ মিয়ার মতে, অবসরের মাত্র দু-এক দিন আগে পদোন্নতি দেওয়ার সঙ্গে জনস্বার্থের বিষয়টি থাকে না। তিনি বলেন, ‘নির্দলীয় সরকার তাঁদের অনুগত এবং পছন্দের ব্যক্তিকে এমন পদোন্নতি দিচ্ছে কি না, তা দেখতে হবে। নিরপেক্ষভাবে এ সুবিধা না দেওয়া হলে সেটা অন্যায়। এভাবে পদোন্নতি দেওয়া হলে বেছে বেছে না দিয়ে যোগ্য সবাইকে দেওয়া উচিত। কারণ আগের সরকারের সময় দেখা গেছে, তাঁদের গুডবুকে থাকা কর্মকর্তারা এমন সুবিধা পেয়েছেন।’
জনস্বার্থে প্রয়োজনীয় না হলেও দলীয় সরকারের সময় অনুগত কর্মকর্তাদের অবসরে যাওয়ার ঠিক আগে পদোন্নতি দিয়ে আর্থিক সুবিধা দেওয়া হয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বদলে যাওয়ার পর আসা অন্তর্বর্তী সরকারও সে ধারা অব্যাহত রেখেছে। অবসরে যাওয়ার ঠিক আগে পদোন্নতি পেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মীর কিছু প্রাপ্তিযোগ ঘটলেও সরকারের কোনো লাভ হচ্ছে না।
অবসরের আগে আগে পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তাদের নিয়মিত চাকরি শেষে চুক্তিতে সরকারি প্রতিষ্ঠানে এবং সরাসরি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বড় পদে যোগ দেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়। সরকারের কাছ থেকে পাওয়া পেনশনেও বাড়তি আর্থিক সুবিধা ভোগ করেন তাঁরা।
চাকরির মেয়াদ কত দিন বাকি থাকতে ওপরের স্তরের পদে পদোন্নতি দেওয়া যাবে, তার নির্দিষ্ট নিয়ম নেই। ফলে সরকার চাইলে যেকোনো সময় যে কাউকে পদোন্নতি দিতে পারে। এ রকম পদোন্নতির পরিসংখ্যান জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে নেই। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের সময় অন্তত এক ডজন কর্মকর্তা অবসরে যাওয়ার ঠিক আগে সচিব, গ্রেড-১ এবং অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি পেয়েছেন।
গত বছরের ২৫ নভেম্বর বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকা (বেপজা) কর্তৃপক্ষের সদস্য, অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ ফারুক আলমকে সচিব পদে পদোন্নতি দিয়ে একই প্রজ্ঞাপনে ওএসডি করা হয়। ফলে পদোন্নতি পাওয়া পদে যোগ দেওয়ার সুযোগই পাননি তিনি। কিন্তু সচিবের বেতন স্কেল অনুযায়ী তাঁর পেনশন হিসাব করা হবে। গত বছরের ২১ নভেম্বর ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দিক, ২৫ নভেম্বর খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. হাবিবুর রহমান হোছাইনী, ২৯ ডিসেম্বর মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ টি এম মোস্তফা কামাল, ১২ ফেব্রুয়ারি প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. শেখাবুর রহমান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুল হাকিম, ১৮ ফেব্রুয়ারি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. রবিউল ইসলাম এবং ২ মার্চ ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. নায়েব আলী মণ্ডলকে অবসরে যাওয়ার ঠিক আগে গ্রেড-১ পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। অবসরে যাওয়ার সুবিধার জন্য তাঁদের পদোন্নতির প্রজ্ঞাপনেই ওএসডি করা হয়।
বিষয়টি নিয়ে জনপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের মধ্যে নানা ধরনের আলোচনা রয়েছে। তবে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে নাম-পরিচয় প্রকাশ করে কেউ মন্তব্য করতে রাজি হননি।
একজন অতিরিক্ত সচিব বলেন, একটি ব্যাচে প্রশাসন ক্যাডারের ১৫০ জন কর্মকর্তা থাকলে তাঁদের সঙ্গে ২৫ শতাংশ কোটায় অন্য ক্যাডার থেকে আরও কিছু কর্মকর্তা যোগ হন। তাঁদের মধ্যে অন্তত ৭০ জন কর্মকর্তা সচিব পদে পদোন্নতির যোগ্যতা অর্জন করেন; কিন্তু পদোন্নতি পান হাতে গোনা কয়েকজন। তিনি আরও বলেন, কাউকে যদি প্রাইজ প্রমোশন দেওয়া হয়, তা নিয়ে সমালোচনা হবেই। কিন্তু এসব নিয়ে কথা বললে জটিলতায় পড়তে হবে। কারণ এসব পদোন্নতিতে বিধিবিধানের কোনো লঙ্ঘন হয় না; কিন্তু এমন পদোন্নতি দেওয়া কতটুকু যৌক্তিক, সে প্রশ্ন আছে।
অবসরের আগে আগে পদোন্নতির বিষয় নিয়ে গত সরকারের সময় আলোচনা হয়েছিল। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব জানান, একজন কর্মকর্তাকে চাকরির শেষ সময়ে সচিব করে একটি মন্ত্রণালয়ে পদায়ন করা হয়েছিল। ওই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বিষয়টি জানতে পেরে তা নিয়ে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। তখন সরকারপ্রধান বলেন, চাকরির মেয়াদ দুই বছরের কম রয়েছে এমন কাউকে সচিব না করা হলেই ভালো হবে। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনার কথা কয়েকজন কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন। তবে এ নিয়ে কোনো লিখিত নির্দেশনা নেই।
কয়েকটি আলোচিত পদোন্নতি
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক মুস্তাকিম বিল্লাহ ফারুকীকে অবসরে যাওয়ার মাত্র দুই দিন আগে গত বছরের ৮ মে সচিব পদে পদোন্নতি দেয় সরকার। চাকরির মেয়াদ না থাকায় নতুন কোনো দপ্তরে তাঁকে পদায়ন না করে পদোন্নতির প্রজ্ঞাপনেই ওএসডি করা হয়।
স্থানীয় সরকার বিভাগে সংযুক্ত অতিরিক্ত সচিব মো. খাইরুল ইসলামকে গত বছরের ২ জুলাই পদোন্নতি সচিব করা হয়। কিন্তু একই প্রজ্ঞাপনে তাঁকে ওএসডি করা হয়। বিসিএস অডিট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস ক্যাডারের কর্মকর্তা খাইরুল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহকারী একান্ত সচিবের (এপিএস-১) দায়িত্বে ছিলেন। পদোন্নতির পর গত বছরের ১ অক্টোবর তাঁকে এক বছরের চুক্তিতে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী সদস্যপদে নিয়োগ দেয় সরকার।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমানকে অবসরে পাঠানোর আগের দিন ২০২৪ সালের ২৩ মে জ্যেষ্ঠ সচিব করা হয়। পরদিন তাঁকে চুক্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়।
২০১৬ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি কৃষি মন্ত্রণালয়ের বীজ উইংয়ের মহাপরিচালক আনোয়ার ফারুককে ভারপ্রাপ্ত কৃষিসচিব করা হয়। তখন অতিরিক্ত সচিবদের মধ্য থেকে প্রথমে ভারপ্রাপ্ত সচিব করে মন্ত্রণালয় বা বিভাগে বদলি করা হতো। এরপর আলাদা আদেশে সচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হতো। অবসরে যাওয়ার এক দিন আগে ২০১৬ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি আনোয়ার ফারুককে কৃষি মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব থেকে সচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। পরদিন চাকরি থেকে অবসরে যান তিনি।
এ পদোন্নতিতে যেসব লাভ
অবসরের ঠিক আগে সচিব, গ্রেড-১ বা অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতির পর আর কোনো দপ্তরে পদায়ন না হলেও কর্মকর্তারা আর্থিকভাবে লাভবান হন। সামাজিক মর্যাদাও বাড়ে। অবসরের পর বিভিন্ন করপোরেশন ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বড় পদে চাকরি পান তাঁরা।
বেতন কাঠামোয় সচিবদের মূল বেতন নির্ধারিত রয়েছে ৭৮ হাজার টাকা। আর অতিরিক্ত সচিবদের সর্বোচ্চ মূল বেতন ৭৬ হাজার ৪৯০ টাকা। কোনো অতিরিক্ত সচিব অবসরের আগে যত কম সময়ের জন্যই হোক, সচিব পদে পদোন্নতি পেলে তাঁর পেনশন সুবিধা ১ হাজার ৫১০ টাকা বেড়ে ৭৮ হাজার টাকায় হিসাব করা হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব, মুখ্য সচিব ও সমমর্যাদার কর্মকর্তাদের মূল বেতন ৮৬ হাজার টাকা। জ্যেষ্ঠ সচিব ও সমমর্যাদার কর্মকর্তাদের মূল বেতন ৮২ হাজার টাকা। কোনো সচিব যদি জ্যেষ্ঠ সচিব হিসেবে অবসরে যান, তাঁর মূল বেতন ৭৮ হাজার থেকে বেড়ে ৮২ হাজার হবে এবং ৮২ হাজার টাকা মূল বেতন ধরে তাঁকে পেনশন সুবিধা দেওয়া হবে।
জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ফিরোজ মিয়ার মতে, অবসরের মাত্র দু-এক দিন আগে পদোন্নতি দেওয়ার সঙ্গে জনস্বার্থের বিষয়টি থাকে না। তিনি বলেন, ‘নির্দলীয় সরকার তাঁদের অনুগত এবং পছন্দের ব্যক্তিকে এমন পদোন্নতি দিচ্ছে কি না, তা দেখতে হবে। নিরপেক্ষভাবে এ সুবিধা না দেওয়া হলে সেটা অন্যায়। এভাবে পদোন্নতি দেওয়া হলে বেছে বেছে না দিয়ে যোগ্য সবাইকে দেওয়া উচিত। কারণ আগের সরকারের সময় দেখা গেছে, তাঁদের গুডবুকে থাকা কর্মকর্তারা এমন সুবিধা পেয়েছেন।’
জনগুরুত্বপূর্ণ সব নাগরিক সেবা এক ছাতার নিচে আনতে নতুন একটি কমিশন গঠন করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। স্বাধীন এই কমিশনের অধীনে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি), জন্ম-মৃত্যু, বিবাহ ও বিবাহবিচ্ছেদ নিবন্ধন, ইউনিক আইডিসহ নাগরিক সেবার গুরুত্বপূর্ণ সব কাজ হবে।
৪ ঘণ্টা আগেআসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বাংলাদেশ রেলওয়ের আন্তনগর ট্রেনের অগ্রিম টিকিট অনলাইনে বিক্রি শুরু হতে পারে ১৪ মার্চ। এবারও সব অগ্রিম টিকিট বিক্রি হবে অনলাইনে। কাউন্টারে কোনো অগ্রিম টিকিট বিক্রি হবে না।
৭ ঘণ্টা আগেনির্বাচনের চূড়ান্ত তারিখ ঘোষণা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসই করবেন বলে জানিয়েছেন বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা তিনি।
৮ ঘণ্টা আগেপরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহত ও নিহত হয়েছেন তাদের পরিবারের সদস্যদেরকে স্কুলে ভর্তির ক্ষেত্রে একটি এককালীন সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছিল।
৯ ঘণ্টা আগে