সৌগত বসু, ঢাকা

দেশের সড়ক ও রেল যোগাযোগ খাতের জন্য চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনার মিশেলে ভরা একটি বছর ২০২৪ সাল। ৫ আগস্টের অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতার পালাবদল এই বছরকে দুই ভাগে ভাগ করেছে। নজিরবিহীন এই ঘটনায় ট্রাফিক ব্যবস্থার ভেঙে পড়ে। এর আগেই মেট্রোরেলে নাশকতার ঘটনা আতঙ্ক বাড়িয়ে দেয়। বছরজুড়েই ছিল সড়কে দুর্ঘটনায় দুঃসহ মৃত্যুর মিছিল। তবে বছরের শেষে রেলপথে নতুন সংযোগের উদ্যোগ কিছুটা আশার আলো দেখিয়েছে।
সড়কে মৃত্যুর মিছিল
দেশের সড়ক-মহাসড়কে প্রতিদিন ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হয়েছে, অসংখ্য মানুষ পঙ্গু হয়েছে। রোড সেফটি ফাউন্ডেশন বলছে, ২০২৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ১১ মাসে সড়কে ঘটে গেছে ৬ হাজার ৪৭৪টি দুর্ঘটনা। এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৬ হাজার ৫৯৯ জন, আহত হয়েছেন ১১ হাজার ০৬১ জন। গড়ে প্রতিদিন প্রায় ২০ জন মানুষের প্রাণ ঝরেছে সড়কে।
নিহতের বড় অংশই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার শিকার। একইসঙ্গে বাস-ট্রাক-প্রাইভেটকারের ত্রিমুখী সংঘর্ষ, অটোরিকশা ও ইজিবাইক দুর্ঘটনাও প্রতিদিন প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে। সড়ক ব্যবস্থাপনায় চরম দুর্বলতা আর নানাবিধ ত্রুটি দুর্ঘটনার মূল কারণ হিসেবে সামনে এসেছে।
বছরের শেষ মাসেও সড়কে রক্ত ঝরেছে। ২৭ ডিসেম্বর ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের ধলেশ্বরী টোলপ্লাজায় টোল পরিশোধে দাঁড়িয়ে থাকা প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল ও মাইক্রোবাসকে একটি বেপরোয়া বাস ধাক্কা দেয়। এতে পাঁচজন নিহত এবং ১০ জন আহত হন। ২২ ডিসেম্বর ঘন কুয়াশার কারণে শ্রীনগরের শিংপাড়া এলাকায় সাতটি গাড়ির সংঘর্ষ ঘটে। এতে একজন নিহত এবং অন্তত ১০ জন আহত হন। ২৩ ডিসেম্বর একই এক্সপ্রেসওয়ের ধলেশ্বরী টোলপ্লাজার কাছে ঘন কুয়াশার মধ্যে প্রাইভেটকারের পেছনে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় এক নারী নিহত এবং পাঁচজন আহত হন। ২৬ ডিসেম্বর নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ সড়কে ট্রাক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে স্বামী-স্ত্রীসহ চারজন নিহত হন।
ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, চালকদের অদক্ষতা, বেপরোয়া গতি, শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা এবং বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকার পাশাপাশি মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল এবং ট্রাফিক আইন না মানার প্রবণতাই দুর্ঘটনার মূল কারণ হিসেবে উঠে এসেছে।
সরকার পতনের পর সড়কে বিশৃঙ্খলার রাজত্ব
২০২৪ সালে রাজধানীর সড়ক ব্যবস্থাপনা যেন নিয়ন্ত্রণহীন এক মহাযুদ্ধের ময়দানে পরিণত হয়।’ নগর পরিবহন’ সেবা শৃঙ্খলা ফেরানোর প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বন্ধ হয়ে যায়। ই-টিকেটিং পদ্ধতির আশা ছিল বাস ভাড়া নৈরাজ্য কমাবে, কিন্তু বছরের শুরুতেই তা মিলিয়ে যায়।
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ঢাকার সড়ক যেন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ হারায়। রাজধানী দখল করে নেয় অবৈধ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। পার্শ্ববর্তী জেলাগুলো থেকে ঢাকায় ঢুকে পড়ে হাজার হাজার অটোরিকশা, যা ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাকে পঙ্গু করে দেয়। প্রশাসনের একাধিক নিষেধাজ্ঞা ও অভিযানের পরও এগুলো নির্বিঘ্নে ফ্লাইওভার ও ভিআইপি সড়কে চলাচল শুরু করে। এমনকি সরকারি উদ্যোগও অটোরিকশার অবৈধ দৌরাত্ম্য রুখতে ব্যর্থ হয়েছে।
সড়কের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা এতটাই ভেঙে পড়ে যে, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে শিক্ষার্থীদের রাস্তায় নামতে হয়। রাজধানীর শাহবাগ, কাকরাইল, মহাখালী, বনানীসহ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে একের পর এক সড়ক অবরোধের ঘটনায় যানজট দুর্বিষহ দুঃস্বপ্নে রূপ নেয়। আন্দোলনকারীদের অবরোধ আর ট্রাফিক পুলিশের ব্যর্থতায় ঢাকার সড়ক একপ্রকার অচল হয়ে পড়ে। তবে বছরের শেষ দিকে আন্দোলন ও সড়ক অবরোধ কিছুটা কমায় ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় সামান্য উন্নতির আভাস পাওয়া যায়।
মেট্রোরেল ও বিআরটিএ ভবনে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ
২০২৪ সালের জুলাই মাস ছিল ঢাকার ইতিহাসে এক ভয়াবহ অধ্যায়, যেখানে সড়ক ও রেলপথে সেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি বিআরটিএ ভবন ও মেট্রোরেল স্টেশনে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে তাণ্ডব চলে, পাশাপাশি পরিষেবা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও হামলা হয়।
মেট্রোরেলে তাণ্ডব
১৮ জুলাই ঢাকার মিরপুর-১০ এলাকায় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষের পর সেখানকার পুলিশ বক্সে আগুন দেওয়া হয়। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে মিরপুর-১০ ফুটওভার ব্রিজের ওপর মেট্রোরেল স্টেশনে। ১৯ জুলাই মেট্রোরেলের মিরপুর-১০, কাজীপাড়া এবং শেওড়াপাড়া স্টেশনে ভাঙচুর চালানো হয়। পুরো মেট্রোরেল সেবা বন্ধ হয়। সেবা বন্ধ থাকার পর প্রায় ৩৭ দিন ধরে ঢাকার মেট্রোযাত্রীদের স্বাভাবিক জীবনে ছন্দপতন ঘটে। রাজধানীজুড়ে যানজটের তীব্রতা বাড়ে, মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়ে।
বিআরটিএ ভবনে আগুন
১৯ জুলাই দুপুরে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ-এর (বিআরটিএ) বনানীতে প্রধান কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়। মিরপুরে বিআরটিএ ভবনের ভেতরে দুর্বৃত্তরা ভাঙচুর চালানোর পাশাপাশি অগ্নিসংযোগ করে। হামলার ফলে বিআরটিএর মোটরযান রেজিস্ট্রেশন, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ফিটনেস সনদ ও মালিকানা পরিবর্তনসহ সব ধরনের সেবা প্রায় এক মাস বন্ধ থাকে।
সেতু ভবনে হামলা
১৮ ও ১৯ জুলাই বনানীর সেতু ভবনে হামলা চালিয়ে যানবাহনসহ ভবনের নিচতলায় অগ্নিসংযোগ করা হয়। হামলার তাণ্ডব শেষে ৫৫টি গাড়ি সম্পূর্ণভাবে পুড়ে যায়। ভবনের বঙ্গবন্ধু কর্নার, অভ্যর্থনা কেন্দ্র, মিলনায়তনসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। পুরো সেতু ভবনও পুড়ে যায়। এতে বিপুল ক্ষতি হয় প্রতিষ্ঠানটির।
জোড়াতালির বিআরটি চালু
কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই বছরের শেষ দিকে জোড়াতালি দিয়ে বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের বাস পরিষেবা চালু করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। ৪ হাজার ২৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্পে নিজস্ব কোম্পানির বাস চলার কথা থাকলেও বিআরটিসির ১০টি এসি বাস চালানো হয়েছে। এছাড়া প্রকল্পের ২৫টি স্টেশনের কোনোটিরই কাজ এখনো শেষ হয়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাসভিত্তিক দ্রুত গতির পরিবহন বিআরটি। এর জন্য বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করা হয়েছে। কিন্তু তার বদলে বিআরটিসি বাস নামানো এক ধরনের ‘তামাশা।’
মেট্রোরেলে টিকিট সংকট
বছরের শুরুতে ২০ জানুয়ারি মেট্রোরেল পুরোপুরি উত্তরা থেকে মতিঝিল চলাচল শুরু করে। রাজধানীর যোগাযোগব্যবস্থায় নতুন গতি আনা এই পরিবহন ব্যবস্থায় যাত্রীদের জন্য দুই ধরনের টিকিট রয়েছে। একটি হলো এমআরটি পাস বা র্যাপিড পাস, অন্যটি একক যাত্রার টিকিট। র্যাপিড পাস কেনা যাত্রীরা টাকা না ফুরানো পর্যন্ত যেকোনো সময় যাত্রা করতে পারেন। আর একক যাত্রা করা যাত্রীদের স্টেশন থেকে তাৎক্ষণিক টিকিট কিনে যাত্রা করতে হয়। তবে বছরের শেষ দিকে একক যাত্রার টিকিট সংকটে পড়ে মেট্রোরেল। এর জন্য সাময়িক বন্ধ রাখতে হয় স্টেশনগুলো।
গত অক্টোবরে ডিএমটিসিএল জানায়, ২ লাখ ৪০ হাজারের মতো একক যাত্রার টিকিট খোয়া গেছে বা নষ্ট হয়েছে। খোয়া যাওয়া টিকিটগুলো যাত্রীরা ফেরত না দিয়ে স্টেশন থেকে বেরিয়ে গেছেন।
বন্ধ ঢাকা-কলকাতা ট্রেন চলাচল
জুলাই মাসে বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলনের জেরে সৃষ্ট অস্থিরতার কারণে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে চলাচলকারী মৈত্রী এক্সপ্রেস, বন্ধন এক্সপ্রেস এবং মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়।
১ আগস্ট স্বল্প দূরত্বের ট্রেনগুলো চালু হয়, কিন্তু আন্দোলন তীব্র হওয়ায় ৩ আগস্ট ফের বন্ধ করে দেওয়া হয়। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ১২ আগস্ট মালবাহী ট্রেন আবার চালু হয়। ১২ আগস্ট থেকে মেইল, এক্সপ্রেস, লোকাল ও কমিউটার ট্রেন চলাচল শুরু করে। আন্তঃনগর ট্রেন সার্ভিস আবার চালু হয় ১৫ আগস্ট থেকে। বাংলাদেশ রেলওয়ে যাত্রীসেবা ফের চালু করার জন্য কয়েকবার চেষ্টা করলেও ইন্ডিয়ান রেলওয়ে বোর্ড তাদের পক্ষ থেকে অনুমতি দেয়নি।
পদ্মা সেতু রেলসংযোগ পুরোপুরি চালু
ঢাকা-ভাঙ্গা অংশ উদ্বোধনের ১৪ মাস পর গত ২৪ ডিসেম্বর পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্প পূর্ণাঙ্গরূপে চালু হয়। প্রায় ৩৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের নতুন এই রেলপথে ঢাকা থেকে খুলনা, যশোর ও বেনাপোল রুটে বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। যাত্রীসেবা বাড়াতে দুটি রুটে ‘জাহানাবাদ এক্সপ্রেস’ এবং ‘রূপসী বাংলা’ নামের দুটি আন্তনগর ট্রেনও যুক্ত হয়েছে। কিন্তু নাম ভিন্ন হলেও ইঞ্জিন-কোচের সংকটে ট্রেন দুটি চলবে একটি রেক দিয়ে। নতুন রেলপথে ঢাকা থেকে খুলনায় ট্রেনে যেতে লাগবে পৌনে চার ঘণ্টা, যেখানে বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে এই যাত্রায় সময় লাগে সাড়ে ৯ ঘণ্টা। বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে বেনাপোলে যেতে ট্রেনে সময় লাগে সাড়ে সাত ঘণ্টা। নতুন রেলপথে যেতে লাগবে সাড়ে তিন ঘণ্টা।
শ্বেতপত্রে উঠে আসে বেহিসাবি খরচ
পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, পদ্মাসেতু রেল সংযোগ প্রকল্প, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী টানেল ও দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ— যোগাযোগ খাতের এই পাঁচ মেগা প্রকল্পে সব মিলে ব্যয় বেড়েছে ৫৬ হাজার ৬০৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের এসব প্রকল্পে খরচ হয়েছে প্রাথমিক খরচের চেয়ে অনেক বেশি। দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থা তুলে ধরা শ্বেতপত্রে মেগা প্রকল্পের খরচের এমন চিত্র উঠে এসেছে। শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি বলেছে, কয়েকটি প্রকল্প এখনো শেষ হয়নি। ফলে খরচ আরও বাড়তে পারে।

দেশের সড়ক ও রেল যোগাযোগ খাতের জন্য চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনার মিশেলে ভরা একটি বছর ২০২৪ সাল। ৫ আগস্টের অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতার পালাবদল এই বছরকে দুই ভাগে ভাগ করেছে। নজিরবিহীন এই ঘটনায় ট্রাফিক ব্যবস্থার ভেঙে পড়ে। এর আগেই মেট্রোরেলে নাশকতার ঘটনা আতঙ্ক বাড়িয়ে দেয়। বছরজুড়েই ছিল সড়কে দুর্ঘটনায় দুঃসহ মৃত্যুর মিছিল। তবে বছরের শেষে রেলপথে নতুন সংযোগের উদ্যোগ কিছুটা আশার আলো দেখিয়েছে।
সড়কে মৃত্যুর মিছিল
দেশের সড়ক-মহাসড়কে প্রতিদিন ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হয়েছে, অসংখ্য মানুষ পঙ্গু হয়েছে। রোড সেফটি ফাউন্ডেশন বলছে, ২০২৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ১১ মাসে সড়কে ঘটে গেছে ৬ হাজার ৪৭৪টি দুর্ঘটনা। এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৬ হাজার ৫৯৯ জন, আহত হয়েছেন ১১ হাজার ০৬১ জন। গড়ে প্রতিদিন প্রায় ২০ জন মানুষের প্রাণ ঝরেছে সড়কে।
নিহতের বড় অংশই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার শিকার। একইসঙ্গে বাস-ট্রাক-প্রাইভেটকারের ত্রিমুখী সংঘর্ষ, অটোরিকশা ও ইজিবাইক দুর্ঘটনাও প্রতিদিন প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে। সড়ক ব্যবস্থাপনায় চরম দুর্বলতা আর নানাবিধ ত্রুটি দুর্ঘটনার মূল কারণ হিসেবে সামনে এসেছে।
বছরের শেষ মাসেও সড়কে রক্ত ঝরেছে। ২৭ ডিসেম্বর ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের ধলেশ্বরী টোলপ্লাজায় টোল পরিশোধে দাঁড়িয়ে থাকা প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল ও মাইক্রোবাসকে একটি বেপরোয়া বাস ধাক্কা দেয়। এতে পাঁচজন নিহত এবং ১০ জন আহত হন। ২২ ডিসেম্বর ঘন কুয়াশার কারণে শ্রীনগরের শিংপাড়া এলাকায় সাতটি গাড়ির সংঘর্ষ ঘটে। এতে একজন নিহত এবং অন্তত ১০ জন আহত হন। ২৩ ডিসেম্বর একই এক্সপ্রেসওয়ের ধলেশ্বরী টোলপ্লাজার কাছে ঘন কুয়াশার মধ্যে প্রাইভেটকারের পেছনে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় এক নারী নিহত এবং পাঁচজন আহত হন। ২৬ ডিসেম্বর নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ সড়কে ট্রাক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে স্বামী-স্ত্রীসহ চারজন নিহত হন।
ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, চালকদের অদক্ষতা, বেপরোয়া গতি, শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা এবং বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকার পাশাপাশি মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল এবং ট্রাফিক আইন না মানার প্রবণতাই দুর্ঘটনার মূল কারণ হিসেবে উঠে এসেছে।
সরকার পতনের পর সড়কে বিশৃঙ্খলার রাজত্ব
২০২৪ সালে রাজধানীর সড়ক ব্যবস্থাপনা যেন নিয়ন্ত্রণহীন এক মহাযুদ্ধের ময়দানে পরিণত হয়।’ নগর পরিবহন’ সেবা শৃঙ্খলা ফেরানোর প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বন্ধ হয়ে যায়। ই-টিকেটিং পদ্ধতির আশা ছিল বাস ভাড়া নৈরাজ্য কমাবে, কিন্তু বছরের শুরুতেই তা মিলিয়ে যায়।
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ঢাকার সড়ক যেন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ হারায়। রাজধানী দখল করে নেয় অবৈধ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। পার্শ্ববর্তী জেলাগুলো থেকে ঢাকায় ঢুকে পড়ে হাজার হাজার অটোরিকশা, যা ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাকে পঙ্গু করে দেয়। প্রশাসনের একাধিক নিষেধাজ্ঞা ও অভিযানের পরও এগুলো নির্বিঘ্নে ফ্লাইওভার ও ভিআইপি সড়কে চলাচল শুরু করে। এমনকি সরকারি উদ্যোগও অটোরিকশার অবৈধ দৌরাত্ম্য রুখতে ব্যর্থ হয়েছে।
সড়কের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা এতটাই ভেঙে পড়ে যে, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে শিক্ষার্থীদের রাস্তায় নামতে হয়। রাজধানীর শাহবাগ, কাকরাইল, মহাখালী, বনানীসহ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে একের পর এক সড়ক অবরোধের ঘটনায় যানজট দুর্বিষহ দুঃস্বপ্নে রূপ নেয়। আন্দোলনকারীদের অবরোধ আর ট্রাফিক পুলিশের ব্যর্থতায় ঢাকার সড়ক একপ্রকার অচল হয়ে পড়ে। তবে বছরের শেষ দিকে আন্দোলন ও সড়ক অবরোধ কিছুটা কমায় ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় সামান্য উন্নতির আভাস পাওয়া যায়।
মেট্রোরেল ও বিআরটিএ ভবনে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ
২০২৪ সালের জুলাই মাস ছিল ঢাকার ইতিহাসে এক ভয়াবহ অধ্যায়, যেখানে সড়ক ও রেলপথে সেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি বিআরটিএ ভবন ও মেট্রোরেল স্টেশনে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে তাণ্ডব চলে, পাশাপাশি পরিষেবা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও হামলা হয়।
মেট্রোরেলে তাণ্ডব
১৮ জুলাই ঢাকার মিরপুর-১০ এলাকায় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষের পর সেখানকার পুলিশ বক্সে আগুন দেওয়া হয়। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে মিরপুর-১০ ফুটওভার ব্রিজের ওপর মেট্রোরেল স্টেশনে। ১৯ জুলাই মেট্রোরেলের মিরপুর-১০, কাজীপাড়া এবং শেওড়াপাড়া স্টেশনে ভাঙচুর চালানো হয়। পুরো মেট্রোরেল সেবা বন্ধ হয়। সেবা বন্ধ থাকার পর প্রায় ৩৭ দিন ধরে ঢাকার মেট্রোযাত্রীদের স্বাভাবিক জীবনে ছন্দপতন ঘটে। রাজধানীজুড়ে যানজটের তীব্রতা বাড়ে, মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়ে।
বিআরটিএ ভবনে আগুন
১৯ জুলাই দুপুরে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ-এর (বিআরটিএ) বনানীতে প্রধান কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়। মিরপুরে বিআরটিএ ভবনের ভেতরে দুর্বৃত্তরা ভাঙচুর চালানোর পাশাপাশি অগ্নিসংযোগ করে। হামলার ফলে বিআরটিএর মোটরযান রেজিস্ট্রেশন, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ফিটনেস সনদ ও মালিকানা পরিবর্তনসহ সব ধরনের সেবা প্রায় এক মাস বন্ধ থাকে।
সেতু ভবনে হামলা
১৮ ও ১৯ জুলাই বনানীর সেতু ভবনে হামলা চালিয়ে যানবাহনসহ ভবনের নিচতলায় অগ্নিসংযোগ করা হয়। হামলার তাণ্ডব শেষে ৫৫টি গাড়ি সম্পূর্ণভাবে পুড়ে যায়। ভবনের বঙ্গবন্ধু কর্নার, অভ্যর্থনা কেন্দ্র, মিলনায়তনসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। পুরো সেতু ভবনও পুড়ে যায়। এতে বিপুল ক্ষতি হয় প্রতিষ্ঠানটির।
জোড়াতালির বিআরটি চালু
কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই বছরের শেষ দিকে জোড়াতালি দিয়ে বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের বাস পরিষেবা চালু করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। ৪ হাজার ২৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্পে নিজস্ব কোম্পানির বাস চলার কথা থাকলেও বিআরটিসির ১০টি এসি বাস চালানো হয়েছে। এছাড়া প্রকল্পের ২৫টি স্টেশনের কোনোটিরই কাজ এখনো শেষ হয়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাসভিত্তিক দ্রুত গতির পরিবহন বিআরটি। এর জন্য বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করা হয়েছে। কিন্তু তার বদলে বিআরটিসি বাস নামানো এক ধরনের ‘তামাশা।’
মেট্রোরেলে টিকিট সংকট
বছরের শুরুতে ২০ জানুয়ারি মেট্রোরেল পুরোপুরি উত্তরা থেকে মতিঝিল চলাচল শুরু করে। রাজধানীর যোগাযোগব্যবস্থায় নতুন গতি আনা এই পরিবহন ব্যবস্থায় যাত্রীদের জন্য দুই ধরনের টিকিট রয়েছে। একটি হলো এমআরটি পাস বা র্যাপিড পাস, অন্যটি একক যাত্রার টিকিট। র্যাপিড পাস কেনা যাত্রীরা টাকা না ফুরানো পর্যন্ত যেকোনো সময় যাত্রা করতে পারেন। আর একক যাত্রা করা যাত্রীদের স্টেশন থেকে তাৎক্ষণিক টিকিট কিনে যাত্রা করতে হয়। তবে বছরের শেষ দিকে একক যাত্রার টিকিট সংকটে পড়ে মেট্রোরেল। এর জন্য সাময়িক বন্ধ রাখতে হয় স্টেশনগুলো।
গত অক্টোবরে ডিএমটিসিএল জানায়, ২ লাখ ৪০ হাজারের মতো একক যাত্রার টিকিট খোয়া গেছে বা নষ্ট হয়েছে। খোয়া যাওয়া টিকিটগুলো যাত্রীরা ফেরত না দিয়ে স্টেশন থেকে বেরিয়ে গেছেন।
বন্ধ ঢাকা-কলকাতা ট্রেন চলাচল
জুলাই মাসে বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলনের জেরে সৃষ্ট অস্থিরতার কারণে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে চলাচলকারী মৈত্রী এক্সপ্রেস, বন্ধন এক্সপ্রেস এবং মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়।
১ আগস্ট স্বল্প দূরত্বের ট্রেনগুলো চালু হয়, কিন্তু আন্দোলন তীব্র হওয়ায় ৩ আগস্ট ফের বন্ধ করে দেওয়া হয়। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ১২ আগস্ট মালবাহী ট্রেন আবার চালু হয়। ১২ আগস্ট থেকে মেইল, এক্সপ্রেস, লোকাল ও কমিউটার ট্রেন চলাচল শুরু করে। আন্তঃনগর ট্রেন সার্ভিস আবার চালু হয় ১৫ আগস্ট থেকে। বাংলাদেশ রেলওয়ে যাত্রীসেবা ফের চালু করার জন্য কয়েকবার চেষ্টা করলেও ইন্ডিয়ান রেলওয়ে বোর্ড তাদের পক্ষ থেকে অনুমতি দেয়নি।
পদ্মা সেতু রেলসংযোগ পুরোপুরি চালু
ঢাকা-ভাঙ্গা অংশ উদ্বোধনের ১৪ মাস পর গত ২৪ ডিসেম্বর পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্প পূর্ণাঙ্গরূপে চালু হয়। প্রায় ৩৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের নতুন এই রেলপথে ঢাকা থেকে খুলনা, যশোর ও বেনাপোল রুটে বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। যাত্রীসেবা বাড়াতে দুটি রুটে ‘জাহানাবাদ এক্সপ্রেস’ এবং ‘রূপসী বাংলা’ নামের দুটি আন্তনগর ট্রেনও যুক্ত হয়েছে। কিন্তু নাম ভিন্ন হলেও ইঞ্জিন-কোচের সংকটে ট্রেন দুটি চলবে একটি রেক দিয়ে। নতুন রেলপথে ঢাকা থেকে খুলনায় ট্রেনে যেতে লাগবে পৌনে চার ঘণ্টা, যেখানে বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে এই যাত্রায় সময় লাগে সাড়ে ৯ ঘণ্টা। বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে বেনাপোলে যেতে ট্রেনে সময় লাগে সাড়ে সাত ঘণ্টা। নতুন রেলপথে যেতে লাগবে সাড়ে তিন ঘণ্টা।
শ্বেতপত্রে উঠে আসে বেহিসাবি খরচ
পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, পদ্মাসেতু রেল সংযোগ প্রকল্প, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী টানেল ও দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ— যোগাযোগ খাতের এই পাঁচ মেগা প্রকল্পে সব মিলে ব্যয় বেড়েছে ৫৬ হাজার ৬০৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের এসব প্রকল্পে খরচ হয়েছে প্রাথমিক খরচের চেয়ে অনেক বেশি। দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থা তুলে ধরা শ্বেতপত্রে মেগা প্রকল্পের খরচের এমন চিত্র উঠে এসেছে। শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি বলেছে, কয়েকটি প্রকল্প এখনো শেষ হয়নি। ফলে খরচ আরও বাড়তে পারে।

আগামী জাতীয় সংসদ নিয়মিত সংসদের পাশাপাশি সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের (৯ মাস) মধ্যে জুলাই সনদের সংবিধানসংক্রান্ত বিষয়গুলো সংবিধানে যুক্ত করবে বলে মতৈক্য হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা সম্পন্ন করার বিষয়টি কীভাবে নিশ্চিত হবে, গতকাল শনিবার পর্যন্ত তার কিনারা করতে পারেনি...
১৬ মিনিট আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন, ২০২৫-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। গত বৃহস্পতিবার সংশোধিত আরপিও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে পরিষদে অনুমোদন দেওয়া হয়।
৪ ঘণ্টা আগে
বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, গুমের বিচার বাস্তবায়নে বিচারকদের সাহসী ও ন্যায্য ভূমিকা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা ও দৃঢ় অবস্থানই একদিন বাংলাদেশ থেকে গুমের সংস্কৃতি নির্মূল করবে।
৭ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেছেন, নিয়োগ পেলে চীনা কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত ঝুঁকিগুলো স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে তিনি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবেন। গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটিতে তাঁর
৭ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

আগামী জাতীয় সংসদ নিয়মিত সংসদের পাশাপাশি সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের (৯ মাস) মধ্যে জুলাই সনদের সংবিধানসংক্রান্ত বিষয়গুলো সংবিধানে যুক্ত করবে বলে মতৈক্য হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা সম্পন্ন করার বিষয়টি কীভাবে নিশ্চিত হবে, গতকাল শনিবার পর্যন্ত তার কিনারা করতে পারেনি জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। বৃহস্পতিবারের পর ঐকমত্য কমিশন গতকালও বিশেষজ্ঞদের নিয়ে বৈঠক করলেও কোনো সমাধান মেলেনি। এমন প্রেক্ষাপটে আজ রোববার কমিশন আবার নিজেরা বৈঠক করবে এবং প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আবার বসবে।
ঐকমত্য কমিশনের জাতীয় সংসদ ভবনের কার্যালয়ে গতকাল বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠকটি বেলা দেড়টার পর শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৬টার পরে শেষ হয়। প্রায় চার ঘণ্টার বৈঠকেও সংবিধান নিয়ে সময়সীমার মধ্যে কাজ শেষ করার উপায় বের হয়নি।
সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত জুলাই সনদ বাস্তবায়নে কমিশনের সিদ্ধান্ত হলো, গণ-অভ্যুত্থানকে ভিত্তি ধরে প্রথমে ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন (সংবিধান সংস্কার) আদেশ’ নামে একটি আদেশ জারি করা হবে। তার অধীনে জারি হবে গণভোট-বিষয়ক একটি অধ্যাদেশ। এর ভিত্তিতেই হবে গণভোট। একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত (২৭০ দিন বা প্রথম ৯ মাস) আগামী সংসদ কাজ করবে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে। এ সময়ের মধ্যেই সংবিধান-সংক্রান্ত সংস্কার প্রস্তাবগুলো সংসদে অনুমোদন করা হবে। প্রসঙ্গত, একই সময় এ পরিষদ নিয়মিত সংসদ হিসেবেও কাজ করবে। সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতায়ই সংবিধান সংস্কার হবে।
গতকালের আলোচনা বিষয়ে একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘সংসদ সদস্যরা ২৭০ দিনের মধ্যে বাস্তবায়ন না করলে সনদে থাকা বিষয়গুলো কী হবে—সেখানেই আটকে যাচ্ছে আলোচনা। কারণ আমরা তেমন সমাধান দিতে পারছি না। দেশে অতীতে এ-সংক্রান্ত কোনো উদাহরণ নেই। দেশের বাইরেও এ ধরনের উদাহরণ পাইনি।’
কোনো দল আগামী নির্বাচনে সরকার গঠনে প্রয়োজনীয় দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে সংবিধান সংস্কার কীভাবে হবে, এ প্রশ্নও আছে। বিষয়টি তখন মূলত নির্ভর করবে বেশি আসন পাওয়া কয়েকটি দলের সদিচ্ছার ওপর। কিন্তু কমিশন চাইছে এ অনিশ্চয়তার অবকাশ না রেখে এমন কোনো বিধান করা, যা সনদ বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা দেবে।
গতকালের বৈঠকে বিশেষজ্ঞরা একাধিক মত দিয়ে বলেছেন, সেগুলো আইনগত ও রাজনৈতিকভাবে পুরোপুরি গ্রহণযোগ্য বলে মনে করেন না তাঁ। একটি মত হলো,নির্ধারিত সময়ে সংস্কার বাস্তবায়ন করা না হলে সংসদ বিলুপ্ত হয়ে যাবে। এটি আইনগতভাবে ঠিক হলেও রাজনৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য হবে না বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। সংসদ এভাবে বিলুপ্ত হলে নতুন সংকট তৈরি হতে পারে বলে মনে করেন তাঁরা।
আরও যে কয়েকটি মত গতকাল এসেছে তার মধ্যে রয়েছে, প্রথমত, পরিষদে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সনদের বিষয়গুলো বাস্তবায়ন না হলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে যুক্ত হয়ে যাওয়া এবং দ্বিতীয়ত, আগে সংবিধান সংস্কার পরিষদ বৈঠকে বসে সনদের সংযুক্তি বাস্তবায়ন করবে এবং তারপর সংসদ বসবে। কিন্তু এগুলোও কার্যকর বা বাস্তবসম্মত মনে করেননি বিশেষজ্ঞদের সবাই।
একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, সময়সীমার মধ্যে না সম্পন্ন করলে আপনা থেকেই সংবিধানে বিষয়গুলো যুক্ত হওয়ার ধারণা বাস্তবসম্মত না। কারণ বিলগুলোর খসড়া তৈরি করা নেই। এটা করা বিশেষজ্ঞদের কাজ না। সংসদে আলোচনা করে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাই এ সিদ্ধান্ত নেবেন। তিনি আরও বলেন, সনদের একটি বিধান হচ্ছে, মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ করা হবে। কিন্তু কোন মৌলিক অধিকারটি সম্প্রসারণ করা হবে, তা বলা নেই। সংসদ সদস্যদের আলোচনা করে এ সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ওই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘এসব কারণে আমরা সিদ্ধান্ত দিতে পারিনি। কমিশন জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে তাঁরা বৈঠক করবেন, প্রয়োজনে আমাদের সহযোগিতা নেবেন।’
গতকালের বৈঠকে আগে সংবিধান সংস্কার পরিষদ বসে বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করার যে প্রস্তাব আসে তার পক্ষে বলা হয়, এতে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা দ্রুত সনদ বাস্তবায়নে কাজ করবেন। কারণ তাঁরা বিলম্ব না করে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিতে চাইবেন। একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, প্রস্তাবটি নিয়ে আলোচনা হলেও বেশির ভাগের মত, এটিও বাস্তবসম্মত নয়। কারণ জনপ্রতিনিধিদের শপথের মাধ্যমে সংসদ গঠিত না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারকে দায়িত্বে থেকে যেতে হবে। এটা প্রধান উপদেষ্টাই মানবেন না।
এ অবস্থায় সমাধান কী হতে পারে, এমন প্রশ্নের জবাবে ওই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘আমরা আদৌ কোনো বাধ্যবাধকতা তৈরি করে দিতে পারব কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। কারণ এমন আইনি ও রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্য সমাধান পাইনি। তাই বিষয়টি আমাদের সুপারিশে না-ও থাকতে পারে।’
সনদ-বিষয়ক আদেশের খুঁটিনাটি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। গণভোটের দিনক্ষণ সরকারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
কমিশন সূত্র জানায়, আজ সকালে নিজেরা বৈঠক করার পর প্রয়োজন হলে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গেও আবার বৈঠক করা হবে। ৩১ অক্টোবরের মেয়াদের মধ্যেই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে সুপারিশ চূড়ান্ত করতে চায় কমিশন।
এনসিপির সঙ্গে বৈঠক
গতকাল বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বসার আগে কমিশনের সদস্যরা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে বৈঠক করেন। ১৭ অক্টোবর জুলাই সনদের স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হলেও দলটি সই করেনি। এনসিপি বলেছিল, বাস্তবায়নের আদেশের চূড়ান্ত খসড়া না দেখে তারা স্বাক্ষর করবে না।
কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, গতকালের বৈঠকে এনসিপির প্রতিনিধিরা ‘স্পষ্টভাবে’ জানিয়েছেন যে তাঁরা স্বাক্ষর করতে চান। তাঁরা কিছু প্রস্তাব দিয়েছেন, যা কমিশন আইনি বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠিয়েছে। এনসিপির প্রস্তাবে ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুই দিকই আছে। সেই বিষয়গুলো বিবেচনা করে কমিশন এগোচ্ছে। মূল লক্ষ্য হচ্ছে, যেন সবাই স্বাক্ষরের দিকে আসে।
বিশেষজ্ঞ হিসেবে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এম এ মতিন, সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ড. শরিফ ভূইয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন মোহাম্মদ ইকরামুল হক, ব্যারিস্টার ইমরান সিদ্দিক ও ব্যারিস্টার তানিম হোসেইন শাওন।
আলোচনায় কমিশনের পক্ষে অংশ নেন সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান ও ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

আগামী জাতীয় সংসদ নিয়মিত সংসদের পাশাপাশি সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের (৯ মাস) মধ্যে জুলাই সনদের সংবিধানসংক্রান্ত বিষয়গুলো সংবিধানে যুক্ত করবে বলে মতৈক্য হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা সম্পন্ন করার বিষয়টি কীভাবে নিশ্চিত হবে, গতকাল শনিবার পর্যন্ত তার কিনারা করতে পারেনি জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। বৃহস্পতিবারের পর ঐকমত্য কমিশন গতকালও বিশেষজ্ঞদের নিয়ে বৈঠক করলেও কোনো সমাধান মেলেনি। এমন প্রেক্ষাপটে আজ রোববার কমিশন আবার নিজেরা বৈঠক করবে এবং প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আবার বসবে।
ঐকমত্য কমিশনের জাতীয় সংসদ ভবনের কার্যালয়ে গতকাল বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠকটি বেলা দেড়টার পর শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৬টার পরে শেষ হয়। প্রায় চার ঘণ্টার বৈঠকেও সংবিধান নিয়ে সময়সীমার মধ্যে কাজ শেষ করার উপায় বের হয়নি।
সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত জুলাই সনদ বাস্তবায়নে কমিশনের সিদ্ধান্ত হলো, গণ-অভ্যুত্থানকে ভিত্তি ধরে প্রথমে ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন (সংবিধান সংস্কার) আদেশ’ নামে একটি আদেশ জারি করা হবে। তার অধীনে জারি হবে গণভোট-বিষয়ক একটি অধ্যাদেশ। এর ভিত্তিতেই হবে গণভোট। একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত (২৭০ দিন বা প্রথম ৯ মাস) আগামী সংসদ কাজ করবে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে। এ সময়ের মধ্যেই সংবিধান-সংক্রান্ত সংস্কার প্রস্তাবগুলো সংসদে অনুমোদন করা হবে। প্রসঙ্গত, একই সময় এ পরিষদ নিয়মিত সংসদ হিসেবেও কাজ করবে। সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতায়ই সংবিধান সংস্কার হবে।
গতকালের আলোচনা বিষয়ে একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘সংসদ সদস্যরা ২৭০ দিনের মধ্যে বাস্তবায়ন না করলে সনদে থাকা বিষয়গুলো কী হবে—সেখানেই আটকে যাচ্ছে আলোচনা। কারণ আমরা তেমন সমাধান দিতে পারছি না। দেশে অতীতে এ-সংক্রান্ত কোনো উদাহরণ নেই। দেশের বাইরেও এ ধরনের উদাহরণ পাইনি।’
কোনো দল আগামী নির্বাচনে সরকার গঠনে প্রয়োজনীয় দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে সংবিধান সংস্কার কীভাবে হবে, এ প্রশ্নও আছে। বিষয়টি তখন মূলত নির্ভর করবে বেশি আসন পাওয়া কয়েকটি দলের সদিচ্ছার ওপর। কিন্তু কমিশন চাইছে এ অনিশ্চয়তার অবকাশ না রেখে এমন কোনো বিধান করা, যা সনদ বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা দেবে।
গতকালের বৈঠকে বিশেষজ্ঞরা একাধিক মত দিয়ে বলেছেন, সেগুলো আইনগত ও রাজনৈতিকভাবে পুরোপুরি গ্রহণযোগ্য বলে মনে করেন না তাঁ। একটি মত হলো,নির্ধারিত সময়ে সংস্কার বাস্তবায়ন করা না হলে সংসদ বিলুপ্ত হয়ে যাবে। এটি আইনগতভাবে ঠিক হলেও রাজনৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য হবে না বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। সংসদ এভাবে বিলুপ্ত হলে নতুন সংকট তৈরি হতে পারে বলে মনে করেন তাঁরা।
আরও যে কয়েকটি মত গতকাল এসেছে তার মধ্যে রয়েছে, প্রথমত, পরিষদে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সনদের বিষয়গুলো বাস্তবায়ন না হলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে যুক্ত হয়ে যাওয়া এবং দ্বিতীয়ত, আগে সংবিধান সংস্কার পরিষদ বৈঠকে বসে সনদের সংযুক্তি বাস্তবায়ন করবে এবং তারপর সংসদ বসবে। কিন্তু এগুলোও কার্যকর বা বাস্তবসম্মত মনে করেননি বিশেষজ্ঞদের সবাই।
একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, সময়সীমার মধ্যে না সম্পন্ন করলে আপনা থেকেই সংবিধানে বিষয়গুলো যুক্ত হওয়ার ধারণা বাস্তবসম্মত না। কারণ বিলগুলোর খসড়া তৈরি করা নেই। এটা করা বিশেষজ্ঞদের কাজ না। সংসদে আলোচনা করে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাই এ সিদ্ধান্ত নেবেন। তিনি আরও বলেন, সনদের একটি বিধান হচ্ছে, মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ করা হবে। কিন্তু কোন মৌলিক অধিকারটি সম্প্রসারণ করা হবে, তা বলা নেই। সংসদ সদস্যদের আলোচনা করে এ সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ওই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘এসব কারণে আমরা সিদ্ধান্ত দিতে পারিনি। কমিশন জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে তাঁরা বৈঠক করবেন, প্রয়োজনে আমাদের সহযোগিতা নেবেন।’
গতকালের বৈঠকে আগে সংবিধান সংস্কার পরিষদ বসে বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করার যে প্রস্তাব আসে তার পক্ষে বলা হয়, এতে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা দ্রুত সনদ বাস্তবায়নে কাজ করবেন। কারণ তাঁরা বিলম্ব না করে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিতে চাইবেন। একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, প্রস্তাবটি নিয়ে আলোচনা হলেও বেশির ভাগের মত, এটিও বাস্তবসম্মত নয়। কারণ জনপ্রতিনিধিদের শপথের মাধ্যমে সংসদ গঠিত না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারকে দায়িত্বে থেকে যেতে হবে। এটা প্রধান উপদেষ্টাই মানবেন না।
এ অবস্থায় সমাধান কী হতে পারে, এমন প্রশ্নের জবাবে ওই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘আমরা আদৌ কোনো বাধ্যবাধকতা তৈরি করে দিতে পারব কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। কারণ এমন আইনি ও রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্য সমাধান পাইনি। তাই বিষয়টি আমাদের সুপারিশে না-ও থাকতে পারে।’
সনদ-বিষয়ক আদেশের খুঁটিনাটি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। গণভোটের দিনক্ষণ সরকারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
কমিশন সূত্র জানায়, আজ সকালে নিজেরা বৈঠক করার পর প্রয়োজন হলে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গেও আবার বৈঠক করা হবে। ৩১ অক্টোবরের মেয়াদের মধ্যেই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে সুপারিশ চূড়ান্ত করতে চায় কমিশন।
এনসিপির সঙ্গে বৈঠক
গতকাল বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বসার আগে কমিশনের সদস্যরা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে বৈঠক করেন। ১৭ অক্টোবর জুলাই সনদের স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হলেও দলটি সই করেনি। এনসিপি বলেছিল, বাস্তবায়নের আদেশের চূড়ান্ত খসড়া না দেখে তারা স্বাক্ষর করবে না।
কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, গতকালের বৈঠকে এনসিপির প্রতিনিধিরা ‘স্পষ্টভাবে’ জানিয়েছেন যে তাঁরা স্বাক্ষর করতে চান। তাঁরা কিছু প্রস্তাব দিয়েছেন, যা কমিশন আইনি বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠিয়েছে। এনসিপির প্রস্তাবে ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুই দিকই আছে। সেই বিষয়গুলো বিবেচনা করে কমিশন এগোচ্ছে। মূল লক্ষ্য হচ্ছে, যেন সবাই স্বাক্ষরের দিকে আসে।
বিশেষজ্ঞ হিসেবে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এম এ মতিন, সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ড. শরিফ ভূইয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন মোহাম্মদ ইকরামুল হক, ব্যারিস্টার ইমরান সিদ্দিক ও ব্যারিস্টার তানিম হোসেইন শাওন।
আলোচনায় কমিশনের পক্ষে অংশ নেন সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান ও ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

২০২৪ সালে দেশের সড়ক ও রেল যোগাযোগ খাত বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। বছরজুড়ে সড়কে মৃত্যুর মিছিল, সড়ক ব্যবস্থাপনায় অরাজকতা, মেট্রোরেল ও বিআরটিএ ভবনে ভাঙচুরের ঘটনা আলোচনায় ছিল। পাশাপাশি, পদ্মা সেতু রেল সংযোগের পূর্ণাঙ্গ উদ্বোধন ও কিছু নতুন উদ্যোগ আশার আলো জাগালেও, মেগা প্রকল্পে অতিরিক্ত ব্যয় নিয়ে শ্বে
৩১ ডিসেম্বর ২০২৪
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন, ২০২৫-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। গত বৃহস্পতিবার সংশোধিত আরপিও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে পরিষদে অনুমোদন দেওয়া হয়।
৪ ঘণ্টা আগে
বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, গুমের বিচার বাস্তবায়নে বিচারকদের সাহসী ও ন্যায্য ভূমিকা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা ও দৃঢ় অবস্থানই একদিন বাংলাদেশ থেকে গুমের সংস্কৃতি নির্মূল করবে।
৭ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেছেন, নিয়োগ পেলে চীনা কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত ঝুঁকিগুলো স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে তিনি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবেন। গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটিতে তাঁর
৭ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন, ২০২৫-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। গত বৃহস্পতিবার সংশোধিত আরপিও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে পরিষদে অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে বেশ কিছু বিষয়ে পরিবর্তন আনা হয়েছে, যুক্ত করা হয়েছে নতুন বিধান, আবার কিছু কিছু বিধান আরপিও থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
সেগুলোর মধ্যে রয়েছে—ইভিএম ব্যবহার বাতিল, ‘না ভোট’ পুনর্বহাল, প্রার্থীদের দেশি-বিদেশি আয় ও সম্পত্তির বিবরণ প্রকাশের বাধ্যবাধকতা এবং পলাতক আসামিদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা।
সংশোধিত আরপিওর গুরুত্বপূর্ণ কিছু অংশ তুলে ধরা হলো:
আদালত কর্তৃক ফেরারি বা পলাতক আসামি নির্বাচনে অংশ নিতে না পারার বিধান যুক্ত করা হয়েছে।
কোনো আসনে একক প্রার্থী থাকলে তাঁকে না ভোটের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে। নির্বাচনে না ভোট বেশি হলে সেখানে পুনরায় তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন হবে। তবে দ্বিতীয়বারও একক প্রার্থী হলে সেই প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হলে তাঁকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা করা হবে।
ভোট গণনার সময় সাংবাদিকদের উপস্থিত থাকার বিধানটিও যুক্ত করা হয়েছে। তবে ভোট গণনার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সেখানে থাকতে হবে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী তথা প্রতিরক্ষা কর্ম বিভাগ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জেলাভিত্তিক নির্বাচন অফিসগুলোতে দায়িত্ব পালন করবেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা। প্রার্থীদের দেশি ও বিদেশি উৎস থেকে আয় ও সম্পত্তির বিবরণ হলফনামায় দিতে হবে, যা নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে উন্মুক্তভাবে প্রকাশ করা হবে।
আগে দলগুলো জোটবদ্ধ হয়ে জোটের যেকোনো দলের প্রতীক ব্যবহার করতে পারত। সেটি সংশোধন করা হয়েছে। জোটভুক্ত হলেও প্রার্থীকে নিজ নিজ দলের প্রতীকে ভোট করার বিধান যুক্ত করা হয়েছে। ভোটের সময় অনেকে জোটভুক্ত হলে জনপ্রিয় বা বড় দলের মার্কায় ভোট করতেন। এখন আর সে সুযোগ থাকছে না।
প্রবাসী বাংলাদেশি, নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের জন্য পোস্টাল ব্যালটে ভোটের বিধানটি আরপিওতে যুক্ত করা হয়েছে। এবার আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ভোটিং চালু করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটারদের পাশাপাশি আইনি হেফাজতে থাকা, সরকারি কর্মকর্তা, ভোট গ্রহণ কর্মকর্তারা ভোট দিতে পারবেন।
প্রার্থীর জামানত বাড়ানো হয়েছে। আগে ২০ হাজার টাকা ছিল, তা বাড়িয়ে ৫০ হাজার করা হয়েছে। কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কোনো রাজনৈতিক দলকে ৫০ হাজার টাকার বেশি অনুদান দিতে চাইলে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেওয়ার বিধান করা হয়েছে। যিনি অনুদান দেবেন, তাঁর ট্যাক্স রিটার্নও দিতে হবে।
কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন পুরো আসনের ভোট বন্ধ করার ক্ষমতা কমিয়েছিল। সংশোধিত আরপিওতে শুধু ভোটকেন্দ্র নয়, অনিয়ম হলে ইসি পুরো আসনের ভোট বন্ধ করতে পারবে, সেই ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রার্থীর হলফনামায় আগে শুধু দেশের সম্পদের হিসাব দেওয়া হতো। সংশোধিত আরপিওতে শুধু দেশের নয়, বিদেশের আয়ের উৎস, সম্পত্তির বিবরণ দিতে হবে।
এ ছাড়া ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)-সংক্রান্ত বিধানটি সংশোধিত আরপিও থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন, ২০২৫-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। গত বৃহস্পতিবার সংশোধিত আরপিও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে পরিষদে অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে বেশ কিছু বিষয়ে পরিবর্তন আনা হয়েছে, যুক্ত করা হয়েছে নতুন বিধান, আবার কিছু কিছু বিধান আরপিও থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
সেগুলোর মধ্যে রয়েছে—ইভিএম ব্যবহার বাতিল, ‘না ভোট’ পুনর্বহাল, প্রার্থীদের দেশি-বিদেশি আয় ও সম্পত্তির বিবরণ প্রকাশের বাধ্যবাধকতা এবং পলাতক আসামিদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা।
সংশোধিত আরপিওর গুরুত্বপূর্ণ কিছু অংশ তুলে ধরা হলো:
আদালত কর্তৃক ফেরারি বা পলাতক আসামি নির্বাচনে অংশ নিতে না পারার বিধান যুক্ত করা হয়েছে।
কোনো আসনে একক প্রার্থী থাকলে তাঁকে না ভোটের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে। নির্বাচনে না ভোট বেশি হলে সেখানে পুনরায় তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন হবে। তবে দ্বিতীয়বারও একক প্রার্থী হলে সেই প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হলে তাঁকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা করা হবে।
ভোট গণনার সময় সাংবাদিকদের উপস্থিত থাকার বিধানটিও যুক্ত করা হয়েছে। তবে ভোট গণনার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সেখানে থাকতে হবে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী তথা প্রতিরক্ষা কর্ম বিভাগ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জেলাভিত্তিক নির্বাচন অফিসগুলোতে দায়িত্ব পালন করবেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা। প্রার্থীদের দেশি ও বিদেশি উৎস থেকে আয় ও সম্পত্তির বিবরণ হলফনামায় দিতে হবে, যা নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে উন্মুক্তভাবে প্রকাশ করা হবে।
আগে দলগুলো জোটবদ্ধ হয়ে জোটের যেকোনো দলের প্রতীক ব্যবহার করতে পারত। সেটি সংশোধন করা হয়েছে। জোটভুক্ত হলেও প্রার্থীকে নিজ নিজ দলের প্রতীকে ভোট করার বিধান যুক্ত করা হয়েছে। ভোটের সময় অনেকে জোটভুক্ত হলে জনপ্রিয় বা বড় দলের মার্কায় ভোট করতেন। এখন আর সে সুযোগ থাকছে না।
প্রবাসী বাংলাদেশি, নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের জন্য পোস্টাল ব্যালটে ভোটের বিধানটি আরপিওতে যুক্ত করা হয়েছে। এবার আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ভোটিং চালু করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটারদের পাশাপাশি আইনি হেফাজতে থাকা, সরকারি কর্মকর্তা, ভোট গ্রহণ কর্মকর্তারা ভোট দিতে পারবেন।
প্রার্থীর জামানত বাড়ানো হয়েছে। আগে ২০ হাজার টাকা ছিল, তা বাড়িয়ে ৫০ হাজার করা হয়েছে। কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কোনো রাজনৈতিক দলকে ৫০ হাজার টাকার বেশি অনুদান দিতে চাইলে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেওয়ার বিধান করা হয়েছে। যিনি অনুদান দেবেন, তাঁর ট্যাক্স রিটার্নও দিতে হবে।
কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন পুরো আসনের ভোট বন্ধ করার ক্ষমতা কমিয়েছিল। সংশোধিত আরপিওতে শুধু ভোটকেন্দ্র নয়, অনিয়ম হলে ইসি পুরো আসনের ভোট বন্ধ করতে পারবে, সেই ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রার্থীর হলফনামায় আগে শুধু দেশের সম্পদের হিসাব দেওয়া হতো। সংশোধিত আরপিওতে শুধু দেশের নয়, বিদেশের আয়ের উৎস, সম্পত্তির বিবরণ দিতে হবে।
এ ছাড়া ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)-সংক্রান্ত বিধানটি সংশোধিত আরপিও থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

২০২৪ সালে দেশের সড়ক ও রেল যোগাযোগ খাত বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। বছরজুড়ে সড়কে মৃত্যুর মিছিল, সড়ক ব্যবস্থাপনায় অরাজকতা, মেট্রোরেল ও বিআরটিএ ভবনে ভাঙচুরের ঘটনা আলোচনায় ছিল। পাশাপাশি, পদ্মা সেতু রেল সংযোগের পূর্ণাঙ্গ উদ্বোধন ও কিছু নতুন উদ্যোগ আশার আলো জাগালেও, মেগা প্রকল্পে অতিরিক্ত ব্যয় নিয়ে শ্বে
৩১ ডিসেম্বর ২০২৪
আগামী জাতীয় সংসদ নিয়মিত সংসদের পাশাপাশি সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের (৯ মাস) মধ্যে জুলাই সনদের সংবিধানসংক্রান্ত বিষয়গুলো সংবিধানে যুক্ত করবে বলে মতৈক্য হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা সম্পন্ন করার বিষয়টি কীভাবে নিশ্চিত হবে, গতকাল শনিবার পর্যন্ত তার কিনারা করতে পারেনি...
১৬ মিনিট আগে
বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, গুমের বিচার বাস্তবায়নে বিচারকদের সাহসী ও ন্যায্য ভূমিকা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা ও দৃঢ় অবস্থানই একদিন বাংলাদেশ থেকে গুমের সংস্কৃতি নির্মূল করবে।
৭ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেছেন, নিয়োগ পেলে চীনা কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত ঝুঁকিগুলো স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে তিনি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবেন। গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটিতে তাঁর
৭ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, গুম হত্যার চেয়েও নিকৃষ্টতম অপরাধ। গুম প্রতিরোধে শুধু আইনগত সংস্কার নয়, প্রয়োজন প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারও।
আজ শনিবার রাজধানীর গুলশানে হোটেল আমারিতে অনুষ্ঠিত ‘Ensuring Justice: The Role of the Judiciary in Addressing Enforced Disappearances’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। গুম-সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারির উদ্যোগে এবং ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের সহযোগিতায় এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
কর্মশালায় আসিফ নজরুল বলেন, ‘অনেক প্রাণ ও ত্যাগের বিনিময়ে আমরা আজ একটি পরিবর্তিত পরিবেশে অবস্থান করছি। এই পরিবর্তন স্থায়ী করতে হলে গুমের বিচার নিশ্চিত করা অপরিহার্য।’
বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, গুমের বিচার বাস্তবায়নে বিচারকদের সাহসী ও ন্যায্য ভূমিকা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা ও দৃঢ় অবস্থানই একদিন বাংলাদেশ থেকে গুমের সংস্কৃতি নির্মূল করবে।
কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে কমিশনের সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, রায় লেখা একটি সৃজনশীল শিল্প। তাই বিচারকেরা হলেন সৃজনশীল শিল্পী। তাঁদের শিল্পকর্মই তাঁদের রায়।
তিনি বলেন, গুম প্রতিরোধে বিচার বিভাগ, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ও মানবাধিকার কাঠামোর মধ্যে সমন্বিত সহযোগিতা অপরিহার্য। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন, সাক্ষ্য-প্রমাণ বিশ্লেষণ ও আধুনিক প্রযুক্তির যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে বিচার বিভাগ ও তদন্ত সংস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধি গুমের বিচার নিশ্চিতের মূল চাবিকাঠি।
কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী বলেন, গুম-সংক্রান্ত মামলাগুলোর কার্যকর তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করতে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এখন সময়ের দাবি। কমিশন এরই মধ্যে বিদ্যমান আইনি কাঠামো পর্যালোচনা করে গুম-সংক্রান্ত মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি, সাক্ষী সুরক্ষা ও ভুক্তভোগী পরিবারের আইনি সহায়তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় আইন সংশোধনের প্রস্তাব প্রস্তুত করছে।
কর্মশালায় আরও বক্তব্য দেন আইন ও বিচার বিভাগের সচিব লিয়াকত আলী মোল্লা এবং ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ মানবাধিকার-বিষয়ক উপদেষ্টা হুমা খান।

আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, গুম হত্যার চেয়েও নিকৃষ্টতম অপরাধ। গুম প্রতিরোধে শুধু আইনগত সংস্কার নয়, প্রয়োজন প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারও।
আজ শনিবার রাজধানীর গুলশানে হোটেল আমারিতে অনুষ্ঠিত ‘Ensuring Justice: The Role of the Judiciary in Addressing Enforced Disappearances’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। গুম-সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারির উদ্যোগে এবং ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের সহযোগিতায় এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
কর্মশালায় আসিফ নজরুল বলেন, ‘অনেক প্রাণ ও ত্যাগের বিনিময়ে আমরা আজ একটি পরিবর্তিত পরিবেশে অবস্থান করছি। এই পরিবর্তন স্থায়ী করতে হলে গুমের বিচার নিশ্চিত করা অপরিহার্য।’
বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, গুমের বিচার বাস্তবায়নে বিচারকদের সাহসী ও ন্যায্য ভূমিকা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা ও দৃঢ় অবস্থানই একদিন বাংলাদেশ থেকে গুমের সংস্কৃতি নির্মূল করবে।
কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে কমিশনের সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, রায় লেখা একটি সৃজনশীল শিল্প। তাই বিচারকেরা হলেন সৃজনশীল শিল্পী। তাঁদের শিল্পকর্মই তাঁদের রায়।
তিনি বলেন, গুম প্রতিরোধে বিচার বিভাগ, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ও মানবাধিকার কাঠামোর মধ্যে সমন্বিত সহযোগিতা অপরিহার্য। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন, সাক্ষ্য-প্রমাণ বিশ্লেষণ ও আধুনিক প্রযুক্তির যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে বিচার বিভাগ ও তদন্ত সংস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধি গুমের বিচার নিশ্চিতের মূল চাবিকাঠি।
কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী বলেন, গুম-সংক্রান্ত মামলাগুলোর কার্যকর তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করতে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এখন সময়ের দাবি। কমিশন এরই মধ্যে বিদ্যমান আইনি কাঠামো পর্যালোচনা করে গুম-সংক্রান্ত মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি, সাক্ষী সুরক্ষা ও ভুক্তভোগী পরিবারের আইনি সহায়তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় আইন সংশোধনের প্রস্তাব প্রস্তুত করছে।
কর্মশালায় আরও বক্তব্য দেন আইন ও বিচার বিভাগের সচিব লিয়াকত আলী মোল্লা এবং ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ মানবাধিকার-বিষয়ক উপদেষ্টা হুমা খান।

২০২৪ সালে দেশের সড়ক ও রেল যোগাযোগ খাত বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। বছরজুড়ে সড়কে মৃত্যুর মিছিল, সড়ক ব্যবস্থাপনায় অরাজকতা, মেট্রোরেল ও বিআরটিএ ভবনে ভাঙচুরের ঘটনা আলোচনায় ছিল। পাশাপাশি, পদ্মা সেতু রেল সংযোগের পূর্ণাঙ্গ উদ্বোধন ও কিছু নতুন উদ্যোগ আশার আলো জাগালেও, মেগা প্রকল্পে অতিরিক্ত ব্যয় নিয়ে শ্বে
৩১ ডিসেম্বর ২০২৪
আগামী জাতীয় সংসদ নিয়মিত সংসদের পাশাপাশি সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের (৯ মাস) মধ্যে জুলাই সনদের সংবিধানসংক্রান্ত বিষয়গুলো সংবিধানে যুক্ত করবে বলে মতৈক্য হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা সম্পন্ন করার বিষয়টি কীভাবে নিশ্চিত হবে, গতকাল শনিবার পর্যন্ত তার কিনারা করতে পারেনি...
১৬ মিনিট আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন, ২০২৫-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। গত বৃহস্পতিবার সংশোধিত আরপিও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে পরিষদে অনুমোদন দেওয়া হয়।
৪ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেছেন, নিয়োগ পেলে চীনা কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত ঝুঁকিগুলো স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে তিনি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবেন। গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটিতে তাঁর
৭ ঘণ্টা আগেসিনেটে শুনানিতে ট্রাম্প–মনোনীত রাষ্ট্রদূত
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেছেন, নিয়োগ পেলে চীনা কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত ঝুঁকিগুলো স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে তিনি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবেন। গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটিতে তাঁর মনোনয়ন নিয়ে শুনানিতে প্রশ্নোত্তর পর্বে একথা বলেন ক্রিস্টেনসেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মমোনীত এই কূটনীতিক বলেন, রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পেলে তিনি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর কাছে সামরিক সহযোগিতা, সামুদ্রিক কর্মকাণ্ড এবং গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে সম্পৃক্ততাসহ চীনা কর্মকাণ্ডের ঝুঁকি সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরবনে। পাশাপাশি সামরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অংশীদারত্ব ঘনিষ্ঠ করার জন্য কাজ করারও প্রতিশ্রুতি দেন ক্রিস্টেনসেন।
গত ২ সেপ্টেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেনকে বাংলাদেশের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনয়ন দেন। সিনেট কমিটির অনুমোদনের পরই তাঁর নিয়োগ চূড়ান্ত হবে। এই মনোনয়ন নিয়ে শুনানিতে চার রাষ্ট্রদূত প্রার্থী লিখিত বিবৃতি তুলে ধরেন। পরে তাঁরা সিনেট সদস্যদের প্রশ্নের জবাব দেন।
বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক নিয়ে উদ্বেগ তুলে ধরে নেব্রাস্কার রিপাবলিকান সিনেটর জন পিটার রিকেটস শুনানিতে বলেন, ‘আমরা এখন চীনা কমিউনিস্ট পার্টির ক্রমবর্ধমান প্রভাবের মুখে। বাংলাদেশ ও চীনের সামরিক সহযোগিতা দ্রুত বাড়ছে। যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিন রাখার জন্য সম্প্রতি বাংলাদেশের একটি কৌশলগত সাবমেরিন ঘাঁটি আধুনিকায়ন করেছে চীন। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার চীনের তৈরি ২০টি জে-১০ যুদ্ধবিমান কেনার পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। পাশাপাশি নতুন সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল ও দূরপাল্লার রাডার কেনার বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিয়োগ পেলে চীনা সামরিক সরঞ্জামের ওপর বাংলাদেশের নির্ভরশীলতা কমাতে বাংলাদেশের সামরিক ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে ক্রিস্টেনসেন কীভাবে কাজ করবেন, তা জানতে চান সিনেটর রিকেটস।

জবাবে ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের প্রভাব নিয়ে আপনাদের মতো উদ্বেগ আমারও। রাষ্ট্রদূত নিয়োগ আমি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত থেকে চীনের কার্যক্রমের ঝুঁকি ব্যাখ্যা করব। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গভীর অংশীদারিত্বের সম্ভাবনা তুলে ধরব, যা দুই দেশের সামরিক সম্পর্ককে আরও মজবুত করবে।’
এ সময় সিনেটর রিকেটস বলেন, ‘এই শুনানির আগের দিনই সিনেট পররাষ্ট্র কমিটি সর্বসম্মতভাবে ‘থিংক টোয়াইস অ্যাক্ট’ পাস করেছে। এই আইন যুক্তরাষ্ট্রকে পূর্ণাঙ্গ কৌশল নিতে বাধ্য করবে, যাতে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশকে চীনা অস্ত্র কেনা থেকে বিরত রাখা যায়। আমরা আশা করি, আপনিও এই আইনের সহায়তা নিয়ে কাজ করবেন। তাহলে অস্ত্র বিক্রির মাধ্যমে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব বিস্তার প্রতিরোধ সম্ভব হবে।’
তাঁর এই মন্তব্যের সূত্র ধরে ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেন, ‘সামরিক অংশীদারিত্বের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চমূল্যের সামরিক সরঞ্জামের বিকল্প হিসেবে মিত্রদেশগুলোর তৈরি সাশ্রয়ী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে আমরা বাংলাদেশকে জানাতে পারি। পাশাপাশি যৌথ সামরিক মহড়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের প্ল্যাটফর্মগুলোকে অন্যান্য মিত্র বাহিনীর সঙ্গে আরও সমন্বিত ও কার্যকর করতে পারি।’
শুনানির শুরুতে লিখিত বিবৃতিতে ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। ২০২৪ সালের আগস্টে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে যে গণআন্দোলন হয়েছিল, তা ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা সরকারকে পতন ঘটায়। আগামী বছর বাংলাদেশের জনগণ ভোটে যাবে, যা দেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ও উজ্জ্বল ভবিষ্যতের যাত্রায় পাশে থাকবে।”
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বের অষ্টম জনবহুল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ অনেক সময় তাঁর প্রাপ্য মনোযোগ পায় না, বড় প্রতিবেশীদের আড়ালে গুরুত্ব হারিয়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রসেবায় আমার দুই দশকের অভিজ্ঞতা, যার মধ্যে ঢাকার কর্মকালও রয়েছে। তাই, আমি বাংলাদেশের কৌশলগত গুরুত্ব ও যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ সম্পর্কে গভীরভাবে অবগত। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অবস্থান বাংলাদেশকে উন্মুক্ত, নিরাপদ ও সমৃদ্ধ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার করে তুলেছে।’

বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেছেন, নিয়োগ পেলে চীনা কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত ঝুঁকিগুলো স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে তিনি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবেন। গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটিতে তাঁর মনোনয়ন নিয়ে শুনানিতে প্রশ্নোত্তর পর্বে একথা বলেন ক্রিস্টেনসেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মমোনীত এই কূটনীতিক বলেন, রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পেলে তিনি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর কাছে সামরিক সহযোগিতা, সামুদ্রিক কর্মকাণ্ড এবং গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে সম্পৃক্ততাসহ চীনা কর্মকাণ্ডের ঝুঁকি সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরবনে। পাশাপাশি সামরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অংশীদারত্ব ঘনিষ্ঠ করার জন্য কাজ করারও প্রতিশ্রুতি দেন ক্রিস্টেনসেন।
গত ২ সেপ্টেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেনকে বাংলাদেশের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনয়ন দেন। সিনেট কমিটির অনুমোদনের পরই তাঁর নিয়োগ চূড়ান্ত হবে। এই মনোনয়ন নিয়ে শুনানিতে চার রাষ্ট্রদূত প্রার্থী লিখিত বিবৃতি তুলে ধরেন। পরে তাঁরা সিনেট সদস্যদের প্রশ্নের জবাব দেন।
বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক নিয়ে উদ্বেগ তুলে ধরে নেব্রাস্কার রিপাবলিকান সিনেটর জন পিটার রিকেটস শুনানিতে বলেন, ‘আমরা এখন চীনা কমিউনিস্ট পার্টির ক্রমবর্ধমান প্রভাবের মুখে। বাংলাদেশ ও চীনের সামরিক সহযোগিতা দ্রুত বাড়ছে। যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিন রাখার জন্য সম্প্রতি বাংলাদেশের একটি কৌশলগত সাবমেরিন ঘাঁটি আধুনিকায়ন করেছে চীন। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার চীনের তৈরি ২০টি জে-১০ যুদ্ধবিমান কেনার পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। পাশাপাশি নতুন সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল ও দূরপাল্লার রাডার কেনার বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিয়োগ পেলে চীনা সামরিক সরঞ্জামের ওপর বাংলাদেশের নির্ভরশীলতা কমাতে বাংলাদেশের সামরিক ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে ক্রিস্টেনসেন কীভাবে কাজ করবেন, তা জানতে চান সিনেটর রিকেটস।

জবাবে ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের প্রভাব নিয়ে আপনাদের মতো উদ্বেগ আমারও। রাষ্ট্রদূত নিয়োগ আমি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত থেকে চীনের কার্যক্রমের ঝুঁকি ব্যাখ্যা করব। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গভীর অংশীদারিত্বের সম্ভাবনা তুলে ধরব, যা দুই দেশের সামরিক সম্পর্ককে আরও মজবুত করবে।’
এ সময় সিনেটর রিকেটস বলেন, ‘এই শুনানির আগের দিনই সিনেট পররাষ্ট্র কমিটি সর্বসম্মতভাবে ‘থিংক টোয়াইস অ্যাক্ট’ পাস করেছে। এই আইন যুক্তরাষ্ট্রকে পূর্ণাঙ্গ কৌশল নিতে বাধ্য করবে, যাতে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশকে চীনা অস্ত্র কেনা থেকে বিরত রাখা যায়। আমরা আশা করি, আপনিও এই আইনের সহায়তা নিয়ে কাজ করবেন। তাহলে অস্ত্র বিক্রির মাধ্যমে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব বিস্তার প্রতিরোধ সম্ভব হবে।’
তাঁর এই মন্তব্যের সূত্র ধরে ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেন, ‘সামরিক অংশীদারিত্বের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চমূল্যের সামরিক সরঞ্জামের বিকল্প হিসেবে মিত্রদেশগুলোর তৈরি সাশ্রয়ী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে আমরা বাংলাদেশকে জানাতে পারি। পাশাপাশি যৌথ সামরিক মহড়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের প্ল্যাটফর্মগুলোকে অন্যান্য মিত্র বাহিনীর সঙ্গে আরও সমন্বিত ও কার্যকর করতে পারি।’
শুনানির শুরুতে লিখিত বিবৃতিতে ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। ২০২৪ সালের আগস্টে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে যে গণআন্দোলন হয়েছিল, তা ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা সরকারকে পতন ঘটায়। আগামী বছর বাংলাদেশের জনগণ ভোটে যাবে, যা দেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ও উজ্জ্বল ভবিষ্যতের যাত্রায় পাশে থাকবে।”
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বের অষ্টম জনবহুল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ অনেক সময় তাঁর প্রাপ্য মনোযোগ পায় না, বড় প্রতিবেশীদের আড়ালে গুরুত্ব হারিয়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রসেবায় আমার দুই দশকের অভিজ্ঞতা, যার মধ্যে ঢাকার কর্মকালও রয়েছে। তাই, আমি বাংলাদেশের কৌশলগত গুরুত্ব ও যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ সম্পর্কে গভীরভাবে অবগত। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অবস্থান বাংলাদেশকে উন্মুক্ত, নিরাপদ ও সমৃদ্ধ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার করে তুলেছে।’

২০২৪ সালে দেশের সড়ক ও রেল যোগাযোগ খাত বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। বছরজুড়ে সড়কে মৃত্যুর মিছিল, সড়ক ব্যবস্থাপনায় অরাজকতা, মেট্রোরেল ও বিআরটিএ ভবনে ভাঙচুরের ঘটনা আলোচনায় ছিল। পাশাপাশি, পদ্মা সেতু রেল সংযোগের পূর্ণাঙ্গ উদ্বোধন ও কিছু নতুন উদ্যোগ আশার আলো জাগালেও, মেগা প্রকল্পে অতিরিক্ত ব্যয় নিয়ে শ্বে
৩১ ডিসেম্বর ২০২৪
আগামী জাতীয় সংসদ নিয়মিত সংসদের পাশাপাশি সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের (৯ মাস) মধ্যে জুলাই সনদের সংবিধানসংক্রান্ত বিষয়গুলো সংবিধানে যুক্ত করবে বলে মতৈক্য হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা সম্পন্ন করার বিষয়টি কীভাবে নিশ্চিত হবে, গতকাল শনিবার পর্যন্ত তার কিনারা করতে পারেনি...
১৬ মিনিট আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন, ২০২৫-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। গত বৃহস্পতিবার সংশোধিত আরপিও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে পরিষদে অনুমোদন দেওয়া হয়।
৪ ঘণ্টা আগে
বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, গুমের বিচার বাস্তবায়নে বিচারকদের সাহসী ও ন্যায্য ভূমিকা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা ও দৃঢ় অবস্থানই একদিন বাংলাদেশ থেকে গুমের সংস্কৃতি নির্মূল করবে।
৭ ঘণ্টা আগে