Ajker Patrika

কোটার আন্দোলন নিয়ে সরকার হঠাৎ কঠোর

আপডেট : ১২ জুলাই ২০২৪, ০৮: ১৪
কোটার আন্দোলন নিয়ে সরকার হঠাৎ কঠোর

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে এক মাসের বেশি সময় ধরে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে চলতি মাসের শুরু থেকে সড়ক-মহাসড়ক এমনকি রেলপথ অবরোধ করে তাঁরা বিক্ষোভ করলেও সেই অর্থে কোনো বাধা দেয়নি পুলিশ। সরকার বা ক্ষমতাসীনেরাও মোটামুটি চুপচাপ ছিলেন। কিন্তু গতকাল বৃহস্পতিবার হঠাৎ করে বদলে গেল পরিস্থিতি। সব পক্ষের গলা চড়া। সবাই জোরেশোরে জানিয়ে দিল, শিক্ষার্থীদের আর রাস্তায় নামতে দেওয়া হবে না।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা আগের দিন বুধবারই ঘোষণা দিয়ে রেখেছিলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ৩টায় ঢাকাসহ সারা দেশে রাস্তায় ‘বাংলা ব্লকেড’ বা অবরোধ কর্মসূচি পালন করবেন। সে অনুযায়ী তাঁদের প্রস্তুতির মধ্যেই সকালে পুলিশ জানিয়ে দেয়, তাঁদের আর রাস্তায় নামতে দেওয়া হবে না।

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ যে আদেশ দিয়েছেন, তারপরও আন্দোলনের কোনো ‘যৌক্তিকতা নেই’। আন্দোলনকারীদের সড়কে বসতে দেওয়া হবে না। তাঁরা রাস্তায় নেমে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করলে ‘প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে’ বাধ্য হবে পুলিশ।

রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার খ মহিদ উদ্দিন বলেন, কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালের পরিপত্রকে বলবৎ রেখে চার সপ্তাহের জন্য স্থিতাবস্থা দিয়েছেন আপিল বিভাগ। যে কারণে এই চার সপ্তাহ কোটা নিয়ে আন্দোলন করার কোনো অবকাশ বা প্রয়োজন আছে বলে ঢাকা মহানগর পুলিশ মনে করে না। রাস্তায় নেমে কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দুপুরের আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মধুর ক্যানটিনে সংবাদ সম্মেলন ডাকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। সেখানেও বলা হয়, কোটা আন্দোলনকারীরা রাস্তায় নামার চেষ্টা করলে ব্যবস্থা নেবে ছাত্রলীগ।

ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, ইস্যুভিত্তিক আন্দোলনকে রাজনৈতিক রূপ দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা যৌক্তিক ও আইনগত সমাধান চায়; কিন্তু রাজনৈতিক সুযোগসন্ধানীরা এই আন্দোলনকে প্রলম্বিত করতে চাইছে। আন্দোলনকে প্রলম্বিত করা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা ছাড়া আর কিছু নয়।

সাদ্দাম হোসেন আরও বলেন, আন্দোলনের নামে শিক্ষার্থী ও শিক্ষাব্যবস্থাকে জিম্মি করে জনসাধারণের জীবনযাত্রার ব্যাঘাত ঘটিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা ব্যাহত করার চেষ্টা করা হলে ছাত্রলীগ রুখে দাঁড়াবে।

পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ফেলে আন্দোলনকারীরা। ছবি: আজকের পত্রিকাএদিকে, আন্দোলনকারীরা সীমা লঙ্ঘন (লিমিট ক্রস) করছেন বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। দুপুরে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আদালতের যে নির্দেশনা তাতে শিক্ষার্থীরা মনে করেছেন, তাঁদের দূরে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সে জন্য তাঁরা রাস্তায় চলে এসেছেন। পুলিশকে আমরা বলেছি, তাঁদের ডিম্যান্ড যেটা আছে, সেটা আমরা শুনব। কিন্তু শোনারও একটা লিমিট বোধ হয় থাকে। তাঁরা বোধ হয় এগুলো ক্রস করে যাচ্ছেন।’

শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নামলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না—জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তাঁরা শিক্ষিত, মেধাবী। তাঁরা কেন রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যাবেন? পুলিশের অ্যাকশনটা কখন আসে? যখন অপারগ হয়ে যায়, যখন অগ্নিসংযোগ করতে যায়, যখন ধ্বংস করতে যায়, যখন জানমালের নিশ্চয়তার অভাব হয়ে যায়, যখন অনৈতিকভাবে কোনো সিচুয়েশন সৃষ্টি হয়—সেগুলো করলে পুলিশ বসে থাকবে না।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের আগে এ নিয়ে মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। তিনি বলেন, পানির মতো একটি সহজ জিনিসকে জটিল করা হচ্ছে। কিছু কুচক্রী মহলের ইন্ধনের কারণে এমন হচ্ছে।

কারা শিক্ষার্থীদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন—জানতে চাইলে ফরহাদ হোসেন বলেন, যারা দেশের উন্নয়ন চায় না, যারা সেই সময়ে দেশে লুটপাট করেছে, যারা দেশটাকে জঙ্গিবাদ করেছে, তারা চাচ্ছে না। তারা বসে আছে, তারা ব্যর্থ, তারা যেকোনো বিষয়কে পুঁজি করে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে চায়। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষিকা থাকেন ঢাকায়, খালিয়াজুরীতে তাঁর নামে স্বাক্ষর করেন স্নাতকপড়ুয়া

জাকির নায়েক বিতর্কে ভারতের প্রতিক্রিয়ার যে জবাব দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

সকাল থেকে রাজধানীতে তীব্র যানজট, কারণ জানাল ডিএমপি

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের ফেসবুক প্রোফাইল ঘাঁটবেন না, মুরাদ টাকলার সঙ্গে দেখা হবে

সৌদি সরকারের দেওয়া দুম্বার মাংস: মনিরামপুরে বিতরণে ১২০ প্যাকেট হাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বইমেলা ফেব্রুয়ারিতেই, তবে নির্বাচনের পর: বাংলা একাডেমি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছুটির দিনে পাঠক ও দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। গতকাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অমর একুশে বইমেলা প্রাঙ্গণে। ছবি: আজকের পত্রিকা
ছুটির দিনে পাঠক ও দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। গতকাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অমর একুশে বইমেলা প্রাঙ্গণে। ছবি: আজকের পত্রিকা

অমর একুশে বইমেলা-২০২৬ আগামী বছর ফেব্রুয়ারি মাসেই আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে ফেব্রুয়ারিতে হলেও মেলা অনুষ্ঠিত হবে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক এবং বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির (বাপুস) প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকের পরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আজ রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বাপুসের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে অমর একুশে বইমেলা ২০২৬-এর সময় নির্ধারণ বিষয়ে সমিতির প্রস্তাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।

বৈঠকে বাপুস মেলার কয়েকটি সম্ভাব্য সময়ের কথা উপস্থাপন করে। পাশাপাশি রাষ্ট্রের নিরাপত্তাবিষয়ক সংস্থার পরামর্শও সেখানে পর্যালোচনা করা হয়। সবকিছু মিলিয়ে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরপর ফেব্রুয়ারি মাসে মেলা আয়োজনের প্রস্তাবকে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাস্তবসম্মত বলে গ্রহণ করা হয়েছে।

সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, নির্বাচনের তারিখ নির্দিষ্ট হওয়ার পরেই মেলার তারিখ ঘোষণা করা হবে।

অমর একুশে বইমেলা-২০২৬ আয়োজনের বিষয়ে বাংলা একাডেমি সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এবং সংশ্লিষ্ট অন্যদের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে চলছে।

এর আগে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং রমজানের কারণে অমর একুশে বইমেলা-২০২৬-এর সময় এগিয়ে এনে ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। পরে অবশ্য তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে স্থগিত করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষিকা থাকেন ঢাকায়, খালিয়াজুরীতে তাঁর নামে স্বাক্ষর করেন স্নাতকপড়ুয়া

জাকির নায়েক বিতর্কে ভারতের প্রতিক্রিয়ার যে জবাব দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

সকাল থেকে রাজধানীতে তীব্র যানজট, কারণ জানাল ডিএমপি

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের ফেসবুক প্রোফাইল ঘাঁটবেন না, মুরাদ টাকলার সঙ্গে দেখা হবে

সৌদি সরকারের দেওয়া দুম্বার মাংস: মনিরামপুরে বিতরণে ১২০ প্যাকেট হাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নেপালের প্রধান বিচারপতিকে আপিল বিভাগে সংবর্ধনা, পর্যবেক্ষণ করলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারসংক্রান্ত শুনানি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
নেপালের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ মান সিং রাউত। ছবি: সংগৃহীত
নেপালের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ মান সিং রাউত। ছবি: সংগৃহীত

নেপালের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ মান সিং রাউতকে আপিল বিভাগে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।

আজ রোববার আপিল বিভাগে প্রথমে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য দেন। পরে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন নেপালের প্রধান বিচারপতিকে সংবর্ধনা দেন।

নেপালের প্রধান বিচারপতি আপিল বিভাগে চলমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারসংক্রান্ত একটি মামলার শুনানি পর্যবেক্ষণ করেন।

পরে সংবর্ধনার জবাবে ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য দেন তিনি।

এ সময় আপিল বিভাগে নেপালের উচ্চ আদালতের বিচারপতি, বাংলাদেশে নেপালের রাষ্ট্রদূত, ইউএনডিপির প্রতিনিধি ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।

আজ শুরুতে বিএনপি মহাসচিবের পক্ষে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা-সংক্রান্ত আপিল শুনানিতে অংশ নেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। এরপর বিরতি শেষে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ নেপালের প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে আবার এজলাসে আসেন। নেপালের প্রধান বিচারপতিকে বসানো হয় বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির ডান পাশের চেয়ারে।

দ্বিতীয় পর্যায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে আপিল শুনানিতে বিএনপি মহাসচিবের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। ইন্টারভেনর হিসেবে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিকী। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা-সংক্রান্ত আপিল শুনানি বেলা ১টা পর্যন্ত চলে। পরে আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করা হয়।

শুনানিতে যা বললেন রুহুল কুদ্দুস

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানিতে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, আপিল বিভাগের তিনজন বিচারপতি তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাখার পক্ষে রায় দিয়েছেন আর চারজন রায় দেন বাতিলের পক্ষে। সংক্ষিপ্ত রায়ে পরবর্তী দুটি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করার জন্য বলা হয়েছিল। খায়রুল হক (সাবেক প্রধান বিচারপতি) অবসরের ১৬ মাস পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায় দেন। তবে সেখানে পরবর্তী দুটি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করার বিষয়টি ছিল না। প্রকাশ্য আদালতে রায় দেওয়ার পর করণিক ভুল ছাড়া আর কোনো কিছু পরিবর্তন করা যায় না।

রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, আপিল বিভাগের রায়ে বলা হয়েছে, অবসরের ছয় মাসের মধ্যে রায়ে স্বাক্ষর করতে হবে। আর এই রায়ে স্বাক্ষর করা হয়েছে অবসরের ১৬ মাস পর। গণতন্ত্রের স্বার্থে, আইনের শাসনের স্বার্থে, বাংলাদেশের মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে এ বি এম খায়রুল হকের দেওয়া রায় পুনর্বিবেচনা করতে হবে।

এদিকে আদালত থেকে বের হয়ে জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘আমি শুনানিতে বলেছি, দেশের মধ্যে এই যে মারামারি, দিনের ভোট রাতে হয়েছে এবং কোনো ভোটই হয়নি—সবকিছুর মূলেই খায়রুল হক। খায়রুল হক দেশের সর্বোচ্চ আদালতকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করেছেন। তাঁর এই ব্যবহারের কারণেই আজকে ভোট নিয়ে অনিশ্চয়তা। খায়রুল হকের ওই রায় কোনোভাবেই থাকতে পারে না। ওই রায় থাকলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা থাকে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষিকা থাকেন ঢাকায়, খালিয়াজুরীতে তাঁর নামে স্বাক্ষর করেন স্নাতকপড়ুয়া

জাকির নায়েক বিতর্কে ভারতের প্রতিক্রিয়ার যে জবাব দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

সকাল থেকে রাজধানীতে তীব্র যানজট, কারণ জানাল ডিএমপি

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের ফেসবুক প্রোফাইল ঘাঁটবেন না, মুরাদ টাকলার সঙ্গে দেখা হবে

সৌদি সরকারের দেওয়া দুম্বার মাংস: মনিরামপুরে বিতরণে ১২০ প্যাকেট হাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশে বৈষম্যমূলক ধারা সংশোধনের আহ্বান টিআইবির

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

উপদেষ্টা পরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ, ২০২৫-এ বৈষম্যমূলক কমিশন গঠনে সহায়ক ধারা ও প্রতিষ্ঠানটির স্বাধীনতা ক্ষুণ্নের ঝুঁকি সৃষ্টিকারী দুর্বল বিধান অব্যাহত থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

সংস্থাটি অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সংশোধন এনে কমিশনকে স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও কার্যকর করার আহ্বান জানিয়েছে।

আজ রোববার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এসব কথা জানান।

এই অধ্যাদেশের ফলে মানবাধিকার কমিশনের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হবে বলেও মনে করে টিআইবি।

লিখিত বিবৃতিতে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, প্রতিষ্ঠানটির সৃষ্টিলগ্নে যে মৌলিক দুর্বলতার বীজ বপন করা হয়েছিল, তা কেন অব্যাহত রাখতে হবে, তা বোধগম্য নয়। কমিশনের চেয়ারম্যানসহ সাত সদস্যের মধ্যে দুজনকে খণ্ডকালীন নিয়োগের বিধান বৈষম্যমূলক এবং সদস্যদের মধ্যে মর্যাদা ও এখতিয়ারে বিভাজন তৈরি করে, যা প্রতিষ্ঠানটির অকার্যকরতার অন্যতম কারণ।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, কমিশনের সব সদস্যের পদমর্যাদা, বেতন-ভাতা ও দায়িত্ব-কর্তব্যে সমতা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি এই বিধান সংশোধন করে কমিশনের কার্যক্রমে গতিশীলতা ও কার্যকরতা আনা জরুরি।

ড. ইফতেখারুজ্জামান জানান, চেয়ারপারসন ও কমিশনার বাছাইয়ে স্বচ্ছ প্রক্রিয়া এবং প্রাথমিকভাবে বাছাই করা প্রার্থীদের তালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশের প্রস্তাব টিআইবি দিয়েছিল, কিন্তু তা গৃহীত হয়নি। তা ছাড়া কোনো সংস্থার আটকস্থল যদি কমিশনের নিকট আইনবহির্ভূত মনে হয়, তবে তা বন্ধের ক্ষমতা ও দায়ীদের জবাবদিহি নিশ্চিতের সুপারিশও উপেক্ষিত হয়েছে, যা হতাশাজনক।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, মানবাধিকার সংরক্ষণের পরিপন্থী কোনো আইন সংশোধনের সুপারিশ করার ক্ষমতা কমিশনের থাকা উচিত।

টিআইবির মতে, অধ্যাদেশে ধারা ১৪-তে ‘মানবাধিকারসংক্রান্ত অন্য কোনো আইন এই আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হলে এই আইন প্রাধান্য পাবে’–এই অংশ যুক্ত করা হলে ভবিষ্যতে মানবাধিকার বিষয়ে আইনগত সংঘাত এড়ানো সহজ হতো।

এ ছাড়া সব অভিযোগে বাধ্যতামূলক প্রাথমিক অনুসন্ধানের বিধান বাতিল করে আমলযোগ্য অভিযোগে সরাসরি তদন্তের সুযোগ রাখার প্রস্তাবও গৃহীত হয়নি।

টিআইবির আশঙ্কা, এতে অপ্রয়োজনীয় দীর্ঘসূত্রতা তৈরি হবে এবং ভুক্তভোগীর হয়রানি ও ন্যায়বিচার প্রাপ্তির পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে।

ড. ইফতেখারুজ্জামান জানান, প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত কর্মকর্তা বা সরকারি কর্মচারীকে কমিশনে প্রেষণে নিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ সীমা নির্ধারণ এবং প্রেষণপ্রক্রিয়াকে যোগ্যতা ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে পরিচালনার প্রস্তাবও অগ্রাহ্য করা হয়েছে। এমনকি কমিশনের দ্বিমতের ভিত্তিতে কোনো প্রেষণ প্রত্যাখ্যানের সুযোগের বিধান রাখার সুপারিশও বিবেচিত হয়নি।

টিআইবি মনে করে, কমিশনের আয়-ব্যয়ের বার্ষিক নিরীক্ষা সম্পন্নের পর তা ওয়েবসাইটে প্রকাশের বিধান যুক্ত করা উচিত। এসব সংস্কারই জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে সত্যিকার অর্থে স্বাধীন ও কার্যকর প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষিকা থাকেন ঢাকায়, খালিয়াজুরীতে তাঁর নামে স্বাক্ষর করেন স্নাতকপড়ুয়া

জাকির নায়েক বিতর্কে ভারতের প্রতিক্রিয়ার যে জবাব দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

সকাল থেকে রাজধানীতে তীব্র যানজট, কারণ জানাল ডিএমপি

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের ফেসবুক প্রোফাইল ঘাঁটবেন না, মুরাদ টাকলার সঙ্গে দেখা হবে

সৌদি সরকারের দেওয়া দুম্বার মাংস: মনিরামপুরে বিতরণে ১২০ প্যাকেট হাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আমি রাজনৈতিক আক্রোশের শিকার, গায়েবি মামলার ঝড়ে আক্রান্ত—ট্রাইব্যুনালকে জাসদ নেতা ইনু

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২৫, ২০: ৪৭
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় কুষ্টিয়ায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে অপর মামলায় মাহবুব উল আলম হানিফসহ চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

আজ রোববার পৃথক আদেশে বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এই নির্দেশ দেন।

অভিযোগ গঠনের আগে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ পড়ে শোনান ট্রাইব্যুনাল।

ট্রাইব্যুনাল ইনুর কাছে জানতে চান, তিনি অভিযোগগুলো শুনতে পেয়েছেন কি না।

জবাবে ইনু জানান, তিনি কিছু শুনতে পেয়েছেন, কিছু শুনতে পাননি।

ট্রাইব্যুনাল বলেন, ‘আপনি দোষ স্বীকার করবেন কি না বলুন?’

ইনু বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা দুবার বলেছেন, দেশে গায়েবি মামলা হচ্ছে। আইন উপদেষ্টাও গায়েবি মামলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। আমি রাজনৈতিক আক্রোশের শিকার, গায়েবি মামলার ঝড়ে আক্রান্ত। আমি মনে করি, আল্লাহর পর বিচার নিষ্পত্তির প্রতিনিধি আপনি। আপনি ন্যায়বিচার করবেন। আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ।’

পরে অভিযোগ গঠন করে ৩০ নভেম্বর এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।

এদিকে মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক মামলায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সদর উদ্দিন খান, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসগর আলী ও কুষ্টিয়া পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল। তাঁরা সবাই পলাতক।

ট্রাইব্যুনাল বলেন, যেহেতু আসামিরা উপস্থিত নেই, তাই তাঁদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো পঠিত বলে গণ্য হবে। পরে এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য ২৫ নভেম্বর দিন ধার্য করা হয়।

গত ২৮ অক্টোবর অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানি শেষে দুই মামলায় আদেশের জন্য আজ দিন ধার্য করা হয়েছিল।

সে অনুযায়ী আজ অভিযোগ গঠন করে আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইনুর আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী। আর পলাতক মাহবুব উল আলম হানিফসহ চার আসামির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন।

এ ছাড়া রাষ্ট্রপক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামসহ অন্য প্রসিকিউটররা উপস্থিত ছিলেন।

চানখাঁরপুলের ঘটনায় সাক্ষ্য গ্রহণ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর চানখাঁরপুলে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ রোকনুজ্জামান। তিনি পুলিশ পরিদর্শক হিসেবে সিআইডির ফরেনসিক বিভাগে কর্মরত রয়েছেন।

এ ছাড়া সাক্ষ্য দিয়েছেন একই সংস্থার ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাবের উপপরিদর্শক শাহেদ জোবায়ের লরেন্স। তাঁরা এ মামলায় উদ্ধার করা আলামত যাচাই-বাছাইয়ের বর্ণনা দেন।

পরে তাঁদের জেরা করেন আসামি পক্ষের আইনজীবীরা। এ নিয়ে এ মামলায় মোট ২২ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। আজ বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ তাঁদের জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষিকা থাকেন ঢাকায়, খালিয়াজুরীতে তাঁর নামে স্বাক্ষর করেন স্নাতকপড়ুয়া

জাকির নায়েক বিতর্কে ভারতের প্রতিক্রিয়ার যে জবাব দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

সকাল থেকে রাজধানীতে তীব্র যানজট, কারণ জানাল ডিএমপি

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের ফেসবুক প্রোফাইল ঘাঁটবেন না, মুরাদ টাকলার সঙ্গে দেখা হবে

সৌদি সরকারের দেওয়া দুম্বার মাংস: মনিরামপুরে বিতরণে ১২০ প্যাকেট হাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত