Ajker Patrika

‘অবৈধ’ গাড়ি চলে গোঁজামিলে

  • প্রকল্পের জন্য কেনা গাড়ি কাজ শেষেও পুলে না দিয়ে চলছে ব্যবহার
  • এসব গাড়ির জন্য প্রশাসনিক অনুমতি নেই, টিওঅ্যান্ডইভুক্তও নয়
  • অনুমতি, টিওঅ্যান্ডই না থাকলে গাড়ির জন্য বরাদ্দ দেওয়া যায় না
রাহুল শর্মা, ঢাকা 
আপডেট : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭: ১২
‘অবৈধ’ গাড়ি চলে গোঁজামিলে

প্রশাসনিক অনুমতি এবং টেবিল অব অর্গানাইজেশন অ্যান্ড ইকুইপমেন্ট (টিওঅ্যান্ডই) ভুক্ত হওয়া ছাড়াই চলছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের ৭৭টি গাড়ি। ফলে এসব গাড়ির জন্য খরচের (জ্বালানি, রক্ষণাবেক্ষণ) আইনি ভিত্তি নেই। ‘গোঁজামিল’ দিয়ে চলছে টাকা বরাদ্দ। যেন মাসে মাসে এসব গাড়ির খরচ জোগাচ্ছে ‘ভূতে’।

আজকের পত্রিকার অনুসন্ধানে এসব তথ্য জানা গেছে। জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারি দপ্তর বা সংস্থা কোনো গাড়ি ব্যবহার করলে সে জন্য প্রশাসনিক অনুমোদন নেওয়া এবং টিওঅ্যান্ডইভুক্তি বাধ্যতামূলক। এসব না থাকলে সংশ্লিষ্ট গাড়ির জ্বালানি, রক্ষণাবেক্ষণসহ অন্যান্য ব্যয়ের জন্য সুনির্দিষ্ট সরকারি বরাদ্দ রাখার সুযোগ নেই। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন মাউশির ওই ৭৭ গাড়ির জন্য খরচ নিয়মের মধ্যে হচ্ছে না।

অবশ্য মাউশি সম্প্রতি এই ৭৭টি গাড়ি টিওঅ্যান্ডইভুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে। এসব গাড়ি ব্যবহারের জন্য ‘ভূতাপেক্ষ’ অনুমোদন চেয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও অর্থ) মো. মজিবর রহমান বলেছেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই, অবশ্যই তিনি খোঁজখবর নেবেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর মাউশি দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ করে। সারা দেশে এই দপ্তরের অধীন ৯টি আঞ্চলিক কার্যালয় এবং এসব আঞ্চলিক কার্যালয়ের অধীন জেলা শিক্ষা অফিস রয়েছে। নথিপত্র ঘেঁটে এবং মাউশির কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে মাউশির প্রধান কার্যালয়, আঞ্চলিক ও জেলা কার্যালয়ে ১০৩টি গাড়ি ব্যবহার করা হচ্ছে। এগুলোর মধ্যে ২৬টি গাড়ি মাউশির সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রামের (সেসিপ) আওতায়। এসব গাড়ির জ্বালানি ও অন্যান্য খরচও এই প্রকল্প থেকে ব্যয় হচ্ছে। বাকি ৭৭টি গাড়ি এরই মধ্যে সমাপ্ত হয়ে যাওয়া একাধিক প্রকল্পের। মাউশি প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত দপ্তরটির মাত্র পাঁচটি গাড়ি টিওঅ্যান্ডইভুক্ত করা হয়েছে। বাকি গাড়িগুলো টিওঅ্যান্ডইভুক্তি ছাড়াই ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব গাড়ির বেশির ভাগই টিচিং কোয়ালিটি ইমপ্রুভমেন্ট (টিকিউআই), সেসিপসহ একাধিক প্রকল্প থেকে নেওয়া হয়েছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জানা যায়, কোনো প্রকল্প শেষ হলে ৬০ দিনের মধ্যে প্রকল্পটির সব সচল যানবাহন সরকারি পরিবহন পুলে জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। প্রকল্প পরিচালকের প্রতি এমন নির্দেশনা দিয়ে ২০২১ সালের ৫ জানুয়ারি অফিস আদেশ জারি হয়। গাড়িগুলো টিওঅ্যান্ডই তালিকাভুক্ত করারও বিধান রয়েছে। টিওঅ্যান্ডই তালিকাভুক্তির অর্থ হলো সরকারি দপ্তর বা সংস্থার সাংগঠনিক কাঠামোয় অনুমোদিত যানবাহন; যা সাধারণত কোনো কর্মকর্তার পদের বিপরীতে তাঁর যাতায়াতের সুবিধার্থে বরাদ্দ করা হয়। এসব গাড়ি ব্যবহারে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত নিয়মকানুন মানা বাধ্যতামূলক এবং এসব গাড়ির জন্য সরকারি অর্থ বরাদ্দ থাকে।

জানতে চাইলে সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরের পরিচালক মোহাম্মদ তানভীর আজম ছিদ্দিকী ১৫ সেপ্টেম্বর আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকারি দপ্তরের চলমান গাড়ি অবশ্যই টিওঅ্যান্ডইভুক্ত হতে হবে। এটা আইনি বাধ্যবাধকতা। কারণ, দপ্তর বা সংস্থার প্রাধিকারভুক্ত পদের বিপরীতেই গাড়ি বরাদ্দ থাকে; যা সাংগঠনিক কাঠামোতে উল্লেখ রয়েছে। টিওঅ্যান্ডইভুক্ত যানবাহন ছাড়া অন্য যানবাহনের জন্য অফিশিয়ালি অর্থ ব্যয়ের (জ্বালানি-রক্ষণাবেক্ষণ ও অন্যান্য খরচ) সুযোগ নেই।

তবে মাউশির ব্যবহার করা ৭৭টি গাড়ির ক্ষেত্রে এসব নিয়ম মানা হয়নি। অবশ্য গত ১৯ আগস্ট এই ৭৭ গাড়ি টিওঅ্যান্ডইভুক্ত করার জন্য অনুমতি চেয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আজাদ খান। ওই চিঠিতে মাউশির প্রধান কার্যালয়, ৯টি আঞ্চলিক কার্যালয় এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের কর্মপরিধি অনুযায়ী তাঁদের প্রশাসনিক কার্যক্রম সচল রাখার স্বার্থে সদ্য সমাপ্ত তিনটি প্রকল্পের আওতায় কেনা গাড়িগুলো নিয়মিত কার্যক্রমে ব্যবহারের অনুমতি দিতে প্রয়োজনীয় তথ্য দেওয়া হয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, যে ৭৭টি গাড়ি ব্যবহারের জন্য প্রশাসনিক অনুমোদন চাওয়া হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে ৭৫টি মিতসুবিশি নাটিভা, পাজেরো ও আউটল্যান্ডার ব্র্যান্ডের জিপ। বাকি দুটি মাইক্রোবাস। এসব গাড়ির মধ্যে ৭৪টি গাড়িই টিচিং কোয়ালিটি ইমপ্রুভমেন্ট (টিকিউআই-১ ও ২) প্রকল্পের অধীনে কেনা হয়েছিল। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে ২০০৫ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে। দু্টি গাড়ি ন্যাশনাল একাডেমি ফর অটিজম অ্যান্ড নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল ডিজঅ্যাবিলিটিজ (নানড) প্রকল্পের। সম্প্রতি এই প্রকল্পের কাজ অসমাপ্ত রেখেই সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। বাকি একটি গাড়ি পোস্টগ্র্যাজুয়েট কলেজসমূহের উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে কেনা হয়েছিল। এই প্রকল্প ২০২৪ সালের ৩০ জুন শেষ হয়। এসব গাড়ির মধ্যে প্রধান কার্যালয়ে ৯টি, আঞ্চলিক কার্যালয়ে ৫টি এবং বাকি ৬৩টি জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে।

গাড়ির পেছনে ব্যয় কত

মাউশির নথি থেকে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরে (২০২৫-২৬) মাউশির প্রধান কার্যালয়ের মোট ১০টি গাড়ি ব্যবহারের (১ গাড়ির অতিরিক্ত ব্যয় ধরা হয়েছে) জন্য মোট ৪৪ লাখ ২ হাজার টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বছরে জ্বালানি তেল খরচ ২৭ লাখ ২১ হাজার ৬০০ টাকা, বছরে অতিরিক্ত তেল খরচ ভ্রমণ ৬ লাখ ৮০ হাজার ৪০০ টাকা, বছরে মেরামত খরচ ৭ লাখ ৫০ হাজার এবং অতিরিক্ত খরচ ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। অন্যান্য কার্যালয়ের গাড়ির জন্য বার্ষিক বরাদ্দের তথ্য পাওয়া যায়নি।

ঢাকার বাইরের জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের প্রতি গাড়ির জন্য মাউশি থেকে মাসিক ১০০-১২০ লিটার জ্বালানি তেল এবং বার্ষিক মেরামত বাবদ ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়। আঞ্চলিক কর্মকর্তাদের জন্য মাসিক ১৮০ লিটার জ্বালানি তেল এবং মেরামত বাবদ বার্ষিক ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ রাখা হয়।

সূত্র বলছে, প্রকল্প চলমান থাকা অবস্থায় বেশির ভাগ গাড়ির পরিচালন ব্যয় প্রকল্প থেকে দেওয়া হতো। কিন্তু একাধিক প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে গাড়ির খরচ মাউশি থেকে বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে।

জানতে চাইলে মাউশির বরিশাল আঞ্চলিক পরিচালক অধ্যাপক মো. ওমর ফারুক আজকের পত্রিকাকে বলেন, এত দিন সেসিপ প্রকল্প থেকে গাড়ির জ্বালানি ও অন্যান্য খরচ দেওয়া হতো। এখন মাউশি থেকে খরচ দেওয়া হচ্ছে। যদিও তা প্রয়োজনের তুলনায় পর্যাপ্ত নয়। বিভিন্নভাবে তা (গাড়ির খরচ) ‘ম্যানেজ’ করা হতো।

মাউশির রাজশাহীর আঞ্চলিক পরিচালক অধ্যাপক মো. আসাদুজ্জামান বলেন, বর্তমানে যা বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে, তা পর্যাপ্ত নয়। বাড়তি অর্থ ব্যক্তিগতভাবে খরচ করা হয়।

এ বিষয়ে মাউশির সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, টিওঅ্যান্ডইভুক্ত না হওয়ায় ওই ৭৭ গাড়ির জ্বালানি ও অন্যান্য খরচের কোনো বৈধতা নেই। কিন্তু তারপরও বিভিন্ন খাত থেকে তাঁরা অর্থ বরাদ্দ দিচ্ছেন।

টিওঅ্যান্ডইভুক্ত ছাড়া মাউশির ৭৭টি গাড়ির পেছনে অর্থ ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সরকারি চাকরির বিধিবিধানের বিশেষজ্ঞ ও সাবেক অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ ফিরোজ মিয়া। দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ১৪ সেপ্টেম্বর আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, টিওঅ্যান্ডইভুক্ত ছাড়া সরকারি কাজে কোনো গাড়ি ব্যবহারের সুযোগ নেই। কারণ, এসব গাড়ি সরকারি নথিভুক্ত বা অনুমোদিত নয়। এসব গাড়ি বাবদ অর্থ ব্যয় (জ্বালানি, রক্ষণাবেক্ষণ ও গাড়িচালকের বেতন) আর্থিক অনিয়ম। কোনো দপ্তর যদি টিওঅ্যান্ডইভুক্তি ছাড়া গাড়ি ব্যবহার করে, তা অবশ্যই তদন্তের আওতায় আনতে হবে।

মাউশির অধীনে সারা দেশে চলমান গাড়িগুলোর পেছনে খরচের বিষয়ে বিভিন্ন কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে তাঁরা অপারগতা জানিয়ে বলেন, এ বিষয়ে তথ্য দিতে নিষেধ আছে।

ওই ৭৭ গাড়ির বিষয়ে মাউশির উপপরিচালক (সাধারণ প্রশাসন) মো. শাহজাহানের কাছে জানতে চাইলে তিনি পরিচালক (অর্থ ও ক্রয়) অধ্যাপক গোপীনাথ পালের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। গোপীনাথ পালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি অল্প কিছুদিন হলো এই বিভাগে এসেছি। এ বিষয়ে পরিষ্কার তথ্য জানা নেই। তবে কিছু জেলায় তেল ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়।’

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আজাদ খানকে একাধিকবার মোবাইলে ফোন করা হলেও ধরা হয়নি। পরে সরাসরি কথা বলতে তাঁর দপ্তরে গিয়েও সাক্ষাৎ পাওয়া যায়নি।

সার্বিক বিষয়ে জানতে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব রেহানা পারভীনকে একাধিকবার মোবাইলে ফোন করে পাওয়া যায়নি। সচিবালয়ে তাঁদের দপ্তরে গিয়েও সাক্ষাৎ মেলেনি।

পরে যোগাযোগ করা হলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও অর্থ) মো. মজিবর রহমান ১৬ সেপ্টেম্বর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। অবশ্যই খোঁজখবর নেওয়া হবে।’

দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান ১৬ সেপ্টেম্বর আজকের পত্রিকা'কে বলেন, মাউশির মতো প্রতিষ্ঠান যদি সরকারি বিধি লঙ্ঘন করে, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটা ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম। এর সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাগেরহাটের ৪টি আসন বহাল, ফিরল না গাজীপুর ৬

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বাগেরহাটের ৩টি আসন পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা লিভ টু আপিল খারিজ করে আজ বুধবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগ সর্বসম্মতিতে এ আদেশ দেন।

এর ফলে বহাল থাকল বাগেরহাটের চারটি আসন। বাদ পড়েছে গাজীপুর-৬ আসনটিও।

এর আগে বাগেরহাটের আসন একটি কমিয়ে তিনটি করা এবং গাজীপুরে একটি বাড়ানো-সংক্রান্ত নির্বাচন কমিশনের গেজেট চ্যালেঞ্জ করে রিট করা হয়। শুনানি শেষে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত বাতিল করে গত ১০ নভেম্বর হাইকোর্ট রায় দেন।

হাইকোর্টের রায় ঘোষণার পরপরই তা স্থগিত চেয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) এবং গাজীপুর-৬ আসন থেকে জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী ড. হাফিজুর রহমান ও বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী মো. সালাহ উদ্দিন সরকার আপিল বিভাগে পৃথক আবেদন করেন।

নির্বাচন কমিশনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। ড. হাফিজুর রহমানের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার বেলায়েত হোসেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে বঙ্গভবনে সিইসি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৪
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছেন সিইসি। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছেন সিইসি। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনাররা বঙ্গভবনে পৌঁছেছেন।

বঙ্গভবনের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন, আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ইসির বৈঠকের শিডিউল রাখা আছে।

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট উপলক্ষে নির্বাচন কমিশনের সার্বিক প্রস্তুতি ও তফসিল ঘোষণা বিষয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে আলোচনা করতে বঙ্গভবনে গেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন। সিইসি দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে বঙ্গভবনে পৌঁছান।

এর আগে ১০টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন ভবন থেকে বঙ্গভবনের উদ্দেশে রওনা হন তিনি।

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে রয়েছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ (অবসরপ্রাপ্ত), তাহমিদা বেগম, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার ও আব্দুর রহমানেল মাছউদ এবং ইসি সচিব আখতার আহমেদ।

উল্লেখ্য, চলতি সপ্তাহেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা রয়েছে। তফসিল-সংক্রান্ত ভাষণ রেকর্ড করতে ইতিমধ্যে বিটিভি ও বাংলাদেশ বেতারকে চিঠিও দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাংলাদেশের ‘টাঙ্গাইল শাড়ি বুনন শিল্প’ অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, ইউনেসকোর স্বীকৃতি

বাসস, ঢাকা  
টাঙ্গাইল শাড়িতে অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা মিম। ছবি: ফেসবুক
টাঙ্গাইল শাড়িতে অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা মিম। ছবি: ফেসবুক

টাঙ্গাইলের শাড়ি বুনন শিল্পকে অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেসকো। গতকাল মঙ্গলবার ভারতের নয়াদিল্লিতে ইউনেসকো কনভেনশনের চলমান ২০তম আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এই কনভেনশনের আওতায় এটি বাংলাদেশের ষষ্ঠ একক নিবন্ধন। সভায় প্রথমবারের মতো সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর বিগত চার বছরে এটি দ্বিতীয় নিবন্ধন।

সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের প্রধান এবং ইউনেসকো সাধারণ পরিষদের সভাপতি ও বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জানান, ‘এই স্বীকৃতি বাংলাদেশের জন্য অসামান্য গৌরবের বিষয়। দীর্ঘ দুই শতকের বেশি সময় ধরে টাঙ্গাইলের তাঁতিদের অনবদ্য শিল্পকর্মের বৈশ্বিক স্বীকৃতি এটি।’

তিনি আরও বলেন, ‘টাঙ্গাইল শাড়ি বাংলাদেশের সকল নারীর নিত্য পরিধেয়, যা এই শাড়ি বুনন শিল্পের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনের পেছনে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে।’

এই অর্জনকে বাংলাদেশের সকল তাঁতি ও নারীদের প্রতি উৎসর্গ করেছেন রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা।

বাংলাদেশের অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সামগ্রিক সুরক্ষায় এই স্বীকৃতি নতুন মাত্রা যোগ করবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত তালহা বলেন, ঐতিহ্য হিসেবে ইউনেসকোর স্বীকৃতি অর্জনের মতো বাংলাদেশের অপরিমেয় সাংস্কৃতিক উপাদান রয়েছে।

নথি প্রস্তুত করার সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং কনভেনশন সংক্রান্ত অভিজ্ঞ জনবল তৈরি করার মাধ্যমে আরও অনেক ঐতিহ্যের ইউনেসকো-স্বীকৃতি অর্জনের সুযোগ রয়েছে।

এর আগে, গত ৭ ডিসেম্বর আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের চলমান ২০তম সভা উদ্বোধন করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শংকর। অনুষ্ঠানে ইউনেসকোর নবনিযুক্ত মহাপরিচালক খালেদ এল. এনানি উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজ সংবাদ সম্মেলনে আসছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ৩৪
ভারতকে হারানোর পর ২ কোটি টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।ছবি: ফাইল ছবি
ভারতকে হারানোর পর ২ কোটি টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।ছবি: ফাইল ছবি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তোড়জোড়ের মধ্যে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে আসছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

সমসাময়িক বিষয়ে আজ বুধবার বেলা ৩টায় স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলনকক্ষে আসিফ মাহমুদের সংবাদ সম্মেলন হবে বলে মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।

সমসাময়িক কোন বিষয়ে আসিফ মাহমুদ সংবাদ সম্মেলনে কথা বলবেন, মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণপত্রে তা উল্লেখ করা হয়নি। তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজকের সংবাদ সম্মেলন থেকে উপদেষ্টা পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিতে পারেন তিনি।

আজ রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করার পর ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার জন্য ভাষণের রেকর্ড করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। আজ সন্ধ্যায় বা আগামীকাল বৃহস্পতিবার এই তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমও আজ পদত্যাগের ঘোষণা দিতে পারেন বলে আলোচনা রয়েছে।

উপদেষ্টার পদে থেকে নির্বাচন করতে আইনি বাধা না থাকলেও তফসিল ঘোষণার আগে সরকারে থাকা দুজন ছাত্র উপদেষ্টা পদত্যাগ করবেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনে অন্যতম সমন্বয়ক হিসেবে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আসিফ মাহমুদ। তাঁদের আন্দোলন একপর্যায়ে সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনে রূপ নেয়। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয় আওয়ামী লীগ সরকার। এরপর ওই বছরের ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। এই সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন আসিফ মাহমুদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত