নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরার পথ খুলল। একই সঙ্গে পুনর্বহাল হলো গণভোটের বিধান। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপ-সংক্রান্ত সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর কিছু অংশ হাইকোর্ট গতকাল মঙ্গলবার বাতিল ঘোষণা করায় এই পথ খুলেছে।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১১ সালে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপ করা হয়েছিল। গতকালের রায়ের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের যে বিধান করেছিল, তা বাতিল হয়ে গেল। এর জায়গায় নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরার বাধা কাটল।
এই রায়ে সাধুবাদ জানিয়েছে এ-সংক্রান্ত রিট মামলায় পক্ষভুক্ত হওয়া বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। রিট আবেদনকারী পাঁচজনের অন্যতম সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার এই রায়কে ঐতিহাসিক বলে অভিহিত করেছেন।
হাইকোর্ট গতকাল রায়ে পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপ-সংক্রান্ত ২০ ও ২১ ধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করেন। আদালত বলেছেন, এই দুই ধারা সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকে ধ্বংস করেছে। পঞ্চদশ সংশোধনী চ্যালেঞ্জ করে করা দুই রিট মামলার রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন। পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ও আইনের কয়েকটি ধারার বৈধতা নিয়ে রায়ের মূল অংশ পাঠ করেন বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ফারাহ মাহবুব।
উচ্চ আদালত রায়ে ওই দুটিসহ পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের মাধ্যমে সংবিধানে যুক্ত ৭ক, ৭খ, ৪৪(২) অনুচ্ছেদ সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করেন। রিটকারীদের পক্ষে পুরো পঞ্চদশ সংশোধনী চ্যালেঞ্জ করে রিট করা হয়েছিল।
পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ৫৪টি ক্ষেত্রে সংযোজন, পরিমার্জন আনা হয়েছিল। রায়ে আদালত বলেছেন, পঞ্চদশ সংশোধনী আইন পুরোটা বাতিল করা হচ্ছে না। বাকি বিধানগুলোর মধ্যে জাতির জনক, ৭ মার্চের ভাষণসহ কিছু বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার আগামী জাতীয় সংসদের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন আদালত।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদ উদ্দিন। ৫ ডিসেম্বর পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুলের রায়ের জন্য ১৭ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেছিলেন হাইকোর্ট।
এই রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরে আসায় বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারব্যবস্থা সাংবিধানিকভাবে তার সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে কি না, রায়ের পর সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, হাইকোর্ট রায়ের মধ্য দিয়ে বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা সাংবিধানিকভাবে বৈধ। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী মতামত দিয়ে বলেছিলেন, সংসদ না থাকা অবস্থায় প্রধান উপদেষ্টা ও কয়েকজন উপদেষ্টা নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা যেতে পারে।
গত ১৮ আগস্ট পঞ্চদশ সংশোধনী চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্টজন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ১৯ আগস্ট রুল দেন। পঞ্চদশ সংশোধনী কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় রুলে। বিএনপি, গণফোরাম, জামায়াতে ইসলামী, কয়েকটি সংগঠন এবং কয়েকজন ব্যক্তি এই রিট মামলায় পক্ষভুক্ত হন। তাঁদের পক্ষে আইনজীবীরা শুনানিতে অংশ নেন।
পঞ্চদশ সংশোধনীর ১৭টি ধারার বৈধতা নিয়ে নওগাঁর রাণীনগরের নারায়ণপাড়ার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেন গত অক্টোবরে একটি রিট করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২৯ অক্টোবর হাইকোর্টের একই বেঞ্চ রুল দেন। রুলে আইনের ওই ধারাগুলো কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। পরে সেই রুলের ওপর শুনানি হয়।
সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার এই রায়কে ঐতিহাসিক হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আদালত সংবিধানে জাতির জনক, ৭ মার্চের ভাষণসহ কয়েকটি ধারার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার রাজনীতিবিদদের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন। এটি অত্যন্ত ভালো সিদ্ধান্ত।
রিটকারীর আইনজীবী শরীফ ভূঁইয়া সাংবাদিকদের বলেন, তাঁদের পক্ষ থেকে পঞ্চদশ সংশোধনী সম্পূর্ণ বাতিল চাওয়া হয়েছিল। আদালত কিছু ধারা বাতিল করেছেন। বাকিগুলো ভবিষ্যৎ সংসদের জন্য রেখে দিয়েছেন। তিনি বলেন, বাধা দূর হলেও তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা এখনই ফিরে এসেছে বলা যাবে না। কারণ, সেটা বাতিল করা হয়েছিল দুভাবে। আদালতের রায় ও সংসদে সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে। এ বিষয়ে আপিল বিভাগে রিভিউ আবেদন করেছেন। আগামী জানুয়ারিতে শুনানি হবে। সেটা আবেদনকারীদের পক্ষে নিষ্পত্তি হলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরবে।
যেসব ধারা বাতিল করা হয়েছে
রায়ে পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ২০ ও ২১ ধারা এবং পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের মাধ্যমে সংবিধানে যুক্ত ৭ক, ৭খ ও ৪৪(২) অনুচ্ছেদ বাতিল ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।
পঞ্চদশ সংশোধনীতে বলা হয়েছিল, ৭ক অনুচ্ছেদে সংবিধান বাতিল, স্থগিতকরণ ইত্যাদি অপরাধ। ৭খ অনুচ্ছেদে সংবিধানের মৌলিক বিধানাবলি সংশোধন অযোগ্য বলা ছিল। ৪৪(২) অনুচ্ছেদে বলা ছিল, এই সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদের অধীন হাইকোর্ট বিভাগের ক্ষমতার হানি না ঘটিয়ে সংসদ আইনের দ্বারা অন্য কোনো আদালতকে তাঁর এখতিয়ারের স্থানীয় সীমার মধ্যে ওই সব বা এর যেকোনো ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষমতা দিতে পারবেন।
আদালত রায়ে বলেছেন, সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদের গণভোটের বিধান বিলুপ্তি-সংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ৪৭ ধারা সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় বাতিল ঘোষণা করা হলো। ফলে দ্বাদশ সংশোধনীর ১৪২ অনুচ্ছেদ পুনর্বহাল করা হলো।
পঞ্চদশ সংশোধনীর যেসব বিষয় নিয়ে বিতর্ক হয়
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাস হয়। ওই বছরের ৩ জুলাই এ-সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়। ওই সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপের পাশাপাশি সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসন ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০ জন করা হয়।
এই সংশোধনীতে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকে রাষ্ট্রদ্রোহ অপরাধ বিবেচনায় নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধে দোষী করে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধানও যুক্ত করা হয়। মেয়াদ শেষ হওয়ার পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার বিধান থাকলেও ওই সংশোধনীতে পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার বিষয়টি সংযোজন করা হয়।
সংবিধানে জাতীয় চার মূলনীতি—জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা ফিরিয়ে আনা হয়। সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বহাল রেখে অন্যান্য ধর্মের সমমর্যাদা নিশ্চিত করার বিধান আনা হয়। পাশাপাশি ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ভাষণ, ২৬ মার্চের স্বাধীনতার ঘোষণা ও স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরার পথ খুলল। একই সঙ্গে পুনর্বহাল হলো গণভোটের বিধান। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপ-সংক্রান্ত সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর কিছু অংশ হাইকোর্ট গতকাল মঙ্গলবার বাতিল ঘোষণা করায় এই পথ খুলেছে।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১১ সালে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপ করা হয়েছিল। গতকালের রায়ের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের যে বিধান করেছিল, তা বাতিল হয়ে গেল। এর জায়গায় নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরার বাধা কাটল।
এই রায়ে সাধুবাদ জানিয়েছে এ-সংক্রান্ত রিট মামলায় পক্ষভুক্ত হওয়া বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। রিট আবেদনকারী পাঁচজনের অন্যতম সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার এই রায়কে ঐতিহাসিক বলে অভিহিত করেছেন।
হাইকোর্ট গতকাল রায়ে পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপ-সংক্রান্ত ২০ ও ২১ ধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করেন। আদালত বলেছেন, এই দুই ধারা সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকে ধ্বংস করেছে। পঞ্চদশ সংশোধনী চ্যালেঞ্জ করে করা দুই রিট মামলার রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন। পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ও আইনের কয়েকটি ধারার বৈধতা নিয়ে রায়ের মূল অংশ পাঠ করেন বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ফারাহ মাহবুব।
উচ্চ আদালত রায়ে ওই দুটিসহ পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের মাধ্যমে সংবিধানে যুক্ত ৭ক, ৭খ, ৪৪(২) অনুচ্ছেদ সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করেন। রিটকারীদের পক্ষে পুরো পঞ্চদশ সংশোধনী চ্যালেঞ্জ করে রিট করা হয়েছিল।
পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ৫৪টি ক্ষেত্রে সংযোজন, পরিমার্জন আনা হয়েছিল। রায়ে আদালত বলেছেন, পঞ্চদশ সংশোধনী আইন পুরোটা বাতিল করা হচ্ছে না। বাকি বিধানগুলোর মধ্যে জাতির জনক, ৭ মার্চের ভাষণসহ কিছু বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার আগামী জাতীয় সংসদের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন আদালত।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদ উদ্দিন। ৫ ডিসেম্বর পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুলের রায়ের জন্য ১৭ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেছিলেন হাইকোর্ট।
এই রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরে আসায় বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারব্যবস্থা সাংবিধানিকভাবে তার সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে কি না, রায়ের পর সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, হাইকোর্ট রায়ের মধ্য দিয়ে বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা সাংবিধানিকভাবে বৈধ। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী মতামত দিয়ে বলেছিলেন, সংসদ না থাকা অবস্থায় প্রধান উপদেষ্টা ও কয়েকজন উপদেষ্টা নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা যেতে পারে।
গত ১৮ আগস্ট পঞ্চদশ সংশোধনী চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্টজন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ১৯ আগস্ট রুল দেন। পঞ্চদশ সংশোধনী কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় রুলে। বিএনপি, গণফোরাম, জামায়াতে ইসলামী, কয়েকটি সংগঠন এবং কয়েকজন ব্যক্তি এই রিট মামলায় পক্ষভুক্ত হন। তাঁদের পক্ষে আইনজীবীরা শুনানিতে অংশ নেন।
পঞ্চদশ সংশোধনীর ১৭টি ধারার বৈধতা নিয়ে নওগাঁর রাণীনগরের নারায়ণপাড়ার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেন গত অক্টোবরে একটি রিট করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২৯ অক্টোবর হাইকোর্টের একই বেঞ্চ রুল দেন। রুলে আইনের ওই ধারাগুলো কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। পরে সেই রুলের ওপর শুনানি হয়।
সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার এই রায়কে ঐতিহাসিক হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আদালত সংবিধানে জাতির জনক, ৭ মার্চের ভাষণসহ কয়েকটি ধারার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার রাজনীতিবিদদের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন। এটি অত্যন্ত ভালো সিদ্ধান্ত।
রিটকারীর আইনজীবী শরীফ ভূঁইয়া সাংবাদিকদের বলেন, তাঁদের পক্ষ থেকে পঞ্চদশ সংশোধনী সম্পূর্ণ বাতিল চাওয়া হয়েছিল। আদালত কিছু ধারা বাতিল করেছেন। বাকিগুলো ভবিষ্যৎ সংসদের জন্য রেখে দিয়েছেন। তিনি বলেন, বাধা দূর হলেও তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা এখনই ফিরে এসেছে বলা যাবে না। কারণ, সেটা বাতিল করা হয়েছিল দুভাবে। আদালতের রায় ও সংসদে সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে। এ বিষয়ে আপিল বিভাগে রিভিউ আবেদন করেছেন। আগামী জানুয়ারিতে শুনানি হবে। সেটা আবেদনকারীদের পক্ষে নিষ্পত্তি হলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরবে।
যেসব ধারা বাতিল করা হয়েছে
রায়ে পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ২০ ও ২১ ধারা এবং পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের মাধ্যমে সংবিধানে যুক্ত ৭ক, ৭খ ও ৪৪(২) অনুচ্ছেদ বাতিল ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।
পঞ্চদশ সংশোধনীতে বলা হয়েছিল, ৭ক অনুচ্ছেদে সংবিধান বাতিল, স্থগিতকরণ ইত্যাদি অপরাধ। ৭খ অনুচ্ছেদে সংবিধানের মৌলিক বিধানাবলি সংশোধন অযোগ্য বলা ছিল। ৪৪(২) অনুচ্ছেদে বলা ছিল, এই সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদের অধীন হাইকোর্ট বিভাগের ক্ষমতার হানি না ঘটিয়ে সংসদ আইনের দ্বারা অন্য কোনো আদালতকে তাঁর এখতিয়ারের স্থানীয় সীমার মধ্যে ওই সব বা এর যেকোনো ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষমতা দিতে পারবেন।
আদালত রায়ে বলেছেন, সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদের গণভোটের বিধান বিলুপ্তি-সংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ৪৭ ধারা সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় বাতিল ঘোষণা করা হলো। ফলে দ্বাদশ সংশোধনীর ১৪২ অনুচ্ছেদ পুনর্বহাল করা হলো।
পঞ্চদশ সংশোধনীর যেসব বিষয় নিয়ে বিতর্ক হয়
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাস হয়। ওই বছরের ৩ জুলাই এ-সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়। ওই সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপের পাশাপাশি সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসন ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০ জন করা হয়।
এই সংশোধনীতে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকে রাষ্ট্রদ্রোহ অপরাধ বিবেচনায় নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধে দোষী করে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধানও যুক্ত করা হয়। মেয়াদ শেষ হওয়ার পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার বিধান থাকলেও ওই সংশোধনীতে পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার বিষয়টি সংযোজন করা হয়।
সংবিধানে জাতীয় চার মূলনীতি—জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা ফিরিয়ে আনা হয়। সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বহাল রেখে অন্যান্য ধর্মের সমমর্যাদা নিশ্চিত করার বিধান আনা হয়। পাশাপাশি ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ভাষণ, ২৬ মার্চের স্বাধীনতার ঘোষণা ও স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
জ্বালানি তেলের দাম লিটারে এক টাকা বেড়েছে। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে নতুন এই দাম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে জ্বালানি বিভাগ। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি লিটার ১ টাকা বেড়ে ১০৫ টাকা, কেরোসিন ১০৪ টাকা থেকে ১০৫ টাকা এবং অকটেন ১২৬ টাকা ও পেট্রল ১২২ টাকায় পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে...
৪ ঘণ্টা আগেঅন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে নিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। প্রতিবেদনের বাস্তবতার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই; এটি শুধুই একটি বলিউডি রোমান্টিক কমেডি। আজ শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং ফ্যাক্টস ফেসবুকে তাদের ভেরিফায়েড..
৪ ঘণ্টা আগেমজুরি বৈষম্য দূরীকরণ, চাকরির সুরক্ষা নিশ্চিত ও নিজেদের অধিকার আদায় করতে শুধু সংস্কার কমিশনের সুপারিশ যথেষ্ট নয়, বরং আন্দোলন–সংগ্রামও চালিয়ে যেতে হবে—এমনটাই বলেছেন খোদ সরকারের শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মদ।
৬ ঘণ্টা আগেচাকরিচ্যুত পুলিশ সদস্যরা চাকরি পুনর্বহালের দাবিতে পরপর দুই দিন সড়ক অবরোধ করেছেন। এরপর আজ বৃহস্পতিবার তাঁরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে সচিবালয়ে দেখা করেছেন। পুলিশ সদর দপ্তর বলছে, বিগত সরকারের আমলে বিভিন্ন কারণে চাকরিচ্যুত এসব পুলিশ সদস্যের আবেদনগুলো পর্যালোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ জন্য ডিআইজি পদ
৬ ঘণ্টা আগে