আরিফুজ্জামান তুহিন, ঢাকা

শতভাগ সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেডের (এনডব্লিউপিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে নিয়োগের পরীক্ষায় তৃতীয় হয়েছিলেন কাজী আবসার উদ্দীন আহমেদ। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর ‘ধমকে’ পরীক্ষার সেই ফলকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তৃতীয় হওয়া আবসারকেই করা হয় দেশের সবচেয়ে বড় সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের এমডি। পেশায় প্রকৌশলী আবসারের অন্য পরিচয় তিনি বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদের নেতা এবং রাজশাহী-২ আসনের তিনবারের নৌকা প্রতীকের সংসদ সদস্য ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশার বোনের ছেলে।
আলোচিত-বিতর্কিত রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূল কেনাকাটার দায়িত্বে ছিলেন কাজী আবসার। পরিবেশবাদীসহ বিশেষজ্ঞ মহলের অনেকের তীব্র বিরোধিতা উপেক্ষা করে নির্মাণের পর অধিকাংশ সময় অর্ধেক ক্ষমতায় উৎপাদন করে যাচ্ছে এ কেন্দ্রটি। এনডব্লিউপিসিএলের এমডি হয়ে বিদেশি ঠিকাদারের টাকায় চীন ও সিঙ্গাপুরে সপরিবারে প্রমোদ ভ্রমণ করা ও অবৈধভাবে স্ত্রীকে কোম্পানির পাজেরো গাড়ি ব্যবহার করতে দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে আবসারের বিরুদ্ধে। এসব ভূমিকার জন্য জবাবদিহি তথা সাজার মুখোমুখি না করে অন্তর্বর্তী সরকার আবার তাঁর মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকার কাজী আবসারকে দ্বিতীয় মেয়াদে এনডব্লিউপিসিএলের এমডি করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) এবং কোম্পানিটির প্রকৌশলীসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত সরকারের শীর্ষ মহলের আশীর্বাদপুষ্ট প্রতিমন্ত্রীর সুনজরে থাকা ব্যক্তির এ ‘সৌভাগ্য’ কীভাবে হয়, তা তাঁরা বুঝে উঠছেন না।
তৃতীয় হয়েও মন্ত্রীর ধমকে নিয়োগ: বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালে এনডব্লিউপিসিএলের এমডি পদে নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়েছিলেন যথাক্রমে মো. মাসুদুল ইসলাম, প্রকৌশলী হাসিবুল ইসলাম এবং কাজী আবসার উদ্দীন। এর মধ্যে এনডব্লিউপিসিএল বোর্ড প্রথমে মো. মাসুদুল ইসলামকে নিয়োগের সুপারিশ করে। তবে কোম্পানির চাকরিবিধির শর্তে না থাকলেও আওয়ামী লীগের সমর্থক প্রকৌশলীরা মাসুদুল ইসলাম প্রকৌশলী না হওয়ায় তাঁকে নিয়োগের বিরোধিতা করেন। তখন দ্বিতীয় হওয়া প্রকৌশলী হাসিবুল ইসলামের নাম এলেও তৎকালীন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ তা বাতিল করে দেন। বিদ্যুৎ বিভাগের দুজন কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিদ্যুৎ সচিব প্রতিমন্ত্রীকে বলেছিলেন, দ্বিতীয় যিনি হয়েছেন তিনি যেহেতু প্রকৌশলী তাঁকে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে। নসরুল হামিদ এ সময় বিদ্যুৎ সচিবকে আক্ষরিক অর্থে ধমক দিয়ে আবসারকে নিয়োগ দিতে বলেন। অভিযোগ রয়েছে, পরীক্ষায় আবসার তৃতীয় হলেও অন্য দুজনের বদলে তাঁকে ১০ কোটি টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়া হয়।
নিয়োগ পেয়ে বেপরোয়া আচরণ
এনডব্লিউপিসিএলের কয়েকজন কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, তিনি ২০২৩ সালের ৭ মে এমডি হওয়ার পর থেকে বেপরোয়া আচরণ করতে থাকেন। কোম্পানির খরচে নিজের জন্য একটি ও পরিবারের জন্য একটি পাজেরো গাড়ি নেন। প্রতিষ্ঠান থেকে দুটি গাড়িরই জ্বালানি ব্যয়, চালকের বেতন ও মেরামতের অর্থ নিতেন তিনি। কর্মকর্তারা বলেছেন, এনডব্লিউপিসিএলের মালিকানাধীন খুলনার রূপসার ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সাংহাই ইলেকট্রিক গ্রুপ (চীন) ও আনসালদো এনারজিয়ার (ইতালি) কনসোর্টিয়ামের অর্থে ২০২৩ সালের ৯ নভেম্বর চীন ভ্রমণে যান আবসার। অজুহাত হিসেবে বিদ্যুৎ বিভাগের কাছ থেকে ‘ম্যানেজমেন্ট মিটিং’য়ের নামে সরকারি আদেশ (জিও) নেন। অথচ কেন্দ্রটি নির্মাণের কাজ এক বছর আগেই শেষ হয়েছিল। বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল কর্মকর্তাদের ভাষ্য, নিজের নামে জিও নিলেও আবসার ঠিকাদারের অর্থে চীন ভ্রমণ করেন সপরিবারে। এরপর সরকারকে না জানিয়ে সবাই মিলে চীন থেকে সিঙ্গাপুরে যান। সে ভ্রমণের অর্থও দিয়েছিল বিদেশি ঠিকাদারদের ওই কনসোর্টিয়াম।
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে চেয়ে কাজী আবসার উদ্দীনকে তাঁর ব্যক্তিগত মোবাইলে কয়েকবার ফোন করে সাড়া পাওয়া যায়নি।
বিতর্কিত রামপালে ভূমিকা: বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও ভারতের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার কোম্পানি (এনটিপিসি) যৌথভাবে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ‘ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী বিদ্যুৎকেন্দ্র’ (বিআইএফপিসিএল) নির্মাণ করে। বিশেষজ্ঞ এবং পরিবেশবাদীদের তুমুল সমালোচনা ও বিরোধিতা উপেক্ষা করে বাগেরহাটের রামপালে সুন্দরবনের খুব কাছেই কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়েছে। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নির্ধারিত উৎপাদন ক্ষমতা ১৩২০ মেগাওয়াট। কেন্দ্রটি কাগজে-কলমে কারিগরিভাবে জাতীয় গ্রিডে একসঙ্গে ১২৬৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহে সক্ষম হলেও উৎপাদন শুরুর পর থেকে একবারের জন্যও এ পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করেনি। এর দুটি ইউনিটের প্রতিটির উৎপাদনক্ষমতা ৬৬০ মেগাওয়াট। কিন্তু ৪৫০-৫০০ মেগাওয়াটের বেশি উৎপাদন করতে গেলেই বয়লারের টিউব ফেটে যায়। বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুর আগে যতবারই এ চেষ্টা করা হয়েছে, ততবারই টিউব ফেটে কয়েক দিন উৎপাদন বন্ধ থেকেছে। সে ক্ষেত্রে ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ এর পেছনে গুনতে হয় দিনে কয়েক কোটি টাকা।
শুরুতে একজন ভারতীয় যৌথ উদ্যোগে নির্মিত রামপাল কেন্দ্রের এমডি ছিলেন। এরপর এমডির দায়িত্ব নেন কাজী আবসার উদ্দীন। তাঁর আগে তিনি কেন্দ্রটি নির্মাণের প্রধান ক্রয় কর্মকর্তা ছিলেন। পিডিবির প্রকৌশলীরা বলছেন, প্রধান ক্রয় কর্মকর্তা থাকার সময় কেন্দ্রে কী মান ও ধরনের যন্ত্রপাতি বসছে, তা দেখার দায়িত্ব ছিল আবসারের। নিম্নমানের যন্ত্রাংশ ব্যবহারের পরও ক্রয়ের দায়িত্বে থাকা আবসারের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টো তাঁকে বানানো হয়েছে দেশের বৃহত্তম সরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানির এমডি।
পরামর্শক হিসেবেও স্বার্থোদ্ধার
পিডিবির কর্মকর্তারা বলছেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের সময় পুরোনো বা নিম্নমানের যন্ত্র বসানোর বিষয়টি আবসার বিগত সরকারকে টের পেতে দেননি। তবে বারবার কেন্দ্রটির সমস্যা দেখে একসময় সরকারের আশঙ্কা হয় ভবিষ্যতে এটি বোঝা হয়ে দাঁড়াতে পারে। সে ভাবনা থেকে সরকার কতটা বিদ্যুতের বাণিজ্যিক উৎপাদন নিশ্চিতভাবে সম্ভব তৃতীয় পক্ষকে দিয়ে, তা নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেয়। রামপাল কেন্দ্রের পরামর্শক হিসেবে এর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ভারতের ভেল নিয়োগ দিয়েছিল জার্মান কোম্পানি ফিশনারকে। ফিশনার জার্মান কোম্পানি হলেও এর ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিল সব ভারতীয়। বিআইএফপিসিএলের চাকরি যাওয়ার পর আবসার উদ্দীন মাসিক ৮ লাখ টাকা বেতনে এই ফিশনারের ‘অলিখিত পরামর্শক’ হিসেবে কাজ করতেন। সরকার রামপালের বাণিজ্যিক উৎপাদনের পরিমাণ নির্ধারণ করার জন্য ঠিকাদারের পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকেই পরামর্শক নিয়োগ দিলে আবসার আরও একদফা সুযোগ পেয়ে যান। তখন ফিশনারের মাধ্যমে রামপাল কেন্দ্রের উৎপাদন ১২৬৪ মেগাওয়াট দেখিয়ে ক্যাপাসিটি পেমেন্ট আদায়ের ব্যবস্থা করে দেন তিনি। ফিশনারের দেওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ভবিষ্যতে পুরোদমে চালু হলে বয়লারের সমস্যা ঠিক হয়ে যাবে, অথচ এ পর্যন্ত সমস্যাটি ঠিক হয়নি।
এ বিষয়ে ভোক্তা-অধিকার নজরদারি প্রতিষ্ঠান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, গত সরকার বিদ্যুৎ খাত যে ধসিয়ে দিয়েছে, এ ঘটনাটি তার একটি উদাহরণ। যাঁর থাকার কথা কারাগারে, তিনি এখন ফের ওই প্রতিষ্ঠানের প্রধান হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে গেছেন। মৌলিক পরিবর্তন না হলে ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থান ব্যর্থ হবে।

শতভাগ সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেডের (এনডব্লিউপিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে নিয়োগের পরীক্ষায় তৃতীয় হয়েছিলেন কাজী আবসার উদ্দীন আহমেদ। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর ‘ধমকে’ পরীক্ষার সেই ফলকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তৃতীয় হওয়া আবসারকেই করা হয় দেশের সবচেয়ে বড় সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের এমডি। পেশায় প্রকৌশলী আবসারের অন্য পরিচয় তিনি বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদের নেতা এবং রাজশাহী-২ আসনের তিনবারের নৌকা প্রতীকের সংসদ সদস্য ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশার বোনের ছেলে।
আলোচিত-বিতর্কিত রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূল কেনাকাটার দায়িত্বে ছিলেন কাজী আবসার। পরিবেশবাদীসহ বিশেষজ্ঞ মহলের অনেকের তীব্র বিরোধিতা উপেক্ষা করে নির্মাণের পর অধিকাংশ সময় অর্ধেক ক্ষমতায় উৎপাদন করে যাচ্ছে এ কেন্দ্রটি। এনডব্লিউপিসিএলের এমডি হয়ে বিদেশি ঠিকাদারের টাকায় চীন ও সিঙ্গাপুরে সপরিবারে প্রমোদ ভ্রমণ করা ও অবৈধভাবে স্ত্রীকে কোম্পানির পাজেরো গাড়ি ব্যবহার করতে দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে আবসারের বিরুদ্ধে। এসব ভূমিকার জন্য জবাবদিহি তথা সাজার মুখোমুখি না করে অন্তর্বর্তী সরকার আবার তাঁর মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকার কাজী আবসারকে দ্বিতীয় মেয়াদে এনডব্লিউপিসিএলের এমডি করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) এবং কোম্পানিটির প্রকৌশলীসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত সরকারের শীর্ষ মহলের আশীর্বাদপুষ্ট প্রতিমন্ত্রীর সুনজরে থাকা ব্যক্তির এ ‘সৌভাগ্য’ কীভাবে হয়, তা তাঁরা বুঝে উঠছেন না।
তৃতীয় হয়েও মন্ত্রীর ধমকে নিয়োগ: বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালে এনডব্লিউপিসিএলের এমডি পদে নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়েছিলেন যথাক্রমে মো. মাসুদুল ইসলাম, প্রকৌশলী হাসিবুল ইসলাম এবং কাজী আবসার উদ্দীন। এর মধ্যে এনডব্লিউপিসিএল বোর্ড প্রথমে মো. মাসুদুল ইসলামকে নিয়োগের সুপারিশ করে। তবে কোম্পানির চাকরিবিধির শর্তে না থাকলেও আওয়ামী লীগের সমর্থক প্রকৌশলীরা মাসুদুল ইসলাম প্রকৌশলী না হওয়ায় তাঁকে নিয়োগের বিরোধিতা করেন। তখন দ্বিতীয় হওয়া প্রকৌশলী হাসিবুল ইসলামের নাম এলেও তৎকালীন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ তা বাতিল করে দেন। বিদ্যুৎ বিভাগের দুজন কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিদ্যুৎ সচিব প্রতিমন্ত্রীকে বলেছিলেন, দ্বিতীয় যিনি হয়েছেন তিনি যেহেতু প্রকৌশলী তাঁকে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে। নসরুল হামিদ এ সময় বিদ্যুৎ সচিবকে আক্ষরিক অর্থে ধমক দিয়ে আবসারকে নিয়োগ দিতে বলেন। অভিযোগ রয়েছে, পরীক্ষায় আবসার তৃতীয় হলেও অন্য দুজনের বদলে তাঁকে ১০ কোটি টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়া হয়।
নিয়োগ পেয়ে বেপরোয়া আচরণ
এনডব্লিউপিসিএলের কয়েকজন কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, তিনি ২০২৩ সালের ৭ মে এমডি হওয়ার পর থেকে বেপরোয়া আচরণ করতে থাকেন। কোম্পানির খরচে নিজের জন্য একটি ও পরিবারের জন্য একটি পাজেরো গাড়ি নেন। প্রতিষ্ঠান থেকে দুটি গাড়িরই জ্বালানি ব্যয়, চালকের বেতন ও মেরামতের অর্থ নিতেন তিনি। কর্মকর্তারা বলেছেন, এনডব্লিউপিসিএলের মালিকানাধীন খুলনার রূপসার ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সাংহাই ইলেকট্রিক গ্রুপ (চীন) ও আনসালদো এনারজিয়ার (ইতালি) কনসোর্টিয়ামের অর্থে ২০২৩ সালের ৯ নভেম্বর চীন ভ্রমণে যান আবসার। অজুহাত হিসেবে বিদ্যুৎ বিভাগের কাছ থেকে ‘ম্যানেজমেন্ট মিটিং’য়ের নামে সরকারি আদেশ (জিও) নেন। অথচ কেন্দ্রটি নির্মাণের কাজ এক বছর আগেই শেষ হয়েছিল। বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল কর্মকর্তাদের ভাষ্য, নিজের নামে জিও নিলেও আবসার ঠিকাদারের অর্থে চীন ভ্রমণ করেন সপরিবারে। এরপর সরকারকে না জানিয়ে সবাই মিলে চীন থেকে সিঙ্গাপুরে যান। সে ভ্রমণের অর্থও দিয়েছিল বিদেশি ঠিকাদারদের ওই কনসোর্টিয়াম।
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে চেয়ে কাজী আবসার উদ্দীনকে তাঁর ব্যক্তিগত মোবাইলে কয়েকবার ফোন করে সাড়া পাওয়া যায়নি।
বিতর্কিত রামপালে ভূমিকা: বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও ভারতের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার কোম্পানি (এনটিপিসি) যৌথভাবে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ‘ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী বিদ্যুৎকেন্দ্র’ (বিআইএফপিসিএল) নির্মাণ করে। বিশেষজ্ঞ এবং পরিবেশবাদীদের তুমুল সমালোচনা ও বিরোধিতা উপেক্ষা করে বাগেরহাটের রামপালে সুন্দরবনের খুব কাছেই কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়েছে। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নির্ধারিত উৎপাদন ক্ষমতা ১৩২০ মেগাওয়াট। কেন্দ্রটি কাগজে-কলমে কারিগরিভাবে জাতীয় গ্রিডে একসঙ্গে ১২৬৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহে সক্ষম হলেও উৎপাদন শুরুর পর থেকে একবারের জন্যও এ পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করেনি। এর দুটি ইউনিটের প্রতিটির উৎপাদনক্ষমতা ৬৬০ মেগাওয়াট। কিন্তু ৪৫০-৫০০ মেগাওয়াটের বেশি উৎপাদন করতে গেলেই বয়লারের টিউব ফেটে যায়। বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুর আগে যতবারই এ চেষ্টা করা হয়েছে, ততবারই টিউব ফেটে কয়েক দিন উৎপাদন বন্ধ থেকেছে। সে ক্ষেত্রে ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ এর পেছনে গুনতে হয় দিনে কয়েক কোটি টাকা।
শুরুতে একজন ভারতীয় যৌথ উদ্যোগে নির্মিত রামপাল কেন্দ্রের এমডি ছিলেন। এরপর এমডির দায়িত্ব নেন কাজী আবসার উদ্দীন। তাঁর আগে তিনি কেন্দ্রটি নির্মাণের প্রধান ক্রয় কর্মকর্তা ছিলেন। পিডিবির প্রকৌশলীরা বলছেন, প্রধান ক্রয় কর্মকর্তা থাকার সময় কেন্দ্রে কী মান ও ধরনের যন্ত্রপাতি বসছে, তা দেখার দায়িত্ব ছিল আবসারের। নিম্নমানের যন্ত্রাংশ ব্যবহারের পরও ক্রয়ের দায়িত্বে থাকা আবসারের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টো তাঁকে বানানো হয়েছে দেশের বৃহত্তম সরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানির এমডি।
পরামর্শক হিসেবেও স্বার্থোদ্ধার
পিডিবির কর্মকর্তারা বলছেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের সময় পুরোনো বা নিম্নমানের যন্ত্র বসানোর বিষয়টি আবসার বিগত সরকারকে টের পেতে দেননি। তবে বারবার কেন্দ্রটির সমস্যা দেখে একসময় সরকারের আশঙ্কা হয় ভবিষ্যতে এটি বোঝা হয়ে দাঁড়াতে পারে। সে ভাবনা থেকে সরকার কতটা বিদ্যুতের বাণিজ্যিক উৎপাদন নিশ্চিতভাবে সম্ভব তৃতীয় পক্ষকে দিয়ে, তা নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেয়। রামপাল কেন্দ্রের পরামর্শক হিসেবে এর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ভারতের ভেল নিয়োগ দিয়েছিল জার্মান কোম্পানি ফিশনারকে। ফিশনার জার্মান কোম্পানি হলেও এর ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিল সব ভারতীয়। বিআইএফপিসিএলের চাকরি যাওয়ার পর আবসার উদ্দীন মাসিক ৮ লাখ টাকা বেতনে এই ফিশনারের ‘অলিখিত পরামর্শক’ হিসেবে কাজ করতেন। সরকার রামপালের বাণিজ্যিক উৎপাদনের পরিমাণ নির্ধারণ করার জন্য ঠিকাদারের পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকেই পরামর্শক নিয়োগ দিলে আবসার আরও একদফা সুযোগ পেয়ে যান। তখন ফিশনারের মাধ্যমে রামপাল কেন্দ্রের উৎপাদন ১২৬৪ মেগাওয়াট দেখিয়ে ক্যাপাসিটি পেমেন্ট আদায়ের ব্যবস্থা করে দেন তিনি। ফিশনারের দেওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ভবিষ্যতে পুরোদমে চালু হলে বয়লারের সমস্যা ঠিক হয়ে যাবে, অথচ এ পর্যন্ত সমস্যাটি ঠিক হয়নি।
এ বিষয়ে ভোক্তা-অধিকার নজরদারি প্রতিষ্ঠান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, গত সরকার বিদ্যুৎ খাত যে ধসিয়ে দিয়েছে, এ ঘটনাটি তার একটি উদাহরণ। যাঁর থাকার কথা কারাগারে, তিনি এখন ফের ওই প্রতিষ্ঠানের প্রধান হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে গেছেন। মৌলিক পরিবর্তন না হলে ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থান ব্যর্থ হবে।

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনাররা বঙ্গভবনে পৌঁছেছেন। বঙ্গভবনের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন, আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ইসির বৈঠকের শিডিউল রাখা আছে।
১৮ মিনিট আগে
টাঙ্গাইলের শাড়ি বুনন শিল্পকে অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেসকো। গতকাল মঙ্গলবার ভারতের নয়াদিল্লিতে ইউনেসকো কনভেনশনের চলমান ২০তম আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
২ ঘণ্টা আগে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনে অন্যতম সমন্বয়ক হিসেবে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আসিফ মাহমুদ।
২ ঘণ্টা আগে
মুক্তিবাহিনীর অগ্রাভিযানে পাকিস্তানি বাহিনীর একের পর এক অবস্থানের পতনে মুক্ত হচ্ছিল বাংলাদেশের একেকটি অঞ্চল। এগিয়ে আসছিল স্বাধীনতার মুহূর্তটি। যদিও ঠিক কখন, কীভাবে সেদিনটি আসবে, তখনো তা স্পষ্ট নয় সাধারণ মানুষের কাছে। তবে সবাই অধীর আগ্রহে ক্ষণ গুনছিল।
৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনাররা বঙ্গভবনে পৌঁছেছেন।
বঙ্গভবনের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন, আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ইসির বৈঠকের শিডিউল রাখা আছে।

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনাররা বঙ্গভবনে পৌঁছেছেন।
বঙ্গভবনের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন, আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ইসির বৈঠকের শিডিউল রাখা আছে।

শতভাগ সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেডের (এনডব্লিউপিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে নিয়োগের পরীক্ষায় তৃতীয় হয়েছিলেন কাজী আবসার উদ্দীন আহমেদ। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর ‘ধমকে’ পরীক্ষার সেই ফলকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তৃতীয়
০১ ডিসেম্বর ২০২৪
টাঙ্গাইলের শাড়ি বুনন শিল্পকে অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেসকো। গতকাল মঙ্গলবার ভারতের নয়াদিল্লিতে ইউনেসকো কনভেনশনের চলমান ২০তম আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
২ ঘণ্টা আগে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনে অন্যতম সমন্বয়ক হিসেবে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আসিফ মাহমুদ।
২ ঘণ্টা আগে
মুক্তিবাহিনীর অগ্রাভিযানে পাকিস্তানি বাহিনীর একের পর এক অবস্থানের পতনে মুক্ত হচ্ছিল বাংলাদেশের একেকটি অঞ্চল। এগিয়ে আসছিল স্বাধীনতার মুহূর্তটি। যদিও ঠিক কখন, কীভাবে সেদিনটি আসবে, তখনো তা স্পষ্ট নয় সাধারণ মানুষের কাছে। তবে সবাই অধীর আগ্রহে ক্ষণ গুনছিল।
৩ ঘণ্টা আগেবাসস, ঢাকা

টাঙ্গাইলের শাড়ি বুনন শিল্পকে অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেসকো। গতকাল মঙ্গলবার ভারতের নয়াদিল্লিতে ইউনেসকো কনভেনশনের চলমান ২০তম আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এই কনভেনশনের আওতায় এটি বাংলাদেশের ষষ্ঠ একক নিবন্ধন। সভায় প্রথমবারের মতো সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর বিগত চার বছরে এটি দ্বিতীয় নিবন্ধন।
সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের প্রধান এবং ইউনেসকো সাধারণ পরিষদের সভাপতি ও বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জানান, ‘এই স্বীকৃতি বাংলাদেশের জন্য অসামান্য গৌরবের বিষয়। দীর্ঘ দুই শতকের বেশি সময় ধরে টাঙ্গাইলের তাঁতিদের অনবদ্য শিল্পকর্মের বৈশ্বিক স্বীকৃতি এটি।’
তিনি আরও বলেন, ‘টাঙ্গাইল শাড়ি বাংলাদেশের সকল নারীর নিত্য পরিধেয়, যা এই শাড়ি বুনন শিল্পের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনের পেছনে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে।’
এই অর্জনকে বাংলাদেশের সকল তাঁতি ও নারীদের প্রতি উৎসর্গ করেছেন রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা।
বাংলাদেশের অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সামগ্রিক সুরক্ষায় এই স্বীকৃতি নতুন মাত্রা যোগ করবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত তালহা বলেন, ঐতিহ্য হিসেবে ইউনেসকোর স্বীকৃতি অর্জনের মতো বাংলাদেশের অপরিমেয় সাংস্কৃতিক উপাদান রয়েছে।
নথি প্রস্তুত করার সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং কনভেনশন সংক্রান্ত অভিজ্ঞ জনবল তৈরি করার মাধ্যমে আরও অনেক ঐতিহ্যের ইউনেসকো-স্বীকৃতি অর্জনের সুযোগ রয়েছে।
এর আগে, গত ৭ ডিসেম্বর আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের চলমান ২০তম সভা উদ্বোধন করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শংকর। অনুষ্ঠানে ইউনেসকোর নবনিযুক্ত মহাপরিচালক খালেদ এল. এনানি উপস্থিত ছিলেন।

টাঙ্গাইলের শাড়ি বুনন শিল্পকে অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেসকো। গতকাল মঙ্গলবার ভারতের নয়াদিল্লিতে ইউনেসকো কনভেনশনের চলমান ২০তম আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এই কনভেনশনের আওতায় এটি বাংলাদেশের ষষ্ঠ একক নিবন্ধন। সভায় প্রথমবারের মতো সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর বিগত চার বছরে এটি দ্বিতীয় নিবন্ধন।
সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের প্রধান এবং ইউনেসকো সাধারণ পরিষদের সভাপতি ও বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জানান, ‘এই স্বীকৃতি বাংলাদেশের জন্য অসামান্য গৌরবের বিষয়। দীর্ঘ দুই শতকের বেশি সময় ধরে টাঙ্গাইলের তাঁতিদের অনবদ্য শিল্পকর্মের বৈশ্বিক স্বীকৃতি এটি।’
তিনি আরও বলেন, ‘টাঙ্গাইল শাড়ি বাংলাদেশের সকল নারীর নিত্য পরিধেয়, যা এই শাড়ি বুনন শিল্পের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনের পেছনে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে।’
এই অর্জনকে বাংলাদেশের সকল তাঁতি ও নারীদের প্রতি উৎসর্গ করেছেন রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা।
বাংলাদেশের অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সামগ্রিক সুরক্ষায় এই স্বীকৃতি নতুন মাত্রা যোগ করবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত তালহা বলেন, ঐতিহ্য হিসেবে ইউনেসকোর স্বীকৃতি অর্জনের মতো বাংলাদেশের অপরিমেয় সাংস্কৃতিক উপাদান রয়েছে।
নথি প্রস্তুত করার সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং কনভেনশন সংক্রান্ত অভিজ্ঞ জনবল তৈরি করার মাধ্যমে আরও অনেক ঐতিহ্যের ইউনেসকো-স্বীকৃতি অর্জনের সুযোগ রয়েছে।
এর আগে, গত ৭ ডিসেম্বর আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের চলমান ২০তম সভা উদ্বোধন করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শংকর। অনুষ্ঠানে ইউনেসকোর নবনিযুক্ত মহাপরিচালক খালেদ এল. এনানি উপস্থিত ছিলেন।

শতভাগ সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেডের (এনডব্লিউপিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে নিয়োগের পরীক্ষায় তৃতীয় হয়েছিলেন কাজী আবসার উদ্দীন আহমেদ। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর ‘ধমকে’ পরীক্ষার সেই ফলকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তৃতীয়
০১ ডিসেম্বর ২০২৪
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনাররা বঙ্গভবনে পৌঁছেছেন। বঙ্গভবনের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন, আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ইসির বৈঠকের শিডিউল রাখা আছে।
১৮ মিনিট আগে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনে অন্যতম সমন্বয়ক হিসেবে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আসিফ মাহমুদ।
২ ঘণ্টা আগে
মুক্তিবাহিনীর অগ্রাভিযানে পাকিস্তানি বাহিনীর একের পর এক অবস্থানের পতনে মুক্ত হচ্ছিল বাংলাদেশের একেকটি অঞ্চল। এগিয়ে আসছিল স্বাধীনতার মুহূর্তটি। যদিও ঠিক কখন, কীভাবে সেদিনটি আসবে, তখনো তা স্পষ্ট নয় সাধারণ মানুষের কাছে। তবে সবাই অধীর আগ্রহে ক্ষণ গুনছিল।
৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তোড়জোড়ের মধ্যে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে আসছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
সমসাময়িক বিষয়ে আজ বুধবার বেলা ৩টায় স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলনকক্ষে আসিফ মাহমুদের সংবাদ সম্মেলন হবে বলে মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।
সমসাময়িক কোন বিষয়ে আসিফ মাহমুদ সংবাদ সম্মেলনে কথা বলবেন, মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণপত্রে তা উল্লেখ করা হয়নি। তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজকের সংবাদ সম্মেলন থেকে উপদেষ্টা পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিতে পারেন তিনি।
আজ রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করার পর ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার জন্য ভাষণের রেকর্ড করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। আজ সন্ধ্যায় বা আগামীকাল বৃহস্পতিবার এই তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমও আজ পদত্যাগের ঘোষণা দিতে পারেন বলে আলোচনা রয়েছে।
উপদেষ্টার পদে থেকে নির্বাচন করতে আইনি বাধা না থাকলেও তফসিল ঘোষণার আগে সরকারে থাকা দুজন ছাত্র উপদেষ্টা পদত্যাগ করবেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনে অন্যতম সমন্বয়ক হিসেবে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আসিফ মাহমুদ। তাঁদের আন্দোলন একপর্যায়ে সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনে রূপ নেয়। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয় আওয়ামী লীগ সরকার। এরপর ওই বছরের ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। এই সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন আসিফ মাহমুদ।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তোড়জোড়ের মধ্যে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে আসছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
সমসাময়িক বিষয়ে আজ বুধবার বেলা ৩টায় স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলনকক্ষে আসিফ মাহমুদের সংবাদ সম্মেলন হবে বলে মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।
সমসাময়িক কোন বিষয়ে আসিফ মাহমুদ সংবাদ সম্মেলনে কথা বলবেন, মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণপত্রে তা উল্লেখ করা হয়নি। তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজকের সংবাদ সম্মেলন থেকে উপদেষ্টা পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিতে পারেন তিনি।
আজ রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করার পর ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার জন্য ভাষণের রেকর্ড করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। আজ সন্ধ্যায় বা আগামীকাল বৃহস্পতিবার এই তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমও আজ পদত্যাগের ঘোষণা দিতে পারেন বলে আলোচনা রয়েছে।
উপদেষ্টার পদে থেকে নির্বাচন করতে আইনি বাধা না থাকলেও তফসিল ঘোষণার আগে সরকারে থাকা দুজন ছাত্র উপদেষ্টা পদত্যাগ করবেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনে অন্যতম সমন্বয়ক হিসেবে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আসিফ মাহমুদ। তাঁদের আন্দোলন একপর্যায়ে সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনে রূপ নেয়। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয় আওয়ামী লীগ সরকার। এরপর ওই বছরের ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। এই সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন আসিফ মাহমুদ।

শতভাগ সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেডের (এনডব্লিউপিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে নিয়োগের পরীক্ষায় তৃতীয় হয়েছিলেন কাজী আবসার উদ্দীন আহমেদ। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর ‘ধমকে’ পরীক্ষার সেই ফলকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তৃতীয়
০১ ডিসেম্বর ২০২৪
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনাররা বঙ্গভবনে পৌঁছেছেন। বঙ্গভবনের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন, আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ইসির বৈঠকের শিডিউল রাখা আছে।
১৮ মিনিট আগে
টাঙ্গাইলের শাড়ি বুনন শিল্পকে অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেসকো। গতকাল মঙ্গলবার ভারতের নয়াদিল্লিতে ইউনেসকো কনভেনশনের চলমান ২০তম আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
২ ঘণ্টা আগে
মুক্তিবাহিনীর অগ্রাভিযানে পাকিস্তানি বাহিনীর একের পর এক অবস্থানের পতনে মুক্ত হচ্ছিল বাংলাদেশের একেকটি অঞ্চল। এগিয়ে আসছিল স্বাধীনতার মুহূর্তটি। যদিও ঠিক কখন, কীভাবে সেদিনটি আসবে, তখনো তা স্পষ্ট নয় সাধারণ মানুষের কাছে। তবে সবাই অধীর আগ্রহে ক্ষণ গুনছিল।
৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

মুক্তিবাহিনীর অগ্রাভিযানে পাকিস্তানি বাহিনীর একের পর এক অবস্থানের পতনে মুক্ত হচ্ছিল বাংলাদেশের একেকটি অঞ্চল। এগিয়ে আসছিল স্বাধীনতার মুহূর্তটি। যদিও ঠিক কখন, কীভাবে সেদিনটি আসবে, তখনো তা স্পষ্ট নয় সাধারণ মানুষের কাছে। তবে সবাই অধীর আগ্রহে ক্ষণ গুনছিল।
সেতু বিধ্বস্ত হওয়ায় ১০ ডিসেম্বর রায়পুরা অঞ্চলে ১৪টি হেলিকপ্টারের সাহায্যে ভারতীয় মিত্র বাহিনীর অগ্রবর্তী অংশ তখনকার বিশাল, প্রশস্ত মেঘনা পার হয়। স্থানীয় জনসাধারণ ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনায় শত শত নৌকার সাহায্যে অবশিষ্ট সেনা ও যুদ্ধ-সরঞ্জাম পরিবহনে সহায়তা করে।
প্রচণ্ড চাপে পড়ে আগের দিন ঢাকায় পাকিস্তানের সামরিক নেতৃত্ব ও গভর্নর মালেক সৈন্যসহ পূর্ব পাকিস্তান ত্যাগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। সেদিন দাউদকান্দির পতনের পর তাঁরা বুঝে গিয়েছিলেন, ঢাকাই যৌথ বাহিনীর পরবর্তী লক্ষ্য। পাকিস্তানিদের সম্পূর্ণ পশ্চাদপসরণের সিদ্ধান্ত প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের পূর্ণ অনুমোদন লাভ করে।
সহায়তাকারী ভারতীয় বাহিনীর রায়পুরায় অবতরণের পর প্রায় ৩ ঘণ্টা ঢাকার পাকিস্তানি সামরিক লক্ষ্যবস্তুগুলোর ওপর বিমান হামলা চলে। তখন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নরের সামরিক উপদেষ্টা, গণহত্যার অন্যতম সহযোগী রাও ফরমান আলী ঢাকায় অবস্থানকারী জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব পল মার্ক হেনরিকে ‘অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির’ আয়োজন করার আবেদন জানান। বাঙালিদের ওপর ৯ মাস হত্যাযজ্ঞ চলার পর এত দিনে এসে তিনি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা এবং এই অঞ্চলে থাকা পাকিস্তানি বাহিনীকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা সম্পন্ন করার আহ্বান জানান। জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব এ প্রস্তাব জাতিসংঘ সদর দপ্তরে পাঠিয়ে দেন।
নিরাপত্তা পরিষদে রাও ফরমান আলীর এ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার উদ্যোগ চলার সময় হঠাৎ খবর আসে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া প্রস্তাবটি নাকচ করে দিয়েছেন। ঘটনা হচ্ছে, খবরটি ওয়াশিংটনে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে মার্কিন সরকার ইয়াহিয়াকে জানান, পাকিস্তানি বাহিনীকে সাহায্য করার জন্য সপ্তম নৌবহর ইতিমধ্যেই বঙ্গোপসাগরের দিকে রওনা হয়েছে। এ কারণেই ইয়াহিয়ার মত বদলে যায়। পাকিস্তান নিজে থেকে ‘সম্মানজনকভাবে’ সেনা প্রত্যাহারের জন্য উদ্যোগী হলেও সেই উদ্যোগকে সমর্থন না করে মার্কিন সরকার বরং তা রদ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করে। তার ওপর ভারতকে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে সম্মত করানোর তাগিদ দিয়ে ৯ ও ১০ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্ট নিক্সন সোভিয়েত নেতা ব্রেজনেভকে দুই দফা বার্তা পাঠান। যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার ব্যাপারে ভারতকে সম্মত করতে ব্রেজনেভের ওপর চাপের মাত্রা বাড়ানো হয়। তাঁকে জানানো হয়, ভারত যদি এরপরও সম্মত না হয়, তবে যুক্তরাষ্ট্র নিজে এ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে।
উপমহাদেশের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র ‘শক্ত ব্যবস্থা’ গ্রহণ করতে পারে, তা সোভিয়েত ইউনিয়নের ভালো করেই জানা ছিল। সোভিয়েত সরকার তাদের নৌবাহিনীকে সতর্ক রাখে। মার্কিন সপ্তম নৌবহরের যাত্রারম্ভের আগেই সোভিয়েতরা তাদের ভারত মহাসাগরীয় নৌবহরের শক্তি বৃদ্ধি শুরু করে।
১০ ডিসেম্বর মার্কিন সপ্তম নৌবহর চীন সাগর ও ভারত মহাসাগরকে সংযোগকারী পাঁচ শ’ মাইল দীর্ঘ মালাক্কা প্রণালির ওপারে ছিল। ভারত মহাসাগরে সোভিয়েত নৌবহরের সমাবেশ তখন সম্পূর্ণ হয়নি। এই অবস্থায় জানা যায়, মার্কিন সপ্তম নৌবহরের গতিবিধি জানার জন্যই সোভিয়েত সরকার কসমস নামের নজরদারি কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করে।
এদিকে চূড়ান্ত পর্বের রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের আশঙ্কায় ঢাকা ছেড়ে চলে যেতে থাকেন অনেক সাধারণ মানুষ। আগের দিন সরকার স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করেছিল। গুজব ছড়িয়ে পড়ে, রাস্তায় রাস্তায় পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে লড়াই হবে বলে মুক্তিযোদ্ধারা লোকজনকে শহর ছেড়ে চলে যেতে বলেছেন। অনেক লোককে দেখা যায়, পরিবার-পরিজন, পোঁটলাপুঁটলি নিয়ে রিকশা বা বেবিট্যাক্সিতে (সিএনজি অটোর আগের সংস্করণ) করে শহর থেকে বাইরে চলে যাচ্ছে। কেউ কেউ লটবহর মাথায় নিয়ে হেঁটেই চলেছেন। এ যেন ২৫ মার্চের গণহত্যার পর ঢাকা ছাড়ার যে ঢল নেমেছিল কিছুটা প্রতিচ্ছবি।

মুক্তিবাহিনীর অগ্রাভিযানে পাকিস্তানি বাহিনীর একের পর এক অবস্থানের পতনে মুক্ত হচ্ছিল বাংলাদেশের একেকটি অঞ্চল। এগিয়ে আসছিল স্বাধীনতার মুহূর্তটি। যদিও ঠিক কখন, কীভাবে সেদিনটি আসবে, তখনো তা স্পষ্ট নয় সাধারণ মানুষের কাছে। তবে সবাই অধীর আগ্রহে ক্ষণ গুনছিল।
সেতু বিধ্বস্ত হওয়ায় ১০ ডিসেম্বর রায়পুরা অঞ্চলে ১৪টি হেলিকপ্টারের সাহায্যে ভারতীয় মিত্র বাহিনীর অগ্রবর্তী অংশ তখনকার বিশাল, প্রশস্ত মেঘনা পার হয়। স্থানীয় জনসাধারণ ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনায় শত শত নৌকার সাহায্যে অবশিষ্ট সেনা ও যুদ্ধ-সরঞ্জাম পরিবহনে সহায়তা করে।
প্রচণ্ড চাপে পড়ে আগের দিন ঢাকায় পাকিস্তানের সামরিক নেতৃত্ব ও গভর্নর মালেক সৈন্যসহ পূর্ব পাকিস্তান ত্যাগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। সেদিন দাউদকান্দির পতনের পর তাঁরা বুঝে গিয়েছিলেন, ঢাকাই যৌথ বাহিনীর পরবর্তী লক্ষ্য। পাকিস্তানিদের সম্পূর্ণ পশ্চাদপসরণের সিদ্ধান্ত প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের পূর্ণ অনুমোদন লাভ করে।
সহায়তাকারী ভারতীয় বাহিনীর রায়পুরায় অবতরণের পর প্রায় ৩ ঘণ্টা ঢাকার পাকিস্তানি সামরিক লক্ষ্যবস্তুগুলোর ওপর বিমান হামলা চলে। তখন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নরের সামরিক উপদেষ্টা, গণহত্যার অন্যতম সহযোগী রাও ফরমান আলী ঢাকায় অবস্থানকারী জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব পল মার্ক হেনরিকে ‘অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির’ আয়োজন করার আবেদন জানান। বাঙালিদের ওপর ৯ মাস হত্যাযজ্ঞ চলার পর এত দিনে এসে তিনি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা এবং এই অঞ্চলে থাকা পাকিস্তানি বাহিনীকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা সম্পন্ন করার আহ্বান জানান। জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব এ প্রস্তাব জাতিসংঘ সদর দপ্তরে পাঠিয়ে দেন।
নিরাপত্তা পরিষদে রাও ফরমান আলীর এ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার উদ্যোগ চলার সময় হঠাৎ খবর আসে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া প্রস্তাবটি নাকচ করে দিয়েছেন। ঘটনা হচ্ছে, খবরটি ওয়াশিংটনে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে মার্কিন সরকার ইয়াহিয়াকে জানান, পাকিস্তানি বাহিনীকে সাহায্য করার জন্য সপ্তম নৌবহর ইতিমধ্যেই বঙ্গোপসাগরের দিকে রওনা হয়েছে। এ কারণেই ইয়াহিয়ার মত বদলে যায়। পাকিস্তান নিজে থেকে ‘সম্মানজনকভাবে’ সেনা প্রত্যাহারের জন্য উদ্যোগী হলেও সেই উদ্যোগকে সমর্থন না করে মার্কিন সরকার বরং তা রদ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করে। তার ওপর ভারতকে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে সম্মত করানোর তাগিদ দিয়ে ৯ ও ১০ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্ট নিক্সন সোভিয়েত নেতা ব্রেজনেভকে দুই দফা বার্তা পাঠান। যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার ব্যাপারে ভারতকে সম্মত করতে ব্রেজনেভের ওপর চাপের মাত্রা বাড়ানো হয়। তাঁকে জানানো হয়, ভারত যদি এরপরও সম্মত না হয়, তবে যুক্তরাষ্ট্র নিজে এ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে।
উপমহাদেশের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র ‘শক্ত ব্যবস্থা’ গ্রহণ করতে পারে, তা সোভিয়েত ইউনিয়নের ভালো করেই জানা ছিল। সোভিয়েত সরকার তাদের নৌবাহিনীকে সতর্ক রাখে। মার্কিন সপ্তম নৌবহরের যাত্রারম্ভের আগেই সোভিয়েতরা তাদের ভারত মহাসাগরীয় নৌবহরের শক্তি বৃদ্ধি শুরু করে।
১০ ডিসেম্বর মার্কিন সপ্তম নৌবহর চীন সাগর ও ভারত মহাসাগরকে সংযোগকারী পাঁচ শ’ মাইল দীর্ঘ মালাক্কা প্রণালির ওপারে ছিল। ভারত মহাসাগরে সোভিয়েত নৌবহরের সমাবেশ তখন সম্পূর্ণ হয়নি। এই অবস্থায় জানা যায়, মার্কিন সপ্তম নৌবহরের গতিবিধি জানার জন্যই সোভিয়েত সরকার কসমস নামের নজরদারি কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করে।
এদিকে চূড়ান্ত পর্বের রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের আশঙ্কায় ঢাকা ছেড়ে চলে যেতে থাকেন অনেক সাধারণ মানুষ। আগের দিন সরকার স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করেছিল। গুজব ছড়িয়ে পড়ে, রাস্তায় রাস্তায় পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে লড়াই হবে বলে মুক্তিযোদ্ধারা লোকজনকে শহর ছেড়ে চলে যেতে বলেছেন। অনেক লোককে দেখা যায়, পরিবার-পরিজন, পোঁটলাপুঁটলি নিয়ে রিকশা বা বেবিট্যাক্সিতে (সিএনজি অটোর আগের সংস্করণ) করে শহর থেকে বাইরে চলে যাচ্ছে। কেউ কেউ লটবহর মাথায় নিয়ে হেঁটেই চলেছেন। এ যেন ২৫ মার্চের গণহত্যার পর ঢাকা ছাড়ার যে ঢল নেমেছিল কিছুটা প্রতিচ্ছবি।

শতভাগ সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেডের (এনডব্লিউপিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে নিয়োগের পরীক্ষায় তৃতীয় হয়েছিলেন কাজী আবসার উদ্দীন আহমেদ। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর ‘ধমকে’ পরীক্ষার সেই ফলকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তৃতীয়
০১ ডিসেম্বর ২০২৪
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনাররা বঙ্গভবনে পৌঁছেছেন। বঙ্গভবনের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন, আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ইসির বৈঠকের শিডিউল রাখা আছে।
১৮ মিনিট আগে
টাঙ্গাইলের শাড়ি বুনন শিল্পকে অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেসকো। গতকাল মঙ্গলবার ভারতের নয়াদিল্লিতে ইউনেসকো কনভেনশনের চলমান ২০তম আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
২ ঘণ্টা আগে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনে অন্যতম সমন্বয়ক হিসেবে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আসিফ মাহমুদ।
২ ঘণ্টা আগে