Ajker Patrika

রাখাইনে মানবিক সহায়তা করিডরের সঙ্গে চীন যুক্ত নয়: রাষ্ট্রদূত

কূটনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৮ মে ২০২৫, ২১: ৪৯
বৃহস্পতিবার ‘বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে অংশ নেন বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। ছবি: সংগৃহীত
বৃহস্পতিবার ‘বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে অংশ নেন বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে রাখাইনে মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর জন্য জাতিসংঘের প্রস্তাবিত করিডর বিষয়ে যে আলোচনা চলছে, সেই উদ্যোগের সঙ্গে চীন যুক্ত নয় বলে জানিয়েছেন দেশটির রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে চীনের অবস্থান তুলে ধরেন তিনি।

চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, ‘করিডর ইস্যুতে—তথাকথিত মানবিক করিডরের ক্ষেত্রে—আমার বলা উচিত, চীন এতে জড়িত নয়। আমার কাছে মনে হচ্ছে, এটি জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর একটি উদ্যোগ, যা রাখাইন রাজ্যে সংঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য মানবিক সাহায্য সরবরাহ করে। তবে চীন এই বিষয়ে জড়িত নয়।’

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অভ ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) আয়োজিত প্রতিষ্ঠানটির মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের পাঁচ দশক: একটি নতুন উচ্চতার দিকে’ শীর্ষক এক বক্তৃতা অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের জবাবে চীনা রাষ্ট্রদূত এই মন্তব্য করেন।

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের অভিন্ন নদী তিস্তার বাংলাদেশ অংশে একটি প্রকল্পে নিজের দেশের যুক্ত হওয়ার বিষয়ে ইয়াও ওয়েন, চীন তিস্তা প্রকল্পে কাজ করার জন্য তৈরি আছে। এখন এটি বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত, কীভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।

চীনা রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগের অংশ হিসেবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সঙ্গে চীন কয়েক দফা বৈঠক করেছে। সহস্রাধিক রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠাতে ২০২৩ সালে একটি উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু এ চেষ্টা ব্যর্থ হয়। পরে উদ্যোগটি স্থগিত করা হয়।

স্থানীয় কূটনৈতিক সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে পরীক্ষামূলকভাবে ১ হাজার ৮২ জন রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানোর কথা ছিল। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মিয়ানমারের সরকারি কর্মকর্তারা কমপক্ষে দুই দফা গেছেন। কিন্তু পরে আর বিষয়টি এগোয়নি।

রাষ্ট্রদূত বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি আছে। দুই দেশ এ চুক্তি বাস্তবায়নে অগ্রসর হলে প্রয়োজনে চীন সহায়তা দেবে।

মিয়ানমারের রাখাইনে দেশটির সেনাবাহিনী ও সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্যে চলমান সংঘাত থামাতে চীন ‘শান্তি আলোচনা’ শুরু করেছে জানিয়ে ইয়াও ওয়েন বলেন, ‘এটা দুর্ভাগ্যজনক যে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে পারস্পরিক বিশ্বাসের অভাব আছে।’

রোহিঙ্গা বিষয়ে কক্সবাজারে ক্যাম্পে যুক্ত পশ্চিমা দেশ, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাসহ বিভিন্ন অংশীজনের ভূমিকার বিষয়েও প্রশ্ন তোলেন রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, এই অংশীজনদের অনেকে চায় না রোহিঙ্গারা ফেরত যাক।

ইয়াও ওয়েন বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য চীন, আসিয়ান ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের দেশগুলোসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সমন্বিত উপায়ে চেষ্টা করতে হবে।

চীনের উন্নয়ন মডেল বাংলাদেশে ব্যবহার করা যায় কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করা গুরুত্বপূর্ণ। এর সঙ্গে উন্নয়ন ও সংস্কার একসঙ্গে হতে হবে।

ইয়াও ওয়েন বলেন, উন্নয়নের পশ্চিমা মডেলের প্রতি অনেকের ঝোঁক আছে। কিন্তু বাংলাদেশের দরকার উন্নয়নের নিজস্ব মডেল তৈরি করা এবং সে অনুযায়ী কর্মসূচি এগিয়ে নেওয়া।

বিআইআইএস চেয়ারম্যান এ এফ এম গওসোল আযম সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে তত্ত্বাধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর, সাবেক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ, সাবেক সেনাপ্রধান হারুন অর রশীদ, বিজ মহাপরিচালক মেজর জেনারেল ইফতেখার আনিসসহ অন্যরা বক্তব্য দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে গেছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ

আদালতের বিচারকাজে বাধা দেওয়ায় আইনজীবীর দণ্ড, ক্ষমা চেয়ে পার

‘ফের ধর্ষণচেষ্টার ক্ষোভে’ বাবাকে খুন, ৯৯৯-এ কল দিয়ে আটকের অনুরোধ মেয়ের

আ. লীগের ক্লিন ইমেজের ব্যক্তিদের বিএনপির সদস্য হতে বাধা নেই: রিজভী

১৫ স্থাপনায় পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, আকাশেই ধ্বংসের দাবি ভারতের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত