Ajker Patrika

অর্ধলাখ বেকার, বন্ধ চার হাজার কিন্ডারগার্টেন

শহীদুল ইসলাম, ঢাকা
আপডেট : ০৯ জুলাই ২০২১, ১১: ২৭
অর্ধলাখ বেকার, বন্ধ চার হাজার কিন্ডারগার্টেন

ঢাকার রামপুরার কিন্ডারগার্টেনটি বন্ধ করে নিজ গ্রামের মসজিদে ইমামতি করেন আবুল কালাম সিকদার। মেহেরপুরের শাফিউর রহমান সুরুজ কিন্ডারগার্টেন বন্ধ করে দিয়ে এখন পান-সিগারেট বিক্রি করেন। বাবার হাতে গড়া স্কুলটি আরও বড় করার স্বপ্ন দেখা আনোয়ার হোসেন সুমন স্কুল বন্ধ করে দিয়ে চাকরি খুঁজছেন।

কালাম, সুরুজ আর সুমনদের সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে করোনায়। বাংলাদেশে এই ভাইরাসের প্রকোপ শুরুর পর গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বন্ধ রয়েছে কিন্ডারগার্টেনগুলো। এর মধ্যে স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে গেছে অন্তত ৪ হাজার কিন্ডারগার্টেন। এর কারণে স্থায়ী বেকার হয়েছেন ৫০ হাজারের বেশি লোক। আর স্কুল খোলার বিষয়টি অনিশ্চিত হওয়ায় দেশের ৬০ হাজার কিন্ডারগার্টেনের মধ্যে আরও অনেকগুলো স্থায়ীভাবে বন্ধের পথে।

তবে দেশে কিন্ডারগার্টেনের প্রকৃত সংখ্যা কত বা এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কত লোক জড়িত, তার কোনো হিসাব সরকারের কাছে নেই। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম বলেন, ‘কিন্ডারগার্টেনগুলো এখনো স্বাধীনভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এগুলোতে আমাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। শিক্ষা আইন হলে এসব প্রতিষ্ঠান সরকারের অধীনে আসবে।’

বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশনের হিসাবমতে, দেশে ৪০ হাজার কিন্ডারগার্টেনে প্রায় ৬ লাখ শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন। আর বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ঐক্য পরিষদের তথ্যানুযায়ী, দেশে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৬০ হাজার। এসব প্রতিষ্ঠানে পৌনে ১ কোটি শিশু পড়াশোনা করে। 
মাত্র কয়েক হাজার কিন্ডারগার্টেনকে নিবন্ধন দিয়েছে সরকার। বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন না থাকায় দেশে এ ধরনের কত প্রতিষ্ঠান রয়েছে, সেই তথ্য সরকারের কারও কাছে নেই।

দেশের সব কিন্ডারগার্টেন সংগঠনকে নিয়ে গড়া কিন্ডারগার্টেন ও সমমান স্কুল রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্যসচিব জাহাঙ্গীর কবির রানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, তাঁদের জরিপ অনুযায়ী গত ১৫ জুন পর্যন্ত সারা দেশে ৪ হাজার ২১০টি কিন্ডারগার্টেন বন্ধ হয়েছে। আরও অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধের পথে। 
কিন্ডারগার্টেন সংগঠনগুলোর হিসাব অনুযায়ী, একেকটি প্রতিষ্ঠানে গড়ে ১২ জন করে শিক্ষক-কর্মকর্তা রয়েছেন। সেই হিসাবে এসব প্রতিষ্ঠানের ৫০ হাজার ৫২০ জন শিক্ষক-কর্মচারী বেকার হয়েছেন।

ঢাকার কাজীরবাগে আইডিয়াল প্রি-ক্যাডেট হাই স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন মো. শাহজাহান মিয়া। এই বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষকও তিনি। শাহজাহান বলেন, ‘২৫ বছর টিউশনি করিয়েছি, এরপর স্কুলটা দিই। স্বপ্ন ছিল এটিকে অনেক বড় করব। এলাকার বাচ্চারা সেখানে পড়াশোনা করবে, গরিব লোকের সন্তানেরাও খরচ ছাড়া পড়বে।’
গত বছরের মার্চে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার পর কয়েক মাস স্কুল খোলার অপেক্ষায় ছিলেন শাহজাহান। কিন্তু স্কুল খোলার কোনো ঘোষণা না আসায় ভাড়া বাসা ছেড়ে পরিবার নিয়ে স্কুলে উঠেছেন তিনি। শাহজাহান বলেন, ‘স্কুল বন্ধ হওয়ার পর থেকে স্কুল গেটে একটি দোকান ভাড়া নিয়ে শাড়ি, কাপড়, লুঙ্গি ও গামছা বিক্রি করছি। এখন স্কুলেই থাকি। স্কুল ভবনের জন্য মাসে ২৫ হাজার টাকা করে ভাড়া দিতে হচ্ছে।’

শাহজাহানের ছেলে আনোয়ার হোসেন সুমন বাবার স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। স্কুলের ভবিষ্যতের কথা ভেবে শঙ্কিত সুমন এখন চাকরি খুঁজছেন। 

মেহেরপুরের বড়বাজার গড়পুকুর এলাকায় রোজ ডেল কিন্ডারগার্টেন চালাতেন শাফিউর রহমান সুরুজ। তিনি বলেন, ‘স্কুলটাকে নিয়েই আমার জীবনে সবকিছু ছিল। এখন আর কিছুই নেই, সবই শেষ। খেয়ে–পরে বেঁচে থাকার জন্য এখন কত কিছুই না করছি।’ সুরুজ জানান, তাঁর কিন্ডারগার্টেনে সাড়ে তিন শ শিক্ষার্থীকে পড়ানোর দায়িত্বে ছিলেন ১৬ জন শিক্ষক। এখন ১৭টি কক্ষ ছেড়ে দিয়ে শুধু অফিস কক্ষটি রেখেছেন। বিক্রি করে দিয়েছেন চেয়ার, টেবিল ও বেঞ্চ।

মো. আবুল কালাম সিকদার আরও দুজনের সঙ্গে মিলে রামপুরার বাগিচারটেকে ইকরা আইডিয়াল কিন্ডারগার্টেন স্থাপন করেন। তিনি গত বছরের মার্চে স্কুল বন্ধ হলে জুলাইয়ে স্কুল ভবন ছেড়ে দেন। এরপর চলে যান গ্রামের বাড়ি পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার মাটিভাঙ্গা গ্রামে। এখন এই গ্রামের একটি মসজিদে ইমামতি করেন। স্কুলের অন্য দুই প্রতিষ্ঠাতাও নিজেদের গ্রামের বাড়ি ভোলা ও ঝালকাঠিতে চলে গেছেন।

বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, সারা দেশে ৪০ হাজার কিন্ডারগার্টেন রয়েছে। মহামারির মধ্যে বেশির ভাগের অবস্থা বেশ করুণ।

বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ঐক্য পরিষদের চেয়ারম্যান এম ইকবাল বাহার চৌধুরী  বলেন, ৯৯ শতাংশ কিন্ডারগার্টেন ভাড়া বাড়িতে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে। বাড়িভাড়া দিতে না পেরে বেশির ভাগই ভবন ছেড়ে দিয়েছে। আসবাব বিক্রি করে দিয়েছে।

কিন্ডারগার্টেন ও সমমান স্কুল রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্যসচিব জাহাঙ্গীর কবির রানা বলেন, তাঁদের জরিপ অনুযায়ী সারা দেশে ৪ হাজার ২১০টি কিন্ডারগার্টেন বন্ধ হয়েছে, আরও অনেকগুলো বন্ধের পথে।

করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে আর্থিক সংকটে পড়ে যেসব কিন্ডারগার্টেন বন্ধ হয়ে গেছে, সেসবের শিক্ষার্থীদের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করতে গত বছরের সেপ্টেম্বরে নির্দেশ দেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর জানান, বন্ধ হওয়া স্কুলের শিক্ষকেরা অর্থকষ্টে আছেন। অনেকেই বাধ্য হয়ে অন্য পেশা বেছে নিয়েছেন। কেউ ভ্যান-অটো চালাচ্ছেন, কেউ ফল বিক্রি করছেন, কেউ মুদিদোকান দিয়েছেন, কেউ কাপড় বিক্রি করছেন। সবাই কোনো না কোনোভাবে বেঁচে থাকার চেষ্টা করছেন।

এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম বলেন, ‘করোনার মধ্যে যেসব বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, তার শিক্ষার্থীদের আমরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছি। ফলে কোনো শিক্ষার্থীই শিক্ষা কার্যক্রমের বাইরে থাকবে না। আমরা লক্ষ করছি, করোনার মধ্যেও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির হার বেড়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আগামী নির্বাচনকে ঐতিহাসিক ও স্মরণীয় করে রাখতে হবে: ইউএনওদের প্রধান উপদেষ্টা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ৪১
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা থেকে বুধবার সারা দেশের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নির্বাচন প্রস্তুতি বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা থেকে বুধবার সারা দেশের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নির্বাচন প্রস্তুতি বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী আগামী নির্বাচনকে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ হিসেবে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এই নির্বাচন সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের মাধ্যমে স্মরণীয় করে রাখতে হবে।

রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা থেকে আজ বুধবার সারা দেশের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নির্বাচনের প্রস্তুতি বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেওয়ার সময় তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় অনলাইনে যুক্ত ছিলেন দেশের সব জেলা প্রশাসক, বিভাগীয় কমিশনার ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তারা।

প্রধান উপদেষ্টা ইউএনওদের উদ্দেশে বলেন, ‘ইতিহাস আমাদের নতুন করে একটি সুযোগ দিয়েছে। অন্য জেনারেশন এই সুযোগ পাবে না। এই সুযোগকে কাজে লাগাতে পারলে আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়তে পারব। আর যদি না পারি, তাহলে জাতি মুখ থুবড়ে পড়বে। এর আগেও আমরা নির্বাচন দেখেছি। বিগত আমলে যে নির্বাচনগুলো হয়েছে, যেকোনো সুস্থ মানুষ বলবে—এটা নির্বাচন নয়, প্রতারণা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচন অন্যান্য দায়িত্বের মতো নয়; বরং একটি ঐতিহাসিক দায়িত্ব। আমরা যদি ভালোভাবে এই দায়িত্ব পালন করতে পারি, তাহলে আগামী নির্বাচনের দিনটি জনগণের জন্যও ঐতিহাসিক হবে।’

ইউএনওদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আপনারা যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেন, তাহলে সরকার তার দায়িত্বটি সফলভাবে পালন করতে সক্ষম হবে।’

আগামী সংসদ নির্বাচন ও গণভোট দুটিই জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, ‘নির্বাচন আগামী পাঁচ বছরের জন্য আর গণভোট শত বছরের জন্য। এর মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশটাকে স্থায়ীভাবে পাল্টে দিতে পারি। যে নতুন বাংলাদেশ আমরা তৈরি করতে চাই, তার ভিতটা এর মাধ্যমে গড়তে পারি।’

এ সময় সদ্য যোগদান করা ইউএনওদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনাদের প্রধান দায়িত্ব হলো একটি শান্তিপূর্ণ ও আনন্দমুখর নির্বাচন আয়োজন করা।’

প্রধান উপদেষ্টা ইউএনওদের নিজ নিজ এলাকার সব পোলিং স্টেশন পরিদর্শনের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ, এলাকাবাসী ও সহকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে সুন্দর নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দেন।

গণভোট বিষয়ে ভোটারদের সচেতন করার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ‘ভোটারদের বোঝাতে হবে, আপনারা মন ঠিক করে আসুন—“হ্যাঁ”-তে দেবেন নাকি “না”-তে ভোট দেবেন। মন ঠিক করে আসুন।’

কর্মকর্তাদের ধাত্রীর সঙ্গে তুলনা করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ধাত্রী ভালো হলে জন্ম নেওয়া শিশুও ভালো হয়।

তিনি কর্মকর্তাদের যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সৃজনশীল হওয়ার পাশাপাশি অপতথ্য ও গুজব প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেন।

নির্বাচনে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে নারীদের অগ্রাধিকার দেওয়ার ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নারীরা যেন ঠিকভাবে ভোটকেন্দ্রে আসতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে।

শিগগির নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে উল্লেখ করে ড. ইউনূস ইউএনওদের উদ্দেশে বলেন, ‘নির্বাচন সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত কখন, কীভাবে, কোন কাজটি করবেন—তার পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি এখন থেকেই নিন।’

অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম ও জনপ্রশাসন সচিব মো. এহছানুল হকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাগেরহাটের ৪টি আসন বহাল, ফিরল না গাজীপুর ৬

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ৪৯
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বাগেরহাটের ৪টি আসন পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা লিভ টু আপিল খারিজ করে আজ বুধবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগ সর্বসম্মতিতে এ আদেশ দেন।

এর ফলে বহাল থাকল বাগেরহাটের চারটি আসন। বাদ পড়েছে গাজীপুর-৬ আসনটিও।

এর আগে বাগেরহাটের আসন একটি কমিয়ে তিনটি করা এবং গাজীপুরে একটি বাড়ানো-সংক্রান্ত নির্বাচন কমিশনের গেজেট চ্যালেঞ্জ করে রিট করা হয়। শুনানি শেষে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত বাতিল করে গত ১০ নভেম্বর হাইকোর্ট রায় দেন।

হাইকোর্টের রায় ঘোষণার পরপরই তা স্থগিত চেয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) এবং গাজীপুর-৬ আসন থেকে জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী ড. হাফিজুর রহমান ও বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী মো. সালাহ উদ্দিন সরকার আপিল বিভাগে পৃথক আবেদন করেন।

নির্বাচন কমিশনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। ড. হাফিজুর রহমানের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার বেলায়েত হোসেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে বঙ্গভবনে সিইসি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৪
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছেন সিইসি। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছেন সিইসি। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনাররা বঙ্গভবনে পৌঁছেছেন।

বঙ্গভবনের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন, আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ইসির বৈঠকের শিডিউল রাখা আছে।

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট উপলক্ষে নির্বাচন কমিশনের সার্বিক প্রস্তুতি ও তফসিল ঘোষণা বিষয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে আলোচনা করতে বঙ্গভবনে গেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন। সিইসি দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে বঙ্গভবনে পৌঁছান।

এর আগে ১০টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন ভবন থেকে বঙ্গভবনের উদ্দেশে রওনা হন তিনি।

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে রয়েছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ (অবসরপ্রাপ্ত), তাহমিদা বেগম, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার ও আব্দুর রহমানেল মাছউদ এবং ইসি সচিব আখতার আহমেদ।

উল্লেখ্য, চলতি সপ্তাহেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা রয়েছে। তফসিল-সংক্রান্ত ভাষণ রেকর্ড করতে ইতিমধ্যে বিটিভি ও বাংলাদেশ বেতারকে চিঠিও দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাংলাদেশের ‘টাঙ্গাইল শাড়ি বুনন শিল্প’ অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, ইউনেসকোর স্বীকৃতি

বাসস, ঢাকা  
টাঙ্গাইল শাড়িতে অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা মিম। ছবি: ফেসবুক
টাঙ্গাইল শাড়িতে অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা মিম। ছবি: ফেসবুক

টাঙ্গাইলের শাড়ি বুনন শিল্পকে অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেসকো। গতকাল মঙ্গলবার ভারতের নয়াদিল্লিতে ইউনেসকো কনভেনশনের চলমান ২০তম আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এই কনভেনশনের আওতায় এটি বাংলাদেশের ষষ্ঠ একক নিবন্ধন। সভায় প্রথমবারের মতো সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর বিগত চার বছরে এটি দ্বিতীয় নিবন্ধন।

সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের প্রধান এবং ইউনেসকো সাধারণ পরিষদের সভাপতি ও বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জানান, ‘এই স্বীকৃতি বাংলাদেশের জন্য অসামান্য গৌরবের বিষয়। দীর্ঘ দুই শতকের বেশি সময় ধরে টাঙ্গাইলের তাঁতিদের অনবদ্য শিল্পকর্মের বৈশ্বিক স্বীকৃতি এটি।’

তিনি আরও বলেন, ‘টাঙ্গাইল শাড়ি বাংলাদেশের সকল নারীর নিত্য পরিধেয়, যা এই শাড়ি বুনন শিল্পের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনের পেছনে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে।’

এই অর্জনকে বাংলাদেশের সকল তাঁতি ও নারীদের প্রতি উৎসর্গ করেছেন রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা।

বাংলাদেশের অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সামগ্রিক সুরক্ষায় এই স্বীকৃতি নতুন মাত্রা যোগ করবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত তালহা বলেন, ঐতিহ্য হিসেবে ইউনেসকোর স্বীকৃতি অর্জনের মতো বাংলাদেশের অপরিমেয় সাংস্কৃতিক উপাদান রয়েছে।

নথি প্রস্তুত করার সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং কনভেনশন সংক্রান্ত অভিজ্ঞ জনবল তৈরি করার মাধ্যমে আরও অনেক ঐতিহ্যের ইউনেসকো-স্বীকৃতি অর্জনের সুযোগ রয়েছে।

এর আগে, গত ৭ ডিসেম্বর আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের চলমান ২০তম সভা উদ্বোধন করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শংকর। অনুষ্ঠানে ইউনেসকোর নবনিযুক্ত মহাপরিচালক খালেদ এল. এনানি উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত