নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে গণতন্ত্রের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নতি হচ্ছে বলে সরকার যে দাবি করছে, সেটাকেই সবচেয়ে বড় গুজব হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন ইংরেজি দৈনিক নিউ এজের সম্পাদক নূরুল কবীর।
আজ শনিবার বেলা ২টায় ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ‘সংশয় ও চক্রান্ত: ভুল তথ্য ও গুজবের বিপদসমূহ’ শীর্ষক অধিবেশনে তিনি এ কথা বলেন। সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত তিন দিনব্যাপী বে অব বেঙ্গল সম্মেলনের প্রথম দিনে আজ ছয়টি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।
নূরুল কবীর বলেন, ‘ভুল তথ্য ও গুজব দুটি আলাদা বিষয়। ভুল তথ্য অনেক ক্ষেত্রে নেতিবাচক না-ও হতে পারে। তবে গুজব পুরোটাই নেতিবাচক। তথ্য সব সময় তথ্য হিসেবেই থাকবে। যেটা সামাজিক, জাতীয় ও বৈশ্বিক বিভিন্ন কিছুর মাধ্যমে পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে ভুল তথ্য সব সময় খারাপ উদ্দেশ্যে দেওয়া হয় না। যেখানে পর্যাপ্ত তথ্যের অভাব থাকতে পারে। ভুল হতেই পারে। সেটা বিপজ্জনক, তবে সব ক্ষেত্রে ক্ষতিকর নয়। তবে গুজব কোনোভাবেই ইতিবাচক নয়। যেটি তৈরি করা হয়, ছড়ানো হয়, একটা নির্দিষ্ট প্রোপাগান্ডা আকারে বিস্তার ঘটানো হয়।’
নূরুল কবীর বলেন, ‘যদি বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বলা হয়, তাহলে এই সময় সবচেয়ে বড় গুজব ছিল ইরাকে গণবিধ্বংসী অস্ত্র আছে। এটা কিন্তু ইচ্ছাকৃতভাবেই করা হয়েছিল এবং ছড়ানো হয়েছিল। যারা করেছিল তারা জানত এখানে ভূরাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সুবিধা থাকবে। এটার ফলাফল সেখানে অনেক মানুষ মারা গেছে।’
দেশের প্রেক্ষাপটে গুজবের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘যদি দেশের প্রেক্ষাপটে গুজবের কথা বলা হয়ে থাকে তাহলে আমাদের সরকার যেটি বলছে দেশে গণতন্ত্র আছে ও যার মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নতি হচ্ছে—এটিই সবচেয়ে বড় গুজব। কারণ, বাংলাদেশে কোনো গণতন্ত্র নেই। সরকার আছে সেটি গণতান্ত্রিক সরকার নয়। কারণ, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের সঠিকভাবে নির্বাচন হয়নি। ভোটার তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারেনি। যদি ভোটার প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে না পারে ও সেখানে অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন না হয়, তাহলে মানুষের কাছে সেটির কোনো গ্রহণযোগ্যতা থাকে না। এটি গণতন্ত্র হতে পারে না। সে জন্য এটি গুজব।’
নিউ এজের সম্পাদক বলেন, ‘সরকার যে উন্নয়নের কথা বলছে, অর্থনৈতিকভাবে সেটিও একটি বড় গুজব। কারণ, আপনি বড় বড় অবকাঠামো দেখবেন, তবে যখন মধ্যরাতে যাবেন তখন দেখবেন সেখানে গৃহহীন মানুষেরা ঘুমিয়ে আছে। তাই অসম উন্নয়ন ও দারিদ্র্যের ফলে অনেকে অপুষ্টিতে আছে, বাল্যবিবাহ হচ্ছে।’
এই অধিবেশনে জার্মানির জেনিথ ম্যাগাজিনের সম্পাদক লিও উইগার বলেন, ‘গুজব একটি ভয়ংকর জিনিস। আমরা সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া পরিচালিত গুজব দেখেছি।’
চায়নার ফুডান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক চুইহং চাই বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এখন ভুল তথ্য ও গুজব প্রসারে একটি ভূমিকা পালন করছে।’
বেলা সাড়ে ১১টার অধিবেশনে নাগরিক সমাজ, এনজিও ও বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করা হয়। বলা হয়, স্নায়ুযুদ্ধের সমাপ্তির পর থেকে বিশ্বব্যাপী নাগরিক সমাজের বিস্তৃতির ফলে বেসরকারি সংস্থাগুলো (এনজিও), সিভিল সোসাইটি অর্গানাইজেশন (সিএসও) এবং থিংক ট্যাংকগুলোর বিস্তার ঘটেছে, যা অরাষ্ট্রীয় অভিনেতা হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ আবির্ভূত হচ্ছে। এসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বিশ্বে বিভিন্ন ধরনের মানবিক, চিকিৎসা, শিক্ষামূলক এবং অন্যান্য ত্রাণ ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে নিযুক্ত। এই সংস্থাগুলো বিশ্বব্যাপী সংঘাত পরিচালনা ও সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
অধিবেশনে আলোচনা করা হয় কীভাবে শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় বিশ্ব সুশীল সমাজ সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারে।
এই অধিবেশনে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমরা কোন নাগরিক সমাজের কথা বলছি। যে নাগরিক সমাজ বৈশ্বিক মানবতায় বিশ্বাস করে, গণতান্ত্রিক দায়িত্বে বিশ্বাস করে, আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি বিশ্বাস আছে—মূলত এই তিনটি বিষয় যার মধ্যে আছে তাদের নিয়ে। এমন আরও অনেক কিছু থাকতে পারে। তাহলে আমি বলব তারা এখন হুমকির মুখে আছে। গত এক বছরে বে অব বেঙ্গল অঞ্চল এবং ইউরোপ, আমেরিকার, ল্যাটিন আমেরিকায়—এসব নাগরিক সমাজের মানুষের এখন প্রস্থান ঘটেছে।’
তিনি বলেন, যখন গণতন্ত্র ও অন্যান্য ভারসাম্যের বিষয় আসে তখন এসব নাগরিক সমাজের মানুষেরা খুবই কম প্রস্তুত অবস্থায় রয়েছে। এটার কারণ তারা নিজেরা নয়। তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, মূলত তারা কি সেটি করার অনুমতি পাচ্ছে, সেটা দেখার বিষয়। যখন করোনা-পরবর্তী সময়ে এসব নাগরিক সমাজের সবচেয়ে বেশি দরকার ছিল তখন দেখা গেল তাদের ভূমিকা খুবই সীমিত। সেই জায়গাটা কমে গেছে তাদের জন্য।
এর আগের অধিবেশনে জি-২০-এর পরে দক্ষিণ অঞ্চলের উঠতি অর্থনৈতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।
সকাল সাড়ে ৯টায় গণতন্ত্র ও শান্তির বার্তা নিয়ে শুরু হয় বে অব বেঙ্গল সম্মেলন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মালির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও ক্লাব মাদ্রিদের সদস্য মওসা মারা, সিজিএসের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান এবং সিজিএসের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরীসহ দেশীয় ও আন্তর্জাতিক অতিথিরা।
জিল্লুর রহমান বলেন, বর্তমান সময় খুবই জটিল। সারা পৃথিবীতে যুদ্ধের কারণে দেশ বিভক্ত হচ্ছে। এটা খুবই ভয়ের যে শান্তি শেষ হয়ে যাচ্ছে। তবে এখনো আশা ও সুযোগ আছে।
জিল্লুর রহমান আরও বলেন, গতবারের সম্মেলনে তাঁদের অনেক খারাপ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। নিজেদের সরকারই তাঁদের প্রশ্ন করেছে। তাই এবার সিজিএস সুযোগ নিয়েছে প্রমাণ করার জন্য। এটি বিশ্বের কোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে না।
উদ্বোধনী বক্তা হিসেবে মওসা মারা বলেন, পৃথিবীতে এখন জোটবদ্ধতা কমে যাচ্ছে। এর কারণে আন্তর্জাতিক সমস্যাগুলো সমাধানে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। কিছু কিছু দেশ শক্তিশালী হয়ে উঠছে; যারা অন্য দেশগুলোতে তাদের প্রভাব বিস্তার করে চলছে। এর মধ্যে অন্যতম চীন ও আমেরিকা। তারা নিজেদের মতো করে বিভিন্নভাবে অন্য দেশগুলোকে তাদের আয়ত্তে আনার চেষ্টা চালাচ্ছে।
মওসা মারা বলেন, এখন পৃথিবীতে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কমে যাচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন অংশে গণতন্ত্র এটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। বিভিন্ন সময় উত্তেজনার তৈরি হচ্ছে। মৌলবাদ ছড়িয়ে যাচ্ছে।
মওসা বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ আরও একটি সমস্যার তৈরি করেছে। দুঃখের বিষয় এই যুদ্ধ শেষ হবে না। অন্যদিকে ইউরোপ নামে মহাদেশে কিছু দেশ আছে যারা ধনী, কিন্তু তারা একত্রিত নয়। বিভিন্নভাবে সমস্যা তৈরি করছে নিজেদের মধ্যে।
সিজিএসের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশসহ ইন্দো-প্যাসেফিকের দেশগুলো যেসব সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, সেগুলো এই সম্মেলনে দৃষ্টিগোচর করা হবে। মূলত ভারতীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ভূরাজনীতি নিয়ে আলোচনা করা হবে বিভিন্ন অধিবেশনে।
আয়োজকদের তথ্যমতে, এটি সিজিএসের দ্বিতীয় সম্মেলন। এবারের সম্মেলনে দেশীয় রাজনৈতিক ও বিরোধী দলের কোনো বক্তা থাকবেন না। শনিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত চলবে এই সম্মেলন। বিশ্বের ৭৫টি দেশের গবেষক, শিক্ষক, লেখক, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, রাজনৈতিকসহ বিভিন্ন পেশার ২০০ জন গুরুত্বপূর্ণ বক্তা উপস্থিত থাকবেন। তিন দিনে সম্মেলনে ৫০টি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। এবারের আলোচ্য বিষয় ইন্দো-প্যাসেফিক ইস্যু ও ভূরাজনীতি।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে গণতন্ত্রের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নতি হচ্ছে বলে সরকার যে দাবি করছে, সেটাকেই সবচেয়ে বড় গুজব হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন ইংরেজি দৈনিক নিউ এজের সম্পাদক নূরুল কবীর।
আজ শনিবার বেলা ২টায় ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ‘সংশয় ও চক্রান্ত: ভুল তথ্য ও গুজবের বিপদসমূহ’ শীর্ষক অধিবেশনে তিনি এ কথা বলেন। সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত তিন দিনব্যাপী বে অব বেঙ্গল সম্মেলনের প্রথম দিনে আজ ছয়টি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।
নূরুল কবীর বলেন, ‘ভুল তথ্য ও গুজব দুটি আলাদা বিষয়। ভুল তথ্য অনেক ক্ষেত্রে নেতিবাচক না-ও হতে পারে। তবে গুজব পুরোটাই নেতিবাচক। তথ্য সব সময় তথ্য হিসেবেই থাকবে। যেটা সামাজিক, জাতীয় ও বৈশ্বিক বিভিন্ন কিছুর মাধ্যমে পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে ভুল তথ্য সব সময় খারাপ উদ্দেশ্যে দেওয়া হয় না। যেখানে পর্যাপ্ত তথ্যের অভাব থাকতে পারে। ভুল হতেই পারে। সেটা বিপজ্জনক, তবে সব ক্ষেত্রে ক্ষতিকর নয়। তবে গুজব কোনোভাবেই ইতিবাচক নয়। যেটি তৈরি করা হয়, ছড়ানো হয়, একটা নির্দিষ্ট প্রোপাগান্ডা আকারে বিস্তার ঘটানো হয়।’
নূরুল কবীর বলেন, ‘যদি বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বলা হয়, তাহলে এই সময় সবচেয়ে বড় গুজব ছিল ইরাকে গণবিধ্বংসী অস্ত্র আছে। এটা কিন্তু ইচ্ছাকৃতভাবেই করা হয়েছিল এবং ছড়ানো হয়েছিল। যারা করেছিল তারা জানত এখানে ভূরাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সুবিধা থাকবে। এটার ফলাফল সেখানে অনেক মানুষ মারা গেছে।’
দেশের প্রেক্ষাপটে গুজবের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘যদি দেশের প্রেক্ষাপটে গুজবের কথা বলা হয়ে থাকে তাহলে আমাদের সরকার যেটি বলছে দেশে গণতন্ত্র আছে ও যার মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নতি হচ্ছে—এটিই সবচেয়ে বড় গুজব। কারণ, বাংলাদেশে কোনো গণতন্ত্র নেই। সরকার আছে সেটি গণতান্ত্রিক সরকার নয়। কারণ, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের সঠিকভাবে নির্বাচন হয়নি। ভোটার তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারেনি। যদি ভোটার প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে না পারে ও সেখানে অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন না হয়, তাহলে মানুষের কাছে সেটির কোনো গ্রহণযোগ্যতা থাকে না। এটি গণতন্ত্র হতে পারে না। সে জন্য এটি গুজব।’
নিউ এজের সম্পাদক বলেন, ‘সরকার যে উন্নয়নের কথা বলছে, অর্থনৈতিকভাবে সেটিও একটি বড় গুজব। কারণ, আপনি বড় বড় অবকাঠামো দেখবেন, তবে যখন মধ্যরাতে যাবেন তখন দেখবেন সেখানে গৃহহীন মানুষেরা ঘুমিয়ে আছে। তাই অসম উন্নয়ন ও দারিদ্র্যের ফলে অনেকে অপুষ্টিতে আছে, বাল্যবিবাহ হচ্ছে।’
এই অধিবেশনে জার্মানির জেনিথ ম্যাগাজিনের সম্পাদক লিও উইগার বলেন, ‘গুজব একটি ভয়ংকর জিনিস। আমরা সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া পরিচালিত গুজব দেখেছি।’
চায়নার ফুডান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক চুইহং চাই বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এখন ভুল তথ্য ও গুজব প্রসারে একটি ভূমিকা পালন করছে।’
বেলা সাড়ে ১১টার অধিবেশনে নাগরিক সমাজ, এনজিও ও বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করা হয়। বলা হয়, স্নায়ুযুদ্ধের সমাপ্তির পর থেকে বিশ্বব্যাপী নাগরিক সমাজের বিস্তৃতির ফলে বেসরকারি সংস্থাগুলো (এনজিও), সিভিল সোসাইটি অর্গানাইজেশন (সিএসও) এবং থিংক ট্যাংকগুলোর বিস্তার ঘটেছে, যা অরাষ্ট্রীয় অভিনেতা হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ আবির্ভূত হচ্ছে। এসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বিশ্বে বিভিন্ন ধরনের মানবিক, চিকিৎসা, শিক্ষামূলক এবং অন্যান্য ত্রাণ ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে নিযুক্ত। এই সংস্থাগুলো বিশ্বব্যাপী সংঘাত পরিচালনা ও সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
অধিবেশনে আলোচনা করা হয় কীভাবে শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় বিশ্ব সুশীল সমাজ সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারে।
এই অধিবেশনে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমরা কোন নাগরিক সমাজের কথা বলছি। যে নাগরিক সমাজ বৈশ্বিক মানবতায় বিশ্বাস করে, গণতান্ত্রিক দায়িত্বে বিশ্বাস করে, আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি বিশ্বাস আছে—মূলত এই তিনটি বিষয় যার মধ্যে আছে তাদের নিয়ে। এমন আরও অনেক কিছু থাকতে পারে। তাহলে আমি বলব তারা এখন হুমকির মুখে আছে। গত এক বছরে বে অব বেঙ্গল অঞ্চল এবং ইউরোপ, আমেরিকার, ল্যাটিন আমেরিকায়—এসব নাগরিক সমাজের মানুষের এখন প্রস্থান ঘটেছে।’
তিনি বলেন, যখন গণতন্ত্র ও অন্যান্য ভারসাম্যের বিষয় আসে তখন এসব নাগরিক সমাজের মানুষেরা খুবই কম প্রস্তুত অবস্থায় রয়েছে। এটার কারণ তারা নিজেরা নয়। তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, মূলত তারা কি সেটি করার অনুমতি পাচ্ছে, সেটা দেখার বিষয়। যখন করোনা-পরবর্তী সময়ে এসব নাগরিক সমাজের সবচেয়ে বেশি দরকার ছিল তখন দেখা গেল তাদের ভূমিকা খুবই সীমিত। সেই জায়গাটা কমে গেছে তাদের জন্য।
এর আগের অধিবেশনে জি-২০-এর পরে দক্ষিণ অঞ্চলের উঠতি অর্থনৈতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।
সকাল সাড়ে ৯টায় গণতন্ত্র ও শান্তির বার্তা নিয়ে শুরু হয় বে অব বেঙ্গল সম্মেলন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মালির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও ক্লাব মাদ্রিদের সদস্য মওসা মারা, সিজিএসের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান এবং সিজিএসের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরীসহ দেশীয় ও আন্তর্জাতিক অতিথিরা।
জিল্লুর রহমান বলেন, বর্তমান সময় খুবই জটিল। সারা পৃথিবীতে যুদ্ধের কারণে দেশ বিভক্ত হচ্ছে। এটা খুবই ভয়ের যে শান্তি শেষ হয়ে যাচ্ছে। তবে এখনো আশা ও সুযোগ আছে।
জিল্লুর রহমান আরও বলেন, গতবারের সম্মেলনে তাঁদের অনেক খারাপ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। নিজেদের সরকারই তাঁদের প্রশ্ন করেছে। তাই এবার সিজিএস সুযোগ নিয়েছে প্রমাণ করার জন্য। এটি বিশ্বের কোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে না।
উদ্বোধনী বক্তা হিসেবে মওসা মারা বলেন, পৃথিবীতে এখন জোটবদ্ধতা কমে যাচ্ছে। এর কারণে আন্তর্জাতিক সমস্যাগুলো সমাধানে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। কিছু কিছু দেশ শক্তিশালী হয়ে উঠছে; যারা অন্য দেশগুলোতে তাদের প্রভাব বিস্তার করে চলছে। এর মধ্যে অন্যতম চীন ও আমেরিকা। তারা নিজেদের মতো করে বিভিন্নভাবে অন্য দেশগুলোকে তাদের আয়ত্তে আনার চেষ্টা চালাচ্ছে।
মওসা মারা বলেন, এখন পৃথিবীতে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কমে যাচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন অংশে গণতন্ত্র এটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। বিভিন্ন সময় উত্তেজনার তৈরি হচ্ছে। মৌলবাদ ছড়িয়ে যাচ্ছে।
মওসা বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ আরও একটি সমস্যার তৈরি করেছে। দুঃখের বিষয় এই যুদ্ধ শেষ হবে না। অন্যদিকে ইউরোপ নামে মহাদেশে কিছু দেশ আছে যারা ধনী, কিন্তু তারা একত্রিত নয়। বিভিন্নভাবে সমস্যা তৈরি করছে নিজেদের মধ্যে।
সিজিএসের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশসহ ইন্দো-প্যাসেফিকের দেশগুলো যেসব সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, সেগুলো এই সম্মেলনে দৃষ্টিগোচর করা হবে। মূলত ভারতীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ভূরাজনীতি নিয়ে আলোচনা করা হবে বিভিন্ন অধিবেশনে।
আয়োজকদের তথ্যমতে, এটি সিজিএসের দ্বিতীয় সম্মেলন। এবারের সম্মেলনে দেশীয় রাজনৈতিক ও বিরোধী দলের কোনো বক্তা থাকবেন না। শনিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত চলবে এই সম্মেলন। বিশ্বের ৭৫টি দেশের গবেষক, শিক্ষক, লেখক, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, রাজনৈতিকসহ বিভিন্ন পেশার ২০০ জন গুরুত্বপূর্ণ বক্তা উপস্থিত থাকবেন। তিন দিনে সম্মেলনে ৫০টি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। এবারের আলোচ্য বিষয় ইন্দো-প্যাসেফিক ইস্যু ও ভূরাজনীতি।
প্রধান উপদেষ্টার সম্প্রতি চীন সফরের ফলাফল পর্যালোচনা এবং বাংলাদেশ-চীন সহযোগিতা দ্রুততর করতে চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। আজ রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তাঁরা এ সাক্ষাৎ করেন।
৯ ঘণ্টা আগেএজেন্সিগুলোর গাফিলতির কারণে চলতি বছর প্রায় সাড়ে ১০ হাজার ব্যক্তির হজ পালন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল। এ নিয়ে ধর্ম উপদেষ্টার হুঁশিয়ারির পর তৎপরতা বাড়িয়েছে এজেন্সিগুলো। এতে অনিশ্চয়তা প্রায় কেটে গেছে। হজযাত্রীদের ভিসাপ্রক্রিয়াও প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
৯ ঘণ্টা আগেজাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেসকোর মহাপরিচালক পদে (২০২৫-২৯) মেক্সিকোর প্রার্থী গ্যাব্রিয়েলা রামোস পাটিনা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। আজ রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তিনি এ সাক্ষাৎ করেন। এ সময় মেক্সিকোর অনাবাসিক
১০ ঘণ্টা আগেজুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদোন্নতি–সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় স্থগিত করা হয়েছে। কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ রোববার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হক এই আদেশ দেন। একই সঙ্গে আবেদনটি আগামী ১৮ মে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির...
১১ ঘণ্টা আগে