Ajker Patrika

তিন শতাধিক প্রার্থী সমর্থককে শোকজ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯: ৩৩
তিন শতাধিক প্রার্থী সমর্থককে শোকজ

বিএনপি ও সমমনাদের বর্জন করা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের হিড়িক পড়েছে। মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, এমনকি সরকারি সুবিধাভোগীরাও বিধি লঙ্ঘন করে যাচ্ছেন। আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে এ পর্যন্ত তিন শতাধিক প্রার্থী-সমর্থককে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ্র চন্দকে শোকজ করা হয়।

ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ্র চন্দকে গতকাল শোকজ করেন খুলনা-৫ আসনের নির্বাচনী তদন্ত কমিটি ও সিনিয়র সহকারী জজ রত্না সাহা। শোকজের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, সরকারি সুবিধাভোগী ব্যক্তি হওয়া সত্ত্বেও খুলনা-৫ (ডুমুরিয়া, ফুলতলা ও গিলাতলা ক্যান্টনমেন্ট এলাকা) আসনে নৌকার প্রার্থী নারায়ণ চন্দ্র চন্দের পক্ষে প্রচারণায় সক্রিয়ভাবে অংশ নেন তাঁর ছেলে ড. বিশ্বজিৎ।

এ ছাড়া গত শুক্র ও গতকাল শনিবার দেশের বিভিন্ন নির্বাচনী আসনে প্রার্থীসহ আরও আটজনকে জরিমানা করা হয়েছে। আর শোকজ নোটিশ দেওয়া হয়েছে দুই প্রার্থীসহ তিনজনকে।

ফেনী-২ আসনে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মোমবাতি প্রতীকের প্রার্থী মাওলানা নুরুল ইসলাম নিজেই জানেন না তাঁর নির্বাচনী আসনের সীমানার পরিধি। সীমানার বাইরে পোস্টার, ফেস্টুন ও ব্যানার টাঙানোয় শুক্রবার রাতে তাঁকে ৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

আচরণবিধি লঙ্ঘনে সর্বশেষ মানিকগঞ্জ-১ আসনে লাঙ্গলের প্রার্থী জহিরুল আলম রুবেলের এক কর্মীকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। একই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সালাউদ্দিন মাহমুদের দুই কর্মীকে মোট ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

ঢাকা-১৯ আসনে নৌকার প্রার্থী ডা. এনামুর রহমানের বিরুদ্ধে বিধি ভঙ্গ করে নির্বাচনী প্রচার চালানোর অভিযোগ উঠেছে।

কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনে ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল হক চৌধুরীকে গতকাল শোকজ করা হয়েছে। একই আসনের ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী নাজমুল হুদা পটল ও তাঁর সমর্থকদের হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে দৌলতপুর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি বুলবুল আহম্মেদ টোকন চৌধুরীকে শোকজ করা হয়েছে।

কুমিল্লা-২ আসনের হোমনায় নির্বাচনী সভায় নৌকার প্রার্থীর চরিত্র হনন করে মানহানিকর বক্তব্য দেওয়ায় জেলা পরিষদের সদস্য মকবুল হোসেন পাঠানকে ১৫ হাজার টাকা এবং ভাষানিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য খাজাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া সাইদুল ইসলাম নামের ট্রাক প্রতীকের এক কর্মীকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

মেহেরপুর-১ আসনে সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেওয়ায় পৌরসভার মেয়র মাহফুজুর রহমান রিটনকে শোকজ করা হয়েছে। একই আসনে আচরণবিধি ভঙ্গের কারণে পাওয়া শোকজ নোটিশের জবাব দিয়েছেন মেহেরপুরের সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা অলোক কুমার দাস এবং কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সেলিম রেজা।

গাইবান্ধা-২ (সদর) আসনে লাঙ্গলের প্রার্থী আব্দুর রশীদ সরকারকে শোকজ করেছে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি।

চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ ও সাতকানিয়ার আংশিক) আসনে ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল জব্বার চৌধুরীর পক্ষে বিধি ভঙ্গ করে নির্ধারিত সময়ের বাইরে উঠান বৈঠক করার অভিযোগ উঠেছে।

প্রার্থিতা ফেরত ৪৮ প্রার্থীর
ইসির তথ্য অনুযায়ী, আদালতে গিয়ে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৪৮ জন প্রার্থী তাঁদের প্রার্থিতা ফেরত পেয়েছেন। এর মধ্যে নওগাঁ-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী গত বৃহস্পতিবার মারা যাওয়ায় ওই আসনের ভোট গ্রহণ কার্যক্রম বাতিল করেছে ইসি। 

দুই শতাধিক বিদেশি পর্যবেক্ষক
সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য এখন পর্যন্ত দুই শতাধিক বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। তবে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। চূড়ান্ত হওয়া তালিকায় ১২৩ জন পর্যবেক্ষক, ৫০ জন সাংবাদিক ও ইসির আমন্ত্রণ জানানো ১১৪ জনের মধ্যে ৩০ জন নিশ্চিত করেছেন বলে জানা গেছে। 

ভোটার তালিকার খসড়া ২১ জানুয়ারি
বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার নিবন্ধনের জন্য যাঁদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে এবং পরবর্তী সময়ে অফিসে এসে যাঁরা ভোটার তালিকাভুক্তির জন্য নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন, তাঁদের চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য আগামী ২১ জানুয়ারি খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের বিষয়ে কমিশন সিদ্ধান্ত দিয়েছে। তবে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রণীত চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় যাঁদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, তাঁদের নাম খসড়া ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পিরোজপুর-২ আসন: বিএনপিতে প্রতিযোগিতা, মাঠে একা সাঈদীর ছেলে

ভোটের সাত দিন আগেই কেন্দ্রে সেনা চায় বিএনপি

প্রতিবেশীদের ছাড়াই পরাশক্তি হওয়ার উচ্চাভিলাষ ভারতের, পারবে কি

সংশোধিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ: স্বতন্ত্র প্রার্থীর ঘাড়ে ১ শতাংশ স্বাক্ষরের বোঝা থাকছেই

যমুনা রেলসেতুর পিলারে ফাটল, কর্তৃপক্ষ বলছে গঠনগত কোনো সমস্যা নয়

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তিন এজেন্সির প্রতারণার শিকার ১৭ ওমরাহযাত্রী

আয়নাল হোসেন, ঢাকা 
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ওমরাহ হজ পালন করতে গিয়ে এজেন্সির প্রতারণার শিকার হয়েছেন ১৭ জন যাত্রী। পরে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে দুটি এজেন্সি টাকা ফেরত দিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি করেছে। অন্য একটি এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, প্রতারণার শিকার ওমরাহযাত্রীরা প্রতিকার চেয়ে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। গত বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুনানি শেষে দুটি এজেন্সি টাকা ফেরত দিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি করেছে। আর একটি প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে ত্রুটিগুলো লিখিতভাবে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী সময়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রেখে দেওয়া হয়েছে।

প্রতারণার অভিযোগ ওঠা তিন এজেন্সির একটি হলো দেশ ও বিদেশ হজ এজেন্সি। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে অভিযোগ করা ওমরাহ যাত্রীরা হলেন আজহারুল ইসলাম, খোরশেদ আলম, নূর মোহাম্মদ, মো. খোরশেদ আলম, খোদেজা আলম, কোহিনুর আক্তার, রহিমা আক্তার, সারোয়ার আলম চৌধুরী ফরিদা ইয়াসমিন লাভলী, শফিকুল আলম ও শাহেনা আকতার। এজেন্সির বিরুদ্ধে তাঁদের দেওয়া অভিযোগের মধ্যে রয়েছে ওমরাহ পালনকালে জেদ্দা বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর সুনির্দিষ্ট হোটেল বুকিং না থাকা, নিজ উদ্যোগে হোটেলে লাগেজ বহন, হোটেল ব্যবস্থাপনায় চরম ভোগান্তি, সংকীর্ণ আবাসস্থল, অতিরিক্ত টাকা নেওয়া, হজের পাঁচ দিন বাস সার্ভিসে চরম অব্যবস্থাপনা এবং নিম্নমানের খাবার পরিবেশন।

জানতে চাইলে দেশ ও বিদেশ এজেন্সির মালিক এহসানুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ওমরাহ যাত্রীরা মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন। কয়েকজন টাকা বকেয়া রেখেই ওমরাহ পালনে যান। এ-সংক্রান্ত সব কাগজপত্র মন্ত্রণালয়ে দাখিল করা হয়েছে।

মো. শামীম হোসেন নামের একজন অভিযোগ করেন ড. মুফতি এম এ আজিজ হজ অ্যান্ড ট্যুরস এজেন্সির কাছে। তিনজনে ওমরা পালনের জন্য গত ১০ ফেব্রুয়ারি ৩ লাখ টাকা জমা দেন। অফিসে গিয়ে সেটি তালাবদ্ধ দেখেন। এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ড. মুফতি এম এ আজিজ হজ অ্যান্ড ট্যুরস প্রতিষ্ঠানের কাছে ধর্ম মন্ত্রণালয় নোটিশ পাঠায়। এতে বুধবার বেলা সাড়ে ৩টায় অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিবের কক্ষে শুনানির জন্য ডাকা হয়। শুনানিতে উপস্থিত হতে ব্যর্থ হলে ধরে নেওয়া হবে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য দিতে ইচ্ছুক নয়। পরে জমা দেওয়া টাকার মধ্যে২ লাখ মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে ফেরত দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

শাহনেওয়াজ নামের অন্য একটি ব্যক্তি লাইম স্টোন রিসোর্ট অ্যান্ড ট্যুরিজম লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, জনপ্রতি ১ লাখ ৭০ হাজার করে তিনজনের জন্য ৫ লাখ ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ওমরাহ পালনে যান তাঁরা। মদিনায় ৪ দিন ও মক্কায় ১০ দিন রাখার শর্তে টাকা দেওয়া হয়। এজেন্সি মদিনায় ফ্লাইট না দিয়ে জেদ্দায় ফ্লাইট দেয়। এরপর জেদ্দা-মদিনায় যাতায়াতের জন্য অতিরিক্ত ৩০০ রিয়াল করে আদায় করে। মদিনায় হোটেল নিম্নমানের দেওয়া হয়। একই কক্ষে নারী-পুরুষকে রাখা হয়। মক্কায়ও নিম্নমানের হোটেল দেওয়া হয়। সেখানেও নারী-পুরুষকে একত্রে রাখা হয়। মক্কা থেকে ফ্লাইট না দিয়ে মদিনা থেকে ঢাকায় ফ্লাইট দেওয়া হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পিরোজপুর-২ আসন: বিএনপিতে প্রতিযোগিতা, মাঠে একা সাঈদীর ছেলে

ভোটের সাত দিন আগেই কেন্দ্রে সেনা চায় বিএনপি

প্রতিবেশীদের ছাড়াই পরাশক্তি হওয়ার উচ্চাভিলাষ ভারতের, পারবে কি

সংশোধিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ: স্বতন্ত্র প্রার্থীর ঘাড়ে ১ শতাংশ স্বাক্ষরের বোঝা থাকছেই

যমুনা রেলসেতুর পিলারে ফাটল, কর্তৃপক্ষ বলছে গঠনগত কোনো সমস্যা নয়

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভোটকেন্দ্রে ‘প্রথম প্রতিরক্ষা স্তর’ হবেন ৬ লাখ আনসার সদস্য: মহাপরিচালক

বাসস, ঢাকা  
আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ। ছবি: বাসস
আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ। ছবি: বাসস

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী (আনসার-ভিডিপি) পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি নিয়েছে। এবারের নির্বাচনে ৬ লাখ আনসার সদস্য মাঠে থাকবে, যারা ভোটকেন্দ্রগুলোতে ‘প্রথম প্রতিরক্ষা স্তর’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। একই সঙ্গে তাঁরা অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গেও সমন্বয় করে কাজ করবেন।

আনসার ও ভিডিপির সদরদপ্তরে গতকাল বৃহস্পতিবার বাহিনীর মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ এই প্রস্তুতির কথা জানান।

বাসসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ডিজি সাজ্জাদ মাহমুদ বলেন, এবারের নির্বাচনে নিরপেক্ষ দায়িত্ব পালনের নিশ্চয়তা দিতে এবং কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আনতে আনসার বাহিনী প্রথমবারের মতো ডিজিটাল মনিটরিং সিস্টেম চালু করছে। তিনি বলেন, ‘এবার ভোট কেন্দ্রে প্রশিক্ষিত আনসার সদস্যদের পাঠানো হচ্ছে। তারা সদরদপ্তরের সঙ্গে ডিজিটাল সিস্টেমে যুক্ত থাকবে। ফলে নিরপেক্ষ দায়িত্ব পালনের নিশ্চয়তা থাকবে।’

এই ডিজিটাল ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রতিটি সদস্যের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নম্বর, কিউআর কোড এবং কর্মতথ্য সফটওয়্যারে সংরক্ষিত থাকবে। ফলে দায়িত্ব পালনের দক্ষতা, অবস্থান ও আচরণ রিয়েল টাইমে ট্র্যাক করা সম্ভব হবে। মহাপরিচালক বলেন, নির্বাচনের দিন আনসার বাহিনী জনগণের নিরাপত্তা ও আস্থার প্রতীক হয়ে কাজ করবে।

নির্বাচনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশিক্ষণের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। গত বছরের ৬ আগস্ট থেকে আনসার সদস্যদের মৌলিক বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, যার মধ্যে লিডারশিপ ট্রেনিং, অ্যাডভান্স ট্রেনিং এবং ইয়ুথ লিডারশিপ ট্রেনিং অন্তর্ভুক্ত।

মহাপরিচালক জানান, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর দুই বা তিনদিনের রিফ্রেশার ট্রেনিং দেওয়া হবে, যেখানে আচরণবিধি, ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা, ভিড় নিয়ন্ত্রণ এবং যোগাযোগের কৌশল শেখানো হবে; নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে এবং পেশাগত ভূমিকায় একনিষ্ঠ সদস্যদের নির্বাচন করার জন্য পুরোনো সদস্যদের তথ্য ফিল্টারিং করা হবে; বাহিনীতে তরুণ ও কর্মক্ষম সদস্যদের অন্তর্ভুক্তি বাড়াতে বয়সসীমা কমিয়ে ১৮ থেকে ২৫ বছর করা হয়েছে; বাহিনীতে নারী সদস্যের সংখ্যা প্রায় ৫০ শতাংশ; নারী-পুরুষ সমানভাবে নেতৃত্বে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং প্রতিটি উপজেলা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে একজন পুরুষ ও একজন নারী প্রশিক্ষক রাখা হয়েছে।

মেজর জেনারেল সাজ্জাদ মাহমুদ আরও জানান, এবার নির্বাচনী সশস্ত্র ও নিরস্ত্র উভয় ধরনের আনসার সদস্যরা দায়িত্বে থাকবেন। তাদের জন্য নতুন ইউনিফর্ম, জ্যাকেট ও নিরাপত্তা সরঞ্জাম সরবরাহ করা হচ্ছে।

ডিজি বলেন, এখন থেকে আনসার বাহিনী ব্যক্তিনির্ভর নয় বরং সিস্টেম নির্ভর হবে। অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা রক্ষায় আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ পেলে দ্রুত তদন্ত ও শাস্তির ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।

তিনি আনসার বাহিনীর বৃহত্তর ভূমিকা তুলে ধরে বলেন, বাহিনীটি শুধু নির্বাচনের সময়ই নয়, বরং সারাবছরই উন্নয়ন, দুর্যোগ মোকাবিলা ও সামাজিক সচেতনতা কার্যক্রমে ভূমিকা রাখছে। বর্তমানে প্রায় ৬০ লাখ আনসার সদস্যের মধ্যে ৫৯ লাখই স্বেচ্ছাসেবক। তাদের জীবনমান উন্নয়নে ‘সঞ্জীবন প্রকল্প’ চালু করা হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে সদস্যরা দলভিত্তিক ক্ষুদ্রঋণ, উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ (যেমন ড্রাইভিং, নার্সিং, ফ্রিল্যান্সিং) সহায়তা পাচ্ছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পিরোজপুর-২ আসন: বিএনপিতে প্রতিযোগিতা, মাঠে একা সাঈদীর ছেলে

ভোটের সাত দিন আগেই কেন্দ্রে সেনা চায় বিএনপি

প্রতিবেশীদের ছাড়াই পরাশক্তি হওয়ার উচ্চাভিলাষ ভারতের, পারবে কি

সংশোধিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ: স্বতন্ত্র প্রার্থীর ঘাড়ে ১ শতাংশ স্বাক্ষরের বোঝা থাকছেই

যমুনা রেলসেতুর পিলারে ফাটল, কর্তৃপক্ষ বলছে গঠনগত কোনো সমস্যা নয়

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সংসদ নির্বাচনে ইভিএম বাতিল, ফিরল ‘না ভোট’

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ১১: ০৭
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন, ২০২৫-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। এই সংশোধনীগুলোর মাধ্যমে দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থায় বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হলো, যার মধ্যে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) বাতিল এবং ‘না ভোট’ পুনর্বহাল অন্যতম।
গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের এক সভায় আরপিও সংশোধনের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এই সভায় সভাপতিত্ব করেন।

ইভিএম বাতিল ও ‘না ভোট’ পুনর্বহাল

বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি জানান, আরপিওতে আনা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনী হলো ইভিএম সংক্রান্ত বিধান বাতিল করা। একই সঙ্গে ‘না ভোট’ দেওয়ার সুযোগ পুনর্বহাল করা হয়েছে।

আইন উপদেষ্টা বলেন, ২০১৪ সালের মতো ‘সাজানো নির্বাচন’-এর পুনরাবৃত্তি ঠেকাতেই এই বিধান আনা হয়েছে। এখন কোনো নির্বাচনী আসনে যদি মাত্র একজন প্রার্থী থাকেন এবং ভোটাররা যদি তাঁকে অপছন্দ করেন, তবে তাঁরা ‘না ভোট’ দিতে পারবেন। ‘না ভোট’ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে সেই আসনে পুনরায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

এর মাধ্যমে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার বিতর্ক এড়ানো সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

প্রার্থীর দেশি-বিদেশি আয়ের তথ্য প্রকাশ বাধ্যতামূলক

নির্বাচনী সংস্কারের ক্ষেত্রে আরেকটি বড় পদক্ষেপ হলো প্রার্থীদের আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। নতুন সংশোধনী অনুযায়ী, নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক প্রার্থীকে তাঁর দেশি ও বিদেশি উৎস থেকে আয় এবং সম্পত্তির পূর্ণ বিবরণ হলফনামায় প্রদান করতে হবে।

প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ওয়েবসাইটে এই হলফনামাগুলো উন্মুক্তভাবে প্রকাশ করা হবে, যাতে জনগণ সহজেই প্রার্থীর আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে অবগত হতে পারে।

অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনী

আরপিওতে আরও যেসব গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে, সেগুলো হলো:

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় সামরিক বাহিনী: আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় এবার সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

পলাতক আসামিদের নিষেধাজ্ঞা: পলাতক আসামিদের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণে পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

জামানত বৃদ্ধি: নির্বাচনী জামানতের পরিমাণ ২০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে।

চাঁদা গ্রহণে স্বচ্ছতা: রাজনৈতিক দলগুলোকে ৫০ হাজার টাকার বেশি অনুদান বা চাঁদা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে গ্রহণ করতে হবে এবং অনুদানদাতার ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

ডাক ভোটের সম্প্রসারণ: বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসী ভোটার ও নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তারাও এখন থেকে ডাকের মাধ্যমে ভোট দিতে পারবেন।

ভোট গণনায় গণমাধ্যমের উপস্থিতি: ভোট গণনার সময় গণমাধ্যমের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়েছে, যা প্রক্রিয়াটির স্বচ্ছতা বাড়াবে।

ভোট বাতিলের ক্ষমতা: কোনো নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক অনিয়ম হলে পুরো এলাকার ভোট বাতিল করার ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া হয়েছে।

প্রতীকে স্বচ্ছতা: জোটের প্রার্থীদের প্রতীক ব্যবহারে স্বচ্ছতা আনতে বিধান যোগ করা হয়েছে, যাতে ভোটাররা সহজেই বুঝতে পারেন কোন দল থেকে প্রার্থী হচ্ছেন।

আইন উপদেষ্টা জানান, এ ছাড়া উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বাংলাদেশ শ্রম আইন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় আইন, দুর্নীতি দমন কমিশন আইন এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর আইন নীতিগতভাবে অনুমোদন পেয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পিরোজপুর-২ আসন: বিএনপিতে প্রতিযোগিতা, মাঠে একা সাঈদীর ছেলে

ভোটের সাত দিন আগেই কেন্দ্রে সেনা চায় বিএনপি

প্রতিবেশীদের ছাড়াই পরাশক্তি হওয়ার উচ্চাভিলাষ ভারতের, পারবে কি

সংশোধিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ: স্বতন্ত্র প্রার্থীর ঘাড়ে ১ শতাংশ স্বাক্ষরের বোঝা থাকছেই

যমুনা রেলসেতুর পিলারে ফাটল, কর্তৃপক্ষ বলছে গঠনগত কোনো সমস্যা নয়

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সংশোধিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ: স্বতন্ত্র প্রার্থীর ঘাড়ে ১ শতাংশ স্বাক্ষরের বোঝা থাকছেই

  • সংস্কার কমিশন শিথিল করে ৫০০ ভোটারের স্বাক্ষরের কথা বলেছিল
  • ব্যালট পেপার অতি লম্বা হওয়ার ভয়ে ১ শতাংশ বাদ দিচ্ছে না ইসি
মো. হুমায়ূন কবীর, ঢাকা
আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ১০: ০৬
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ঘাড়ে থাকছে ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর সংগ্রহের বোঝা। বিভিন্ন মহলের দাবি ও নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশের পরও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নির্বাচনে লড়ার শর্ত সহজ করার উদ্যোগ নেয়নি এএমএম নাসির উদ্দিন কমিশন (ইসি)। সংশোধিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়নের সঙ্গে ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরসংবলিত তালিকা জমা দেওয়ার বিধান বহাল রাখা হয়েছে।

আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিংয়ের পর গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন, ২০২৫-এর খসড়া গতকাল বৃহস্পতিবারের বৈঠকে নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। ১ শতাংশের শর্ত বহাল রাখার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) যুক্তি, এটি বাতিল করা হলে অনেক বেশি প্রার্থীর কারণে ব্যালটের আকার বেশি লম্বা হয়ে যাবে।

বর্তমান আরপিও অনুযায়ী, কোনো নির্বাচনী এলাকা থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে হলে প্রার্থীকে সেই আসনের মোট ভোটারের ১ শতাংশের সমর্থনের তালিকা মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হয়। যাঁরা স্বতন্ত্র প্রার্থীকে সমর্থন করবেন, তালিকায় তাঁদের স্বাক্ষর বা টিপসই থাকতে হবে। তালিকাটি সঠিক কি না তা দেখতে দৈবচয়নের মাধ্যমে সেখান থেকে ১০ জনের তথ্য যাচাই করে কমিশন। ১০ জনের মধ্যে কোনো ভোটার যদি স্বাক্ষর করার কথা অস্বীকার করেন, তাহলে ওই প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করা হবে। তবে ইতিপূর্বে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়ে থাকলে বা দলীয় প্রার্থী হলে কাউকে এ শর্ত পূরণ করতে হয় না।

সংশোধিত আরপিওতে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরসংবলিত তালিকা জমা দেওয়ার বিধান বহাল রয়েছে কি না, জানতে চাইলে ইসির অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ ইতিবাচক জবাব দেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশে স্বতন্ত্র প্রার্থীর শর্ত সহজ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। সুপারিশে বলা হয়েছিল, ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরের পরিবর্তে ৫০০ ভোটারের সম্মতি এবং হলফনামার বিধান করা।

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশের বিষয়টি উল্লেখ করলে ইসির অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘এ বিষয়ে কমিশন সিদ্ধান্ত দিয়েছে। আমাদের এ বিষয়ে বলার কিছু নেই।’

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. মো. আব্দুল আলীম বলেন, ‘১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরের শর্ত থাকায় অনেক ভালো লোক নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন না। আমরা অনলাইনে বিভিন্ন অংশীজনের মতামত নিয়েছি। ঢাকা ও বিভিন্ন জেলায় গিয়ে বৈঠক করেছি। অনেকেই এতে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের শর্ত সহজ করতে মত দিয়েছেন। অনেকে এ শর্ত পুরোপুরি বাদ দেওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন।’

ড. আব্দুল আলীম আরও বলেন, ৫ থেকে ৭ লাখ ভোটার এমন আসনে ৫ থেকে ৭ হাজার মানুষের স্বাক্ষর লাগে। এটি জোগাড় করা একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর জন্য কষ্টসাধ্য কাজ। আর যাচাই করার জন্য ইসি দৈবচয়নের মাধ্যমে ভোটার বাছাই করে। প্রশাসন থেকে এজন্য ফোন করা হলে ঝামেলার আশঙ্কায় অনেকেই বলে দেন, তিনি স্বাক্ষর করেননি। তা ছাড়া ভোটারদের নিরাপত্তার বিষয়টি তো রয়েছেই। তাই এ শর্তটি সহজ করা উচিত।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ১ শতাংশের শর্ত বাদ দিতে পারলে ভালো হতো। তবে এই শর্ত বাদ দিলে যে কেউ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাইবেন। সে ক্ষেত্রে ব্যালট পেপারে অনেক প্রতীক রাখতে হবে। এ বিবেচনায় এটি করা হয়েছে।’

৭ অক্টোবর নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ইসির সংলাপে সাবেক বরিশাল আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মীর মো. শাহজাহান বলেন, ‘স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরসংবলিত যে তালিকা দিতে হয়, তা অগণতান্ত্রিক। এর ফলে ভোটারের পরিচিতি জনসমক্ষে প্রকাশ হয়ে যায় এবং তাঁর নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়ে। এটি করলে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে ভোটদানের পদ্ধতি প্রশ্নবিদ্ধ হয়। এটি একেবারেই বাতিল করতে হবে।’

২০০৮ সালের আগে এ শর্ত ছিল না উল্লেখ করে ইসির এই সাবেক কর্মকর্তা বলেন, যতই কষ্ট হোক, ব্যালট পেপার যতই লম্বা হোক, ভোটারদের গোপনীয়তা থেকে বঞ্চিত করা যায় না। প্রার্থীর সংখ্যা অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়া ঠেকাতে জামানত বৃদ্ধি করলেও চলে।

জুলাই অভ্যুত্থানের পর বিদায় নেওয়া কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার পথ সহজ করেছিল। ২০১৬ সাল থেকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে প্রার্থী হওয়ার বিধান যুক্ত করা হয়। সেই বিধান অনুযায়ী, উপজেলা পরিষদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে হলে ২৫০ জন ভোটারের সমর্থনসূচক স্বাক্ষর জমা দিতে হতো। ২০২৪ সালের বিতর্কিত সংসদ নির্বাচনের পর স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রার্থীর সংখ্যা বাড়াতে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীকে প্রার্থী না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এমন প্রেক্ষাপটে উপজেলা নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ২৫০ জন ভোটারের সমর্থনসূচক স্বাক্ষর জমা দেওয়ার বিধান বাতিল করা হয়। তবে অহেতুক প্রার্থী হওয়া ঠেকাতে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। বিধান হয় নির্বাচনে যত ভোট পড়বে, তার ১৫ শতাংশ না পেলে প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। আগে প্রদত্ত ভোটের ১২.৫ শতাংশের কম ভোট পেলে জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়ার বিধান ছিল। এ ছাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জামানতের অঙ্ক ১০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১ লাখ এবং ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৭৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়।

গত বছরের ১০ জুন বিদায়ী সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘১ শতাংশ সমর্থন তালিকার যে জটিল বিষয়টি ছিল, সেটা স্থানীয় সরকার নির্বাচন থেকে তুলে নিয়েছি। আগামীতে হয়তো জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তুলে নেওয়ার প্রস্তাব সরকারের কাছে করব।’

জানা যায়, সর্বশেষ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে বাদ পড়া ৭৩১ জনের মধ্যে ৪২৩ জনই স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে বেশির ভাগই বাদ পড়েন ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরযুক্ত সমর্থন তালিকায় গরমিলের কারণে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পিরোজপুর-২ আসন: বিএনপিতে প্রতিযোগিতা, মাঠে একা সাঈদীর ছেলে

ভোটের সাত দিন আগেই কেন্দ্রে সেনা চায় বিএনপি

প্রতিবেশীদের ছাড়াই পরাশক্তি হওয়ার উচ্চাভিলাষ ভারতের, পারবে কি

সংশোধিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ: স্বতন্ত্র প্রার্থীর ঘাড়ে ১ শতাংশ স্বাক্ষরের বোঝা থাকছেই

যমুনা রেলসেতুর পিলারে ফাটল, কর্তৃপক্ষ বলছে গঠনগত কোনো সমস্যা নয়

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত