Ajker Patrika

টিকাপ্রাপ্তি ও ব্যবস্থাপনাই প্রধান চ্যালেঞ্জ

আজাদুল আদনান, ঢাকা
টিকাপ্রাপ্তি ও  ব্যবস্থাপনাই  প্রধান চ্যালেঞ্জ

মহামারি করোনা ঠেকাতে দৈনিক ৩ লাখ ৬০ হাজার মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রার কথা আগেই জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সম্প্রতি স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন মাসে এক কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। তবে টিকাদান শুরুর পর এখন পর্যন্ত গড়ে প্রতিদিন প্রায় ৮৮ হাজার ডোজ টিকা দিতে পেরেছে সরকার। বর্তমানে বেশ কিছু টিকা হাতে থাকলেও ধীরগতিতে চলছে প্রয়োগ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ১ কোটি নয়, ২ কোটি টিকা দেওয়ার মতো সক্ষমতা রয়েছে সরকারের। তবে প্রধান চ্যালেঞ্জ টিকার সরবরাহ, মানুষের সম্পৃক্ততা এবং টিকাদান ব্যবস্থাপনা। এ জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ও সমন্বিত প্রচেষ্টার বিকল্প নেই।

এক দিনে টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে বিশ্বে এখন পর্যন্ত এগিয়ে প্রতিবেশী ভারত। দেশটিতে এক দিনে ৮০ লাখ ডোজ টিকা দেওয়ার রেকর্ড রয়েছে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র দিয়েছিল ৩০ লাখ ডোজ টিকা।

দীর্ঘ কঠোর বিধিনিষেধেও সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়ায় বর্তমানে দেশে টিকার নিতে মরিয়া হয়ে উঠছে সাধারণ মানুষ। টিকাপ্রাপ্তির আশা বাড়ায় ৭ জুলাই থেকে দ্বিতীয় দফায় নিবন্ধন শুরু হয়। গত মঙ্গলবার পর্যন্ত ২০ দিনে টিকা পেতে নিবন্ধন করেছেন ৫১ লাখ ৩৯ হাজার ১০৩ জন। বর্তমানে গড়ে প্রতিদিন নিবন্ধন করছেন ৩ লাখের মতো মানুষ। তবে টিকা নিতে পারছেন ২ লাখের কিছু বেশি। গত মঙ্গলবার প্রায় আড়াই লাখ মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে আটটি বিভাগীয় শহর, জেলা এবং উপজেলায় চার ধরনের টিকা দেওয়া হচ্ছে।

প্রান্তিক পর্যায়ে টিকা দিতে আগামী ৭ আগস্ট থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দিয়েই টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। যাদের এনআইডি কার্ড নেই বিশেষ ব্যবস্থায় তাঁরা টিকা নিতে পারবেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, কেনা ও বিভিন্ন মাধ্যমে উপহার মিলে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ১২ লাখ ৪৫ হাজার ৬২০ ডোজ টিকা পেয়েছে বাংলাদেশ। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ৫ কোটি মানুষের টিকা প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে চায় সরকার। আগামী বছরের শুরুতে ২১ কোটি টিকার ব্যবস্থার কথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। টিকা পাওয়ার এমন আশ্বাসে মাসে ১ কোটি দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। সে অনুযায়ী দৈনিক গড়ে ৩ লাখ ৩৩ হাজারের বেশি মানুষকে টিকা দিতে হবে।

কিন্তু এত টিকার জোগান ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে রয়েছে নানা জটিলতা ও শঙ্কা। স্থানীয় পর্যায়ে টিকা দিতে কমিটি ঘোষণা হলেও সেটি এখনো খাতা-কলমে রয়ে গেছে। সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা না থাকায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর টিকা নিশ্চিতে জটিলতার শঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিকিৎসাবিজ্ঞানী অধ্যাপক ডা. লিয়াকত আলী মনে করেন, উপজেলা, কমিউনিটি ক্লিনিক, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যন্ত যে নেটওয়ার্ক রয়েছে, টিকার সরবরাহ ঠিক থাকলে এখনকার চেয়ে তিন গুণ টিকা দেওয়া সম্ভব। এ জন্য দরকার সমন্বিত প্রচেষ্টা। তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ জনগণের টিকা গ্রহণের ইচ্ছা। যে হারে টিকা আসছে, এখনো নিবন্ধন সেভাবে হচ্ছে না। সমন্বিতকরণের জন্য শুধু সরকারি প্রচেষ্টা যথেষ্ট নয়, সমাজকর্মী, এনজিও ও অন্যান্য সংগঠনকে কাজে লাগাতে হবে। নিবন্ধন প্রক্রিয়া সহজ, জনসম্পৃক্ততা করা না গেল কোনো প্রচেষ্টাই সফল হবে না।

লিয়াকত আলী বলেন, এক বছর ধরে বলার পর মাসখানেক আগে স্থানীয় পর্যায়ে কমিটি গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। কিন্তু তাদের কর্মপরিধি, পরিকল্পনা ও বাজেট কোনো কিছুই নেই। এই কমিটিতে কারা কারা থাকবেন, সেটাও এখনো স্পষ্ট নয়।

অন্যদিকে সরবরাহ বাড়লে ১ কোটি নয়, ২ কোটি টিকা দেওয়ার মতো সক্ষমতা আছে বলে মনে করেন রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ড. মুশতাক হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমরা যদি পরিবারকল্যাণ, রেড ক্রিসেন্ট স্বেচ্ছাসেবকদের কাজে লাগাতে পারি এবং মানুষকে আগ্রহী করে তুলতে পারি, তাহলেই এটি সম্ভব হবে। কারণ, ফাইজার-মডার্না ছাড়া অন্যান্য টিকা সংরক্ষণে জটিলতা নেই।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাসা থেকে গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গের তরুণী ‘যুব মহিলা লীগের সদস্য’

ভারতীয় গণমাধ্যমে বলিউডের ‘হি-ম্যান’ ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর খবর

ঘুষ হিসেবে নেওয়া টাকা ভাগাভাগিতে ফাঁকি দেন না তিনি

ময়মনসিংহে বাসে দুর্বৃত্তদের আগুন, সিটে ঘুমানো চালক পুড়ে অঙ্গার

দিল্লিতে বিস্ফোরণ: আটক ২, তিন ঘণ্টা ধরে ঘটনাস্থলে ছিল গাড়িটি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ