Ajker Patrika

এমন টর্চার সেল সারা দেশে আছে: আয়নাঘর পরিদর্শন শেষে প্রধান উপদেষ্টা

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৭: ১৯
প্রধান উপদেষ্টার কাছে বন্দী জীবনের বর্ণনা দেন এক ভুক্তভোগী। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
প্রধান উপদেষ্টার কাছে বন্দী জীবনের বর্ণনা দেন এক ভুক্তভোগী। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

অবশেষে আওয়ামী লীগ আমলের গোপন বন্দিশালাগুলো পরিদর্শন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে ভুক্তভোগী, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং সাংবাদিকদের নিয়ে আয়নাঘর নামে পরিচিতি পাওয়া গোপন বন্দিশালা পরিদর্শন করেন প্রধান উপদেষ্টা।

গোপন বন্দিশালা পরিদর্শন শেষে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আইয়ামে জাহেলিয়া (অন্ধকার যুগ) বলে একটা কথা আছে না, গত সরকার আইয়ামে জাহেলিয়া প্রতিষ্ঠা করে গেছে। এটা (গোপন বন্দিশালা) তার একটি নমুনা।’ বিভিন্ন সংস্করণে দেশজুড়ে এমন বন্দিশালা রয়েছে, যেগুলোর সংখ্যা নিরূপণ করা যায়নি বলেও উল্লেখ করেন প্রধান উপদেষ্টা।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, আগারগাঁও, কচুক্ষেত ও উত্তরা এলাকায় আজ গোপন বন্দিশালাগুলো পরিদর্শন করেছেন ড. ইউনূস।

বন্দিশালা ঘুরে দেখে অধ্যাপক ইউনূস সাংবাদিকদের বলেন, ‘বীভৎস দৃশ্য! নৃশংস জিনিস হয়েছে এখানে।’ তিনি বলেন, ‘যতটাই শুনি মনে হয়, অবিশ্বাস্য, এটা কি আমাদেরই জগৎ, আমাদের সমাজ! যাঁরা নিগৃহীত হয়েছেন, তাঁরাও আমাদের সমাজেই আছেন। তাঁদের মুখ থেকে শুনলাম। কী হয়েছে, কোনো ব্যাখ্যা নেই।’

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের বিনা কারণে, বিনা দোষে উঠিয়ে আনা হতো। সন্ত্রাসী বা জঙ্গি বলে এখানে ঢুকিয়ে রাখা হতো।’ তিনি বলেন, ‘এই রকম টর্চার সেল (নির্যাতনকেন্দ্র) সারা দেশে আছে। ধারণা ছিল, এখানে কয়েকটা আছে। এখন শুনছি বিভিন্ন ভার্সনে (সংস্করণে) দেশজুড়ে আছে। সংখ্যাও নিরূপণ করা যায়নি।’

বুধবার আওয়ামী লীগ আমলের গোপন বন্দিশালা পরিদর্শন করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
বুধবার আওয়ামী লীগ আমলের গোপন বন্দিশালা পরিদর্শন করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

মানুষকে সামান্যতম মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘একজন বলছিলেন, খুপরির মধ্যে রাখা হয়েছে। এর থেকে তো মুরগির খাঁচাও বড় হয়। বছরের পর বছর এভাবে রাখা হয়েছে।’

সমাজকে এসব থেকে বের করে না আনা গেলে সমাজ টিকবে না বলে উল্লেখ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি নতুন সমাজ গড়া, অপরাধীদের বিচার করা ও প্রমাণ রক্ষার ওপর জোর দেন।

গুমের শিকার ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণসংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘ন্যায়বিচার যেন পায়, সেটা এখন প্রাধান্য।’ আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা নতুন বাংলাদেশ ও নতুন পরিবেশ গড়তে চাই। সরকার সে লক্ষ্যে বিভিন্ন কমিশন করেছে। যে ঘটনাগুলো ঘটেছে, তার পুনরাবৃত্তি যেন না হয়, সরকার সে লক্ষ্যে কাজ করবে।’

প্রধান উপদেষ্টা গোপন বন্দিশালা পরিদর্শনের সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত