জাহাঙ্গীর আলম

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী মূলত একজন ভাস্কুলার সার্জন। সারা জীবন ভেবেছেন জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য অধিকার নিয়ে। ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্টদের অন্যায় আধিপত্য এবং চিকিৎসাকে বাণিজ্যে পর্যবসিত করার প্রবণতার বিরুদ্ধে তিনি লড়েছেন। বহির্বিশ্ব তাঁকে চেনে একজন বিকল্প ধারার স্বাস্থ্য আন্দোলনের সমর্থক ও সংগঠক হিসেবে।
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সংগ্রাম শুরু হয় মূলত একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে। ১৯৭১ সালের মার্চে ব্রিটেনে বসবাসরত ১ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি চিকিৎসক বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন গঠন করে। সেই সংগঠনের সভাপতি ছিলেন ডা. এএইচ সায়েদুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। একই বছরের মে মাসে এমএ মোবিন ও জাফরুল্লাহ চৌধুরী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তার করার জন্য ভারতে আসেন।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী তখন যুক্তরাজ্যে রয়্যাল কলেজ অব সার্জনসে এফআরসিএস পড়ছেন। চূড়ান্ত পর্ব শেষ না করেই ফিরে আসেন মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করতে।
মুজিবনগর সরকারের সহায়তায় ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের মেলাঘরে গড়ে তোলেন ৪৮০ শয্যাবিশিষ্ট বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল। এই হাসপাতালের কমান্ডিং অফিসার ছিলেন সেনাবাহিনীর ডাক্তার সিতারা বেগম।
যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত চিকিৎসকদের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সংগঠিত করা, হাসপাতালের জন্য ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জাম সংগ্রহ করার ক্ষেত্রেও ডা. জাফরুল্লাহর বড় ভূমিকা ছিল।
স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল স্থানান্তরিত হয় ঢাকার ইস্কাটন সড়কে। ১৯৭২ সালের এপ্রিলে গ্রাম উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু রূপে গড়ে তোলার জন্য ‘চল গ্রামে যাই’ স্লোগান নিয়ে হাসপাতালটি সাভারে স্থানান্তরিত হয়। তখন নামকরণ করা হয় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর নিজ হাতে গড়া এই প্রতিষ্ঠান।
চিকিৎসা সেবার সঙ্গে কোনো ধরনের সম্পর্ক ছিল না এমন নারীদের মাত্র কয়েক দিনের প্রশিক্ষণ দিয়েই ফিল্ড হাসপাতালে সেবার কাজ করেছিলেন ডা. জাফরুল্লাহ। মূলত সেই অভিজ্ঞতা থেকেই তিনি গড়ে তোলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তৈরি স্বাস্থ্যকর্মীদের দিয়েই যে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া সম্ভব- সেটি করে দেখিয়েছেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
তাঁর এই অভিযাত্রা এবং অর্জন চিকিৎসা বিষয়ক বিখ্যাত সাময়িকী ল্যানসেট-এ প্রবন্ধ আকারে প্রকাশিত হয়। ১৯৭৫ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর নিবন্ধটি প্রকাশের পর প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মীদের মাধ্যমে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবার ধারণাটি বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি পায়।
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জন্ম ও শিক্ষাজীবন
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জন্ম ১৯৪১ সালের ২৭ ডিসেম্বর, চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার কোয়েপাড়া গ্রামে। বাবা হুমায়ন মোর্শেদ চৌধুরী ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা। মা হাছিনা বেগম চৌধুরী গৃহিনী। মা–বাবার দশ সন্তানের মধ্যে জ্যেষ্ঠ জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
তাঁর স্কুল ছিল ঢাকার বকশীবাজারের নবকুমার ইনস্টিটিউট। এরপর ঢাকা কলেজে ভর্তি হন। সেখানে ইন্টারমিডিয়েট পাস করে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। মেডিকেলে পড়ার সময়ই তিনি বাম রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন।
মানুষের অধিকার আদায়ের ব্রত নিয়েই সক্রিয়ভাবে রাজনীতি করেছেন তিনি। কোনো অন্যায়ই সহ্য করেননি কখনো। ঢাকা মেডিকেল ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালে হাসপাতালের অনিয়ম–দুর্নীতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিলেন।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী ১৯৬৪ সালে এমবিবিএম পাস করেন। এরপর সাধারণ সার্জারি ও ভাস্কুলার সার্জারিতে প্রশিক্ষণ নিতে চলে যান যুক্তরাজ্য।
যুক্তরাজ্যের রয়্যাল কলেজ অব সার্জনসে এফআরসিএস পড়াকালীনই শুরু হয় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ। চূড়ান্ত পর্ব শেষ না করেই মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করতে চলে আসেন ভারতে।
স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা নিয়ে তাঁর ভাবনা
মানুষের রোগ হবে এটিই স্বাভাবিক- এমনটাই বলতেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। কিন্তু সব মানুষের স্বাস্থ্য পরামর্শ এবং চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করার লড়াই করেছেন আজীবন।
স্বাস্থ্য সেবার জন্য সব ক্ষেত্রে উচ্চতর ডিগ্রিধারী বা মেডিকেল কলেজ থেকে পাস করা চিকিৎসক অপরিহার্য বলে মনে করতেন না তিনি। স্বল্প শিক্ষিত মানুষকে যথাযথ প্রশিক্ষণ দিয়েও প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা পাওয়া সম্ভব বলে বিশ্বাস করতেন। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মাধ্যমে তিনি সেটি প্রমাণ করে দেখিয়েছেনও।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী তাঁর কোনো উদ্যোগকে লাভজনক ব্যবসায় পরিণত করতে চাননি। তাঁর গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত কর্ম কৌশল ও উদ্যোগ সরকারই যেন সারা দেশে প্রয়োগ করে- এটিই তিনি চাইতেন।
চিকিৎসা ক্ষেত্রে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর অবদান
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর হাত ধরেই বাংলাদেশে প্রথম স্বাস্থ্য বিমা চালু হয়। যার সুফল এখন বহু মানুষ পাচ্ছেন।
স্বাধীনতার পর দেশের ওষুধের বাজারে একচেটিয়া আধিপত্য ছিল বিদেশি ও বহুজাতিক কোম্পানির। তখন বাজারে ৪ হাজার ধরনের ওষুধ ছিল। এর প্রায় সবই আমদানি করা হতো। ওষুধের দাম ছিল সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে।
হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের শাসনামলে, ১৯৮২ সালে জাতীয় ওষুধ নীতি সেই পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন এনে দেয়। এই ওষুধ নীতি দেশি কোম্পানিগুলোকে ওষুধ উৎপাদনের সুযোগ তৈরি করে দেয়। দেশে তৈরি হওয়া ওষুধ বিদেশ থেকে আমদানি বন্ধ হয়। এই ওষুধ নীতিই দেশকে ওষুধে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ করে। এই নীতির ফলস্বরূপই বাংলাদেশ এখন ওষুধ রপ্তানিকারক দেশ।
এই নীতি প্রণয়নের অন্যতম কারিগর ছিলেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
এই ওষুধ নীতি নিয়ে বিরোধের জেরেই বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন বা বিএমএ থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছিল বলে জানা যায়।
দেশের মানুষকে স্বল্প মূল্যে ওষুধ দেওয়ার জন্য গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ওষুধ কোম্পানিও প্রতিষ্ঠা করেছেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
বৈশ্বিকভাবে বিকল্প স্বাস্থ্য আন্দোলন গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও জাফরুল্লাহ চৌধুরীর ভূমিকা রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) প্রতি বছর বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলন আয়োজন করে। এর বিকল্প হিসেবে কয়েক বছর পর পর আয়োজন করা হয় পাবলিক হেলথ অ্যাসেম্বলি বা জনগণের স্বাস্থ্য সম্মেলন। পিপলস হেলথ মুভমেন্ট নামের একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন এর আয়োজক। এই সংগঠনের নির্বাহী পরিষদের সদস্য ছিলেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি
কাজের স্বীকৃতি হিসেবে বেশ কয়েকটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্মাননা পেয়েছেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে ১৯৭৭ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হয়।
ফিলিপাইনের র্যামন ম্যাগসাইসাই পুরস্কার পান ১৯৮৫ সালে।
১৯৯২ সালে সুইডেন থেকে তাঁকে দেওয়া হয় রাইট লাইভলিহুড অ্যাওয়ার্ড।
কানাডার ওয়ার্ল্ড অরগানাইজেশন অব ন্যাচারাল মেডিসিন ২০০৯ সালে দেয় ডক্টর অব হিউম্যানিটেরিয়ান উপাধি।
যুক্তরাষ্ট্রের বার্কলি থেকে ২০১০ সালে দেওয়া হয় ইন্টারন্যাশনাল পাবলিক হেলথ হিরোজ অ্যাওয়ার্ড। যুক্তরাজ্যের প্রবাসী বাংলাদেশিদের সংগঠন ভয়েস ফর গ্লোবাল বাংলাদেশিজ ২০২২ সালে জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে ‘এনআরবি লিবারেশন ওয়ার হিরো ১৯৭১’ পুরস্কার দেয়।
তিনি একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে ব্রিটিশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের আজীবন সদস্য।
গবেষণা ও বক্তৃতা
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ৫০টির বেশি দেশে বিভিন্ন সম্মেলন এবং সেমিনারে মূল বক্তা হিসেবে অংশ নিয়েছেন। একাধিক দেশকে জাতীয় ওষুধ নীতি তৈরিতে পরামর্শ দিয়েছেন।
তাঁর উল্লেখযোগ্য প্রকাশনার মধ্যে অন্যতম ‘রিসার্চ: অ্যা মেথড অব কলোনাইজেশন’। এটি ইংরেজিতে প্রকাশিত হয় ১৯৭৭ সালে। এরপর বাংলা ছাড়াও ফরাসি, জার্মান, ইতালি, ডাচ, স্পেনিস ও একাধিক ভারতীয় ভাষায় অনুদিত হয়েছে।
আলোচিত-সমালোচিত এক স্বাধীন চিন্তার মানুষ
ছাত্রজীবনে বাম রাজনীতি করেছেন। কিন্তু পরবর্তীতে আর নির্দিষ্ট কোনো মতের রাজনীতির সঙ্গে থাকেননি। তবে তাঁর রাজনৈতিক মত প্রভাব ফেলেছে সব সময়।
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বন্ধু ও সহযোদ্ধারা বিভিন্ন গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ইংল্যান্ডে থাকার সময় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে প্রকাশ্যে পাকিস্তানি পাসপোর্ট ছিঁড়ে ফেলেন তিনি। এর বিশেষ অনুমোদন নিয়ে ভারতে আসেন।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল আতাউল গণি ওসমানীকে বহনকারী হেলিকপ্টারে হামলা হয়েছিল। সেই হেলিকপ্টারে জাফরুল্লাহ চৌধুরীও ছিলেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহযোগিতায় সাভারে গড়ে তোলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তাঁর অম্ল-মধুর সম্পর্কের কথা বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে বলেছেন। প্রশাসনের বিকেন্দ্রীকরণে বঙ্গবন্ধুকে তিনি পরামর্শ দিয়েছিলেন বলেও জানিয়েছেন।
তবে ১৯৭৫-এ বঙ্গবন্ধুর বাকশালের বিরোধিতা করেছেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। পরবর্তীতে জেনারেল ওসমানী রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনে দাঁড়ালে তাঁর হয়ে কাজ করেছেন।
সখ্য ছিল দুই সামরিক শাসক জেনারেল জিয়াউর রহমান ও জেনারেল এইচএম এরশাদের সঙ্গেও। এক সময় ঘনিষ্ঠ ছিলেন বিএনপি এবং দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে।
তবে সামরিক শাসকদের সময়েই স্বাস্থ্য নীতি, ঔষধ নীতি ও নারী শিক্ষা, এমনকি সহজে দেশের মানুষের জন্য পাসপোর্টের ব্যবস্থা করতে সরকারকে রাজি করানো এবং প্রশাসনের বিকেন্দ্রীকরণে সরকারকে প্রভাবিত করতে জাফরুল্লাহ ভূমিকা অনস্বীকার্য।
রাজনীতিতে সর্বশেষ ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে বিএনপিকে নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হলে তিনি সক্রিয়ভাবে যুক্ত হন। এ নিয়ে অবশ্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। এর জেরে সাভারে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে হামলার ঘটনাও ঘটে। বেশ কিছু মামলাতেও তাঁকে আসামি করা হয়।
দেশে কোভিড মহামারির সময় সরকারের মহামারি মোকাবিলা কৌশল ও পদক্ষেপ এবং গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্ভাবিত টেস্ট কিট ব্যাপক আলোচনায় আসেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। শুরু থেকে সরকারের পক্ষ থেকে এ নিয়ে নেতিবাচক মনোভাবই প্রকাশ করা হয়েছে।
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জীবনের শেষ বছরগুলোতে রোগ–ব্যধির সঙ্গে লড়েছেন। নিজেই দীর্ঘদিন জটিল কিডনি রোগে ভুগেছেন। সাশ্রয়ী ডায়ালাইসিসের জন্য গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ১০০ শয্যার কিডনি ডায়ালাইসিস ইউনিট তৈরি করেছেন।
মানুষ যাতে প্রতিস্থাপনের জন্য সহজে কিডনি পেতে পারে সেজন্য দেশের আইন পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে এসেছে ডা. জাফরুল্লাহ। একটি ক্যানসার হাসপাতাল করারও ইচ্ছা ছিল।
চিকিৎসার জন্য কখনো বিদেশে যেতে রাজি হননি। এমনকি বিনা খরচে কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রস্তাব পেয়েও শুধু বিদেশে যেতে হবে বলে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি তাঁর জীবদ্দশায় সাধারণ মানুষের জন্য দেশেই কিডনি প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা করে যেতে চেয়েছিলেন।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী চিকিৎসা নিয়েছেন সব সময় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের হাসপাতালেই। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ট্রাস্টি হিসেবে।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী মূলত একজন ভাস্কুলার সার্জন। সারা জীবন ভেবেছেন জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য অধিকার নিয়ে। ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্টদের অন্যায় আধিপত্য এবং চিকিৎসাকে বাণিজ্যে পর্যবসিত করার প্রবণতার বিরুদ্ধে তিনি লড়েছেন। বহির্বিশ্ব তাঁকে চেনে একজন বিকল্প ধারার স্বাস্থ্য আন্দোলনের সমর্থক ও সংগঠক হিসেবে।
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সংগ্রাম শুরু হয় মূলত একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে। ১৯৭১ সালের মার্চে ব্রিটেনে বসবাসরত ১ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি চিকিৎসক বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন গঠন করে। সেই সংগঠনের সভাপতি ছিলেন ডা. এএইচ সায়েদুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। একই বছরের মে মাসে এমএ মোবিন ও জাফরুল্লাহ চৌধুরী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তার করার জন্য ভারতে আসেন।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী তখন যুক্তরাজ্যে রয়্যাল কলেজ অব সার্জনসে এফআরসিএস পড়ছেন। চূড়ান্ত পর্ব শেষ না করেই ফিরে আসেন মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করতে।
মুজিবনগর সরকারের সহায়তায় ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের মেলাঘরে গড়ে তোলেন ৪৮০ শয্যাবিশিষ্ট বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল। এই হাসপাতালের কমান্ডিং অফিসার ছিলেন সেনাবাহিনীর ডাক্তার সিতারা বেগম।
যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত চিকিৎসকদের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সংগঠিত করা, হাসপাতালের জন্য ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জাম সংগ্রহ করার ক্ষেত্রেও ডা. জাফরুল্লাহর বড় ভূমিকা ছিল।
স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল স্থানান্তরিত হয় ঢাকার ইস্কাটন সড়কে। ১৯৭২ সালের এপ্রিলে গ্রাম উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু রূপে গড়ে তোলার জন্য ‘চল গ্রামে যাই’ স্লোগান নিয়ে হাসপাতালটি সাভারে স্থানান্তরিত হয়। তখন নামকরণ করা হয় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর নিজ হাতে গড়া এই প্রতিষ্ঠান।
চিকিৎসা সেবার সঙ্গে কোনো ধরনের সম্পর্ক ছিল না এমন নারীদের মাত্র কয়েক দিনের প্রশিক্ষণ দিয়েই ফিল্ড হাসপাতালে সেবার কাজ করেছিলেন ডা. জাফরুল্লাহ। মূলত সেই অভিজ্ঞতা থেকেই তিনি গড়ে তোলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তৈরি স্বাস্থ্যকর্মীদের দিয়েই যে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া সম্ভব- সেটি করে দেখিয়েছেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
তাঁর এই অভিযাত্রা এবং অর্জন চিকিৎসা বিষয়ক বিখ্যাত সাময়িকী ল্যানসেট-এ প্রবন্ধ আকারে প্রকাশিত হয়। ১৯৭৫ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর নিবন্ধটি প্রকাশের পর প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মীদের মাধ্যমে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবার ধারণাটি বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি পায়।
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জন্ম ও শিক্ষাজীবন
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জন্ম ১৯৪১ সালের ২৭ ডিসেম্বর, চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার কোয়েপাড়া গ্রামে। বাবা হুমায়ন মোর্শেদ চৌধুরী ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা। মা হাছিনা বেগম চৌধুরী গৃহিনী। মা–বাবার দশ সন্তানের মধ্যে জ্যেষ্ঠ জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
তাঁর স্কুল ছিল ঢাকার বকশীবাজারের নবকুমার ইনস্টিটিউট। এরপর ঢাকা কলেজে ভর্তি হন। সেখানে ইন্টারমিডিয়েট পাস করে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। মেডিকেলে পড়ার সময়ই তিনি বাম রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন।
মানুষের অধিকার আদায়ের ব্রত নিয়েই সক্রিয়ভাবে রাজনীতি করেছেন তিনি। কোনো অন্যায়ই সহ্য করেননি কখনো। ঢাকা মেডিকেল ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালে হাসপাতালের অনিয়ম–দুর্নীতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিলেন।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী ১৯৬৪ সালে এমবিবিএম পাস করেন। এরপর সাধারণ সার্জারি ও ভাস্কুলার সার্জারিতে প্রশিক্ষণ নিতে চলে যান যুক্তরাজ্য।
যুক্তরাজ্যের রয়্যাল কলেজ অব সার্জনসে এফআরসিএস পড়াকালীনই শুরু হয় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ। চূড়ান্ত পর্ব শেষ না করেই মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করতে চলে আসেন ভারতে।
স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা নিয়ে তাঁর ভাবনা
মানুষের রোগ হবে এটিই স্বাভাবিক- এমনটাই বলতেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। কিন্তু সব মানুষের স্বাস্থ্য পরামর্শ এবং চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করার লড়াই করেছেন আজীবন।
স্বাস্থ্য সেবার জন্য সব ক্ষেত্রে উচ্চতর ডিগ্রিধারী বা মেডিকেল কলেজ থেকে পাস করা চিকিৎসক অপরিহার্য বলে মনে করতেন না তিনি। স্বল্প শিক্ষিত মানুষকে যথাযথ প্রশিক্ষণ দিয়েও প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা পাওয়া সম্ভব বলে বিশ্বাস করতেন। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মাধ্যমে তিনি সেটি প্রমাণ করে দেখিয়েছেনও।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী তাঁর কোনো উদ্যোগকে লাভজনক ব্যবসায় পরিণত করতে চাননি। তাঁর গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত কর্ম কৌশল ও উদ্যোগ সরকারই যেন সারা দেশে প্রয়োগ করে- এটিই তিনি চাইতেন।
চিকিৎসা ক্ষেত্রে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর অবদান
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর হাত ধরেই বাংলাদেশে প্রথম স্বাস্থ্য বিমা চালু হয়। যার সুফল এখন বহু মানুষ পাচ্ছেন।
স্বাধীনতার পর দেশের ওষুধের বাজারে একচেটিয়া আধিপত্য ছিল বিদেশি ও বহুজাতিক কোম্পানির। তখন বাজারে ৪ হাজার ধরনের ওষুধ ছিল। এর প্রায় সবই আমদানি করা হতো। ওষুধের দাম ছিল সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে।
হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের শাসনামলে, ১৯৮২ সালে জাতীয় ওষুধ নীতি সেই পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন এনে দেয়। এই ওষুধ নীতি দেশি কোম্পানিগুলোকে ওষুধ উৎপাদনের সুযোগ তৈরি করে দেয়। দেশে তৈরি হওয়া ওষুধ বিদেশ থেকে আমদানি বন্ধ হয়। এই ওষুধ নীতিই দেশকে ওষুধে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ করে। এই নীতির ফলস্বরূপই বাংলাদেশ এখন ওষুধ রপ্তানিকারক দেশ।
এই নীতি প্রণয়নের অন্যতম কারিগর ছিলেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
এই ওষুধ নীতি নিয়ে বিরোধের জেরেই বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন বা বিএমএ থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছিল বলে জানা যায়।
দেশের মানুষকে স্বল্প মূল্যে ওষুধ দেওয়ার জন্য গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ওষুধ কোম্পানিও প্রতিষ্ঠা করেছেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
বৈশ্বিকভাবে বিকল্প স্বাস্থ্য আন্দোলন গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও জাফরুল্লাহ চৌধুরীর ভূমিকা রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) প্রতি বছর বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলন আয়োজন করে। এর বিকল্প হিসেবে কয়েক বছর পর পর আয়োজন করা হয় পাবলিক হেলথ অ্যাসেম্বলি বা জনগণের স্বাস্থ্য সম্মেলন। পিপলস হেলথ মুভমেন্ট নামের একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন এর আয়োজক। এই সংগঠনের নির্বাহী পরিষদের সদস্য ছিলেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি
কাজের স্বীকৃতি হিসেবে বেশ কয়েকটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্মাননা পেয়েছেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে ১৯৭৭ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হয়।
ফিলিপাইনের র্যামন ম্যাগসাইসাই পুরস্কার পান ১৯৮৫ সালে।
১৯৯২ সালে সুইডেন থেকে তাঁকে দেওয়া হয় রাইট লাইভলিহুড অ্যাওয়ার্ড।
কানাডার ওয়ার্ল্ড অরগানাইজেশন অব ন্যাচারাল মেডিসিন ২০০৯ সালে দেয় ডক্টর অব হিউম্যানিটেরিয়ান উপাধি।
যুক্তরাষ্ট্রের বার্কলি থেকে ২০১০ সালে দেওয়া হয় ইন্টারন্যাশনাল পাবলিক হেলথ হিরোজ অ্যাওয়ার্ড। যুক্তরাজ্যের প্রবাসী বাংলাদেশিদের সংগঠন ভয়েস ফর গ্লোবাল বাংলাদেশিজ ২০২২ সালে জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে ‘এনআরবি লিবারেশন ওয়ার হিরো ১৯৭১’ পুরস্কার দেয়।
তিনি একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে ব্রিটিশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের আজীবন সদস্য।
গবেষণা ও বক্তৃতা
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ৫০টির বেশি দেশে বিভিন্ন সম্মেলন এবং সেমিনারে মূল বক্তা হিসেবে অংশ নিয়েছেন। একাধিক দেশকে জাতীয় ওষুধ নীতি তৈরিতে পরামর্শ দিয়েছেন।
তাঁর উল্লেখযোগ্য প্রকাশনার মধ্যে অন্যতম ‘রিসার্চ: অ্যা মেথড অব কলোনাইজেশন’। এটি ইংরেজিতে প্রকাশিত হয় ১৯৭৭ সালে। এরপর বাংলা ছাড়াও ফরাসি, জার্মান, ইতালি, ডাচ, স্পেনিস ও একাধিক ভারতীয় ভাষায় অনুদিত হয়েছে।
আলোচিত-সমালোচিত এক স্বাধীন চিন্তার মানুষ
ছাত্রজীবনে বাম রাজনীতি করেছেন। কিন্তু পরবর্তীতে আর নির্দিষ্ট কোনো মতের রাজনীতির সঙ্গে থাকেননি। তবে তাঁর রাজনৈতিক মত প্রভাব ফেলেছে সব সময়।
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বন্ধু ও সহযোদ্ধারা বিভিন্ন গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ইংল্যান্ডে থাকার সময় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে প্রকাশ্যে পাকিস্তানি পাসপোর্ট ছিঁড়ে ফেলেন তিনি। এর বিশেষ অনুমোদন নিয়ে ভারতে আসেন।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল আতাউল গণি ওসমানীকে বহনকারী হেলিকপ্টারে হামলা হয়েছিল। সেই হেলিকপ্টারে জাফরুল্লাহ চৌধুরীও ছিলেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহযোগিতায় সাভারে গড়ে তোলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তাঁর অম্ল-মধুর সম্পর্কের কথা বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে বলেছেন। প্রশাসনের বিকেন্দ্রীকরণে বঙ্গবন্ধুকে তিনি পরামর্শ দিয়েছিলেন বলেও জানিয়েছেন।
তবে ১৯৭৫-এ বঙ্গবন্ধুর বাকশালের বিরোধিতা করেছেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। পরবর্তীতে জেনারেল ওসমানী রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনে দাঁড়ালে তাঁর হয়ে কাজ করেছেন।
সখ্য ছিল দুই সামরিক শাসক জেনারেল জিয়াউর রহমান ও জেনারেল এইচএম এরশাদের সঙ্গেও। এক সময় ঘনিষ্ঠ ছিলেন বিএনপি এবং দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে।
তবে সামরিক শাসকদের সময়েই স্বাস্থ্য নীতি, ঔষধ নীতি ও নারী শিক্ষা, এমনকি সহজে দেশের মানুষের জন্য পাসপোর্টের ব্যবস্থা করতে সরকারকে রাজি করানো এবং প্রশাসনের বিকেন্দ্রীকরণে সরকারকে প্রভাবিত করতে জাফরুল্লাহ ভূমিকা অনস্বীকার্য।
রাজনীতিতে সর্বশেষ ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে বিএনপিকে নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হলে তিনি সক্রিয়ভাবে যুক্ত হন। এ নিয়ে অবশ্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। এর জেরে সাভারে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে হামলার ঘটনাও ঘটে। বেশ কিছু মামলাতেও তাঁকে আসামি করা হয়।
দেশে কোভিড মহামারির সময় সরকারের মহামারি মোকাবিলা কৌশল ও পদক্ষেপ এবং গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্ভাবিত টেস্ট কিট ব্যাপক আলোচনায় আসেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। শুরু থেকে সরকারের পক্ষ থেকে এ নিয়ে নেতিবাচক মনোভাবই প্রকাশ করা হয়েছে।
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জীবনের শেষ বছরগুলোতে রোগ–ব্যধির সঙ্গে লড়েছেন। নিজেই দীর্ঘদিন জটিল কিডনি রোগে ভুগেছেন। সাশ্রয়ী ডায়ালাইসিসের জন্য গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ১০০ শয্যার কিডনি ডায়ালাইসিস ইউনিট তৈরি করেছেন।
মানুষ যাতে প্রতিস্থাপনের জন্য সহজে কিডনি পেতে পারে সেজন্য দেশের আইন পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে এসেছে ডা. জাফরুল্লাহ। একটি ক্যানসার হাসপাতাল করারও ইচ্ছা ছিল।
চিকিৎসার জন্য কখনো বিদেশে যেতে রাজি হননি। এমনকি বিনা খরচে কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রস্তাব পেয়েও শুধু বিদেশে যেতে হবে বলে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি তাঁর জীবদ্দশায় সাধারণ মানুষের জন্য দেশেই কিডনি প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা করে যেতে চেয়েছিলেন।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী চিকিৎসা নিয়েছেন সব সময় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের হাসপাতালেই। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ট্রাস্টি হিসেবে।
জাহাঙ্গীর আলম

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী মূলত একজন ভাস্কুলার সার্জন। সারা জীবন ভেবেছেন জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য অধিকার নিয়ে। ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্টদের অন্যায় আধিপত্য এবং চিকিৎসাকে বাণিজ্যে পর্যবসিত করার প্রবণতার বিরুদ্ধে তিনি লড়েছেন। বহির্বিশ্ব তাঁকে চেনে একজন বিকল্প ধারার স্বাস্থ্য আন্দোলনের সমর্থক ও সংগঠক হিসেবে।
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সংগ্রাম শুরু হয় মূলত একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে। ১৯৭১ সালের মার্চে ব্রিটেনে বসবাসরত ১ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি চিকিৎসক বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন গঠন করে। সেই সংগঠনের সভাপতি ছিলেন ডা. এএইচ সায়েদুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। একই বছরের মে মাসে এমএ মোবিন ও জাফরুল্লাহ চৌধুরী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তার করার জন্য ভারতে আসেন।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী তখন যুক্তরাজ্যে রয়্যাল কলেজ অব সার্জনসে এফআরসিএস পড়ছেন। চূড়ান্ত পর্ব শেষ না করেই ফিরে আসেন মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করতে।
মুজিবনগর সরকারের সহায়তায় ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের মেলাঘরে গড়ে তোলেন ৪৮০ শয্যাবিশিষ্ট বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল। এই হাসপাতালের কমান্ডিং অফিসার ছিলেন সেনাবাহিনীর ডাক্তার সিতারা বেগম।
যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত চিকিৎসকদের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সংগঠিত করা, হাসপাতালের জন্য ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জাম সংগ্রহ করার ক্ষেত্রেও ডা. জাফরুল্লাহর বড় ভূমিকা ছিল।
স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল স্থানান্তরিত হয় ঢাকার ইস্কাটন সড়কে। ১৯৭২ সালের এপ্রিলে গ্রাম উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু রূপে গড়ে তোলার জন্য ‘চল গ্রামে যাই’ স্লোগান নিয়ে হাসপাতালটি সাভারে স্থানান্তরিত হয়। তখন নামকরণ করা হয় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর নিজ হাতে গড়া এই প্রতিষ্ঠান।
চিকিৎসা সেবার সঙ্গে কোনো ধরনের সম্পর্ক ছিল না এমন নারীদের মাত্র কয়েক দিনের প্রশিক্ষণ দিয়েই ফিল্ড হাসপাতালে সেবার কাজ করেছিলেন ডা. জাফরুল্লাহ। মূলত সেই অভিজ্ঞতা থেকেই তিনি গড়ে তোলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তৈরি স্বাস্থ্যকর্মীদের দিয়েই যে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া সম্ভব- সেটি করে দেখিয়েছেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
তাঁর এই অভিযাত্রা এবং অর্জন চিকিৎসা বিষয়ক বিখ্যাত সাময়িকী ল্যানসেট-এ প্রবন্ধ আকারে প্রকাশিত হয়। ১৯৭৫ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর নিবন্ধটি প্রকাশের পর প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মীদের মাধ্যমে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবার ধারণাটি বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি পায়।
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জন্ম ও শিক্ষাজীবন
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জন্ম ১৯৪১ সালের ২৭ ডিসেম্বর, চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার কোয়েপাড়া গ্রামে। বাবা হুমায়ন মোর্শেদ চৌধুরী ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা। মা হাছিনা বেগম চৌধুরী গৃহিনী। মা–বাবার দশ সন্তানের মধ্যে জ্যেষ্ঠ জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
তাঁর স্কুল ছিল ঢাকার বকশীবাজারের নবকুমার ইনস্টিটিউট। এরপর ঢাকা কলেজে ভর্তি হন। সেখানে ইন্টারমিডিয়েট পাস করে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। মেডিকেলে পড়ার সময়ই তিনি বাম রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন।
মানুষের অধিকার আদায়ের ব্রত নিয়েই সক্রিয়ভাবে রাজনীতি করেছেন তিনি। কোনো অন্যায়ই সহ্য করেননি কখনো। ঢাকা মেডিকেল ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালে হাসপাতালের অনিয়ম–দুর্নীতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিলেন।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী ১৯৬৪ সালে এমবিবিএম পাস করেন। এরপর সাধারণ সার্জারি ও ভাস্কুলার সার্জারিতে প্রশিক্ষণ নিতে চলে যান যুক্তরাজ্য।
যুক্তরাজ্যের রয়্যাল কলেজ অব সার্জনসে এফআরসিএস পড়াকালীনই শুরু হয় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ। চূড়ান্ত পর্ব শেষ না করেই মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করতে চলে আসেন ভারতে।
স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা নিয়ে তাঁর ভাবনা
মানুষের রোগ হবে এটিই স্বাভাবিক- এমনটাই বলতেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। কিন্তু সব মানুষের স্বাস্থ্য পরামর্শ এবং চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করার লড়াই করেছেন আজীবন।
স্বাস্থ্য সেবার জন্য সব ক্ষেত্রে উচ্চতর ডিগ্রিধারী বা মেডিকেল কলেজ থেকে পাস করা চিকিৎসক অপরিহার্য বলে মনে করতেন না তিনি। স্বল্প শিক্ষিত মানুষকে যথাযথ প্রশিক্ষণ দিয়েও প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা পাওয়া সম্ভব বলে বিশ্বাস করতেন। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মাধ্যমে তিনি সেটি প্রমাণ করে দেখিয়েছেনও।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী তাঁর কোনো উদ্যোগকে লাভজনক ব্যবসায় পরিণত করতে চাননি। তাঁর গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত কর্ম কৌশল ও উদ্যোগ সরকারই যেন সারা দেশে প্রয়োগ করে- এটিই তিনি চাইতেন।
চিকিৎসা ক্ষেত্রে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর অবদান
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর হাত ধরেই বাংলাদেশে প্রথম স্বাস্থ্য বিমা চালু হয়। যার সুফল এখন বহু মানুষ পাচ্ছেন।
স্বাধীনতার পর দেশের ওষুধের বাজারে একচেটিয়া আধিপত্য ছিল বিদেশি ও বহুজাতিক কোম্পানির। তখন বাজারে ৪ হাজার ধরনের ওষুধ ছিল। এর প্রায় সবই আমদানি করা হতো। ওষুধের দাম ছিল সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে।
হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের শাসনামলে, ১৯৮২ সালে জাতীয় ওষুধ নীতি সেই পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন এনে দেয়। এই ওষুধ নীতি দেশি কোম্পানিগুলোকে ওষুধ উৎপাদনের সুযোগ তৈরি করে দেয়। দেশে তৈরি হওয়া ওষুধ বিদেশ থেকে আমদানি বন্ধ হয়। এই ওষুধ নীতিই দেশকে ওষুধে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ করে। এই নীতির ফলস্বরূপই বাংলাদেশ এখন ওষুধ রপ্তানিকারক দেশ।
এই নীতি প্রণয়নের অন্যতম কারিগর ছিলেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
এই ওষুধ নীতি নিয়ে বিরোধের জেরেই বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন বা বিএমএ থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছিল বলে জানা যায়।
দেশের মানুষকে স্বল্প মূল্যে ওষুধ দেওয়ার জন্য গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ওষুধ কোম্পানিও প্রতিষ্ঠা করেছেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
বৈশ্বিকভাবে বিকল্প স্বাস্থ্য আন্দোলন গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও জাফরুল্লাহ চৌধুরীর ভূমিকা রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) প্রতি বছর বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলন আয়োজন করে। এর বিকল্প হিসেবে কয়েক বছর পর পর আয়োজন করা হয় পাবলিক হেলথ অ্যাসেম্বলি বা জনগণের স্বাস্থ্য সম্মেলন। পিপলস হেলথ মুভমেন্ট নামের একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন এর আয়োজক। এই সংগঠনের নির্বাহী পরিষদের সদস্য ছিলেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি
কাজের স্বীকৃতি হিসেবে বেশ কয়েকটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্মাননা পেয়েছেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে ১৯৭৭ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হয়।
ফিলিপাইনের র্যামন ম্যাগসাইসাই পুরস্কার পান ১৯৮৫ সালে।
১৯৯২ সালে সুইডেন থেকে তাঁকে দেওয়া হয় রাইট লাইভলিহুড অ্যাওয়ার্ড।
কানাডার ওয়ার্ল্ড অরগানাইজেশন অব ন্যাচারাল মেডিসিন ২০০৯ সালে দেয় ডক্টর অব হিউম্যানিটেরিয়ান উপাধি।
যুক্তরাষ্ট্রের বার্কলি থেকে ২০১০ সালে দেওয়া হয় ইন্টারন্যাশনাল পাবলিক হেলথ হিরোজ অ্যাওয়ার্ড। যুক্তরাজ্যের প্রবাসী বাংলাদেশিদের সংগঠন ভয়েস ফর গ্লোবাল বাংলাদেশিজ ২০২২ সালে জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে ‘এনআরবি লিবারেশন ওয়ার হিরো ১৯৭১’ পুরস্কার দেয়।
তিনি একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে ব্রিটিশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের আজীবন সদস্য।
গবেষণা ও বক্তৃতা
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ৫০টির বেশি দেশে বিভিন্ন সম্মেলন এবং সেমিনারে মূল বক্তা হিসেবে অংশ নিয়েছেন। একাধিক দেশকে জাতীয় ওষুধ নীতি তৈরিতে পরামর্শ দিয়েছেন।
তাঁর উল্লেখযোগ্য প্রকাশনার মধ্যে অন্যতম ‘রিসার্চ: অ্যা মেথড অব কলোনাইজেশন’। এটি ইংরেজিতে প্রকাশিত হয় ১৯৭৭ সালে। এরপর বাংলা ছাড়াও ফরাসি, জার্মান, ইতালি, ডাচ, স্পেনিস ও একাধিক ভারতীয় ভাষায় অনুদিত হয়েছে।
আলোচিত-সমালোচিত এক স্বাধীন চিন্তার মানুষ
ছাত্রজীবনে বাম রাজনীতি করেছেন। কিন্তু পরবর্তীতে আর নির্দিষ্ট কোনো মতের রাজনীতির সঙ্গে থাকেননি। তবে তাঁর রাজনৈতিক মত প্রভাব ফেলেছে সব সময়।
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বন্ধু ও সহযোদ্ধারা বিভিন্ন গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ইংল্যান্ডে থাকার সময় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে প্রকাশ্যে পাকিস্তানি পাসপোর্ট ছিঁড়ে ফেলেন তিনি। এর বিশেষ অনুমোদন নিয়ে ভারতে আসেন।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল আতাউল গণি ওসমানীকে বহনকারী হেলিকপ্টারে হামলা হয়েছিল। সেই হেলিকপ্টারে জাফরুল্লাহ চৌধুরীও ছিলেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহযোগিতায় সাভারে গড়ে তোলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তাঁর অম্ল-মধুর সম্পর্কের কথা বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে বলেছেন। প্রশাসনের বিকেন্দ্রীকরণে বঙ্গবন্ধুকে তিনি পরামর্শ দিয়েছিলেন বলেও জানিয়েছেন।
তবে ১৯৭৫-এ বঙ্গবন্ধুর বাকশালের বিরোধিতা করেছেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। পরবর্তীতে জেনারেল ওসমানী রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনে দাঁড়ালে তাঁর হয়ে কাজ করেছেন।
সখ্য ছিল দুই সামরিক শাসক জেনারেল জিয়াউর রহমান ও জেনারেল এইচএম এরশাদের সঙ্গেও। এক সময় ঘনিষ্ঠ ছিলেন বিএনপি এবং দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে।
তবে সামরিক শাসকদের সময়েই স্বাস্থ্য নীতি, ঔষধ নীতি ও নারী শিক্ষা, এমনকি সহজে দেশের মানুষের জন্য পাসপোর্টের ব্যবস্থা করতে সরকারকে রাজি করানো এবং প্রশাসনের বিকেন্দ্রীকরণে সরকারকে প্রভাবিত করতে জাফরুল্লাহ ভূমিকা অনস্বীকার্য।
রাজনীতিতে সর্বশেষ ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে বিএনপিকে নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হলে তিনি সক্রিয়ভাবে যুক্ত হন। এ নিয়ে অবশ্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। এর জেরে সাভারে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে হামলার ঘটনাও ঘটে। বেশ কিছু মামলাতেও তাঁকে আসামি করা হয়।
দেশে কোভিড মহামারির সময় সরকারের মহামারি মোকাবিলা কৌশল ও পদক্ষেপ এবং গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্ভাবিত টেস্ট কিট ব্যাপক আলোচনায় আসেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। শুরু থেকে সরকারের পক্ষ থেকে এ নিয়ে নেতিবাচক মনোভাবই প্রকাশ করা হয়েছে।
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জীবনের শেষ বছরগুলোতে রোগ–ব্যধির সঙ্গে লড়েছেন। নিজেই দীর্ঘদিন জটিল কিডনি রোগে ভুগেছেন। সাশ্রয়ী ডায়ালাইসিসের জন্য গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ১০০ শয্যার কিডনি ডায়ালাইসিস ইউনিট তৈরি করেছেন।
মানুষ যাতে প্রতিস্থাপনের জন্য সহজে কিডনি পেতে পারে সেজন্য দেশের আইন পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে এসেছে ডা. জাফরুল্লাহ। একটি ক্যানসার হাসপাতাল করারও ইচ্ছা ছিল।
চিকিৎসার জন্য কখনো বিদেশে যেতে রাজি হননি। এমনকি বিনা খরচে কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রস্তাব পেয়েও শুধু বিদেশে যেতে হবে বলে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি তাঁর জীবদ্দশায় সাধারণ মানুষের জন্য দেশেই কিডনি প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা করে যেতে চেয়েছিলেন।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী চিকিৎসা নিয়েছেন সব সময় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের হাসপাতালেই। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ট্রাস্টি হিসেবে।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী মূলত একজন ভাস্কুলার সার্জন। সারা জীবন ভেবেছেন জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য অধিকার নিয়ে। ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্টদের অন্যায় আধিপত্য এবং চিকিৎসাকে বাণিজ্যে পর্যবসিত করার প্রবণতার বিরুদ্ধে তিনি লড়েছেন। বহির্বিশ্ব তাঁকে চেনে একজন বিকল্প ধারার স্বাস্থ্য আন্দোলনের সমর্থক ও সংগঠক হিসেবে।
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সংগ্রাম শুরু হয় মূলত একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে। ১৯৭১ সালের মার্চে ব্রিটেনে বসবাসরত ১ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি চিকিৎসক বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন গঠন করে। সেই সংগঠনের সভাপতি ছিলেন ডা. এএইচ সায়েদুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। একই বছরের মে মাসে এমএ মোবিন ও জাফরুল্লাহ চৌধুরী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তার করার জন্য ভারতে আসেন।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী তখন যুক্তরাজ্যে রয়্যাল কলেজ অব সার্জনসে এফআরসিএস পড়ছেন। চূড়ান্ত পর্ব শেষ না করেই ফিরে আসেন মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করতে।
মুজিবনগর সরকারের সহায়তায় ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের মেলাঘরে গড়ে তোলেন ৪৮০ শয্যাবিশিষ্ট বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল। এই হাসপাতালের কমান্ডিং অফিসার ছিলেন সেনাবাহিনীর ডাক্তার সিতারা বেগম।
যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত চিকিৎসকদের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সংগঠিত করা, হাসপাতালের জন্য ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জাম সংগ্রহ করার ক্ষেত্রেও ডা. জাফরুল্লাহর বড় ভূমিকা ছিল।
স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল স্থানান্তরিত হয় ঢাকার ইস্কাটন সড়কে। ১৯৭২ সালের এপ্রিলে গ্রাম উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু রূপে গড়ে তোলার জন্য ‘চল গ্রামে যাই’ স্লোগান নিয়ে হাসপাতালটি সাভারে স্থানান্তরিত হয়। তখন নামকরণ করা হয় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর নিজ হাতে গড়া এই প্রতিষ্ঠান।
চিকিৎসা সেবার সঙ্গে কোনো ধরনের সম্পর্ক ছিল না এমন নারীদের মাত্র কয়েক দিনের প্রশিক্ষণ দিয়েই ফিল্ড হাসপাতালে সেবার কাজ করেছিলেন ডা. জাফরুল্লাহ। মূলত সেই অভিজ্ঞতা থেকেই তিনি গড়ে তোলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তৈরি স্বাস্থ্যকর্মীদের দিয়েই যে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া সম্ভব- সেটি করে দেখিয়েছেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
তাঁর এই অভিযাত্রা এবং অর্জন চিকিৎসা বিষয়ক বিখ্যাত সাময়িকী ল্যানসেট-এ প্রবন্ধ আকারে প্রকাশিত হয়। ১৯৭৫ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর নিবন্ধটি প্রকাশের পর প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মীদের মাধ্যমে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবার ধারণাটি বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি পায়।
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জন্ম ও শিক্ষাজীবন
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জন্ম ১৯৪১ সালের ২৭ ডিসেম্বর, চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার কোয়েপাড়া গ্রামে। বাবা হুমায়ন মোর্শেদ চৌধুরী ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা। মা হাছিনা বেগম চৌধুরী গৃহিনী। মা–বাবার দশ সন্তানের মধ্যে জ্যেষ্ঠ জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
তাঁর স্কুল ছিল ঢাকার বকশীবাজারের নবকুমার ইনস্টিটিউট। এরপর ঢাকা কলেজে ভর্তি হন। সেখানে ইন্টারমিডিয়েট পাস করে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। মেডিকেলে পড়ার সময়ই তিনি বাম রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন।
মানুষের অধিকার আদায়ের ব্রত নিয়েই সক্রিয়ভাবে রাজনীতি করেছেন তিনি। কোনো অন্যায়ই সহ্য করেননি কখনো। ঢাকা মেডিকেল ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালে হাসপাতালের অনিয়ম–দুর্নীতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিলেন।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী ১৯৬৪ সালে এমবিবিএম পাস করেন। এরপর সাধারণ সার্জারি ও ভাস্কুলার সার্জারিতে প্রশিক্ষণ নিতে চলে যান যুক্তরাজ্য।
যুক্তরাজ্যের রয়্যাল কলেজ অব সার্জনসে এফআরসিএস পড়াকালীনই শুরু হয় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ। চূড়ান্ত পর্ব শেষ না করেই মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করতে চলে আসেন ভারতে।
স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা নিয়ে তাঁর ভাবনা
মানুষের রোগ হবে এটিই স্বাভাবিক- এমনটাই বলতেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। কিন্তু সব মানুষের স্বাস্থ্য পরামর্শ এবং চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করার লড়াই করেছেন আজীবন।
স্বাস্থ্য সেবার জন্য সব ক্ষেত্রে উচ্চতর ডিগ্রিধারী বা মেডিকেল কলেজ থেকে পাস করা চিকিৎসক অপরিহার্য বলে মনে করতেন না তিনি। স্বল্প শিক্ষিত মানুষকে যথাযথ প্রশিক্ষণ দিয়েও প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা পাওয়া সম্ভব বলে বিশ্বাস করতেন। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মাধ্যমে তিনি সেটি প্রমাণ করে দেখিয়েছেনও।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী তাঁর কোনো উদ্যোগকে লাভজনক ব্যবসায় পরিণত করতে চাননি। তাঁর গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত কর্ম কৌশল ও উদ্যোগ সরকারই যেন সারা দেশে প্রয়োগ করে- এটিই তিনি চাইতেন।
চিকিৎসা ক্ষেত্রে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর অবদান
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর হাত ধরেই বাংলাদেশে প্রথম স্বাস্থ্য বিমা চালু হয়। যার সুফল এখন বহু মানুষ পাচ্ছেন।
স্বাধীনতার পর দেশের ওষুধের বাজারে একচেটিয়া আধিপত্য ছিল বিদেশি ও বহুজাতিক কোম্পানির। তখন বাজারে ৪ হাজার ধরনের ওষুধ ছিল। এর প্রায় সবই আমদানি করা হতো। ওষুধের দাম ছিল সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে।
হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের শাসনামলে, ১৯৮২ সালে জাতীয় ওষুধ নীতি সেই পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন এনে দেয়। এই ওষুধ নীতি দেশি কোম্পানিগুলোকে ওষুধ উৎপাদনের সুযোগ তৈরি করে দেয়। দেশে তৈরি হওয়া ওষুধ বিদেশ থেকে আমদানি বন্ধ হয়। এই ওষুধ নীতিই দেশকে ওষুধে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ করে। এই নীতির ফলস্বরূপই বাংলাদেশ এখন ওষুধ রপ্তানিকারক দেশ।
এই নীতি প্রণয়নের অন্যতম কারিগর ছিলেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
এই ওষুধ নীতি নিয়ে বিরোধের জেরেই বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন বা বিএমএ থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছিল বলে জানা যায়।
দেশের মানুষকে স্বল্প মূল্যে ওষুধ দেওয়ার জন্য গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ওষুধ কোম্পানিও প্রতিষ্ঠা করেছেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
বৈশ্বিকভাবে বিকল্প স্বাস্থ্য আন্দোলন গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও জাফরুল্লাহ চৌধুরীর ভূমিকা রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) প্রতি বছর বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলন আয়োজন করে। এর বিকল্প হিসেবে কয়েক বছর পর পর আয়োজন করা হয় পাবলিক হেলথ অ্যাসেম্বলি বা জনগণের স্বাস্থ্য সম্মেলন। পিপলস হেলথ মুভমেন্ট নামের একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন এর আয়োজক। এই সংগঠনের নির্বাহী পরিষদের সদস্য ছিলেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি
কাজের স্বীকৃতি হিসেবে বেশ কয়েকটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্মাননা পেয়েছেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে ১৯৭৭ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হয়।
ফিলিপাইনের র্যামন ম্যাগসাইসাই পুরস্কার পান ১৯৮৫ সালে।
১৯৯২ সালে সুইডেন থেকে তাঁকে দেওয়া হয় রাইট লাইভলিহুড অ্যাওয়ার্ড।
কানাডার ওয়ার্ল্ড অরগানাইজেশন অব ন্যাচারাল মেডিসিন ২০০৯ সালে দেয় ডক্টর অব হিউম্যানিটেরিয়ান উপাধি।
যুক্তরাষ্ট্রের বার্কলি থেকে ২০১০ সালে দেওয়া হয় ইন্টারন্যাশনাল পাবলিক হেলথ হিরোজ অ্যাওয়ার্ড। যুক্তরাজ্যের প্রবাসী বাংলাদেশিদের সংগঠন ভয়েস ফর গ্লোবাল বাংলাদেশিজ ২০২২ সালে জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে ‘এনআরবি লিবারেশন ওয়ার হিরো ১৯৭১’ পুরস্কার দেয়।
তিনি একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে ব্রিটিশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের আজীবন সদস্য।
গবেষণা ও বক্তৃতা
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ৫০টির বেশি দেশে বিভিন্ন সম্মেলন এবং সেমিনারে মূল বক্তা হিসেবে অংশ নিয়েছেন। একাধিক দেশকে জাতীয় ওষুধ নীতি তৈরিতে পরামর্শ দিয়েছেন।
তাঁর উল্লেখযোগ্য প্রকাশনার মধ্যে অন্যতম ‘রিসার্চ: অ্যা মেথড অব কলোনাইজেশন’। এটি ইংরেজিতে প্রকাশিত হয় ১৯৭৭ সালে। এরপর বাংলা ছাড়াও ফরাসি, জার্মান, ইতালি, ডাচ, স্পেনিস ও একাধিক ভারতীয় ভাষায় অনুদিত হয়েছে।
আলোচিত-সমালোচিত এক স্বাধীন চিন্তার মানুষ
ছাত্রজীবনে বাম রাজনীতি করেছেন। কিন্তু পরবর্তীতে আর নির্দিষ্ট কোনো মতের রাজনীতির সঙ্গে থাকেননি। তবে তাঁর রাজনৈতিক মত প্রভাব ফেলেছে সব সময়।
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বন্ধু ও সহযোদ্ধারা বিভিন্ন গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ইংল্যান্ডে থাকার সময় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে প্রকাশ্যে পাকিস্তানি পাসপোর্ট ছিঁড়ে ফেলেন তিনি। এর বিশেষ অনুমোদন নিয়ে ভারতে আসেন।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল আতাউল গণি ওসমানীকে বহনকারী হেলিকপ্টারে হামলা হয়েছিল। সেই হেলিকপ্টারে জাফরুল্লাহ চৌধুরীও ছিলেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহযোগিতায় সাভারে গড়ে তোলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তাঁর অম্ল-মধুর সম্পর্কের কথা বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে বলেছেন। প্রশাসনের বিকেন্দ্রীকরণে বঙ্গবন্ধুকে তিনি পরামর্শ দিয়েছিলেন বলেও জানিয়েছেন।
তবে ১৯৭৫-এ বঙ্গবন্ধুর বাকশালের বিরোধিতা করেছেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। পরবর্তীতে জেনারেল ওসমানী রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনে দাঁড়ালে তাঁর হয়ে কাজ করেছেন।
সখ্য ছিল দুই সামরিক শাসক জেনারেল জিয়াউর রহমান ও জেনারেল এইচএম এরশাদের সঙ্গেও। এক সময় ঘনিষ্ঠ ছিলেন বিএনপি এবং দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে।
তবে সামরিক শাসকদের সময়েই স্বাস্থ্য নীতি, ঔষধ নীতি ও নারী শিক্ষা, এমনকি সহজে দেশের মানুষের জন্য পাসপোর্টের ব্যবস্থা করতে সরকারকে রাজি করানো এবং প্রশাসনের বিকেন্দ্রীকরণে সরকারকে প্রভাবিত করতে জাফরুল্লাহ ভূমিকা অনস্বীকার্য।
রাজনীতিতে সর্বশেষ ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে বিএনপিকে নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হলে তিনি সক্রিয়ভাবে যুক্ত হন। এ নিয়ে অবশ্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। এর জেরে সাভারে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে হামলার ঘটনাও ঘটে। বেশ কিছু মামলাতেও তাঁকে আসামি করা হয়।
দেশে কোভিড মহামারির সময় সরকারের মহামারি মোকাবিলা কৌশল ও পদক্ষেপ এবং গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্ভাবিত টেস্ট কিট ব্যাপক আলোচনায় আসেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। শুরু থেকে সরকারের পক্ষ থেকে এ নিয়ে নেতিবাচক মনোভাবই প্রকাশ করা হয়েছে।
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জীবনের শেষ বছরগুলোতে রোগ–ব্যধির সঙ্গে লড়েছেন। নিজেই দীর্ঘদিন জটিল কিডনি রোগে ভুগেছেন। সাশ্রয়ী ডায়ালাইসিসের জন্য গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ১০০ শয্যার কিডনি ডায়ালাইসিস ইউনিট তৈরি করেছেন।
মানুষ যাতে প্রতিস্থাপনের জন্য সহজে কিডনি পেতে পারে সেজন্য দেশের আইন পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে এসেছে ডা. জাফরুল্লাহ। একটি ক্যানসার হাসপাতাল করারও ইচ্ছা ছিল।
চিকিৎসার জন্য কখনো বিদেশে যেতে রাজি হননি। এমনকি বিনা খরচে কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রস্তাব পেয়েও শুধু বিদেশে যেতে হবে বলে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি তাঁর জীবদ্দশায় সাধারণ মানুষের জন্য দেশেই কিডনি প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা করে যেতে চেয়েছিলেন।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী চিকিৎসা নিয়েছেন সব সময় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের হাসপাতালেই। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ট্রাস্টি হিসেবে।

কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম ও চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় খেলা করার সময় পানিতে পড়ে ছয় শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার অষ্টগ্রাম উপজেলার দেওঘর ইউনিয়ন ও রাঙ্গুনিয়ার পারুয়া ইউনিয়নে ঘটনা দুটি ঘটে। এতে ওইসব এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
১১ ঘণ্টা আগে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে আজ বেলা ৩টার দিকে ‘চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট পরিষদ’-এর ব্যানারে পদযাত্রা শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। শাহবাগ থানার সামনে পৌঁছালে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তা আটকে দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে পুলিশ তাঁদের সড়ক থেকে....
১৩ ঘণ্টা আগে
কক্সবাজার অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে জারি করা প্রজ্ঞাপন স্থগিত করেছে সরকার। ফলে আপাতত কক্সবাজার থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হচ্ছে না।
১৬ ঘণ্টা আগে
আজ শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে পুনর্ব্যক্ত করছে যে, পূর্ব জেরুজালেমসহ দখল করা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের কোনো অংশে ইসরায়েলের কোনো সার্বভৌমত্ব নেই।
১৭ ঘণ্টা আগেঅষ্টগ্রাম (কিশোরগঞ্জ) ও রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম ও চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় খেলা করার সময় পানিতে পড়ে ছয় শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার অষ্টগ্রাম উপজেলার দেওঘর ইউনিয়ন ও রাঙ্গুনিয়ার পারুয়া ইউনিয়নে ঘটনা দুটি ঘটে। এতে ওইসব এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
আজ বিকেলে অষ্টগ্রাম উপজেলার দেওঘর ইউনিয়নের পশ্চিম আলীনগর এলাকায় বাড়িসংলগ্ন বিলের পাশে খেলা করছিল মিশকাত (৫), মাহিন (৬) ও সাত্তার তানিল মিয়া (৫)। হঠাৎ সবার অজান্তে তিন শিশু বিলে পড়ে ডুবে যায়।
খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে বিল থেকে মিশকাত ও মাহিনকে উদ্ধার করা হয়। পরে অষ্টগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে খবর পেয়ে অষ্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে অপর শিশু তানিলের মরদেহ উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে মাহিনের চাচা মোবারক হোসেন বলেন, প্রতিদিনের মতো তিন শিশু খেলাধুলা করছিল। কিন্তু কখন যে বিলের পানিতে ডুবে গেল, কেউ বোঝেনি। পরে তাদের দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি করে পানিতে প্রথমে দুজন, পরে অন্যজনকে পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে দেওঘর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আক্তার হোসেন বলেন, দুঃখজনক খবর, একই বাড়ির তিনটা শিশুর মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
অপর দিকে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পারুয়া ইউনিয়নে একই দিন বিকেলে উত্তর পারুয়া গ্রামের একটি পুকুরে পড়ে মারা যায় তিন শিশু। তারা হলো সুমাইয়া আক্তার (৫), হাবীবা আক্তার (৬) ও জান্নাত আক্তার (৫)।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিকেলে খেলার ছলে তারা তিনজনই বাড়ির পাশে পুকুরে যায়। কিছুক্ষণ পর না পেয়ে পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করে। পরে পুকুরে ভাসমান অবস্থায় তাদের মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে পারুয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান একতেহার হোসেন বলেন, ‘তিনটি নিষ্পাপ শিশুর এমন মৃত্যুর ঘটনা আমাদের সবাইকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।’

কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম ও চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় খেলা করার সময় পানিতে পড়ে ছয় শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার অষ্টগ্রাম উপজেলার দেওঘর ইউনিয়ন ও রাঙ্গুনিয়ার পারুয়া ইউনিয়নে ঘটনা দুটি ঘটে। এতে ওইসব এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
আজ বিকেলে অষ্টগ্রাম উপজেলার দেওঘর ইউনিয়নের পশ্চিম আলীনগর এলাকায় বাড়িসংলগ্ন বিলের পাশে খেলা করছিল মিশকাত (৫), মাহিন (৬) ও সাত্তার তানিল মিয়া (৫)। হঠাৎ সবার অজান্তে তিন শিশু বিলে পড়ে ডুবে যায়।
খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে বিল থেকে মিশকাত ও মাহিনকে উদ্ধার করা হয়। পরে অষ্টগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে খবর পেয়ে অষ্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে অপর শিশু তানিলের মরদেহ উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে মাহিনের চাচা মোবারক হোসেন বলেন, প্রতিদিনের মতো তিন শিশু খেলাধুলা করছিল। কিন্তু কখন যে বিলের পানিতে ডুবে গেল, কেউ বোঝেনি। পরে তাদের দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি করে পানিতে প্রথমে দুজন, পরে অন্যজনকে পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে দেওঘর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আক্তার হোসেন বলেন, দুঃখজনক খবর, একই বাড়ির তিনটা শিশুর মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
অপর দিকে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পারুয়া ইউনিয়নে একই দিন বিকেলে উত্তর পারুয়া গ্রামের একটি পুকুরে পড়ে মারা যায় তিন শিশু। তারা হলো সুমাইয়া আক্তার (৫), হাবীবা আক্তার (৬) ও জান্নাত আক্তার (৫)।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিকেলে খেলার ছলে তারা তিনজনই বাড়ির পাশে পুকুরে যায়। কিছুক্ষণ পর না পেয়ে পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করে। পরে পুকুরে ভাসমান অবস্থায় তাদের মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে পারুয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান একতেহার হোসেন বলেন, ‘তিনটি নিষ্পাপ শিশুর এমন মৃত্যুর ঘটনা আমাদের সবাইকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।’

জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সংগ্রাম শুরু হয় মূলত একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে। ১৯৭১ সালের মার্চে ব্রিটেনে বসবাসরত ১ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি চিকিৎসক বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন গঠন করে। সেই সংগঠনের সভাপতি ছিলেন ডা. এএইচ সায়েদুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। একই বছরের মে মাসে এমএ মোবিন ও জাফর
১২ এপ্রিল ২০২৩
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে আজ বেলা ৩টার দিকে ‘চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট পরিষদ’-এর ব্যানারে পদযাত্রা শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। শাহবাগ থানার সামনে পৌঁছালে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তা আটকে দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে পুলিশ তাঁদের সড়ক থেকে....
১৩ ঘণ্টা আগে
কক্সবাজার অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে জারি করা প্রজ্ঞাপন স্থগিত করেছে সরকার। ফলে আপাতত কক্সবাজার থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হচ্ছে না।
১৬ ঘণ্টা আগে
আজ শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে পুনর্ব্যক্ত করছে যে, পূর্ব জেরুজালেমসহ দখল করা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের কোনো অংশে ইসরায়েলের কোনো সার্বভৌমত্ব নেই।
১৭ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানো, বিশেষ নিয়োগব্যবস্থা, স্বতন্ত্র কোটা সংরক্ষণসহ পাঁচ দফা দাবিতে আজ শুক্রবার আবারও যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করেছেন চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েটরা। তবে গতকাল বৃহস্পতিবারের মতো আজও তাঁদের পদযাত্রা শাহবাগ থানার সামনে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে আজ বেলা ৩টার দিকে ‘চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট পরিষদ’-এর ব্যানারে পদযাত্রা শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। শাহবাগ থানার সামনে পৌঁছালে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তা আটকে দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে পুলিশ তাঁদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়।
এর আগে গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজু ভাস্কর্য থেকে যমুনা অভিমুখে থালাবাটি নিয়ে ভুখা মিছিল করেন প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েটরা। শাহবাগ থানার সামনে মিছিলটি পুলিশ আটকে দিলে সেখানেই বিক্ষোভ করেন তাঁরা। একপর্যায়ে সেখান থেকে তাঁদের সরিয়ে দেওয়া হয়।
গত রোববার থেকে পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন করা চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধীদের ভাষ্য, শিক্ষিত, যোগ্য ও কর্মক্ষম যুব প্রতিবন্ধীরা দীর্ঘদিন ধরে কর্মসংস্থান থেকে বঞ্চিত। ২০১৮ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে ন্যায্য অধিকারের দাবি জানিয়ে আসছেন তাঁরা। তবে এখনো কর্মসংস্থানে অন্তর্ভুক্তি ও প্রতিবন্ধী কোটা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা হয়নি।
চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট পরিষদের সদস্যসচিব আলিফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পাঁচ দফা দাবিতে গত রোববার শাহবাগে অবস্থান করে যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করা হয়। সেদিন পুলিশ আমাদের আটকে দেয়। এরপর সমাজকল্যাণ উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আমাদের দাবি জানানো হয়। তাঁর কাছ থেকে কোনো সমাধান না পেয়ে আমরা বেশ কয়েকবার যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করি, কিন্তু পুলিশ আমাদের ব্যারিকেড দিয়ে আটকে রাখে।’
আলিফ হোসেন আরও বলেন, ‘আজও শাহবাগ থানার সামনে আমাদের পদযাত্রা আটকে দেওয়া হয় এবং বেশ কয়েকজনকে পুলিশ মারধরও করেছে।’
এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খালিদ মনসুর বলেন, প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন এলাকায় সভা-সমাবেশ করা নিষেধ। তাই চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধীরা দাবিদাওয়া নিয়ে যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করায় তাঁদের আটকে দেওয়া হয়েছে।
চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—
১. প্রতিবন্ধিতার ধরন অনুযায়ী বেকার, শিক্ষিত প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রধান উপদেষ্টার নির্বাহী আদেশে বিশেষ নিয়োগ দিতে হবে।
২. প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে ২ শতাংশ এবং তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে ৫ শতাংশ স্বতন্ত্র প্রতিবন্ধী কোটা সংরক্ষণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
৩. দৃষ্টি বা শারীরিক প্রতিবন্ধীরা নিজেদের পছন্দমতো শ্রুতিলেখক (বিকল্প সহকারী) মনোনয়নের স্বাধীনতা পাবেন—এমনভাবে নীতিমালা হালনাগাদ করতে হবে।
৪. সমাজসেবা অধিদপ্তর এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য নির্দিষ্ট পদসংখ্যায় নিশ্চিত নিয়োগ দিতে হবে।
৫. প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছরে উন্নীত করতে হবে। সাধারণ প্রার্থীদের ক্ষেত্রে ৩৫ হলে তা ৩৭ বছর করতে হবে।

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানো, বিশেষ নিয়োগব্যবস্থা, স্বতন্ত্র কোটা সংরক্ষণসহ পাঁচ দফা দাবিতে আজ শুক্রবার আবারও যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করেছেন চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েটরা। তবে গতকাল বৃহস্পতিবারের মতো আজও তাঁদের পদযাত্রা শাহবাগ থানার সামনে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে আজ বেলা ৩টার দিকে ‘চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট পরিষদ’-এর ব্যানারে পদযাত্রা শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। শাহবাগ থানার সামনে পৌঁছালে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তা আটকে দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে পুলিশ তাঁদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়।
এর আগে গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজু ভাস্কর্য থেকে যমুনা অভিমুখে থালাবাটি নিয়ে ভুখা মিছিল করেন প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েটরা। শাহবাগ থানার সামনে মিছিলটি পুলিশ আটকে দিলে সেখানেই বিক্ষোভ করেন তাঁরা। একপর্যায়ে সেখান থেকে তাঁদের সরিয়ে দেওয়া হয়।
গত রোববার থেকে পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন করা চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধীদের ভাষ্য, শিক্ষিত, যোগ্য ও কর্মক্ষম যুব প্রতিবন্ধীরা দীর্ঘদিন ধরে কর্মসংস্থান থেকে বঞ্চিত। ২০১৮ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে ন্যায্য অধিকারের দাবি জানিয়ে আসছেন তাঁরা। তবে এখনো কর্মসংস্থানে অন্তর্ভুক্তি ও প্রতিবন্ধী কোটা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা হয়নি।
চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট পরিষদের সদস্যসচিব আলিফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পাঁচ দফা দাবিতে গত রোববার শাহবাগে অবস্থান করে যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করা হয়। সেদিন পুলিশ আমাদের আটকে দেয়। এরপর সমাজকল্যাণ উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আমাদের দাবি জানানো হয়। তাঁর কাছ থেকে কোনো সমাধান না পেয়ে আমরা বেশ কয়েকবার যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করি, কিন্তু পুলিশ আমাদের ব্যারিকেড দিয়ে আটকে রাখে।’
আলিফ হোসেন আরও বলেন, ‘আজও শাহবাগ থানার সামনে আমাদের পদযাত্রা আটকে দেওয়া হয় এবং বেশ কয়েকজনকে পুলিশ মারধরও করেছে।’
এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খালিদ মনসুর বলেন, প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন এলাকায় সভা-সমাবেশ করা নিষেধ। তাই চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধীরা দাবিদাওয়া নিয়ে যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করায় তাঁদের আটকে দেওয়া হয়েছে।
চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—
১. প্রতিবন্ধিতার ধরন অনুযায়ী বেকার, শিক্ষিত প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রধান উপদেষ্টার নির্বাহী আদেশে বিশেষ নিয়োগ দিতে হবে।
২. প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে ২ শতাংশ এবং তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে ৫ শতাংশ স্বতন্ত্র প্রতিবন্ধী কোটা সংরক্ষণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
৩. দৃষ্টি বা শারীরিক প্রতিবন্ধীরা নিজেদের পছন্দমতো শ্রুতিলেখক (বিকল্প সহকারী) মনোনয়নের স্বাধীনতা পাবেন—এমনভাবে নীতিমালা হালনাগাদ করতে হবে।
৪. সমাজসেবা অধিদপ্তর এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য নির্দিষ্ট পদসংখ্যায় নিশ্চিত নিয়োগ দিতে হবে।
৫. প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছরে উন্নীত করতে হবে। সাধারণ প্রার্থীদের ক্ষেত্রে ৩৫ হলে তা ৩৭ বছর করতে হবে।

জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সংগ্রাম শুরু হয় মূলত একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে। ১৯৭১ সালের মার্চে ব্রিটেনে বসবাসরত ১ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি চিকিৎসক বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন গঠন করে। সেই সংগঠনের সভাপতি ছিলেন ডা. এএইচ সায়েদুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। একই বছরের মে মাসে এমএ মোবিন ও জাফর
১২ এপ্রিল ২০২৩
কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম ও চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় খেলা করার সময় পানিতে পড়ে ছয় শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার অষ্টগ্রাম উপজেলার দেওঘর ইউনিয়ন ও রাঙ্গুনিয়ার পারুয়া ইউনিয়নে ঘটনা দুটি ঘটে। এতে ওইসব এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
১১ ঘণ্টা আগে
কক্সবাজার অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে জারি করা প্রজ্ঞাপন স্থগিত করেছে সরকার। ফলে আপাতত কক্সবাজার থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হচ্ছে না।
১৬ ঘণ্টা আগে
আজ শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে পুনর্ব্যক্ত করছে যে, পূর্ব জেরুজালেমসহ দখল করা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের কোনো অংশে ইসরায়েলের কোনো সার্বভৌমত্ব নেই।
১৭ ঘণ্টা আগেবিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা

কক্সবাজার অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে জারি করা প্রজ্ঞাপন স্থগিত করেছে সরকার। ফলে আপাতত কক্সবাজার থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হচ্ছে না।
আজ শুক্রবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক বিমান উড্ডয়ন কমিটির সভাপতি ও বিমানবন্দর পরিচালক এয়ার কমোডর মো. নুর-ই-আজম।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সূত্রে জানা গেছে, সরকারের পক্ষ থেকে বিমানবন্দরটিকে আন্তর্জাতিক ঘোষণা করার প্রজ্ঞাপন স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত আগের মতোই অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনা চলবে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল। এর মাধ্যমে কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু হয়।
বিমানবন্দরসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অবকাঠামোগত ও প্রশাসনিক কিছু প্রস্তুতি সম্পূর্ণ না হওয়ায় সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
উল্লেখ্য, দেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন নগরী কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর উদ্যোগ পর্যটন খাতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে বলে আশা করা হচ্ছিল। বিশেষ করে, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও ভারতের সঙ্গে সরাসরি আকাশপথে সংযোগের পরিকল্পনাও ছিল সরকারের।

কক্সবাজার অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে জারি করা প্রজ্ঞাপন স্থগিত করেছে সরকার। ফলে আপাতত কক্সবাজার থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হচ্ছে না।
আজ শুক্রবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক বিমান উড্ডয়ন কমিটির সভাপতি ও বিমানবন্দর পরিচালক এয়ার কমোডর মো. নুর-ই-আজম।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সূত্রে জানা গেছে, সরকারের পক্ষ থেকে বিমানবন্দরটিকে আন্তর্জাতিক ঘোষণা করার প্রজ্ঞাপন স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত আগের মতোই অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনা চলবে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল। এর মাধ্যমে কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু হয়।
বিমানবন্দরসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অবকাঠামোগত ও প্রশাসনিক কিছু প্রস্তুতি সম্পূর্ণ না হওয়ায় সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
উল্লেখ্য, দেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন নগরী কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর উদ্যোগ পর্যটন খাতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে বলে আশা করা হচ্ছিল। বিশেষ করে, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও ভারতের সঙ্গে সরাসরি আকাশপথে সংযোগের পরিকল্পনাও ছিল সরকারের।

জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সংগ্রাম শুরু হয় মূলত একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে। ১৯৭১ সালের মার্চে ব্রিটেনে বসবাসরত ১ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি চিকিৎসক বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন গঠন করে। সেই সংগঠনের সভাপতি ছিলেন ডা. এএইচ সায়েদুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। একই বছরের মে মাসে এমএ মোবিন ও জাফর
১২ এপ্রিল ২০২৩
কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম ও চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় খেলা করার সময় পানিতে পড়ে ছয় শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার অষ্টগ্রাম উপজেলার দেওঘর ইউনিয়ন ও রাঙ্গুনিয়ার পারুয়া ইউনিয়নে ঘটনা দুটি ঘটে। এতে ওইসব এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
১১ ঘণ্টা আগে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে আজ বেলা ৩টার দিকে ‘চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট পরিষদ’-এর ব্যানারে পদযাত্রা শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। শাহবাগ থানার সামনে পৌঁছালে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তা আটকে দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে পুলিশ তাঁদের সড়ক থেকে....
১৩ ঘণ্টা আগে
আজ শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে পুনর্ব্যক্ত করছে যে, পূর্ব জেরুজালেমসহ দখল করা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের কোনো অংশে ইসরায়েলের কোনো সার্বভৌমত্ব নেই।
১৭ ঘণ্টা আগেবাসস, ঢাকা

ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরকে ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্ত করতে সম্প্রতি খসড়া আইন অনুমোদন দিয়েছে দেশটির পার্লামেন্ট নেসেট।
তথাকথিত ‘ইসরায়েলি সার্বভৌমত্ব’ আরোপের নামে এই আইনের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ।
আজ শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে পুনর্ব্যক্ত করছে যে, পূর্ব জেরুজালেমসহ দখল করা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের কোনো অংশে ইসরায়েলের কোনো সার্বভৌমত্ব নেই।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ইসরায়েল পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতি সম্প্রসারণের মাধ্যমে বেআইনি দখলদারি চালিয়ে যাচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘ সনদ ও নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব, বিশেষ করে রেজল্যুশন ২৩৩৪-এর স্পষ্ট লঙ্ঘন।
২২ অক্টোবর আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) দেওয়া অ্যাডভাইজরি ওপিনিয়ন বা পরামর্শমূলক মতামতকে স্বাগত জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ওই মতামতে আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের অধীনে ইসরায়েলের বাধ্যবাধকতাগুলো তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সাধারণ জনগণকে, ক্ষুধাকে যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা নিষিদ্ধ।
বিবৃতিতে ফিলিস্তিনি জনগণের অবিচ্ছেদ্য অধিকার, তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার এবং ১৯৬৭ সালের আগের সীমানার ভিত্তিতে পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ।

ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরকে ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্ত করতে সম্প্রতি খসড়া আইন অনুমোদন দিয়েছে দেশটির পার্লামেন্ট নেসেট।
তথাকথিত ‘ইসরায়েলি সার্বভৌমত্ব’ আরোপের নামে এই আইনের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ।
আজ শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে পুনর্ব্যক্ত করছে যে, পূর্ব জেরুজালেমসহ দখল করা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের কোনো অংশে ইসরায়েলের কোনো সার্বভৌমত্ব নেই।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ইসরায়েল পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতি সম্প্রসারণের মাধ্যমে বেআইনি দখলদারি চালিয়ে যাচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘ সনদ ও নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব, বিশেষ করে রেজল্যুশন ২৩৩৪-এর স্পষ্ট লঙ্ঘন।
২২ অক্টোবর আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) দেওয়া অ্যাডভাইজরি ওপিনিয়ন বা পরামর্শমূলক মতামতকে স্বাগত জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ওই মতামতে আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের অধীনে ইসরায়েলের বাধ্যবাধকতাগুলো তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সাধারণ জনগণকে, ক্ষুধাকে যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা নিষিদ্ধ।
বিবৃতিতে ফিলিস্তিনি জনগণের অবিচ্ছেদ্য অধিকার, তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার এবং ১৯৬৭ সালের আগের সীমানার ভিত্তিতে পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ।

জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সংগ্রাম শুরু হয় মূলত একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে। ১৯৭১ সালের মার্চে ব্রিটেনে বসবাসরত ১ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি চিকিৎসক বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন গঠন করে। সেই সংগঠনের সভাপতি ছিলেন ডা. এএইচ সায়েদুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। একই বছরের মে মাসে এমএ মোবিন ও জাফর
১২ এপ্রিল ২০২৩
কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম ও চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় খেলা করার সময় পানিতে পড়ে ছয় শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার অষ্টগ্রাম উপজেলার দেওঘর ইউনিয়ন ও রাঙ্গুনিয়ার পারুয়া ইউনিয়নে ঘটনা দুটি ঘটে। এতে ওইসব এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
১১ ঘণ্টা আগে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে আজ বেলা ৩টার দিকে ‘চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট পরিষদ’-এর ব্যানারে পদযাত্রা শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। শাহবাগ থানার সামনে পৌঁছালে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তা আটকে দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে পুলিশ তাঁদের সড়ক থেকে....
১৩ ঘণ্টা আগে
কক্সবাজার অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে জারি করা প্রজ্ঞাপন স্থগিত করেছে সরকার। ফলে আপাতত কক্সবাজার থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হচ্ছে না।
১৬ ঘণ্টা আগে