তানিম আহমেদ, ঢাকা
নির্বাচিত সংসদই সংবিধানে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনবে, এমনটাই বলছে দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি। অন্যদিকে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) চাওয়া, গণপরিষদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সংবিধান পুনর্লিখন। জামায়াতে ইসলামীসহ অন্য রাজনৈতিক দলগুলোও সংবিধান সংশোধনের লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট লিখিত প্রস্তাব দিয়েছে সংবিধান সংস্কার কমিশনের কাছে। সংবিধান সংশোধনের উপায় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতভিন্নতার মধ্যেই অন্য একটি উপায় প্রস্তাব করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেছেন ‘অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংবিধান সংশোধন সম্ভব’।
গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন মত দেন সম্প্রতি সংবিধান সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করা অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে অতীতে অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংবিধান সংশোধনী হয়েছে, যা পরবর্তী সময়ে জাতীয় সংসদে গৃহীত হয়েছে। ফলে এটা এটা হয়েছে, এটা সম্ভব। কিন্তু সেটাই একমাত্র বিবেচনা আমাদের ছিল না। কারণ আমরা কোনো কিছুই অ্যাজেন্ডা সেট করছি না।’
অধ্যাপক আলী রীয়াজের এই মতের সঙ্গে দ্বিমত রয়েছে রাজনীতিবিদ ও আইনজ্ঞদের। কারও মতে, অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংবিধান সংশোধন করা হলেও পরবর্তী সংসদের মাধ্যমে বৈধতা দিতে হবে। কেউ বলছেন, গণপরিষদ ছাড়া সংবিধান সংশোধন করলে সংকট ঘনীভূত হবে। তবে রাজনৈতিক ঐকমত্য হলে সংবিধান গণপরিষদ কিংবা যেকোনোভাবে সংশোধন করা সম্ভব বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা।
সংবিধান লেখা বা সংশোধনের দুটো পদ্ধতির একটি হলো গণপরিষদের মাধ্যমে সংবিধান পরিবর্তন, অন্যটি জাতীয় সংসদের মাধ্যমে সংবিধান সংশোধন। বাংলাদেশে এখন নির্বাচিত সংসদ নেই। বর্তমানে যে অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র চালাচ্ছে, বিদ্যমান সংবিধানে এর কোনো ভিত্তি নেই। তবে ‘ডকট্রিন অব নেসেসিটি’-এর কারণে এই সরকারকে বৈধতা দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত। সেই একই কারণে বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংবিধান পরিবর্তন সম্ভব বলে মনে করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংবিধান পরিবর্তন সম্ভব। বিশেষ পরিস্থিতির কারণে এটা বৈধ।
একই মত দিয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘বর্তমান সংবিধানের প্রভিশনের ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংবিধানের আনীত সমস্যাগুলোর সংশোধনী করা যায়।’
তবে ভিন্নমতও আছে আইনজ্ঞদের মধ্যে। জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেছেন, সংসদ ছাড়া সংবিধান সংশোধনের সুযোগ বর্তমান সংবিধানে নেই। তিনি বলেন, সংবিধান জীবিত থাকা অবস্থায়, সংবিধানের যা বলা আছে, তার বাইরের কোনো শব্দ ইনিয়ে-বিনিয়ে সংযোজন করার সুযোগ নেই। রাষ্ট্রপতি সংবিধান অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংবিধান সংশোধন করতে পারবেন, এই কথাটা সংবিধান সংশোধন (জাতীয় সংসদের মাধ্যমে) করে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এ ছাড়া সংবিধান সংশোধনের সুযোগ নেই।
অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংবিধান সংশোধন সম্ভব নয় বলে মনে করেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুমও।
এ বিষয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশনের এক সদস্য বলেন, রাজনৈতিক ঐকমত্য থাকলে সবই সম্ভব। এরশাদ পতনের পরে সাহাবুদ্দীন আহমদ কিসের ভিত্তিতে দায়িত্ব নিলেন? রাজনৈতিক ঐকমত্য থাকলে মেথডটা কোনো গুরুত্বপূর্ণ নয়। সেটা তাদের ওপর নির্ভর করবে।
উল্লেখ্য, নব্বইয়ের গণ-আন্দোলনে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের পতনের পরে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে উপরাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ। এরপর ১৯৯১ সালে একাদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সাহাবুদ্দীনের নিয়োগের বৈধতা দেওয়া হয়। সাহাবুদ্দীন আহমদের প্রধান বিচারপতির পদে ফিরে যাওয়ার বিধান পাস হয়।
বাংলাদেশের বিদ্যমান সংবিধানের ৯৩ অনুচ্ছেদে অধ্যাদেশ জারির বিধান রয়েছে। সংসদ ভেঙে গেলে বা সংসদের অধিবেশন না থাকলে রাষ্ট্রপতি প্রয়োজনীয় পরিস্থিতিতে সন্তোষজনক মনে করলে অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও জারি করতে পারবেন। জারির সময় থেকে ওই অধ্যাদেশ আইনের মতো ক্ষমতাসম্পন্ন হবে। সংবিধানে এ বিষয়ে আরও বলা হয়েছে, অধ্যাদেশ যথাশিগগির সংসদে উপস্থাপিত হবে। এ ক্ষেত্রে সংসদের অধিবেশনের প্রথম দিন সংসদে উপস্থাপন করতে হয়। তবে সংবিধানের কোনো বিধান পরিবর্তিত বা রহিত করে এবং সংসদের আইন দ্বারা আইনসংগতভাবে করা যায় না—অধ্যাদেশে এমন কোনো বিধান করা যাবে না বলে সংবিধানে উল্লেখ রয়েছে।
সংবিধানে অধ্যাদেশ জারির সুযোগ থাকায় এর মধ্য দিয়ে সংবিধান সংশোধনের পথ খুঁজছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। অতীতে কখন অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংবিধান সংশোধন হয়েছে জানতে চাইলে অধ্যাপক আলী রীয়াজ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি আপনাদের অধ্যাদেশ জারির কথা বলেছি। তবে এটা হয়েছে প্রক্লেমেশনের মাধ্যমে। ১৯৭৫ সালের ২০ আগস্ট থেকে বেশ কয়েকটি প্রক্লেমেশন (সাংবিধানিক ঘোষণা)-এর মাধ্যমে সংবিধান সংশোধন হয়। পরবর্তীতে পঞ্চম সংশোধনীতে এগুলো অন্তর্ভুক্ত হয়। এটাকে অধ্যাদেশও বলতে পারেন। প্রক্লেমেশনও বলতে পারেন।’
বিএনপির সরকারের সাবেক মন্ত্রী ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, অতীতেও অধ্যাদেশের মাধ্যমে হওয়া সংশোধনী পরবর্তী জাতীয় সংসদকে বৈধতা দিতে হয়েছিল। অতএব শেষমেশ সংসদকে সংশোধনীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অতএব সংসদ হলো চূড়ান্ত অথরিটি।
অন্তর্বর্তী সরকার যদি অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংবিধান সংশোধন করার উদ্যোগ নেয়, সে ক্ষেত্রে বিএনপির অবস্থান কী হবে, এমন প্রশ্নে দলটির এ স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ‘সেটা এখনো জানি না। জানলে আমরা দলগতভাবে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত।’ আর সরকারই যদি সংশোধনী করে, তাহলে ১৫তম সংশোধনীর বিষয়ে হাইকোর্টে রিট কেন করেছিল সেই প্রশ্নও তোলেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
সংবিধান সংস্কারের পদ্ধতি নিয়ে লিখিত মতামত জামায়াতে ইসলামী সরকারকে দেবে বলে জানিয়েছেন দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেন, ‘সংবিধান সংশোধনের অনেক পদ্ধতি আছে। এটি সংসদে সম্ভব, অধ্যাদেশ জারি করে সম্ভব, গণপরিষদে সম্ভব। যে কেউ তার অভিজ্ঞতা বিশ্লেষণ করে বলতে পারে, তবে সংবিধান নিয়ে আমাদের অনেক কথা রয়েছে। এটা এক প্রশ্নে বললে জটিলতা সৃষ্টি হবে।’
গণপরিষদ ছাড়া সংবিধান সংশোধন হলে দেশের সংকট ঘনীভূত হবে এবং ভুল পথে যাওয়া হবে বলে মনে করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার তুষার বলেন, অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংবিধান সংস্কার হওয়ার পরে পরবর্তী সরকার সেটার বৈধতা না দিলে বড় ধরনের ক্রাইসিস তৈরি হবে। সেখানে সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি হচ্ছে আগামী নির্বাচন যদি গণপরিষদ ও আইনসভা (জাতীয় সংসদ) হয়, তাহলে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে।
নির্বাচিত সংসদই সংবিধানে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনবে, এমনটাই বলছে দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি। অন্যদিকে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) চাওয়া, গণপরিষদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সংবিধান পুনর্লিখন। জামায়াতে ইসলামীসহ অন্য রাজনৈতিক দলগুলোও সংবিধান সংশোধনের লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট লিখিত প্রস্তাব দিয়েছে সংবিধান সংস্কার কমিশনের কাছে। সংবিধান সংশোধনের উপায় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতভিন্নতার মধ্যেই অন্য একটি উপায় প্রস্তাব করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেছেন ‘অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংবিধান সংশোধন সম্ভব’।
গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন মত দেন সম্প্রতি সংবিধান সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করা অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে অতীতে অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংবিধান সংশোধনী হয়েছে, যা পরবর্তী সময়ে জাতীয় সংসদে গৃহীত হয়েছে। ফলে এটা এটা হয়েছে, এটা সম্ভব। কিন্তু সেটাই একমাত্র বিবেচনা আমাদের ছিল না। কারণ আমরা কোনো কিছুই অ্যাজেন্ডা সেট করছি না।’
অধ্যাপক আলী রীয়াজের এই মতের সঙ্গে দ্বিমত রয়েছে রাজনীতিবিদ ও আইনজ্ঞদের। কারও মতে, অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংবিধান সংশোধন করা হলেও পরবর্তী সংসদের মাধ্যমে বৈধতা দিতে হবে। কেউ বলছেন, গণপরিষদ ছাড়া সংবিধান সংশোধন করলে সংকট ঘনীভূত হবে। তবে রাজনৈতিক ঐকমত্য হলে সংবিধান গণপরিষদ কিংবা যেকোনোভাবে সংশোধন করা সম্ভব বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা।
সংবিধান লেখা বা সংশোধনের দুটো পদ্ধতির একটি হলো গণপরিষদের মাধ্যমে সংবিধান পরিবর্তন, অন্যটি জাতীয় সংসদের মাধ্যমে সংবিধান সংশোধন। বাংলাদেশে এখন নির্বাচিত সংসদ নেই। বর্তমানে যে অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র চালাচ্ছে, বিদ্যমান সংবিধানে এর কোনো ভিত্তি নেই। তবে ‘ডকট্রিন অব নেসেসিটি’-এর কারণে এই সরকারকে বৈধতা দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত। সেই একই কারণে বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংবিধান পরিবর্তন সম্ভব বলে মনে করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংবিধান পরিবর্তন সম্ভব। বিশেষ পরিস্থিতির কারণে এটা বৈধ।
একই মত দিয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘বর্তমান সংবিধানের প্রভিশনের ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংবিধানের আনীত সমস্যাগুলোর সংশোধনী করা যায়।’
তবে ভিন্নমতও আছে আইনজ্ঞদের মধ্যে। জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেছেন, সংসদ ছাড়া সংবিধান সংশোধনের সুযোগ বর্তমান সংবিধানে নেই। তিনি বলেন, সংবিধান জীবিত থাকা অবস্থায়, সংবিধানের যা বলা আছে, তার বাইরের কোনো শব্দ ইনিয়ে-বিনিয়ে সংযোজন করার সুযোগ নেই। রাষ্ট্রপতি সংবিধান অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংবিধান সংশোধন করতে পারবেন, এই কথাটা সংবিধান সংশোধন (জাতীয় সংসদের মাধ্যমে) করে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এ ছাড়া সংবিধান সংশোধনের সুযোগ নেই।
অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংবিধান সংশোধন সম্ভব নয় বলে মনে করেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুমও।
এ বিষয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশনের এক সদস্য বলেন, রাজনৈতিক ঐকমত্য থাকলে সবই সম্ভব। এরশাদ পতনের পরে সাহাবুদ্দীন আহমদ কিসের ভিত্তিতে দায়িত্ব নিলেন? রাজনৈতিক ঐকমত্য থাকলে মেথডটা কোনো গুরুত্বপূর্ণ নয়। সেটা তাদের ওপর নির্ভর করবে।
উল্লেখ্য, নব্বইয়ের গণ-আন্দোলনে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের পতনের পরে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে উপরাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ। এরপর ১৯৯১ সালে একাদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সাহাবুদ্দীনের নিয়োগের বৈধতা দেওয়া হয়। সাহাবুদ্দীন আহমদের প্রধান বিচারপতির পদে ফিরে যাওয়ার বিধান পাস হয়।
বাংলাদেশের বিদ্যমান সংবিধানের ৯৩ অনুচ্ছেদে অধ্যাদেশ জারির বিধান রয়েছে। সংসদ ভেঙে গেলে বা সংসদের অধিবেশন না থাকলে রাষ্ট্রপতি প্রয়োজনীয় পরিস্থিতিতে সন্তোষজনক মনে করলে অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও জারি করতে পারবেন। জারির সময় থেকে ওই অধ্যাদেশ আইনের মতো ক্ষমতাসম্পন্ন হবে। সংবিধানে এ বিষয়ে আরও বলা হয়েছে, অধ্যাদেশ যথাশিগগির সংসদে উপস্থাপিত হবে। এ ক্ষেত্রে সংসদের অধিবেশনের প্রথম দিন সংসদে উপস্থাপন করতে হয়। তবে সংবিধানের কোনো বিধান পরিবর্তিত বা রহিত করে এবং সংসদের আইন দ্বারা আইনসংগতভাবে করা যায় না—অধ্যাদেশে এমন কোনো বিধান করা যাবে না বলে সংবিধানে উল্লেখ রয়েছে।
সংবিধানে অধ্যাদেশ জারির সুযোগ থাকায় এর মধ্য দিয়ে সংবিধান সংশোধনের পথ খুঁজছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। অতীতে কখন অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংবিধান সংশোধন হয়েছে জানতে চাইলে অধ্যাপক আলী রীয়াজ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি আপনাদের অধ্যাদেশ জারির কথা বলেছি। তবে এটা হয়েছে প্রক্লেমেশনের মাধ্যমে। ১৯৭৫ সালের ২০ আগস্ট থেকে বেশ কয়েকটি প্রক্লেমেশন (সাংবিধানিক ঘোষণা)-এর মাধ্যমে সংবিধান সংশোধন হয়। পরবর্তীতে পঞ্চম সংশোধনীতে এগুলো অন্তর্ভুক্ত হয়। এটাকে অধ্যাদেশও বলতে পারেন। প্রক্লেমেশনও বলতে পারেন।’
বিএনপির সরকারের সাবেক মন্ত্রী ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, অতীতেও অধ্যাদেশের মাধ্যমে হওয়া সংশোধনী পরবর্তী জাতীয় সংসদকে বৈধতা দিতে হয়েছিল। অতএব শেষমেশ সংসদকে সংশোধনীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অতএব সংসদ হলো চূড়ান্ত অথরিটি।
অন্তর্বর্তী সরকার যদি অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংবিধান সংশোধন করার উদ্যোগ নেয়, সে ক্ষেত্রে বিএনপির অবস্থান কী হবে, এমন প্রশ্নে দলটির এ স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ‘সেটা এখনো জানি না। জানলে আমরা দলগতভাবে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত।’ আর সরকারই যদি সংশোধনী করে, তাহলে ১৫তম সংশোধনীর বিষয়ে হাইকোর্টে রিট কেন করেছিল সেই প্রশ্নও তোলেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
সংবিধান সংস্কারের পদ্ধতি নিয়ে লিখিত মতামত জামায়াতে ইসলামী সরকারকে দেবে বলে জানিয়েছেন দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেন, ‘সংবিধান সংশোধনের অনেক পদ্ধতি আছে। এটি সংসদে সম্ভব, অধ্যাদেশ জারি করে সম্ভব, গণপরিষদে সম্ভব। যে কেউ তার অভিজ্ঞতা বিশ্লেষণ করে বলতে পারে, তবে সংবিধান নিয়ে আমাদের অনেক কথা রয়েছে। এটা এক প্রশ্নে বললে জটিলতা সৃষ্টি হবে।’
গণপরিষদ ছাড়া সংবিধান সংশোধন হলে দেশের সংকট ঘনীভূত হবে এবং ভুল পথে যাওয়া হবে বলে মনে করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার তুষার বলেন, অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংবিধান সংস্কার হওয়ার পরে পরবর্তী সরকার সেটার বৈধতা না দিলে বড় ধরনের ক্রাইসিস তৈরি হবে। সেখানে সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি হচ্ছে আগামী নির্বাচন যদি গণপরিষদ ও আইনসভা (জাতীয় সংসদ) হয়, তাহলে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে।
আগামী ডিসেম্বরে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, এমনটা ধরে নিয়েই ভোটের প্রস্তুতিতে আরেক ধাপ এগিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ভোটার তালিকা হালনাগাদের পর এবার নতুন দলের নিবন্ধনের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।
২ ঘণ্টা আগেগত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার তুর্কের সাম্প্রতিক মন্তব্যের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। গতকাল সোমবার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক বিবৃতিতে প্রতিক্রিয়াটি তুলে ধরা
৫ ঘণ্টা আগেএস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তাঁর পরিবারের স্বার্থসংশ্লিষ্টদের নামে থাকা ১ হাজার ৬ বিঘা জমি ক্রোকের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন এই নির্দেশ দেন।
৫ ঘণ্টা আগেঅগাস্টে দেশে ফেরার পর মুহাম্মদ ইউনূসের সামনে ছিল এক ভয়াবহ বাস্তবতা। ঢাকার রাস্তায় তখনও রক্তের দাগ শুকায়নি। মর্গে স্তূপ হয়ে থাকা শত শত লাশের গায়ে পুলিশের গুলির চিহ্ন। ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকার পর ছাত্রদের নেতৃত্বে এক গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন শেখ হাসিনা। জনগণের প্রতিশোধের ভয়ে দেশ ছেড়ে পালান তিনি।
৫ ঘণ্টা আগে