Ajker Patrika

‎শিক্ষা-স্বাস্থ্য খাত রাষ্ট্রের দায়িত্ব, ব্যবসার পণ্য নয়: প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
‎প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। ছবি: আজকের পত্রিকা
‎প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেছেন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য কখনোই প্রাইভেট খাতের হাতে ছেড়ে দেওয়ার মতো বিষয় নয়, এগুলো রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব হওয়া উচিত। জাতীয় উন্নয়নের পথে এগোতে চাইলে জনগণকে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী এবং সুশিক্ষিত নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।

‎আজ ‎শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে নিমো লার্নিং-এর আয়োজনে ‘সাক্ষরতায় বাংলাদেশের অর্জন এবং আগামীর পরিকল্পনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

‎‎তিনি বলেন, ‘আমরা ক্রমেই স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মতো জাতীয় বিষয়কে প্রাইভেট বিষয় করে তুলেছি। এতে মুষ্টিমেয় কিছু ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর লাভ হয়েছে। যদি জাতীয় স্বার্থের কথা চিন্তা করেন তা কখনোই রক্ষিত হয় না। শ্রমিক যদি শারীরিকভাবে সক্ষম না হয় তাহলে কীভাবে কারখানায় কাজ করবে। শ্রমিক যদি বেসিক শিক্ষায় শিক্ষিত না হয় তাহলে কীভাবে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন কারখানায় নিয়ে আসবে। উপযুক্ত শিক্ষা হচ্ছে না বলেই একটা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় সমাজে। তাই এটা নিয়ে আমাদের ভাবা দরকার।’ ‎

উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘‎সুস্বাস্থ্য ও সুশিক্ষা কখনোই প্রাইভেট বিষয় হতে পারে না, বরং রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব হিসেবে দেখতে হবে। পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রম বাড়াতে হবে। তবেই জাতি হিসেবে আমরা এগোতে পারব, না হলে একই চক্রে ঘুরপাক খেতে হবে।’

‎‎তিনি বলেন, আমাদের দেশে স্বাস্থ্য ও শিক্ষাকে ধীরে ধীরে জাতীয় দায়িত্ব থেকে প্রাইভেট খাতে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে মুষ্টিমেয় গোষ্ঠী লাভবান হলেও জাতীয় স্বার্থ রক্ষা হয়নি। শিক্ষা ব্যবস্থায় বিভাজন তৈরি হয়েছে—একদিকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, অন্যদিকে প্রাইভেট ও ইংলিশ মিডিয়াম। এই বিভাজনই শিক্ষার ঐক্য নষ্ট করছে। ‎

‎বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার মনে করেন, ১৯৯০ সালে প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার আইন করা হলেও তা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা হয়নি। তার ভাষায়, ‘যদি প্রাথমিক শিক্ষা আইন অনুযায়ী বাধ্যতামূলক হয়, তবে এত বিপুলসংখ্যক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কেন গড়ে উঠল? সরকারি স্কুলগুলো কেন মানসম্পন্ন শিক্ষা দিতে পারল না? এর দায় রাষ্ট্রকেই নিতে হবে।’

‎উপদেষ্টা বলেন, উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর যেই পরিবর্তনগুলো দেখছেন সেই পরিবর্তনগুলো বর্তমান সময়েরই পরিবর্তন। কারণ আমাদের উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা বোর্ডকে বলতে পারেন একটি বাজে প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছিল। সেটাকে আমরা একটা নতুন পথে নিয়ে যাচ্ছি এবং সেটা আস্তে আস্তে আপনাদের সবার দৃষ্টিগোচর হয়ে উঠবে যখন চারদিকে ছড়িয়ে পড়বে আমাদের কার্যক্রমগুলো।

‎‎যেই দেশ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে তারাই এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘দক্ষ জনবল প্রয়োজনের মূলই হলো শিক্ষা। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ চীনের কথা কল্পনা করেন। যদিও দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন করেছি ১৯৭১ সালে। কিন্তু আমরা স্বাধীন হয়েছি ব্রিটিশদের কাছ থেকে ১৯৪৭ সালে। চীন স্বাধীন হয়েছে দুই বছর পর ১৯৪৯ সালে। তারা কোথায় আজকে আর আমরা কোথায়। তাদের পলিসিতে তিনটা বিষয় তারা ঠিক রেখেছে, একটি হলো স্বাস্থ্য, দ্বিতীয়টি শিক্ষা আর তৃতীয়টি সামাজিক শৃঙ্খলা। এই তিনটা মূল মন্ত্রে চীন আজ এগিয়ে যাচ্ছে। যারা এটা পারছে না, তারা কোনো দিন এগোতে পারবে না। তারা বিশৃঙ্খলা মধ্যেই পড়ে থাকবে। ফলে জাতীয়ভাবে যদি চিন্তা করি, আমাদের প্রয়োজন জনগণকে সুস্বাস্থ্যবান এবং সুশিক্ষিত গড়ে তোলা। এছাড়া উন্নয়নের কোনো পথ নেই। দেশের উন্নয়নের জন্য শিক্ষার প্রয়োজন।’

‎উপদেষ্টা বলেন, কাগজে কলমে আমাদের মধ্যে এক ধরনের পরিবর্তন অবশ্যই ঘটেছে। কিন্তু আমরা প্রকৃত অর্থে ব্রিটিশরা আমাদের যা শিখিয়ে গেছে তার থেকে একচুলও এগোয়নি। আমাদের শিক্ষার উদ্দেশ্য কি কেরানি তৈরি করা। এখনো তাই, এর বেশি কিছুই না। বাস্তবিকভাবে বিষয়টি ভাবেন, আমাদের আয়ের বড় উৎস হলো প্রবাসীদের আয়। কিন্তু তারা সবচেয়ে কম আয় করেন কারণ তাদের শিক্ষার স্তরটা খুবই দুর্বল। তাহলে জাতীয়ভাবে চিন্তা করলে শিক্ষার প্রয়োজন। ‎

‎নিমো লার্নিংয়ের চেয়ারম্যান জাফর রেজা চৌধুরীর সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. সিদ্দিকুর রহমান। পরে আলোচনায় অংশ নেন গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব সোহরাব হাসান, সাবেক শিক্ষিকা ও অভিনেত্রী দিলারা জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. কুতুবউদ্দিন, বিএনসিসির সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) নাহিদুল ইসলাম খান।

‎সাংবাদিক সোহরাব হাসান বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষা শিক্ষার ভিত তৈরি করে। বাংলাদেশে প্রাথমিক শিক্ষাকে বেশি অবহেলার চোখে দেখা হয়। এটা এখন বিশ্ববিদ্যালয়েও দেখা যাচ্ছে। তা না হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা ছেড়ে কেন বিসিএসে যান। উন্নত দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে সমাজের অভিভাবক ভাবা হয়। কিন্তু স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও আমরা শিক্ষকদের সেই মর্যাদা দিতে পারিনি।’

‎‎বিএনসিসির সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাহিদুল ইসলাম খান বলেন, ‘আপনারা রাস্তায় বের হয়েই দেখেন শিশুরা কাজ করছে। আমরা তাদের শিক্ষা দিতে পারছি না। তাই হঠাৎ করে কি শিশুশ্রম বন্ধ করে দিতে পারবেন? তাদের খাবারটা দেবে কে? পথশিশুটিকে আনবেন পড়াশোনার জন্য, সে কি আসবে? তাঁকে ইনসেনটিভ দিতে হবে তাহলেই আসবে। যারা শিক্ষাটা দেবে তাদেরও ইনসেনটিভ দিতে হবে। তাহলেও সেই পদক্ষেপ বাস্তবায়ন সম্ভব।’

‎তিনি আরও বলেন, ‘ন্যূনতম শিক্ষা না থাকায় বিদেশেও আমরা শ্রমিক পাঠাতে পারছি না। যদি এটা দেওয়া সম্ভব হতো তাহলে বিদেশেও লোক পাঠানো যেত।’

এ সময় দেশের নানা পদ্ধতির সমালোচনা করে ‎বিএনসিসির সাবেক মহাপরিচালক বলেন, আমরা নিজেরা যদি সবকিছুর দায় নিয়ে কাজ করি, তাহলেই দেশ এগিয়ে যাবে। দেশে ভালো যত আইন ও ব্যবস্থা রয়েছে সেসব যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা দরকার।’

‎‎উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক দেবব্রত চক্রবর্তী বলেন, ‘কার্যকর সাক্ষরতা নিয়ে কাজ করছি। স্কুল থেকে শিক্ষার্থীরা নানা কারণে ঝরে যায়। তারা স্কুলে আসছে না। তাই আমরাই তাদের কাছে যাচ্ছি। তাদের শিক্ষার পাশাপাশি তাদের বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষতা অর্জনের কাজ শিখাচ্ছি। এতে দ্রুতই তারা চাকরিও পেয়ে যাচ্ছেন। আমরা এই শিক্ষার পরিসরটা আরও বাড়ানোর চেষ্টা করছি। মানসম্মত শিক্ষাটা বাড়াতে হবে। গ্রাম ও শহরের বৈষম্যটা অবশ্যই কমাতে হবে।’

‎‎অভিনেত্রী দিলারা জামান বলেন, ‘বাচ্চারা শিখবে আনন্দের ভেতর দিয়ে ভালোবাসার ভেতর দিয়ে। প্রচলিত পড়া ও পদ্ধতি আমি সেখান থেকে আলাদা হয়ে ক্লাসে সবাইকে নিয়ে হেসে নেচে গেয়ে বাচ্চাদের ভেতরে নতুন কিছু দিতে চেষ্টা করেছিলাম। সেখানে আসত খালি বাধা আর বাধা। অতঃপর সেই স্থান ত্যাগ করে আমি চলে এলাম জনগণের মাঝে। আমি জানি না সেটা আমার জন্য কতখানি অভিশাপের ব্যাপার হয়েছিল বা কষ্টের ব্যাপার হয়েছিল যার প্রায়শ্চিত্ত করার জন্যই আজকে এখানে ছুটে আসা।’

‎তিনি বলেন, ‘যত কমিশন হয়েছে, যা কিছু হয়েছে আমার মনে হয়েছে আমরা বাচ্চাদের কাছে যেতে পারছি না। কী কারণে যেতে পারিনি, তা নানা সময়ে আলোচনা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাগেরহাটের ৪টি আসন বহাল, ফিরল না গাজীপুর ৬

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ৪৯
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বাগেরহাটের ৪টি আসন পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা লিভ টু আপিল খারিজ করে আজ বুধবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগ সর্বসম্মতিতে এ আদেশ দেন।

এর ফলে বহাল থাকল বাগেরহাটের চারটি আসন। বাদ পড়েছে গাজীপুর-৬ আসনটিও।

এর আগে বাগেরহাটের আসন একটি কমিয়ে তিনটি করা এবং গাজীপুরে একটি বাড়ানো-সংক্রান্ত নির্বাচন কমিশনের গেজেট চ্যালেঞ্জ করে রিট করা হয়। শুনানি শেষে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত বাতিল করে গত ১০ নভেম্বর হাইকোর্ট রায় দেন।

হাইকোর্টের রায় ঘোষণার পরপরই তা স্থগিত চেয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) এবং গাজীপুর-৬ আসন থেকে জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী ড. হাফিজুর রহমান ও বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী মো. সালাহ উদ্দিন সরকার আপিল বিভাগে পৃথক আবেদন করেন।

নির্বাচন কমিশনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। ড. হাফিজুর রহমানের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার বেলায়েত হোসেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে বঙ্গভবনে সিইসি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৪
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছেন সিইসি। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছেন সিইসি। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনাররা বঙ্গভবনে পৌঁছেছেন।

বঙ্গভবনের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন, আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ইসির বৈঠকের শিডিউল রাখা আছে।

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট উপলক্ষে নির্বাচন কমিশনের সার্বিক প্রস্তুতি ও তফসিল ঘোষণা বিষয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে আলোচনা করতে বঙ্গভবনে গেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন। সিইসি দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে বঙ্গভবনে পৌঁছান।

এর আগে ১০টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন ভবন থেকে বঙ্গভবনের উদ্দেশে রওনা হন তিনি।

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে রয়েছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ (অবসরপ্রাপ্ত), তাহমিদা বেগম, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার ও আব্দুর রহমানেল মাছউদ এবং ইসি সচিব আখতার আহমেদ।

উল্লেখ্য, চলতি সপ্তাহেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা রয়েছে। তফসিল-সংক্রান্ত ভাষণ রেকর্ড করতে ইতিমধ্যে বিটিভি ও বাংলাদেশ বেতারকে চিঠিও দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাংলাদেশের ‘টাঙ্গাইল শাড়ি বুনন শিল্প’ অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, ইউনেসকোর স্বীকৃতি

বাসস, ঢাকা  
টাঙ্গাইল শাড়িতে অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা মিম। ছবি: ফেসবুক
টাঙ্গাইল শাড়িতে অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা মিম। ছবি: ফেসবুক

টাঙ্গাইলের শাড়ি বুনন শিল্পকে অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেসকো। গতকাল মঙ্গলবার ভারতের নয়াদিল্লিতে ইউনেসকো কনভেনশনের চলমান ২০তম আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এই কনভেনশনের আওতায় এটি বাংলাদেশের ষষ্ঠ একক নিবন্ধন। সভায় প্রথমবারের মতো সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর বিগত চার বছরে এটি দ্বিতীয় নিবন্ধন।

সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের প্রধান এবং ইউনেসকো সাধারণ পরিষদের সভাপতি ও বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জানান, ‘এই স্বীকৃতি বাংলাদেশের জন্য অসামান্য গৌরবের বিষয়। দীর্ঘ দুই শতকের বেশি সময় ধরে টাঙ্গাইলের তাঁতিদের অনবদ্য শিল্পকর্মের বৈশ্বিক স্বীকৃতি এটি।’

তিনি আরও বলেন, ‘টাঙ্গাইল শাড়ি বাংলাদেশের সকল নারীর নিত্য পরিধেয়, যা এই শাড়ি বুনন শিল্পের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনের পেছনে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে।’

এই অর্জনকে বাংলাদেশের সকল তাঁতি ও নারীদের প্রতি উৎসর্গ করেছেন রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা।

বাংলাদেশের অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সামগ্রিক সুরক্ষায় এই স্বীকৃতি নতুন মাত্রা যোগ করবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত তালহা বলেন, ঐতিহ্য হিসেবে ইউনেসকোর স্বীকৃতি অর্জনের মতো বাংলাদেশের অপরিমেয় সাংস্কৃতিক উপাদান রয়েছে।

নথি প্রস্তুত করার সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং কনভেনশন সংক্রান্ত অভিজ্ঞ জনবল তৈরি করার মাধ্যমে আরও অনেক ঐতিহ্যের ইউনেসকো-স্বীকৃতি অর্জনের সুযোগ রয়েছে।

এর আগে, গত ৭ ডিসেম্বর আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের চলমান ২০তম সভা উদ্বোধন করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শংকর। অনুষ্ঠানে ইউনেসকোর নবনিযুক্ত মহাপরিচালক খালেদ এল. এনানি উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজ সংবাদ সম্মেলনে আসছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ৩৪
ভারতকে হারানোর পর ২ কোটি টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।ছবি: ফাইল ছবি
ভারতকে হারানোর পর ২ কোটি টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।ছবি: ফাইল ছবি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তোড়জোড়ের মধ্যে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে আসছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

সমসাময়িক বিষয়ে আজ বুধবার বেলা ৩টায় স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলনকক্ষে আসিফ মাহমুদের সংবাদ সম্মেলন হবে বলে মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।

সমসাময়িক কোন বিষয়ে আসিফ মাহমুদ সংবাদ সম্মেলনে কথা বলবেন, মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণপত্রে তা উল্লেখ করা হয়নি। তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজকের সংবাদ সম্মেলন থেকে উপদেষ্টা পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিতে পারেন তিনি।

আজ রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করার পর ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার জন্য ভাষণের রেকর্ড করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। আজ সন্ধ্যায় বা আগামীকাল বৃহস্পতিবার এই তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমও আজ পদত্যাগের ঘোষণা দিতে পারেন বলে আলোচনা রয়েছে।

উপদেষ্টার পদে থেকে নির্বাচন করতে আইনি বাধা না থাকলেও তফসিল ঘোষণার আগে সরকারে থাকা দুজন ছাত্র উপদেষ্টা পদত্যাগ করবেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনে অন্যতম সমন্বয়ক হিসেবে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আসিফ মাহমুদ। তাঁদের আন্দোলন একপর্যায়ে সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনে রূপ নেয়। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয় আওয়ামী লীগ সরকার। এরপর ওই বছরের ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। এই সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন আসিফ মাহমুদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত