Ajker Patrika

জাতীয় ঐক্যের ডাক দিতে প্রধান উপদেষ্টার সংলাপ শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০: ১৫
Thumbnail image
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান রাজনৈতিক দল ও ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে সংলাপে অংশ করবেন। এরই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ছাত্রনেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি। আগামীকাল বুধবার রাজনৈতিক দল ও বৃহস্পতিবার ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে সংলাপ করবেন প্রধান উপদেষ্টা।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আরও উপস্থিত ছিলেন উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও অপূর্ব জাহাঙ্গীর।

শফিকুল আলম বলেন, আজকে (মঙ্গলবার) একটু জরে প্রধান উপদেষ্টা ছাত্রনেতাদের সঙ্গে বসবেন। আগামীকাল (বুধবার) বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে সংলাপ হবে। পরদিন (বৃহস্পতিবার) ধর্মীয় নেতাদের সংলাপ আহ্বান আহ্বান করেছেন। এসব বৈঠকের উদ্দেশ্য হচ্ছে জাতীয় ঐক্য। তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) জাতীয় ঐক্যের ডাক দেবেন।

কি বিষয়ে জাতীয় ঐক্যের ডাক দেবেন প্রধান উপদেষ্টা এমন প্রশ্নে শফিকুল আলম বলেন, ইদানীং কিছু ঘটনা নিয়ে বৃহৎ পরিসরে অপতথ্য ছড়ানোর প্রয়াস আমরা দেখছি। অনেকাংশেই দেখছি ভারতীয় গণমাধ্যম খুবই আক্রমণাত্মকভাবে এগুলো করছে। সেটার জন্য জাতীয়ভাবে ঐক্য তৈরি আমাদের বলতে হবে, তোমরা আসো, দেখ কি হচ্ছে। একই সঙ্গে আমাদের জাতীয় ঐক্যটাও ধরে রাখা। আমাদের দেশকে নিয়ে অপতথ্য ছড়ানো হচ্ছে। এখানে ইমেজের প্রশ্ন আছে। সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে এ অপতথ্য প্রচারের বিরুদ্ধে নামতে হবে। গণমাধ্যমগুলো আহ্বান করব বাংলাদেশ নিয়ে কি ভয়ানক ধরনের মিথ্যা তথ্য ছড়ানো তার জবাব দিয়ে সত্যতা তুলে ধরতে। এটা জাতীয় দায়িত্ব বলে মনে করি।

বুধবার বিকেল চারটা থেকে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ হবে প্রধান উপদেষ্টার। ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে সংলাপের সময় এখনো ঠিক হয়নি।

গত আগস্টে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কথা হয় জানিয়ে শফিকুল আলম বলেন, সেসময় প্রধান উপদেষ্টা নরেন্দ্র মোদীকে বাংলাদেশে ভারতীয় সাংবাদিকদের ভ্রমণের আমন্ত্রণ জানিয়ে ছিলেন। সেখানে তাদের অনুসন্ধান করার জন্য বলেন। সেখানে সহিংসতা হচ্ছে কিনা তা খুঁজে বের করতে বলেন। আর আমরা (প্রেস উইং) ভারতীয় গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছি, তাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছি।

তিনি বলেন, তারা তথ্য পাচ্ছে তাদের সমমনা যারা পড়ছেন, সেটা হতে তথ্য নিচ্ছেন। অনেক ক্ষেত্রে নাম ছাড়া তথ্য নিচ্ছেন। আবার তারা তথ্য নিচ্ছেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদে থেকেও তথ্য নিচ্ছেন। নেত্র নিউজ দেখিয়েছে তাদের তথ্যে বড় রকমের গলদ আছে। নয়জনের মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে। কিন্তু তার কোনো মৃত্যু সাম্প্রদায়িক কারণে হয়নি। মৃত্যুগুলোর পেছনে ছিল রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত। সংগঠনটি নেত্র নিউজের প্রতিবেদনের নিয়ে কোনো প্রতিবাদ জানায়নি। তারা এটাও বলেনি আমরা ঘটনাগুলো পুনরায় দেখি। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো বাংলাদেশ পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানান প্রেস সচিব। তিনি বলেন, আমরা খুবই স্বচ্ছ। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে অনেকেই চোখ, কান, নাক বন্ধ রেখে, বধিরের মতো থেকে বলছে, সে (ভারত) যেটাই বলছে সেটাই সত্য। আমরা বারবার বলছি কিন্তু আমাদের কথাটা শুনেও না শোনার ভাব করছে তারা।

বাংলাদেশ নিয়ে অপতথ্যের চালানোর ফলাফল হলো আগরতলা উপহাইকমিশনে হামলা বলে জানান শফিকুল আলম। তিনি বলেন, এটার জন্য দায় চাপাব ভারতীয় গণমাধ্যমকে। এ গণমাধ্যম কোনো তথ্য নিশ্চিত হওয়া ছাড়া মিথ্যা অপতথ্য ছড়াচ্ছে। তারা আগেই নির্ধারণ করে দিচ্ছে বাংলাদেশে কি হচ্ছে। অবস্থান পূর্বনির্ধারিত থাকলে বেশি এগোনো যায় না। ফলে ভারতীয় জনগণ সহিংসতা করছে। বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে আমন্ত্রণ জানান প্রেস সচিব।

ভারতীয় অপপ্রচারের বিষয়ে সরকার কার্যক্রম তুলে ধরে তিনি বলেন, কূটনীতিক চ্যানেলে কথাবার্তা হচ্ছে। বাংলাদেশের বিদ্যমান ব্যবস্থায় এর চেয়ে বেশি করণীয় নেই। আমরা আশা করি আমাদের সিটিজেন গ্রুপ, ডায়াসপোরা গ্রুপ, রাজনৈতিক দল, সিভিল সোসাইটির এ বিষয়ে সোচ্চার হওয়া উচিত। তারা আমাদের নিয়ে অপতথ্য ছড়াচ্ছে। পুরো জাতিকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর অপচেষ্টা করছে।

এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, আমরা ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক চাই। তারা আমাদের বৃহৎ প্রতিবেশী। আমরা মনে করি এ সুসম্পর্ক হতে হবে ন্যায্যতা ও সমতার ভিত্তিতে।

শেভরনের ভাইস প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকের বিষয়টি তুলে ধরে প্রেস সচিব বলেন, বাংলাদেশের গ্যাস উৎপাদনের ৬০ শতাংশ শেভরনের কূপ থেকে আসে। তারা আবার বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার ইচ্ছে করেছেন। তারা ব্লক ১০ ও ১১ ব্লকে কূপ খননের প্রস্তাব দেবে। বাংলাদেশে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি উন্নীত হচ্ছে। গ্যাসের নতুন চাহিদা হচ্ছে। তারা জ্বালানি উপদেষ্টার সঙ্গেও বসবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত