আমানুর রহমান রনি, ঢাকা
শুধু রাত নয়, দিনদুপুরেও মহাসড়কে বাসে ডাকাতি হয়েছে। রাতে সড়ক-মহাসড়কে বাসসহ যানবাহনে একের পর এক ডাকাতিতে তৈরি হওয়া আতঙ্কে নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে গত রোববার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে বেলা দুইটায় সাভারের রেডিও কলোনি এলাকার এই ডাকাতি। রাতের মতো দিনেও যেন অরক্ষিত মহাসড়ক।
হাইওয়ে পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গত দেড় মাসে দেশের বিভিন্ন মহাসড়কে ডাকাতির ঘটনায় ১৬টি মামলা হয়েছে। সূত্র বলছে, সড়কে ডাকাতির প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি। ডাকাত-আতঙ্কে রাতে দূরপাল্লার বাসের যাত্রী কমেছে। এ পরিস্থিতির জন্য যাত্রী ও সংশ্লিষ্টরা দায়ী করছেন পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা, টহল না থাকা ও ঢিলেঢালা নিরাপত্তাকে। তবে সামর্থ্য অনুযায়ী নিরাপত্তা দেওয়ার দাবি করে পুলিশ বলছে, ডাকাতি প্রতিরোধে বাসযাত্রীদের ভিডিও করাসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
মহাসড়কে বাসে ডাকাতির সর্বশেষ ঘটনা ঘটেছে রোববার বেলা দুইটায়, সাভারের রেডিও কলোনি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে। আশুলিয়ার নন্দন পার্ক থেকে ঢাকার মিরপুরগামী রাজধানী পরিবহন নামের একটি বাসের যাত্রীরা এই ডাকাতির শিকার হন। পুলিশ ও ভুক্তভোগীদের সূত্র জানায়, রেডিও কলোনি স্ট্যান্ডে দুজন যাত্রী নামবে জানিয়ে দরজায় গেলে বাস থামান চালক। তবে ওই দুজন নামেনি।
সেখান থেকে আরও চারজন চাপাতিসহ ধারালো অস্ত্র নিয়ে ওঠে। তারা চলন্ত বাসে যাত্রীদের ভয় দেখিয়ে টাকা, মোবাইল ফোনসেট, মানিব্যাগ, স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র কেড়ে নেয়। কয়েকজন যাত্রীকে মারধরও করা হয়। পরে ডাকাতেরা সাভারের ব্যাংক টাউন এলাকায় বাস থামিয়ে নেমে যায়।
নাজমুল হাসান নামের ভুক্তভোগী এক যাত্রী বলেন, তিন-চার মিনিটে যাত্রীদের সব কেড়ে ডাকাতেরা নেমে গেছে।
এর আগে ১৪ ফেব্রুয়ারি একই এলাকায় আরেকটি বাসের যাত্রীদের জখম করে মুঠোফোন, মানিব্যাগসহ মূল্যবান মালপত্র ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটে।
মহাসড়কে ডাকাতির সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটে ১৭ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে। ঢাকার গাবতলী থেকে রাত ১১টায় ছেড়ে রাজশাহী যাচ্ছিল ইউনিক রোড রয়েলস নামের বাসটি। রাত সাড়ে ১২টার দিকে বাসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে যাত্রীদের ওপর চড়াও হয় যাত্রীবেশী ডাকাতেরা। কয়েকজন যাত্রীকে ছুরিকাঘাত করা হয়। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে মহাসড়কে বাসটি চালিয়ে যাত্রীদের টাকা, মোবাইল, স্বর্ণালংকার, দামি জিনিস লুট এবং নারী যাত্রীর শ্লীলতাহানি করে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের নির্জন স্থানে ডাকাতেরা নেমে যায়। এ ঘটনার প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভও হয়েছে। দাবি উঠেছে সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার। ওই ঘটনায় মূল হোতাসহ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দায়িত্বে অবহেলার জন্য মির্জাপুর থানার এক এএসআইকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
কিন্তু এই ডাকাতির রেশ কাটতে না কাটতেই টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে ২৫ ফেব্রুয়ারি ভোররাতে সড়কে গাছ ফেলে স্কুলশিক্ষার্থীদের শিক্ষাসফরের চারটি বাসে ডাকাতি হয়। ডাকাতেরা গলায় রামদা, ছুরি ঠেকিয়ে টাকা, মোবাইল ফোনসেট, স্বর্ণালংকার লুট করে।
এ ছাড়া নওগাঁয় সড়কে গাছ ফেলে বিআরটিসির বাসে, পাবনায় সড়কে গাছ ১০টি যানবাহনে ডাকাতি, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে দুই দিন প্রবাসীকে বহনকারী গাড়িতে ডাকাতিসহ আরও কয়েকটি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এসব ডাকাতি হয়েছে রাতে।
সড়ক-মহাসড়কে ডাকাতের আতঙ্কে রয়েছেন যাত্রীরা। অনেকে রাতে যাত্রা করছেন না। কল্যাণপুরে গতকাল সকালে বিভিন্ন দূরপাল্লার বাসের কাউন্টারে গিয়ে কথা বলে জানা যায়, কিছুদিন ধরে রাতে যাত্রীসংখ্যা আগের চেয়ে অর্ধেকে নেমেছে। হানিফ পরিবহনের কাউন্টারে থাকা বাসচালক শমসের আলী বলেন, যাত্রী কম থাকায় ঢাকা-রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ রুটে হানিফ পরিবহনের বাসের সংখ্যা অর্ধেকে নেমেছে।
ওই কাউন্টারে বাসের অপেক্ষায় থাকা যাত্রী রিপন মাহমুদ বলেন, গত রোববার রাতে তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জে যেতে চেয়েছিলেন। তবে পরিবার রাতের বাসে যেতে না দেওয়ায় সকালে যাচ্ছেন। একই কথা জানান অন্য কয়েকটি বাসের কাউন্টারে অপেক্ষমাণ কয়েকজন যাত্রী।
কল্যাণপুরে হানিফ পরিবহনের উত্তরবঙ্গগামী বাসের কাউন্টারের ব্যবস্থাপক কাজী আক্তারুজ্জামান বলেন, যাত্রীদের মধ্যে একটা আতঙ্ক রয়েছে। অনেকে রাতের যাত্রা বাতিল করে দিনে যাচ্ছেন। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে যাত্রী কমে অর্ধেকে নেমেছে। আগে যে রুটে ৩০টি বাস চলত, সেই রুটে এখন ১৫টি বা সর্বোচ্চ ১৮টি বাস চলে। তিনি বলেন, তাঁদের কোম্পানির বাসের গেট বন্ধ থাকে। কাউন্টার ও হোটেল বিরতি ছাড়া কোথাও বাস থামে না। নিরাপত্তার জন্য কোনো উদ্যোগের বিষয় পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁদের জানানো হয়নি।
বাসে ডাকাতি-ছিনতাইয়ের জন্য কয়েকজন যাত্রী দুষলেন মহাসড়কে পুলিশের ঢিলেঢালা নিরাপত্তা ও টহলকে। কল্যাণপুরে ঢাকা-রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ রুটের গ্রামীণ পরিবহনের যাত্রী রবিউল ইসলাম বলেন, তিনি নাটোর থেকে প্রায়ই ঢাকায় আসেন। মাঝেমধ্যে সকালে দেখলেও মহাসড়কে দিনরাতের বেশির ভাগ সময়ে টহল পুলিশ দেখেন না।
কয়েকজন যাত্রী অভিযোগ করেন, বড় পরিবহন কোম্পানি তাদের কাউন্টার ছাড়া বাস না থামালেও লোকাল ধরনের বাসগুলো পথে পথে যাত্রী ওঠায়। এটি বড় ঝুঁকির। যাত্রীরা নিষেধ করলেও চালক-সহকারীরা শোনেন না।
বেশ কয়েকজন যাত্রী বলেন, একসময় বিলাসবহুল নৈশকোচের যাত্রীদের কাউন্টারে বা ছাড়ার আগে বাসে ভিডিও করা হতো। কয়েক বছর ধরে তা বন্ধ। পথে যাত্রী না তুললে এই পদক্ষেপ বাসে ডাকাতি প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে। কিন্তু দূরপাল্লার অনেক বাসই প্রারম্ভিক কাউন্টার ছাড়াও পথে বিভিন্ন কাউন্টার থেকে যাত্রী তোলে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম পথের এক যাত্রী বলেন, ইদানীং কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনীসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামগামী কিছু বিলাসবহুল বাস উড়ালসড়ক থেকেও যাত্রী তোলে।
দেশের মহাসড়কের নিরাপত্তার দায়িত্ব হাইওয়ে পুলিশের। থানা-পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে নিরাপত্তা দেওয়ার কথা। তবে থানা-পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশের মধ্যে সমন্বয়হীনতার অভিযোগ রয়েছে। থানা-পুলিশ মহাসড়কের দায় নিতে চায় না। হাইওয়ে পুলিশ বলছে, মহাসড়কের দৈর্ঘ্য অনুপাতে তাদের জনবল কম।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, সারা দেশে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে, তারই ধারাবাহিকতায় মহাসড়কে ডাকাতি হচ্ছে। পুলিশ হামলার শিকার হওয়ায় আশঙ্কায় কাজ করছে না। থানা-পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ মিলে দায়িত্ব পালন করলে এই সমস্যার সমাধান হবে।
তবে সামর্থ্য অনুযায়ী নিরাপত্তা দেওয়ার দাবি করছে পুলিশ। হাইওয়ে পুলিশ বলেছে, ৬ জানুয়ারি থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১৬টি ডাকাতির মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ৩৪ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ডাকাতি প্রতিরোধে বাসের যাত্রীদের ভিডিও ধারণ, বাসে সাদাপোশাকে পুলিশের অবস্থান, কুইক রেসপন্স টিম গঠন এবং একসঙ্গে ৮-১০টি বাস পাহারা দিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মহাসড়কে যৌথ বাহিনীর টহল বাড়ানো হয়েছে।
এ বিষয়ে হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি (অপস) শফিকুর রহমান বলেন, ডাকাতির ঘটনাগুলো কয়েক দিন ধরে ঘটছে। এ জন্য হাইওয়ে পুলিশ বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে পরিবহনের নিশ্চয়তা দিতে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
শুধু রাত নয়, দিনদুপুরেও মহাসড়কে বাসে ডাকাতি হয়েছে। রাতে সড়ক-মহাসড়কে বাসসহ যানবাহনে একের পর এক ডাকাতিতে তৈরি হওয়া আতঙ্কে নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে গত রোববার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে বেলা দুইটায় সাভারের রেডিও কলোনি এলাকার এই ডাকাতি। রাতের মতো দিনেও যেন অরক্ষিত মহাসড়ক।
হাইওয়ে পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গত দেড় মাসে দেশের বিভিন্ন মহাসড়কে ডাকাতির ঘটনায় ১৬টি মামলা হয়েছে। সূত্র বলছে, সড়কে ডাকাতির প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি। ডাকাত-আতঙ্কে রাতে দূরপাল্লার বাসের যাত্রী কমেছে। এ পরিস্থিতির জন্য যাত্রী ও সংশ্লিষ্টরা দায়ী করছেন পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা, টহল না থাকা ও ঢিলেঢালা নিরাপত্তাকে। তবে সামর্থ্য অনুযায়ী নিরাপত্তা দেওয়ার দাবি করে পুলিশ বলছে, ডাকাতি প্রতিরোধে বাসযাত্রীদের ভিডিও করাসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
মহাসড়কে বাসে ডাকাতির সর্বশেষ ঘটনা ঘটেছে রোববার বেলা দুইটায়, সাভারের রেডিও কলোনি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে। আশুলিয়ার নন্দন পার্ক থেকে ঢাকার মিরপুরগামী রাজধানী পরিবহন নামের একটি বাসের যাত্রীরা এই ডাকাতির শিকার হন। পুলিশ ও ভুক্তভোগীদের সূত্র জানায়, রেডিও কলোনি স্ট্যান্ডে দুজন যাত্রী নামবে জানিয়ে দরজায় গেলে বাস থামান চালক। তবে ওই দুজন নামেনি।
সেখান থেকে আরও চারজন চাপাতিসহ ধারালো অস্ত্র নিয়ে ওঠে। তারা চলন্ত বাসে যাত্রীদের ভয় দেখিয়ে টাকা, মোবাইল ফোনসেট, মানিব্যাগ, স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র কেড়ে নেয়। কয়েকজন যাত্রীকে মারধরও করা হয়। পরে ডাকাতেরা সাভারের ব্যাংক টাউন এলাকায় বাস থামিয়ে নেমে যায়।
নাজমুল হাসান নামের ভুক্তভোগী এক যাত্রী বলেন, তিন-চার মিনিটে যাত্রীদের সব কেড়ে ডাকাতেরা নেমে গেছে।
এর আগে ১৪ ফেব্রুয়ারি একই এলাকায় আরেকটি বাসের যাত্রীদের জখম করে মুঠোফোন, মানিব্যাগসহ মূল্যবান মালপত্র ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটে।
মহাসড়কে ডাকাতির সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটে ১৭ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে। ঢাকার গাবতলী থেকে রাত ১১টায় ছেড়ে রাজশাহী যাচ্ছিল ইউনিক রোড রয়েলস নামের বাসটি। রাত সাড়ে ১২টার দিকে বাসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে যাত্রীদের ওপর চড়াও হয় যাত্রীবেশী ডাকাতেরা। কয়েকজন যাত্রীকে ছুরিকাঘাত করা হয়। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে মহাসড়কে বাসটি চালিয়ে যাত্রীদের টাকা, মোবাইল, স্বর্ণালংকার, দামি জিনিস লুট এবং নারী যাত্রীর শ্লীলতাহানি করে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের নির্জন স্থানে ডাকাতেরা নেমে যায়। এ ঘটনার প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভও হয়েছে। দাবি উঠেছে সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার। ওই ঘটনায় মূল হোতাসহ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দায়িত্বে অবহেলার জন্য মির্জাপুর থানার এক এএসআইকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
কিন্তু এই ডাকাতির রেশ কাটতে না কাটতেই টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে ২৫ ফেব্রুয়ারি ভোররাতে সড়কে গাছ ফেলে স্কুলশিক্ষার্থীদের শিক্ষাসফরের চারটি বাসে ডাকাতি হয়। ডাকাতেরা গলায় রামদা, ছুরি ঠেকিয়ে টাকা, মোবাইল ফোনসেট, স্বর্ণালংকার লুট করে।
এ ছাড়া নওগাঁয় সড়কে গাছ ফেলে বিআরটিসির বাসে, পাবনায় সড়কে গাছ ১০টি যানবাহনে ডাকাতি, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে দুই দিন প্রবাসীকে বহনকারী গাড়িতে ডাকাতিসহ আরও কয়েকটি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এসব ডাকাতি হয়েছে রাতে।
সড়ক-মহাসড়কে ডাকাতের আতঙ্কে রয়েছেন যাত্রীরা। অনেকে রাতে যাত্রা করছেন না। কল্যাণপুরে গতকাল সকালে বিভিন্ন দূরপাল্লার বাসের কাউন্টারে গিয়ে কথা বলে জানা যায়, কিছুদিন ধরে রাতে যাত্রীসংখ্যা আগের চেয়ে অর্ধেকে নেমেছে। হানিফ পরিবহনের কাউন্টারে থাকা বাসচালক শমসের আলী বলেন, যাত্রী কম থাকায় ঢাকা-রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ রুটে হানিফ পরিবহনের বাসের সংখ্যা অর্ধেকে নেমেছে।
ওই কাউন্টারে বাসের অপেক্ষায় থাকা যাত্রী রিপন মাহমুদ বলেন, গত রোববার রাতে তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জে যেতে চেয়েছিলেন। তবে পরিবার রাতের বাসে যেতে না দেওয়ায় সকালে যাচ্ছেন। একই কথা জানান অন্য কয়েকটি বাসের কাউন্টারে অপেক্ষমাণ কয়েকজন যাত্রী।
কল্যাণপুরে হানিফ পরিবহনের উত্তরবঙ্গগামী বাসের কাউন্টারের ব্যবস্থাপক কাজী আক্তারুজ্জামান বলেন, যাত্রীদের মধ্যে একটা আতঙ্ক রয়েছে। অনেকে রাতের যাত্রা বাতিল করে দিনে যাচ্ছেন। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে যাত্রী কমে অর্ধেকে নেমেছে। আগে যে রুটে ৩০টি বাস চলত, সেই রুটে এখন ১৫টি বা সর্বোচ্চ ১৮টি বাস চলে। তিনি বলেন, তাঁদের কোম্পানির বাসের গেট বন্ধ থাকে। কাউন্টার ও হোটেল বিরতি ছাড়া কোথাও বাস থামে না। নিরাপত্তার জন্য কোনো উদ্যোগের বিষয় পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁদের জানানো হয়নি।
বাসে ডাকাতি-ছিনতাইয়ের জন্য কয়েকজন যাত্রী দুষলেন মহাসড়কে পুলিশের ঢিলেঢালা নিরাপত্তা ও টহলকে। কল্যাণপুরে ঢাকা-রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ রুটের গ্রামীণ পরিবহনের যাত্রী রবিউল ইসলাম বলেন, তিনি নাটোর থেকে প্রায়ই ঢাকায় আসেন। মাঝেমধ্যে সকালে দেখলেও মহাসড়কে দিনরাতের বেশির ভাগ সময়ে টহল পুলিশ দেখেন না।
কয়েকজন যাত্রী অভিযোগ করেন, বড় পরিবহন কোম্পানি তাদের কাউন্টার ছাড়া বাস না থামালেও লোকাল ধরনের বাসগুলো পথে পথে যাত্রী ওঠায়। এটি বড় ঝুঁকির। যাত্রীরা নিষেধ করলেও চালক-সহকারীরা শোনেন না।
বেশ কয়েকজন যাত্রী বলেন, একসময় বিলাসবহুল নৈশকোচের যাত্রীদের কাউন্টারে বা ছাড়ার আগে বাসে ভিডিও করা হতো। কয়েক বছর ধরে তা বন্ধ। পথে যাত্রী না তুললে এই পদক্ষেপ বাসে ডাকাতি প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে। কিন্তু দূরপাল্লার অনেক বাসই প্রারম্ভিক কাউন্টার ছাড়াও পথে বিভিন্ন কাউন্টার থেকে যাত্রী তোলে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম পথের এক যাত্রী বলেন, ইদানীং কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনীসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামগামী কিছু বিলাসবহুল বাস উড়ালসড়ক থেকেও যাত্রী তোলে।
দেশের মহাসড়কের নিরাপত্তার দায়িত্ব হাইওয়ে পুলিশের। থানা-পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে নিরাপত্তা দেওয়ার কথা। তবে থানা-পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশের মধ্যে সমন্বয়হীনতার অভিযোগ রয়েছে। থানা-পুলিশ মহাসড়কের দায় নিতে চায় না। হাইওয়ে পুলিশ বলছে, মহাসড়কের দৈর্ঘ্য অনুপাতে তাদের জনবল কম।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, সারা দেশে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে, তারই ধারাবাহিকতায় মহাসড়কে ডাকাতি হচ্ছে। পুলিশ হামলার শিকার হওয়ায় আশঙ্কায় কাজ করছে না। থানা-পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ মিলে দায়িত্ব পালন করলে এই সমস্যার সমাধান হবে।
তবে সামর্থ্য অনুযায়ী নিরাপত্তা দেওয়ার দাবি করছে পুলিশ। হাইওয়ে পুলিশ বলেছে, ৬ জানুয়ারি থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১৬টি ডাকাতির মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ৩৪ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ডাকাতি প্রতিরোধে বাসের যাত্রীদের ভিডিও ধারণ, বাসে সাদাপোশাকে পুলিশের অবস্থান, কুইক রেসপন্স টিম গঠন এবং একসঙ্গে ৮-১০টি বাস পাহারা দিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মহাসড়কে যৌথ বাহিনীর টহল বাড়ানো হয়েছে।
এ বিষয়ে হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি (অপস) শফিকুর রহমান বলেন, ডাকাতির ঘটনাগুলো কয়েক দিন ধরে ঘটছে। এ জন্য হাইওয়ে পুলিশ বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে পরিবহনের নিশ্চয়তা দিতে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
সারা দেশে আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে মশার উৎপাত। কয়েক মাস ধরে এমন উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। রাজধানীতে দিনের বেলায় কোনো রকমে টিকতে পারলেও সন্ধ্যা হওয়ার পরপর ঘরে-বাইরে মশার যন্ত্রণায় দাঁড়ানোই দায় হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় আসন্ন গরমের মৌসুমে মশাবাহিত রোগের প্রকোপ বাড়ার আশঙ্কা করছেন জনস্বাস্থ্যবিদেরা।
৩ ঘণ্টা আগেঅন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং ভোট সম্ভবত এই বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে।
৮ ঘণ্টা আগেপ্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এমন একটি সমাজ গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন, যেখানে কোনো বেওয়ারিশ লাশ থাকবে না। তিনি বলেছেন, ‘এমন এক সমাজ চাই, যেখানে বেওয়ারিশ লাশ যেন না থাকে। আমাদের লক্ষ্যও সেটি।’
৮ ঘণ্টা আগেচলতি বছর ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) রোহিঙ্গা সংকট, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা সম্প্রদায় ও আশ্রয়দাতা স্থানীয় কমিউনিটি এবং মিয়ানমারের সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি মোকাবিলায় ৬৮ মিলিয়ন ইউরো সহায়তা দেবে। বিশেষ করে, মিয়ানমারের পশ্চিম রাখাইন রাজ্যে সহিংসতার শিকার মানুষের জন্য এ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
৮ ঘণ্টা আগে