Ajker Patrika

আইন করে ঋণখেলাপিদের বিমানে ওঠা বন্ধ করতে হবে: সংসদে সালমা ইসলাম 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১২ জুন ২০২৪, ২১: ২৮
আইন করে ঋণখেলাপিদের বিমানে ওঠা বন্ধ করতে হবে: সংসদে সালমা ইসলাম 

ব্যাংক লুটেরা, ঋণখেলাপি ও টাকা পাচারকারীদের সামাজিকভাবে বয়কট করার আহ্বান জানিয়ে সংরক্ষিত মহিলা আসনের জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সালমা ইসলাম বলেছেন, ‘সময় এসেছে ওদের সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে। জাতীয় সংসদে এমন আইন পাস করতে হবে যাতে তারা বিমানে উঠতে না পারে, ট্রেনের টিকিটি না পায়। কোনো দামি গাড়িতে চড়া তো দূরের কথা—যেন কোনো রিকশাওয়ালা তাদের নিতে ঘৃণা প্রকাশ করে। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিশেষ অনুরোধ করব, রাঘববোয়াল ঋণখেলাপি এবং অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হোক। একই সঙ্গে ওদের বাসা-বাড়ির সব ধরনের সার্ভিস বন্ধ করে দেওয়া হোক।’

আজ বুধবার জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন সালমা ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘করোনার কঠিন সংকট প্রধানমন্ত্রী সফলভাবে মোকাবিলা করতে পারলেও এখন তাঁকে বেশি হিমশিম খেতে হচ্ছে। এর জন্য দায়ী একশ্রেণির দুর্নীতিগ্রস্ত ও অর্থ পাচারকারী ব্যাংক লুটেরা। যারা বিভিন্ন সেক্টরে দুর্নীতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে দেশটাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে। যদিও সরকার এখন এসব রাঘব-বোয়ালদের শক্ত হাতে ধরা শুরু করেছে। এ জন্য আমি প্রধানমন্ত্রীকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাতে চাই।’

ঋণখেলাপি এবং নানাভাবে ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎকারীদের বিরুদ্ধে জাতীয় সংসদে কথা বলতে বলতে সবাই এখন ক্লান্ত দাবি করে সালমা ইসলাম বলেন, ‘কিন্তু খেলাপিরা ক্লান্ত হয়নি। মাঝেমধ্যে চুনোপুঁটিদের শাস্তি হলেও প্রভাবশালী খেলাপিরা আছেন বহাল তবিয়তে। বিশেষ করে প্রভাবশালীরা কখনো খেলাপি হন না। তাঁরা প্রভাব খাঁটিয়ে দফায় দফায় ঋণ পুনর্গঠন করে নেন। ফলে খেলাপির খাতায় তাঁদের নাম আর ওঠে না। এ ছাড়া নামে-বেনামে কারা মোটা অঙ্কের ঋণ নিয়ে কীভাবে কোন পদ্ধতিতে বিদেশে অর্থ পাচার করেছেন তা অনেকেই না জানলেও কিছু লোক তো জানেন। কয়েকটি ব্যাংকের এক শ্রেণির পরিচালকেরা কীভাবে এসব ঋণের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন সেটিও তদন্তের দাবি রাখে। এ জন্য ব্যাংক খেকোদের যদি আমরা আগে শাস্তি দিতে না পারি তাহলে দেশ আর ঠিক হবে না।’

ঋণখেলাপি ও অর্থ পাচারকারীদের সরকার ভালো করে চেনে-জানে দাবি করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার খুবই চৌকস। তাঁরা দুর্নীতিবাজ, ঋণখেলাপি ও অর্থ পাচারকারীদের চিনে না এ কথা কেউ বিশ্বাস করবে না। এ ছাড়া সমাজে যত ধরনের সিন্ডিকেটসহ বাজিকরদের জন্ম হয়েছে তাদের হাঁকডাক ও দম্ভ চিরতরে বন্ধ করে দিতে হবে। আর সরকার চাইলে সব পারে। এক রাতেই এসব ডাকাতদের লকাপে ঢোকাতে পারে। আমরা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার এমন সাহসী উদ্যোগ ও সিদ্ধান্ত দেখার অপেক্ষায় রইলাম। এই কঠিন কাজটা তিনি ছাড়া আর কেউ করতে পারবে না।’

বর্তমান ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কে জাতীয় পার্টির এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘বর্তমান ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশ এখন রাজনৈতিক সংকটের পাশাপাশি নানামুখী অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা করে চলেছে। যার বাইরে আমরাও নই। তবে ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আমদানিনির্ভর দেশ হওয়ায় আমরা ভীষণ বিপদে পড়ে গেছি। আমার মতে, বাংলাদেশ এখন কঠিন এক সংকটকালীন সময় পার করছে। কিন্তু আমি মনে করি, এ সংকট একদিনে হয়নি। এর অন্যতম কারণ লাগামহীন দুর্নীতি ও অর্থ পাচার। পরিস্থিতি এখন এমন জায়গায় চলে এসেছে যে, সাধারণ মানুষ ছাড়াও ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিরা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন। বেশির ভাগ ব্যাংকের অবস্থা খুবই ভয়াবহ। প্রতিদিন তাঁরা ধারদেনা করে দিন পার করছে। ব্যবসায়ীদের এলসি খুলতে গিয়ে ডলার কিনতে করতে হচ্ছে বেশি দামে। দেশের একজন শিল্পপতি হিসেবে আমরা যারা পণ্য রপ্তানি করে ডলার আয় করছি, তাঁদের জন্য সমস্যা এখনো বেশি প্রকট না হলেও সামনের দিনগুলো খারাপ সংকেত দিচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘তবে আমি বেশি শঙ্কিত বিদেশি ষড়যন্ত্র নিয়ে। নানা কারণে আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ায় ক্ষমতাধর বিদেশি মোড়লরা যে যার স্বার্থে আমাদের টুটি চেপে ধরার চেষ্টা করছে। যদিও এর মধ্যে বঙ্গবন্ধুকন্যা সাহস করে বেশ কিছু সত্য কথা জনসম্মুখে বলে দিয়েছেন। কিন্তু জাতি হিসেবে আমরা এখন বেশি শঙ্কিত। কারণ এসব স্বার্থান্বেষী মহল যেখানে একবার হাতছানি দিয়েছে তাঁরা ছলেবলে সে দেশকে যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিয়েছে। আমি এ রকম অঘটনের শঙ্কা নিয়ে অনেকটা উদ্বিগ্ন। এখন ইন্দো-প্যাসিফিক ইস্যুকে সামনে এনে বঙ্গোপসাগরকে কেন্দ্র করে যে সামরিক শক্তির বলয় গড়ে তোলার অপচেষ্টা হচ্ছে তাতে আমরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হব। কুকি চিনসহ বেশ কিছু সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কিছু কর্মকাণ্ড আমাদের আরও বেশি ভাবিয়ে তুলেছে।’

সালমা ইসলাম বলেন, ‘রাজনীতি এবং কূটনীতিতে কেউ কখনো চিরস্থায়ী বন্ধু হয় না। যে যার স্বার্থ নানা কৌশলে আদায় করে নিতে চায়। ইতিমধ্যে আমরা এ রকম ফাঁদে যদি পা দিয়ে থাকি, তাহলে সামনে আমাদের সবার জন্য কঠিন সময় অপেক্ষা করছে। বাস্তবে সবাই আমাদের ব্যবহার করছে। আমাদের কাছ থেকে অনেকে অনেক কিছু আদায় করে নিয়েছে। কিন্তু বিপরীতে আমরা কিছুই পাইনি। শুধু ঋণের ভারে দিন দিন জর্জরিত হচ্ছি। মাথাপিছু বিদেশি ঋণের পরিমাণ নিশ্চয় আগের তুলনায় অনেক বেশি। আজকে যে শিশু জন্ম নিচ্ছে তার ঘাড়েও ঋণের বোঝা যুক্ত হচ্ছে। ফলে আমি মনে করি জাতি হিসেবে আমাদের আরও সতর্ক, সাহসী ও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বিশেষ করে আমরা যদি দেশের অভ্যন্তরে গণতান্ত্রিক চর্চা জোরদার করে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে না পারি, তাহলে ওরা আরও বেশি করে সুযোগ নেবে। তাই এখনো সময় আছে, দেশের স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সবার আগে দেশ।’

তিনি বলেন, ‘সামনে তিস্তা প্রকল্প নিয়ে আমাদের বেশ কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে। অনেকের নজর এখন তিস্তার দিকে। কেউ চায় অস্ত্র বেচতে, কেউ চায় তিস্তা প্রকল্পের পুরো নিয়ন্ত্রণ, কেউ আবার বড় ঋণের ঝুলি নিয়ে বসে আছে। কিন্তু তাঁরাও এবার নিজেদের স্বার্থ ষোলোআনা উশুল না করে ঋণ অনুমোদন করবে না। ওদিকে সবচেয়ে এখন বড় সমস্যা হলো ডলার সংকটের কারণে আমরা অনেকগুলো বিদেশি পাওনা বা দায়দেনা পরিশোধ করতে পারছি না। কারণ, দিতে গেলে ডলারের স্থিতি আরও নিচে নেমে আসবে। কিন্তু পাওনাদাররাও বসে নেই। ঘন ঘন তাগাদা দিচ্ছে। এর মধ্যে তাঁরা পাওনা ডলারের জন্য চার্টার্ড বিমানে ঘুরেও গেছেন। ফলে পরিস্থিতি ভালো মনে হচ্ছে না। বর্গিরা সব চারদিকে ফণা তুলে ঘোরাফেরা করছে।’

সালমা ইসলাম বলেন, ‘এসব বোঝার জন্য এখন আর অর্থনৈতিক কিংবা কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞ হওয়া লাগে না। একজন সাধারণ মানুষও বুঝতে পারে। এর অন্যতম কারণ “স্মার্ট বাংলাদেশ”। সবার হাতে হাতে প্রধানমন্ত্রী মোবাইল ফোন আর ইন্টারনেট পৌঁছে দিয়েছেন। সেখানে ইউটিউব, ফেসবুক খুললেই সারা বিশ্বের তথ্য চলে আসে। এখন ঘরে বসেই সব খবর পাওয়া যায়। আর সবাই তো মিথ্যা কথা বলে না। অনেকে হাতে কলমে হিসেব কষে সব ফাঁস করে দিচ্ছে। তা ছাড়া মানুষ সংসার চালাতে গিয়ে নিজেই হালচাল সব বুঝতে পারছে। বাজেট তো ৩০ জুন পাস হয়ে যাবে। কিন্তু সমস্যা হলো-এখন যে মানুষগুলো ২০ হাজার থেকে ৫০ হাজার আয় করেও মাস চালাতে হিমশিম খাচ্ছে, তার বাজেটের পর কি হবে। নির্ঘাত বাজেটের পর আরও কয়েক দফা দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়বে। বেড়ে যাবে যে কোনো সেবার দাম। কিন্তু যার আয় বাড়ানোর সুযোগ বা সক্ষমতা নেই তার কি হবে? বিশেষ করে যারা সাধারণ চাকরিজীবী। যাদের আয় বাড়ছে না। তাদের তো একেবারে পথে বসতে হবে। ফলে আমরা যারা সংসদে আছি, তাদের এ মানুষগুলোর কথা ভাবতে হবে। এমনভাবে বাজেট দিতে হবে যাতে সাধারণ মানুষের ওপর নতুন করে খরচের বোঝা না বাড়ে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আদানিকে রক্ষায় গোপনে ৩৯০০ কোটি রুপির ব্যবস্থা করেন নরেন্দ্র মোদি

আরপিও সংশোধন থেকে সরলে লন্ডন বৈঠকের ধারাবাহিকতায় ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া মনে করবে এনসিপি: আখতার

ভারতের ইন্দোরে শ্লীলতাহানির শিকার অস্ট্রেলিয়ার দুই নারী ক্রিকেটার

আজকের রাশিফল: মেজাজ সামলে রাখুন, ফেসবুকে দার্শনিকতা বন্ধ করুন

বাড়ি ফেরার পথে লালনশিল্পীকে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ড তদন্তে চার দেশের বিশেষজ্ঞ আনা হচ্ছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

উত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি 
আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১৬: ৫৩
বিমানবন্দরের অ্যারাইভাল গেটে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিমানবন্দরের অ্যারাইভাল গেটে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিমানবন্দরের ভয়াবহ আগুন লাগার কারণ ও দায়ীদের খুঁজে বের করতে চারটি দেশ থেকে বিশেষজ্ঞ আনা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী

আজ শনিবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতিগ্রস্ত কার্গো ভিলেজ ও ই-গেট পরিদর্শন শেষে বিমানবন্দরের অ্যারাইভাল গেটে সাংবাদিকদের তিনি এই তথ্য জানান।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘অব্যবস্থাপনার বিষয়টি তদন্তের জন্য আমরা চারটি দেশকে ইনভাইট করেছি। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, চীন ও তুরস্ককে আসতে বলেছি। তাদের স্পেশালিস্ট আমরা আনতে চাচ্ছি। তারা তদন্ত করে কারণটা কী এবং কে দায়ী বের করবে।’

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘বিমানবন্দরের ভেতরে চারটি ইউনিট আছে। চারটি ইউনিটই কাজ করছে। আমরা আশা করছিলাম তাড়াতাড়ি কন্ট্রোলে আসবে। কন্ট্রোলে আসতে একটু সময় লাগছে। যেহেতু বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক অবস্থা চিন্তা করতে হয়। যেহেতু দাহ্য পদার্থ খুব বেশি ছিল। অনেক সময় বাতাস থাকলে নেভাতে সময় লাগে।’

কার্গো ভিলেজে বিশেষায়িত ফায়ার সার্ভিস ইউনিট কেন ছিল না—এই প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আগুন নেভানোর জন্য বিমানে যে ইউনিট থাকে, সেটা কার্গো ভিলেজেও কাজ করতে পারে। এটিতে কোনো অসুবিধা নাই।’

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আরও বলেন, ‘আগুন নেভাতে কেউ ফেল করেনি। কিন্তু সময় লাগছে। ফেল করলে সব জ্বলে যেত। ওই দিন রাত ৯টার সময় বিমানবন্দর চালু করে দিয়েছে।’

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘বিমানবন্দর অথরিটির চারটি ফায়ার সার্ভিস ইউনিট আছে। সেগুলো ৩০ সেকেন্ডের ভেতরে চলে আসছিল। ফায়ার সার্ভিসের যে ইউনিটগুলো আছে, তার একটি দিয়াবাড়ির মেট্রোরেলের ওখানে, আরেকটি কুর্মিটোলায়। সেগুলো ২০ মিনিটের ভেতরে চলে আসছে।’

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘যেখানে আগুন ধরেছে, সেখানে কেমিক্যাল ও গার্মেন্টস ম্যাটেরিয়াল ছিল। দাহ্য পদার্থ খুব বেশি ছিল। যার কারণে আগুনটা ছড়িয়ে গেছে তাড়াতাড়ি। কন্ট্রোল করতে সময় নিয়েছে।’

১৮ অক্টোবর বেলা আড়াইটার দিকে বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেট-সংলগ্ন আমদানি কার্গো ভিলেজে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি স্টেশনের ৩৭টি ইউনিটের চেষ্টায় রাতে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু পুরোপুরি নির্বাপণ হয় ২৬ ঘণ্টা পর ১৯ অক্টোবর বিকেল ৫টার দিকে।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আদানিকে রক্ষায় গোপনে ৩৯০০ কোটি রুপির ব্যবস্থা করেন নরেন্দ্র মোদি

আরপিও সংশোধন থেকে সরলে লন্ডন বৈঠকের ধারাবাহিকতায় ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া মনে করবে এনসিপি: আখতার

ভারতের ইন্দোরে শ্লীলতাহানির শিকার অস্ট্রেলিয়ার দুই নারী ক্রিকেটার

আজকের রাশিফল: মেজাজ সামলে রাখুন, ফেসবুকে দার্শনিকতা বন্ধ করুন

বাড়ি ফেরার পথে লালনশিল্পীকে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এক বিকেলে পানিতে ডুবে ৬ শিশুর মৃত্যু, পরিবারে শোকের ছায়া

অষ্টগ্রাম (কিশোরগঞ্জ) ও রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম ও চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় খেলা করার সময় পানিতে পড়ে ছয় শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার অষ্টগ্রাম উপজেলার দেওঘর ইউনিয়ন ও রাঙ্গুনিয়ার পারুয়া ইউনিয়নে ঘটনা দুটি ঘটে। এতে ওইসব এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

আজ বিকেলে অষ্টগ্রাম উপজেলার দেওঘর ইউনিয়নের পশ্চিম আলীনগর এলাকায় বাড়িসংলগ্ন বিলের পাশে খেলা করছিল মিশকাত (৫), মাহিন (৬) ও সাত্তার তানিল মিয়া (৫)। হঠাৎ সবার অজান্তে তিন শিশু বিলে পড়ে ডুবে যায়।

খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে বিল থেকে মিশকাত ও মাহিনকে উদ্ধার করা হয়। পরে অষ্টগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে খবর পেয়ে অষ্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে অপর শিশু তানিলের মরদেহ উদ্ধার করে।

এ বিষয়ে মাহিনের চাচা মোবারক হোসেন বলেন, প্রতিদিনের মতো তিন শিশু খেলাধুলা করছিল। কিন্তু কখন যে বিলের পানিতে ডুবে গেল, কেউ বোঝেনি। পরে তাদের দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি করে পানিতে প্রথমে দুজন, পরে অন্যজনকে পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে দেওঘর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আক্তার হোসেন বলেন, দুঃখজনক খবর, একই বাড়ির তিনটা শিশুর মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

অপর দিকে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পারুয়া ইউনিয়নে একই দিন বিকেলে উত্তর পারুয়া গ্রামের একটি পুকুরে পড়ে মারা যায় তিন শিশু। তারা হলো সুমাইয়া আক্তার (৫), হাবীবা আক্তার (৬) ও জান্নাত আক্তার (৫)।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিকেলে খেলার ছলে তারা তিনজনই বাড়ির পাশে পুকুরে যায়। কিছুক্ষণ পর না পেয়ে পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করে। পরে পুকুরে ভাসমান অবস্থায় তাদের মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে পারুয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান একতেহার হোসেন বলেন, ‘তিনটি নিষ্পাপ শিশুর এমন মৃত্যুর ঘটনা আমাদের সবাইকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আদানিকে রক্ষায় গোপনে ৩৯০০ কোটি রুপির ব্যবস্থা করেন নরেন্দ্র মোদি

আরপিও সংশোধন থেকে সরলে লন্ডন বৈঠকের ধারাবাহিকতায় ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া মনে করবে এনসিপি: আখতার

ভারতের ইন্দোরে শ্লীলতাহানির শিকার অস্ট্রেলিয়ার দুই নারী ক্রিকেটার

আজকের রাশিফল: মেজাজ সামলে রাখুন, ফেসবুকে দার্শনিকতা বন্ধ করুন

বাড়ি ফেরার পথে লালনশিল্পীকে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যমুনা অভিমুখী চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধীদের পদযাত্রায় আবারও পুলিশের বাধা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার ভুখা মিছিল বের করেন চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধীরা। ফাইল ছবি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার ভুখা মিছিল বের করেন চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধীরা। ফাইল ছবি

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানো, বিশেষ নিয়োগব্যবস্থা, স্বতন্ত্র কোটা সংরক্ষণসহ পাঁচ দফা দাবিতে আজ শুক্রবার আবারও যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করেছেন চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েটরা। তবে গতকাল বৃহস্পতিবারের মতো আজও তাঁদের পদযাত্রা শাহবাগ থানার সামনে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে আজ বেলা ৩টার দিকে ‘চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট পরিষদ’-এর ব্যানারে পদযাত্রা শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। শাহবাগ থানার সামনে পৌঁছালে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তা আটকে দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে পুলিশ তাঁদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়।

এর আগে গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজু ভাস্কর্য থেকে যমুনা অভিমুখে থালাবাটি নিয়ে ভুখা মিছিল করেন প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েটরা। শাহবাগ থানার সামনে মিছিলটি পুলিশ আটকে দিলে সেখানেই বিক্ষোভ করেন তাঁরা। একপর্যায়ে সেখান থেকে তাঁদের সরিয়ে দেওয়া হয়।

গত রোববার থেকে পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন করা চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধীদের ভাষ্য, শিক্ষিত, যোগ্য ও কর্মক্ষম যুব প্রতিবন্ধীরা দীর্ঘদিন ধরে কর্মসংস্থান থেকে বঞ্চিত। ২০১৮ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে ন্যায্য অধিকারের দাবি জানিয়ে আসছেন তাঁরা। তবে এখনো কর্মসংস্থানে অন্তর্ভুক্তি ও প্রতিবন্ধী কোটা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা হয়নি।

চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট পরিষদের সদস্যসচিব আলিফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পাঁচ দফা দাবিতে গত রোববার শাহবাগে অবস্থান করে যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করা হয়। সেদিন পুলিশ আমাদের আটকে দেয়। এরপর সমাজকল্যাণ উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আমাদের দাবি জানানো হয়। তাঁর কাছ থেকে কোনো সমাধান না পেয়ে আমরা বেশ কয়েকবার যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করি, কিন্তু পুলিশ আমাদের ব্যারিকেড দিয়ে আটকে রাখে।’

আলিফ হোসেন আরও বলেন, ‘আজও শাহবাগ থানার সামনে আমাদের পদযাত্রা আটকে দেওয়া হয় এবং বেশ কয়েকজনকে পুলিশ মারধরও করেছে।’

‎‎এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খালিদ মনসুর বলেন, প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন এলাকায় সভা-সমাবেশ করা নিষেধ। তাই চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধীরা দাবিদাওয়া নিয়ে যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করায় তাঁদের আটকে দেওয়া হয়েছে।

চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—

১. প্রতিবন্ধিতার ধরন অনুযায়ী বেকার, শিক্ষিত প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রধান উপদেষ্টার নির্বাহী আদেশে বিশেষ নিয়োগ দিতে হবে।

‎‎ ২. প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে ২ শতাংশ এবং তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে ৫ শতাংশ স্বতন্ত্র প্রতিবন্ধী কোটা সংরক্ষণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে।

‎ ৩. দৃষ্টি বা শারীরিক প্রতিবন্ধীরা নিজেদের পছন্দমতো শ্রুতিলেখক (বিকল্প সহকারী) মনোনয়নের স্বাধীনতা পাবেন—এমনভাবে নীতিমালা হালনাগাদ করতে হবে।

৪. সমাজসেবা অধিদপ্তর এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য নির্দিষ্ট পদসংখ্যায় নিশ্চিত নিয়োগ দিতে হবে।

‎৫. প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছরে উন্নীত করতে হবে। সাধারণ প্রার্থীদের ক্ষেত্রে ৩৫ হলে তা ৩৭ বছর করতে হবে।

‎‎

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আদানিকে রক্ষায় গোপনে ৩৯০০ কোটি রুপির ব্যবস্থা করেন নরেন্দ্র মোদি

আরপিও সংশোধন থেকে সরলে লন্ডন বৈঠকের ধারাবাহিকতায় ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া মনে করবে এনসিপি: আখতার

ভারতের ইন্দোরে শ্লীলতাহানির শিকার অস্ট্রেলিয়ার দুই নারী ক্রিকেটার

আজকের রাশিফল: মেজাজ সামলে রাখুন, ফেসবুকে দার্শনিকতা বন্ধ করুন

বাড়ি ফেরার পথে লালনশিল্পীকে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কক্সবাজার বিমানবন্দরকে ‘আন্তর্জাতিক’ ঘোষণা স্থগিত

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা ­­
আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৭: ২০
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজার অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে জারি করা প্রজ্ঞাপন স্থগিত করেছে সরকার। ফলে আপাতত কক্সবাজার থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হচ্ছে না।

আজ শুক্রবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক বিমান উড্ডয়ন কমিটির সভাপতি ও বিমানবন্দর পরিচালক এয়ার কমোডর মো. নুর-ই-আজম।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সূত্রে জানা গেছে, সরকারের পক্ষ থেকে বিমানবন্দরটিকে আন্তর্জাতিক ঘোষণা করার প্রজ্ঞাপন স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত আগের মতোই অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনা চলবে।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল। এর মাধ্যমে কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু হয়।

বিমানবন্দরসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অবকাঠামোগত ও প্রশাসনিক কিছু প্রস্তুতি সম্পূর্ণ না হওয়ায় সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

উল্লেখ্য, দেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন নগরী কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর উদ্যোগ পর্যটন খাতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে বলে আশা করা হচ্ছিল। বিশেষ করে, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও ভারতের সঙ্গে সরাসরি আকাশপথে সংযোগের পরিকল্পনাও ছিল সরকারের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আদানিকে রক্ষায় গোপনে ৩৯০০ কোটি রুপির ব্যবস্থা করেন নরেন্দ্র মোদি

আরপিও সংশোধন থেকে সরলে লন্ডন বৈঠকের ধারাবাহিকতায় ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া মনে করবে এনসিপি: আখতার

ভারতের ইন্দোরে শ্লীলতাহানির শিকার অস্ট্রেলিয়ার দুই নারী ক্রিকেটার

আজকের রাশিফল: মেজাজ সামলে রাখুন, ফেসবুকে দার্শনিকতা বন্ধ করুন

বাড়ি ফেরার পথে লালনশিল্পীকে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত