যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে নতুন ধারার সংবাদমাধ্যম জিটিওর সাংবাদিক মেহদি হাসানকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সাক্ষাৎকারটি সোমবার প্রকাশ করেছে জিটিও। নিচে সাক্ষাৎকারের চুম্বক অংশের অনুবাদ তুলে ধরা হলো:
আজকের পত্রিকা ডেস্ক
মেহদি হাসান : আপনার এবং আমার শেষবার কথা হওয়ার পর অনেক কিছু ঘটে গেছে। আমার মনে হয় আমরা শেষ কথা বলেছিলাম ২০১৭ সালে। তখন আপনি একজন সাধারণ নাগরিক ছিলেন, শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ, কিন্তু কোনো দেশ পরিচালনা করছিলেন না। এক বছরের কিছু আগে, বাংলাদেশের ছাত্র বিক্ষোভকারীরা আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। দুই দশক ধরে তিনি আপনার দেশে কার্যত একজন স্বৈরশাসক ছিলেন এবং একাধিক মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছেন। অনেকে তাকে বিদায় নিতে দেখে খুশি হয়েছিলেন। তার সরকারের পতনে আপনার প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া কী ছিল? সেই দিন, সেই রাতের আপনার স্মৃতি কী? সেই রাতে আপনার কেমন অনুভূতি হয়েছিল? ভয়, আশা, নাকি বিস্ময়?
ড. ইউনূস: উত্তেজনা। উত্তেজনা। উত্তেজনা, হ্যাঁ অবশ্যই। অবশেষে এটা ঘটল। এটা দারুণ খবর ছিল!
মেহদি হাসান : আপনি কি ভেবেছিলেন এটা ঘটবে?
ড. ইউনূস: না, এটা সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত ছিল। কিছু বিক্ষোভ চলছিল, যা বাংলাদেশে প্রায়শই দেখা যায়। কিন্তু এমন কিছু হবে, যা দেশটিকে বদলে দেবে—তা ভাবিনি। দেশের পরিস্থিতি তখন খুবই খারাপ ছিল। তখন তিনি চলে যাওয়ার আগে কী ঘটেছিল তার বিস্তারিত আমি জানতাম না, কিন্তু তিনি চলে গেছেন—এই চূড়ান্ত খবরটি ছিল খুবই উত্তেজনাপূর্ণ।
মেহদি হাসান : গত এক বছরে বাংলাদেশের জনগণের প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল? আপনারা সম্প্রতি বিপ্লবের এক বছর পূর্ণ করলেন। এখন দেশের মেজাজ কেমন? এখনো কি আশাবাদ, উত্তেজনা, আশা জিইয়ে রাখা, নাকি পরিবর্তনের ধীর গতিতে হতাশা রয়েছে?
ড. ইউনূস: সবই, সবকিছুর মিশ্রণ। কোনো কিছু ঘটছে বলে উত্তেজনা আছে, আবার হতাশা তো আছেই। হতাশা এই কারণে যে মানুষ ফল নিয়ে অভিযোগ করতে পছন্দ করে। এটা সাধারণ ব্যাপার। তারা আরও বেশি চায়। প্রত্যাশার স্তর এত বেশি যে তারা সবকিছু এখনই চায়, কাল নয়। সুতরাং, যেহেতু এটি আজ ঘটছে না, তাই আপনি ভালো না—এই ধরনের ধারণা। তবে একটা ভালো ইঙ্গিত রয়েছে। এটি কোনো নেতিবাচক দিকে যাচ্ছে না। এটি কেবল উচ্চ প্রত্যাশার ফল।
মেহদি হাসান : হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর, ছাত্র বিক্ষোভকারীরা আপনাকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পরিচালনার জন্য বেছে নিয়েছিল। আপনি কি এই সিদ্ধান্তে বিস্মিত হয়েছিলেন? আপনার কী মনে হয় তারা কেন আপনাকে বেছে নিয়েছিল—একজন অ-রাজনীতিক, একজন অর্থনীতিবিদ, এবং সম্মানের সঙ্গে বলছি, একজন ৮০-এর কোঠার মানুষকে কেন তারা এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান, অর্থাৎ প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে বেছে নিল?
ড. ইউনূস: আমি বিস্মিত হয়েছিলাম, কারণ আমি তাদের চিনি না। আমার কখনো তাদের সঙ্গে দেখা হয়নি। আমার কখনো তাদের সঙ্গে কোনো কথোপকথন হয়নি। ওহ, দারুণ! এই বার্তাটি প্রথমে আমার প্রতিষ্ঠানের সহকর্মীদের মাধ্যমে আসে যে ছাত্ররা আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছে। তারা চায় আপনি দায়িত্ব নিন। আমি বলেছিলাম, তাদের উপেক্ষা করো। এই আলোচনায় জড়িও না। আমি তাদের বোঝানোর চেষ্টা করছিলাম যে এটা হবে না। পরের দিন, তারা নিজেরাই সরাসরি আমার কাছে আসার চেষ্টা করে, কারণ আমার সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে কাজ হচ্ছিল না। তাই তারা আমাকে ফোন করে, ব্যাখ্যা করে। আমি বলেছিলাম, ‘না, অন্য কাউকে খুঁজে নাও। আমি জড়াতে চাই না।’ এই আলোচনা, কথোপকথন—তিন দিন ধরে চলল। আমি দূরে থাকার চেষ্টা করছিলাম। আর তারা বারবার অনুরোধ করছিল।
মেহদি হাসান : তাহলে শেষ পর্যন্ত কী কারণে আপনি রাজি হলেন?
ড. ইউনূস: অবশেষে, তারা পরিস্থিতি বর্ণনা করল। দেখুন, ছাত্ররা রক্ত দিয়েছে, নিজেদের উৎসর্গ করেছে, শিশুরা গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এবং এত কিছু ঘটেছে, আর তারা চাইছে আপনি আসুন। এসব উপেক্ষা করলে দেশের কী হবে? তারা খুব আবেগপ্রবণ ছিল। তারা আমাকে রাজি করানোর চেষ্টা করছিল। অবশেষে আমি বললাম, ঠিক আছে, তোমরা যদি এত বড় ত্যাগ স্বীকার করে থাকো, তাহলে আমি আমার মন পরিবর্তন করব। আমি দেখব তোমাদের জন্য কী করতে পারি।
মেহদি হাসান : আপনি এই আত্মত্যাগ এবং রক্তপাতের কথা উল্লেখ করলেন। ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘ জানায়, গত গ্রীষ্মে ছাত্র বিক্ষোভের ওপর হাসিনার দমন-পীড়নের সময় আনুমানিক ১ হাজার ৪০০ জন নিহত হন। বাংলাদেশ এখন আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনেছে। আর আপনি আমার চেয়ে ভালো জানেন, তিনি এখন ভারতে পালিয়ে আছেন, যেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সুরক্ষায় আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনে জবাবদিহির মুখোমুখি করার জন্য আপনি বারবার অনুরোধ করেছেন। মোদী আপনার এই আহ্বান উপেক্ষা করায় আপনার প্রতিক্রিয়া কী? আপনি কি মনে করেন ভারত কখনো হাসিনাকে বাংলাদেশের হাতে তুলে দেবে?
ড. ইউনূস: যদি তাদের নিজস্ব ইচ্ছায় ছেড়ে দেওয়া হয়, অর্থাৎ তারা যদি স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে, তবে সম্ভবত তারা তাকে নিজেদের কাছেই রাখবে। যদি কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা থাকে যা তারা এড়াতে পারবে না, তবে পরিস্থিতি ভিন্ন হবে।
মেহদি হাসান : তাকে নিজেদের কাছে রাখার পেছনে ভারতের স্বার্থ কী?
ড. ইউনূস: তারা তাকে সব সময় সমর্থন করে এসেছে। তারা এখনো আশা করছে, সম্ভবত যারা তাকে সমর্থন করে, তারা আশা করছে যে তিনি পূর্ণ গৌরব নিয়ে বিজয়ী নেতা হিসেবে বাংলাদেশে ফিরে আসবেন।
মেহদি হাসান : নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে যে তিনি আওয়ামী লীগের সঙ্গে ভার্চুয়াল সভা করছেন। এটা কি আপনাকে চিন্তিত করে যে ভারত তাকে ফিরিয়ে এনে আবার ক্ষমতায় বসানোর চেষ্টা করবে?
ড. ইউনূস: আমি ঠিক সেই শব্দগুলো ব্যবহার করব না, তবে এটা সম্ভব যে কিছু বহিঃশক্তি তাঁকে বাংলাদেশে ফিরে আসতে সাহায্য করবে। আমরা সব সময় এই বিষয়ে উদ্বিগ্ন, কারণ—
মেহদি হাসান: আপনি কি মোদীর সঙ্গে কথা বলেছেন?
ড. ইউনূস: আমি মোদীর সঙ্গে কথা বলেছি। খুব খোলাখুলিভাবে।
মেহদি হাসান: বিচারের মুখোমুখি করার জন্য তাঁকে ফেরত পাঠাতে বলায় তিনি কী বললেন?
ড. ইউনূস: দুটি বিষয়। প্রথমত, তাদের বলেছি, আপনারা তাঁকে রাখতে চান। আমি আপনাদের বলতে পারি না আপনারা তার সঙ্গে কী করবেন, তবে নিশ্চিত করুন তিনি যেন আমাদের নিয়ে কথা না বলেন। তিনি যেন বারবার বাংলাদেশের মানুষ সম্পর্কে কথা না বলেন।
মেহদি হাসান: দুঃখিত, মোদী আপনাকে এটা বলেছেন?
ড. ইউনূস: আমি মোদীকে এই বিষয়ে বলেছিলাম যে দয়া করে নিশ্চিত করুন...
মেহদি হাসান: তিনি কী বললেন?
ড. ইউনূস: তিনি বললেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়া আমি নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না।’
মেহদি হাসান: হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে, আপনার সরকার তাঁর দল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করেছে, তাদের নিবন্ধন বাতিল করেছে, যার ফলে কার্যত তাদের পরবর্তী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে বাধা তৈরি হয়েছে। আপনার সহকর্মী নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অমর্ত্য সেন, যাকে আপনি খুব ভালোভাবে চেনেন, তিনি লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির বিরুদ্ধে সতর্ক করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে এটি কেবল পূর্ববর্তী সরকারের ভুলের পুনরাবৃত্তি হবে, যারা ক্ষমতায় এসে বিরোধীদের নিষিদ্ধ করেছিল। আপনি শুধু সেই চক্রের পুনরাবৃত্তি করছেন। অমর্ত্য সেন এবং অন্যদের এই সমালোচনার জবাবে আপনার কী বলার আছে?
ড. ইউনূস: এটি ভুল সমালোচনা, কারণ আমরা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করিনি।
মেহদি হাসান: মানে, আপনারা কি তাদের নিবন্ধন বাতিল করেছেন?
ড. ইউনূস : না, নিবন্ধন নয়। কেবল তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।
মেহদি হাসান : এর মানে কী?
ড. ইউনূস : এর মানে হলো তারা কোনো রাজনৈতিক কার্যকলাপ করতে পারবে না।
মেহদি হাসান : তাহলে আপনারা তো কার্যত...মানে, তারা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে না।
ড. ইউনূস : না, দলটি এখনো আছে।
মেহদি হাসান : তারা কি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে?
ড. ইউনূস : এখন নয়, কারণ কার্যক্রম নিষিদ্ধ।
মেহদি হাসান : ঠিক আছে, তাহলে (আগের সরকারের) পুনরাবৃত্তি নিয়ে যে সতর্ক করা হয়েছিল, তা থেকে এটি কীভাবে ভিন্ন?
ড. ইউনূস: তারা একটি দল হিসেবে বৈধ রয়েছে। তবে আপাতত তাদের কার্যক্রম স্থগিত। আমি বলতে চাচ্ছি, যেকোনো সময় এটি উন্মুক্ত করা যেতে পারে।
মেহদি হাসান : আপনি বলতে চাচ্ছেন আপনারা স্থগিত কার্যক্রম আবার শুরু করতে দিতে পারেন?
ড. ইউনূস : স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়া যেতে পারে, এমন সম্ভাবনা আছে।
মেহদি হাসান: আপনারা দলটি নিষিদ্ধ করেননি। আপনারা শুধু বলেছেন যে আপাতত তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।
ড. ইউনূস: ঠিক তাই।
মেহদি হাসান : কিন্তু একটি গোষ্ঠীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত রাখা কীভাবে গণতান্ত্রিক হতে পারে?
ড. ইউনূস: এটি নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এই দলের কার্যপ্রণালী দেখে এবং সম্ভাবনা বিবেচনা করে দেখেছে যে তারা পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করবে। তাই তারা মনে করেছে, এটা না করাই ভালো—
মেহদি হাসান : কিন্তু আপনি নিশ্চয়ই অস্বীকার করবেন না যে বাংলাদেশে তাদের লাখ লাখ সমর্থক রয়েছে।
ড. ইউনূস : আমি লাখ লাখ বলব না। তাদের সমর্থক আছে, কিন্তু কতজন অবশিষ্ট আছে তা আমি জানি না, কারণ সমর্থক হলো এমন যে আপনি এতই শক্তিশালী, এই কারণেই আমি সব সময় আপনার কাছে যাই, কারণ আপনি ক্ষমতাশালী। আপনি হয়তো সমর্থকও নন।
মেহদি হাসান : কিন্তু আপনি তো অস্বীকার করছেন না যে বাংলাদেশে তাদের একটি ভোটার গোষ্ঠী রয়েছে। তাদের কোনো সমর্থন নেই?
ড. ইউনূস: নিশ্চয়ই। এটি দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার।
মেহদি হাসান : কিন্তু এখন সেই মানুষদের কোনো কণ্ঠস্বর নেই। আপনারা তাদের দলকে নিষিদ্ধ করেছেন। আমি বলছি, আপনারা তাদের দলকে রাজনীতিতে অংশ নিতে বাধা দিচ্ছেন।
ড. ইউনূস: তারা ভোট দিতে পারে। ভোটার হিসেবে তারা বৈধ ভোটার। অনেক অংশগ্রহণকারী রয়েছে। তারা নিজেদের নেতা বেছে নেবে...
মেহদি হাসান : কিন্তু বাংলাদেশের জন্য এটা কি সহায়ক যে মানুষ বলবে, ‘নতুন সরকার পুরোনো সরকারের ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে, চক্রটি চলছেই?’
ড. ইউনূস: অন্যথায় আমরা নির্বাচন করতে পারব না। এই দলটি, যদি তারা রাজনৈতিক দল হিসেবে থাকেও, তারা রাজনৈতিক দলের মতো আচরণ করছে না। তারা মানুষ হত্যা করেছে—সে বিষয়ে তারা কোনো অনুতাপ প্রকাশ করেনি। তারা এই সময়ের মধ্যে যা করেছে, তার কোনো দায় নেয়নি। একটি শব্দও না। সব সময় অভিযোগ করছে যে অন্য কেউ এর জন্য দায়ী।
মেহদি হাসান : আমি নির্বাচনের প্রসঙ্গে একটু পরে ফিরতে চাই, কিন্তু তার আগে বাংলাদেশের বাইরে থেকে আসা কিছু সমালোচনা নিয়ে কথা বলতে চাই। আমি আপনাকে এর জবাব দেওয়ার সুযোগ দিতে চাই। গত নভেম্বরে, বাংলাদেশে প্রায় ৩০ হাজার হিন্দু আপনার সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করতে জড়ো হয়েছিল, দাবি করা হয় যে তাদের সম্প্রদায়ের ওপর হাজার হাজার হামলা হয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পও এ বিষয়ে মন্তব্য করে বাংলাদেশের সহিংসতাকে ‘বর্বর’ বলে অভিহিত করেছিলেন, আমার মনে হয় তিনি এই শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন। এই সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে আনতে কী লাগবে, বা আপনার মতে এটি কি নিয়ন্ত্রণে আছে? আমরা এর মাত্রা নিয়ে কথা বলতে পারি।
ড. ইউনূস: প্রথমত, এগুলো ভুয়া খবর। আপনি এই ভুয়া খবরের ওপর ভিত্তি করে চলতে পারেন না।
মেহদি হাসান : আমি ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথা উদ্ধৃত করেছি, আর আপনি বলছেন ভুয়া খবর।
ড. ইউনূস: হ্যাঁ। ডোনাল্ড ট্রাম্প কখনো এমন কিছু বলেছেন কিনা, বা বাংলাদেশে এখন কী ঘটছে সে সম্পর্কে তাঁর কোনো জ্ঞান আছে কিনা।
মেহদি হাসান : আপনি বলছেন, এটি শুধু অতিরঞ্জিত নয়, তাদের বিরুদ্ধে কোনো সহিংসতাই হয়নি? এমনকি নিউইয়র্ক টাইমস সম্প্রতি ভাঙচুর, দলবদ্ধ সহিংসতা, এবং গত নভেম্বরে শুধু বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার ওপর হিন্দুত্ববাদী পতাকা উত্তোলনের জন্য একজন হিন্দু সন্ন্যাসীকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারের বেশ কয়েকটি ঘটনার কথা জানিয়েছে।
ড. ইউনূস: এটা সঠিক নয়, ভুয়া ও মিথ্যা খবরের ছড়াছড়ি।
মেহদি হাসান: না, আমি বুঝতে পারছি। সব ধরনের খবরই আসে। আমি বুঝতে পারছি, এটা অতিরঞ্জন। কিন্তু আমি জানতে চাচ্ছি, আপনি কি বলছেন যে কোনো হিন্দু-বিরোধী সহিংসতা নেই?
ড. ইউনূস: এটা সঠিক নয়।
মেহদি হাসান : আপনার এবং আমার শেষবার কথা হওয়ার পর অনেক কিছু ঘটে গেছে। আমার মনে হয় আমরা শেষ কথা বলেছিলাম ২০১৭ সালে। তখন আপনি একজন সাধারণ নাগরিক ছিলেন, শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ, কিন্তু কোনো দেশ পরিচালনা করছিলেন না। এক বছরের কিছু আগে, বাংলাদেশের ছাত্র বিক্ষোভকারীরা আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। দুই দশক ধরে তিনি আপনার দেশে কার্যত একজন স্বৈরশাসক ছিলেন এবং একাধিক মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছেন। অনেকে তাকে বিদায় নিতে দেখে খুশি হয়েছিলেন। তার সরকারের পতনে আপনার প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া কী ছিল? সেই দিন, সেই রাতের আপনার স্মৃতি কী? সেই রাতে আপনার কেমন অনুভূতি হয়েছিল? ভয়, আশা, নাকি বিস্ময়?
ড. ইউনূস: উত্তেজনা। উত্তেজনা। উত্তেজনা, হ্যাঁ অবশ্যই। অবশেষে এটা ঘটল। এটা দারুণ খবর ছিল!
মেহদি হাসান : আপনি কি ভেবেছিলেন এটা ঘটবে?
ড. ইউনূস: না, এটা সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত ছিল। কিছু বিক্ষোভ চলছিল, যা বাংলাদেশে প্রায়শই দেখা যায়। কিন্তু এমন কিছু হবে, যা দেশটিকে বদলে দেবে—তা ভাবিনি। দেশের পরিস্থিতি তখন খুবই খারাপ ছিল। তখন তিনি চলে যাওয়ার আগে কী ঘটেছিল তার বিস্তারিত আমি জানতাম না, কিন্তু তিনি চলে গেছেন—এই চূড়ান্ত খবরটি ছিল খুবই উত্তেজনাপূর্ণ।
মেহদি হাসান : গত এক বছরে বাংলাদেশের জনগণের প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল? আপনারা সম্প্রতি বিপ্লবের এক বছর পূর্ণ করলেন। এখন দেশের মেজাজ কেমন? এখনো কি আশাবাদ, উত্তেজনা, আশা জিইয়ে রাখা, নাকি পরিবর্তনের ধীর গতিতে হতাশা রয়েছে?
ড. ইউনূস: সবই, সবকিছুর মিশ্রণ। কোনো কিছু ঘটছে বলে উত্তেজনা আছে, আবার হতাশা তো আছেই। হতাশা এই কারণে যে মানুষ ফল নিয়ে অভিযোগ করতে পছন্দ করে। এটা সাধারণ ব্যাপার। তারা আরও বেশি চায়। প্রত্যাশার স্তর এত বেশি যে তারা সবকিছু এখনই চায়, কাল নয়। সুতরাং, যেহেতু এটি আজ ঘটছে না, তাই আপনি ভালো না—এই ধরনের ধারণা। তবে একটা ভালো ইঙ্গিত রয়েছে। এটি কোনো নেতিবাচক দিকে যাচ্ছে না। এটি কেবল উচ্চ প্রত্যাশার ফল।
মেহদি হাসান : হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর, ছাত্র বিক্ষোভকারীরা আপনাকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পরিচালনার জন্য বেছে নিয়েছিল। আপনি কি এই সিদ্ধান্তে বিস্মিত হয়েছিলেন? আপনার কী মনে হয় তারা কেন আপনাকে বেছে নিয়েছিল—একজন অ-রাজনীতিক, একজন অর্থনীতিবিদ, এবং সম্মানের সঙ্গে বলছি, একজন ৮০-এর কোঠার মানুষকে কেন তারা এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান, অর্থাৎ প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে বেছে নিল?
ড. ইউনূস: আমি বিস্মিত হয়েছিলাম, কারণ আমি তাদের চিনি না। আমার কখনো তাদের সঙ্গে দেখা হয়নি। আমার কখনো তাদের সঙ্গে কোনো কথোপকথন হয়নি। ওহ, দারুণ! এই বার্তাটি প্রথমে আমার প্রতিষ্ঠানের সহকর্মীদের মাধ্যমে আসে যে ছাত্ররা আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছে। তারা চায় আপনি দায়িত্ব নিন। আমি বলেছিলাম, তাদের উপেক্ষা করো। এই আলোচনায় জড়িও না। আমি তাদের বোঝানোর চেষ্টা করছিলাম যে এটা হবে না। পরের দিন, তারা নিজেরাই সরাসরি আমার কাছে আসার চেষ্টা করে, কারণ আমার সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে কাজ হচ্ছিল না। তাই তারা আমাকে ফোন করে, ব্যাখ্যা করে। আমি বলেছিলাম, ‘না, অন্য কাউকে খুঁজে নাও। আমি জড়াতে চাই না।’ এই আলোচনা, কথোপকথন—তিন দিন ধরে চলল। আমি দূরে থাকার চেষ্টা করছিলাম। আর তারা বারবার অনুরোধ করছিল।
মেহদি হাসান : তাহলে শেষ পর্যন্ত কী কারণে আপনি রাজি হলেন?
ড. ইউনূস: অবশেষে, তারা পরিস্থিতি বর্ণনা করল। দেখুন, ছাত্ররা রক্ত দিয়েছে, নিজেদের উৎসর্গ করেছে, শিশুরা গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এবং এত কিছু ঘটেছে, আর তারা চাইছে আপনি আসুন। এসব উপেক্ষা করলে দেশের কী হবে? তারা খুব আবেগপ্রবণ ছিল। তারা আমাকে রাজি করানোর চেষ্টা করছিল। অবশেষে আমি বললাম, ঠিক আছে, তোমরা যদি এত বড় ত্যাগ স্বীকার করে থাকো, তাহলে আমি আমার মন পরিবর্তন করব। আমি দেখব তোমাদের জন্য কী করতে পারি।
মেহদি হাসান : আপনি এই আত্মত্যাগ এবং রক্তপাতের কথা উল্লেখ করলেন। ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘ জানায়, গত গ্রীষ্মে ছাত্র বিক্ষোভের ওপর হাসিনার দমন-পীড়নের সময় আনুমানিক ১ হাজার ৪০০ জন নিহত হন। বাংলাদেশ এখন আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনেছে। আর আপনি আমার চেয়ে ভালো জানেন, তিনি এখন ভারতে পালিয়ে আছেন, যেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সুরক্ষায় আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনে জবাবদিহির মুখোমুখি করার জন্য আপনি বারবার অনুরোধ করেছেন। মোদী আপনার এই আহ্বান উপেক্ষা করায় আপনার প্রতিক্রিয়া কী? আপনি কি মনে করেন ভারত কখনো হাসিনাকে বাংলাদেশের হাতে তুলে দেবে?
ড. ইউনূস: যদি তাদের নিজস্ব ইচ্ছায় ছেড়ে দেওয়া হয়, অর্থাৎ তারা যদি স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে, তবে সম্ভবত তারা তাকে নিজেদের কাছেই রাখবে। যদি কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা থাকে যা তারা এড়াতে পারবে না, তবে পরিস্থিতি ভিন্ন হবে।
মেহদি হাসান : তাকে নিজেদের কাছে রাখার পেছনে ভারতের স্বার্থ কী?
ড. ইউনূস: তারা তাকে সব সময় সমর্থন করে এসেছে। তারা এখনো আশা করছে, সম্ভবত যারা তাকে সমর্থন করে, তারা আশা করছে যে তিনি পূর্ণ গৌরব নিয়ে বিজয়ী নেতা হিসেবে বাংলাদেশে ফিরে আসবেন।
মেহদি হাসান : নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে যে তিনি আওয়ামী লীগের সঙ্গে ভার্চুয়াল সভা করছেন। এটা কি আপনাকে চিন্তিত করে যে ভারত তাকে ফিরিয়ে এনে আবার ক্ষমতায় বসানোর চেষ্টা করবে?
ড. ইউনূস: আমি ঠিক সেই শব্দগুলো ব্যবহার করব না, তবে এটা সম্ভব যে কিছু বহিঃশক্তি তাঁকে বাংলাদেশে ফিরে আসতে সাহায্য করবে। আমরা সব সময় এই বিষয়ে উদ্বিগ্ন, কারণ—
মেহদি হাসান: আপনি কি মোদীর সঙ্গে কথা বলেছেন?
ড. ইউনূস: আমি মোদীর সঙ্গে কথা বলেছি। খুব খোলাখুলিভাবে।
মেহদি হাসান: বিচারের মুখোমুখি করার জন্য তাঁকে ফেরত পাঠাতে বলায় তিনি কী বললেন?
ড. ইউনূস: দুটি বিষয়। প্রথমত, তাদের বলেছি, আপনারা তাঁকে রাখতে চান। আমি আপনাদের বলতে পারি না আপনারা তার সঙ্গে কী করবেন, তবে নিশ্চিত করুন তিনি যেন আমাদের নিয়ে কথা না বলেন। তিনি যেন বারবার বাংলাদেশের মানুষ সম্পর্কে কথা না বলেন।
মেহদি হাসান: দুঃখিত, মোদী আপনাকে এটা বলেছেন?
ড. ইউনূস: আমি মোদীকে এই বিষয়ে বলেছিলাম যে দয়া করে নিশ্চিত করুন...
মেহদি হাসান: তিনি কী বললেন?
ড. ইউনূস: তিনি বললেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়া আমি নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না।’
মেহদি হাসান: হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে, আপনার সরকার তাঁর দল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করেছে, তাদের নিবন্ধন বাতিল করেছে, যার ফলে কার্যত তাদের পরবর্তী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে বাধা তৈরি হয়েছে। আপনার সহকর্মী নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অমর্ত্য সেন, যাকে আপনি খুব ভালোভাবে চেনেন, তিনি লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির বিরুদ্ধে সতর্ক করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে এটি কেবল পূর্ববর্তী সরকারের ভুলের পুনরাবৃত্তি হবে, যারা ক্ষমতায় এসে বিরোধীদের নিষিদ্ধ করেছিল। আপনি শুধু সেই চক্রের পুনরাবৃত্তি করছেন। অমর্ত্য সেন এবং অন্যদের এই সমালোচনার জবাবে আপনার কী বলার আছে?
ড. ইউনূস: এটি ভুল সমালোচনা, কারণ আমরা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করিনি।
মেহদি হাসান: মানে, আপনারা কি তাদের নিবন্ধন বাতিল করেছেন?
ড. ইউনূস : না, নিবন্ধন নয়। কেবল তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।
মেহদি হাসান : এর মানে কী?
ড. ইউনূস : এর মানে হলো তারা কোনো রাজনৈতিক কার্যকলাপ করতে পারবে না।
মেহদি হাসান : তাহলে আপনারা তো কার্যত...মানে, তারা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে না।
ড. ইউনূস : না, দলটি এখনো আছে।
মেহদি হাসান : তারা কি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে?
ড. ইউনূস : এখন নয়, কারণ কার্যক্রম নিষিদ্ধ।
মেহদি হাসান : ঠিক আছে, তাহলে (আগের সরকারের) পুনরাবৃত্তি নিয়ে যে সতর্ক করা হয়েছিল, তা থেকে এটি কীভাবে ভিন্ন?
ড. ইউনূস: তারা একটি দল হিসেবে বৈধ রয়েছে। তবে আপাতত তাদের কার্যক্রম স্থগিত। আমি বলতে চাচ্ছি, যেকোনো সময় এটি উন্মুক্ত করা যেতে পারে।
মেহদি হাসান : আপনি বলতে চাচ্ছেন আপনারা স্থগিত কার্যক্রম আবার শুরু করতে দিতে পারেন?
ড. ইউনূস : স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়া যেতে পারে, এমন সম্ভাবনা আছে।
মেহদি হাসান: আপনারা দলটি নিষিদ্ধ করেননি। আপনারা শুধু বলেছেন যে আপাতত তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।
ড. ইউনূস: ঠিক তাই।
মেহদি হাসান : কিন্তু একটি গোষ্ঠীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত রাখা কীভাবে গণতান্ত্রিক হতে পারে?
ড. ইউনূস: এটি নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এই দলের কার্যপ্রণালী দেখে এবং সম্ভাবনা বিবেচনা করে দেখেছে যে তারা পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করবে। তাই তারা মনে করেছে, এটা না করাই ভালো—
মেহদি হাসান : কিন্তু আপনি নিশ্চয়ই অস্বীকার করবেন না যে বাংলাদেশে তাদের লাখ লাখ সমর্থক রয়েছে।
ড. ইউনূস : আমি লাখ লাখ বলব না। তাদের সমর্থক আছে, কিন্তু কতজন অবশিষ্ট আছে তা আমি জানি না, কারণ সমর্থক হলো এমন যে আপনি এতই শক্তিশালী, এই কারণেই আমি সব সময় আপনার কাছে যাই, কারণ আপনি ক্ষমতাশালী। আপনি হয়তো সমর্থকও নন।
মেহদি হাসান : কিন্তু আপনি তো অস্বীকার করছেন না যে বাংলাদেশে তাদের একটি ভোটার গোষ্ঠী রয়েছে। তাদের কোনো সমর্থন নেই?
ড. ইউনূস: নিশ্চয়ই। এটি দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার।
মেহদি হাসান : কিন্তু এখন সেই মানুষদের কোনো কণ্ঠস্বর নেই। আপনারা তাদের দলকে নিষিদ্ধ করেছেন। আমি বলছি, আপনারা তাদের দলকে রাজনীতিতে অংশ নিতে বাধা দিচ্ছেন।
ড. ইউনূস: তারা ভোট দিতে পারে। ভোটার হিসেবে তারা বৈধ ভোটার। অনেক অংশগ্রহণকারী রয়েছে। তারা নিজেদের নেতা বেছে নেবে...
মেহদি হাসান : কিন্তু বাংলাদেশের জন্য এটা কি সহায়ক যে মানুষ বলবে, ‘নতুন সরকার পুরোনো সরকারের ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে, চক্রটি চলছেই?’
ড. ইউনূস: অন্যথায় আমরা নির্বাচন করতে পারব না। এই দলটি, যদি তারা রাজনৈতিক দল হিসেবে থাকেও, তারা রাজনৈতিক দলের মতো আচরণ করছে না। তারা মানুষ হত্যা করেছে—সে বিষয়ে তারা কোনো অনুতাপ প্রকাশ করেনি। তারা এই সময়ের মধ্যে যা করেছে, তার কোনো দায় নেয়নি। একটি শব্দও না। সব সময় অভিযোগ করছে যে অন্য কেউ এর জন্য দায়ী।
মেহদি হাসান : আমি নির্বাচনের প্রসঙ্গে একটু পরে ফিরতে চাই, কিন্তু তার আগে বাংলাদেশের বাইরে থেকে আসা কিছু সমালোচনা নিয়ে কথা বলতে চাই। আমি আপনাকে এর জবাব দেওয়ার সুযোগ দিতে চাই। গত নভেম্বরে, বাংলাদেশে প্রায় ৩০ হাজার হিন্দু আপনার সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করতে জড়ো হয়েছিল, দাবি করা হয় যে তাদের সম্প্রদায়ের ওপর হাজার হাজার হামলা হয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পও এ বিষয়ে মন্তব্য করে বাংলাদেশের সহিংসতাকে ‘বর্বর’ বলে অভিহিত করেছিলেন, আমার মনে হয় তিনি এই শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন। এই সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে আনতে কী লাগবে, বা আপনার মতে এটি কি নিয়ন্ত্রণে আছে? আমরা এর মাত্রা নিয়ে কথা বলতে পারি।
ড. ইউনূস: প্রথমত, এগুলো ভুয়া খবর। আপনি এই ভুয়া খবরের ওপর ভিত্তি করে চলতে পারেন না।
মেহদি হাসান : আমি ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথা উদ্ধৃত করেছি, আর আপনি বলছেন ভুয়া খবর।
ড. ইউনূস: হ্যাঁ। ডোনাল্ড ট্রাম্প কখনো এমন কিছু বলেছেন কিনা, বা বাংলাদেশে এখন কী ঘটছে সে সম্পর্কে তাঁর কোনো জ্ঞান আছে কিনা।
মেহদি হাসান : আপনি বলছেন, এটি শুধু অতিরঞ্জিত নয়, তাদের বিরুদ্ধে কোনো সহিংসতাই হয়নি? এমনকি নিউইয়র্ক টাইমস সম্প্রতি ভাঙচুর, দলবদ্ধ সহিংসতা, এবং গত নভেম্বরে শুধু বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার ওপর হিন্দুত্ববাদী পতাকা উত্তোলনের জন্য একজন হিন্দু সন্ন্যাসীকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারের বেশ কয়েকটি ঘটনার কথা জানিয়েছে।
ড. ইউনূস: এটা সঠিক নয়, ভুয়া ও মিথ্যা খবরের ছড়াছড়ি।
মেহদি হাসান: না, আমি বুঝতে পারছি। সব ধরনের খবরই আসে। আমি বুঝতে পারছি, এটা অতিরঞ্জন। কিন্তু আমি জানতে চাচ্ছি, আপনি কি বলছেন যে কোনো হিন্দু-বিরোধী সহিংসতা নেই?
ড. ইউনূস: এটা সঠিক নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে নতুন ধারার সংবাদমাধ্যম জিটিওর সাংবাদিক মেহদি হাসানকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সাক্ষাৎকারটি সোমবার প্রকাশ করেছে জিটিও। নিচে সাক্ষাৎকারের চুম্বক অংশের অনুবাদ তুলে ধরা হলো:
আজকের পত্রিকা ডেস্ক
মেহদি হাসান : আপনার এবং আমার শেষবার কথা হওয়ার পর অনেক কিছু ঘটে গেছে। আমার মনে হয় আমরা শেষ কথা বলেছিলাম ২০১৭ সালে। তখন আপনি একজন সাধারণ নাগরিক ছিলেন, শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ, কিন্তু কোনো দেশ পরিচালনা করছিলেন না। এক বছরের কিছু আগে, বাংলাদেশের ছাত্র বিক্ষোভকারীরা আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। দুই দশক ধরে তিনি আপনার দেশে কার্যত একজন স্বৈরশাসক ছিলেন এবং একাধিক মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছেন। অনেকে তাকে বিদায় নিতে দেখে খুশি হয়েছিলেন। তার সরকারের পতনে আপনার প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া কী ছিল? সেই দিন, সেই রাতের আপনার স্মৃতি কী? সেই রাতে আপনার কেমন অনুভূতি হয়েছিল? ভয়, আশা, নাকি বিস্ময়?
ড. ইউনূস: উত্তেজনা। উত্তেজনা। উত্তেজনা, হ্যাঁ অবশ্যই। অবশেষে এটা ঘটল। এটা দারুণ খবর ছিল!
মেহদি হাসান : আপনি কি ভেবেছিলেন এটা ঘটবে?
ড. ইউনূস: না, এটা সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত ছিল। কিছু বিক্ষোভ চলছিল, যা বাংলাদেশে প্রায়শই দেখা যায়। কিন্তু এমন কিছু হবে, যা দেশটিকে বদলে দেবে—তা ভাবিনি। দেশের পরিস্থিতি তখন খুবই খারাপ ছিল। তখন তিনি চলে যাওয়ার আগে কী ঘটেছিল তার বিস্তারিত আমি জানতাম না, কিন্তু তিনি চলে গেছেন—এই চূড়ান্ত খবরটি ছিল খুবই উত্তেজনাপূর্ণ।
মেহদি হাসান : গত এক বছরে বাংলাদেশের জনগণের প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল? আপনারা সম্প্রতি বিপ্লবের এক বছর পূর্ণ করলেন। এখন দেশের মেজাজ কেমন? এখনো কি আশাবাদ, উত্তেজনা, আশা জিইয়ে রাখা, নাকি পরিবর্তনের ধীর গতিতে হতাশা রয়েছে?
ড. ইউনূস: সবই, সবকিছুর মিশ্রণ। কোনো কিছু ঘটছে বলে উত্তেজনা আছে, আবার হতাশা তো আছেই। হতাশা এই কারণে যে মানুষ ফল নিয়ে অভিযোগ করতে পছন্দ করে। এটা সাধারণ ব্যাপার। তারা আরও বেশি চায়। প্রত্যাশার স্তর এত বেশি যে তারা সবকিছু এখনই চায়, কাল নয়। সুতরাং, যেহেতু এটি আজ ঘটছে না, তাই আপনি ভালো না—এই ধরনের ধারণা। তবে একটা ভালো ইঙ্গিত রয়েছে। এটি কোনো নেতিবাচক দিকে যাচ্ছে না। এটি কেবল উচ্চ প্রত্যাশার ফল।
মেহদি হাসান : হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর, ছাত্র বিক্ষোভকারীরা আপনাকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পরিচালনার জন্য বেছে নিয়েছিল। আপনি কি এই সিদ্ধান্তে বিস্মিত হয়েছিলেন? আপনার কী মনে হয় তারা কেন আপনাকে বেছে নিয়েছিল—একজন অ-রাজনীতিক, একজন অর্থনীতিবিদ, এবং সম্মানের সঙ্গে বলছি, একজন ৮০-এর কোঠার মানুষকে কেন তারা এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান, অর্থাৎ প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে বেছে নিল?
ড. ইউনূস: আমি বিস্মিত হয়েছিলাম, কারণ আমি তাদের চিনি না। আমার কখনো তাদের সঙ্গে দেখা হয়নি। আমার কখনো তাদের সঙ্গে কোনো কথোপকথন হয়নি। ওহ, দারুণ! এই বার্তাটি প্রথমে আমার প্রতিষ্ঠানের সহকর্মীদের মাধ্যমে আসে যে ছাত্ররা আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছে। তারা চায় আপনি দায়িত্ব নিন। আমি বলেছিলাম, তাদের উপেক্ষা করো। এই আলোচনায় জড়িও না। আমি তাদের বোঝানোর চেষ্টা করছিলাম যে এটা হবে না। পরের দিন, তারা নিজেরাই সরাসরি আমার কাছে আসার চেষ্টা করে, কারণ আমার সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে কাজ হচ্ছিল না। তাই তারা আমাকে ফোন করে, ব্যাখ্যা করে। আমি বলেছিলাম, ‘না, অন্য কাউকে খুঁজে নাও। আমি জড়াতে চাই না।’ এই আলোচনা, কথোপকথন—তিন দিন ধরে চলল। আমি দূরে থাকার চেষ্টা করছিলাম। আর তারা বারবার অনুরোধ করছিল।
মেহদি হাসান : তাহলে শেষ পর্যন্ত কী কারণে আপনি রাজি হলেন?
ড. ইউনূস: অবশেষে, তারা পরিস্থিতি বর্ণনা করল। দেখুন, ছাত্ররা রক্ত দিয়েছে, নিজেদের উৎসর্গ করেছে, শিশুরা গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এবং এত কিছু ঘটেছে, আর তারা চাইছে আপনি আসুন। এসব উপেক্ষা করলে দেশের কী হবে? তারা খুব আবেগপ্রবণ ছিল। তারা আমাকে রাজি করানোর চেষ্টা করছিল। অবশেষে আমি বললাম, ঠিক আছে, তোমরা যদি এত বড় ত্যাগ স্বীকার করে থাকো, তাহলে আমি আমার মন পরিবর্তন করব। আমি দেখব তোমাদের জন্য কী করতে পারি।
মেহদি হাসান : আপনি এই আত্মত্যাগ এবং রক্তপাতের কথা উল্লেখ করলেন। ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘ জানায়, গত গ্রীষ্মে ছাত্র বিক্ষোভের ওপর হাসিনার দমন-পীড়নের সময় আনুমানিক ১ হাজার ৪০০ জন নিহত হন। বাংলাদেশ এখন আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনেছে। আর আপনি আমার চেয়ে ভালো জানেন, তিনি এখন ভারতে পালিয়ে আছেন, যেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সুরক্ষায় আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনে জবাবদিহির মুখোমুখি করার জন্য আপনি বারবার অনুরোধ করেছেন। মোদী আপনার এই আহ্বান উপেক্ষা করায় আপনার প্রতিক্রিয়া কী? আপনি কি মনে করেন ভারত কখনো হাসিনাকে বাংলাদেশের হাতে তুলে দেবে?
ড. ইউনূস: যদি তাদের নিজস্ব ইচ্ছায় ছেড়ে দেওয়া হয়, অর্থাৎ তারা যদি স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে, তবে সম্ভবত তারা তাকে নিজেদের কাছেই রাখবে। যদি কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা থাকে যা তারা এড়াতে পারবে না, তবে পরিস্থিতি ভিন্ন হবে।
মেহদি হাসান : তাকে নিজেদের কাছে রাখার পেছনে ভারতের স্বার্থ কী?
ড. ইউনূস: তারা তাকে সব সময় সমর্থন করে এসেছে। তারা এখনো আশা করছে, সম্ভবত যারা তাকে সমর্থন করে, তারা আশা করছে যে তিনি পূর্ণ গৌরব নিয়ে বিজয়ী নেতা হিসেবে বাংলাদেশে ফিরে আসবেন।
মেহদি হাসান : নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে যে তিনি আওয়ামী লীগের সঙ্গে ভার্চুয়াল সভা করছেন। এটা কি আপনাকে চিন্তিত করে যে ভারত তাকে ফিরিয়ে এনে আবার ক্ষমতায় বসানোর চেষ্টা করবে?
ড. ইউনূস: আমি ঠিক সেই শব্দগুলো ব্যবহার করব না, তবে এটা সম্ভব যে কিছু বহিঃশক্তি তাঁকে বাংলাদেশে ফিরে আসতে সাহায্য করবে। আমরা সব সময় এই বিষয়ে উদ্বিগ্ন, কারণ—
মেহদি হাসান: আপনি কি মোদীর সঙ্গে কথা বলেছেন?
ড. ইউনূস: আমি মোদীর সঙ্গে কথা বলেছি। খুব খোলাখুলিভাবে।
মেহদি হাসান: বিচারের মুখোমুখি করার জন্য তাঁকে ফেরত পাঠাতে বলায় তিনি কী বললেন?
ড. ইউনূস: দুটি বিষয়। প্রথমত, তাদের বলেছি, আপনারা তাঁকে রাখতে চান। আমি আপনাদের বলতে পারি না আপনারা তার সঙ্গে কী করবেন, তবে নিশ্চিত করুন তিনি যেন আমাদের নিয়ে কথা না বলেন। তিনি যেন বারবার বাংলাদেশের মানুষ সম্পর্কে কথা না বলেন।
মেহদি হাসান: দুঃখিত, মোদী আপনাকে এটা বলেছেন?
ড. ইউনূস: আমি মোদীকে এই বিষয়ে বলেছিলাম যে দয়া করে নিশ্চিত করুন...
মেহদি হাসান: তিনি কী বললেন?
ড. ইউনূস: তিনি বললেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়া আমি নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না।’
মেহদি হাসান: হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে, আপনার সরকার তাঁর দল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করেছে, তাদের নিবন্ধন বাতিল করেছে, যার ফলে কার্যত তাদের পরবর্তী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে বাধা তৈরি হয়েছে। আপনার সহকর্মী নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অমর্ত্য সেন, যাকে আপনি খুব ভালোভাবে চেনেন, তিনি লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির বিরুদ্ধে সতর্ক করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে এটি কেবল পূর্ববর্তী সরকারের ভুলের পুনরাবৃত্তি হবে, যারা ক্ষমতায় এসে বিরোধীদের নিষিদ্ধ করেছিল। আপনি শুধু সেই চক্রের পুনরাবৃত্তি করছেন। অমর্ত্য সেন এবং অন্যদের এই সমালোচনার জবাবে আপনার কী বলার আছে?
ড. ইউনূস: এটি ভুল সমালোচনা, কারণ আমরা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করিনি।
মেহদি হাসান: মানে, আপনারা কি তাদের নিবন্ধন বাতিল করেছেন?
ড. ইউনূস : না, নিবন্ধন নয়। কেবল তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।
মেহদি হাসান : এর মানে কী?
ড. ইউনূস : এর মানে হলো তারা কোনো রাজনৈতিক কার্যকলাপ করতে পারবে না।
মেহদি হাসান : তাহলে আপনারা তো কার্যত...মানে, তারা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে না।
ড. ইউনূস : না, দলটি এখনো আছে।
মেহদি হাসান : তারা কি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে?
ড. ইউনূস : এখন নয়, কারণ কার্যক্রম নিষিদ্ধ।
মেহদি হাসান : ঠিক আছে, তাহলে (আগের সরকারের) পুনরাবৃত্তি নিয়ে যে সতর্ক করা হয়েছিল, তা থেকে এটি কীভাবে ভিন্ন?
ড. ইউনূস: তারা একটি দল হিসেবে বৈধ রয়েছে। তবে আপাতত তাদের কার্যক্রম স্থগিত। আমি বলতে চাচ্ছি, যেকোনো সময় এটি উন্মুক্ত করা যেতে পারে।
মেহদি হাসান : আপনি বলতে চাচ্ছেন আপনারা স্থগিত কার্যক্রম আবার শুরু করতে দিতে পারেন?
ড. ইউনূস : স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়া যেতে পারে, এমন সম্ভাবনা আছে।
মেহদি হাসান: আপনারা দলটি নিষিদ্ধ করেননি। আপনারা শুধু বলেছেন যে আপাতত তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।
ড. ইউনূস: ঠিক তাই।
মেহদি হাসান : কিন্তু একটি গোষ্ঠীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত রাখা কীভাবে গণতান্ত্রিক হতে পারে?
ড. ইউনূস: এটি নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এই দলের কার্যপ্রণালী দেখে এবং সম্ভাবনা বিবেচনা করে দেখেছে যে তারা পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করবে। তাই তারা মনে করেছে, এটা না করাই ভালো—
মেহদি হাসান : কিন্তু আপনি নিশ্চয়ই অস্বীকার করবেন না যে বাংলাদেশে তাদের লাখ লাখ সমর্থক রয়েছে।
ড. ইউনূস : আমি লাখ লাখ বলব না। তাদের সমর্থক আছে, কিন্তু কতজন অবশিষ্ট আছে তা আমি জানি না, কারণ সমর্থক হলো এমন যে আপনি এতই শক্তিশালী, এই কারণেই আমি সব সময় আপনার কাছে যাই, কারণ আপনি ক্ষমতাশালী। আপনি হয়তো সমর্থকও নন।
মেহদি হাসান : কিন্তু আপনি তো অস্বীকার করছেন না যে বাংলাদেশে তাদের একটি ভোটার গোষ্ঠী রয়েছে। তাদের কোনো সমর্থন নেই?
ড. ইউনূস: নিশ্চয়ই। এটি দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার।
মেহদি হাসান : কিন্তু এখন সেই মানুষদের কোনো কণ্ঠস্বর নেই। আপনারা তাদের দলকে নিষিদ্ধ করেছেন। আমি বলছি, আপনারা তাদের দলকে রাজনীতিতে অংশ নিতে বাধা দিচ্ছেন।
ড. ইউনূস: তারা ভোট দিতে পারে। ভোটার হিসেবে তারা বৈধ ভোটার। অনেক অংশগ্রহণকারী রয়েছে। তারা নিজেদের নেতা বেছে নেবে...
মেহদি হাসান : কিন্তু বাংলাদেশের জন্য এটা কি সহায়ক যে মানুষ বলবে, ‘নতুন সরকার পুরোনো সরকারের ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে, চক্রটি চলছেই?’
ড. ইউনূস: অন্যথায় আমরা নির্বাচন করতে পারব না। এই দলটি, যদি তারা রাজনৈতিক দল হিসেবে থাকেও, তারা রাজনৈতিক দলের মতো আচরণ করছে না। তারা মানুষ হত্যা করেছে—সে বিষয়ে তারা কোনো অনুতাপ প্রকাশ করেনি। তারা এই সময়ের মধ্যে যা করেছে, তার কোনো দায় নেয়নি। একটি শব্দও না। সব সময় অভিযোগ করছে যে অন্য কেউ এর জন্য দায়ী।
মেহদি হাসান : আমি নির্বাচনের প্রসঙ্গে একটু পরে ফিরতে চাই, কিন্তু তার আগে বাংলাদেশের বাইরে থেকে আসা কিছু সমালোচনা নিয়ে কথা বলতে চাই। আমি আপনাকে এর জবাব দেওয়ার সুযোগ দিতে চাই। গত নভেম্বরে, বাংলাদেশে প্রায় ৩০ হাজার হিন্দু আপনার সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করতে জড়ো হয়েছিল, দাবি করা হয় যে তাদের সম্প্রদায়ের ওপর হাজার হাজার হামলা হয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পও এ বিষয়ে মন্তব্য করে বাংলাদেশের সহিংসতাকে ‘বর্বর’ বলে অভিহিত করেছিলেন, আমার মনে হয় তিনি এই শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন। এই সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে আনতে কী লাগবে, বা আপনার মতে এটি কি নিয়ন্ত্রণে আছে? আমরা এর মাত্রা নিয়ে কথা বলতে পারি।
ড. ইউনূস: প্রথমত, এগুলো ভুয়া খবর। আপনি এই ভুয়া খবরের ওপর ভিত্তি করে চলতে পারেন না।
মেহদি হাসান : আমি ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথা উদ্ধৃত করেছি, আর আপনি বলছেন ভুয়া খবর।
ড. ইউনূস: হ্যাঁ। ডোনাল্ড ট্রাম্প কখনো এমন কিছু বলেছেন কিনা, বা বাংলাদেশে এখন কী ঘটছে সে সম্পর্কে তাঁর কোনো জ্ঞান আছে কিনা।
মেহদি হাসান : আপনি বলছেন, এটি শুধু অতিরঞ্জিত নয়, তাদের বিরুদ্ধে কোনো সহিংসতাই হয়নি? এমনকি নিউইয়র্ক টাইমস সম্প্রতি ভাঙচুর, দলবদ্ধ সহিংসতা, এবং গত নভেম্বরে শুধু বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার ওপর হিন্দুত্ববাদী পতাকা উত্তোলনের জন্য একজন হিন্দু সন্ন্যাসীকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারের বেশ কয়েকটি ঘটনার কথা জানিয়েছে।
ড. ইউনূস: এটা সঠিক নয়, ভুয়া ও মিথ্যা খবরের ছড়াছড়ি।
মেহদি হাসান: না, আমি বুঝতে পারছি। সব ধরনের খবরই আসে। আমি বুঝতে পারছি, এটা অতিরঞ্জন। কিন্তু আমি জানতে চাচ্ছি, আপনি কি বলছেন যে কোনো হিন্দু-বিরোধী সহিংসতা নেই?
ড. ইউনূস: এটা সঠিক নয়।
মেহদি হাসান : আপনার এবং আমার শেষবার কথা হওয়ার পর অনেক কিছু ঘটে গেছে। আমার মনে হয় আমরা শেষ কথা বলেছিলাম ২০১৭ সালে। তখন আপনি একজন সাধারণ নাগরিক ছিলেন, শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ, কিন্তু কোনো দেশ পরিচালনা করছিলেন না। এক বছরের কিছু আগে, বাংলাদেশের ছাত্র বিক্ষোভকারীরা আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। দুই দশক ধরে তিনি আপনার দেশে কার্যত একজন স্বৈরশাসক ছিলেন এবং একাধিক মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছেন। অনেকে তাকে বিদায় নিতে দেখে খুশি হয়েছিলেন। তার সরকারের পতনে আপনার প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া কী ছিল? সেই দিন, সেই রাতের আপনার স্মৃতি কী? সেই রাতে আপনার কেমন অনুভূতি হয়েছিল? ভয়, আশা, নাকি বিস্ময়?
ড. ইউনূস: উত্তেজনা। উত্তেজনা। উত্তেজনা, হ্যাঁ অবশ্যই। অবশেষে এটা ঘটল। এটা দারুণ খবর ছিল!
মেহদি হাসান : আপনি কি ভেবেছিলেন এটা ঘটবে?
ড. ইউনূস: না, এটা সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত ছিল। কিছু বিক্ষোভ চলছিল, যা বাংলাদেশে প্রায়শই দেখা যায়। কিন্তু এমন কিছু হবে, যা দেশটিকে বদলে দেবে—তা ভাবিনি। দেশের পরিস্থিতি তখন খুবই খারাপ ছিল। তখন তিনি চলে যাওয়ার আগে কী ঘটেছিল তার বিস্তারিত আমি জানতাম না, কিন্তু তিনি চলে গেছেন—এই চূড়ান্ত খবরটি ছিল খুবই উত্তেজনাপূর্ণ।
মেহদি হাসান : গত এক বছরে বাংলাদেশের জনগণের প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল? আপনারা সম্প্রতি বিপ্লবের এক বছর পূর্ণ করলেন। এখন দেশের মেজাজ কেমন? এখনো কি আশাবাদ, উত্তেজনা, আশা জিইয়ে রাখা, নাকি পরিবর্তনের ধীর গতিতে হতাশা রয়েছে?
ড. ইউনূস: সবই, সবকিছুর মিশ্রণ। কোনো কিছু ঘটছে বলে উত্তেজনা আছে, আবার হতাশা তো আছেই। হতাশা এই কারণে যে মানুষ ফল নিয়ে অভিযোগ করতে পছন্দ করে। এটা সাধারণ ব্যাপার। তারা আরও বেশি চায়। প্রত্যাশার স্তর এত বেশি যে তারা সবকিছু এখনই চায়, কাল নয়। সুতরাং, যেহেতু এটি আজ ঘটছে না, তাই আপনি ভালো না—এই ধরনের ধারণা। তবে একটা ভালো ইঙ্গিত রয়েছে। এটি কোনো নেতিবাচক দিকে যাচ্ছে না। এটি কেবল উচ্চ প্রত্যাশার ফল।
মেহদি হাসান : হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর, ছাত্র বিক্ষোভকারীরা আপনাকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পরিচালনার জন্য বেছে নিয়েছিল। আপনি কি এই সিদ্ধান্তে বিস্মিত হয়েছিলেন? আপনার কী মনে হয় তারা কেন আপনাকে বেছে নিয়েছিল—একজন অ-রাজনীতিক, একজন অর্থনীতিবিদ, এবং সম্মানের সঙ্গে বলছি, একজন ৮০-এর কোঠার মানুষকে কেন তারা এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান, অর্থাৎ প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে বেছে নিল?
ড. ইউনূস: আমি বিস্মিত হয়েছিলাম, কারণ আমি তাদের চিনি না। আমার কখনো তাদের সঙ্গে দেখা হয়নি। আমার কখনো তাদের সঙ্গে কোনো কথোপকথন হয়নি। ওহ, দারুণ! এই বার্তাটি প্রথমে আমার প্রতিষ্ঠানের সহকর্মীদের মাধ্যমে আসে যে ছাত্ররা আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছে। তারা চায় আপনি দায়িত্ব নিন। আমি বলেছিলাম, তাদের উপেক্ষা করো। এই আলোচনায় জড়িও না। আমি তাদের বোঝানোর চেষ্টা করছিলাম যে এটা হবে না। পরের দিন, তারা নিজেরাই সরাসরি আমার কাছে আসার চেষ্টা করে, কারণ আমার সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে কাজ হচ্ছিল না। তাই তারা আমাকে ফোন করে, ব্যাখ্যা করে। আমি বলেছিলাম, ‘না, অন্য কাউকে খুঁজে নাও। আমি জড়াতে চাই না।’ এই আলোচনা, কথোপকথন—তিন দিন ধরে চলল। আমি দূরে থাকার চেষ্টা করছিলাম। আর তারা বারবার অনুরোধ করছিল।
মেহদি হাসান : তাহলে শেষ পর্যন্ত কী কারণে আপনি রাজি হলেন?
ড. ইউনূস: অবশেষে, তারা পরিস্থিতি বর্ণনা করল। দেখুন, ছাত্ররা রক্ত দিয়েছে, নিজেদের উৎসর্গ করেছে, শিশুরা গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এবং এত কিছু ঘটেছে, আর তারা চাইছে আপনি আসুন। এসব উপেক্ষা করলে দেশের কী হবে? তারা খুব আবেগপ্রবণ ছিল। তারা আমাকে রাজি করানোর চেষ্টা করছিল। অবশেষে আমি বললাম, ঠিক আছে, তোমরা যদি এত বড় ত্যাগ স্বীকার করে থাকো, তাহলে আমি আমার মন পরিবর্তন করব। আমি দেখব তোমাদের জন্য কী করতে পারি।
মেহদি হাসান : আপনি এই আত্মত্যাগ এবং রক্তপাতের কথা উল্লেখ করলেন। ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘ জানায়, গত গ্রীষ্মে ছাত্র বিক্ষোভের ওপর হাসিনার দমন-পীড়নের সময় আনুমানিক ১ হাজার ৪০০ জন নিহত হন। বাংলাদেশ এখন আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনেছে। আর আপনি আমার চেয়ে ভালো জানেন, তিনি এখন ভারতে পালিয়ে আছেন, যেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সুরক্ষায় আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনে জবাবদিহির মুখোমুখি করার জন্য আপনি বারবার অনুরোধ করেছেন। মোদী আপনার এই আহ্বান উপেক্ষা করায় আপনার প্রতিক্রিয়া কী? আপনি কি মনে করেন ভারত কখনো হাসিনাকে বাংলাদেশের হাতে তুলে দেবে?
ড. ইউনূস: যদি তাদের নিজস্ব ইচ্ছায় ছেড়ে দেওয়া হয়, অর্থাৎ তারা যদি স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে, তবে সম্ভবত তারা তাকে নিজেদের কাছেই রাখবে। যদি কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা থাকে যা তারা এড়াতে পারবে না, তবে পরিস্থিতি ভিন্ন হবে।
মেহদি হাসান : তাকে নিজেদের কাছে রাখার পেছনে ভারতের স্বার্থ কী?
ড. ইউনূস: তারা তাকে সব সময় সমর্থন করে এসেছে। তারা এখনো আশা করছে, সম্ভবত যারা তাকে সমর্থন করে, তারা আশা করছে যে তিনি পূর্ণ গৌরব নিয়ে বিজয়ী নেতা হিসেবে বাংলাদেশে ফিরে আসবেন।
মেহদি হাসান : নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে যে তিনি আওয়ামী লীগের সঙ্গে ভার্চুয়াল সভা করছেন। এটা কি আপনাকে চিন্তিত করে যে ভারত তাকে ফিরিয়ে এনে আবার ক্ষমতায় বসানোর চেষ্টা করবে?
ড. ইউনূস: আমি ঠিক সেই শব্দগুলো ব্যবহার করব না, তবে এটা সম্ভব যে কিছু বহিঃশক্তি তাঁকে বাংলাদেশে ফিরে আসতে সাহায্য করবে। আমরা সব সময় এই বিষয়ে উদ্বিগ্ন, কারণ—
মেহদি হাসান: আপনি কি মোদীর সঙ্গে কথা বলেছেন?
ড. ইউনূস: আমি মোদীর সঙ্গে কথা বলেছি। খুব খোলাখুলিভাবে।
মেহদি হাসান: বিচারের মুখোমুখি করার জন্য তাঁকে ফেরত পাঠাতে বলায় তিনি কী বললেন?
ড. ইউনূস: দুটি বিষয়। প্রথমত, তাদের বলেছি, আপনারা তাঁকে রাখতে চান। আমি আপনাদের বলতে পারি না আপনারা তার সঙ্গে কী করবেন, তবে নিশ্চিত করুন তিনি যেন আমাদের নিয়ে কথা না বলেন। তিনি যেন বারবার বাংলাদেশের মানুষ সম্পর্কে কথা না বলেন।
মেহদি হাসান: দুঃখিত, মোদী আপনাকে এটা বলেছেন?
ড. ইউনূস: আমি মোদীকে এই বিষয়ে বলেছিলাম যে দয়া করে নিশ্চিত করুন...
মেহদি হাসান: তিনি কী বললেন?
ড. ইউনূস: তিনি বললেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়া আমি নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না।’
মেহদি হাসান: হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে, আপনার সরকার তাঁর দল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করেছে, তাদের নিবন্ধন বাতিল করেছে, যার ফলে কার্যত তাদের পরবর্তী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে বাধা তৈরি হয়েছে। আপনার সহকর্মী নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অমর্ত্য সেন, যাকে আপনি খুব ভালোভাবে চেনেন, তিনি লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির বিরুদ্ধে সতর্ক করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে এটি কেবল পূর্ববর্তী সরকারের ভুলের পুনরাবৃত্তি হবে, যারা ক্ষমতায় এসে বিরোধীদের নিষিদ্ধ করেছিল। আপনি শুধু সেই চক্রের পুনরাবৃত্তি করছেন। অমর্ত্য সেন এবং অন্যদের এই সমালোচনার জবাবে আপনার কী বলার আছে?
ড. ইউনূস: এটি ভুল সমালোচনা, কারণ আমরা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করিনি।
মেহদি হাসান: মানে, আপনারা কি তাদের নিবন্ধন বাতিল করেছেন?
ড. ইউনূস : না, নিবন্ধন নয়। কেবল তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।
মেহদি হাসান : এর মানে কী?
ড. ইউনূস : এর মানে হলো তারা কোনো রাজনৈতিক কার্যকলাপ করতে পারবে না।
মেহদি হাসান : তাহলে আপনারা তো কার্যত...মানে, তারা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে না।
ড. ইউনূস : না, দলটি এখনো আছে।
মেহদি হাসান : তারা কি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে?
ড. ইউনূস : এখন নয়, কারণ কার্যক্রম নিষিদ্ধ।
মেহদি হাসান : ঠিক আছে, তাহলে (আগের সরকারের) পুনরাবৃত্তি নিয়ে যে সতর্ক করা হয়েছিল, তা থেকে এটি কীভাবে ভিন্ন?
ড. ইউনূস: তারা একটি দল হিসেবে বৈধ রয়েছে। তবে আপাতত তাদের কার্যক্রম স্থগিত। আমি বলতে চাচ্ছি, যেকোনো সময় এটি উন্মুক্ত করা যেতে পারে।
মেহদি হাসান : আপনি বলতে চাচ্ছেন আপনারা স্থগিত কার্যক্রম আবার শুরু করতে দিতে পারেন?
ড. ইউনূস : স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়া যেতে পারে, এমন সম্ভাবনা আছে।
মেহদি হাসান: আপনারা দলটি নিষিদ্ধ করেননি। আপনারা শুধু বলেছেন যে আপাতত তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।
ড. ইউনূস: ঠিক তাই।
মেহদি হাসান : কিন্তু একটি গোষ্ঠীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত রাখা কীভাবে গণতান্ত্রিক হতে পারে?
ড. ইউনূস: এটি নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এই দলের কার্যপ্রণালী দেখে এবং সম্ভাবনা বিবেচনা করে দেখেছে যে তারা পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করবে। তাই তারা মনে করেছে, এটা না করাই ভালো—
মেহদি হাসান : কিন্তু আপনি নিশ্চয়ই অস্বীকার করবেন না যে বাংলাদেশে তাদের লাখ লাখ সমর্থক রয়েছে।
ড. ইউনূস : আমি লাখ লাখ বলব না। তাদের সমর্থক আছে, কিন্তু কতজন অবশিষ্ট আছে তা আমি জানি না, কারণ সমর্থক হলো এমন যে আপনি এতই শক্তিশালী, এই কারণেই আমি সব সময় আপনার কাছে যাই, কারণ আপনি ক্ষমতাশালী। আপনি হয়তো সমর্থকও নন।
মেহদি হাসান : কিন্তু আপনি তো অস্বীকার করছেন না যে বাংলাদেশে তাদের একটি ভোটার গোষ্ঠী রয়েছে। তাদের কোনো সমর্থন নেই?
ড. ইউনূস: নিশ্চয়ই। এটি দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার।
মেহদি হাসান : কিন্তু এখন সেই মানুষদের কোনো কণ্ঠস্বর নেই। আপনারা তাদের দলকে নিষিদ্ধ করেছেন। আমি বলছি, আপনারা তাদের দলকে রাজনীতিতে অংশ নিতে বাধা দিচ্ছেন।
ড. ইউনূস: তারা ভোট দিতে পারে। ভোটার হিসেবে তারা বৈধ ভোটার। অনেক অংশগ্রহণকারী রয়েছে। তারা নিজেদের নেতা বেছে নেবে...
মেহদি হাসান : কিন্তু বাংলাদেশের জন্য এটা কি সহায়ক যে মানুষ বলবে, ‘নতুন সরকার পুরোনো সরকারের ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে, চক্রটি চলছেই?’
ড. ইউনূস: অন্যথায় আমরা নির্বাচন করতে পারব না। এই দলটি, যদি তারা রাজনৈতিক দল হিসেবে থাকেও, তারা রাজনৈতিক দলের মতো আচরণ করছে না। তারা মানুষ হত্যা করেছে—সে বিষয়ে তারা কোনো অনুতাপ প্রকাশ করেনি। তারা এই সময়ের মধ্যে যা করেছে, তার কোনো দায় নেয়নি। একটি শব্দও না। সব সময় অভিযোগ করছে যে অন্য কেউ এর জন্য দায়ী।
মেহদি হাসান : আমি নির্বাচনের প্রসঙ্গে একটু পরে ফিরতে চাই, কিন্তু তার আগে বাংলাদেশের বাইরে থেকে আসা কিছু সমালোচনা নিয়ে কথা বলতে চাই। আমি আপনাকে এর জবাব দেওয়ার সুযোগ দিতে চাই। গত নভেম্বরে, বাংলাদেশে প্রায় ৩০ হাজার হিন্দু আপনার সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করতে জড়ো হয়েছিল, দাবি করা হয় যে তাদের সম্প্রদায়ের ওপর হাজার হাজার হামলা হয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পও এ বিষয়ে মন্তব্য করে বাংলাদেশের সহিংসতাকে ‘বর্বর’ বলে অভিহিত করেছিলেন, আমার মনে হয় তিনি এই শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন। এই সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে আনতে কী লাগবে, বা আপনার মতে এটি কি নিয়ন্ত্রণে আছে? আমরা এর মাত্রা নিয়ে কথা বলতে পারি।
ড. ইউনূস: প্রথমত, এগুলো ভুয়া খবর। আপনি এই ভুয়া খবরের ওপর ভিত্তি করে চলতে পারেন না।
মেহদি হাসান : আমি ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথা উদ্ধৃত করেছি, আর আপনি বলছেন ভুয়া খবর।
ড. ইউনূস: হ্যাঁ। ডোনাল্ড ট্রাম্প কখনো এমন কিছু বলেছেন কিনা, বা বাংলাদেশে এখন কী ঘটছে সে সম্পর্কে তাঁর কোনো জ্ঞান আছে কিনা।
মেহদি হাসান : আপনি বলছেন, এটি শুধু অতিরঞ্জিত নয়, তাদের বিরুদ্ধে কোনো সহিংসতাই হয়নি? এমনকি নিউইয়র্ক টাইমস সম্প্রতি ভাঙচুর, দলবদ্ধ সহিংসতা, এবং গত নভেম্বরে শুধু বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার ওপর হিন্দুত্ববাদী পতাকা উত্তোলনের জন্য একজন হিন্দু সন্ন্যাসীকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারের বেশ কয়েকটি ঘটনার কথা জানিয়েছে।
ড. ইউনূস: এটা সঠিক নয়, ভুয়া ও মিথ্যা খবরের ছড়াছড়ি।
মেহদি হাসান: না, আমি বুঝতে পারছি। সব ধরনের খবরই আসে। আমি বুঝতে পারছি, এটা অতিরঞ্জন। কিন্তু আমি জানতে চাচ্ছি, আপনি কি বলছেন যে কোনো হিন্দু-বিরোধী সহিংসতা নেই?
ড. ইউনূস: এটা সঠিক নয়।
সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা সরকার নির্ধারিত ক্ষতিপূরণ পেতে নানা হয়রানি ও দীর্ঘসূত্রতার মুখে পড়েন। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে তাঁরা কিছুই পান না। এই জটিলতা দূর করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা যাতে চাওয়ার আগেই ক্ষতিপূরণ পান, সে ব্যাপারে বিআরটিএকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২ ঘণ্টা আগেআজ বুধবার এক অনুষ্ঠানে এসব কথা জানান সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে তেজগাঁওয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অডিটরিয়ামে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
২ ঘণ্টা আগেজাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সংশয়ের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে আসিফ নজরুল বলেন, ‘মাঠে-ঘাটে মানুষের মধ্যে আস্থার অভাব আছে কি না, আমি জানি না। আমার মনে হয়, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যেভাবে অনৈক্য থাকে, তারা একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে যেভাবে বলে, ওটার কারণে হয়তো নির্বাচন নিয়ে মানুষের মধ্যে সংশ
৩ ঘণ্টা আগেআওয়ামী লীগ শাসনামলে গুম ও নির্যাতনের দুই মামলায় এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় রামপুরায় সংঘটিত অপরাধের এক মামলায় আসামি ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
৪ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা সরকার নির্ধারিত ক্ষতিপূরণ পেতে নানা হয়রানি ও দীর্ঘসূত্রতার মুখে পড়েন। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে তাঁরা কিছুই পান না। এই জটিলতা দূর করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা যাতে চাওয়ার আগেই ক্ষতিপূরণ পান, সে ব্যাপারে বিআরটিএকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার এক অনুষ্ঠানে এসব কথা জানান সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে তেজগাঁওয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অডিটরিয়ামে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সড়ক উপদেষ্টা বলেন, ‘ফিটনেসবিহীন গাড়ি ডাম্পিংয়ে পাঠানো হচ্ছে এবং এই অভিযান আরও বাড়ানো হবে। তিনি গাড়ির মালিকদের ফিটনেস ঠিক রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘ফিটনেসবিহীন যানবাহন কোনো অবস্থাতেই সড়কে চলতে দেওয়া হবে না। কারণ, এটি দুর্ঘটনার বড় কারণ।’
মোটরসাইকেল বিষয়ে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘মোটরসাইকেলের সংখ্যা বাড়ায় দুর্ঘটনা ও মৃত্যুর হারও বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে হেলমেট ব্যবহারে সচেতনতা বাড়াতে হবে। এবার জাতীয় সড়ক দিবস উপলক্ষে ১০ হাজার মোটরসাইকেল চালকের মধ্যে হেলমেট বিতরণ করা হবে, বিশেষ করে যেসব এলাকায় সড়ক নির্মাণকাজ চলছে বা মানুষ ভোগান্তিতে আছে।’
সড়ক দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান নিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনা আমাদের জন্য এক ধরনের গ্লানি ও ব্যর্থতা। ২০১৫ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত প্রতিদিন গড়ে ১৬টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এতে গড়ে ২৭ জন নিহত ও ৩৮ জন আহত হন।’
উপদেষ্টার মতে, সাম্প্রতিক সময়ে মোটরসাইকেলের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় দুর্ঘটনাও বেড়েছে।
দুর্ঘটনার ক্ষতিপূরণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আইন অনুযায়ী সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তির পরিবার ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ পাওয়ার অধিকারী, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই তারা তা পান না।’
উপদেষ্টা আরও জানান, বিআরটিএকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো চাওয়ার আগেই ক্ষতিপূরণের টাকা পায়।
সড়ক ব্যবস্থাপনা বিষয়ে ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘সড়ক নিরাপত্তা শুধু সড়ক বিভাগের দায়িত্ব নয়, বরং এটি করতে হবে সকল সংস্থার সমন্বয়ে।’
সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা সরকার নির্ধারিত ক্ষতিপূরণ পেতে নানা হয়রানি ও দীর্ঘসূত্রতার মুখে পড়েন। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে তাঁরা কিছুই পান না। এই জটিলতা দূর করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা যাতে চাওয়ার আগেই ক্ষতিপূরণ পান, সে ব্যাপারে বিআরটিএকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার এক অনুষ্ঠানে এসব কথা জানান সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে তেজগাঁওয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অডিটরিয়ামে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সড়ক উপদেষ্টা বলেন, ‘ফিটনেসবিহীন গাড়ি ডাম্পিংয়ে পাঠানো হচ্ছে এবং এই অভিযান আরও বাড়ানো হবে। তিনি গাড়ির মালিকদের ফিটনেস ঠিক রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘ফিটনেসবিহীন যানবাহন কোনো অবস্থাতেই সড়কে চলতে দেওয়া হবে না। কারণ, এটি দুর্ঘটনার বড় কারণ।’
মোটরসাইকেল বিষয়ে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘মোটরসাইকেলের সংখ্যা বাড়ায় দুর্ঘটনা ও মৃত্যুর হারও বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে হেলমেট ব্যবহারে সচেতনতা বাড়াতে হবে। এবার জাতীয় সড়ক দিবস উপলক্ষে ১০ হাজার মোটরসাইকেল চালকের মধ্যে হেলমেট বিতরণ করা হবে, বিশেষ করে যেসব এলাকায় সড়ক নির্মাণকাজ চলছে বা মানুষ ভোগান্তিতে আছে।’
সড়ক দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান নিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনা আমাদের জন্য এক ধরনের গ্লানি ও ব্যর্থতা। ২০১৫ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত প্রতিদিন গড়ে ১৬টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এতে গড়ে ২৭ জন নিহত ও ৩৮ জন আহত হন।’
উপদেষ্টার মতে, সাম্প্রতিক সময়ে মোটরসাইকেলের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় দুর্ঘটনাও বেড়েছে।
দুর্ঘটনার ক্ষতিপূরণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আইন অনুযায়ী সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তির পরিবার ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ পাওয়ার অধিকারী, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই তারা তা পান না।’
উপদেষ্টা আরও জানান, বিআরটিএকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো চাওয়ার আগেই ক্ষতিপূরণের টাকা পায়।
সড়ক ব্যবস্থাপনা বিষয়ে ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘সড়ক নিরাপত্তা শুধু সড়ক বিভাগের দায়িত্ব নয়, বরং এটি করতে হবে সকল সংস্থার সমন্বয়ে।’
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে নতুন ধারার সংবাদমাধ্যম জিটিওর সাংবাদিক মেহদি হাসানকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সাক্ষাৎকারটি সোমবার প্রকাশ করেছে জিটিও।
২২ দিন আগেআজ বুধবার এক অনুষ্ঠানে এসব কথা জানান সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে তেজগাঁওয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অডিটরিয়ামে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
২ ঘণ্টা আগেজাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সংশয়ের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে আসিফ নজরুল বলেন, ‘মাঠে-ঘাটে মানুষের মধ্যে আস্থার অভাব আছে কি না, আমি জানি না। আমার মনে হয়, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যেভাবে অনৈক্য থাকে, তারা একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে যেভাবে বলে, ওটার কারণে হয়তো নির্বাচন নিয়ে মানুষের মধ্যে সংশ
৩ ঘণ্টা আগেআওয়ামী লীগ শাসনামলে গুম ও নির্যাতনের দুই মামলায় এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় রামপুরায় সংঘটিত অপরাধের এক মামলায় আসামি ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
৪ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদানের বর্তমান পদ্ধতিতে আমূল পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এখন থেকে প্রশিক্ষণ ছাড়া কেউ ড্রাইভিং লাইসেন্স পাবেন না। লাইসেন্স দেওয়ার সব কমিটি বাতিল করে আন্তর্জাতিক মানে নতুন ব্যবস্থা চালু করা হবে। লাইসেন্স পাওয়ার পূর্বশর্ত হিসেবে অন্তত ৬০ ঘণ্টার প্রশিক্ষণ নিতে হবে। এর আয়োজন করবে সরকার। প্রশিক্ষণকালে প্রশিক্ষণার্থীদের ভাতার ব্যবস্থাও থাকবে।
আজ বুধবার এক অনুষ্ঠানে এসব কথা জানান সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে তেজগাঁওয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অডিটরিয়ামে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
উপদেষ্টা বলেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে হলে চালকদের স্বীকৃত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে বাধ্যতামূলক প্রশিক্ষণ নিতে হবে। বর্তমানে বিআরটিসিসহ দেশে বেশ কয়েকটি বৈধ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে, যেখান থেকে এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, প্রশিক্ষণে দুটি বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হবে—প্রথমত, সড়কের বিভিন্ন সাইন ও চিহ্ন সম্পর্কে জ্ঞান এবং দ্বিতীয়ত, যানবাহন সঠিকভাবে চালানো ও নিয়ন্ত্রণ করার দক্ষতা। কারণ, বেশির ভাগ দুর্ঘটনা ঘটে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ হারানোর কারণে।
ফাওজুল কবির খান আরও বলেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স-সংক্রান্ত কাজগুলো বিআরটিএ থেকে সরিয়ে প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটগুলোর মাধ্যমে পরিচালনা করা হবে। এতে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণমূলক ক্ষমতা থাকবে না।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, আগামী মাসের মধ্যেই এই নতুন প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হবে।
সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, সড়কে যানজট ও দুর্ঘটনার মূল কারণ প্রশিক্ষণহীন চালকেরা।
তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমি সরাইল এলাকায় গিয়েছিলাম। যাওয়ার আগে সেখানে নিয়মিত যানজট ছিল, কিন্তু আমার পরিদর্শনের দুই দিন পর থেকেই আর জ্যাম নেই। আমার হাতে কোনো জাদুর কাঠি নেই—শুধু কিছু শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করেছি।’
এদিকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরী, সেতু বিভাগের সচিব মোহাম্মদ আবদুর রউফ, বিআরটিএ চেয়ারম্যান আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসান, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব সাইফুল আলম প্রমুখ।
ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদানের বর্তমান পদ্ধতিতে আমূল পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এখন থেকে প্রশিক্ষণ ছাড়া কেউ ড্রাইভিং লাইসেন্স পাবেন না। লাইসেন্স দেওয়ার সব কমিটি বাতিল করে আন্তর্জাতিক মানে নতুন ব্যবস্থা চালু করা হবে। লাইসেন্স পাওয়ার পূর্বশর্ত হিসেবে অন্তত ৬০ ঘণ্টার প্রশিক্ষণ নিতে হবে। এর আয়োজন করবে সরকার। প্রশিক্ষণকালে প্রশিক্ষণার্থীদের ভাতার ব্যবস্থাও থাকবে।
আজ বুধবার এক অনুষ্ঠানে এসব কথা জানান সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে তেজগাঁওয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অডিটরিয়ামে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
উপদেষ্টা বলেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে হলে চালকদের স্বীকৃত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে বাধ্যতামূলক প্রশিক্ষণ নিতে হবে। বর্তমানে বিআরটিসিসহ দেশে বেশ কয়েকটি বৈধ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে, যেখান থেকে এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, প্রশিক্ষণে দুটি বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হবে—প্রথমত, সড়কের বিভিন্ন সাইন ও চিহ্ন সম্পর্কে জ্ঞান এবং দ্বিতীয়ত, যানবাহন সঠিকভাবে চালানো ও নিয়ন্ত্রণ করার দক্ষতা। কারণ, বেশির ভাগ দুর্ঘটনা ঘটে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ হারানোর কারণে।
ফাওজুল কবির খান আরও বলেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স-সংক্রান্ত কাজগুলো বিআরটিএ থেকে সরিয়ে প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটগুলোর মাধ্যমে পরিচালনা করা হবে। এতে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণমূলক ক্ষমতা থাকবে না।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, আগামী মাসের মধ্যেই এই নতুন প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হবে।
সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, সড়কে যানজট ও দুর্ঘটনার মূল কারণ প্রশিক্ষণহীন চালকেরা।
তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমি সরাইল এলাকায় গিয়েছিলাম। যাওয়ার আগে সেখানে নিয়মিত যানজট ছিল, কিন্তু আমার পরিদর্শনের দুই দিন পর থেকেই আর জ্যাম নেই। আমার হাতে কোনো জাদুর কাঠি নেই—শুধু কিছু শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করেছি।’
এদিকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরী, সেতু বিভাগের সচিব মোহাম্মদ আবদুর রউফ, বিআরটিএ চেয়ারম্যান আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসান, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব সাইফুল আলম প্রমুখ।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে নতুন ধারার সংবাদমাধ্যম জিটিওর সাংবাদিক মেহদি হাসানকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সাক্ষাৎকারটি সোমবার প্রকাশ করেছে জিটিও।
২২ দিন আগেসড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা সরকার নির্ধারিত ক্ষতিপূরণ পেতে নানা হয়রানি ও দীর্ঘসূত্রতার মুখে পড়েন। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে তাঁরা কিছুই পান না। এই জটিলতা দূর করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা যাতে চাওয়ার আগেই ক্ষতিপূরণ পান, সে ব্যাপারে বিআরটিএকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২ ঘণ্টা আগেজাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সংশয়ের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে আসিফ নজরুল বলেন, ‘মাঠে-ঘাটে মানুষের মধ্যে আস্থার অভাব আছে কি না, আমি জানি না। আমার মনে হয়, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যেভাবে অনৈক্য থাকে, তারা একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে যেভাবে বলে, ওটার কারণে হয়তো নির্বাচন নিয়ে মানুষের মধ্যে সংশ
৩ ঘণ্টা আগেআওয়ামী লীগ শাসনামলে গুম ও নির্যাতনের দুই মামলায় এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় রামপুরায় সংঘটিত অপরাধের এক মামলায় আসামি ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
৪ ঘণ্টা আগেবিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বাস্তব অগ্রগতিতে নির্বাচন নিয়ে ‘সব সংশয় কেটে যাবে’ বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
আজ বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সংশয়ের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে আসিফ নজরুল বলেন, ‘মাঠে-ঘাটে মানুষের মধ্যে আস্থার অভাব আছে কি না, আমি জানি না। আমার মনে হয়, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যেভাবে অনৈক্য থাকে, তারা একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে যেভাবে বলে, ওটার কারণে হয়তো নির্বাচন নিয়ে মানুষের মধ্যে সংশয় কাজ করছে। তবে আশা করি, আমরা যখন জুলাই সনদ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বাস্তব অগ্রগতি দেখব, এ সম্পর্কে সব সংশয় খুব দ্রুত কেটে যাবে।’
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধিদলের ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক হয়। বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকা পালন করতে প্রধান উপদেষ্টাকে পরামর্শ দেন বিএনপির নেতারা।
এ বিষয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় যেটা বুঝেছি, উনারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাননি। অন্তর্বর্তী সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবে, সেটা বলেছে। তারা আমাদের কাছ থেকে নিরপেক্ষ ভূমিকা চেয়েছে। আমরা উনাদেরকে বলেছি, আমরা নিরপেক্ষ ভূমিকাই পালন করছি। নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করার জন্য এমনকি প্রধান উপদেষ্টা এই নিশ্চয়তাও দিয়েছেন—জনপ্রশাসন বা অন্যান্য ক্ষেত্রে বড় বদলির ব্যাপারটা উনি নিজে দেখবেন।’
আসিফ নজরুল বলেন, ‘বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়, এটা বলেনি। বলেছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকা পালন করতে। আমাদের নিরপেক্ষ ভূমিকা চেয়েছে। সে বিষয়ে তাদের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে।’
নির্বাচনের সময় উপদেষ্টা পরিষদ ছোট হবে কি না, সেই প্রশ্নে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘এ ধরনের কথা কোথাও আলোচনা হয়নি। এটা উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনার বিষয়। নির্বাচনকালীন সরকার ছোট হবে কি না, এ ধরনের কোনো দাবিও কোনো মহল থেকে উত্থাপন হয়নি।’
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বাস্তব অগ্রগতিতে নির্বাচন নিয়ে ‘সব সংশয় কেটে যাবে’ বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
আজ বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সংশয়ের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে আসিফ নজরুল বলেন, ‘মাঠে-ঘাটে মানুষের মধ্যে আস্থার অভাব আছে কি না, আমি জানি না। আমার মনে হয়, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যেভাবে অনৈক্য থাকে, তারা একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে যেভাবে বলে, ওটার কারণে হয়তো নির্বাচন নিয়ে মানুষের মধ্যে সংশয় কাজ করছে। তবে আশা করি, আমরা যখন জুলাই সনদ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বাস্তব অগ্রগতি দেখব, এ সম্পর্কে সব সংশয় খুব দ্রুত কেটে যাবে।’
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধিদলের ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক হয়। বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকা পালন করতে প্রধান উপদেষ্টাকে পরামর্শ দেন বিএনপির নেতারা।
এ বিষয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় যেটা বুঝেছি, উনারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাননি। অন্তর্বর্তী সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবে, সেটা বলেছে। তারা আমাদের কাছ থেকে নিরপেক্ষ ভূমিকা চেয়েছে। আমরা উনাদেরকে বলেছি, আমরা নিরপেক্ষ ভূমিকাই পালন করছি। নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করার জন্য এমনকি প্রধান উপদেষ্টা এই নিশ্চয়তাও দিয়েছেন—জনপ্রশাসন বা অন্যান্য ক্ষেত্রে বড় বদলির ব্যাপারটা উনি নিজে দেখবেন।’
আসিফ নজরুল বলেন, ‘বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়, এটা বলেনি। বলেছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকা পালন করতে। আমাদের নিরপেক্ষ ভূমিকা চেয়েছে। সে বিষয়ে তাদের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে।’
নির্বাচনের সময় উপদেষ্টা পরিষদ ছোট হবে কি না, সেই প্রশ্নে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘এ ধরনের কথা কোথাও আলোচনা হয়নি। এটা উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনার বিষয়। নির্বাচনকালীন সরকার ছোট হবে কি না, এ ধরনের কোনো দাবিও কোনো মহল থেকে উত্থাপন হয়নি।’
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে নতুন ধারার সংবাদমাধ্যম জিটিওর সাংবাদিক মেহদি হাসানকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সাক্ষাৎকারটি সোমবার প্রকাশ করেছে জিটিও।
২২ দিন আগেসড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা সরকার নির্ধারিত ক্ষতিপূরণ পেতে নানা হয়রানি ও দীর্ঘসূত্রতার মুখে পড়েন। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে তাঁরা কিছুই পান না। এই জটিলতা দূর করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা যাতে চাওয়ার আগেই ক্ষতিপূরণ পান, সে ব্যাপারে বিআরটিএকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২ ঘণ্টা আগেআজ বুধবার এক অনুষ্ঠানে এসব কথা জানান সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে তেজগাঁওয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অডিটরিয়ামে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
২ ঘণ্টা আগেআওয়ামী লীগ শাসনামলে গুম ও নির্যাতনের দুই মামলায় এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় রামপুরায় সংঘটিত অপরাধের এক মামলায় আসামি ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
৪ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আওয়ামী লীগ শাসনামলে গুম ও নির্যাতনের দুই মামলায় এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় রামপুরায় সংঘটিত অপরাধের এক মামলায় আসামি ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
আজ বুধবার ট্রাইব্যুনালের এই আদেশের পর সেনা কর্মকর্তাদের ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে স্থাপিত কারা অধিদপ্তরের সাবজেলে রাখা হবে বলে জানিয়েছেন কারা মহাপরিদর্শক (আইজি-প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন।
আজ বেলা সাড়ে ১২টায় আজকের পত্রিকাকে তিনি এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
কারা মহাপরিদর্শক বলেন, সরকার ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের একটি ভবনকে সাবজেল ঘোষণা দিয়েছে। সাবজেল হিসেবে ঘোষণার পরপরই সেই ভবনটি কারা অধিদপ্তরের অধীনে সাবজেল হিসেবে তত্ত্বাবধান করা হচ্ছে। ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে রাখতে ট্রাইব্যুনালের নির্দেশের পর সেখানেই তাঁদের রাখা হবে। আমাদের কারা অধিদপ্তরের সব ব্যবস্থা সাবজেলে রয়েছে।
এর আগে সকাল ৭টার পর আসামি ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারা কর্তৃপক্ষের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) প্রিজন ভ্যানে কড়া নিরাপত্তায় ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তাঁদের নেওয়া হয়। এজলাসে তাঁদের নেওয়া হলে সকাল ৮টার পর বসেন ট্রাইব্যুনাল।
আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে টিএফআই-জেআইসি সেলে গুম-খুন ও জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক তিনটি মামলায় সাবেক ও বর্তমান ২৫ সেনা কর্মকর্তাসহ ৩২ আসামিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজিরের দিন ধার্য ছিল আজ।
আওয়ামী লীগ শাসনামলে গুম ও নির্যাতনের দুই মামলায় এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় রামপুরায় সংঘটিত অপরাধের এক মামলায় আসামি ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
আজ বুধবার ট্রাইব্যুনালের এই আদেশের পর সেনা কর্মকর্তাদের ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে স্থাপিত কারা অধিদপ্তরের সাবজেলে রাখা হবে বলে জানিয়েছেন কারা মহাপরিদর্শক (আইজি-প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন।
আজ বেলা সাড়ে ১২টায় আজকের পত্রিকাকে তিনি এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
কারা মহাপরিদর্শক বলেন, সরকার ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের একটি ভবনকে সাবজেল ঘোষণা দিয়েছে। সাবজেল হিসেবে ঘোষণার পরপরই সেই ভবনটি কারা অধিদপ্তরের অধীনে সাবজেল হিসেবে তত্ত্বাবধান করা হচ্ছে। ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে রাখতে ট্রাইব্যুনালের নির্দেশের পর সেখানেই তাঁদের রাখা হবে। আমাদের কারা অধিদপ্তরের সব ব্যবস্থা সাবজেলে রয়েছে।
এর আগে সকাল ৭টার পর আসামি ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারা কর্তৃপক্ষের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) প্রিজন ভ্যানে কড়া নিরাপত্তায় ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তাঁদের নেওয়া হয়। এজলাসে তাঁদের নেওয়া হলে সকাল ৮টার পর বসেন ট্রাইব্যুনাল।
আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে টিএফআই-জেআইসি সেলে গুম-খুন ও জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক তিনটি মামলায় সাবেক ও বর্তমান ২৫ সেনা কর্মকর্তাসহ ৩২ আসামিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজিরের দিন ধার্য ছিল আজ।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে নতুন ধারার সংবাদমাধ্যম জিটিওর সাংবাদিক মেহদি হাসানকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সাক্ষাৎকারটি সোমবার প্রকাশ করেছে জিটিও।
২২ দিন আগেসড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা সরকার নির্ধারিত ক্ষতিপূরণ পেতে নানা হয়রানি ও দীর্ঘসূত্রতার মুখে পড়েন। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে তাঁরা কিছুই পান না। এই জটিলতা দূর করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা যাতে চাওয়ার আগেই ক্ষতিপূরণ পান, সে ব্যাপারে বিআরটিএকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২ ঘণ্টা আগেআজ বুধবার এক অনুষ্ঠানে এসব কথা জানান সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে তেজগাঁওয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অডিটরিয়ামে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
২ ঘণ্টা আগেজাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সংশয়ের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে আসিফ নজরুল বলেন, ‘মাঠে-ঘাটে মানুষের মধ্যে আস্থার অভাব আছে কি না, আমি জানি না। আমার মনে হয়, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যেভাবে অনৈক্য থাকে, তারা একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে যেভাবে বলে, ওটার কারণে হয়তো নির্বাচন নিয়ে মানুষের মধ্যে সংশ
৩ ঘণ্টা আগে