সরকারি চাকরি আইনে সংশোধন
শহীদুল ইসলাম, ঢাকা

দায়িত্বে অবহেলা ও শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে বিভাগীয় মামলা না করেই সরকারি কর্মচারীদের যেকোনো সময় চাকরিচ্যুত করতে পারবে সরকার। সর্বোচ্চ ২৫ কার্যদিবসের মধ্যে অভিযোগ নিষ্পত্তি করে এই পদক্ষেপ নেওয়া যাবে। জনপ্রশাসনে শৃঙ্খলা ফেরাতে সরকারি চাকরি আইন সংশোধন করে এমন বিধান যুক্ত করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার।
সরকারি চাকরি আইন সংশোধনে গত এপ্রিলের মাঝামাঝি খসড়া করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে খবর প্রকাশের পর আলোচনা-সমালোচনা হয়। পরে সরকারের চারজন উপদেষ্টার নির্দেশনায় নতুন খসড়া চূড়ান্ত করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
চূড়ান্ত খসড়ায় বলা হয়েছে, শৃঙ্খলাভঙ্গ ও দায়িত্বে অবহেলার কারণে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে নোটিশ দেওয়া হবে। নোটিশ পাওয়ার সাত কার্যদিবসের মধ্যে তার জবাব দিতে হবে। নোটিশের জবাব পাওয়ার দিন থেকে ২০-২৫ কার্যদিবসের মধ্যে অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে হবে। এ ক্ষেত্রে বিভাগীয় মামলার প্রয়োজন হবে না। কেউ সাত কার্যদিবসের মধ্যে নোটিশের জবাব না দিলে ওই কর্মকর্তার অনুপস্থিতিতেই অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হবে।
শৃঙ্খলাভঙ্গ, অসদাচরণ ও দায়িত্বে অবহেলার কারণে এখনো সরকারি কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে। তবে বর্তমান আইন ও বিধিবিধান অনুযায়ী বিভাগীয় মামলা দিয়ে এসব অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে অনেক সময় দুই বছরের বেশি সময় লেগে যায়। অভিযোগ নিষ্পত্তির পর রাষ্ট্রপতির কাছে আপিল ছাড়াও প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালে মামলা করার সুযোগ পান সরকারি কর্মচারীরা।
গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পেশাগত দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করেন ক্যাডার সার্ভিসের কর্মকর্তারা। সচিবালয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দপ্তর ঘেরাও, হট্টগোল তৈরি ও নজিরবিহীন শোডাউন করেন তাঁরা। অন্তর্বর্তী সরকার বেশ কিছু কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে, অনেককে ওএসডি করেছে। ৫ আগস্টের পর পুলিশের বিভিন্ন স্তরের ১৮০ জন এখনো কাজে যোগ দেননি। অনেকে অনুমতি না নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন।
সরকারি চাকরি আইন অনুযায়ী, কারও চাকরির বয়স ২৫ বছর পূর্ণ হলে সরকার কারণ দর্শানোর নোটিশ না দিয়েই চাকরি থেকে অবসরে পাঠাতে পারে। সে ক্ষেত্রে ওই কর্মকর্তা পুরো পেনশন পান। আর বিভাগীয় মামলার মাধ্যমে কাউকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠালে চাকরিকাল অনুযায়ী পেনশন সুবিধা পান তিনি। তবে চাকরি থেকে বরখাস্ত বা অপসারণ করলে কোনো অবসর সুবিধা পাওয়া যায় না।
নতুন আইন কার্যকর হলে বিভাগীয় মামলা ছাড়াই যাঁদের চাকরিকাল ২৫ বছরের কম, তাঁদেরও সহজে চাকরিচ্যুত করা যাবে। এ ক্ষেত্রে তাঁরা অবসর সুবিধা পাবেন কি না, সে বিষয়ে খসড়ায় কিছু বলা হয়নি।
সরকারি চাকরি আইন সংশোধন করে ২০১৮ সালে বাতিল হওয়া সরকারি কর্মচারী (বিশেষ বিধান) অধ্যাদেশ, ১৯৭৯-এর কিছু ধারা যুক্ত করতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরপর ওই অধ্যাদেশের চারটি ধারা যোগ করে খসড়া করা হয়।
সূত্র জানায়, খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খানের সঙ্গে গত শুক্রবার বৈঠক করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ ও জনপ্রশাসনসচিব মো. মোখলেস উর রহমান। ওই সভায় এই চার উপদেষ্টা সরকারি চাকরি আইনে কী কী সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে, সেসব বিষয়ে অবহিত হন। কিছু কিছু বিষয়ে তাঁরা লিখিত মতামত দেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় চারজন উপদেষ্টার মতামতের আলোকে নতুন করে খসড়া চূড়ান্ত করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়েছে। এখন এটি পাসের জন্য উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে তোলা হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মকর্তা বলেন, সরকারি কর্মচারীদের দলবদ্ধ আন্দোলন, সভা-সমাবেশ, কর্মবিরতি, অবস্থান কর্মসূচির পথ বন্ধ করতে আইনে নতুন বিধান যোগ করা হচ্ছে বলে তাঁরা মনে করেন। কোনো কর্মচারীকে সভা-সমাবেশ বা কর্মবিরতির মতো কর্মসূচিতে যোগ দিতে প্ররোচনা দিলেও একই সাজা দেওয়া হবে।
খসড়ায় বলা হয়েছে, কোনো কর্মচারী যদি এমন কোনো কাজে লিপ্ত হয়, যার কারণে অন্য কোনো সরকারি কর্মচারীর মধ্যে আনুগত্য সৃষ্টি হয়, শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হয়, কর্তব্য পালনে বাধার সৃষ্টি হয়, তবে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হবে। ছুটি না নিয়ে বা যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলে এবং অন্য কর্মচারীকে কাজে অনুপস্থিত থাকতে প্ররোচিত করলে; অন্যদের কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে ও কোনো কর্মচারীকে তাঁর কর্তব্য পালন না করতে উসকানি দিলে তা-ও অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে। এ জন্য চাকরি থেকে বরখাস্ত, অব্যাহতি এবং পদের অবনমন বা বেতন কমানোর সাজা দেওয়া যাবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, সরকারি চাকরি আইনের খসড়া পাসের জন্য এর আগে একবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঠানো হয়েছিল। তখন উপদেষ্টা পরিষদ তা অনুমোদন না দিয়ে আরও পর্যালোচনার নির্দেশনা দেয়। নতুন আইন প্রণয়ন বা কোনো আইন সংশোধনের আগে খসড়া প্রকাশ করে সংশ্লিষ্টদের মতামত নেওয়া হলেও সরকারি চাকরি আইনের খসড়ার ওপর মতামত নেওয়া হয়নি।
অপর এক কর্মকর্তা বলেন, আগে যে খসড়া করা হয়েছিল, সেখানে কর্মচারীদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ রাখা ছিল না। নতুন খসড়ায় অনেক বিষয় নমনীয় করা হয়েছে। কারণ, আইন সংশোধনের পর আন্দোলন হোক, সরকার তা চায় না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক সচিব আবু আলম মো. শহীদ খান গতকাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকারি কর্মচারী (বিশেষ বিধান) অধ্যাদেশ ছিল একটি কালাকানুন। ওই ধরনের কোনো আইন এখন করলে সেটিও কালাকানুন হবে। এই সরকারের প্রধান একটি অঙ্গীকার ছিল সব জঙ্গি আইন ও কালাকানুন বাতিল করবে। বিশেষ ক্ষমতা আইন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল হয়নি। তারা এখন আরেকটা কালাকানুন করার পথে হাঁটছে, যেটা সংবিধানবিরোধী।
গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে সরকারি কর্মচারীদের আন্দোলন দমানো, কথায় কথায় কলমবিরতি বন্ধ করা এবং ব্যক্তি ও গোষ্ঠীস্বার্থে যারা জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করছে, তাদের দমাতে আইন সংশোধন করছে বলে মনে করেন জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ফিরোজ মিয়া। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, স্বাভাবিক কোনো কাজের জন্য যেন এই বিধান প্রয়োগ না করা হয়। ২৫ কর্মদিবসের মধ্যে অভিযোগ নিষ্পত্তি করলে সমস্যা নেই, যদি তদন্তের বিধান রাখা হয়। অভিযুক্তকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে।
আরও খবর পড়ুন:

দায়িত্বে অবহেলা ও শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে বিভাগীয় মামলা না করেই সরকারি কর্মচারীদের যেকোনো সময় চাকরিচ্যুত করতে পারবে সরকার। সর্বোচ্চ ২৫ কার্যদিবসের মধ্যে অভিযোগ নিষ্পত্তি করে এই পদক্ষেপ নেওয়া যাবে। জনপ্রশাসনে শৃঙ্খলা ফেরাতে সরকারি চাকরি আইন সংশোধন করে এমন বিধান যুক্ত করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার।
সরকারি চাকরি আইন সংশোধনে গত এপ্রিলের মাঝামাঝি খসড়া করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে খবর প্রকাশের পর আলোচনা-সমালোচনা হয়। পরে সরকারের চারজন উপদেষ্টার নির্দেশনায় নতুন খসড়া চূড়ান্ত করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
চূড়ান্ত খসড়ায় বলা হয়েছে, শৃঙ্খলাভঙ্গ ও দায়িত্বে অবহেলার কারণে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে নোটিশ দেওয়া হবে। নোটিশ পাওয়ার সাত কার্যদিবসের মধ্যে তার জবাব দিতে হবে। নোটিশের জবাব পাওয়ার দিন থেকে ২০-২৫ কার্যদিবসের মধ্যে অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে হবে। এ ক্ষেত্রে বিভাগীয় মামলার প্রয়োজন হবে না। কেউ সাত কার্যদিবসের মধ্যে নোটিশের জবাব না দিলে ওই কর্মকর্তার অনুপস্থিতিতেই অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হবে।
শৃঙ্খলাভঙ্গ, অসদাচরণ ও দায়িত্বে অবহেলার কারণে এখনো সরকারি কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে। তবে বর্তমান আইন ও বিধিবিধান অনুযায়ী বিভাগীয় মামলা দিয়ে এসব অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে অনেক সময় দুই বছরের বেশি সময় লেগে যায়। অভিযোগ নিষ্পত্তির পর রাষ্ট্রপতির কাছে আপিল ছাড়াও প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালে মামলা করার সুযোগ পান সরকারি কর্মচারীরা।
গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পেশাগত দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করেন ক্যাডার সার্ভিসের কর্মকর্তারা। সচিবালয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দপ্তর ঘেরাও, হট্টগোল তৈরি ও নজিরবিহীন শোডাউন করেন তাঁরা। অন্তর্বর্তী সরকার বেশ কিছু কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে, অনেককে ওএসডি করেছে। ৫ আগস্টের পর পুলিশের বিভিন্ন স্তরের ১৮০ জন এখনো কাজে যোগ দেননি। অনেকে অনুমতি না নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন।
সরকারি চাকরি আইন অনুযায়ী, কারও চাকরির বয়স ২৫ বছর পূর্ণ হলে সরকার কারণ দর্শানোর নোটিশ না দিয়েই চাকরি থেকে অবসরে পাঠাতে পারে। সে ক্ষেত্রে ওই কর্মকর্তা পুরো পেনশন পান। আর বিভাগীয় মামলার মাধ্যমে কাউকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠালে চাকরিকাল অনুযায়ী পেনশন সুবিধা পান তিনি। তবে চাকরি থেকে বরখাস্ত বা অপসারণ করলে কোনো অবসর সুবিধা পাওয়া যায় না।
নতুন আইন কার্যকর হলে বিভাগীয় মামলা ছাড়াই যাঁদের চাকরিকাল ২৫ বছরের কম, তাঁদেরও সহজে চাকরিচ্যুত করা যাবে। এ ক্ষেত্রে তাঁরা অবসর সুবিধা পাবেন কি না, সে বিষয়ে খসড়ায় কিছু বলা হয়নি।
সরকারি চাকরি আইন সংশোধন করে ২০১৮ সালে বাতিল হওয়া সরকারি কর্মচারী (বিশেষ বিধান) অধ্যাদেশ, ১৯৭৯-এর কিছু ধারা যুক্ত করতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরপর ওই অধ্যাদেশের চারটি ধারা যোগ করে খসড়া করা হয়।
সূত্র জানায়, খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খানের সঙ্গে গত শুক্রবার বৈঠক করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ ও জনপ্রশাসনসচিব মো. মোখলেস উর রহমান। ওই সভায় এই চার উপদেষ্টা সরকারি চাকরি আইনে কী কী সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে, সেসব বিষয়ে অবহিত হন। কিছু কিছু বিষয়ে তাঁরা লিখিত মতামত দেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় চারজন উপদেষ্টার মতামতের আলোকে নতুন করে খসড়া চূড়ান্ত করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়েছে। এখন এটি পাসের জন্য উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে তোলা হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মকর্তা বলেন, সরকারি কর্মচারীদের দলবদ্ধ আন্দোলন, সভা-সমাবেশ, কর্মবিরতি, অবস্থান কর্মসূচির পথ বন্ধ করতে আইনে নতুন বিধান যোগ করা হচ্ছে বলে তাঁরা মনে করেন। কোনো কর্মচারীকে সভা-সমাবেশ বা কর্মবিরতির মতো কর্মসূচিতে যোগ দিতে প্ররোচনা দিলেও একই সাজা দেওয়া হবে।
খসড়ায় বলা হয়েছে, কোনো কর্মচারী যদি এমন কোনো কাজে লিপ্ত হয়, যার কারণে অন্য কোনো সরকারি কর্মচারীর মধ্যে আনুগত্য সৃষ্টি হয়, শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হয়, কর্তব্য পালনে বাধার সৃষ্টি হয়, তবে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হবে। ছুটি না নিয়ে বা যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলে এবং অন্য কর্মচারীকে কাজে অনুপস্থিত থাকতে প্ররোচিত করলে; অন্যদের কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে ও কোনো কর্মচারীকে তাঁর কর্তব্য পালন না করতে উসকানি দিলে তা-ও অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে। এ জন্য চাকরি থেকে বরখাস্ত, অব্যাহতি এবং পদের অবনমন বা বেতন কমানোর সাজা দেওয়া যাবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, সরকারি চাকরি আইনের খসড়া পাসের জন্য এর আগে একবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঠানো হয়েছিল। তখন উপদেষ্টা পরিষদ তা অনুমোদন না দিয়ে আরও পর্যালোচনার নির্দেশনা দেয়। নতুন আইন প্রণয়ন বা কোনো আইন সংশোধনের আগে খসড়া প্রকাশ করে সংশ্লিষ্টদের মতামত নেওয়া হলেও সরকারি চাকরি আইনের খসড়ার ওপর মতামত নেওয়া হয়নি।
অপর এক কর্মকর্তা বলেন, আগে যে খসড়া করা হয়েছিল, সেখানে কর্মচারীদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ রাখা ছিল না। নতুন খসড়ায় অনেক বিষয় নমনীয় করা হয়েছে। কারণ, আইন সংশোধনের পর আন্দোলন হোক, সরকার তা চায় না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক সচিব আবু আলম মো. শহীদ খান গতকাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকারি কর্মচারী (বিশেষ বিধান) অধ্যাদেশ ছিল একটি কালাকানুন। ওই ধরনের কোনো আইন এখন করলে সেটিও কালাকানুন হবে। এই সরকারের প্রধান একটি অঙ্গীকার ছিল সব জঙ্গি আইন ও কালাকানুন বাতিল করবে। বিশেষ ক্ষমতা আইন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল হয়নি। তারা এখন আরেকটা কালাকানুন করার পথে হাঁটছে, যেটা সংবিধানবিরোধী।
গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে সরকারি কর্মচারীদের আন্দোলন দমানো, কথায় কথায় কলমবিরতি বন্ধ করা এবং ব্যক্তি ও গোষ্ঠীস্বার্থে যারা জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করছে, তাদের দমাতে আইন সংশোধন করছে বলে মনে করেন জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ফিরোজ মিয়া। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, স্বাভাবিক কোনো কাজের জন্য যেন এই বিধান প্রয়োগ না করা হয়। ২৫ কর্মদিবসের মধ্যে অভিযোগ নিষ্পত্তি করলে সমস্যা নেই, যদি তদন্তের বিধান রাখা হয়। অভিযুক্তকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে।
আরও খবর পড়ুন:
সরকারি চাকরি আইনে সংশোধন
শহীদুল ইসলাম, ঢাকা

দায়িত্বে অবহেলা ও শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে বিভাগীয় মামলা না করেই সরকারি কর্মচারীদের যেকোনো সময় চাকরিচ্যুত করতে পারবে সরকার। সর্বোচ্চ ২৫ কার্যদিবসের মধ্যে অভিযোগ নিষ্পত্তি করে এই পদক্ষেপ নেওয়া যাবে। জনপ্রশাসনে শৃঙ্খলা ফেরাতে সরকারি চাকরি আইন সংশোধন করে এমন বিধান যুক্ত করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার।
সরকারি চাকরি আইন সংশোধনে গত এপ্রিলের মাঝামাঝি খসড়া করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে খবর প্রকাশের পর আলোচনা-সমালোচনা হয়। পরে সরকারের চারজন উপদেষ্টার নির্দেশনায় নতুন খসড়া চূড়ান্ত করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
চূড়ান্ত খসড়ায় বলা হয়েছে, শৃঙ্খলাভঙ্গ ও দায়িত্বে অবহেলার কারণে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে নোটিশ দেওয়া হবে। নোটিশ পাওয়ার সাত কার্যদিবসের মধ্যে তার জবাব দিতে হবে। নোটিশের জবাব পাওয়ার দিন থেকে ২০-২৫ কার্যদিবসের মধ্যে অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে হবে। এ ক্ষেত্রে বিভাগীয় মামলার প্রয়োজন হবে না। কেউ সাত কার্যদিবসের মধ্যে নোটিশের জবাব না দিলে ওই কর্মকর্তার অনুপস্থিতিতেই অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হবে।
শৃঙ্খলাভঙ্গ, অসদাচরণ ও দায়িত্বে অবহেলার কারণে এখনো সরকারি কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে। তবে বর্তমান আইন ও বিধিবিধান অনুযায়ী বিভাগীয় মামলা দিয়ে এসব অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে অনেক সময় দুই বছরের বেশি সময় লেগে যায়। অভিযোগ নিষ্পত্তির পর রাষ্ট্রপতির কাছে আপিল ছাড়াও প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালে মামলা করার সুযোগ পান সরকারি কর্মচারীরা।
গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পেশাগত দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করেন ক্যাডার সার্ভিসের কর্মকর্তারা। সচিবালয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দপ্তর ঘেরাও, হট্টগোল তৈরি ও নজিরবিহীন শোডাউন করেন তাঁরা। অন্তর্বর্তী সরকার বেশ কিছু কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে, অনেককে ওএসডি করেছে। ৫ আগস্টের পর পুলিশের বিভিন্ন স্তরের ১৮০ জন এখনো কাজে যোগ দেননি। অনেকে অনুমতি না নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন।
সরকারি চাকরি আইন অনুযায়ী, কারও চাকরির বয়স ২৫ বছর পূর্ণ হলে সরকার কারণ দর্শানোর নোটিশ না দিয়েই চাকরি থেকে অবসরে পাঠাতে পারে। সে ক্ষেত্রে ওই কর্মকর্তা পুরো পেনশন পান। আর বিভাগীয় মামলার মাধ্যমে কাউকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠালে চাকরিকাল অনুযায়ী পেনশন সুবিধা পান তিনি। তবে চাকরি থেকে বরখাস্ত বা অপসারণ করলে কোনো অবসর সুবিধা পাওয়া যায় না।
নতুন আইন কার্যকর হলে বিভাগীয় মামলা ছাড়াই যাঁদের চাকরিকাল ২৫ বছরের কম, তাঁদেরও সহজে চাকরিচ্যুত করা যাবে। এ ক্ষেত্রে তাঁরা অবসর সুবিধা পাবেন কি না, সে বিষয়ে খসড়ায় কিছু বলা হয়নি।
সরকারি চাকরি আইন সংশোধন করে ২০১৮ সালে বাতিল হওয়া সরকারি কর্মচারী (বিশেষ বিধান) অধ্যাদেশ, ১৯৭৯-এর কিছু ধারা যুক্ত করতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরপর ওই অধ্যাদেশের চারটি ধারা যোগ করে খসড়া করা হয়।
সূত্র জানায়, খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খানের সঙ্গে গত শুক্রবার বৈঠক করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ ও জনপ্রশাসনসচিব মো. মোখলেস উর রহমান। ওই সভায় এই চার উপদেষ্টা সরকারি চাকরি আইনে কী কী সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে, সেসব বিষয়ে অবহিত হন। কিছু কিছু বিষয়ে তাঁরা লিখিত মতামত দেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় চারজন উপদেষ্টার মতামতের আলোকে নতুন করে খসড়া চূড়ান্ত করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়েছে। এখন এটি পাসের জন্য উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে তোলা হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মকর্তা বলেন, সরকারি কর্মচারীদের দলবদ্ধ আন্দোলন, সভা-সমাবেশ, কর্মবিরতি, অবস্থান কর্মসূচির পথ বন্ধ করতে আইনে নতুন বিধান যোগ করা হচ্ছে বলে তাঁরা মনে করেন। কোনো কর্মচারীকে সভা-সমাবেশ বা কর্মবিরতির মতো কর্মসূচিতে যোগ দিতে প্ররোচনা দিলেও একই সাজা দেওয়া হবে।
খসড়ায় বলা হয়েছে, কোনো কর্মচারী যদি এমন কোনো কাজে লিপ্ত হয়, যার কারণে অন্য কোনো সরকারি কর্মচারীর মধ্যে আনুগত্য সৃষ্টি হয়, শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হয়, কর্তব্য পালনে বাধার সৃষ্টি হয়, তবে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হবে। ছুটি না নিয়ে বা যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলে এবং অন্য কর্মচারীকে কাজে অনুপস্থিত থাকতে প্ররোচিত করলে; অন্যদের কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে ও কোনো কর্মচারীকে তাঁর কর্তব্য পালন না করতে উসকানি দিলে তা-ও অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে। এ জন্য চাকরি থেকে বরখাস্ত, অব্যাহতি এবং পদের অবনমন বা বেতন কমানোর সাজা দেওয়া যাবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, সরকারি চাকরি আইনের খসড়া পাসের জন্য এর আগে একবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঠানো হয়েছিল। তখন উপদেষ্টা পরিষদ তা অনুমোদন না দিয়ে আরও পর্যালোচনার নির্দেশনা দেয়। নতুন আইন প্রণয়ন বা কোনো আইন সংশোধনের আগে খসড়া প্রকাশ করে সংশ্লিষ্টদের মতামত নেওয়া হলেও সরকারি চাকরি আইনের খসড়ার ওপর মতামত নেওয়া হয়নি।
অপর এক কর্মকর্তা বলেন, আগে যে খসড়া করা হয়েছিল, সেখানে কর্মচারীদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ রাখা ছিল না। নতুন খসড়ায় অনেক বিষয় নমনীয় করা হয়েছে। কারণ, আইন সংশোধনের পর আন্দোলন হোক, সরকার তা চায় না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক সচিব আবু আলম মো. শহীদ খান গতকাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকারি কর্মচারী (বিশেষ বিধান) অধ্যাদেশ ছিল একটি কালাকানুন। ওই ধরনের কোনো আইন এখন করলে সেটিও কালাকানুন হবে। এই সরকারের প্রধান একটি অঙ্গীকার ছিল সব জঙ্গি আইন ও কালাকানুন বাতিল করবে। বিশেষ ক্ষমতা আইন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল হয়নি। তারা এখন আরেকটা কালাকানুন করার পথে হাঁটছে, যেটা সংবিধানবিরোধী।
গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে সরকারি কর্মচারীদের আন্দোলন দমানো, কথায় কথায় কলমবিরতি বন্ধ করা এবং ব্যক্তি ও গোষ্ঠীস্বার্থে যারা জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করছে, তাদের দমাতে আইন সংশোধন করছে বলে মনে করেন জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ফিরোজ মিয়া। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, স্বাভাবিক কোনো কাজের জন্য যেন এই বিধান প্রয়োগ না করা হয়। ২৫ কর্মদিবসের মধ্যে অভিযোগ নিষ্পত্তি করলে সমস্যা নেই, যদি তদন্তের বিধান রাখা হয়। অভিযুক্তকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে।
আরও খবর পড়ুন:

দায়িত্বে অবহেলা ও শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে বিভাগীয় মামলা না করেই সরকারি কর্মচারীদের যেকোনো সময় চাকরিচ্যুত করতে পারবে সরকার। সর্বোচ্চ ২৫ কার্যদিবসের মধ্যে অভিযোগ নিষ্পত্তি করে এই পদক্ষেপ নেওয়া যাবে। জনপ্রশাসনে শৃঙ্খলা ফেরাতে সরকারি চাকরি আইন সংশোধন করে এমন বিধান যুক্ত করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার।
সরকারি চাকরি আইন সংশোধনে গত এপ্রিলের মাঝামাঝি খসড়া করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে খবর প্রকাশের পর আলোচনা-সমালোচনা হয়। পরে সরকারের চারজন উপদেষ্টার নির্দেশনায় নতুন খসড়া চূড়ান্ত করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
চূড়ান্ত খসড়ায় বলা হয়েছে, শৃঙ্খলাভঙ্গ ও দায়িত্বে অবহেলার কারণে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে নোটিশ দেওয়া হবে। নোটিশ পাওয়ার সাত কার্যদিবসের মধ্যে তার জবাব দিতে হবে। নোটিশের জবাব পাওয়ার দিন থেকে ২০-২৫ কার্যদিবসের মধ্যে অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে হবে। এ ক্ষেত্রে বিভাগীয় মামলার প্রয়োজন হবে না। কেউ সাত কার্যদিবসের মধ্যে নোটিশের জবাব না দিলে ওই কর্মকর্তার অনুপস্থিতিতেই অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হবে।
শৃঙ্খলাভঙ্গ, অসদাচরণ ও দায়িত্বে অবহেলার কারণে এখনো সরকারি কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে। তবে বর্তমান আইন ও বিধিবিধান অনুযায়ী বিভাগীয় মামলা দিয়ে এসব অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে অনেক সময় দুই বছরের বেশি সময় লেগে যায়। অভিযোগ নিষ্পত্তির পর রাষ্ট্রপতির কাছে আপিল ছাড়াও প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালে মামলা করার সুযোগ পান সরকারি কর্মচারীরা।
গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পেশাগত দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করেন ক্যাডার সার্ভিসের কর্মকর্তারা। সচিবালয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দপ্তর ঘেরাও, হট্টগোল তৈরি ও নজিরবিহীন শোডাউন করেন তাঁরা। অন্তর্বর্তী সরকার বেশ কিছু কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে, অনেককে ওএসডি করেছে। ৫ আগস্টের পর পুলিশের বিভিন্ন স্তরের ১৮০ জন এখনো কাজে যোগ দেননি। অনেকে অনুমতি না নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন।
সরকারি চাকরি আইন অনুযায়ী, কারও চাকরির বয়স ২৫ বছর পূর্ণ হলে সরকার কারণ দর্শানোর নোটিশ না দিয়েই চাকরি থেকে অবসরে পাঠাতে পারে। সে ক্ষেত্রে ওই কর্মকর্তা পুরো পেনশন পান। আর বিভাগীয় মামলার মাধ্যমে কাউকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠালে চাকরিকাল অনুযায়ী পেনশন সুবিধা পান তিনি। তবে চাকরি থেকে বরখাস্ত বা অপসারণ করলে কোনো অবসর সুবিধা পাওয়া যায় না।
নতুন আইন কার্যকর হলে বিভাগীয় মামলা ছাড়াই যাঁদের চাকরিকাল ২৫ বছরের কম, তাঁদেরও সহজে চাকরিচ্যুত করা যাবে। এ ক্ষেত্রে তাঁরা অবসর সুবিধা পাবেন কি না, সে বিষয়ে খসড়ায় কিছু বলা হয়নি।
সরকারি চাকরি আইন সংশোধন করে ২০১৮ সালে বাতিল হওয়া সরকারি কর্মচারী (বিশেষ বিধান) অধ্যাদেশ, ১৯৭৯-এর কিছু ধারা যুক্ত করতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরপর ওই অধ্যাদেশের চারটি ধারা যোগ করে খসড়া করা হয়।
সূত্র জানায়, খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খানের সঙ্গে গত শুক্রবার বৈঠক করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ ও জনপ্রশাসনসচিব মো. মোখলেস উর রহমান। ওই সভায় এই চার উপদেষ্টা সরকারি চাকরি আইনে কী কী সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে, সেসব বিষয়ে অবহিত হন। কিছু কিছু বিষয়ে তাঁরা লিখিত মতামত দেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় চারজন উপদেষ্টার মতামতের আলোকে নতুন করে খসড়া চূড়ান্ত করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়েছে। এখন এটি পাসের জন্য উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে তোলা হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মকর্তা বলেন, সরকারি কর্মচারীদের দলবদ্ধ আন্দোলন, সভা-সমাবেশ, কর্মবিরতি, অবস্থান কর্মসূচির পথ বন্ধ করতে আইনে নতুন বিধান যোগ করা হচ্ছে বলে তাঁরা মনে করেন। কোনো কর্মচারীকে সভা-সমাবেশ বা কর্মবিরতির মতো কর্মসূচিতে যোগ দিতে প্ররোচনা দিলেও একই সাজা দেওয়া হবে।
খসড়ায় বলা হয়েছে, কোনো কর্মচারী যদি এমন কোনো কাজে লিপ্ত হয়, যার কারণে অন্য কোনো সরকারি কর্মচারীর মধ্যে আনুগত্য সৃষ্টি হয়, শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হয়, কর্তব্য পালনে বাধার সৃষ্টি হয়, তবে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হবে। ছুটি না নিয়ে বা যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলে এবং অন্য কর্মচারীকে কাজে অনুপস্থিত থাকতে প্ররোচিত করলে; অন্যদের কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে ও কোনো কর্মচারীকে তাঁর কর্তব্য পালন না করতে উসকানি দিলে তা-ও অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে। এ জন্য চাকরি থেকে বরখাস্ত, অব্যাহতি এবং পদের অবনমন বা বেতন কমানোর সাজা দেওয়া যাবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, সরকারি চাকরি আইনের খসড়া পাসের জন্য এর আগে একবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঠানো হয়েছিল। তখন উপদেষ্টা পরিষদ তা অনুমোদন না দিয়ে আরও পর্যালোচনার নির্দেশনা দেয়। নতুন আইন প্রণয়ন বা কোনো আইন সংশোধনের আগে খসড়া প্রকাশ করে সংশ্লিষ্টদের মতামত নেওয়া হলেও সরকারি চাকরি আইনের খসড়ার ওপর মতামত নেওয়া হয়নি।
অপর এক কর্মকর্তা বলেন, আগে যে খসড়া করা হয়েছিল, সেখানে কর্মচারীদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ রাখা ছিল না। নতুন খসড়ায় অনেক বিষয় নমনীয় করা হয়েছে। কারণ, আইন সংশোধনের পর আন্দোলন হোক, সরকার তা চায় না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক সচিব আবু আলম মো. শহীদ খান গতকাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকারি কর্মচারী (বিশেষ বিধান) অধ্যাদেশ ছিল একটি কালাকানুন। ওই ধরনের কোনো আইন এখন করলে সেটিও কালাকানুন হবে। এই সরকারের প্রধান একটি অঙ্গীকার ছিল সব জঙ্গি আইন ও কালাকানুন বাতিল করবে। বিশেষ ক্ষমতা আইন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল হয়নি। তারা এখন আরেকটা কালাকানুন করার পথে হাঁটছে, যেটা সংবিধানবিরোধী।
গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে সরকারি কর্মচারীদের আন্দোলন দমানো, কথায় কথায় কলমবিরতি বন্ধ করা এবং ব্যক্তি ও গোষ্ঠীস্বার্থে যারা জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করছে, তাদের দমাতে আইন সংশোধন করছে বলে মনে করেন জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ফিরোজ মিয়া। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, স্বাভাবিক কোনো কাজের জন্য যেন এই বিধান প্রয়োগ না করা হয়। ২৫ কর্মদিবসের মধ্যে অভিযোগ নিষ্পত্তি করলে সমস্যা নেই, যদি তদন্তের বিধান রাখা হয়। অভিযুক্তকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে।
আরও খবর পড়ুন:

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনাররা বঙ্গভবনে পৌঁছেছেন। বঙ্গভবনের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন, আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ইসির বৈঠকের শিডিউল রাখা আছে।
৪১ মিনিট আগে
টাঙ্গাইলের শাড়ি বুনন শিল্পকে অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেসকো। গতকাল মঙ্গলবার ভারতের নয়াদিল্লিতে ইউনেসকো কনভেনশনের চলমান ২০তম আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
৩ ঘণ্টা আগে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনে অন্যতম সমন্বয়ক হিসেবে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আসিফ মাহমুদ।
৩ ঘণ্টা আগে
মুক্তিবাহিনীর অগ্রাভিযানে পাকিস্তানি বাহিনীর একের পর এক অবস্থানের পতনে মুক্ত হচ্ছিল বাংলাদেশের একেকটি অঞ্চল। এগিয়ে আসছিল স্বাধীনতার মুহূর্তটি। যদিও ঠিক কখন, কীভাবে সেদিনটি আসবে, তখনো তা স্পষ্ট নয় সাধারণ মানুষের কাছে। তবে সবাই অধীর আগ্রহে ক্ষণ গুনছিল।
৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনাররা বঙ্গভবনে পৌঁছেছেন।
বঙ্গভবনের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন, আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ইসির বৈঠকের শিডিউল রাখা আছে।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট উপলক্ষে নির্বাচন কমিশনের সার্বিক প্রস্তুতি ও তফসিল ঘোষণা বিষয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে আলোচনা করতে বঙ্গভবনে গেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন। সিইসি দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে বঙ্গভবনে পৌঁছান।
এর আগে ১০টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন ভবন থেকে বঙ্গভবনের উদ্দেশে রওনা হন তিনি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে রয়েছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ (অবসরপ্রাপ্ত), তাহমিদা বেগম, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার ও আব্দুর রহমানেল মাছউদ এবং ইসি সচিব আখতার আহমেদ।
উল্লেখ্য, চলতি সপ্তাহেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা রয়েছে। তফসিল-সংক্রান্ত ভাষণ রেকর্ড করতে ইতিমধ্যে বিটিভি ও বাংলাদেশ বেতারকে চিঠিও দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনাররা বঙ্গভবনে পৌঁছেছেন।
বঙ্গভবনের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন, আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ইসির বৈঠকের শিডিউল রাখা আছে।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট উপলক্ষে নির্বাচন কমিশনের সার্বিক প্রস্তুতি ও তফসিল ঘোষণা বিষয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে আলোচনা করতে বঙ্গভবনে গেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন। সিইসি দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে বঙ্গভবনে পৌঁছান।
এর আগে ১০টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন ভবন থেকে বঙ্গভবনের উদ্দেশে রওনা হন তিনি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে রয়েছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ (অবসরপ্রাপ্ত), তাহমিদা বেগম, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার ও আব্দুর রহমানেল মাছউদ এবং ইসি সচিব আখতার আহমেদ।
উল্লেখ্য, চলতি সপ্তাহেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা রয়েছে। তফসিল-সংক্রান্ত ভাষণ রেকর্ড করতে ইতিমধ্যে বিটিভি ও বাংলাদেশ বেতারকে চিঠিও দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

দায়িত্বে অবহেলা ও শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে বিভাগীয় মামলা না করেই সরকারি কর্মচারীদের যেকোনো সময় চাকরিচ্যুত করতে পারবে সরকার। সর্বোচ্চ ২৫ কার্যদিবসের মধ্যে অভিযোগ নিষ্পত্তি করে এই পদক্ষেপ নেওয়া যাবে। জনপ্রশাসনে শৃঙ্খলা ফেরাতে সরকারি চাকরি আইন সংশোধন করে এমন বিধান যুক্ত করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার।
২০ মে ২০২৫
টাঙ্গাইলের শাড়ি বুনন শিল্পকে অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেসকো। গতকাল মঙ্গলবার ভারতের নয়াদিল্লিতে ইউনেসকো কনভেনশনের চলমান ২০তম আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
৩ ঘণ্টা আগে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনে অন্যতম সমন্বয়ক হিসেবে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আসিফ মাহমুদ।
৩ ঘণ্টা আগে
মুক্তিবাহিনীর অগ্রাভিযানে পাকিস্তানি বাহিনীর একের পর এক অবস্থানের পতনে মুক্ত হচ্ছিল বাংলাদেশের একেকটি অঞ্চল। এগিয়ে আসছিল স্বাধীনতার মুহূর্তটি। যদিও ঠিক কখন, কীভাবে সেদিনটি আসবে, তখনো তা স্পষ্ট নয় সাধারণ মানুষের কাছে। তবে সবাই অধীর আগ্রহে ক্ষণ গুনছিল।
৩ ঘণ্টা আগেবাসস, ঢাকা

টাঙ্গাইলের শাড়ি বুনন শিল্পকে অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেসকো। গতকাল মঙ্গলবার ভারতের নয়াদিল্লিতে ইউনেসকো কনভেনশনের চলমান ২০তম আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এই কনভেনশনের আওতায় এটি বাংলাদেশের ষষ্ঠ একক নিবন্ধন। সভায় প্রথমবারের মতো সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর বিগত চার বছরে এটি দ্বিতীয় নিবন্ধন।
সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের প্রধান এবং ইউনেসকো সাধারণ পরিষদের সভাপতি ও বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জানান, ‘এই স্বীকৃতি বাংলাদেশের জন্য অসামান্য গৌরবের বিষয়। দীর্ঘ দুই শতকের বেশি সময় ধরে টাঙ্গাইলের তাঁতিদের অনবদ্য শিল্পকর্মের বৈশ্বিক স্বীকৃতি এটি।’
তিনি আরও বলেন, ‘টাঙ্গাইল শাড়ি বাংলাদেশের সকল নারীর নিত্য পরিধেয়, যা এই শাড়ি বুনন শিল্পের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনের পেছনে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে।’
এই অর্জনকে বাংলাদেশের সকল তাঁতি ও নারীদের প্রতি উৎসর্গ করেছেন রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা।
বাংলাদেশের অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সামগ্রিক সুরক্ষায় এই স্বীকৃতি নতুন মাত্রা যোগ করবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত তালহা বলেন, ঐতিহ্য হিসেবে ইউনেসকোর স্বীকৃতি অর্জনের মতো বাংলাদেশের অপরিমেয় সাংস্কৃতিক উপাদান রয়েছে।
নথি প্রস্তুত করার সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং কনভেনশন সংক্রান্ত অভিজ্ঞ জনবল তৈরি করার মাধ্যমে আরও অনেক ঐতিহ্যের ইউনেসকো-স্বীকৃতি অর্জনের সুযোগ রয়েছে।
এর আগে, গত ৭ ডিসেম্বর আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের চলমান ২০তম সভা উদ্বোধন করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শংকর। অনুষ্ঠানে ইউনেসকোর নবনিযুক্ত মহাপরিচালক খালেদ এল. এনানি উপস্থিত ছিলেন।

টাঙ্গাইলের শাড়ি বুনন শিল্পকে অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেসকো। গতকাল মঙ্গলবার ভারতের নয়াদিল্লিতে ইউনেসকো কনভেনশনের চলমান ২০তম আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এই কনভেনশনের আওতায় এটি বাংলাদেশের ষষ্ঠ একক নিবন্ধন। সভায় প্রথমবারের মতো সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর বিগত চার বছরে এটি দ্বিতীয় নিবন্ধন।
সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের প্রধান এবং ইউনেসকো সাধারণ পরিষদের সভাপতি ও বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জানান, ‘এই স্বীকৃতি বাংলাদেশের জন্য অসামান্য গৌরবের বিষয়। দীর্ঘ দুই শতকের বেশি সময় ধরে টাঙ্গাইলের তাঁতিদের অনবদ্য শিল্পকর্মের বৈশ্বিক স্বীকৃতি এটি।’
তিনি আরও বলেন, ‘টাঙ্গাইল শাড়ি বাংলাদেশের সকল নারীর নিত্য পরিধেয়, যা এই শাড়ি বুনন শিল্পের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনের পেছনে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে।’
এই অর্জনকে বাংলাদেশের সকল তাঁতি ও নারীদের প্রতি উৎসর্গ করেছেন রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা।
বাংলাদেশের অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সামগ্রিক সুরক্ষায় এই স্বীকৃতি নতুন মাত্রা যোগ করবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত তালহা বলেন, ঐতিহ্য হিসেবে ইউনেসকোর স্বীকৃতি অর্জনের মতো বাংলাদেশের অপরিমেয় সাংস্কৃতিক উপাদান রয়েছে।
নথি প্রস্তুত করার সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং কনভেনশন সংক্রান্ত অভিজ্ঞ জনবল তৈরি করার মাধ্যমে আরও অনেক ঐতিহ্যের ইউনেসকো-স্বীকৃতি অর্জনের সুযোগ রয়েছে।
এর আগে, গত ৭ ডিসেম্বর আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের চলমান ২০তম সভা উদ্বোধন করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শংকর। অনুষ্ঠানে ইউনেসকোর নবনিযুক্ত মহাপরিচালক খালেদ এল. এনানি উপস্থিত ছিলেন।

দায়িত্বে অবহেলা ও শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে বিভাগীয় মামলা না করেই সরকারি কর্মচারীদের যেকোনো সময় চাকরিচ্যুত করতে পারবে সরকার। সর্বোচ্চ ২৫ কার্যদিবসের মধ্যে অভিযোগ নিষ্পত্তি করে এই পদক্ষেপ নেওয়া যাবে। জনপ্রশাসনে শৃঙ্খলা ফেরাতে সরকারি চাকরি আইন সংশোধন করে এমন বিধান যুক্ত করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার।
২০ মে ২০২৫
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনাররা বঙ্গভবনে পৌঁছেছেন। বঙ্গভবনের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন, আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ইসির বৈঠকের শিডিউল রাখা আছে।
৪১ মিনিট আগে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনে অন্যতম সমন্বয়ক হিসেবে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আসিফ মাহমুদ।
৩ ঘণ্টা আগে
মুক্তিবাহিনীর অগ্রাভিযানে পাকিস্তানি বাহিনীর একের পর এক অবস্থানের পতনে মুক্ত হচ্ছিল বাংলাদেশের একেকটি অঞ্চল। এগিয়ে আসছিল স্বাধীনতার মুহূর্তটি। যদিও ঠিক কখন, কীভাবে সেদিনটি আসবে, তখনো তা স্পষ্ট নয় সাধারণ মানুষের কাছে। তবে সবাই অধীর আগ্রহে ক্ষণ গুনছিল।
৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তোড়জোড়ের মধ্যে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে আসছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
সমসাময়িক বিষয়ে আজ বুধবার বেলা ৩টায় স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলনকক্ষে আসিফ মাহমুদের সংবাদ সম্মেলন হবে বলে মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।
সমসাময়িক কোন বিষয়ে আসিফ মাহমুদ সংবাদ সম্মেলনে কথা বলবেন, মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণপত্রে তা উল্লেখ করা হয়নি। তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজকের সংবাদ সম্মেলন থেকে উপদেষ্টা পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিতে পারেন তিনি।
আজ রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করার পর ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার জন্য ভাষণের রেকর্ড করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। আজ সন্ধ্যায় বা আগামীকাল বৃহস্পতিবার এই তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমও আজ পদত্যাগের ঘোষণা দিতে পারেন বলে আলোচনা রয়েছে।
উপদেষ্টার পদে থেকে নির্বাচন করতে আইনি বাধা না থাকলেও তফসিল ঘোষণার আগে সরকারে থাকা দুজন ছাত্র উপদেষ্টা পদত্যাগ করবেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনে অন্যতম সমন্বয়ক হিসেবে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আসিফ মাহমুদ। তাঁদের আন্দোলন একপর্যায়ে সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনে রূপ নেয়। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয় আওয়ামী লীগ সরকার। এরপর ওই বছরের ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। এই সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন আসিফ মাহমুদ।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তোড়জোড়ের মধ্যে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে আসছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
সমসাময়িক বিষয়ে আজ বুধবার বেলা ৩টায় স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলনকক্ষে আসিফ মাহমুদের সংবাদ সম্মেলন হবে বলে মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।
সমসাময়িক কোন বিষয়ে আসিফ মাহমুদ সংবাদ সম্মেলনে কথা বলবেন, মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণপত্রে তা উল্লেখ করা হয়নি। তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজকের সংবাদ সম্মেলন থেকে উপদেষ্টা পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিতে পারেন তিনি।
আজ রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করার পর ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার জন্য ভাষণের রেকর্ড করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। আজ সন্ধ্যায় বা আগামীকাল বৃহস্পতিবার এই তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমও আজ পদত্যাগের ঘোষণা দিতে পারেন বলে আলোচনা রয়েছে।
উপদেষ্টার পদে থেকে নির্বাচন করতে আইনি বাধা না থাকলেও তফসিল ঘোষণার আগে সরকারে থাকা দুজন ছাত্র উপদেষ্টা পদত্যাগ করবেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনে অন্যতম সমন্বয়ক হিসেবে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আসিফ মাহমুদ। তাঁদের আন্দোলন একপর্যায়ে সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনে রূপ নেয়। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয় আওয়ামী লীগ সরকার। এরপর ওই বছরের ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। এই সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন আসিফ মাহমুদ।

দায়িত্বে অবহেলা ও শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে বিভাগীয় মামলা না করেই সরকারি কর্মচারীদের যেকোনো সময় চাকরিচ্যুত করতে পারবে সরকার। সর্বোচ্চ ২৫ কার্যদিবসের মধ্যে অভিযোগ নিষ্পত্তি করে এই পদক্ষেপ নেওয়া যাবে। জনপ্রশাসনে শৃঙ্খলা ফেরাতে সরকারি চাকরি আইন সংশোধন করে এমন বিধান যুক্ত করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার।
২০ মে ২০২৫
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনাররা বঙ্গভবনে পৌঁছেছেন। বঙ্গভবনের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন, আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ইসির বৈঠকের শিডিউল রাখা আছে।
৪১ মিনিট আগে
টাঙ্গাইলের শাড়ি বুনন শিল্পকে অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেসকো। গতকাল মঙ্গলবার ভারতের নয়াদিল্লিতে ইউনেসকো কনভেনশনের চলমান ২০তম আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
৩ ঘণ্টা আগে
মুক্তিবাহিনীর অগ্রাভিযানে পাকিস্তানি বাহিনীর একের পর এক অবস্থানের পতনে মুক্ত হচ্ছিল বাংলাদেশের একেকটি অঞ্চল। এগিয়ে আসছিল স্বাধীনতার মুহূর্তটি। যদিও ঠিক কখন, কীভাবে সেদিনটি আসবে, তখনো তা স্পষ্ট নয় সাধারণ মানুষের কাছে। তবে সবাই অধীর আগ্রহে ক্ষণ গুনছিল।
৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

মুক্তিবাহিনীর অগ্রাভিযানে পাকিস্তানি বাহিনীর একের পর এক অবস্থানের পতনে মুক্ত হচ্ছিল বাংলাদেশের একেকটি অঞ্চল। এগিয়ে আসছিল স্বাধীনতার মুহূর্তটি। যদিও ঠিক কখন, কীভাবে সেদিনটি আসবে, তখনো তা স্পষ্ট নয় সাধারণ মানুষের কাছে। তবে সবাই অধীর আগ্রহে ক্ষণ গুনছিল।
সেতু বিধ্বস্ত হওয়ায় ১০ ডিসেম্বর রায়পুরা অঞ্চলে ১৪টি হেলিকপ্টারের সাহায্যে ভারতীয় মিত্র বাহিনীর অগ্রবর্তী অংশ তখনকার বিশাল, প্রশস্ত মেঘনা পার হয়। স্থানীয় জনসাধারণ ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনায় শত শত নৌকার সাহায্যে অবশিষ্ট সেনা ও যুদ্ধ-সরঞ্জাম পরিবহনে সহায়তা করে।
প্রচণ্ড চাপে পড়ে আগের দিন ঢাকায় পাকিস্তানের সামরিক নেতৃত্ব ও গভর্নর মালেক সৈন্যসহ পূর্ব পাকিস্তান ত্যাগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। সেদিন দাউদকান্দির পতনের পর তাঁরা বুঝে গিয়েছিলেন, ঢাকাই যৌথ বাহিনীর পরবর্তী লক্ষ্য। পাকিস্তানিদের সম্পূর্ণ পশ্চাদপসরণের সিদ্ধান্ত প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের পূর্ণ অনুমোদন লাভ করে।
সহায়তাকারী ভারতীয় বাহিনীর রায়পুরায় অবতরণের পর প্রায় ৩ ঘণ্টা ঢাকার পাকিস্তানি সামরিক লক্ষ্যবস্তুগুলোর ওপর বিমান হামলা চলে। তখন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নরের সামরিক উপদেষ্টা, গণহত্যার অন্যতম সহযোগী রাও ফরমান আলী ঢাকায় অবস্থানকারী জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব পল মার্ক হেনরিকে ‘অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির’ আয়োজন করার আবেদন জানান। বাঙালিদের ওপর ৯ মাস হত্যাযজ্ঞ চলার পর এত দিনে এসে তিনি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা এবং এই অঞ্চলে থাকা পাকিস্তানি বাহিনীকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা সম্পন্ন করার আহ্বান জানান। জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব এ প্রস্তাব জাতিসংঘ সদর দপ্তরে পাঠিয়ে দেন।
নিরাপত্তা পরিষদে রাও ফরমান আলীর এ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার উদ্যোগ চলার সময় হঠাৎ খবর আসে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া প্রস্তাবটি নাকচ করে দিয়েছেন। ঘটনা হচ্ছে, খবরটি ওয়াশিংটনে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে মার্কিন সরকার ইয়াহিয়াকে জানান, পাকিস্তানি বাহিনীকে সাহায্য করার জন্য সপ্তম নৌবহর ইতিমধ্যেই বঙ্গোপসাগরের দিকে রওনা হয়েছে। এ কারণেই ইয়াহিয়ার মত বদলে যায়। পাকিস্তান নিজে থেকে ‘সম্মানজনকভাবে’ সেনা প্রত্যাহারের জন্য উদ্যোগী হলেও সেই উদ্যোগকে সমর্থন না করে মার্কিন সরকার বরং তা রদ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করে। তার ওপর ভারতকে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে সম্মত করানোর তাগিদ দিয়ে ৯ ও ১০ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্ট নিক্সন সোভিয়েত নেতা ব্রেজনেভকে দুই দফা বার্তা পাঠান। যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার ব্যাপারে ভারতকে সম্মত করতে ব্রেজনেভের ওপর চাপের মাত্রা বাড়ানো হয়। তাঁকে জানানো হয়, ভারত যদি এরপরও সম্মত না হয়, তবে যুক্তরাষ্ট্র নিজে এ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে।
উপমহাদেশের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র ‘শক্ত ব্যবস্থা’ গ্রহণ করতে পারে, তা সোভিয়েত ইউনিয়নের ভালো করেই জানা ছিল। সোভিয়েত সরকার তাদের নৌবাহিনীকে সতর্ক রাখে। মার্কিন সপ্তম নৌবহরের যাত্রারম্ভের আগেই সোভিয়েতরা তাদের ভারত মহাসাগরীয় নৌবহরের শক্তি বৃদ্ধি শুরু করে।
১০ ডিসেম্বর মার্কিন সপ্তম নৌবহর চীন সাগর ও ভারত মহাসাগরকে সংযোগকারী পাঁচ শ’ মাইল দীর্ঘ মালাক্কা প্রণালির ওপারে ছিল। ভারত মহাসাগরে সোভিয়েত নৌবহরের সমাবেশ তখন সম্পূর্ণ হয়নি। এই অবস্থায় জানা যায়, মার্কিন সপ্তম নৌবহরের গতিবিধি জানার জন্যই সোভিয়েত সরকার কসমস নামের নজরদারি কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করে।
এদিকে চূড়ান্ত পর্বের রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের আশঙ্কায় ঢাকা ছেড়ে চলে যেতে থাকেন অনেক সাধারণ মানুষ। আগের দিন সরকার স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করেছিল। গুজব ছড়িয়ে পড়ে, রাস্তায় রাস্তায় পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে লড়াই হবে বলে মুক্তিযোদ্ধারা লোকজনকে শহর ছেড়ে চলে যেতে বলেছেন। অনেক লোককে দেখা যায়, পরিবার-পরিজন, পোঁটলাপুঁটলি নিয়ে রিকশা বা বেবিট্যাক্সিতে (সিএনজি অটোর আগের সংস্করণ) করে শহর থেকে বাইরে চলে যাচ্ছে। কেউ কেউ লটবহর মাথায় নিয়ে হেঁটেই চলেছেন। এ যেন ২৫ মার্চের গণহত্যার পর ঢাকা ছাড়ার যে ঢল নেমেছিল কিছুটা প্রতিচ্ছবি।

মুক্তিবাহিনীর অগ্রাভিযানে পাকিস্তানি বাহিনীর একের পর এক অবস্থানের পতনে মুক্ত হচ্ছিল বাংলাদেশের একেকটি অঞ্চল। এগিয়ে আসছিল স্বাধীনতার মুহূর্তটি। যদিও ঠিক কখন, কীভাবে সেদিনটি আসবে, তখনো তা স্পষ্ট নয় সাধারণ মানুষের কাছে। তবে সবাই অধীর আগ্রহে ক্ষণ গুনছিল।
সেতু বিধ্বস্ত হওয়ায় ১০ ডিসেম্বর রায়পুরা অঞ্চলে ১৪টি হেলিকপ্টারের সাহায্যে ভারতীয় মিত্র বাহিনীর অগ্রবর্তী অংশ তখনকার বিশাল, প্রশস্ত মেঘনা পার হয়। স্থানীয় জনসাধারণ ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনায় শত শত নৌকার সাহায্যে অবশিষ্ট সেনা ও যুদ্ধ-সরঞ্জাম পরিবহনে সহায়তা করে।
প্রচণ্ড চাপে পড়ে আগের দিন ঢাকায় পাকিস্তানের সামরিক নেতৃত্ব ও গভর্নর মালেক সৈন্যসহ পূর্ব পাকিস্তান ত্যাগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। সেদিন দাউদকান্দির পতনের পর তাঁরা বুঝে গিয়েছিলেন, ঢাকাই যৌথ বাহিনীর পরবর্তী লক্ষ্য। পাকিস্তানিদের সম্পূর্ণ পশ্চাদপসরণের সিদ্ধান্ত প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের পূর্ণ অনুমোদন লাভ করে।
সহায়তাকারী ভারতীয় বাহিনীর রায়পুরায় অবতরণের পর প্রায় ৩ ঘণ্টা ঢাকার পাকিস্তানি সামরিক লক্ষ্যবস্তুগুলোর ওপর বিমান হামলা চলে। তখন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নরের সামরিক উপদেষ্টা, গণহত্যার অন্যতম সহযোগী রাও ফরমান আলী ঢাকায় অবস্থানকারী জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব পল মার্ক হেনরিকে ‘অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির’ আয়োজন করার আবেদন জানান। বাঙালিদের ওপর ৯ মাস হত্যাযজ্ঞ চলার পর এত দিনে এসে তিনি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা এবং এই অঞ্চলে থাকা পাকিস্তানি বাহিনীকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা সম্পন্ন করার আহ্বান জানান। জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব এ প্রস্তাব জাতিসংঘ সদর দপ্তরে পাঠিয়ে দেন।
নিরাপত্তা পরিষদে রাও ফরমান আলীর এ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার উদ্যোগ চলার সময় হঠাৎ খবর আসে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া প্রস্তাবটি নাকচ করে দিয়েছেন। ঘটনা হচ্ছে, খবরটি ওয়াশিংটনে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে মার্কিন সরকার ইয়াহিয়াকে জানান, পাকিস্তানি বাহিনীকে সাহায্য করার জন্য সপ্তম নৌবহর ইতিমধ্যেই বঙ্গোপসাগরের দিকে রওনা হয়েছে। এ কারণেই ইয়াহিয়ার মত বদলে যায়। পাকিস্তান নিজে থেকে ‘সম্মানজনকভাবে’ সেনা প্রত্যাহারের জন্য উদ্যোগী হলেও সেই উদ্যোগকে সমর্থন না করে মার্কিন সরকার বরং তা রদ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করে। তার ওপর ভারতকে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে সম্মত করানোর তাগিদ দিয়ে ৯ ও ১০ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্ট নিক্সন সোভিয়েত নেতা ব্রেজনেভকে দুই দফা বার্তা পাঠান। যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার ব্যাপারে ভারতকে সম্মত করতে ব্রেজনেভের ওপর চাপের মাত্রা বাড়ানো হয়। তাঁকে জানানো হয়, ভারত যদি এরপরও সম্মত না হয়, তবে যুক্তরাষ্ট্র নিজে এ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে।
উপমহাদেশের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র ‘শক্ত ব্যবস্থা’ গ্রহণ করতে পারে, তা সোভিয়েত ইউনিয়নের ভালো করেই জানা ছিল। সোভিয়েত সরকার তাদের নৌবাহিনীকে সতর্ক রাখে। মার্কিন সপ্তম নৌবহরের যাত্রারম্ভের আগেই সোভিয়েতরা তাদের ভারত মহাসাগরীয় নৌবহরের শক্তি বৃদ্ধি শুরু করে।
১০ ডিসেম্বর মার্কিন সপ্তম নৌবহর চীন সাগর ও ভারত মহাসাগরকে সংযোগকারী পাঁচ শ’ মাইল দীর্ঘ মালাক্কা প্রণালির ওপারে ছিল। ভারত মহাসাগরে সোভিয়েত নৌবহরের সমাবেশ তখন সম্পূর্ণ হয়নি। এই অবস্থায় জানা যায়, মার্কিন সপ্তম নৌবহরের গতিবিধি জানার জন্যই সোভিয়েত সরকার কসমস নামের নজরদারি কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করে।
এদিকে চূড়ান্ত পর্বের রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের আশঙ্কায় ঢাকা ছেড়ে চলে যেতে থাকেন অনেক সাধারণ মানুষ। আগের দিন সরকার স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করেছিল। গুজব ছড়িয়ে পড়ে, রাস্তায় রাস্তায় পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে লড়াই হবে বলে মুক্তিযোদ্ধারা লোকজনকে শহর ছেড়ে চলে যেতে বলেছেন। অনেক লোককে দেখা যায়, পরিবার-পরিজন, পোঁটলাপুঁটলি নিয়ে রিকশা বা বেবিট্যাক্সিতে (সিএনজি অটোর আগের সংস্করণ) করে শহর থেকে বাইরে চলে যাচ্ছে। কেউ কেউ লটবহর মাথায় নিয়ে হেঁটেই চলেছেন। এ যেন ২৫ মার্চের গণহত্যার পর ঢাকা ছাড়ার যে ঢল নেমেছিল কিছুটা প্রতিচ্ছবি।

দায়িত্বে অবহেলা ও শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে বিভাগীয় মামলা না করেই সরকারি কর্মচারীদের যেকোনো সময় চাকরিচ্যুত করতে পারবে সরকার। সর্বোচ্চ ২৫ কার্যদিবসের মধ্যে অভিযোগ নিষ্পত্তি করে এই পদক্ষেপ নেওয়া যাবে। জনপ্রশাসনে শৃঙ্খলা ফেরাতে সরকারি চাকরি আইন সংশোধন করে এমন বিধান যুক্ত করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার।
২০ মে ২০২৫
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনাররা বঙ্গভবনে পৌঁছেছেন। বঙ্গভবনের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন, আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ইসির বৈঠকের শিডিউল রাখা আছে।
৪১ মিনিট আগে
টাঙ্গাইলের শাড়ি বুনন শিল্পকে অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেসকো। গতকাল মঙ্গলবার ভারতের নয়াদিল্লিতে ইউনেসকো কনভেনশনের চলমান ২০তম আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
৩ ঘণ্টা আগে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনে অন্যতম সমন্বয়ক হিসেবে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আসিফ মাহমুদ।
৩ ঘণ্টা আগে