Ajker Patrika

ধর্ষণ মামলায় চার শিশুকে গ্রেপ্তার: ওসিসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
ধর্ষণ মামলায় চার শিশুকে গ্রেপ্তার: ওসিসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টের নির্দেশ

ঢাকা: ধর্ষণের অভিযোগে চার শিশুকে গ্রেপ্তার ও শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আজ রোববার এ সংক্রান্তে রুল নিষ্পত্তি করে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কামরুল ইসলাম মোল্লার ভার্চুয়াল বেঞ্চ এই নির্দেশ দেন।

ওই চার শিশুকে গ্রেপ্তারকারী বরিশালের বাকেরগঞ্জ থানার ওসি আবুল কালামসহ আট পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে আইজিপিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে এই চার শিশুকে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর আদেশদানকারী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এনায়েত উল্লাহর ফৌজদারি মামলার বিচারিক এখতিয়ার প্রত্যাহার করার আদেশ দেওয়া হয়েছে। দায়িত্বে অবহেলার কারণে স্থানীয় সমাজসেবা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে সারা দেশে শিশু আইনে পুলিশের প্রতিপালনীয় বিষয়ে প্রজ্ঞাপন দিয়ে সংশ্লিষ্টদের জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এই রুলের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম। সঙ্গে ছিলেন জামিউল হক ফয়সাল। ব্যারিস্টার আবদুল হালিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, গ্রেপ্তার চার শিশুর বয়স খুবই কম। ৮ থেকে ৯ বছরের মধ্যে। শিশু আইন অনুযায়ী তাদের কোনো অপরাধই অপরাধ হিসেবে গণ্য করা যাবে না। এমন শিশুদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের, তাদের গ্রেপ্তার ও এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে আটকাদেশ দেওয়ার কারণে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বরিশালের বাকেরগঞ্জে গত বছরের ৪ অক্টোবর ছয় বছরের এক কন্যাশিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। কন্যাশিশুটির খেলার সঙ্গী চার শিশুকে আসামি করে শিশুটির বাবা ৬ অক্টোবর থানায় মামলা করেন। পরবর্তীতে চারজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়।

মামলায় এসব শিশুর বয়স ১০ থেকে ১১ বছর উল্লেখ করা হলেও প্রকৃতপক্ষে তাদের বয়স ৮ থেকে ৯ বছরের মধ্যে। ধর্ষণের কোনো ঘটনাও আদৌ ঘটেনি বলে গ্রেপ্তারকৃত শিশুদের স্বজনরা দাবি করেন। মূলত জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে উদ্দেশ্যমূলকভাবে মামলা দিয়ে তাদের হয়রানি করা হচ্ছে।

একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে প্রচারিত খবরটি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল হালিম আদালতের নজরে আনলে গত বছর ৮ অক্টোবর হাইকোর্ট স্বপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেন। একই সঙ্গে চার শিশু, তাদের অভিভাবক, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, থানার ওসি, থানার শিশুবিষয়ক কর্মকর্তা, জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা (প্রবেশন অফিসার) ওই বছরের ১১ অক্টোবর আদালতে হাজির হতে বলা হয়। আদালতের নির্দেশ অনুসারে সংশ্লিষ্টরা আদালতে হাজির হন এবং নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

আদালত সংশ্লিষ্টদের কথা শুনে নিশ্চিত হন শিশুদের গ্রেপ্তার করা শিশু আইন অনুযায়ী অবৈধ হয়েছে। ওই দিন শুনানি শেষে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন এবং চার শিশুকে নিরাপদে বাড়িতে পৌঁছে দিতে বলা হয়। পরে নিম্ন আদালত শিশুদের জামিন দেন। তাদের বাড়িতেও পৌঁছে দেওয়া হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত