Ajker Patrika

সেনাবাহিনী গুমের সঙ্গে জড়িত নয়: কমিশন সভাপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৯ জুন ২০২৫, ১৯: ১৯
গুমসংক্রান্ত কমিশনের কার্যালয়ে বক্তব্য দেন সভাপতি ও সাবেক বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী। ছবি: আজকের পত্রিকা
গুমসংক্রান্ত কমিশনের কার্যালয়ে বক্তব্য দেন সভাপতি ও সাবেক বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী। ছবি: আজকের পত্রিকা

গুমের ঘটনার সঙ্গে সেনাবাহিনী প্রাতিষ্ঠানিকভাবে জড়িত না, এই দায় ব্যক্তিগতভাবে কর্মকর্তাদের। কারণ, ডিজিএফআই ও এনএসআইতে সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করেন। তাই প্রাতিষ্ঠানিকভাবে তাদের দায়ী করা যায় না।

আজ বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সকালে রাজধানীর গুলশানে গুমসংক্রান্ত কমিশনের কার্যালয়ে সভাপতি ও সাবেক বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী এ কথা বলেন।

গুমের সঙ্গে সেনাবাহিনীর ভূমিকার প্রশ্ন সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফররত জাতিসংঘের গুমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপের একটি প্রতিনিধিদল সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বক্তব্য পেয়েছে যে তারা এসব গুমের ঘটনা সম্পর্কে জানত না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিচারপতি মইনুল ইসলাম বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সেনাবাহিনীকে দায়ী করা যাবে না। কারণ ডিজিএফআই প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন, যেখানে জবাবদিহির কাঠামো আলাদা। তবে ডিজিএফআই ও এনএসআইয়ে কর্মরত কর্মকর্তা সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী থেকে আসেন। অর্থাৎ তাঁরা ঘটনাগুলো সম্পর্কে জানতেন। তাই সেনাবাহিনীকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে দায়ী করা যায় না, তবে তাদের কর্মকর্তারা জড়িত।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গুমের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি জড়িত ছিল র‍্যাব। বিষয়টি বর্তমান মহাপরিচালক স্বীকারও করেছেন। তিনি বলেছেন, র‍্যাবে আয়নাঘর ছিল। এ জন্য তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

গুমের সঙ্গে জড়িত অনেকে এখনও চাকরিতে বহাল আছেন উল্লেখ করে মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, গুমের ঘটনা অনুসন্ধানে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যেসব কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে, তাঁদের অনেকে এখনও চাকরিতে বহাল রয়েছেন। তাঁরা ভুক্তোভোগীদের ফোন করে হুমকি দিচ্ছেন, সেই অডিও রেকর্ড কমিশনের কাছে রয়েছে।

জড়িত ব্যক্তিদের নাম সরকারকে জানানো হয়েছে, আইনগত বিষয়টি তারা দেখবে। গুমসংক্রান্ত কমিশন যেহেতু কেবল অনুসন্ধান করে, কাউকে গ্রেপ্তার বা মামলা তদন্ত করতে পারে না, তাই এ বিষয়ে পুলিশ ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ব্যবস্থা নেবে।

ইতিমধ্যে গত ২৬ সেপ্টেম্বর কথিত আয়নাঘর নামের বন্দিশালার স্থান-স্থাপনা পরিদর্শন করে কমিশন। সারা দেশে মোট ১৬টি গোপন বন্দিশালা পরিদর্শন করে কমিশন। গত ৪ ডিসেম্বর, ২৬ ফেব্রুয়ারিও ২৫ মার্চ তিনটি চিঠিতে মোট ১৩১টি অভিযোগের বিষয়ে আইজিপিকে মামলা করার জন্য বলেছে কমিশন। আন্তর্জাতিক অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে পাঁচ থেকে ছয়টি মামলাও হয়েছে। তারা তদন্ত করছে।

অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের অনেকে পালিয়ে গেছেন। এর মধ্যে ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আকবর হোসেনও রয়েছেন। তিনি কীভাবে পালিয়ে গেলেন, জানতে চাইলে কমিশনের সভাপতি বলেন, ‘তিনি দেশেই ছিলেন, তাঁর পাসপোর্ট ব্লক ছিল। কিন্তু বর্তমানে শোনা যাচ্ছে, তাঁকে কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না। কেউ তাঁর বিষয়ে জানেন না।’

অন্তবর্তী দ্বিতীয় প্রতিবেদনে কমিশন দাবি করেছে, বিগত সরকারের শাসন দীর্ঘায়িত করতে পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে গুম করা হয়েছে।

সভাপতি বলেন, বিগত সরকার গুমকে একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়। ‘জঙ্গিবাদবিরোধী’ অভিযানের আড়ালে তারা ইসলামপন্থী উগ্রবাদের ভয় দেখিয়ে গুমের মাধ্যমে বিরোধী মত দমন করে, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের চেষ্টা করে এবং শাসনের মেয়াদ দীর্ঘায়িত করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বুশেহর পারমাণবিক কেন্দ্রে আছেন রুশ বিশেষজ্ঞরা, ইসরায়েলকে রাশিয়ার হুঁশিয়ারি

ইরানকে ঘিরে ফেলছে একের পর এক মার্কিন রণতরি ও যুদ্ধবিমান

পর্যটনে সেরা ১০ মুসলিমবান্ধব অমুসলিম দেশ

ছেলের কাটা পা হাতে নিয়ে বিচারের দাবিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন বাবা

পাকিস্তানি সেনাপ্রধানকে কেন যুক্তরাষ্ট্রে ডেকেছিলেন ট্রাম্প, ইরান-ইসরায়েল নিয়ে কী আলোচনা হলো

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত