Ajker Patrika

এখন সংস্কার না হলে, আর কখনোই হবে না: উপদেষ্টা সাখাওয়াত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১: ৫৮
অন্তর্বর্তী সরকারের নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। ফাইল ছবি
অন্তর্বর্তী সরকারের নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। ফাইল ছবি

এখন সংস্কার না হলে, আর কখনোই হবে না বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।

আজ শনিবার রাজধানীর খামারবাড়ী কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ আয়োজিত ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন শীর্ষক জাতীয় সংলাপে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘এই সময়ে যদি আমরা কিছু সংস্কার করতে না পারি, তাহলে আর কখনোই করা যাবে না। কারণ, আমরা ২০০৭ সালে একবার চেষ্টা করেছিলাম, কিছু কিছু করেছিলাম। তবে সেগুলো থাকেনি ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলগুলোর কারণে। এখন যদি সংস্কার না করতে পারি, সংবিধানের দোহাই দিই, অন্যান্য আইনের দোহাই দিই, তাহলে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে যাঁরা রক্ত দিয়েছেন, তাঁদের প্রতি অন্যায় হবে। বলছি না যে আমরা চার-পাঁচ বছর থাকব। এক বছরের মধ্যে সংস্কার করা সম্ভব।’

তরুণদের রাজনৈতিক দল গঠনে উৎসাহিত করা উচিত উল্লেখ করে অন্তর্বর্তী সরকারের এই উপদেষ্টা বলেন, ‘তাঁদের অনুৎসাহ করা ঠিক নয়। আমরা মনে করি নতুন রক্ত প্রয়োজন। তাদের নিরুৎসাহিত করবেন না। রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি অনুরোধ, তাঁদের উৎসাহিত করুন। তাঁরা আপনাদের প্রতিদ্বন্দ্বী নয়। তাঁদেরকে যদি উৎসাহিত না করেন, তাহলে আমরা এ জিনিসই (আওয়ামী লীগের পতন) দেখব। আজকে না হয় ১০/১৫ বছর পরে দেখব।’

রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি ধৈর্য ধরার অনুরোধ জানিয়ে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘ধৈর্য ধরতে হবে। আমরা কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করছি। নির্বাচন আইন পরিবর্তন করলে হবে না; রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও পদ্ধতির পরিবর্তন করলেই নির্বাচনী আইনও পরিবর্তন হয়ে যাবে। এবারের নির্বাচনের আগে বলেছিলাম, যে নির্বাচনে যাবে আম-ছালা দুটোই যাবে। সেটাই হয়েছে।’

সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘খুব সামনে আমাদের জন্য বড় অনেক বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। এটা শুধু অভ্যন্তরীণ নয়, সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ আসবে দেশের বাহির থেকে। আমাদের নতুন প্রতিবেশী তৈরি হচ্ছে। সেটা স্বাভাবিক নয়, ভিন্নধর্মী প্রতিবেশী। আরাকান এখন নতুন বাস্তবতা। আমরা এত দিন বিবেচনা করতে পারিনি। এখন বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে।’

দেশে নির্বাচনী আইনের বড় ধরনের সংস্কার প্রয়োজন বলে মনে করেন এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন।’

রাজনৈতিক দলগুলোর ফান্ড নিয়ে তিনি বলেন, ‘এখনকার রাজনৈতিক দলগুলো মিস্টার আলম-টালমের মতো লোকের পয়সা দিয়ে চলছে। এখনো রাস্তায় বলা হচ্ছে আমরা ১৬-১৭ বছর ক্ষমতায় ছিলাম না, নির্বাচন করতে পয়সা লাগবে, সেটার জন্য চাঁদাবাজি করছে। এটা অস্বীকার করা যাবে না। এই জায়গায় একটা বড় সংস্কার প্রয়োজন। আমরা দেখছি একটা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বহিষ্কার করছেন, কিন্তু এনাফ নয়।’

সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আমরা আমাদের ছাত্রদের নিয়ে রাজনীতি করতে গেলে সেটার পরিণতি কী সেটা দেখতে হবে। ছাত্রদের রাজনীতি অবশ্যই করা উচিত। তবে সেটা অবশ্যই ছাত্র সংসদের মাধ্যমে হওয়া উচিত। ছাত্রদল বা ছাত্রলীগ, কৃষক লীগ, শেষ পর্যন্ত লীগ হতে হতে বাচ্চা লীগও হয়ে গেছে। সেটার পরিণতি কী সেটা দেশ দেখছে।’

বাংলাদেশে অবশ্যই দ্বিকক্ষ সংসদ ব্যবস্থা হতে হবে বলে মনে করেন এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, সেই জায়গায় বিভিন্ন রকমের মানুষ আসবে। তারা একটা নির্বাচনের জন্য গাইডলাইন তৈরি করতে পারে। সেখানে আলাদা করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজন হবে না।

বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল পরিচালনার জন্য আইন থাকা প্রয়োজন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘১৯৭৮ সালে জিয়াউর রহমান সাহেব করেছিলেন, কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো মানেনি। একটা আইন অবশ্যই প্রয়োজন। না হলে বাংলাদেশে রাজনৈতিক দলগুলোর যে করণীয় তা দেখছি না। আমরা দেখছি রাজনৈতিক দল তৈরি হয়, কোন্দল তৈরি হয় এবং একদল আরেক দলকে খেয়ে ফেলে।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমি জীবনভর অনেক আন্দোলন-সংগ্রামে অংশ নিয়েছি। বিজয়ী হয়েও বারবার হেরে গেছি। অনেক বিজয় এসেছিল, ধরে রাখতে পারিনি। এখন প্রশ্ন উঠেছে, দীর্ঘদিনের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যাঁরা শহীদ হয়েছেন, নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়েছেন, গুম হয়েছেন কিংবা যারা চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে জীবন দিয়েছেন, পঙ্গু হয়েছেন, তাঁদের আত্মত্যাগ ধরে রাখতে পারব তো? দেশের নানামুখী সংস্কার প্রক্রিয়ার মধ্যে এখন অনেক দাবিতে প্রশাসনিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গন মুখর রয়েছে। এতে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মন্তব্য করেছেন।’

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা সব সময়ই বলি, ভালো চাই, আরও ভালো চাই। আমাদের পাওয়ার আকাঙ্ক্ষার শেষ নেই। কিন্তু মহান আল্লাহতায়ালা আমাদের সুযোগ করে দিয়েছেন, গণ-অভ্যুত্থানের বিজয় ধরে রাখার। কিন্তু চাই চাই করে গেলে সব হারাব আমরা, আমরা আক্ষেপ করব। বিজয় ধরে রাখতে তাই সকলের সম্মিলিত প্রয়াস প্রয়োজন।’

প্রশাসনিক কর্মকর্তারা নানা দাবিদাওয়া নিয়ে সারা দেশে ‘হুলুস্থুল’ পরিস্থিতি তৈরি করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এখন সময় অভিযোগের না। এখন সময় সহযোগিতা করার। কোনো রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন একা সব করে ফেলতে পারবে না। পরস্পর পরস্পরকে সহযোগিতা করতে হবে।’

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের লক্ষ্যে দেশে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে ঐক্য গড়ে উঠেছিল, তাতে ফাটল দেখা দিয়েছে বলে এই সভায় মন্তব্য করেন অনেকে।

জ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদ নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমাদের মধ্যে দ্বিমত রয়েছে নানা বিষয়ে। এটি গণতন্ত্রের সুস্বাস্থ্যের জন্যই দরকার।’

গণফোরামের কো-চেয়ারম্যান সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘সংস্কারের ক্যানভাস বড় করে বড় বিপদ ডেকে আনা হবে। নির্বাচন কমিশন বলেছে, তারা অক্টোবরের মধ্যে ভোটার তালিকা প্রণয়ন করবে, নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন দেবেন। তাহলে নির্বাচন আর দেরি করবেন কেন? নির্বাচন যত ঝুলিয়ে দেবেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অনৈক্য আরও বেশি দৃশ্যমান হবে। তাদের মধ্যে বিভেদ আরও বেশি দৃশ্যমান হবে।’

তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ ১৫ বছর ভোট দিতে পারেনি। এখন তরুণেরাও অপেক্ষা করছেন, গ্রহণযোগ্য জনপ্রতিনিধিরা রাষ্ট্র পরিচালনা করবেন। সেখানে সরকারের আনুকূল্যে যদি কোনো রাজনৈতিক দলের উদ্ভব হয়, তবে তার ফলাফল সুখকর হবে না।’

সংস্কারের প্রশ্নে তিনি সর্বাগ্রে প্রশাসনিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংস্কারে গুরুত্বারোপ করেন।

নিউএজ সম্পাদক নূরুল কবির বলেন, ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের নাম পরিবর্তন করে এখন জনগণতান্ত্রিক বাংলাদেশ করা যেতে পারে। বাংলাদেশে একমুখী শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়নের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশে তিন ধরনের শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। তিন ধরনের সংস্কৃতিতে গড়ে উঠেছে এই প্রজন্ম। এভাবে চলতে থাকলে তারা তো একদিন রাজনৈতিকভাবে, একদিন সশস্ত্রভাবে সংগঠিত হবে। তারা এভাবে এগিয়ে যাবে একটি সিভিল ওয়ারের দিকে। এখন তাই এক ভাষায় একমুখী উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা প্রণয়নের দিকে যেতে হবে।’

দেশের সংখ্যাগুরু ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ ঘুচাতে তিনি আইনি ও সামাজিক কাঠামোর সংস্কারের কথা বলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আগামী নির্বাচনকে ঐতিহাসিক ও স্মরণীয় করে রাখতে হবে: ইউএনওদের প্রধান উপদেষ্টা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ৪১
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা থেকে বুধবার সারা দেশের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নির্বাচন প্রস্তুতি বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা থেকে বুধবার সারা দেশের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নির্বাচন প্রস্তুতি বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী আগামী নির্বাচনকে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ হিসেবে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এই নির্বাচন সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের মাধ্যমে স্মরণীয় করে রাখতে হবে।

রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা থেকে আজ বুধবার সারা দেশের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নির্বাচনের প্রস্তুতি বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেওয়ার সময় তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় অনলাইনে যুক্ত ছিলেন দেশের সব জেলা প্রশাসক, বিভাগীয় কমিশনার ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তারা।

প্রধান উপদেষ্টা ইউএনওদের উদ্দেশে বলেন, ‘ইতিহাস আমাদের নতুন করে একটি সুযোগ দিয়েছে। অন্য জেনারেশন এই সুযোগ পাবে না। এই সুযোগকে কাজে লাগাতে পারলে আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়তে পারব। আর যদি না পারি, তাহলে জাতি মুখ থুবড়ে পড়বে। এর আগেও আমরা নির্বাচন দেখেছি। বিগত আমলে যে নির্বাচনগুলো হয়েছে, যেকোনো সুস্থ মানুষ বলবে—এটা নির্বাচন নয়, প্রতারণা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচন অন্যান্য দায়িত্বের মতো নয়; বরং একটি ঐতিহাসিক দায়িত্ব। আমরা যদি ভালোভাবে এই দায়িত্ব পালন করতে পারি, তাহলে আগামী নির্বাচনের দিনটি জনগণের জন্যও ঐতিহাসিক হবে।’

ইউএনওদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আপনারা যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেন, তাহলে সরকার তার দায়িত্বটি সফলভাবে পালন করতে সক্ষম হবে।’

আগামী সংসদ নির্বাচন ও গণভোট দুটিই জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, ‘নির্বাচন আগামী পাঁচ বছরের জন্য আর গণভোট শত বছরের জন্য। এর মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশটাকে স্থায়ীভাবে পাল্টে দিতে পারি। যে নতুন বাংলাদেশ আমরা তৈরি করতে চাই, তার ভিতটা এর মাধ্যমে গড়তে পারি।’

এ সময় সদ্য যোগদান করা ইউএনওদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনাদের প্রধান দায়িত্ব হলো একটি শান্তিপূর্ণ ও আনন্দমুখর নির্বাচন আয়োজন করা।’

প্রধান উপদেষ্টা ইউএনওদের নিজ নিজ এলাকার সব পোলিং স্টেশন পরিদর্শনের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ, এলাকাবাসী ও সহকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে সুন্দর নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দেন।

গণভোট বিষয়ে ভোটারদের সচেতন করার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ‘ভোটারদের বোঝাতে হবে, আপনারা মন ঠিক করে আসুন—“হ্যাঁ”-তে দেবেন নাকি “না”-তে ভোট দেবেন। মন ঠিক করে আসুন।’

কর্মকর্তাদের ধাত্রীর সঙ্গে তুলনা করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ধাত্রী ভালো হলে জন্ম নেওয়া শিশুও ভালো হয়।

তিনি কর্মকর্তাদের যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সৃজনশীল হওয়ার পাশাপাশি অপতথ্য ও গুজব প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেন।

নির্বাচনে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে নারীদের অগ্রাধিকার দেওয়ার ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নারীরা যেন ঠিকভাবে ভোটকেন্দ্রে আসতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে।

শিগগির নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে উল্লেখ করে ড. ইউনূস ইউএনওদের উদ্দেশে বলেন, ‘নির্বাচন সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত কখন, কীভাবে, কোন কাজটি করবেন—তার পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি এখন থেকেই নিন।’

অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম ও জনপ্রশাসন সচিব মো. এহছানুল হকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাগেরহাটের ৪টি আসন বহাল, ফিরল না গাজীপুর ৬

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ৪৯
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বাগেরহাটের ৪টি আসন পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা লিভ টু আপিল খারিজ করে আজ বুধবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগ সর্বসম্মতিতে এ আদেশ দেন।

এর ফলে বহাল থাকল বাগেরহাটের চারটি আসন। বাদ পড়েছে গাজীপুর-৬ আসনটিও।

এর আগে বাগেরহাটের আসন একটি কমিয়ে তিনটি করা এবং গাজীপুরে একটি বাড়ানো-সংক্রান্ত নির্বাচন কমিশনের গেজেট চ্যালেঞ্জ করে রিট করা হয়। শুনানি শেষে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত বাতিল করে গত ১০ নভেম্বর হাইকোর্ট রায় দেন।

হাইকোর্টের রায় ঘোষণার পরপরই তা স্থগিত চেয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) এবং গাজীপুর-৬ আসন থেকে জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী ড. হাফিজুর রহমান ও বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী মো. সালাহ উদ্দিন সরকার আপিল বিভাগে পৃথক আবেদন করেন।

নির্বাচন কমিশনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। ড. হাফিজুর রহমানের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার বেলায়েত হোসেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে বঙ্গভবনে সিইসি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৪
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছেন সিইসি। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছেন সিইসি। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনাররা বঙ্গভবনে পৌঁছেছেন।

বঙ্গভবনের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন, আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ইসির বৈঠকের শিডিউল রাখা আছে।

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট উপলক্ষে নির্বাচন কমিশনের সার্বিক প্রস্তুতি ও তফসিল ঘোষণা বিষয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে আলোচনা করতে বঙ্গভবনে গেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন। সিইসি দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে বঙ্গভবনে পৌঁছান।

এর আগে ১০টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন ভবন থেকে বঙ্গভবনের উদ্দেশে রওনা হন তিনি।

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে রয়েছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ (অবসরপ্রাপ্ত), তাহমিদা বেগম, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার ও আব্দুর রহমানেল মাছউদ এবং ইসি সচিব আখতার আহমেদ।

উল্লেখ্য, চলতি সপ্তাহেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা রয়েছে। তফসিল-সংক্রান্ত ভাষণ রেকর্ড করতে ইতিমধ্যে বিটিভি ও বাংলাদেশ বেতারকে চিঠিও দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাংলাদেশের ‘টাঙ্গাইল শাড়ি বুনন শিল্প’ অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, ইউনেসকোর স্বীকৃতি

বাসস, ঢাকা  
টাঙ্গাইল শাড়িতে অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা মিম। ছবি: ফেসবুক
টাঙ্গাইল শাড়িতে অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা মিম। ছবি: ফেসবুক

টাঙ্গাইলের শাড়ি বুনন শিল্পকে অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেসকো। গতকাল মঙ্গলবার ভারতের নয়াদিল্লিতে ইউনেসকো কনভেনশনের চলমান ২০তম আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এই কনভেনশনের আওতায় এটি বাংলাদেশের ষষ্ঠ একক নিবন্ধন। সভায় প্রথমবারের মতো সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর বিগত চার বছরে এটি দ্বিতীয় নিবন্ধন।

সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের প্রধান এবং ইউনেসকো সাধারণ পরিষদের সভাপতি ও বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জানান, ‘এই স্বীকৃতি বাংলাদেশের জন্য অসামান্য গৌরবের বিষয়। দীর্ঘ দুই শতকের বেশি সময় ধরে টাঙ্গাইলের তাঁতিদের অনবদ্য শিল্পকর্মের বৈশ্বিক স্বীকৃতি এটি।’

তিনি আরও বলেন, ‘টাঙ্গাইল শাড়ি বাংলাদেশের সকল নারীর নিত্য পরিধেয়, যা এই শাড়ি বুনন শিল্পের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনের পেছনে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে।’

এই অর্জনকে বাংলাদেশের সকল তাঁতি ও নারীদের প্রতি উৎসর্গ করেছেন রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা।

বাংলাদেশের অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সামগ্রিক সুরক্ষায় এই স্বীকৃতি নতুন মাত্রা যোগ করবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত তালহা বলেন, ঐতিহ্য হিসেবে ইউনেসকোর স্বীকৃতি অর্জনের মতো বাংলাদেশের অপরিমেয় সাংস্কৃতিক উপাদান রয়েছে।

নথি প্রস্তুত করার সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং কনভেনশন সংক্রান্ত অভিজ্ঞ জনবল তৈরি করার মাধ্যমে আরও অনেক ঐতিহ্যের ইউনেসকো-স্বীকৃতি অর্জনের সুযোগ রয়েছে।

এর আগে, গত ৭ ডিসেম্বর আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের চলমান ২০তম সভা উদ্বোধন করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শংকর। অনুষ্ঠানে ইউনেসকোর নবনিযুক্ত মহাপরিচালক খালেদ এল. এনানি উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত