Ajker Patrika

বেদখল জমির দখল ফিরে পেতে কী করবেন

সুলতান মাহমুদ, ঢাকা
আপডেট : ১২ এপ্রিল ২০২৪, ১৯: ৪৪
বেদখল জমির দখল ফিরে পেতে কী করবেন

বাংলাদেশে গ্রামে কিংবা শহরে প্রভাবশালীদের হাতে জমি বেদখল হয়ে যাওয়া একটি সাধারণ ঘটনা। জমি বেদখল হলে কী করতে হবে, তা বেশির ভাগ মানুষই ঠিকমতো জানেন না। প্রভাবশালীদের হুমকি-ধমকির ভয়েও অনেকে চুপ থাকেন। কিন্তু এই ধরনের কোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে বসে থাকলে চলবে না। দ্রুত আইনের আশ্রয় নিতে হবে। জমি বেদখল হলে, দখল পুনরুদ্ধারের জন্য দুই রকমের উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। 

প্রথমত: স্থানীয়ভাবে সালিসের মাধ্যমে বিরোধের নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করা যেতে পারে। যেসব অঞ্চলে স্থানীয় গণ্যমান্যদের নেতৃত্বে সালিস পরিচালিত হয়, তাঁরা এই উপায়ে বিরোধের নিষ্পত্তির চেষ্টা করতে পারেন। যদি উভয়পক্ষ সম্মত থাকে, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সালিসে বসে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের মধ্য দিয়ে জমির আসল মালিককে তাঁর জমির দখল বুঝিয়ে দিতে পারেন। 

দ্বিতীয়ত: জমি বেদখল হলে প্রতিকারের আরেকটি উপায় আদালতে মোকদ্দমা করা। ফৌজদারি ও দেওয়ানি—এই দুই ধরনের আইনেই জমি বেদখল হওয়ার প্রতিকার পাওয়া যায়। 

ফৌজদারি প্রতিকার
জমি দখলকে কেন্দ্র করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি দেখা দিলে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৫ ধারা অনুযায়ী প্রতিকার চাইতে পারেন। এ ধারা অনুযায়ী প্রতিকার চাইতে হবে প্রথম শ্রেণির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে। আর এ মামলা করতে হবে জমি বেদখল হয়ে যাওয়ার দুই মাসের মধ্যে। 

কোনো মামলা হলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে সমন জারি করবেন। একই সঙ্গে বিরোধপূর্ণ জমি নিয়ে যাতে মারামারি বা খুনোখুনির মতো কোনো ঘটনা না ঘটে তা দেখার জন্য পুলিশকে দেখভালের নির্দেশ দিতে পারেন। পরবর্তীকালে উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনবেন এবং সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে সম্পত্তির দখলদারকে তা নির্ধারণ করবেন। 

১৪৫ ধারায় প্রতিকার চাইতে গেলে এখানে স্বত্ব বা মালিকানা দাবি করা যাবে না। এর মাধ্যমে শুধু প্রকৃত দখলদার নির্ণয় করার জন্য প্রতিকার চাওয়া যাবে।

ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৪ ধারায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে উৎপাত বা আশঙ্কার প্রতিকারের ক্ষেত্রে তৎক্ষণাৎ আদেশ জারির ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৫ ধারায় বলা হয়েছে, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা সরকার কর্তৃক বিশেষভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট যদি পুলিশ প্রতিবেদন বা অন্য কোনোভাবে সংবাদ পেয়ে যৌক্তিকতার নিরিখে সন্তুষ্ট হন যে তাঁর এখতিয়ারভুক্ত এলাকার মধ্যে জমি বা পানি বা সীমানা সম্পর্কে এমন বিরোধ রয়েছে, যা শান্তিভঙ্গ ঘটাতে পারে, তখন তিনি ব্যবস্থা নিতে পারে। পদক্ষেপের মধ্যে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিরোধে জড়ানো পক্ষগুলোকে ব্যক্তিগতভাবে বা উকিলের মাধ্যমে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিতে পারেন। অথবা বিরোধের বিষয়বস্তুতে প্রকৃত দখল সম্পর্কে উভয় পক্ষের নিজ নিজ দাবিসংবলিত লিখিত বিবৃতি পেশ করার নির্দেশ দিয়ে লিখিত আদেশ দিতে পারেন।

উভয়পক্ষের বক্তব্য ও সাক্ষ্যাদি বিবেচনা করার পর যদি ম্যাজিস্ট্রেট মনে করেন, বিরোধপূর্ণ সম্পত্তি পূর্ববর্তী দুই মাসের মধ্যে বলপূর্বক ও অন্যায়ভাবে দখল করা হয়েছে, তাহলে দখলকৃত পক্ষকে ‘দখলদার’ বলে ঘোষণা করবেন। আর যদি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে যৌক্তিকভাবে মনে হয় যে জমির প্রকৃত দখলকার কেউ ছিলেন না কিংবা কোনো পক্ষ দখলকার ছিল তা নির্ণয় করা দুঃসাধ্য তাহলে, এমন ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেট ওই সম্পত্তি জব্দ করবেন। জব্দকৃত সম্পত্তি দেখভালের জন্য একজন ‘রিসিভার’ নিয়োগ করবেন।

আর যদি ওই জব্দকৃত সম্পত্তি ক্ষয়শীল বা দ্রুত পচনশীল হয় তবে, ম্যাজিস্ট্রেট চাইলে সেটি বিক্রি করতে পারবেন।

এ ছাড়া আইন সংগতভাবে উচ্ছেদ না হওয়া পর্যন্ত দখলে থাকা পক্ষ দখল বহাল রাখবেন। 

দেওয়ানি প্রতিকার
জমি বেদখল হওয়ার দুই মাসের মধ্যে ফৌজদারি আদালতে মামলা করতে ব্যর্থ হলে দেওয়ানি আদালতে মামলা করার সুযোগ রয়েছে। দেওয়ানি আইন অনুযায়ী, দেওয়ানি আদালতে মামলা করতে হলে জমি বেদখল হওয়ার তারিখ থেকে ছয় মাসের মধ্যে মামলা করতে হবে। তবে এ ক্ষেত্রে মামলার রায় পেতে কিছুটা সময় লাগবে।

সম্পত্তি বেদখল হলে জমির মূল্য বিবেচনায় দেওয়ানি আদালতের জজ আদালতে যেতে হবে এবং সে অনুযায়ী কোর্ট ফি দিতে হবে।

যেমন:
১. বেদখল সম্পত্তির মূল্য যদি ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত হয়, তাহলে জমিটি যে এলাকায় অবস্থিত সেই এলাকার সহকারী জজের কাছে মামলা করতে হবে। 

২. বেদখল সম্পত্তির মূল্য ১৫ লাখ ১ টাকা থেকে ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত হলে জমিটি যে এলাকায় অবস্থিত সেই এলাকার সিনিয়র সহকারী জজের কাছে মামলা করতে হবে। 

৩. বেদখল সম্পত্তির মূল্য ২৫ লাখ টাকার বেশি হলে জমিটি যে এলাকায় অবস্থিত সেই এলাকার যুগ্ম জেলা জজের কাছে মামলা করতে হবে।

সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন
সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন ১৮৭৭-এর ৮ ধারামতে, জমিতে বৈধ মালিকানা থাকলে বেদখল হওয়ার ১২ বছরের মধ্যে এই আইনে মামলা করে জমির দখল ফিরে পেতে পারেন। তবে মালিকানা প্রমাণ (নথিপত্র) না থাকলে এই আইনে এই ধারায় প্রতিকার পাওয়া যায় না।

সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৯ ধারামতে, জমি বেদখল হলে ছয় মাসের মধ্যে এই ধারায় মামলা করে দখল ফিরে পেতে পারেন। জমিতে আপনার মালিকানা না থাকলেও শুধু আপনার দখলে ছিল—এটি প্রমাণ করতে পারলেই রায় পেতে পারেন। এই ধারায় দখল মূল বিষয়, মালিকানা কার সেটি দেখার বিষয় না।

তবে সরকার দখল করলে এই ধারায় মামলা করা যাবে না। এই ধারায় ডিক্রি লাভ করলে এর বিরুদ্ধে আপিল ও রিভিউ চলবে না। তবে রিভিশন করা যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মিয়ানমারে ই-পাসপোর্ট সেবা উদ্বোধন করল বাংলাদেশ দূতাবাস

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মঙ্গলবার ইয়াঙ্গুনে বাংলাদেশ দূতাবাসে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রমে উদ্বোধন করা হয়। ছবি: সংগৃহীত
মঙ্গলবার ইয়াঙ্গুনে বাংলাদেশ দূতাবাসে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রমে উদ্বোধন করা হয়। ছবি: সংগৃহীত

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মিয়ানমারে বাংলাদেশ দূতাবাস, ইয়াঙ্গুনে আজ মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মিয়ানমারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মো. মনোয়ার হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. শামস আখতার এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব ইসরাত জাহান। এ ছাড়া দূতাবাস কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং মিয়ানমারে বসবাসরত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি নাগরিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত ড. মো. মনোয়ার হোসেন গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণ করেন। একই সঙ্গে, তিনি ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের প্রতিও গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তিনি প্রধান উপদেষ্টার দিকনির্দেশনায় প্রবাসীদের কাছে ই-পাসপোর্ট সেবা দ্রুত পৌঁছে দেওয়ায় পাসপোর্ট ও অভিবাসন অধিদপ্তরকে ধন্যবাদ জানান।

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘ই-পাসপোর্ট চালু হওয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের আধুনিক, নিরাপদ ও কার্যকর সেবা প্রদানের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। এটি প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট সংক্রান্ত প্রক্রিয়াসমূহকে আরও সহজতর ও নিরাপদ করবে।’ তিনি এই কার্যক্রম বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের আন্তরিক সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

এর আগে উপ-প্রকল্প পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. শামস আখতার তাঁর বক্তব্যে ই-পাসপোর্ট প্রকল্পের প্রযুক্তি এবং এর সঠিক ব্যবহারের ওপর সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন এবং এর গুরুত্ব তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিরা আনুষ্ঠানিকভাবে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রমের উদ্বোধন ঘোষণা করেন এবং উপস্থিত প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে ই-পাসপোর্ট ডেলিভারি স্লিপ বিতরণ করেন। পরে তারা দূতাবাসে স্থাপিত নতুন ই-পাসপোর্ট সিস্টেম পরিদর্শন করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মনোমুগ্ধকর এয়ার শো দেখে উচ্ছ্বসিত হাজারো দর্শক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
মনোমুগ্ধকর এয়ার শো দেখে উচ্ছ্বসিত হাজারো দর্শক

বাংলাদেশের বিজয়ের ৫৪ বছর উপলক্ষে তেজগাঁওয়ের পুরোনো বিমানবন্দরে অনুষ্ঠিত হয়েছে মনোমুগ্ধকর এয়ার শো। যাতে ৫৪ জন জাতীয় পতাকা নিয়ে প্যারাট্রুপিং করেন। আজ মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে এই প্যারাট্রুপিং করা হয়।

সশস্ত্র বাহিনীর আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এতে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, বিভিন্ন বাহিনী প্রধান, রাজনৈতিক নেতা, বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।

‘টিম বাংলাদেশ’-এর ৫৪ জন প্যারাট্রুপারের এই পতাকাবাহী স্কাইডাইভ প্রদর্শন বিশ্বের সর্ববৃহৎ পতাকা-প্যারাট্রুপিং প্রদর্শনী। এটি একটি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড।

air-show

১২ হাজার উচ্চতা থেকে এই ফ্রি ফল জাম্পে অংশ নেওয়া এই ৫৪ জন হলেন—সেনা বাহিনীর ৪৬, নৌ বাহিনীর ৫, বিমানবাহিনীর ২ জন এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। আশিক চৌধুরী গুলিবিদ্ধ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদির ছবি আঁকা হেলমেট পরেন। ৪৯ থেকে ৫৪ বক্ষ নম্বরধারী ফ্রি ফল জাম্পাররা সুদানে নিহত ৬ জন শান্তিরক্ষীর নাম বুকে ধারণ করেন।

air-show-2

এই ফ্রি ফল জাম্পের সার্বিক তত্ত্বাবধায়ক এবং ড্রপ জোন কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম এম ইমরুল হাসান।

perasut-2

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এয়ার শো শুরু হয়। এতে অংশ নেওয়া উড়োজাহাজগুলো হরেক রকমের রং ছড়ায় আকাশে। সেখানে জাতীয় পতাকার লাল-সবুজ ছাড়াও অন্যান্য রং ছিল। অন্যদিকে হেলিকপ্টারগুলো বহন করে জাতীয় পতাকা ও সশস্ত্র বাহিনীর পতাকা।

air-show-3

‘এয়ার শো’ দেখতে ঢাকার তেজগাঁওয়ের পুরোনো বিমানবন্দরে দর্শনার্থীদের ঢল নামে। আগত দর্শনার্থীদের অনেকের হাতে জাতীয় পতাকা। কপালে বাঁধা জাতীয় পতাকার আদলের ফিতা কিংবা বিজয় দিবস লেখা কাপড়। লাল-সবুজের পোশাক পরেও এসেছেন অনেকেই। পুরোনো বিমানবন্দরে প্রবেশের ফটক সকাল ১০টা ৪০ মিনিটের দিকে বন্ধ করে দেওয়া হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তেজগাঁও বিমানবন্দরে এয়ার শো দেখতে জনস্রোত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ১৮
পুরাতন বিমানবন্দরে এয়ার শো দেখতে সকাল থেকেই মানুষের ভিড়। ছবি: ফেসবুক
পুরাতন বিমানবন্দরে এয়ার শো দেখতে সকাল থেকেই মানুষের ভিড়। ছবি: ফেসবুক

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পুরোনো বিমানবন্দরে জমকালো ‘এয়ার শো’ দেখতে মানুষের ঢল নেমেছে। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকেই বিমানবন্দরমুখী মানুষের স্রোত দেখা যায়। তবে নির্ধারিত সময়ের পরও এয়ার শো শুরু না হওয়ায় অপেক্ষার প্রহর গুনছেন হাজারো দর্শক।

সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল পৌনে ১০টার দিকে আগারগাঁও-সংলগ্ন পুরোনো বিমানবন্দরের ফটকে দর্শনার্থীদের দীর্ঘ সারি তৈরি হয়। নিরাপত্তা তল্লাশি শেষে সবাইকে একে একে প্রবেশ করানো হচ্ছে। ততক্ষণে শত শত পরিবার, শিশু ও উৎসুক জনতা বিমানবন্দরে প্রবেশ করে ভিড় জমিয়েছে।

আগত দর্শনার্থীদের হাতে শোভা পাচ্ছে জাতীয় পতাকা। অনেকের কপালে বাঁধা জাতীয় পতাকার আদলের ফিতা কিংবা ‘বিজয় দিবস’ লেখা কাপড়। অনেকেই পরিবারের সঙ্গে লাল-সবুজের পোশাক পরে এসেছে বিজয় উৎসবের এই বিশেষ প্রদর্শনী উপভোগ করতে।

গতকাল সোমবার এক তথ্যবিবরণীতে জানানো হয়েছিল মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আজ সকাল ১০টায় তেজগাঁওয়ের পুরোনো বিমানবন্দরে এই জমকালো এয়ার শো অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। কিন্তু সকাল ১০টা ২০ মিনিটে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এয়ার শো শুরু হয়নি। জনসমাগম হলেও অনুষ্ঠান শুরু হতে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে বলে জানা গেছে।

তথ্যবিবরণীতে সরকার জানিয়েছে, এই এয়ার শো সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। একই সঙ্গে তেজগাঁও পুরোনো বিমানবন্দর ও এর আশপাশ এলাকায় আজ কোনো প্রকার ড্রোন না ওড়ানোর জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।

বিজয়ের ৫৪তম বছর উপলক্ষে এয়ার শোতে ৫৪ জন প্যারাট্রুপার বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে প্যারাট্রুপিং করে বিশ্ব রেকর্ড গড়তে যাচ্ছেন। এই ৫৪ জনের শেষ ৬ জন পোশাকে নিজেদের নেমপ্লেটের পরিবর্তে সুদানের ইউএন ঘাঁটিতে নিহত ৬ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁদের নেমপ্লেট পরে প্যারাট্র‍্যুপিং করবেন।

এই ৫৪ জনের একজন আশিক চৌধুরী। তিনি বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) বর্তমান নির্বাহী চেয়ারম্যান। আশিক চৌধুরী জাম্প করবেন শরিফ ওসমান বিন হাদির ছবি আঁকা হেলমেট পরে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিজয় দিবসে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা নিবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাভার
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৩৭
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

মহান বিজয় দিবসে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। আজ মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল ৬টা ৩৪ মিনিটে জাতীয় স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন রাষ্ট্রপতি।

এ সময় সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রীয় সালাম প্রদর্শন করে এবং বিউগলে করুণ সুর বেজে ওঠে। এরপর রাষ্ট্রপতি সেখানে রাখা দর্শনার্থী বইয়ে সই করেন।

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে রাষ্ট্রপতি বের হয়ে যাওয়ার পর জাতীয় স্মৃতিসৌধে আসেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। ৬টা ৫৬ মিনিটে স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধান উপদেষ্টা।

বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি ও সরকারপ্রধান স্মৃতিসৌধে উপস্থিত অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা, তিন বাহিনীর প্রধান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের পরিবারের সদস্য, কূটনীতিক, বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধি এবং বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা নিবেদনের পর উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও তিন বাহিনীর প্রধানেরা বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপরই জনসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য স্মৃতিসৌধ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।

আজ ১৬ ডিসেম্বর। ৫৫তম মহান বিজয় দিবস। ১৯৭১ সালে দীর্ঘ ৯ মাস পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র যুদ্ধের পর এই দিনেই আমরা চূড়ান্ত বিজয় লাভ করেছি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত