আজকের পত্রিকা ডেস্ক

উপসচিব পদে পদোন্নতিতে প্রশাসন ক্যাডারের কোটা কমাতে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের নেওয়া সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এই ক্যাডারের কর্মকর্তারা দল বেঁধে সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে অবস্থান নিয়েছেন। বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আনোয়ার উল্লার নেতৃত্বে কর্মকর্তারা তাঁদের দাবি-দাওয়া জনপ্রশাসন সচিবের কাছে তুলে ধরবেন। আজ রোববার সকাল সাড়ে ১১টার পর থেকে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা সচিবালয়ের তিন নম্বর ভবনের সামনে জড়ো হন।
আনুষ্ঠানিকভাবে দিতে চলা দাবি-দাওয়াগুলো হলো—
দাবিগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাগণের উপসচিব পদোন্নতিযোগ্য পদ থেকে ১৯৯৮ সালে অন্যায্যভাবে বাদ দেওয়া ২৫ শতাংশ পদসমূহ পুনরায় অন্তর্ভুক্ত করে এন্ট্রি পদ থেকে শুরু করে সচিব পর্যন্ত পদসমূহ সমন্বয়ে মেধাভিত্তিক ‘বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস’ প্রতিষ্ঠা।
> জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন কর্তৃক গত ১৭ / ১২ / ২০২৪ তারিখে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দের সাথে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় মাননীয় কমিশন প্রধান সরকারের উপসচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের জন্য বিদ্যমান ৭৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫০ শতাংশ করার বিষয়ে জনসমক্ষে বক্তব্য প্রদান করেন। উক্ত বক্তব্যে মাঠ প্রশাসনসহ সকল স্তরে কর্মরত প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে এবং তাঁরা ইতিমধ্যে লিখিত প্রতিবাদ জানিয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে, একটি জনমুখী, জবাবদিহিমূলক, দক্ষ ও নিরপেক্ষ সিভিল প্রশাসন বিনির্মাণের লক্ষ্যে এন্ট্রি পদ সহকারী কমিশনার থেকে শুরু করে সচিব পর্যন্ত পদগুলোর সমন্বয়ে, একটি মেধাভিত্তিক এবং আধুনিক প্রশাসন ব্যবস্থার উপযোগী বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। এ প্রস্তাবের সমর্থনে যৌক্তিকতাসমূহ সংক্ষেপে নিম্নে উপস্থাপন করা হলো।
> অবিভক্ত ভারত ও পাকিস্তান আমলে কেন্দ্রীয় এবং প্রাদেশিক শাসন ব্যবস্থায় বিভক্ত কাঠামোতে সিভিল প্রশাসনের উচ্চতর পদগুলোতে সকল সময়ে ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস, সিভিল সার্ভিস পাকিস্তান (সিএসপি), ইস্ট পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসের (ইপিসিএস) কর্মকর্তাবৃন্দ দায়িত্ব পালন করতেন। স্বাধীন বাংলাদেশে এক-কেন্দ্রিক শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর, পশ্চিম পাকিস্তান থেকে দেশে ফেরত আসা সিএসপি কর্মকর্তাগণ ও পূর্ব পাকিস্তানে কর্মরত ইপিসিএস কর্মকর্তাগণকে নিয়ে (সহকারী সচিব হতে সচিব পর্যন্ত ৪৮২ জন) স্বাধীন দেশের সিভিল প্রশাসনের যাত্রা শুরু হয়। উক্ত কর্মকর্তাগণ সকলেই সিভিল প্রশাসন সার্ভিসের সদস্য ছিলেন। উক্ত সিভিল প্রশাসনে অন্য সার্ভিসের কোনো পদ ছিল না। ১৯৮০ সনে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস অর্ডার এর মাধ্যমে প্রাক্তন সিএসপি, ইপিসিএস এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যানেজমেন্ট সার্ভিস (আইএমএস) কর্মকর্তাগণকে নিয়ে বিসিএস (প্রশাসন) হিসেবে সার্ভিসের নামকরণ করা হয়। ১৯৯২ সনের এক আদেশে সচিবালয় ক্যাডার-কে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে একীভূত করা হয় এবং সচিবালয় ক্যাডারের সকল পদও প্রশাসন ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত হয়। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সরকার ১১ / ০২ / ১৯৯৮ তারিখে জারিকৃত নীতিমালায় ২৫% উপসচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে অন্যায্যভাবে প্রশাসনের কর্মকর্তাগণকে বাদ দিয়ে তা অন্যান্য ক্যাডার সার্ভিসের মধ্যে আনুপাতিকভাবে বণ্টন করে কোটা পদ্ধতি চালু করে।
> প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাগণকে উক্তরূপে তাঁদের পদোন্নতিযোগ্য এক-চতুর্থাংশ পদ হতে বঞ্চিত করার পর, বিষয়টিকে সম্পূর্ণ উল্টা স্রোতে প্রবাহিত করার লক্ষ্যে প্রশাসন ক্যাডারের ৭৫% অবশিষ্ট পদকেই আদালতে চ্যালেঞ্জ করা হয়। পরিশেষে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের ফুল বেঞ্চ সিভিল আপিল নম্বর ২৯৪-৯৮ / ২০০৩ মামলায় বিস্তারিত শুনানি করে উপসচিব পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রশাসন ক্যাডার হতে ৭৫% থাকার বিধানকে বৈধ হিসেবে ঘোষণা করেন। প্রতিপক্ষ রিভিউ করলে সেটিও খারিজ হয়ে যায়। কেউ কেউ বলছেন যে, আদালত এ বিষয়ে পর্যবেক্ষণ প্রদান করেছেন, আদেশ নয়। এ বক্তব্য সঠিক নয়। মাননীয় আপিল বিভাগ রায়ের শেষাংশে এ বিষয়টিকে নির্দেশনা (ডিরেকশন) হিসেবে প্রদান করেছেন। সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদ অনুসারে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বাধ্যতামূলক কার্যকারিতা রয়েছে। বর্তমানে যে ক্যাডার বৈষম্যের কথা বলা হচ্ছে, তার কোনো ভিত্তি এবং গ্রহণযোগ্যতা নেই; যা উক্ত রায় পাঠ করলে সহজেই অনুধাবন করা যায়।
> উক্ত রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (প্রশাসন) গঠন ও ক্যাডার আদেশ ২০২৪ এর তফসিলের ৬ (১) নম্বর এন্ট্রিতে প্রশাসন ক্যাডারের পদোন্নতিযোগ্য পদ হিসেবে উপসচিব পদকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে (কপি সংযুক্ত)। মাঠ প্রশাসন থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত সুবিন্যস্ত সিভিল প্রশাসনের চেইন অব কমান্ড দুর্বল করার জন্য এর আগেও বিভিন্ন সময়ে চেষ্টা করা হয়েছে। ফলাফল রাষ্ট্রের জন্য উপকারী হয়নি। ইতিপূর্বে ২০ / ১১ / ১৯৭৯ তারিখে কোনোরূপ বিচার-বিশ্লেষণ ছাড়া দীর্ঘদিনের প্রতিষ্ঠিত প্রশাসনিক কাঠামোকে ভেঙে দিয়ে, ফিল্ড/সিভিল প্রশাসন থেকে সচিবালয়ের উপসচিব/তদূর্ধ্ব পদগুলোকে বিচ্ছিন্ন করে পৃথক সুপিরিয়র সার্ভিস পুল করা হয়। ফলশ্রুতিতে প্রশাসন-ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ায় ১৯৮৯ সনে উক্ত ব্যবস্থা বাতিল করা হয়। বিষয়টি মাননীয় আপিল বিভাগও তাঁর রায়ে উল্লেখ করেছেন। প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের মতো ছোট দেশে মন্ত্রণালয়ের জন্য স্বতন্ত্র উচ্চতর পুল তৈরি করা বাস্তবসম্মত বা প্রয়োজনীয় নয়। বরং মাঠ প্রশাসনে কাজ করে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করা সিভিল প্রশাসনের কর্মকর্তাগণকে উপসচিব/তদূর্ধ্ব পদে পদোন্নতি প্রদান করে তাঁদের দিয়ে সচিবালয় প্রশাসন পরিচালনার বিদ্যমান ব্যবস্থাকে আরও সুসংহত করতে হবে। পেশাদারি, নিরপেক্ষতা ও জবাবদিহির ক্ষেত্রে বিদ্যমান সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তা সমাধান করতে হবে। এটিই হবে প্রকৃত সংস্কার।
> মাননীয় আপিল বিভাগ সচিবালয় প্রশাসনের উচ্চতর পদসমূহে প্রশাসনের কর্মকর্তাগণের নিয়োগের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে উল্লিখিত মামলায় গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ প্রদান করেন:-
‘প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে একজন সচিব/অতিরিক্ত সচিব থাকেন। তিনি মন্ত্রণালয়ের প্রিন্সিপাল অ্যাকাউন্টস কর্মকর্তা এবং প্রধান নির্বাহী। তাহার প্রধান কাজ মাঠ পর্যায়ে সংগৃহীত তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করিয়া সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীকে যথাযথ কর্মপন্থা নির্ধারণ করতঃ সিদ্ধান্ত লইতে (পলিসি ডিসিশন) সহায়তা করা। কর্মপন্থা নির্ধারণ হইলে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ হইতে সেই সিদ্ধান্ত কার্যে পরিণত করতে তত্ত্বাবধায়ন করার দায়িত্বও সচিবের ওপর বর্তায়। এইরূপ কর্মপন্থা নির্ধারণ (পলিসি ডিসিশন) ও তাহা কার্যে পরিণত করিতে (এক্সিকিউশন) সচিবের সহিত যুগ্ম-সচিব ও উপ-সচিব সহায়ক ভূমিকা পালন করেন এবং তাহারা নির্বাহী সরকারের নির্বাহী অঙ্গ (এক্সিকিউটিভ আর্ম) হিসাবে পরিচিত। সাধারণ প্রশাসন কার্য ব্যতিরেকে মাঠ-পর্যায়ে সরকারের উপরোক্তভাবে গৃহীত বিভিন্ন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের দায়িত্ব থাকে বিভিন্ন পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হইতে বিভাগীয় কমিশনার পর্যন্ত সকল কর্মকর্তাগণের ওপর। প্রকৃতপক্ষে মাঠ পর্যায় প্রশাসন এবং নির্বাহী বিভাগের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সহিত উপ-সচিব, যুগ্ম-সচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিবগণ সেতুবন্ধের মতো কার্য করেন। এই কারণেই ব্রিটিশ আমল হইতেই সচিবালয়ের উপ-সচিব ও তদূর্ধ্ব পদে সব সময়ই প্রশাসনিক কর্মকর্তাগণ নিয়োগ ও পদোন্নতি পাইতেন। একমাত্র ব্যতিক্রম এসএসপি অর্ডারের মাধ্যমে সকল ক্যাডার হতে উপ-সচিব ও তদূর্ধ্ব পদে নিয়োগ/পদোন্নতি প্রদান করা হইয়াছিল যাহা ১৯৮৯ সনেই পরিত্যক্ত হইয়াছে। যেহেতু পিএসসির সুপারিশ পর্যায় হইতেই কর্মকর্তাগণ বিভিন্ন ক্যাডারে শ্রেণিভুক্ত হইয়া যায়, সেহেতু সচিবালয়ের প্রশাসনিক উপ-সচিব পদে প্রশাসনিক কর্মকর্তাগণ ব্যতিরেকে অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তাগণের পুনরায় নিয়োগ বা পদোন্নতি প্রাপ্ত হইবার কোনো সহজাত অধিকার নেই।’ [সিভিল আপিল নম্বর ২৯৪-৯৮ / ২০০৩ ]
> বর্তমানে ক্যাডার-বৈষম্য নিরসনের দাবির আড়ালে মূলত মেধার পরিবর্তে কোটাকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। এ দাবির অন্তর্নিহিত সারমর্ম হচ্ছে, বিসিএস পরীক্ষায় তুলনামূলকভাবে অধিক নম্বরপ্রাপ্ত প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাগণকে তাঁদের পদোন্নতিযোগ্য পদ হতে আরও একবার বঞ্চিত করে, অপেক্ষাকৃত কম নম্বর পেয়ে চাকরিতে প্রবেশ করা কর্মকর্তাগণকে তা প্রদান করা। সকলের প্রতি যথাযথ সম্মান রেখেই এ কথা উল্লেখ করতে বাধ্য হচ্ছি যে, বাস্তবতা হলো: তুলনামূলকভাবে অধিক নম্বর পেয়ে যাঁরা পররাষ্ট্র/পুলিশ/কাস্টমস/কর ক্যাডার পেয়েছেন তাঁদেরকে এ বিষয়ে ততটা সোচ্চার হতে দেখা যায় না, যতটা দেখা যায় তুলনামূলকভাবে কম নম্বর পেয়ে বা কম নম্বরের পরীক্ষা দিয়ে চাকরিতে প্রবেশ করা টেকনিক্যাল/প্রফেশনাল ক্যাডারের সদস্যগণকে। প্রফেশনাল/টেকনিক্যাল সার্ভিসগুলোর স্ট্রেনথনিং অন্য সার্ভিসের পদ কেড়ে নেওয়ার মধ্যে নয়; বরং প্রত্যেকের কাজের ধরন বিবেচনা করে প্রয়োজনে উচ্চ বেতন নির্ধারণ, স্বীয় সার্ভিসে পদোন্নতির সুযোগ বৃদ্ধিকরণসহ যথাযথ ক্যারিয়ার-পরিকল্পনা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে অধিদপ্তর/দপ্তর/সংস্থার কার্যকারিতা ও সক্ষমতা অধিকতর বৃদ্ধির বিষয় বিবেচনা করা যেতে পারে।
> বিশ্বের প্রায় সকল গণতান্ত্রিক দেশে বিভিন্ন ফরমেটে সিভিল প্রশাসন রয়েছে। অধিকাংশ দেশে মেধাবী ক্যারিয়ার ব্যুরোক্রেটগণ সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে চাকরিতে প্রবেশ করেন এবং বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে স্ব স্ব সার্ভিসের সর্বোচ্চ সোপান পর্যন্ত আরোহণ করতে পারেন। কোথাও কোথাও নিয়মিত কর্মকর্তার বাইরে কতিপয় উচ্চ পদে’ ল্যাটারাল এন্ট্রি’ বা মেয়াদি রাজনৈতিক নিয়োগ পরিলক্ষিত হয়। তবে বিশ্বের কোথাও উচ্চতর সিভিল প্রশাসনে বাংলাদেশের ন্যায় বিভিন্ন টেকনিক্যাল/প্রফেশনাল সার্ভিসের জন্য আনুপাতিকভাবে কোটা সংরক্ষণ করে অন্তর্ভুক্তির ব্যবস্থা পরিলক্ষিত হয় না। সিভিল প্রশাসনের স্বাতন্ত্র্য ও গুরুত্বকে উপেক্ষা করে অন্যান্য জেনারেল/টেকনিক্যাল/প্রফেশনাল সার্ভিসের সাথে সমান্তরালে নিয়ে এসে একত্রে ক্যাডারভুক্তকরণ করার নজিরও দেখা যায় না। মূলত এই অসামঞ্জস্যপূর্ণ সংমিশ্রণ থেকেই বহু জটিলতা এবং দ্বন্দ্বের সূত্রপাত হয়েছে। প্রশাসন ক্যাডারের সাথে তুলনা করে অবাস্তব ‘বৈষম্য’ নিরসন, ‘সমতা’র দাবি তোলার ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। সুতরাং সিভিল প্রশাসন সার্ভিসকে অন্যান্য টেকনিক্যাল/প্রফেশনাল ক্যাডারের সংমিশ্রণ থেকে আলাদা করে স্বতন্ত্র’ বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা আবশ্যক।
> এমতাবস্থায়, অন্যান্য টেকনিক্যাল/প্রফেশনাল/বিষয়ভিত্তিক ক্যাডার সার্ভিস থেকে বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারকে পৃথক করে এন্ট্রি পদ সহকারী কমিশনার/সহকারী সচিব থেকে শুরু করে সচিব পর্যন্ত পদসমূহ (নন-ক্যাডার পদ ব্যতীত) সমন্বয়ে একটি জনমুখী, দক্ষ, নিরপেক্ষ, যুগোপযোগী সিভিল প্রশাসন হিসেবে’ বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস’ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। অন্যায্যভাবে বাদ দেওয়া উপসচিবের ২৫% পদসমূহ পুনরায় উক্ত সার্ভিসে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
এ দিকে দুপুর পৌনে ১টায় নিজ দপ্তরে আসেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান। সচিবের দপ্তরে অবস্থান নেওয়া কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিজের মিনি কনফারেন্স রুমে বৈঠকে বসেছেন তিনি। সচিবের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেওয়া কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বৈঠক শেষে তাঁরা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলবেন।
গত ১৭ ডিসেম্বর সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী জানান, উপসচিব পদে পদোন্নতিতে প্রশাসন ক্যাডারের ৫০ শতাংশ এবং অন্য সব ক্যাডার থেকে ৫০ শতাংশ কোটা রাখার সুপারিশ করবেন তাঁরা। বর্তমান বিধিমালা অনুযায়ী, উপসচিব পদে প্রশাসন ক্যাডারের ৭৫ শতাংশ এবং অন্য সব ক্যাডারের ২৫ শতাংশ কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেওয়া হয়।

উপসচিব পদে পদোন্নতিতে প্রশাসন ক্যাডারের কোটা কমাতে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের নেওয়া সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এই ক্যাডারের কর্মকর্তারা দল বেঁধে সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে অবস্থান নিয়েছেন। বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আনোয়ার উল্লার নেতৃত্বে কর্মকর্তারা তাঁদের দাবি-দাওয়া জনপ্রশাসন সচিবের কাছে তুলে ধরবেন। আজ রোববার সকাল সাড়ে ১১টার পর থেকে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা সচিবালয়ের তিন নম্বর ভবনের সামনে জড়ো হন।
আনুষ্ঠানিকভাবে দিতে চলা দাবি-দাওয়াগুলো হলো—
দাবিগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাগণের উপসচিব পদোন্নতিযোগ্য পদ থেকে ১৯৯৮ সালে অন্যায্যভাবে বাদ দেওয়া ২৫ শতাংশ পদসমূহ পুনরায় অন্তর্ভুক্ত করে এন্ট্রি পদ থেকে শুরু করে সচিব পর্যন্ত পদসমূহ সমন্বয়ে মেধাভিত্তিক ‘বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস’ প্রতিষ্ঠা।
> জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন কর্তৃক গত ১৭ / ১২ / ২০২৪ তারিখে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দের সাথে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় মাননীয় কমিশন প্রধান সরকারের উপসচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের জন্য বিদ্যমান ৭৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫০ শতাংশ করার বিষয়ে জনসমক্ষে বক্তব্য প্রদান করেন। উক্ত বক্তব্যে মাঠ প্রশাসনসহ সকল স্তরে কর্মরত প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে এবং তাঁরা ইতিমধ্যে লিখিত প্রতিবাদ জানিয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে, একটি জনমুখী, জবাবদিহিমূলক, দক্ষ ও নিরপেক্ষ সিভিল প্রশাসন বিনির্মাণের লক্ষ্যে এন্ট্রি পদ সহকারী কমিশনার থেকে শুরু করে সচিব পর্যন্ত পদগুলোর সমন্বয়ে, একটি মেধাভিত্তিক এবং আধুনিক প্রশাসন ব্যবস্থার উপযোগী বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। এ প্রস্তাবের সমর্থনে যৌক্তিকতাসমূহ সংক্ষেপে নিম্নে উপস্থাপন করা হলো।
> অবিভক্ত ভারত ও পাকিস্তান আমলে কেন্দ্রীয় এবং প্রাদেশিক শাসন ব্যবস্থায় বিভক্ত কাঠামোতে সিভিল প্রশাসনের উচ্চতর পদগুলোতে সকল সময়ে ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস, সিভিল সার্ভিস পাকিস্তান (সিএসপি), ইস্ট পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসের (ইপিসিএস) কর্মকর্তাবৃন্দ দায়িত্ব পালন করতেন। স্বাধীন বাংলাদেশে এক-কেন্দ্রিক শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর, পশ্চিম পাকিস্তান থেকে দেশে ফেরত আসা সিএসপি কর্মকর্তাগণ ও পূর্ব পাকিস্তানে কর্মরত ইপিসিএস কর্মকর্তাগণকে নিয়ে (সহকারী সচিব হতে সচিব পর্যন্ত ৪৮২ জন) স্বাধীন দেশের সিভিল প্রশাসনের যাত্রা শুরু হয়। উক্ত কর্মকর্তাগণ সকলেই সিভিল প্রশাসন সার্ভিসের সদস্য ছিলেন। উক্ত সিভিল প্রশাসনে অন্য সার্ভিসের কোনো পদ ছিল না। ১৯৮০ সনে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস অর্ডার এর মাধ্যমে প্রাক্তন সিএসপি, ইপিসিএস এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যানেজমেন্ট সার্ভিস (আইএমএস) কর্মকর্তাগণকে নিয়ে বিসিএস (প্রশাসন) হিসেবে সার্ভিসের নামকরণ করা হয়। ১৯৯২ সনের এক আদেশে সচিবালয় ক্যাডার-কে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে একীভূত করা হয় এবং সচিবালয় ক্যাডারের সকল পদও প্রশাসন ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত হয়। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সরকার ১১ / ০২ / ১৯৯৮ তারিখে জারিকৃত নীতিমালায় ২৫% উপসচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে অন্যায্যভাবে প্রশাসনের কর্মকর্তাগণকে বাদ দিয়ে তা অন্যান্য ক্যাডার সার্ভিসের মধ্যে আনুপাতিকভাবে বণ্টন করে কোটা পদ্ধতি চালু করে।
> প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাগণকে উক্তরূপে তাঁদের পদোন্নতিযোগ্য এক-চতুর্থাংশ পদ হতে বঞ্চিত করার পর, বিষয়টিকে সম্পূর্ণ উল্টা স্রোতে প্রবাহিত করার লক্ষ্যে প্রশাসন ক্যাডারের ৭৫% অবশিষ্ট পদকেই আদালতে চ্যালেঞ্জ করা হয়। পরিশেষে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের ফুল বেঞ্চ সিভিল আপিল নম্বর ২৯৪-৯৮ / ২০০৩ মামলায় বিস্তারিত শুনানি করে উপসচিব পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রশাসন ক্যাডার হতে ৭৫% থাকার বিধানকে বৈধ হিসেবে ঘোষণা করেন। প্রতিপক্ষ রিভিউ করলে সেটিও খারিজ হয়ে যায়। কেউ কেউ বলছেন যে, আদালত এ বিষয়ে পর্যবেক্ষণ প্রদান করেছেন, আদেশ নয়। এ বক্তব্য সঠিক নয়। মাননীয় আপিল বিভাগ রায়ের শেষাংশে এ বিষয়টিকে নির্দেশনা (ডিরেকশন) হিসেবে প্রদান করেছেন। সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদ অনুসারে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বাধ্যতামূলক কার্যকারিতা রয়েছে। বর্তমানে যে ক্যাডার বৈষম্যের কথা বলা হচ্ছে, তার কোনো ভিত্তি এবং গ্রহণযোগ্যতা নেই; যা উক্ত রায় পাঠ করলে সহজেই অনুধাবন করা যায়।
> উক্ত রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (প্রশাসন) গঠন ও ক্যাডার আদেশ ২০২৪ এর তফসিলের ৬ (১) নম্বর এন্ট্রিতে প্রশাসন ক্যাডারের পদোন্নতিযোগ্য পদ হিসেবে উপসচিব পদকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে (কপি সংযুক্ত)। মাঠ প্রশাসন থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত সুবিন্যস্ত সিভিল প্রশাসনের চেইন অব কমান্ড দুর্বল করার জন্য এর আগেও বিভিন্ন সময়ে চেষ্টা করা হয়েছে। ফলাফল রাষ্ট্রের জন্য উপকারী হয়নি। ইতিপূর্বে ২০ / ১১ / ১৯৭৯ তারিখে কোনোরূপ বিচার-বিশ্লেষণ ছাড়া দীর্ঘদিনের প্রতিষ্ঠিত প্রশাসনিক কাঠামোকে ভেঙে দিয়ে, ফিল্ড/সিভিল প্রশাসন থেকে সচিবালয়ের উপসচিব/তদূর্ধ্ব পদগুলোকে বিচ্ছিন্ন করে পৃথক সুপিরিয়র সার্ভিস পুল করা হয়। ফলশ্রুতিতে প্রশাসন-ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ায় ১৯৮৯ সনে উক্ত ব্যবস্থা বাতিল করা হয়। বিষয়টি মাননীয় আপিল বিভাগও তাঁর রায়ে উল্লেখ করেছেন। প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের মতো ছোট দেশে মন্ত্রণালয়ের জন্য স্বতন্ত্র উচ্চতর পুল তৈরি করা বাস্তবসম্মত বা প্রয়োজনীয় নয়। বরং মাঠ প্রশাসনে কাজ করে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করা সিভিল প্রশাসনের কর্মকর্তাগণকে উপসচিব/তদূর্ধ্ব পদে পদোন্নতি প্রদান করে তাঁদের দিয়ে সচিবালয় প্রশাসন পরিচালনার বিদ্যমান ব্যবস্থাকে আরও সুসংহত করতে হবে। পেশাদারি, নিরপেক্ষতা ও জবাবদিহির ক্ষেত্রে বিদ্যমান সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তা সমাধান করতে হবে। এটিই হবে প্রকৃত সংস্কার।
> মাননীয় আপিল বিভাগ সচিবালয় প্রশাসনের উচ্চতর পদসমূহে প্রশাসনের কর্মকর্তাগণের নিয়োগের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে উল্লিখিত মামলায় গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ প্রদান করেন:-
‘প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে একজন সচিব/অতিরিক্ত সচিব থাকেন। তিনি মন্ত্রণালয়ের প্রিন্সিপাল অ্যাকাউন্টস কর্মকর্তা এবং প্রধান নির্বাহী। তাহার প্রধান কাজ মাঠ পর্যায়ে সংগৃহীত তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করিয়া সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীকে যথাযথ কর্মপন্থা নির্ধারণ করতঃ সিদ্ধান্ত লইতে (পলিসি ডিসিশন) সহায়তা করা। কর্মপন্থা নির্ধারণ হইলে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ হইতে সেই সিদ্ধান্ত কার্যে পরিণত করতে তত্ত্বাবধায়ন করার দায়িত্বও সচিবের ওপর বর্তায়। এইরূপ কর্মপন্থা নির্ধারণ (পলিসি ডিসিশন) ও তাহা কার্যে পরিণত করিতে (এক্সিকিউশন) সচিবের সহিত যুগ্ম-সচিব ও উপ-সচিব সহায়ক ভূমিকা পালন করেন এবং তাহারা নির্বাহী সরকারের নির্বাহী অঙ্গ (এক্সিকিউটিভ আর্ম) হিসাবে পরিচিত। সাধারণ প্রশাসন কার্য ব্যতিরেকে মাঠ-পর্যায়ে সরকারের উপরোক্তভাবে গৃহীত বিভিন্ন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের দায়িত্ব থাকে বিভিন্ন পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হইতে বিভাগীয় কমিশনার পর্যন্ত সকল কর্মকর্তাগণের ওপর। প্রকৃতপক্ষে মাঠ পর্যায় প্রশাসন এবং নির্বাহী বিভাগের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সহিত উপ-সচিব, যুগ্ম-সচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিবগণ সেতুবন্ধের মতো কার্য করেন। এই কারণেই ব্রিটিশ আমল হইতেই সচিবালয়ের উপ-সচিব ও তদূর্ধ্ব পদে সব সময়ই প্রশাসনিক কর্মকর্তাগণ নিয়োগ ও পদোন্নতি পাইতেন। একমাত্র ব্যতিক্রম এসএসপি অর্ডারের মাধ্যমে সকল ক্যাডার হতে উপ-সচিব ও তদূর্ধ্ব পদে নিয়োগ/পদোন্নতি প্রদান করা হইয়াছিল যাহা ১৯৮৯ সনেই পরিত্যক্ত হইয়াছে। যেহেতু পিএসসির সুপারিশ পর্যায় হইতেই কর্মকর্তাগণ বিভিন্ন ক্যাডারে শ্রেণিভুক্ত হইয়া যায়, সেহেতু সচিবালয়ের প্রশাসনিক উপ-সচিব পদে প্রশাসনিক কর্মকর্তাগণ ব্যতিরেকে অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তাগণের পুনরায় নিয়োগ বা পদোন্নতি প্রাপ্ত হইবার কোনো সহজাত অধিকার নেই।’ [সিভিল আপিল নম্বর ২৯৪-৯৮ / ২০০৩ ]
> বর্তমানে ক্যাডার-বৈষম্য নিরসনের দাবির আড়ালে মূলত মেধার পরিবর্তে কোটাকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। এ দাবির অন্তর্নিহিত সারমর্ম হচ্ছে, বিসিএস পরীক্ষায় তুলনামূলকভাবে অধিক নম্বরপ্রাপ্ত প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাগণকে তাঁদের পদোন্নতিযোগ্য পদ হতে আরও একবার বঞ্চিত করে, অপেক্ষাকৃত কম নম্বর পেয়ে চাকরিতে প্রবেশ করা কর্মকর্তাগণকে তা প্রদান করা। সকলের প্রতি যথাযথ সম্মান রেখেই এ কথা উল্লেখ করতে বাধ্য হচ্ছি যে, বাস্তবতা হলো: তুলনামূলকভাবে অধিক নম্বর পেয়ে যাঁরা পররাষ্ট্র/পুলিশ/কাস্টমস/কর ক্যাডার পেয়েছেন তাঁদেরকে এ বিষয়ে ততটা সোচ্চার হতে দেখা যায় না, যতটা দেখা যায় তুলনামূলকভাবে কম নম্বর পেয়ে বা কম নম্বরের পরীক্ষা দিয়ে চাকরিতে প্রবেশ করা টেকনিক্যাল/প্রফেশনাল ক্যাডারের সদস্যগণকে। প্রফেশনাল/টেকনিক্যাল সার্ভিসগুলোর স্ট্রেনথনিং অন্য সার্ভিসের পদ কেড়ে নেওয়ার মধ্যে নয়; বরং প্রত্যেকের কাজের ধরন বিবেচনা করে প্রয়োজনে উচ্চ বেতন নির্ধারণ, স্বীয় সার্ভিসে পদোন্নতির সুযোগ বৃদ্ধিকরণসহ যথাযথ ক্যারিয়ার-পরিকল্পনা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে অধিদপ্তর/দপ্তর/সংস্থার কার্যকারিতা ও সক্ষমতা অধিকতর বৃদ্ধির বিষয় বিবেচনা করা যেতে পারে।
> বিশ্বের প্রায় সকল গণতান্ত্রিক দেশে বিভিন্ন ফরমেটে সিভিল প্রশাসন রয়েছে। অধিকাংশ দেশে মেধাবী ক্যারিয়ার ব্যুরোক্রেটগণ সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে চাকরিতে প্রবেশ করেন এবং বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে স্ব স্ব সার্ভিসের সর্বোচ্চ সোপান পর্যন্ত আরোহণ করতে পারেন। কোথাও কোথাও নিয়মিত কর্মকর্তার বাইরে কতিপয় উচ্চ পদে’ ল্যাটারাল এন্ট্রি’ বা মেয়াদি রাজনৈতিক নিয়োগ পরিলক্ষিত হয়। তবে বিশ্বের কোথাও উচ্চতর সিভিল প্রশাসনে বাংলাদেশের ন্যায় বিভিন্ন টেকনিক্যাল/প্রফেশনাল সার্ভিসের জন্য আনুপাতিকভাবে কোটা সংরক্ষণ করে অন্তর্ভুক্তির ব্যবস্থা পরিলক্ষিত হয় না। সিভিল প্রশাসনের স্বাতন্ত্র্য ও গুরুত্বকে উপেক্ষা করে অন্যান্য জেনারেল/টেকনিক্যাল/প্রফেশনাল সার্ভিসের সাথে সমান্তরালে নিয়ে এসে একত্রে ক্যাডারভুক্তকরণ করার নজিরও দেখা যায় না। মূলত এই অসামঞ্জস্যপূর্ণ সংমিশ্রণ থেকেই বহু জটিলতা এবং দ্বন্দ্বের সূত্রপাত হয়েছে। প্রশাসন ক্যাডারের সাথে তুলনা করে অবাস্তব ‘বৈষম্য’ নিরসন, ‘সমতা’র দাবি তোলার ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। সুতরাং সিভিল প্রশাসন সার্ভিসকে অন্যান্য টেকনিক্যাল/প্রফেশনাল ক্যাডারের সংমিশ্রণ থেকে আলাদা করে স্বতন্ত্র’ বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা আবশ্যক।
> এমতাবস্থায়, অন্যান্য টেকনিক্যাল/প্রফেশনাল/বিষয়ভিত্তিক ক্যাডার সার্ভিস থেকে বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারকে পৃথক করে এন্ট্রি পদ সহকারী কমিশনার/সহকারী সচিব থেকে শুরু করে সচিব পর্যন্ত পদসমূহ (নন-ক্যাডার পদ ব্যতীত) সমন্বয়ে একটি জনমুখী, দক্ষ, নিরপেক্ষ, যুগোপযোগী সিভিল প্রশাসন হিসেবে’ বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস’ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। অন্যায্যভাবে বাদ দেওয়া উপসচিবের ২৫% পদসমূহ পুনরায় উক্ত সার্ভিসে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
এ দিকে দুপুর পৌনে ১টায় নিজ দপ্তরে আসেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান। সচিবের দপ্তরে অবস্থান নেওয়া কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিজের মিনি কনফারেন্স রুমে বৈঠকে বসেছেন তিনি। সচিবের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেওয়া কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বৈঠক শেষে তাঁরা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলবেন।
গত ১৭ ডিসেম্বর সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী জানান, উপসচিব পদে পদোন্নতিতে প্রশাসন ক্যাডারের ৫০ শতাংশ এবং অন্য সব ক্যাডার থেকে ৫০ শতাংশ কোটা রাখার সুপারিশ করবেন তাঁরা। বর্তমান বিধিমালা অনুযায়ী, উপসচিব পদে প্রশাসন ক্যাডারের ৭৫ শতাংশ এবং অন্য সব ক্যাডারের ২৫ শতাংশ কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেওয়া হয়।
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

উপসচিব পদে পদোন্নতিতে প্রশাসন ক্যাডারের কোটা কমাতে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের নেওয়া সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এই ক্যাডারের কর্মকর্তারা দল বেঁধে সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে অবস্থান নিয়েছেন। বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আনোয়ার উল্লার নেতৃত্বে কর্মকর্তারা তাঁদের দাবি-দাওয়া জনপ্রশাসন সচিবের কাছে তুলে ধরবেন। আজ রোববার সকাল সাড়ে ১১টার পর থেকে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা সচিবালয়ের তিন নম্বর ভবনের সামনে জড়ো হন।
আনুষ্ঠানিকভাবে দিতে চলা দাবি-দাওয়াগুলো হলো—
দাবিগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাগণের উপসচিব পদোন্নতিযোগ্য পদ থেকে ১৯৯৮ সালে অন্যায্যভাবে বাদ দেওয়া ২৫ শতাংশ পদসমূহ পুনরায় অন্তর্ভুক্ত করে এন্ট্রি পদ থেকে শুরু করে সচিব পর্যন্ত পদসমূহ সমন্বয়ে মেধাভিত্তিক ‘বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস’ প্রতিষ্ঠা।
> জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন কর্তৃক গত ১৭ / ১২ / ২০২৪ তারিখে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দের সাথে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় মাননীয় কমিশন প্রধান সরকারের উপসচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের জন্য বিদ্যমান ৭৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫০ শতাংশ করার বিষয়ে জনসমক্ষে বক্তব্য প্রদান করেন। উক্ত বক্তব্যে মাঠ প্রশাসনসহ সকল স্তরে কর্মরত প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে এবং তাঁরা ইতিমধ্যে লিখিত প্রতিবাদ জানিয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে, একটি জনমুখী, জবাবদিহিমূলক, দক্ষ ও নিরপেক্ষ সিভিল প্রশাসন বিনির্মাণের লক্ষ্যে এন্ট্রি পদ সহকারী কমিশনার থেকে শুরু করে সচিব পর্যন্ত পদগুলোর সমন্বয়ে, একটি মেধাভিত্তিক এবং আধুনিক প্রশাসন ব্যবস্থার উপযোগী বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। এ প্রস্তাবের সমর্থনে যৌক্তিকতাসমূহ সংক্ষেপে নিম্নে উপস্থাপন করা হলো।
> অবিভক্ত ভারত ও পাকিস্তান আমলে কেন্দ্রীয় এবং প্রাদেশিক শাসন ব্যবস্থায় বিভক্ত কাঠামোতে সিভিল প্রশাসনের উচ্চতর পদগুলোতে সকল সময়ে ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস, সিভিল সার্ভিস পাকিস্তান (সিএসপি), ইস্ট পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসের (ইপিসিএস) কর্মকর্তাবৃন্দ দায়িত্ব পালন করতেন। স্বাধীন বাংলাদেশে এক-কেন্দ্রিক শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর, পশ্চিম পাকিস্তান থেকে দেশে ফেরত আসা সিএসপি কর্মকর্তাগণ ও পূর্ব পাকিস্তানে কর্মরত ইপিসিএস কর্মকর্তাগণকে নিয়ে (সহকারী সচিব হতে সচিব পর্যন্ত ৪৮২ জন) স্বাধীন দেশের সিভিল প্রশাসনের যাত্রা শুরু হয়। উক্ত কর্মকর্তাগণ সকলেই সিভিল প্রশাসন সার্ভিসের সদস্য ছিলেন। উক্ত সিভিল প্রশাসনে অন্য সার্ভিসের কোনো পদ ছিল না। ১৯৮০ সনে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস অর্ডার এর মাধ্যমে প্রাক্তন সিএসপি, ইপিসিএস এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যানেজমেন্ট সার্ভিস (আইএমএস) কর্মকর্তাগণকে নিয়ে বিসিএস (প্রশাসন) হিসেবে সার্ভিসের নামকরণ করা হয়। ১৯৯২ সনের এক আদেশে সচিবালয় ক্যাডার-কে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে একীভূত করা হয় এবং সচিবালয় ক্যাডারের সকল পদও প্রশাসন ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত হয়। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সরকার ১১ / ০২ / ১৯৯৮ তারিখে জারিকৃত নীতিমালায় ২৫% উপসচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে অন্যায্যভাবে প্রশাসনের কর্মকর্তাগণকে বাদ দিয়ে তা অন্যান্য ক্যাডার সার্ভিসের মধ্যে আনুপাতিকভাবে বণ্টন করে কোটা পদ্ধতি চালু করে।
> প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাগণকে উক্তরূপে তাঁদের পদোন্নতিযোগ্য এক-চতুর্থাংশ পদ হতে বঞ্চিত করার পর, বিষয়টিকে সম্পূর্ণ উল্টা স্রোতে প্রবাহিত করার লক্ষ্যে প্রশাসন ক্যাডারের ৭৫% অবশিষ্ট পদকেই আদালতে চ্যালেঞ্জ করা হয়। পরিশেষে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের ফুল বেঞ্চ সিভিল আপিল নম্বর ২৯৪-৯৮ / ২০০৩ মামলায় বিস্তারিত শুনানি করে উপসচিব পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রশাসন ক্যাডার হতে ৭৫% থাকার বিধানকে বৈধ হিসেবে ঘোষণা করেন। প্রতিপক্ষ রিভিউ করলে সেটিও খারিজ হয়ে যায়। কেউ কেউ বলছেন যে, আদালত এ বিষয়ে পর্যবেক্ষণ প্রদান করেছেন, আদেশ নয়। এ বক্তব্য সঠিক নয়। মাননীয় আপিল বিভাগ রায়ের শেষাংশে এ বিষয়টিকে নির্দেশনা (ডিরেকশন) হিসেবে প্রদান করেছেন। সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদ অনুসারে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বাধ্যতামূলক কার্যকারিতা রয়েছে। বর্তমানে যে ক্যাডার বৈষম্যের কথা বলা হচ্ছে, তার কোনো ভিত্তি এবং গ্রহণযোগ্যতা নেই; যা উক্ত রায় পাঠ করলে সহজেই অনুধাবন করা যায়।
> উক্ত রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (প্রশাসন) গঠন ও ক্যাডার আদেশ ২০২৪ এর তফসিলের ৬ (১) নম্বর এন্ট্রিতে প্রশাসন ক্যাডারের পদোন্নতিযোগ্য পদ হিসেবে উপসচিব পদকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে (কপি সংযুক্ত)। মাঠ প্রশাসন থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত সুবিন্যস্ত সিভিল প্রশাসনের চেইন অব কমান্ড দুর্বল করার জন্য এর আগেও বিভিন্ন সময়ে চেষ্টা করা হয়েছে। ফলাফল রাষ্ট্রের জন্য উপকারী হয়নি। ইতিপূর্বে ২০ / ১১ / ১৯৭৯ তারিখে কোনোরূপ বিচার-বিশ্লেষণ ছাড়া দীর্ঘদিনের প্রতিষ্ঠিত প্রশাসনিক কাঠামোকে ভেঙে দিয়ে, ফিল্ড/সিভিল প্রশাসন থেকে সচিবালয়ের উপসচিব/তদূর্ধ্ব পদগুলোকে বিচ্ছিন্ন করে পৃথক সুপিরিয়র সার্ভিস পুল করা হয়। ফলশ্রুতিতে প্রশাসন-ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ায় ১৯৮৯ সনে উক্ত ব্যবস্থা বাতিল করা হয়। বিষয়টি মাননীয় আপিল বিভাগও তাঁর রায়ে উল্লেখ করেছেন। প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের মতো ছোট দেশে মন্ত্রণালয়ের জন্য স্বতন্ত্র উচ্চতর পুল তৈরি করা বাস্তবসম্মত বা প্রয়োজনীয় নয়। বরং মাঠ প্রশাসনে কাজ করে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করা সিভিল প্রশাসনের কর্মকর্তাগণকে উপসচিব/তদূর্ধ্ব পদে পদোন্নতি প্রদান করে তাঁদের দিয়ে সচিবালয় প্রশাসন পরিচালনার বিদ্যমান ব্যবস্থাকে আরও সুসংহত করতে হবে। পেশাদারি, নিরপেক্ষতা ও জবাবদিহির ক্ষেত্রে বিদ্যমান সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তা সমাধান করতে হবে। এটিই হবে প্রকৃত সংস্কার।
> মাননীয় আপিল বিভাগ সচিবালয় প্রশাসনের উচ্চতর পদসমূহে প্রশাসনের কর্মকর্তাগণের নিয়োগের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে উল্লিখিত মামলায় গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ প্রদান করেন:-
‘প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে একজন সচিব/অতিরিক্ত সচিব থাকেন। তিনি মন্ত্রণালয়ের প্রিন্সিপাল অ্যাকাউন্টস কর্মকর্তা এবং প্রধান নির্বাহী। তাহার প্রধান কাজ মাঠ পর্যায়ে সংগৃহীত তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করিয়া সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীকে যথাযথ কর্মপন্থা নির্ধারণ করতঃ সিদ্ধান্ত লইতে (পলিসি ডিসিশন) সহায়তা করা। কর্মপন্থা নির্ধারণ হইলে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ হইতে সেই সিদ্ধান্ত কার্যে পরিণত করতে তত্ত্বাবধায়ন করার দায়িত্বও সচিবের ওপর বর্তায়। এইরূপ কর্মপন্থা নির্ধারণ (পলিসি ডিসিশন) ও তাহা কার্যে পরিণত করিতে (এক্সিকিউশন) সচিবের সহিত যুগ্ম-সচিব ও উপ-সচিব সহায়ক ভূমিকা পালন করেন এবং তাহারা নির্বাহী সরকারের নির্বাহী অঙ্গ (এক্সিকিউটিভ আর্ম) হিসাবে পরিচিত। সাধারণ প্রশাসন কার্য ব্যতিরেকে মাঠ-পর্যায়ে সরকারের উপরোক্তভাবে গৃহীত বিভিন্ন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের দায়িত্ব থাকে বিভিন্ন পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হইতে বিভাগীয় কমিশনার পর্যন্ত সকল কর্মকর্তাগণের ওপর। প্রকৃতপক্ষে মাঠ পর্যায় প্রশাসন এবং নির্বাহী বিভাগের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সহিত উপ-সচিব, যুগ্ম-সচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিবগণ সেতুবন্ধের মতো কার্য করেন। এই কারণেই ব্রিটিশ আমল হইতেই সচিবালয়ের উপ-সচিব ও তদূর্ধ্ব পদে সব সময়ই প্রশাসনিক কর্মকর্তাগণ নিয়োগ ও পদোন্নতি পাইতেন। একমাত্র ব্যতিক্রম এসএসপি অর্ডারের মাধ্যমে সকল ক্যাডার হতে উপ-সচিব ও তদূর্ধ্ব পদে নিয়োগ/পদোন্নতি প্রদান করা হইয়াছিল যাহা ১৯৮৯ সনেই পরিত্যক্ত হইয়াছে। যেহেতু পিএসসির সুপারিশ পর্যায় হইতেই কর্মকর্তাগণ বিভিন্ন ক্যাডারে শ্রেণিভুক্ত হইয়া যায়, সেহেতু সচিবালয়ের প্রশাসনিক উপ-সচিব পদে প্রশাসনিক কর্মকর্তাগণ ব্যতিরেকে অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তাগণের পুনরায় নিয়োগ বা পদোন্নতি প্রাপ্ত হইবার কোনো সহজাত অধিকার নেই।’ [সিভিল আপিল নম্বর ২৯৪-৯৮ / ২০০৩ ]
> বর্তমানে ক্যাডার-বৈষম্য নিরসনের দাবির আড়ালে মূলত মেধার পরিবর্তে কোটাকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। এ দাবির অন্তর্নিহিত সারমর্ম হচ্ছে, বিসিএস পরীক্ষায় তুলনামূলকভাবে অধিক নম্বরপ্রাপ্ত প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাগণকে তাঁদের পদোন্নতিযোগ্য পদ হতে আরও একবার বঞ্চিত করে, অপেক্ষাকৃত কম নম্বর পেয়ে চাকরিতে প্রবেশ করা কর্মকর্তাগণকে তা প্রদান করা। সকলের প্রতি যথাযথ সম্মান রেখেই এ কথা উল্লেখ করতে বাধ্য হচ্ছি যে, বাস্তবতা হলো: তুলনামূলকভাবে অধিক নম্বর পেয়ে যাঁরা পররাষ্ট্র/পুলিশ/কাস্টমস/কর ক্যাডার পেয়েছেন তাঁদেরকে এ বিষয়ে ততটা সোচ্চার হতে দেখা যায় না, যতটা দেখা যায় তুলনামূলকভাবে কম নম্বর পেয়ে বা কম নম্বরের পরীক্ষা দিয়ে চাকরিতে প্রবেশ করা টেকনিক্যাল/প্রফেশনাল ক্যাডারের সদস্যগণকে। প্রফেশনাল/টেকনিক্যাল সার্ভিসগুলোর স্ট্রেনথনিং অন্য সার্ভিসের পদ কেড়ে নেওয়ার মধ্যে নয়; বরং প্রত্যেকের কাজের ধরন বিবেচনা করে প্রয়োজনে উচ্চ বেতন নির্ধারণ, স্বীয় সার্ভিসে পদোন্নতির সুযোগ বৃদ্ধিকরণসহ যথাযথ ক্যারিয়ার-পরিকল্পনা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে অধিদপ্তর/দপ্তর/সংস্থার কার্যকারিতা ও সক্ষমতা অধিকতর বৃদ্ধির বিষয় বিবেচনা করা যেতে পারে।
> বিশ্বের প্রায় সকল গণতান্ত্রিক দেশে বিভিন্ন ফরমেটে সিভিল প্রশাসন রয়েছে। অধিকাংশ দেশে মেধাবী ক্যারিয়ার ব্যুরোক্রেটগণ সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে চাকরিতে প্রবেশ করেন এবং বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে স্ব স্ব সার্ভিসের সর্বোচ্চ সোপান পর্যন্ত আরোহণ করতে পারেন। কোথাও কোথাও নিয়মিত কর্মকর্তার বাইরে কতিপয় উচ্চ পদে’ ল্যাটারাল এন্ট্রি’ বা মেয়াদি রাজনৈতিক নিয়োগ পরিলক্ষিত হয়। তবে বিশ্বের কোথাও উচ্চতর সিভিল প্রশাসনে বাংলাদেশের ন্যায় বিভিন্ন টেকনিক্যাল/প্রফেশনাল সার্ভিসের জন্য আনুপাতিকভাবে কোটা সংরক্ষণ করে অন্তর্ভুক্তির ব্যবস্থা পরিলক্ষিত হয় না। সিভিল প্রশাসনের স্বাতন্ত্র্য ও গুরুত্বকে উপেক্ষা করে অন্যান্য জেনারেল/টেকনিক্যাল/প্রফেশনাল সার্ভিসের সাথে সমান্তরালে নিয়ে এসে একত্রে ক্যাডারভুক্তকরণ করার নজিরও দেখা যায় না। মূলত এই অসামঞ্জস্যপূর্ণ সংমিশ্রণ থেকেই বহু জটিলতা এবং দ্বন্দ্বের সূত্রপাত হয়েছে। প্রশাসন ক্যাডারের সাথে তুলনা করে অবাস্তব ‘বৈষম্য’ নিরসন, ‘সমতা’র দাবি তোলার ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। সুতরাং সিভিল প্রশাসন সার্ভিসকে অন্যান্য টেকনিক্যাল/প্রফেশনাল ক্যাডারের সংমিশ্রণ থেকে আলাদা করে স্বতন্ত্র’ বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা আবশ্যক।
> এমতাবস্থায়, অন্যান্য টেকনিক্যাল/প্রফেশনাল/বিষয়ভিত্তিক ক্যাডার সার্ভিস থেকে বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারকে পৃথক করে এন্ট্রি পদ সহকারী কমিশনার/সহকারী সচিব থেকে শুরু করে সচিব পর্যন্ত পদসমূহ (নন-ক্যাডার পদ ব্যতীত) সমন্বয়ে একটি জনমুখী, দক্ষ, নিরপেক্ষ, যুগোপযোগী সিভিল প্রশাসন হিসেবে’ বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস’ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। অন্যায্যভাবে বাদ দেওয়া উপসচিবের ২৫% পদসমূহ পুনরায় উক্ত সার্ভিসে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
এ দিকে দুপুর পৌনে ১টায় নিজ দপ্তরে আসেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান। সচিবের দপ্তরে অবস্থান নেওয়া কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিজের মিনি কনফারেন্স রুমে বৈঠকে বসেছেন তিনি। সচিবের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেওয়া কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বৈঠক শেষে তাঁরা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলবেন।
গত ১৭ ডিসেম্বর সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী জানান, উপসচিব পদে পদোন্নতিতে প্রশাসন ক্যাডারের ৫০ শতাংশ এবং অন্য সব ক্যাডার থেকে ৫০ শতাংশ কোটা রাখার সুপারিশ করবেন তাঁরা। বর্তমান বিধিমালা অনুযায়ী, উপসচিব পদে প্রশাসন ক্যাডারের ৭৫ শতাংশ এবং অন্য সব ক্যাডারের ২৫ শতাংশ কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেওয়া হয়।

উপসচিব পদে পদোন্নতিতে প্রশাসন ক্যাডারের কোটা কমাতে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের নেওয়া সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এই ক্যাডারের কর্মকর্তারা দল বেঁধে সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে অবস্থান নিয়েছেন। বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আনোয়ার উল্লার নেতৃত্বে কর্মকর্তারা তাঁদের দাবি-দাওয়া জনপ্রশাসন সচিবের কাছে তুলে ধরবেন। আজ রোববার সকাল সাড়ে ১১টার পর থেকে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা সচিবালয়ের তিন নম্বর ভবনের সামনে জড়ো হন।
আনুষ্ঠানিকভাবে দিতে চলা দাবি-দাওয়াগুলো হলো—
দাবিগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাগণের উপসচিব পদোন্নতিযোগ্য পদ থেকে ১৯৯৮ সালে অন্যায্যভাবে বাদ দেওয়া ২৫ শতাংশ পদসমূহ পুনরায় অন্তর্ভুক্ত করে এন্ট্রি পদ থেকে শুরু করে সচিব পর্যন্ত পদসমূহ সমন্বয়ে মেধাভিত্তিক ‘বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস’ প্রতিষ্ঠা।
> জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন কর্তৃক গত ১৭ / ১২ / ২০২৪ তারিখে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দের সাথে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় মাননীয় কমিশন প্রধান সরকারের উপসচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের জন্য বিদ্যমান ৭৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫০ শতাংশ করার বিষয়ে জনসমক্ষে বক্তব্য প্রদান করেন। উক্ত বক্তব্যে মাঠ প্রশাসনসহ সকল স্তরে কর্মরত প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে এবং তাঁরা ইতিমধ্যে লিখিত প্রতিবাদ জানিয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে, একটি জনমুখী, জবাবদিহিমূলক, দক্ষ ও নিরপেক্ষ সিভিল প্রশাসন বিনির্মাণের লক্ষ্যে এন্ট্রি পদ সহকারী কমিশনার থেকে শুরু করে সচিব পর্যন্ত পদগুলোর সমন্বয়ে, একটি মেধাভিত্তিক এবং আধুনিক প্রশাসন ব্যবস্থার উপযোগী বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। এ প্রস্তাবের সমর্থনে যৌক্তিকতাসমূহ সংক্ষেপে নিম্নে উপস্থাপন করা হলো।
> অবিভক্ত ভারত ও পাকিস্তান আমলে কেন্দ্রীয় এবং প্রাদেশিক শাসন ব্যবস্থায় বিভক্ত কাঠামোতে সিভিল প্রশাসনের উচ্চতর পদগুলোতে সকল সময়ে ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস, সিভিল সার্ভিস পাকিস্তান (সিএসপি), ইস্ট পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসের (ইপিসিএস) কর্মকর্তাবৃন্দ দায়িত্ব পালন করতেন। স্বাধীন বাংলাদেশে এক-কেন্দ্রিক শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর, পশ্চিম পাকিস্তান থেকে দেশে ফেরত আসা সিএসপি কর্মকর্তাগণ ও পূর্ব পাকিস্তানে কর্মরত ইপিসিএস কর্মকর্তাগণকে নিয়ে (সহকারী সচিব হতে সচিব পর্যন্ত ৪৮২ জন) স্বাধীন দেশের সিভিল প্রশাসনের যাত্রা শুরু হয়। উক্ত কর্মকর্তাগণ সকলেই সিভিল প্রশাসন সার্ভিসের সদস্য ছিলেন। উক্ত সিভিল প্রশাসনে অন্য সার্ভিসের কোনো পদ ছিল না। ১৯৮০ সনে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস অর্ডার এর মাধ্যমে প্রাক্তন সিএসপি, ইপিসিএস এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যানেজমেন্ট সার্ভিস (আইএমএস) কর্মকর্তাগণকে নিয়ে বিসিএস (প্রশাসন) হিসেবে সার্ভিসের নামকরণ করা হয়। ১৯৯২ সনের এক আদেশে সচিবালয় ক্যাডার-কে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে একীভূত করা হয় এবং সচিবালয় ক্যাডারের সকল পদও প্রশাসন ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত হয়। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সরকার ১১ / ০২ / ১৯৯৮ তারিখে জারিকৃত নীতিমালায় ২৫% উপসচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে অন্যায্যভাবে প্রশাসনের কর্মকর্তাগণকে বাদ দিয়ে তা অন্যান্য ক্যাডার সার্ভিসের মধ্যে আনুপাতিকভাবে বণ্টন করে কোটা পদ্ধতি চালু করে।
> প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাগণকে উক্তরূপে তাঁদের পদোন্নতিযোগ্য এক-চতুর্থাংশ পদ হতে বঞ্চিত করার পর, বিষয়টিকে সম্পূর্ণ উল্টা স্রোতে প্রবাহিত করার লক্ষ্যে প্রশাসন ক্যাডারের ৭৫% অবশিষ্ট পদকেই আদালতে চ্যালেঞ্জ করা হয়। পরিশেষে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের ফুল বেঞ্চ সিভিল আপিল নম্বর ২৯৪-৯৮ / ২০০৩ মামলায় বিস্তারিত শুনানি করে উপসচিব পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রশাসন ক্যাডার হতে ৭৫% থাকার বিধানকে বৈধ হিসেবে ঘোষণা করেন। প্রতিপক্ষ রিভিউ করলে সেটিও খারিজ হয়ে যায়। কেউ কেউ বলছেন যে, আদালত এ বিষয়ে পর্যবেক্ষণ প্রদান করেছেন, আদেশ নয়। এ বক্তব্য সঠিক নয়। মাননীয় আপিল বিভাগ রায়ের শেষাংশে এ বিষয়টিকে নির্দেশনা (ডিরেকশন) হিসেবে প্রদান করেছেন। সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদ অনুসারে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বাধ্যতামূলক কার্যকারিতা রয়েছে। বর্তমানে যে ক্যাডার বৈষম্যের কথা বলা হচ্ছে, তার কোনো ভিত্তি এবং গ্রহণযোগ্যতা নেই; যা উক্ত রায় পাঠ করলে সহজেই অনুধাবন করা যায়।
> উক্ত রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (প্রশাসন) গঠন ও ক্যাডার আদেশ ২০২৪ এর তফসিলের ৬ (১) নম্বর এন্ট্রিতে প্রশাসন ক্যাডারের পদোন্নতিযোগ্য পদ হিসেবে উপসচিব পদকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে (কপি সংযুক্ত)। মাঠ প্রশাসন থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত সুবিন্যস্ত সিভিল প্রশাসনের চেইন অব কমান্ড দুর্বল করার জন্য এর আগেও বিভিন্ন সময়ে চেষ্টা করা হয়েছে। ফলাফল রাষ্ট্রের জন্য উপকারী হয়নি। ইতিপূর্বে ২০ / ১১ / ১৯৭৯ তারিখে কোনোরূপ বিচার-বিশ্লেষণ ছাড়া দীর্ঘদিনের প্রতিষ্ঠিত প্রশাসনিক কাঠামোকে ভেঙে দিয়ে, ফিল্ড/সিভিল প্রশাসন থেকে সচিবালয়ের উপসচিব/তদূর্ধ্ব পদগুলোকে বিচ্ছিন্ন করে পৃথক সুপিরিয়র সার্ভিস পুল করা হয়। ফলশ্রুতিতে প্রশাসন-ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ায় ১৯৮৯ সনে উক্ত ব্যবস্থা বাতিল করা হয়। বিষয়টি মাননীয় আপিল বিভাগও তাঁর রায়ে উল্লেখ করেছেন। প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের মতো ছোট দেশে মন্ত্রণালয়ের জন্য স্বতন্ত্র উচ্চতর পুল তৈরি করা বাস্তবসম্মত বা প্রয়োজনীয় নয়। বরং মাঠ প্রশাসনে কাজ করে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করা সিভিল প্রশাসনের কর্মকর্তাগণকে উপসচিব/তদূর্ধ্ব পদে পদোন্নতি প্রদান করে তাঁদের দিয়ে সচিবালয় প্রশাসন পরিচালনার বিদ্যমান ব্যবস্থাকে আরও সুসংহত করতে হবে। পেশাদারি, নিরপেক্ষতা ও জবাবদিহির ক্ষেত্রে বিদ্যমান সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তা সমাধান করতে হবে। এটিই হবে প্রকৃত সংস্কার।
> মাননীয় আপিল বিভাগ সচিবালয় প্রশাসনের উচ্চতর পদসমূহে প্রশাসনের কর্মকর্তাগণের নিয়োগের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে উল্লিখিত মামলায় গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ প্রদান করেন:-
‘প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে একজন সচিব/অতিরিক্ত সচিব থাকেন। তিনি মন্ত্রণালয়ের প্রিন্সিপাল অ্যাকাউন্টস কর্মকর্তা এবং প্রধান নির্বাহী। তাহার প্রধান কাজ মাঠ পর্যায়ে সংগৃহীত তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করিয়া সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীকে যথাযথ কর্মপন্থা নির্ধারণ করতঃ সিদ্ধান্ত লইতে (পলিসি ডিসিশন) সহায়তা করা। কর্মপন্থা নির্ধারণ হইলে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ হইতে সেই সিদ্ধান্ত কার্যে পরিণত করতে তত্ত্বাবধায়ন করার দায়িত্বও সচিবের ওপর বর্তায়। এইরূপ কর্মপন্থা নির্ধারণ (পলিসি ডিসিশন) ও তাহা কার্যে পরিণত করিতে (এক্সিকিউশন) সচিবের সহিত যুগ্ম-সচিব ও উপ-সচিব সহায়ক ভূমিকা পালন করেন এবং তাহারা নির্বাহী সরকারের নির্বাহী অঙ্গ (এক্সিকিউটিভ আর্ম) হিসাবে পরিচিত। সাধারণ প্রশাসন কার্য ব্যতিরেকে মাঠ-পর্যায়ে সরকারের উপরোক্তভাবে গৃহীত বিভিন্ন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের দায়িত্ব থাকে বিভিন্ন পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হইতে বিভাগীয় কমিশনার পর্যন্ত সকল কর্মকর্তাগণের ওপর। প্রকৃতপক্ষে মাঠ পর্যায় প্রশাসন এবং নির্বাহী বিভাগের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সহিত উপ-সচিব, যুগ্ম-সচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিবগণ সেতুবন্ধের মতো কার্য করেন। এই কারণেই ব্রিটিশ আমল হইতেই সচিবালয়ের উপ-সচিব ও তদূর্ধ্ব পদে সব সময়ই প্রশাসনিক কর্মকর্তাগণ নিয়োগ ও পদোন্নতি পাইতেন। একমাত্র ব্যতিক্রম এসএসপি অর্ডারের মাধ্যমে সকল ক্যাডার হতে উপ-সচিব ও তদূর্ধ্ব পদে নিয়োগ/পদোন্নতি প্রদান করা হইয়াছিল যাহা ১৯৮৯ সনেই পরিত্যক্ত হইয়াছে। যেহেতু পিএসসির সুপারিশ পর্যায় হইতেই কর্মকর্তাগণ বিভিন্ন ক্যাডারে শ্রেণিভুক্ত হইয়া যায়, সেহেতু সচিবালয়ের প্রশাসনিক উপ-সচিব পদে প্রশাসনিক কর্মকর্তাগণ ব্যতিরেকে অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তাগণের পুনরায় নিয়োগ বা পদোন্নতি প্রাপ্ত হইবার কোনো সহজাত অধিকার নেই।’ [সিভিল আপিল নম্বর ২৯৪-৯৮ / ২০০৩ ]
> বর্তমানে ক্যাডার-বৈষম্য নিরসনের দাবির আড়ালে মূলত মেধার পরিবর্তে কোটাকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। এ দাবির অন্তর্নিহিত সারমর্ম হচ্ছে, বিসিএস পরীক্ষায় তুলনামূলকভাবে অধিক নম্বরপ্রাপ্ত প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাগণকে তাঁদের পদোন্নতিযোগ্য পদ হতে আরও একবার বঞ্চিত করে, অপেক্ষাকৃত কম নম্বর পেয়ে চাকরিতে প্রবেশ করা কর্মকর্তাগণকে তা প্রদান করা। সকলের প্রতি যথাযথ সম্মান রেখেই এ কথা উল্লেখ করতে বাধ্য হচ্ছি যে, বাস্তবতা হলো: তুলনামূলকভাবে অধিক নম্বর পেয়ে যাঁরা পররাষ্ট্র/পুলিশ/কাস্টমস/কর ক্যাডার পেয়েছেন তাঁদেরকে এ বিষয়ে ততটা সোচ্চার হতে দেখা যায় না, যতটা দেখা যায় তুলনামূলকভাবে কম নম্বর পেয়ে বা কম নম্বরের পরীক্ষা দিয়ে চাকরিতে প্রবেশ করা টেকনিক্যাল/প্রফেশনাল ক্যাডারের সদস্যগণকে। প্রফেশনাল/টেকনিক্যাল সার্ভিসগুলোর স্ট্রেনথনিং অন্য সার্ভিসের পদ কেড়ে নেওয়ার মধ্যে নয়; বরং প্রত্যেকের কাজের ধরন বিবেচনা করে প্রয়োজনে উচ্চ বেতন নির্ধারণ, স্বীয় সার্ভিসে পদোন্নতির সুযোগ বৃদ্ধিকরণসহ যথাযথ ক্যারিয়ার-পরিকল্পনা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে অধিদপ্তর/দপ্তর/সংস্থার কার্যকারিতা ও সক্ষমতা অধিকতর বৃদ্ধির বিষয় বিবেচনা করা যেতে পারে।
> বিশ্বের প্রায় সকল গণতান্ত্রিক দেশে বিভিন্ন ফরমেটে সিভিল প্রশাসন রয়েছে। অধিকাংশ দেশে মেধাবী ক্যারিয়ার ব্যুরোক্রেটগণ সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে চাকরিতে প্রবেশ করেন এবং বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে স্ব স্ব সার্ভিসের সর্বোচ্চ সোপান পর্যন্ত আরোহণ করতে পারেন। কোথাও কোথাও নিয়মিত কর্মকর্তার বাইরে কতিপয় উচ্চ পদে’ ল্যাটারাল এন্ট্রি’ বা মেয়াদি রাজনৈতিক নিয়োগ পরিলক্ষিত হয়। তবে বিশ্বের কোথাও উচ্চতর সিভিল প্রশাসনে বাংলাদেশের ন্যায় বিভিন্ন টেকনিক্যাল/প্রফেশনাল সার্ভিসের জন্য আনুপাতিকভাবে কোটা সংরক্ষণ করে অন্তর্ভুক্তির ব্যবস্থা পরিলক্ষিত হয় না। সিভিল প্রশাসনের স্বাতন্ত্র্য ও গুরুত্বকে উপেক্ষা করে অন্যান্য জেনারেল/টেকনিক্যাল/প্রফেশনাল সার্ভিসের সাথে সমান্তরালে নিয়ে এসে একত্রে ক্যাডারভুক্তকরণ করার নজিরও দেখা যায় না। মূলত এই অসামঞ্জস্যপূর্ণ সংমিশ্রণ থেকেই বহু জটিলতা এবং দ্বন্দ্বের সূত্রপাত হয়েছে। প্রশাসন ক্যাডারের সাথে তুলনা করে অবাস্তব ‘বৈষম্য’ নিরসন, ‘সমতা’র দাবি তোলার ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। সুতরাং সিভিল প্রশাসন সার্ভিসকে অন্যান্য টেকনিক্যাল/প্রফেশনাল ক্যাডারের সংমিশ্রণ থেকে আলাদা করে স্বতন্ত্র’ বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা আবশ্যক।
> এমতাবস্থায়, অন্যান্য টেকনিক্যাল/প্রফেশনাল/বিষয়ভিত্তিক ক্যাডার সার্ভিস থেকে বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারকে পৃথক করে এন্ট্রি পদ সহকারী কমিশনার/সহকারী সচিব থেকে শুরু করে সচিব পর্যন্ত পদসমূহ (নন-ক্যাডার পদ ব্যতীত) সমন্বয়ে একটি জনমুখী, দক্ষ, নিরপেক্ষ, যুগোপযোগী সিভিল প্রশাসন হিসেবে’ বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস’ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। অন্যায্যভাবে বাদ দেওয়া উপসচিবের ২৫% পদসমূহ পুনরায় উক্ত সার্ভিসে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
এ দিকে দুপুর পৌনে ১টায় নিজ দপ্তরে আসেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান। সচিবের দপ্তরে অবস্থান নেওয়া কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিজের মিনি কনফারেন্স রুমে বৈঠকে বসেছেন তিনি। সচিবের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেওয়া কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বৈঠক শেষে তাঁরা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলবেন।
গত ১৭ ডিসেম্বর সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী জানান, উপসচিব পদে পদোন্নতিতে প্রশাসন ক্যাডারের ৫০ শতাংশ এবং অন্য সব ক্যাডার থেকে ৫০ শতাংশ কোটা রাখার সুপারিশ করবেন তাঁরা। বর্তমান বিধিমালা অনুযায়ী, উপসচিব পদে প্রশাসন ক্যাডারের ৭৫ শতাংশ এবং অন্য সব ক্যাডারের ২৫ শতাংশ কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেওয়া হয়।

আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার পরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশনের সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে এই সুপারিশ হস্তান্তর করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার
৯ মিনিট আগে
আসন্ন জাতীয় ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা সবচেয়ে বেশি নিয়োজিত থাকবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
১ ঘণ্টা আগে
চিঠিতে বলা হয়, গত ২৫ অক্টোবর (শনিবার) রাত ১১টা ১০ মিনিটের দিকে কিছু দুষ্কৃতকারী নির্বাচন ভবনের সামনের ভাস্কর্যের সামনে ‘ককটেল’ বিস্ফোরণ ঘটায়। এ ঘটনায় ভবনটির নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন।
১ ঘণ্টা আগে
সরকার থেকে সরকার (জিটুজি) পদ্ধতিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানির ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অনিয়ম, অতিরিক্ত মূল্য বা বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকের প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই প্রক্রিয়া নিয়ে ‘বিভ্রান্তিকর’ তথ্য উপস্থাপিত হয়েছে উল্লেখ করে আজ মঙ্গলবার...
৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে করা সুপারিশ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার পরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশনের সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে এই সুপারিশ হস্তান্তর করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (জাতীয় ঐকমত্য) মনির হায়দার।
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ জমা দেওয়ার পরে বেলা ২টার দিকে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলন করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
সেখানে আলী রীয়াজ বলেন, ‘সুপারিশের তিনটি ভাগ আছে। অধ্যাদেশ ও নির্বাহী আদেশের বাস্তবায়ন দ্রুততার সঙ্গে করা সম্ভব। সংবিধান সংশ্লিষ্ট প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের জন্য সরকারকে দুটো বিকল্প প্রস্তাব আমরা দিয়েছি। প্রস্তাবগুলো হচ্ছে- সরকার যেন অবিলম্বে একটি আদেশ জারি করে। এ আদেশের বিষয় হবে জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ। আদেশের অধীনে একটি গণভোট হবে।’
তিনি বলেন, আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ একই সঙ্গে সংবিধান সংস্কার পরিষদের দায়িত্ব পালন করবে। তারা ২৭০ দিন এমন দায়িত্ব পালন করবে।

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে করা সুপারিশ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার পরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশনের সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে এই সুপারিশ হস্তান্তর করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (জাতীয় ঐকমত্য) মনির হায়দার।
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ জমা দেওয়ার পরে বেলা ২টার দিকে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলন করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
সেখানে আলী রীয়াজ বলেন, ‘সুপারিশের তিনটি ভাগ আছে। অধ্যাদেশ ও নির্বাহী আদেশের বাস্তবায়ন দ্রুততার সঙ্গে করা সম্ভব। সংবিধান সংশ্লিষ্ট প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের জন্য সরকারকে দুটো বিকল্প প্রস্তাব আমরা দিয়েছি। প্রস্তাবগুলো হচ্ছে- সরকার যেন অবিলম্বে একটি আদেশ জারি করে। এ আদেশের বিষয় হবে জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ। আদেশের অধীনে একটি গণভোট হবে।’
তিনি বলেন, আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ একই সঙ্গে সংবিধান সংস্কার পরিষদের দায়িত্ব পালন করবে। তারা ২৭০ দিন এমন দায়িত্ব পালন করবে।

দাবিগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাগণের উপসচিব পদোন্নতিযোগ্য পদ থেকে ১৯৯৮ সালে অন্যায্যভাবে বাদ দেওয়া ২৫ শতাংশ পদসমূহ পুনরায় অন্তর্ভুক্ত করে এন্ট্রি পদ থেকে শুরু করে সচিব পর্যন্ত পদসমূহ সমন্বয়ে মেধাভিত্তিক ‘বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস’ প্রতিষ্ঠা...
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
আসন্ন জাতীয় ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা সবচেয়ে বেশি নিয়োজিত থাকবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
১ ঘণ্টা আগে
চিঠিতে বলা হয়, গত ২৫ অক্টোবর (শনিবার) রাত ১১টা ১০ মিনিটের দিকে কিছু দুষ্কৃতকারী নির্বাচন ভবনের সামনের ভাস্কর্যের সামনে ‘ককটেল’ বিস্ফোরণ ঘটায়। এ ঘটনায় ভবনটির নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন।
১ ঘণ্টা আগে
সরকার থেকে সরকার (জিটুজি) পদ্ধতিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানির ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অনিয়ম, অতিরিক্ত মূল্য বা বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকের প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই প্রক্রিয়া নিয়ে ‘বিভ্রান্তিকর’ তথ্য উপস্থাপিত হয়েছে উল্লেখ করে আজ মঙ্গলবার...
৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

আসন্ন জাতীয় ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা সবচেয়ে বেশি নিয়োজিত থাকবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর খিলগাঁওয়ে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদর দপ্তরে আনসার ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনে আনসারদের অবদান সবচেয়ে বেশি। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে মোট ১৩ জন আনসার সদস্য নিয়োজিত থাকবে। এই ১৩ জনের মধ্যে তিনজন থাকবে অস্ত্রসহ আর বাকি ১০ জন থাকবে অস্ত্র ছাড়া। অস্ত্রবিহীন ১০ জনের মধ্যে ৬ জন থাকবে পুরুষ আর ৪ জন থাকবে নারী। তা ছাড়া এবারই প্রথম প্রিসাইডিং অফিসারের সঙ্গে অস্ত্রসহ একজন আনসার সদস্য থাকবে।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে মোট ৯ দিন আনসার সদস্যরা নিয়োজিত থাকবে। আগামী নির্বাচনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে আনসার সদস্যরা।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি বাহিনী দেশের নিরাপত্তা, শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং জাতীয় উন্নয়নের প্রতিটি পর্বে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। নিজেদের জীবন ও স্বার্থের পরোয়া না করে তারা নিষ্ঠা, দায়িত্ববোধ ও দেশপ্রেমের সঙ্গে জাতির সেবায় নিয়োজিত থাকে। তাই বাহিনীর প্রতিটি সদস্যের কর্মজীবনের মানোন্নয়ন ও কল্যাণ নিশ্চিত করা আমাদের সকলের নৈতিক দায়িত্ব এবং রাষ্ট্রীয় অঙ্গীকারের অংশ। এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশ আনসার ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের নিজস্ব অর্থায়নে মোট ৩১টি যানবাহন কেনা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ৯টি ট্রুপস ক্যারিয়ার, ১৪টি কাভার্ড ভ্যান, ৪২ আসনবিশিষ্ট ৪টি বড় বাস, ২৪ আসনবিশিষ্ট ২টি মিনিবাস এবং ২টি অ্যাম্বুলেন্স।
দেশের সর্ববৃহৎ এ বাহিনীর সদস্যদের ছুটি, বিনোদন ভ্রমণ এবং অন্যান্য বিভিন্ন প্রয়োজনে প্রায়ই নানা ধরনের যাতায়াতজনিত সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, তাঁদের এই ভোগান্তি লাঘব ও সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যেই আজকের এই ট্রান্সপোর্ট সার্ভিস চালু করা হয়েছে।
উপদেষ্টা এ সময় ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসটি সর্বোচ্চ পেশাদারি ও দক্ষতার সঙ্গে পরিচালিত হবে এবং বাহিনীর বৈধ পরিচয়পত্রধারী সব সদস্যের জন্য নির্ভরযোগ্য ও নিরাপদ পরিবহন সুবিধা নিশ্চিত করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বাইরে থাকা অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, প্রতিদিনই অস্ত্র উদ্ধার হচ্ছে। এটা চলমান প্রক্রিয়া। গত পরশুদিনও আটটি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। তিনি বলেন, এ রকম উদ্ধার হতেই থাকবে এবং নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে অস্ত্র উদ্ধার আরও বাড়তে থাকবে এবং একসময় দেখবেন যে বাইরে আর কোনো অস্ত্র বা হাতিয়ার নেই।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদসহ বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আসন্ন জাতীয় ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা সবচেয়ে বেশি নিয়োজিত থাকবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর খিলগাঁওয়ে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদর দপ্তরে আনসার ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনে আনসারদের অবদান সবচেয়ে বেশি। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে মোট ১৩ জন আনসার সদস্য নিয়োজিত থাকবে। এই ১৩ জনের মধ্যে তিনজন থাকবে অস্ত্রসহ আর বাকি ১০ জন থাকবে অস্ত্র ছাড়া। অস্ত্রবিহীন ১০ জনের মধ্যে ৬ জন থাকবে পুরুষ আর ৪ জন থাকবে নারী। তা ছাড়া এবারই প্রথম প্রিসাইডিং অফিসারের সঙ্গে অস্ত্রসহ একজন আনসার সদস্য থাকবে।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে মোট ৯ দিন আনসার সদস্যরা নিয়োজিত থাকবে। আগামী নির্বাচনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে আনসার সদস্যরা।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি বাহিনী দেশের নিরাপত্তা, শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং জাতীয় উন্নয়নের প্রতিটি পর্বে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। নিজেদের জীবন ও স্বার্থের পরোয়া না করে তারা নিষ্ঠা, দায়িত্ববোধ ও দেশপ্রেমের সঙ্গে জাতির সেবায় নিয়োজিত থাকে। তাই বাহিনীর প্রতিটি সদস্যের কর্মজীবনের মানোন্নয়ন ও কল্যাণ নিশ্চিত করা আমাদের সকলের নৈতিক দায়িত্ব এবং রাষ্ট্রীয় অঙ্গীকারের অংশ। এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশ আনসার ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের নিজস্ব অর্থায়নে মোট ৩১টি যানবাহন কেনা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ৯টি ট্রুপস ক্যারিয়ার, ১৪টি কাভার্ড ভ্যান, ৪২ আসনবিশিষ্ট ৪টি বড় বাস, ২৪ আসনবিশিষ্ট ২টি মিনিবাস এবং ২টি অ্যাম্বুলেন্স।
দেশের সর্ববৃহৎ এ বাহিনীর সদস্যদের ছুটি, বিনোদন ভ্রমণ এবং অন্যান্য বিভিন্ন প্রয়োজনে প্রায়ই নানা ধরনের যাতায়াতজনিত সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, তাঁদের এই ভোগান্তি লাঘব ও সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যেই আজকের এই ট্রান্সপোর্ট সার্ভিস চালু করা হয়েছে।
উপদেষ্টা এ সময় ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসটি সর্বোচ্চ পেশাদারি ও দক্ষতার সঙ্গে পরিচালিত হবে এবং বাহিনীর বৈধ পরিচয়পত্রধারী সব সদস্যের জন্য নির্ভরযোগ্য ও নিরাপদ পরিবহন সুবিধা নিশ্চিত করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বাইরে থাকা অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, প্রতিদিনই অস্ত্র উদ্ধার হচ্ছে। এটা চলমান প্রক্রিয়া। গত পরশুদিনও আটটি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। তিনি বলেন, এ রকম উদ্ধার হতেই থাকবে এবং নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে অস্ত্র উদ্ধার আরও বাড়তে থাকবে এবং একসময় দেখবেন যে বাইরে আর কোনো অস্ত্র বা হাতিয়ার নেই।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদসহ বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

দাবিগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাগণের উপসচিব পদোন্নতিযোগ্য পদ থেকে ১৯৯৮ সালে অন্যায্যভাবে বাদ দেওয়া ২৫ শতাংশ পদসমূহ পুনরায় অন্তর্ভুক্ত করে এন্ট্রি পদ থেকে শুরু করে সচিব পর্যন্ত পদসমূহ সমন্বয়ে মেধাভিত্তিক ‘বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস’ প্রতিষ্ঠা...
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার পরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশনের সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে এই সুপারিশ হস্তান্তর করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার
৯ মিনিট আগে
চিঠিতে বলা হয়, গত ২৫ অক্টোবর (শনিবার) রাত ১১টা ১০ মিনিটের দিকে কিছু দুষ্কৃতকারী নির্বাচন ভবনের সামনের ভাস্কর্যের সামনে ‘ককটেল’ বিস্ফোরণ ঘটায়। এ ঘটনায় ভবনটির নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন।
১ ঘণ্টা আগে
সরকার থেকে সরকার (জিটুজি) পদ্ধতিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানির ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অনিয়ম, অতিরিক্ত মূল্য বা বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকের প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই প্রক্রিয়া নিয়ে ‘বিভ্রান্তিকর’ তথ্য উপস্থাপিত হয়েছে উল্লেখ করে আজ মঙ্গলবার...
৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ককটেল বিস্ফোরণের পর আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন ভবন ঘিরে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
আজ মঙ্গলবার প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সহিদ আব্দুস ছালাম স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত নির্দেশের এক চিঠি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারকে পাঠানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়, গত ২৫ অক্টোবর (শনিবার) রাত ১১টা ১০ মিনিটের দিকে কিছু দুষ্কৃতকারী নির্বাচন ভবনের সামনের ভাস্কর্যের সামনে ‘ককটেল’ বিস্ফোরণ ঘটায়। এ ঘটনায় ভবনটির নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচন ভবনের চারপাশে অফিস সময়ের পর ও ছুটির দিনগুলোতে বিভিন্ন ব্যবসায়িক কার্যক্রম চলমান থাকায় নিরাপত্তা হুমকি আরও বাড়ছে বলে কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

এ অবস্থায় ভবনের আশপাশের ব্যবসায়িক কার্যক্রম সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত বন্ধ রাখা এবং নির্বাচন ভবনের সামনে ও আশপাশে পুলিশের টহল বাড়ানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অগ্রাধিকার বিবেচনায় নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে।

ককটেল বিস্ফোরণের পর আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন ভবন ঘিরে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
আজ মঙ্গলবার প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সহিদ আব্দুস ছালাম স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত নির্দেশের এক চিঠি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারকে পাঠানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়, গত ২৫ অক্টোবর (শনিবার) রাত ১১টা ১০ মিনিটের দিকে কিছু দুষ্কৃতকারী নির্বাচন ভবনের সামনের ভাস্কর্যের সামনে ‘ককটেল’ বিস্ফোরণ ঘটায়। এ ঘটনায় ভবনটির নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচন ভবনের চারপাশে অফিস সময়ের পর ও ছুটির দিনগুলোতে বিভিন্ন ব্যবসায়িক কার্যক্রম চলমান থাকায় নিরাপত্তা হুমকি আরও বাড়ছে বলে কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

এ অবস্থায় ভবনের আশপাশের ব্যবসায়িক কার্যক্রম সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত বন্ধ রাখা এবং নির্বাচন ভবনের সামনে ও আশপাশে পুলিশের টহল বাড়ানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অগ্রাধিকার বিবেচনায় নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে।

দাবিগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাগণের উপসচিব পদোন্নতিযোগ্য পদ থেকে ১৯৯৮ সালে অন্যায্যভাবে বাদ দেওয়া ২৫ শতাংশ পদসমূহ পুনরায় অন্তর্ভুক্ত করে এন্ট্রি পদ থেকে শুরু করে সচিব পর্যন্ত পদসমূহ সমন্বয়ে মেধাভিত্তিক ‘বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস’ প্রতিষ্ঠা...
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার পরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশনের সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে এই সুপারিশ হস্তান্তর করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার
৯ মিনিট আগে
আসন্ন জাতীয় ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা সবচেয়ে বেশি নিয়োজিত থাকবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
১ ঘণ্টা আগে
সরকার থেকে সরকার (জিটুজি) পদ্ধতিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানির ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অনিয়ম, অতিরিক্ত মূল্য বা বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকের প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই প্রক্রিয়া নিয়ে ‘বিভ্রান্তিকর’ তথ্য উপস্থাপিত হয়েছে উল্লেখ করে আজ মঙ্গলবার...
৩ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

সরকার থেকে সরকার (জিটুজি) পদ্ধতিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানির ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অনিয়ম, অতিরিক্ত মূল্য বা বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকের প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই প্রক্রিয়া নিয়ে ‘বিভ্রান্তিকর’ তথ্য উপস্থাপিত হয়েছে উল্লেখ করে আজ মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে মন্ত্রণালয় প্রতিবাদ জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয় জানায়, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের অধীনে জিটুজি পদ্ধতিতে এই আমদানি কার্যক্রম চলছে। প্রথম পর্যায়ে ২ লাখ ২০ হাজার টন গম প্রতি টন ৩০২ দশমিক ৭৫ মার্কিন ডলারে এবং দ্বিতীয় ধাপে একই পরিমাণ গম প্রতি টন ৩০৮ ডলারে ক্রয়ের চুক্তি সম্পন্ন হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ওই সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের গমের মূল্যের সঙ্গে রাশিয়ার গমের মূল্যের তুলনা করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ ত্রুটিপূর্ণ। খাদ্য মন্ত্রণালয় ব্যাখ্যায় বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের গমের দামে চট্টগ্রাম ও মোংলা খাদ্য অধিদপ্তরের সাইলো পর্যন্ত পরিবহন ব্যয়, বিমা, আনলোডিং ও বন্দরভিত্তিকসহ সব খরচ অন্তর্ভুক্ত থাকে। অন্যদিকে রাশিয়ার গমের মূল্যে শুধু দেশটির বন্দর পর্যন্ত (এফওবি) খরচ হিসাব করা হয়।
মন্ত্রণালয় জানায়, বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে রাশিয়ার গমের মূল্য প্রতি টন প্রায় ২৩০ ডলার এবং যুক্তরাষ্ট্রের গমের দাম প্রায় ২৩২ ডলার। অর্থাৎ পার্থক্য মাত্র ২ ডলার।
এ ছাড়া বর্তমানে প্রতি টন রাশিয়ার গমের দাম ২ লাখ ৯৫ হাজার ৩০০ ডলার এবং যুক্তরাষ্ট্রের গমের দাম ৩ লাখ ৮ হাজার ৩১০ ডলার (সম্ভাব্য চূড়ান্ত মূল্য) বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয় আরও উল্লেখ করেছে, মানের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের গম বেশি উন্নত। রাশিয়ার গমে গড়ে ১১ শতাংশ প্রোটিন (আমিষ) থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রের গমে প্রোটিনের পরিমাণ ১৩.৫ শতাংশ, যা পুষ্টিগুণ ও মানের দিক থেকে উন্নত। এই উন্নত মান, উচ্চমাত্রার প্রোটিন এবং আন্তর্জাতিক পরিবহন ব্যয় বিবেচনায় যুক্তরাষ্ট্রের গমের দাম সামান্য বেশি হওয়া যুক্তিসংগত এবং বাজারসম্মত।
মন্ত্রণালয় স্পষ্টভাবে নিশ্চিত করেছে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে জিটুজি পদ্ধতিতে গম আমদানির পুরো প্রক্রিয়া স্বচ্ছতা বজায় রেখে, প্রতিযোগিতামূলক উপায়ে এবং সরকার অনুমোদিত আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে সম্পন্ন হয়েছে।

সরকার থেকে সরকার (জিটুজি) পদ্ধতিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানির ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অনিয়ম, অতিরিক্ত মূল্য বা বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকের প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই প্রক্রিয়া নিয়ে ‘বিভ্রান্তিকর’ তথ্য উপস্থাপিত হয়েছে উল্লেখ করে আজ মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে মন্ত্রণালয় প্রতিবাদ জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয় জানায়, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের অধীনে জিটুজি পদ্ধতিতে এই আমদানি কার্যক্রম চলছে। প্রথম পর্যায়ে ২ লাখ ২০ হাজার টন গম প্রতি টন ৩০২ দশমিক ৭৫ মার্কিন ডলারে এবং দ্বিতীয় ধাপে একই পরিমাণ গম প্রতি টন ৩০৮ ডলারে ক্রয়ের চুক্তি সম্পন্ন হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ওই সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের গমের মূল্যের সঙ্গে রাশিয়ার গমের মূল্যের তুলনা করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ ত্রুটিপূর্ণ। খাদ্য মন্ত্রণালয় ব্যাখ্যায় বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের গমের দামে চট্টগ্রাম ও মোংলা খাদ্য অধিদপ্তরের সাইলো পর্যন্ত পরিবহন ব্যয়, বিমা, আনলোডিং ও বন্দরভিত্তিকসহ সব খরচ অন্তর্ভুক্ত থাকে। অন্যদিকে রাশিয়ার গমের মূল্যে শুধু দেশটির বন্দর পর্যন্ত (এফওবি) খরচ হিসাব করা হয়।
মন্ত্রণালয় জানায়, বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে রাশিয়ার গমের মূল্য প্রতি টন প্রায় ২৩০ ডলার এবং যুক্তরাষ্ট্রের গমের দাম প্রায় ২৩২ ডলার। অর্থাৎ পার্থক্য মাত্র ২ ডলার।
এ ছাড়া বর্তমানে প্রতি টন রাশিয়ার গমের দাম ২ লাখ ৯৫ হাজার ৩০০ ডলার এবং যুক্তরাষ্ট্রের গমের দাম ৩ লাখ ৮ হাজার ৩১০ ডলার (সম্ভাব্য চূড়ান্ত মূল্য) বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয় আরও উল্লেখ করেছে, মানের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের গম বেশি উন্নত। রাশিয়ার গমে গড়ে ১১ শতাংশ প্রোটিন (আমিষ) থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রের গমে প্রোটিনের পরিমাণ ১৩.৫ শতাংশ, যা পুষ্টিগুণ ও মানের দিক থেকে উন্নত। এই উন্নত মান, উচ্চমাত্রার প্রোটিন এবং আন্তর্জাতিক পরিবহন ব্যয় বিবেচনায় যুক্তরাষ্ট্রের গমের দাম সামান্য বেশি হওয়া যুক্তিসংগত এবং বাজারসম্মত।
মন্ত্রণালয় স্পষ্টভাবে নিশ্চিত করেছে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে জিটুজি পদ্ধতিতে গম আমদানির পুরো প্রক্রিয়া স্বচ্ছতা বজায় রেখে, প্রতিযোগিতামূলক উপায়ে এবং সরকার অনুমোদিত আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে সম্পন্ন হয়েছে।

দাবিগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাগণের উপসচিব পদোন্নতিযোগ্য পদ থেকে ১৯৯৮ সালে অন্যায্যভাবে বাদ দেওয়া ২৫ শতাংশ পদসমূহ পুনরায় অন্তর্ভুক্ত করে এন্ট্রি পদ থেকে শুরু করে সচিব পর্যন্ত পদসমূহ সমন্বয়ে মেধাভিত্তিক ‘বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস’ প্রতিষ্ঠা...
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার পরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশনের সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে এই সুপারিশ হস্তান্তর করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার
৯ মিনিট আগে
আসন্ন জাতীয় ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা সবচেয়ে বেশি নিয়োজিত থাকবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
১ ঘণ্টা আগে
চিঠিতে বলা হয়, গত ২৫ অক্টোবর (শনিবার) রাত ১১টা ১০ মিনিটের দিকে কিছু দুষ্কৃতকারী নির্বাচন ভবনের সামনের ভাস্কর্যের সামনে ‘ককটেল’ বিস্ফোরণ ঘটায়। এ ঘটনায় ভবনটির নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন।
১ ঘণ্টা আগে