Ajker Patrika

আমরা নির্বাচনের ট্রেন ছেড়ে দিয়েছি: এএফপিকে প্রধান উপদেষ্টা

আপডেট : ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১৫: ৪০
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: এএফপি
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: এএফপি

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘আমরা যেটা বলেছি যে আমাদের একই সঙ্গে দুটো প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। একটি হলো যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া। আমরা বলেছি যে নির্বাচনের ট্রেন স্টেশন ছেড়েছে, এখন এটি যত দ্রুত প্রস্তুত হবে, তত দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছাবে।’

আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে চলমান জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক কপ-২৯ সম্মেলনের ফাঁকে গতকাল বুধবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ যত সংক্ষিপ্ত করা যায়, ততই ভালো। তিনি আরও বলেন, সংস্কারকাজের গতি নির্ধারণ করে দেবে কত দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর দেশকে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার দিকে নিয়ে যেতে নির্বাচনের আগে সংস্কার প্রয়োজন। তিনি বলেন, ‘সংস্কারকাজের গতিই নির্ধারণ করবে, নির্বাচন কত দ্রুত অনুষ্ঠিত হবে।’

শান্তিতে নোবেলজয়ী ও ক্ষুদ্রঋণের অগ্রদূত ড. ইউনূস বাকুতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জোর দিয়ে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দেশকে গণতান্ত্রিক ভোটের দিকে এগিয়ে নেবে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, আমরা যত দ্রুত প্রস্তুত হব, তত দ্রুতই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং এরপর নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেবেন।’

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সংবিধান সংশোধনের সম্ভাবনা, সরকার কাঠামো, সংসদ এবং নির্বাচনী বিধিমালা নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো দরকার। এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অন্তর্বর্তী সরকার, তাই আমাদের মেয়াদ যত সংক্ষিপ্ত রাখা যায়, ততই ভালো।’

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফলে গত আগস্টে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ড. ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা একটা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি যে যত তাড়াতাড়ি আমরা প্রস্তুত হব, তত দ্রুত নির্বাচন দিতে পারব। যাতে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা দেশ পরিচালনা করতে পারেন। একটা অন্তর্বর্তী সরকার আছে, তাই সময়কাল যতটা সম্ভব সংক্ষিপ্ত হওয়া উচিত।’

বাংলাদেশে হাজার হাজার মানুষ সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভে অংশ নেয়। পরে এই বিক্ষোভ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারবিরোধী আন্দোলনে পরিণত হয় এবং জাতীয় আন্দোলনে রূপ নেয়। পুলিশের কঠোর দমন-পীড়নে ফলে সাত শতাধিক মানুষ নিহত হয়। এরপর, হাসিনা ৫ আগস্ট দেশত্যাগ করে ভারতে চলে যান।

শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশ অস্থিতিশীলতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তাঁর শাসনামলে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে রাজনৈতিক বিরোধীদের গণগ্রেপ্তার ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড অন্যতম। স্থিতিশীলতা প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, ‘যেকোনো সরকারই স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বিগ্ন হবে, আমরাও তাই।

আইনশৃঙ্খলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি যে এটি সমাধান করতে পারব এবং শান্তিপূর্ণ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে পারব।’ তবে এসব বিষয় নিয়ন্ত্রণে আনতে সময় লাগবে ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, ‘বিপ্লবের মাত্র তিন মাস পার হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঋণ শোধ না করে মরলে উল্টো ১০ হাজার দেব—পরদিন গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ

নেছারাবাদে জামায়াতের ফরম পূরণ আওয়ামী লীগ নেতার

আমেরিকার বিরুদ্ধে লড়তে ৩০ লাখের হাতে অস্ত্র, ৪৫ লাখকে গেরিলা প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন মাদুরো

নির্বাচনে মধ্যপন্থীদের জয়, প্রথম সমকামী প্রধানমন্ত্রী পাচ্ছে নেদারল্যান্ডস

স্থলমাইন বিস্ফোরণে দুই পা উড়ে যাওয়া সেই বিজিবি সদস্য মারা গেছেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাজনৈতিক পরিস্থিতি: বিভেদে বাড়ছে উৎকণ্ঠা

  • দলগুলোর তৎপরতার কেন্দ্রে জনগণের স্বার্থ কতটা আছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে
  • শিক্ষার্থী ও তরুণেরাও এখন নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয়ে
  • দেশের স্বার্থে দলগুলোকে ছাড় দেওয়ার মানসিকতা দেখাতে হবে, মত বিশেষজ্ঞদের
অর্চি হক ও আব্দুল্লাহ আল গালিব, ঢাকা
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় আজ বুধবার সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে আট খণ্ডের প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরা। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় আজ বুধবার সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে আট খণ্ডের প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরা। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

রক্তাক্ত জুলাই অভ্যুত্থানের পর পুরোনো ব্যবস্থা ভেঙে নতুন রূপে দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছেন মানুষ। প্রত্যাশা ছিল, নোবেলজয়ী ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মধ্যস্থতায় রাজনৈতিক বিভেদ ঘুচিয়ে সংস্কার সম্পন্ন হবে, নির্বাচনের মধ্য দিয়ে স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরে আসবে দেশে। কিন্তু জনপ্রত্যাশা পূরণের পথে না হেঁটে নানা বিষয়ে একে অপরের সঙ্গে বিবাদে জড়াচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলো। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও গণভোটে দলগুলোর মধ্যে মতভেদ যেভাবে তীব্র হয়ে উঠেছে, তাতে জনমনে বিরক্তি-হতাশা ও উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।

নাগরিকদের অনেকেই মনে করছেন, রাজনৈতিক দলগুলো বক্তব্য-বিবৃতি ও কর্মসূচি দিয়ে যেভাবে অনড় অবস্থান জানান দিচ্ছে, তাতে প্রকৃত গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ হারিয়ে যাচ্ছে। আবার কেউ কেউ বলছেন, দলগুলোকে জনগণের কাছে ফিরে গিয়ে আস্থার জায়গা পুনর্গঠন করার এখনই উত্তম সময়। যেভাবেই হোক, দেশ ও জাতির স্বার্থে সমঝোতার ভিত্তিতে সংকটের অবসান ঘটাতে হবে।

নূরে আজম নামের একজন চাকরিজীবী বলেন, দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ সার্বিক বিষয় কখন স্বাভাবিক হবে, তা অনেকাংশে নির্বাচনের ওপর নির্ভর করছে। কিন্তু একেক দল একেক মত নিয়ে এখন অনড় অবস্থানে রয়েছে। এতে নির্বাচন অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ছে। জুলাই সনদে স্বাক্ষরের পরও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এমন মতানৈক্য সাধারণ মানুষকে দ্বিধার মধ্যে ফেলেছে, অনেকেই এতে বিরক্ত।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মাহদিয়াব হোসেন দিহান বলেন, ‘অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ছাত্র-জনতা যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিল, সে স্বপ্নের বাস্তবায়ন নিয়ে এখন সংশয় বিরাজ করছে—এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। আমাদের আকাঙ্ক্ষা ছিল সুশাসন, গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, রাজনৈতিক বিভাজন ও বিশৃঙ্খলা, অর্থনৈতিক অস্থিরতা, সহিংসতা এবং নিরাপত্তা সংকটের মধ্য দিয়ে আমরা সময় অতিক্রম করছি।’

জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে রাজধানীসহ সারা দেশে রাজনৈতিক দলগুলোর তৎপরতা বেড়েছে অনেক গুণ। কিন্তু সে তৎপরতার কেন্দ্রে জনগণের স্বার্থ কতটা আছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। দলগুলো নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে যে যার মতো সভা-সমাবেশ ও মিছিল-মিটিং করছে; কিন্তু কোনো পক্ষই এখনো দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক রূপরেখা স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে পারেনি। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার এক বছর পরে এসে প্রত্যাশার বিপরীতে বাস্তবতা মিলিয়ে মানুষ অনেকটাই দিশেহারা।

জুলাই জাতীয় সনদ প্রণয়ন-প্রক্রিয়ার শুরু থেকেই নানা বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ চলে আসছে। অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত সনদ চূড়ান্ত হয়েছে, তাতে স্বাক্ষরও করেছে সংলাপে অংশ নেওয়া বেশির ভাগ দল। কিন্তু এখন নতুন গন্ডগোল বেধেছে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ ও গণভোট নিয়ে। জামায়াতে ইসলামী ও তাদের সমমনা দলগুলো নভেম্বরেই জুলাই সনদের ওপর গণভোট চায়। দ্রুত সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারির দাবিও করেছে দলগুলো। গতকাল শুক্রবারও খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় এক সমাবেশে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে নভেম্বরে গণভোট দিয়েই ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে।

তরুণদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) গণভোট নভেম্বরেই হতে হবে এমন দাবি না করলেও তারাও চায় জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট হোক। দলটির বড় চাওয়া প্রধান উপদেষ্টার আদেশেই জুলাই সনদের বাস্তবায়ন। অন্যদিকে বিএনপি বলেছে, আদেশ জারির এখতিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের নেই। আর জাতীয় নির্বাচনের দিনই গণভোটের পক্ষে দলটি। এ ছাড়া সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের দেওয়া কিছু সুপারিশ নিয়েও তীব্র আপত্তি জানিয়েছে দলটি। পরিস্থিতি এমন জায়গায় চলে গেছে, গতকাল এক অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন দেশ ও জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে।

তবে সরকারসংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, উপদেষ্টা পরিষদের অধিকাংশ সদস্য একই দিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট আয়োজনের পক্ষে। তবে কমিশনের প্রস্তাবিত সুপারিশ অনুযায়ী বাস্তবায়ন আদেশ দেবে সরকার।

গণভোট নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতানৈক্যের বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আল মাসুদ হাসানুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এটি মানুষের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করছে। কারণ, এ ধরনের মতানৈক্যের ফলে নির্বাচন অনুষ্ঠান বিঘ্নিত হবে কি না, এমন আশঙ্কা সৃষ্টি হচ্ছে। মানুষ আশা করছেন সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। কিন্তু এ ধরনের মতানৈক্য থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন কীভাবে সম্ভব, সে প্রশ্ন উঠছে মানুষের মনে। এটি রাজনৈতিক সংকটের আলামত।

এমন পরিস্থিতি উত্তরণের উপায় কী, জানতে চাইলে এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, দলগুলোকে ঐক্যের জায়গায় পৌঁছাতে হবে। না হয় রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে একধরনের সংকট সৃষ্টি হতে পারে। দেশের স্বার্থে ছাড় দেওয়ার মানসিকতা নিয়ে দলগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে।

বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের (বিইআই) সভাপতি ও যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির বলেন, ‘জুলাই-উত্তর সময়ে বাংলাদেশ একটা রাজনৈতিক বিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এখানে খানিকটা টেনশন হতে পারে। তবে এই টেনশনের মধ্যেও আমি মনে করি, একটা বিষয়ে সবাই একমত আছে—সেটা হলো একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হতে হবে, সবাই যাতে অংশগ্রহণ করতে পারে, সে রকম একটা নির্বাচন। আরও একটা জায়গায় সহমত আছে, তা হলো জুলাই সনদ। দ্বিমত যেটা দেখা যাচ্ছে, সেটি সনদ বাস্তবায়নের পথ নিয়ে। আমার ধারণা, এখনো আলাপ-আলোচনার সুযোগ শেষ হয়ে যায়নি। সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলো বসে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটা পদ্ধতি নিয়ে যদি একমত হতে পারে, তাহলে এই সাময়িক যে উত্তেজনা, বিভাজন থেকে উত্তরণ সম্ভব বলে আমি মনে করি।’

জুলাই সনদ নিয়ে যে অনৈক্য সৃষ্টি হয়েছে, তার জন্য ঐকমত্য কমিশনকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন মানবাধিকারকর্মী ও নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরীন পারভিন হক। তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের মূল দায়িত্ব ছিল বিচার, সংস্কার এবং নির্বাচন। আমরা দেখলাম, ঐকমত্য কমিশন গঠন হলো; কিন্তু সেখানেও বিভেদ। পাঁচটি সংস্কার কমিশনের সুপারিশ আমলেই নেওয়া হলো না। যার নেতৃত্বে এই কমিশনটা চলছে, তার সদিচ্ছা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। কমিশনে নারীদের একেবারেই উপেক্ষিত রাখা হয়েছে।’

বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্বাচনই উত্তরণের পথ বলে জানান শিরীন হক। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো সব ব্যাপারে ঐকমত্য হবে, তা আশা করা উচিত না। দলগুলোর নিজ নিজ আদর্শ আছে, মতাদর্শ আছে, দাবি-দাওয়া আছে, সেখানে তো পার্থক্য থাকবেই। কিন্তু মানুষ একটা সুষ্ঠু নির্বাচন চায় এবং শিগগিরই চায়। তাই সরকারের উচিত, নির্বাচনটা কীভাবে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সুন্দরভাবে হতে পারে, সেদিকে মনোযোগ দেওয়া।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঋণ শোধ না করে মরলে উল্টো ১০ হাজার দেব—পরদিন গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ

নেছারাবাদে জামায়াতের ফরম পূরণ আওয়ামী লীগ নেতার

আমেরিকার বিরুদ্ধে লড়তে ৩০ লাখের হাতে অস্ত্র, ৪৫ লাখকে গেরিলা প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন মাদুরো

নির্বাচনে মধ্যপন্থীদের জয়, প্রথম সমকামী প্রধানমন্ত্রী পাচ্ছে নেদারল্যান্ডস

স্থলমাইন বিস্ফোরণে দুই পা উড়ে যাওয়া সেই বিজিবি সদস্য মারা গেছেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অক্টোবরে বেড়েছে অজ্ঞাতনামা লাশ ও কারা হেফাজতে মৃত্যু: এমএসএফ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ২১: ২২
অক্টোবরে বেড়েছে অজ্ঞাতনামা লাশ ও কারা হেফাজতে মৃত্যু: এমএসএফ

অক্টোবরে দেশে অজ্ঞাতনামা লাশ উদ্ধারের ঘটনা এবং কারা হেফাজতে মৃত্যু সেপ্টেম্বরের চেয়ে বেশ খানিকটা বেড়েছে। সেপ্টেম্বরে অজ্ঞাতনামা লাশ উদ্ধার হয়েছিল ৫২টি। অক্টোবরে উদ্ধার হয়েছে ৬৬টি। অক্টোবরে কারা হেফাজতে ১৩ জন বন্দীর মৃত্যু হয়। গত মাসে এর সংখ্যা ছিল ৮। এ মাসে ছয়জন কয়েদি ও সাতজন হাজতির মৃত্যু হয়েছে।

তবে অক্টোবরে সংখ্যালঘু নির্যাতন, ধর্মীয় সহিংসতা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ‘ক্রসফায়ারের’ ঘটনা কমেছে।

আজ শুক্রবার মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) অক্টোবর মাসের প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।

নারী ও শিশু নির্যাতন, রাজনৈতিক সহিংসতা, সীমান্তে হত্যাকাণ্ড এবং কারা হেফাজতে মৃত্যু বেড়ে যাওয়ায় সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি এখনো ‘উদ্বেগজনক ও অস্থির’ জানিয়ে এমএসএফের প্রতিবেদনে বলা হয়, সেপ্টেম্বরে রাজনৈতিক সহিংসতার ৩৮টি ঘটনায় হতাহত হয়েছিল ২৯৬ জন। অক্টোবরে রাজনৈতিক সহিংসতার ৪৯টি ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা ৫৪৯ জন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, নিবর্তনমূলক সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলের উদ্দেশ্যে অন্তর্বর্তী সরকার কার্যকর কিছু পদক্ষেপ নিলেও আইনটি এখন পর্যন্ত বাতিল হয়নি; বরং এই আইনের যথেচ্ছ ব্যবহার অব্যাহত রয়েছে। ফলে এ আইনে করা মামলার সংখ্যা বাড়ছে। গ্রেপ্তারের সংখ্যাও বাড়ছে।

এমএসএফের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবরে ৩৬৮টি নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা সংঘটিত হয়েছে, যা গত মাসের চেয়ে ৭টি বেশি। এ মাসে ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনা ৭২টি, দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনা ১৪টি এবং ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগের ঘটনা ৭। এর মধ্যে ৫ জন প্রতিবন্ধী কিশোরী ও নারী ধর্ষণের অভিযোগ তোলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঋণ শোধ না করে মরলে উল্টো ১০ হাজার দেব—পরদিন গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ

নেছারাবাদে জামায়াতের ফরম পূরণ আওয়ামী লীগ নেতার

আমেরিকার বিরুদ্ধে লড়তে ৩০ লাখের হাতে অস্ত্র, ৪৫ লাখকে গেরিলা প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন মাদুরো

নির্বাচনে মধ্যপন্থীদের জয়, প্রথম সমকামী প্রধানমন্ত্রী পাচ্ছে নেদারল্যান্ডস

স্থলমাইন বিস্ফোরণে দুই পা উড়ে যাওয়া সেই বিজিবি সদস্য মারা গেছেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ফের আন্দোলনের ডাক প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

তিন দফা দাবি আদায়ে ফের আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা। আগামী ৮ নভেম্বর সকাল ১০টা থেকে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে যাচ্ছেন তাঁরা।

ফের আন্দোলন শুরুর কারণ সম্পর্কে বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, ‘শিক্ষকনেতারা ১৬ অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে গেলে বলা হয়েছিল, তাদের দাবি পে কমিশনে আছে। পরে পে কমিশনের সভায় গেলে জানিয়ে দিয়েছে, এটি তাদের এখতিয়ারভুক্ত নয়। এ জন্য আমরা আবার কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘আগামী ৮ নভেম্বর সকাল ১০টা থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আমাদের অবস্থান কর্মসূচি শুরু হবে।’

সহকারী শিক্ষকদের দাবির মধ্যে রয়েছে দশম গ্রেডে বেতন প্রদান, ১০ বছর ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড জটিলতা নিরসন ও শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির নিশ্চয়তা।

এ তিন দাবি আদায়ে গত ৩০ আগস্ট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মহাসমাবেশ করেন শিক্ষকেরা। সমাবেশে সারা দেশের শিক্ষকেরা অংশ নেন। পরে ১৬ অক্টোবর আমরণ অনশন কর্মসূচির ডাক দেওয়া হলে সরকারের আশ্বাসে তা স্থগিত করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঋণ শোধ না করে মরলে উল্টো ১০ হাজার দেব—পরদিন গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ

নেছারাবাদে জামায়াতের ফরম পূরণ আওয়ামী লীগ নেতার

আমেরিকার বিরুদ্ধে লড়তে ৩০ লাখের হাতে অস্ত্র, ৪৫ লাখকে গেরিলা প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন মাদুরো

নির্বাচনে মধ্যপন্থীদের জয়, প্রথম সমকামী প্রধানমন্ত্রী পাচ্ছে নেদারল্যান্ডস

স্থলমাইন বিস্ফোরণে দুই পা উড়ে যাওয়া সেই বিজিবি সদস্য মারা গেছেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ নিয়ে অধ্যাপক আলী রীয়াজের নতুন বই

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
অধ্যাপক আলী রীয়াজের নতুন বই। ছবি: সংগৃহীত
অধ্যাপক আলী রীয়াজের নতুন বই। ছবি: সংগৃহীত

অধ্যাপক আলী রীয়াজের নতুন বই ‘অ্যা ফ্র্যাকচারড পাথ: চ্যালেঞ্জেস অব ডেমোক্রেটিক ট্রানজিশন ইন বাংলাদেশ’ প্রকাশিত হয়েছে। বইটি প্রকাশ করেছে দ্য ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড (ইউপিএল)। ইউপিএলের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বইটির বিষয়বস্তুও উল্লেখ করা হয়েছে।

গণ-অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশ কোন পথে যাবে, দেশে গণতন্ত্র আর জবাবদিহি প্রতিষ্ঠিত হবে নাকি দীর্ঘমেয়াদি নৈরাজ্য গ্রাস করবে? পৃথিবীর আরও যেসব রাষ্ট্র নানা সময়ে এমন সংকটের মুখে পড়েছে, তারা কীভাবে উত্তরণ করেছে? কোন কোন রাষ্ট্র উত্তরণে আদৌ সক্ষম হয়নি? বইটিতে লেখক অধ্যাপক আলী রীয়াজ এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত অর্ধশতকে যে দেশগুলো এই রূপান্তরে সফল বা ব্যর্থ হয়েছে, তাদের অভিজ্ঞতা লেখক এই বইটিতে বিশ্লেষণ করেছেন। অন্যদিকে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের পর সংবিধান সংস্কার কমিশন এবং জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধানের দায়িত্ব পালনের সুবাদে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বাংলাদেশের রাজনীতির সংকটময় মুহূর্তে অন্যতম কেন্দ্রীয় ভূমিকায় থেকে বাংলাদেশের বিশেষ বাস্তবতাকেও অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে দেখার সুযোগ পেয়েছেন।

এই বইটিতে লেখক একদিকে বৈশ্বিক অভিজ্ঞতার সারসংক্ষেপ তুলে ধরেছেন। আরেক দিকে বাংলাদেশের বিশেষ বাস্তবতার উপলব্ধি তুলে ধরেছেন।

অধ্যাপক আলী রীয়াজ যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনৈতিক বিজ্ঞানের অধ্যাপক, আটলান্টিক কাউন্সিলের নন-রেসিডেন্ট সিনিয়র ফেলো এবং আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজের (এআইবিএস) প্রেসিডেন্ট। তিনি বাংলাদেশের সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং বর্তমানে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঋণ শোধ না করে মরলে উল্টো ১০ হাজার দেব—পরদিন গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ

নেছারাবাদে জামায়াতের ফরম পূরণ আওয়ামী লীগ নেতার

আমেরিকার বিরুদ্ধে লড়তে ৩০ লাখের হাতে অস্ত্র, ৪৫ লাখকে গেরিলা প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন মাদুরো

নির্বাচনে মধ্যপন্থীদের জয়, প্রথম সমকামী প্রধানমন্ত্রী পাচ্ছে নেদারল্যান্ডস

স্থলমাইন বিস্ফোরণে দুই পা উড়ে যাওয়া সেই বিজিবি সদস্য মারা গেছেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত