শাহরিয়ার হাসান, ঢাকা

ঢাকার কেরানীগঞ্জে গতকাল বৃহস্পতিবার ব্যাংক ডাকাতির চেষ্টা কয়েক ঘণ্টা রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষায় রেখেছিল মানুষকে। বিনা রক্তপাতে ব্যাংকটিতে জিম্মি ঘটনার অবসানে মানুষ স্বস্তি পেলেও দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে ভয়-আতঙ্ক কাটছে না। বরং একের পর এক খুন, ছিনতাই, ডাকাতি, চুরির ঘটনা মানুষের মনে নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কয়েক দিন পুলিশহীন থাকায় চরম অবনতি ঘটেছিল আইনশৃঙ্খলার। কিন্তু পরে থানা সচল ও পুলিশ কাজে ফিরলেও আইনশৃঙ্খলা নিয়ে জনমনে স্বস্তি ফিরছে না। ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটিয়ে মানুষের মধ্যে স্বস্তি ও নিরাপত্তা বোধ ফিরিয়ে আনাই প্রশাসন ও পুলিশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন অপরাধ বিশ্লেষকেরা।
সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিষয়ে জানতে চাইলে গতকাল অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতিতে আমরা জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। পুলিশের কার্যক্রম পুনরুজ্জীবিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশা করি সব ঠিক হয়ে যাবে।’
বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য অনেকে দায়ী করছেন পুলিশের নিষ্ক্রিয়তাকে। তাঁরা বলছেন, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিতর্কিত ভূমিকার জন্য পুলিশের প্রতি মানুষের ক্ষোভ ও আস্থাহীনতার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল ৫ আগস্ট। হামলা, লুট, অগ্নিসংযোগ করা হয়েছিল থানাসহ পুলিশের বিভিন্ন স্থাপনায়। কয়েকজন পুলিশ সদস্য প্রাণও হারিয়েছেন। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার কয়েক দিন পর পুলিশ সদস্যরা কাজে ফিরলেও তাঁদের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা কাটেনি। সহায়তার জন্য সেনাসদস্যরা থাকলেও পুলিশ সদস্যরা এ শঙ্কার কারণে পুরোদমে মাঠে সক্রিয় হচ্ছেন না। এর সুযোগ নিচ্ছে অপরাধীরা। অবনতি হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির বিষয়ে জানতে চাইলে গতকাল পুলিশ সদর দপ্তরের মুখপাত্র ও সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) এনামুল হক সাগর আজকের পত্রিকাকে জানান, ‘মাঠপর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমরা জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে কাজ করছি। দ্রুতই অপরাধপ্রবণতা কমে আসবে।’
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির একটি উদাহরণ গতকাল কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়ায় রূপালী ব্যাংকের জিনজিরা শাখায় তিন কিশোর-তরুণের ব্যাংক ডাকাতির চেষ্টা। খেলনা পিস্তল ও ছুরি নিয়েই তারা ব্যাংকে ঢুকে সবাইকে জিম্মি করে। পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনীর চেষ্টায় প্রায় ৪ ঘণ্টার চেষ্টার আত্মসমর্পণ করে তারা। অবসান ঘটে রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষার।
এর কয়েক ঘণ্টা আগে গত বুধবার রাত ৯টার দিকে হানিফ ফ্লাইওভারের সায়েদাবাদ প্রান্তের ঢালে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে খুন হন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী কামরুল হাসান (২৩)। এর ৩ ঘণ্টার ব্যবধানে রাত ১২টার দিকে মতিঝিলে বিমান অফিসের কাছে মারধরে আহত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল হালিম (৬৩) রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। একই রাতে আফতাবনগরে ছুরিকাঘাতে খুন হন এক গৃহবধূ। তবে পরিবারের অভিযোগ, স্বামীই তাঁকে খুন করেছেন।
বুধবার রাজধানীর অদূরে টঙ্গীতে তুরাগতীরের বিশ্ব ইজতেমা মাঠের দখল নিয়ে তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের সংঘর্ষে চারজন নিহত এবং শতাধিক আহত হন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া তিন শিক্ষার্থী ‘গুপ্তহত্যা’র শিকার হয়েছেন চলতি সপ্তাহে। এ ছাড়া গত মঙ্গলবার চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠান চলাকালে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলায় স্কুলছাত্রসহ দুজন ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছে।
প্রায় প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন স্থানে খুন হচ্ছে। পুলিশের তথ্যই বলছে, গত দুই মাসে দেশে অন্তত ৩৩টি খুন হয়েছে। খুনের পর লাশগুলো ফেলে দেওয়া হয় ঝোপঝাড়ে।
শিক্ষার্থী খুনের বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। মাত্র ৬ দিনের ব্যবধানে দুই বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষার্থী ও অজ্ঞাতনামা একজনের নির্মম হত্যা একদিকে সমাজের নিরাপত্তাব্যবস্থার ভয়ানক চিত্র তুলে ধরেছে; অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যর্থতাকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে।
ছিনতাই হচ্ছে হরহামেশা। রাতে বা নির্জন এলাকায় শুধু নয়, জনবহুল এলাকায় প্রকাশ্যেও ছিনতাই হচ্ছে। ১৫ ডিসেম্বর বিকেলে শাহবাগের মতো ব্যস্ত এলাকায় ছিনতাইয়ের শিকার হন মগবাজারের গৃহবধূ আয়েশা আক্তার। স্বামী-সন্তানকে নিয়ে ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় ছুরি ঠেকিয়ে আয়েশার কাছ থেকে আইফোন ও ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে যায় তিন যুবক। তিনি বলেন, ‘শাহবাগে থানার কাছে এমন ঘটনা চিন্তাও করা যায় না। দুই দিন পরও ঘটনাটি মনে হলে আতঙ্কে কেঁপে উঠি আমরা।’
ডাকাতি, চুরিও বেড়েছে। কিন্তু ছিনতাই, ডাকাতি, চুরির সব ঘটনার অভিযোগ থানা পর্যন্ত যাচ্ছে না। ফলে এসব অপরাধের প্রকৃত চিত্রও জানা যাচ্ছে না।
ঢাকাসহ কয়েকটি জেলায় অস্ত্রধারীদের দৌরাত্ম্য এবং প্রকাশ্যে চাপাতি-রামদা নিয়ে হামলা কিংবা দৌড়াদৌড়ির বেশ কিছু ভিডিও ফুটেজ সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে ধারালো অস্ত্র নিয়ে একদল তরুণ এক তরুণীকে ঘিরে ধরে টানাহেঁচড়া করছে, ওড়না টেনে রাস্তায় ফেলে দিচ্ছে আর তরুণী দৌড়ে বাঁচার চেষ্টা করছেন—এমন দৃশ্য দেখে আঁতকে উঠেছেন মানুষ। বনানীতে এক সন্ধ্যায় জটে আটকে থাকা যানবাহনের সামনে চাপাতি হাতে দাঁড়িয়ে থাকা দুই তরুণের ছিনতাইয়ের দৃশ্যও মানুষকে শঙ্কিত করেছে।
নোয়াখালীতে সম্প্রতি মা-মেয়েকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা ছিনতাইয়ের সময় চালককে হত্যা করা হয়েছে। সৈয়দপুরে ব্যাংক থেকে ক্ষুদ্রঋণের টাকা তুলে বের হওয়ার পর এক ব্যক্তি ছিনতাইকারীর হাতে খুন হন।
ঢাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী আবু তালেব আজকের পত্রিকাকে বলেন, নিরাপত্তার দুর্বলতাই এমন ঘটনা বারবার ঘটানোর সুযোগ করে দিচ্ছে। রাস্তাঘাটে এখন আর পুলিশের টহল দেখা যায় না। সড়কবাতি জ্বলে না। কেউ বিপদে পড়ে থানায় গেলে পুলিশ অভিযোগ নেয় না। তাহলে মানুষ সাহস পাবে কীভাবে? এসব দেখে অপরাধীরা অপরাধ করার সাহস পাচ্ছে।
অপরাধ বিশেষজ্ঞরাও প্রায় একই কথা বলছেন। তাঁদের মতে, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারছে না। এ ছাড়া নতুন করে বিরূপ পরিস্থিতিতে পড়ার ভয়েও অনেক পুলিশ সদস্য তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। এসব কারণে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হচ্ছে, যা জনজীবনে উদ্বেগ তৈরি করছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং সমাজ ও অপরাধ বিশ্লেষক তৌহিদুল হক বলেন, আন্দোলনের সময় পুলিশের বিতর্কিত ভূমিকার কারণে তারা নৈতিক সংকটে পড়েছে। একই সঙ্গে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে দ্বিধাগ্রস্ত হওয়ায় অপরাধীরা সুযোগ নিচ্ছে। কিন্তু এভাবে চলতে দেওয়া যায় না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। যেখানে অপরাধ, সেখানেই তাঁদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। তা হলেই মানুষের মন থেকে ভয় কাটতে থাকবে। পরিস্থিতিরও উন্নতি হবে।

ঢাকার কেরানীগঞ্জে গতকাল বৃহস্পতিবার ব্যাংক ডাকাতির চেষ্টা কয়েক ঘণ্টা রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষায় রেখেছিল মানুষকে। বিনা রক্তপাতে ব্যাংকটিতে জিম্মি ঘটনার অবসানে মানুষ স্বস্তি পেলেও দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে ভয়-আতঙ্ক কাটছে না। বরং একের পর এক খুন, ছিনতাই, ডাকাতি, চুরির ঘটনা মানুষের মনে নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কয়েক দিন পুলিশহীন থাকায় চরম অবনতি ঘটেছিল আইনশৃঙ্খলার। কিন্তু পরে থানা সচল ও পুলিশ কাজে ফিরলেও আইনশৃঙ্খলা নিয়ে জনমনে স্বস্তি ফিরছে না। ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটিয়ে মানুষের মধ্যে স্বস্তি ও নিরাপত্তা বোধ ফিরিয়ে আনাই প্রশাসন ও পুলিশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন অপরাধ বিশ্লেষকেরা।
সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিষয়ে জানতে চাইলে গতকাল অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতিতে আমরা জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। পুলিশের কার্যক্রম পুনরুজ্জীবিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশা করি সব ঠিক হয়ে যাবে।’
বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য অনেকে দায়ী করছেন পুলিশের নিষ্ক্রিয়তাকে। তাঁরা বলছেন, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিতর্কিত ভূমিকার জন্য পুলিশের প্রতি মানুষের ক্ষোভ ও আস্থাহীনতার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল ৫ আগস্ট। হামলা, লুট, অগ্নিসংযোগ করা হয়েছিল থানাসহ পুলিশের বিভিন্ন স্থাপনায়। কয়েকজন পুলিশ সদস্য প্রাণও হারিয়েছেন। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার কয়েক দিন পর পুলিশ সদস্যরা কাজে ফিরলেও তাঁদের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা কাটেনি। সহায়তার জন্য সেনাসদস্যরা থাকলেও পুলিশ সদস্যরা এ শঙ্কার কারণে পুরোদমে মাঠে সক্রিয় হচ্ছেন না। এর সুযোগ নিচ্ছে অপরাধীরা। অবনতি হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির বিষয়ে জানতে চাইলে গতকাল পুলিশ সদর দপ্তরের মুখপাত্র ও সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) এনামুল হক সাগর আজকের পত্রিকাকে জানান, ‘মাঠপর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমরা জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে কাজ করছি। দ্রুতই অপরাধপ্রবণতা কমে আসবে।’
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির একটি উদাহরণ গতকাল কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়ায় রূপালী ব্যাংকের জিনজিরা শাখায় তিন কিশোর-তরুণের ব্যাংক ডাকাতির চেষ্টা। খেলনা পিস্তল ও ছুরি নিয়েই তারা ব্যাংকে ঢুকে সবাইকে জিম্মি করে। পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনীর চেষ্টায় প্রায় ৪ ঘণ্টার চেষ্টার আত্মসমর্পণ করে তারা। অবসান ঘটে রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষার।
এর কয়েক ঘণ্টা আগে গত বুধবার রাত ৯টার দিকে হানিফ ফ্লাইওভারের সায়েদাবাদ প্রান্তের ঢালে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে খুন হন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী কামরুল হাসান (২৩)। এর ৩ ঘণ্টার ব্যবধানে রাত ১২টার দিকে মতিঝিলে বিমান অফিসের কাছে মারধরে আহত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল হালিম (৬৩) রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। একই রাতে আফতাবনগরে ছুরিকাঘাতে খুন হন এক গৃহবধূ। তবে পরিবারের অভিযোগ, স্বামীই তাঁকে খুন করেছেন।
বুধবার রাজধানীর অদূরে টঙ্গীতে তুরাগতীরের বিশ্ব ইজতেমা মাঠের দখল নিয়ে তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের সংঘর্ষে চারজন নিহত এবং শতাধিক আহত হন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া তিন শিক্ষার্থী ‘গুপ্তহত্যা’র শিকার হয়েছেন চলতি সপ্তাহে। এ ছাড়া গত মঙ্গলবার চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠান চলাকালে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলায় স্কুলছাত্রসহ দুজন ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছে।
প্রায় প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন স্থানে খুন হচ্ছে। পুলিশের তথ্যই বলছে, গত দুই মাসে দেশে অন্তত ৩৩টি খুন হয়েছে। খুনের পর লাশগুলো ফেলে দেওয়া হয় ঝোপঝাড়ে।
শিক্ষার্থী খুনের বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। মাত্র ৬ দিনের ব্যবধানে দুই বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষার্থী ও অজ্ঞাতনামা একজনের নির্মম হত্যা একদিকে সমাজের নিরাপত্তাব্যবস্থার ভয়ানক চিত্র তুলে ধরেছে; অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যর্থতাকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে।
ছিনতাই হচ্ছে হরহামেশা। রাতে বা নির্জন এলাকায় শুধু নয়, জনবহুল এলাকায় প্রকাশ্যেও ছিনতাই হচ্ছে। ১৫ ডিসেম্বর বিকেলে শাহবাগের মতো ব্যস্ত এলাকায় ছিনতাইয়ের শিকার হন মগবাজারের গৃহবধূ আয়েশা আক্তার। স্বামী-সন্তানকে নিয়ে ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় ছুরি ঠেকিয়ে আয়েশার কাছ থেকে আইফোন ও ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে যায় তিন যুবক। তিনি বলেন, ‘শাহবাগে থানার কাছে এমন ঘটনা চিন্তাও করা যায় না। দুই দিন পরও ঘটনাটি মনে হলে আতঙ্কে কেঁপে উঠি আমরা।’
ডাকাতি, চুরিও বেড়েছে। কিন্তু ছিনতাই, ডাকাতি, চুরির সব ঘটনার অভিযোগ থানা পর্যন্ত যাচ্ছে না। ফলে এসব অপরাধের প্রকৃত চিত্রও জানা যাচ্ছে না।
ঢাকাসহ কয়েকটি জেলায় অস্ত্রধারীদের দৌরাত্ম্য এবং প্রকাশ্যে চাপাতি-রামদা নিয়ে হামলা কিংবা দৌড়াদৌড়ির বেশ কিছু ভিডিও ফুটেজ সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে ধারালো অস্ত্র নিয়ে একদল তরুণ এক তরুণীকে ঘিরে ধরে টানাহেঁচড়া করছে, ওড়না টেনে রাস্তায় ফেলে দিচ্ছে আর তরুণী দৌড়ে বাঁচার চেষ্টা করছেন—এমন দৃশ্য দেখে আঁতকে উঠেছেন মানুষ। বনানীতে এক সন্ধ্যায় জটে আটকে থাকা যানবাহনের সামনে চাপাতি হাতে দাঁড়িয়ে থাকা দুই তরুণের ছিনতাইয়ের দৃশ্যও মানুষকে শঙ্কিত করেছে।
নোয়াখালীতে সম্প্রতি মা-মেয়েকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা ছিনতাইয়ের সময় চালককে হত্যা করা হয়েছে। সৈয়দপুরে ব্যাংক থেকে ক্ষুদ্রঋণের টাকা তুলে বের হওয়ার পর এক ব্যক্তি ছিনতাইকারীর হাতে খুন হন।
ঢাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী আবু তালেব আজকের পত্রিকাকে বলেন, নিরাপত্তার দুর্বলতাই এমন ঘটনা বারবার ঘটানোর সুযোগ করে দিচ্ছে। রাস্তাঘাটে এখন আর পুলিশের টহল দেখা যায় না। সড়কবাতি জ্বলে না। কেউ বিপদে পড়ে থানায় গেলে পুলিশ অভিযোগ নেয় না। তাহলে মানুষ সাহস পাবে কীভাবে? এসব দেখে অপরাধীরা অপরাধ করার সাহস পাচ্ছে।
অপরাধ বিশেষজ্ঞরাও প্রায় একই কথা বলছেন। তাঁদের মতে, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারছে না। এ ছাড়া নতুন করে বিরূপ পরিস্থিতিতে পড়ার ভয়েও অনেক পুলিশ সদস্য তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। এসব কারণে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হচ্ছে, যা জনজীবনে উদ্বেগ তৈরি করছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং সমাজ ও অপরাধ বিশ্লেষক তৌহিদুল হক বলেন, আন্দোলনের সময় পুলিশের বিতর্কিত ভূমিকার কারণে তারা নৈতিক সংকটে পড়েছে। একই সঙ্গে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে দ্বিধাগ্রস্ত হওয়ায় অপরাধীরা সুযোগ নিচ্ছে। কিন্তু এভাবে চলতে দেওয়া যায় না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। যেখানে অপরাধ, সেখানেই তাঁদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। তা হলেই মানুষের মন থেকে ভয় কাটতে থাকবে। পরিস্থিতিরও উন্নতি হবে।
শাহরিয়ার হাসান, ঢাকা

ঢাকার কেরানীগঞ্জে গতকাল বৃহস্পতিবার ব্যাংক ডাকাতির চেষ্টা কয়েক ঘণ্টা রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষায় রেখেছিল মানুষকে। বিনা রক্তপাতে ব্যাংকটিতে জিম্মি ঘটনার অবসানে মানুষ স্বস্তি পেলেও দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে ভয়-আতঙ্ক কাটছে না। বরং একের পর এক খুন, ছিনতাই, ডাকাতি, চুরির ঘটনা মানুষের মনে নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কয়েক দিন পুলিশহীন থাকায় চরম অবনতি ঘটেছিল আইনশৃঙ্খলার। কিন্তু পরে থানা সচল ও পুলিশ কাজে ফিরলেও আইনশৃঙ্খলা নিয়ে জনমনে স্বস্তি ফিরছে না। ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটিয়ে মানুষের মধ্যে স্বস্তি ও নিরাপত্তা বোধ ফিরিয়ে আনাই প্রশাসন ও পুলিশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন অপরাধ বিশ্লেষকেরা।
সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিষয়ে জানতে চাইলে গতকাল অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতিতে আমরা জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। পুলিশের কার্যক্রম পুনরুজ্জীবিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশা করি সব ঠিক হয়ে যাবে।’
বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য অনেকে দায়ী করছেন পুলিশের নিষ্ক্রিয়তাকে। তাঁরা বলছেন, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিতর্কিত ভূমিকার জন্য পুলিশের প্রতি মানুষের ক্ষোভ ও আস্থাহীনতার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল ৫ আগস্ট। হামলা, লুট, অগ্নিসংযোগ করা হয়েছিল থানাসহ পুলিশের বিভিন্ন স্থাপনায়। কয়েকজন পুলিশ সদস্য প্রাণও হারিয়েছেন। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার কয়েক দিন পর পুলিশ সদস্যরা কাজে ফিরলেও তাঁদের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা কাটেনি। সহায়তার জন্য সেনাসদস্যরা থাকলেও পুলিশ সদস্যরা এ শঙ্কার কারণে পুরোদমে মাঠে সক্রিয় হচ্ছেন না। এর সুযোগ নিচ্ছে অপরাধীরা। অবনতি হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির বিষয়ে জানতে চাইলে গতকাল পুলিশ সদর দপ্তরের মুখপাত্র ও সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) এনামুল হক সাগর আজকের পত্রিকাকে জানান, ‘মাঠপর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমরা জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে কাজ করছি। দ্রুতই অপরাধপ্রবণতা কমে আসবে।’
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির একটি উদাহরণ গতকাল কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়ায় রূপালী ব্যাংকের জিনজিরা শাখায় তিন কিশোর-তরুণের ব্যাংক ডাকাতির চেষ্টা। খেলনা পিস্তল ও ছুরি নিয়েই তারা ব্যাংকে ঢুকে সবাইকে জিম্মি করে। পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনীর চেষ্টায় প্রায় ৪ ঘণ্টার চেষ্টার আত্মসমর্পণ করে তারা। অবসান ঘটে রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষার।
এর কয়েক ঘণ্টা আগে গত বুধবার রাত ৯টার দিকে হানিফ ফ্লাইওভারের সায়েদাবাদ প্রান্তের ঢালে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে খুন হন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী কামরুল হাসান (২৩)। এর ৩ ঘণ্টার ব্যবধানে রাত ১২টার দিকে মতিঝিলে বিমান অফিসের কাছে মারধরে আহত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল হালিম (৬৩) রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। একই রাতে আফতাবনগরে ছুরিকাঘাতে খুন হন এক গৃহবধূ। তবে পরিবারের অভিযোগ, স্বামীই তাঁকে খুন করেছেন।
বুধবার রাজধানীর অদূরে টঙ্গীতে তুরাগতীরের বিশ্ব ইজতেমা মাঠের দখল নিয়ে তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের সংঘর্ষে চারজন নিহত এবং শতাধিক আহত হন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া তিন শিক্ষার্থী ‘গুপ্তহত্যা’র শিকার হয়েছেন চলতি সপ্তাহে। এ ছাড়া গত মঙ্গলবার চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠান চলাকালে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলায় স্কুলছাত্রসহ দুজন ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছে।
প্রায় প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন স্থানে খুন হচ্ছে। পুলিশের তথ্যই বলছে, গত দুই মাসে দেশে অন্তত ৩৩টি খুন হয়েছে। খুনের পর লাশগুলো ফেলে দেওয়া হয় ঝোপঝাড়ে।
শিক্ষার্থী খুনের বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। মাত্র ৬ দিনের ব্যবধানে দুই বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষার্থী ও অজ্ঞাতনামা একজনের নির্মম হত্যা একদিকে সমাজের নিরাপত্তাব্যবস্থার ভয়ানক চিত্র তুলে ধরেছে; অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যর্থতাকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে।
ছিনতাই হচ্ছে হরহামেশা। রাতে বা নির্জন এলাকায় শুধু নয়, জনবহুল এলাকায় প্রকাশ্যেও ছিনতাই হচ্ছে। ১৫ ডিসেম্বর বিকেলে শাহবাগের মতো ব্যস্ত এলাকায় ছিনতাইয়ের শিকার হন মগবাজারের গৃহবধূ আয়েশা আক্তার। স্বামী-সন্তানকে নিয়ে ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় ছুরি ঠেকিয়ে আয়েশার কাছ থেকে আইফোন ও ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে যায় তিন যুবক। তিনি বলেন, ‘শাহবাগে থানার কাছে এমন ঘটনা চিন্তাও করা যায় না। দুই দিন পরও ঘটনাটি মনে হলে আতঙ্কে কেঁপে উঠি আমরা।’
ডাকাতি, চুরিও বেড়েছে। কিন্তু ছিনতাই, ডাকাতি, চুরির সব ঘটনার অভিযোগ থানা পর্যন্ত যাচ্ছে না। ফলে এসব অপরাধের প্রকৃত চিত্রও জানা যাচ্ছে না।
ঢাকাসহ কয়েকটি জেলায় অস্ত্রধারীদের দৌরাত্ম্য এবং প্রকাশ্যে চাপাতি-রামদা নিয়ে হামলা কিংবা দৌড়াদৌড়ির বেশ কিছু ভিডিও ফুটেজ সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে ধারালো অস্ত্র নিয়ে একদল তরুণ এক তরুণীকে ঘিরে ধরে টানাহেঁচড়া করছে, ওড়না টেনে রাস্তায় ফেলে দিচ্ছে আর তরুণী দৌড়ে বাঁচার চেষ্টা করছেন—এমন দৃশ্য দেখে আঁতকে উঠেছেন মানুষ। বনানীতে এক সন্ধ্যায় জটে আটকে থাকা যানবাহনের সামনে চাপাতি হাতে দাঁড়িয়ে থাকা দুই তরুণের ছিনতাইয়ের দৃশ্যও মানুষকে শঙ্কিত করেছে।
নোয়াখালীতে সম্প্রতি মা-মেয়েকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা ছিনতাইয়ের সময় চালককে হত্যা করা হয়েছে। সৈয়দপুরে ব্যাংক থেকে ক্ষুদ্রঋণের টাকা তুলে বের হওয়ার পর এক ব্যক্তি ছিনতাইকারীর হাতে খুন হন।
ঢাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী আবু তালেব আজকের পত্রিকাকে বলেন, নিরাপত্তার দুর্বলতাই এমন ঘটনা বারবার ঘটানোর সুযোগ করে দিচ্ছে। রাস্তাঘাটে এখন আর পুলিশের টহল দেখা যায় না। সড়কবাতি জ্বলে না। কেউ বিপদে পড়ে থানায় গেলে পুলিশ অভিযোগ নেয় না। তাহলে মানুষ সাহস পাবে কীভাবে? এসব দেখে অপরাধীরা অপরাধ করার সাহস পাচ্ছে।
অপরাধ বিশেষজ্ঞরাও প্রায় একই কথা বলছেন। তাঁদের মতে, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারছে না। এ ছাড়া নতুন করে বিরূপ পরিস্থিতিতে পড়ার ভয়েও অনেক পুলিশ সদস্য তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। এসব কারণে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হচ্ছে, যা জনজীবনে উদ্বেগ তৈরি করছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং সমাজ ও অপরাধ বিশ্লেষক তৌহিদুল হক বলেন, আন্দোলনের সময় পুলিশের বিতর্কিত ভূমিকার কারণে তারা নৈতিক সংকটে পড়েছে। একই সঙ্গে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে দ্বিধাগ্রস্ত হওয়ায় অপরাধীরা সুযোগ নিচ্ছে। কিন্তু এভাবে চলতে দেওয়া যায় না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। যেখানে অপরাধ, সেখানেই তাঁদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। তা হলেই মানুষের মন থেকে ভয় কাটতে থাকবে। পরিস্থিতিরও উন্নতি হবে।

ঢাকার কেরানীগঞ্জে গতকাল বৃহস্পতিবার ব্যাংক ডাকাতির চেষ্টা কয়েক ঘণ্টা রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষায় রেখেছিল মানুষকে। বিনা রক্তপাতে ব্যাংকটিতে জিম্মি ঘটনার অবসানে মানুষ স্বস্তি পেলেও দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে ভয়-আতঙ্ক কাটছে না। বরং একের পর এক খুন, ছিনতাই, ডাকাতি, চুরির ঘটনা মানুষের মনে নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কয়েক দিন পুলিশহীন থাকায় চরম অবনতি ঘটেছিল আইনশৃঙ্খলার। কিন্তু পরে থানা সচল ও পুলিশ কাজে ফিরলেও আইনশৃঙ্খলা নিয়ে জনমনে স্বস্তি ফিরছে না। ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটিয়ে মানুষের মধ্যে স্বস্তি ও নিরাপত্তা বোধ ফিরিয়ে আনাই প্রশাসন ও পুলিশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন অপরাধ বিশ্লেষকেরা।
সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিষয়ে জানতে চাইলে গতকাল অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতিতে আমরা জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। পুলিশের কার্যক্রম পুনরুজ্জীবিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশা করি সব ঠিক হয়ে যাবে।’
বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য অনেকে দায়ী করছেন পুলিশের নিষ্ক্রিয়তাকে। তাঁরা বলছেন, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিতর্কিত ভূমিকার জন্য পুলিশের প্রতি মানুষের ক্ষোভ ও আস্থাহীনতার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল ৫ আগস্ট। হামলা, লুট, অগ্নিসংযোগ করা হয়েছিল থানাসহ পুলিশের বিভিন্ন স্থাপনায়। কয়েকজন পুলিশ সদস্য প্রাণও হারিয়েছেন। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার কয়েক দিন পর পুলিশ সদস্যরা কাজে ফিরলেও তাঁদের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা কাটেনি। সহায়তার জন্য সেনাসদস্যরা থাকলেও পুলিশ সদস্যরা এ শঙ্কার কারণে পুরোদমে মাঠে সক্রিয় হচ্ছেন না। এর সুযোগ নিচ্ছে অপরাধীরা। অবনতি হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির বিষয়ে জানতে চাইলে গতকাল পুলিশ সদর দপ্তরের মুখপাত্র ও সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) এনামুল হক সাগর আজকের পত্রিকাকে জানান, ‘মাঠপর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমরা জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে কাজ করছি। দ্রুতই অপরাধপ্রবণতা কমে আসবে।’
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির একটি উদাহরণ গতকাল কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়ায় রূপালী ব্যাংকের জিনজিরা শাখায় তিন কিশোর-তরুণের ব্যাংক ডাকাতির চেষ্টা। খেলনা পিস্তল ও ছুরি নিয়েই তারা ব্যাংকে ঢুকে সবাইকে জিম্মি করে। পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনীর চেষ্টায় প্রায় ৪ ঘণ্টার চেষ্টার আত্মসমর্পণ করে তারা। অবসান ঘটে রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষার।
এর কয়েক ঘণ্টা আগে গত বুধবার রাত ৯টার দিকে হানিফ ফ্লাইওভারের সায়েদাবাদ প্রান্তের ঢালে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে খুন হন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী কামরুল হাসান (২৩)। এর ৩ ঘণ্টার ব্যবধানে রাত ১২টার দিকে মতিঝিলে বিমান অফিসের কাছে মারধরে আহত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল হালিম (৬৩) রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। একই রাতে আফতাবনগরে ছুরিকাঘাতে খুন হন এক গৃহবধূ। তবে পরিবারের অভিযোগ, স্বামীই তাঁকে খুন করেছেন।
বুধবার রাজধানীর অদূরে টঙ্গীতে তুরাগতীরের বিশ্ব ইজতেমা মাঠের দখল নিয়ে তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের সংঘর্ষে চারজন নিহত এবং শতাধিক আহত হন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া তিন শিক্ষার্থী ‘গুপ্তহত্যা’র শিকার হয়েছেন চলতি সপ্তাহে। এ ছাড়া গত মঙ্গলবার চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠান চলাকালে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলায় স্কুলছাত্রসহ দুজন ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছে।
প্রায় প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন স্থানে খুন হচ্ছে। পুলিশের তথ্যই বলছে, গত দুই মাসে দেশে অন্তত ৩৩টি খুন হয়েছে। খুনের পর লাশগুলো ফেলে দেওয়া হয় ঝোপঝাড়ে।
শিক্ষার্থী খুনের বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। মাত্র ৬ দিনের ব্যবধানে দুই বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষার্থী ও অজ্ঞাতনামা একজনের নির্মম হত্যা একদিকে সমাজের নিরাপত্তাব্যবস্থার ভয়ানক চিত্র তুলে ধরেছে; অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যর্থতাকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে।
ছিনতাই হচ্ছে হরহামেশা। রাতে বা নির্জন এলাকায় শুধু নয়, জনবহুল এলাকায় প্রকাশ্যেও ছিনতাই হচ্ছে। ১৫ ডিসেম্বর বিকেলে শাহবাগের মতো ব্যস্ত এলাকায় ছিনতাইয়ের শিকার হন মগবাজারের গৃহবধূ আয়েশা আক্তার। স্বামী-সন্তানকে নিয়ে ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় ছুরি ঠেকিয়ে আয়েশার কাছ থেকে আইফোন ও ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে যায় তিন যুবক। তিনি বলেন, ‘শাহবাগে থানার কাছে এমন ঘটনা চিন্তাও করা যায় না। দুই দিন পরও ঘটনাটি মনে হলে আতঙ্কে কেঁপে উঠি আমরা।’
ডাকাতি, চুরিও বেড়েছে। কিন্তু ছিনতাই, ডাকাতি, চুরির সব ঘটনার অভিযোগ থানা পর্যন্ত যাচ্ছে না। ফলে এসব অপরাধের প্রকৃত চিত্রও জানা যাচ্ছে না।
ঢাকাসহ কয়েকটি জেলায় অস্ত্রধারীদের দৌরাত্ম্য এবং প্রকাশ্যে চাপাতি-রামদা নিয়ে হামলা কিংবা দৌড়াদৌড়ির বেশ কিছু ভিডিও ফুটেজ সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে ধারালো অস্ত্র নিয়ে একদল তরুণ এক তরুণীকে ঘিরে ধরে টানাহেঁচড়া করছে, ওড়না টেনে রাস্তায় ফেলে দিচ্ছে আর তরুণী দৌড়ে বাঁচার চেষ্টা করছেন—এমন দৃশ্য দেখে আঁতকে উঠেছেন মানুষ। বনানীতে এক সন্ধ্যায় জটে আটকে থাকা যানবাহনের সামনে চাপাতি হাতে দাঁড়িয়ে থাকা দুই তরুণের ছিনতাইয়ের দৃশ্যও মানুষকে শঙ্কিত করেছে।
নোয়াখালীতে সম্প্রতি মা-মেয়েকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা ছিনতাইয়ের সময় চালককে হত্যা করা হয়েছে। সৈয়দপুরে ব্যাংক থেকে ক্ষুদ্রঋণের টাকা তুলে বের হওয়ার পর এক ব্যক্তি ছিনতাইকারীর হাতে খুন হন।
ঢাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী আবু তালেব আজকের পত্রিকাকে বলেন, নিরাপত্তার দুর্বলতাই এমন ঘটনা বারবার ঘটানোর সুযোগ করে দিচ্ছে। রাস্তাঘাটে এখন আর পুলিশের টহল দেখা যায় না। সড়কবাতি জ্বলে না। কেউ বিপদে পড়ে থানায় গেলে পুলিশ অভিযোগ নেয় না। তাহলে মানুষ সাহস পাবে কীভাবে? এসব দেখে অপরাধীরা অপরাধ করার সাহস পাচ্ছে।
অপরাধ বিশেষজ্ঞরাও প্রায় একই কথা বলছেন। তাঁদের মতে, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারছে না। এ ছাড়া নতুন করে বিরূপ পরিস্থিতিতে পড়ার ভয়েও অনেক পুলিশ সদস্য তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। এসব কারণে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হচ্ছে, যা জনজীবনে উদ্বেগ তৈরি করছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং সমাজ ও অপরাধ বিশ্লেষক তৌহিদুল হক বলেন, আন্দোলনের সময় পুলিশের বিতর্কিত ভূমিকার কারণে তারা নৈতিক সংকটে পড়েছে। একই সঙ্গে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে দ্বিধাগ্রস্ত হওয়ায় অপরাধীরা সুযোগ নিচ্ছে। কিন্তু এভাবে চলতে দেওয়া যায় না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। যেখানে অপরাধ, সেখানেই তাঁদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। তা হলেই মানুষের মন থেকে ভয় কাটতে থাকবে। পরিস্থিতিরও উন্নতি হবে।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের পর ভল্ট ভেঙে অস্ত্র লুটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত কয়েকটি ঘটনায় পুলিশের অস্ত্র ও গুলি খোয়া যাওয়ার পর পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো।
৩৪ মিনিট আগে
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ নিয়ে নিজেদের অনৈক্য-বিভেদ দূর করে সমঝোতার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর মধ্যে আজ বুধবার কেটে যাচ্ছে দুই দিন। কিন্তু এ সংকট নিরসনে দলগুলোর মধ্যে কোনো হেলদোল আছে বলে মনে হচ্ছে না।
১১ ঘণ্টা আগে
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তাব বাতিলের ব্যাখ্যা দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। অল্পসংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে কার্যকর কোনো সুফল বয়ে আনবে না বিধায় এটি বাতিল করা হয়েছে মর্মে জানানো হয়।
১৬ ঘণ্টা আগে
সারা দেশের অধস্তন আদালতের হাজারের বেশি বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা পদোন্নতির জন্য প্যানেলভুক্ত হয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। আজ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের সভাপতিত্বে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের সব বিচারপতির অংশগ্রহণে...
১৭ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

পুলিশের খোয়া যাওয়া অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধারে নগদ অর্থ পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। উদ্ধার করা অস্ত্রের ধরন অনুযায়ী নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দেওয়া হবে।
আজ বুধবার পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এলএমজি (লাইট মেশিনগান) উদ্ধার করলে পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হবে ৫ লাখ টাকা, এসএমজি (সাব মেশিনগান) উদ্ধারে দেড় লাখ টাকা, চায়না রাইফেল উদ্ধারে ১ লাখ টাকা এবং পিস্তল বা শটগান উদ্ধারে পুরস্কার নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। এ ছাড়া উদ্ধার করা প্রতিটি গুলির জন্য পুরস্কার দেওয়া হবে ৫০০ টাকা করে।
এর আগে পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, এসব অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধারে যাঁরা পুলিশকে তথ্য দেবেন, তাঁদের পরিচয় ও তথ্য গোপন রাখা হবে এবং যথাযথ যাচাইয়ের পর পুরস্কার দেওয়া হবে।
সম্প্রতি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের পর ভল্ট ভেঙে অস্ত্র লুটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত কয়েকটি ঘটনায় পুলিশের অস্ত্র ও গুলি খোয়া যাওয়ার পর পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, পুরস্কার ঘোষণার লক্ষ্য হলো দ্রুত এসব অস্ত্র উদ্ধার এবং অস্ত্রের অপব্যবহার ঠেকানো।

পুলিশের খোয়া যাওয়া অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধারে নগদ অর্থ পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। উদ্ধার করা অস্ত্রের ধরন অনুযায়ী নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দেওয়া হবে।
আজ বুধবার পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এলএমজি (লাইট মেশিনগান) উদ্ধার করলে পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হবে ৫ লাখ টাকা, এসএমজি (সাব মেশিনগান) উদ্ধারে দেড় লাখ টাকা, চায়না রাইফেল উদ্ধারে ১ লাখ টাকা এবং পিস্তল বা শটগান উদ্ধারে পুরস্কার নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। এ ছাড়া উদ্ধার করা প্রতিটি গুলির জন্য পুরস্কার দেওয়া হবে ৫০০ টাকা করে।
এর আগে পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, এসব অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধারে যাঁরা পুলিশকে তথ্য দেবেন, তাঁদের পরিচয় ও তথ্য গোপন রাখা হবে এবং যথাযথ যাচাইয়ের পর পুরস্কার দেওয়া হবে।
সম্প্রতি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের পর ভল্ট ভেঙে অস্ত্র লুটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত কয়েকটি ঘটনায় পুলিশের অস্ত্র ও গুলি খোয়া যাওয়ার পর পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, পুরস্কার ঘোষণার লক্ষ্য হলো দ্রুত এসব অস্ত্র উদ্ধার এবং অস্ত্রের অপব্যবহার ঠেকানো।

ঢাকার কেরানীগঞ্জে গতকাল বৃহস্পতিবার ব্যাংক ডাকাতির চেষ্টা কয়েক ঘণ্টা রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষায় রেখেছিল মানুষকে। বিনা রক্তপাতে ব্যাংকটিতে জিম্মি ঘটনার অবসানে মানুষ স্বস্তি পেলেও দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে ভয়-আতঙ্ক কাটছে না। বরং একের পর এক খুন, ছিনতাই, ডাকাতি, চুরির ঘটনা মানুষের মনে...
২০ ডিসেম্বর ২০২৪
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ নিয়ে নিজেদের অনৈক্য-বিভেদ দূর করে সমঝোতার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর মধ্যে আজ বুধবার কেটে যাচ্ছে দুই দিন। কিন্তু এ সংকট নিরসনে দলগুলোর মধ্যে কোনো হেলদোল আছে বলে মনে হচ্ছে না।
১১ ঘণ্টা আগে
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তাব বাতিলের ব্যাখ্যা দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। অল্পসংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে কার্যকর কোনো সুফল বয়ে আনবে না বিধায় এটি বাতিল করা হয়েছে মর্মে জানানো হয়।
১৬ ঘণ্টা আগে
সারা দেশের অধস্তন আদালতের হাজারের বেশি বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা পদোন্নতির জন্য প্যানেলভুক্ত হয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। আজ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের সভাপতিত্বে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের সব বিচারপতির অংশগ্রহণে...
১৭ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ নিয়ে নিজেদের অনৈক্য-বিভেদ দূর করে সমঝোতার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর মধ্যে আজ বুধবার কেটে যাচ্ছে দুই দিন। কিন্তু এ সংকট নিরসনে দলগুলোর মধ্যে কোনো হেলদোল আছে বলে মনে হচ্ছে না।
দলগুলোর পক্ষ থেকে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত আলোচনার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সরকারের অনুরোধের এক দিন আগে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে অন্য দলগুলোর প্রতি আলোচনার আহ্বান জানানো হয়েছিল মুখে মুখে। কিন্তু এ আহ্বান বাস্তবায়নে গতকাল পর্যন্ত কার্যত কোনো উদ্যোগ নেয়নি দলটি।
জামায়াত তবু আহ্বান জানিয়েছে। বিএনপি নিজের দিক থেকে কোনো কথা বলেনি, উদ্যোগও নেয়নি। বরং সরকারের আহ্বানে দলটি সাড়া দিতে চাইছে না বলে দলটির সূত্র জানিয়েছে। আর সংকট সমাধানে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে বলে মনে করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও গণতন্ত্র মঞ্চ।
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ নিয়ে সংকট কাটাতে গত সোমবার জরুরি বৈঠকে বসে উপদেষ্টা পরিষদ। সেই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হয়, এ নিয়ে সরকারের দিক থেকে আর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হবে না। এখন রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সমঝোতায় আসুক। এ জন্য দলগুলোকে এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়। এর মধ্যে দলগুলো ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে না পারলে সরকার নিজেদের মতো করে সিদ্ধান্ত দেবে।
জুলাই সনদ ইস্যুতে গত মার্চ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন আলোচনা করছে। সেখানে অনেক ইস্যুতে একমত হলেও গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে বিএনপিসহ বেশ কিছু দলের আপত্তি ছিল। ৩১ আগস্ট শেষ হওয়া দ্বিতীয় ধাপের সংলাপে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, নির্বাচনে বিজয়ী হলে আপত্তি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারবে দলগুলো। তবে সে সময় গণভোট নিয়ে আলোচনা হয়নি। বাস্তবায়ন প্রশ্নে তৃতীয় ধাপে পাঁচ দিন সংলাপ করে দলগুলো। সেখানে গণভোটের বিষয়ে একমত হয় তারা। তবে বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে দলগুলো সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি।
গত ৮ অক্টোবর অনুষ্ঠিত সর্বশেষ সংলাপে জানানো হয়, দলগুলোর মত ও বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে সরকারের কাছে কমিশন বাস্তবায়নের উপায় জমা দেবে; যেখানে বিশেষজ্ঞরা গণভোটে আপত্তি না রাখার বিষয়ে মত দেন। তাঁদের যুক্তি ছিল, জনগণ সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী, সেখানে আপত্তির বিধান রাখা যুক্তিযুক্ত না। ২৭ অক্টোবর সরকারের কাছে সুপারিশ জমা দেয় কমিশন। এরপর শুরু হয় নতুন বিতর্ক। ছয় মাসে যেখানে দলগুলো একমত হতে পারেনি, সেখানে এক সপ্তাহে দলগুলো আলোচনা করে ঐক্যবদ্ধ হবে, তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অনেকে।
আলোচনার উদ্যোগ নেবে না বিএনপি
আলোচনা করে সমঝোতায় আসতে সরকারের অনুরোধে বিএনপি কোনো উদ্যোগ নেবে না বলে দলটির একাধিক সূত্র গতকাল জানিয়েছে। দলটির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলছেন, বাস্তবায়ন আদেশে তাদের ওপর অনেক কিছু চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। এখন আলোচনার নামে দায়ভার চাপানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
সরকারের এমন অনুরোধে তাদের দল সাড়া দেবে না। এ জন্য আলোচনায় বসার জন্য কোনো দলকে ডাকবে না বিএনপি। কেউ আলোচনার জন্য দাওয়াত দিলে বিবেচনা করা হবে কি না, দলীয় ফোরামে আলোচনা করে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সরকার রাজনৈতিক দলগুলোকে একসঙ্গে বসার বিষয়ে যে অনুরোধ করেছে, এ ব্যাপারে আমরা কোনো আলোচনা করতে পারিনি। সোমবার দলের প্রার্থী মনোনয়ন এবং প্রেস ব্রিফিং নিয়ে ব্যস্ত থাকায় আলোচনার সুযোগ হয়নি। আলোচনা করে তারপর জানানো হবে।’
আহ্বান জানিয়েছে জামায়াত
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত জামায়াতে ইসলামী। যদিও সরকারের আহ্বানের আগেই আলোচনার জন্য অন্য দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা। তবে দলটির অনুরোধে গতকাল পর্যন্ত কোনো দল সাড়া দেয়নি বলে জানা গেছে।
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ গতকাল বলেন, ‘সরকার রাজনৈতিক দলগুলোকে অনুরোধ জানিয়েছে একসঙ্গে বসার। সরকারের আগেই আমরা আহ্বান করেছি। এখনো কারও সাড়া পাইনি আমরা, হয়তো সামনে পাব।’
এর আগে গত রোববার রাজধানীতে সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী বিএনপির সঙ্গে কোনো ঝগড়ায় লিপ্ত হতে চায় না। যা-ই করছেন, এবার বন্ধ করুন। আসুন, আমরা একসঙ্গে বসি। দেশের এই পরিস্থিতি নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করি।’
আর গতকাল মঙ্গলবার বিদেশ সফর শেষে ঢাকায় ফিরে বিমানবন্দরে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান বলেন, ‘সরকার অনুরোধ করেছে, এক সপ্তাহ সময়ের ভেতরে রাজনৈতিক দলগুলো বসে যদি একটা ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারে, সরকারের জন্য এটা ভালো। আমরাই সবার আগে আমাদের নায়েবে আমিরের মাধ্যমে আহ্বান জানিয়েছি যে আসুন, আমরা খোলামেলা আলোচনা করে একটা সমাধানে পৌঁছাই দেশ ও জাতির স্বার্থে। আমরা আশা করি, অন্যরা আমাদের এই আহ্বানে সাড়া দেবেন।’
সরকারের কোর্টে বল ঠেলছে এনসিপি
রাজনৈতিক দলগুলোর কোর্টে বল ঠেলে না দিয়ে সরকারকেই জুলাই সনদ আদেশ জারির উদ্যোগ নিতে হবে বলে মনে করে এনসিপি। তবে প্রয়োজনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে আলোচনায় যেতে তাঁরা প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন দলটির নেতারা। যদিও এখন পর্যন্ত এনসিপি কোনো রাজনৈতিক দলকে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেয়নি বলে জানা গেছে। আবার এনসিপিকেও কেউ প্রস্তাব দেয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনসিপির একাধিক নেতা জানিয়েছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ নিয়ে সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলাপ চলছে। বাস্তবায়ন আদেশ জারির জন্য সরকারের ওপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে চাপ প্রয়োগ করছে এনসিপি।
এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘সংস্কার বাস্তবায়নের বিষয়ে সরকার বা ঐকমত্য কমিশনকে রেফারি করেছে অনেকে। কিন্তু আমরা দেখি, সরকার ও ঐকমত্য কমিশন সংস্কার বাস্তবায়নের ব্যাপারে রেফারি না। তারা সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী। তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে সংস্কারের পক্ষে। যদি তারা সংস্কারের পক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তারা তাদের ম্যান্ডেট থেকে বিচ্যুত হয়ে যাবে। সরকারের এখন দায়িত্ব হলো ঐকমত্য কমিশন যে প্রস্তাব দিয়েছে, সেই প্রস্তাবে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি করা।’
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, ‘জুলাই সনদের বিষয়ে সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে। তবে প্রয়োজনে আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত আছি।’
গণতন্ত্র মঞ্চের ভাবনা
জুলাই সনদকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অচলাবস্থার জন্য ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এবং অন্তর্বর্তী সরকারই দায়ী বলে জানিয়েছে ৬টি রাজনৈতিক দলের জোট গণতন্ত্র মঞ্চ। মঞ্চের নেতারা বলেছেন, এই সংকট সমাধানের দায়িত্বও সরকারকেই নিতে হবে। একই সঙ্গে গণতন্ত্র মঞ্চ দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য তৈরির চেষ্টায় ধারাবাহিক আলোচনা চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি হাসনাত কাইয়ুম বলেন, ‘এই সংকট সমাধানের জন্য সরকারের যে উদ্যোগ নেওয়া দরকার ছিল, তা না নিয়ে সরকার অনেকটা মান-অভিমানের মতো অবস্থান নিয়েছে। সরকারের এমন মনোভাব মানুষের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে। সংস্কার কি হবে না? সংস্কার না হলে নির্বাচন কি হবে? যাদের আমরা পরাজিত করেছি, তারা আবার ফিরে আসবে?’
আর নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমদুর রহমান মান্না এক বিবৃতিতে বলেছেন, সরকার কোনোভাবেই দায়িত্ব এড়াতে পারে না। সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে। সরকারকে রাজনৈতিক দল বিশেষ করে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে আলাদাভাবে আলোচনা করে সমাধানের পথ তৈরি করতে হবে।

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ নিয়ে নিজেদের অনৈক্য-বিভেদ দূর করে সমঝোতার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর মধ্যে আজ বুধবার কেটে যাচ্ছে দুই দিন। কিন্তু এ সংকট নিরসনে দলগুলোর মধ্যে কোনো হেলদোল আছে বলে মনে হচ্ছে না।
দলগুলোর পক্ষ থেকে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত আলোচনার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সরকারের অনুরোধের এক দিন আগে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে অন্য দলগুলোর প্রতি আলোচনার আহ্বান জানানো হয়েছিল মুখে মুখে। কিন্তু এ আহ্বান বাস্তবায়নে গতকাল পর্যন্ত কার্যত কোনো উদ্যোগ নেয়নি দলটি।
জামায়াত তবু আহ্বান জানিয়েছে। বিএনপি নিজের দিক থেকে কোনো কথা বলেনি, উদ্যোগও নেয়নি। বরং সরকারের আহ্বানে দলটি সাড়া দিতে চাইছে না বলে দলটির সূত্র জানিয়েছে। আর সংকট সমাধানে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে বলে মনে করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও গণতন্ত্র মঞ্চ।
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ নিয়ে সংকট কাটাতে গত সোমবার জরুরি বৈঠকে বসে উপদেষ্টা পরিষদ। সেই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হয়, এ নিয়ে সরকারের দিক থেকে আর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হবে না। এখন রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সমঝোতায় আসুক। এ জন্য দলগুলোকে এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়। এর মধ্যে দলগুলো ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে না পারলে সরকার নিজেদের মতো করে সিদ্ধান্ত দেবে।
জুলাই সনদ ইস্যুতে গত মার্চ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন আলোচনা করছে। সেখানে অনেক ইস্যুতে একমত হলেও গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে বিএনপিসহ বেশ কিছু দলের আপত্তি ছিল। ৩১ আগস্ট শেষ হওয়া দ্বিতীয় ধাপের সংলাপে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, নির্বাচনে বিজয়ী হলে আপত্তি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারবে দলগুলো। তবে সে সময় গণভোট নিয়ে আলোচনা হয়নি। বাস্তবায়ন প্রশ্নে তৃতীয় ধাপে পাঁচ দিন সংলাপ করে দলগুলো। সেখানে গণভোটের বিষয়ে একমত হয় তারা। তবে বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে দলগুলো সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি।
গত ৮ অক্টোবর অনুষ্ঠিত সর্বশেষ সংলাপে জানানো হয়, দলগুলোর মত ও বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে সরকারের কাছে কমিশন বাস্তবায়নের উপায় জমা দেবে; যেখানে বিশেষজ্ঞরা গণভোটে আপত্তি না রাখার বিষয়ে মত দেন। তাঁদের যুক্তি ছিল, জনগণ সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী, সেখানে আপত্তির বিধান রাখা যুক্তিযুক্ত না। ২৭ অক্টোবর সরকারের কাছে সুপারিশ জমা দেয় কমিশন। এরপর শুরু হয় নতুন বিতর্ক। ছয় মাসে যেখানে দলগুলো একমত হতে পারেনি, সেখানে এক সপ্তাহে দলগুলো আলোচনা করে ঐক্যবদ্ধ হবে, তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অনেকে।
আলোচনার উদ্যোগ নেবে না বিএনপি
আলোচনা করে সমঝোতায় আসতে সরকারের অনুরোধে বিএনপি কোনো উদ্যোগ নেবে না বলে দলটির একাধিক সূত্র গতকাল জানিয়েছে। দলটির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলছেন, বাস্তবায়ন আদেশে তাদের ওপর অনেক কিছু চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। এখন আলোচনার নামে দায়ভার চাপানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
সরকারের এমন অনুরোধে তাদের দল সাড়া দেবে না। এ জন্য আলোচনায় বসার জন্য কোনো দলকে ডাকবে না বিএনপি। কেউ আলোচনার জন্য দাওয়াত দিলে বিবেচনা করা হবে কি না, দলীয় ফোরামে আলোচনা করে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সরকার রাজনৈতিক দলগুলোকে একসঙ্গে বসার বিষয়ে যে অনুরোধ করেছে, এ ব্যাপারে আমরা কোনো আলোচনা করতে পারিনি। সোমবার দলের প্রার্থী মনোনয়ন এবং প্রেস ব্রিফিং নিয়ে ব্যস্ত থাকায় আলোচনার সুযোগ হয়নি। আলোচনা করে তারপর জানানো হবে।’
আহ্বান জানিয়েছে জামায়াত
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত জামায়াতে ইসলামী। যদিও সরকারের আহ্বানের আগেই আলোচনার জন্য অন্য দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা। তবে দলটির অনুরোধে গতকাল পর্যন্ত কোনো দল সাড়া দেয়নি বলে জানা গেছে।
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ গতকাল বলেন, ‘সরকার রাজনৈতিক দলগুলোকে অনুরোধ জানিয়েছে একসঙ্গে বসার। সরকারের আগেই আমরা আহ্বান করেছি। এখনো কারও সাড়া পাইনি আমরা, হয়তো সামনে পাব।’
এর আগে গত রোববার রাজধানীতে সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী বিএনপির সঙ্গে কোনো ঝগড়ায় লিপ্ত হতে চায় না। যা-ই করছেন, এবার বন্ধ করুন। আসুন, আমরা একসঙ্গে বসি। দেশের এই পরিস্থিতি নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করি।’
আর গতকাল মঙ্গলবার বিদেশ সফর শেষে ঢাকায় ফিরে বিমানবন্দরে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান বলেন, ‘সরকার অনুরোধ করেছে, এক সপ্তাহ সময়ের ভেতরে রাজনৈতিক দলগুলো বসে যদি একটা ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারে, সরকারের জন্য এটা ভালো। আমরাই সবার আগে আমাদের নায়েবে আমিরের মাধ্যমে আহ্বান জানিয়েছি যে আসুন, আমরা খোলামেলা আলোচনা করে একটা সমাধানে পৌঁছাই দেশ ও জাতির স্বার্থে। আমরা আশা করি, অন্যরা আমাদের এই আহ্বানে সাড়া দেবেন।’
সরকারের কোর্টে বল ঠেলছে এনসিপি
রাজনৈতিক দলগুলোর কোর্টে বল ঠেলে না দিয়ে সরকারকেই জুলাই সনদ আদেশ জারির উদ্যোগ নিতে হবে বলে মনে করে এনসিপি। তবে প্রয়োজনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে আলোচনায় যেতে তাঁরা প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন দলটির নেতারা। যদিও এখন পর্যন্ত এনসিপি কোনো রাজনৈতিক দলকে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেয়নি বলে জানা গেছে। আবার এনসিপিকেও কেউ প্রস্তাব দেয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনসিপির একাধিক নেতা জানিয়েছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ নিয়ে সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলাপ চলছে। বাস্তবায়ন আদেশ জারির জন্য সরকারের ওপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে চাপ প্রয়োগ করছে এনসিপি।
এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘সংস্কার বাস্তবায়নের বিষয়ে সরকার বা ঐকমত্য কমিশনকে রেফারি করেছে অনেকে। কিন্তু আমরা দেখি, সরকার ও ঐকমত্য কমিশন সংস্কার বাস্তবায়নের ব্যাপারে রেফারি না। তারা সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী। তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে সংস্কারের পক্ষে। যদি তারা সংস্কারের পক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তারা তাদের ম্যান্ডেট থেকে বিচ্যুত হয়ে যাবে। সরকারের এখন দায়িত্ব হলো ঐকমত্য কমিশন যে প্রস্তাব দিয়েছে, সেই প্রস্তাবে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি করা।’
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, ‘জুলাই সনদের বিষয়ে সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে। তবে প্রয়োজনে আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত আছি।’
গণতন্ত্র মঞ্চের ভাবনা
জুলাই সনদকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অচলাবস্থার জন্য ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এবং অন্তর্বর্তী সরকারই দায়ী বলে জানিয়েছে ৬টি রাজনৈতিক দলের জোট গণতন্ত্র মঞ্চ। মঞ্চের নেতারা বলেছেন, এই সংকট সমাধানের দায়িত্বও সরকারকেই নিতে হবে। একই সঙ্গে গণতন্ত্র মঞ্চ দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য তৈরির চেষ্টায় ধারাবাহিক আলোচনা চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি হাসনাত কাইয়ুম বলেন, ‘এই সংকট সমাধানের জন্য সরকারের যে উদ্যোগ নেওয়া দরকার ছিল, তা না নিয়ে সরকার অনেকটা মান-অভিমানের মতো অবস্থান নিয়েছে। সরকারের এমন মনোভাব মানুষের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে। সংস্কার কি হবে না? সংস্কার না হলে নির্বাচন কি হবে? যাদের আমরা পরাজিত করেছি, তারা আবার ফিরে আসবে?’
আর নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমদুর রহমান মান্না এক বিবৃতিতে বলেছেন, সরকার কোনোভাবেই দায়িত্ব এড়াতে পারে না। সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে। সরকারকে রাজনৈতিক দল বিশেষ করে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে আলাদাভাবে আলোচনা করে সমাধানের পথ তৈরি করতে হবে।

ঢাকার কেরানীগঞ্জে গতকাল বৃহস্পতিবার ব্যাংক ডাকাতির চেষ্টা কয়েক ঘণ্টা রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষায় রেখেছিল মানুষকে। বিনা রক্তপাতে ব্যাংকটিতে জিম্মি ঘটনার অবসানে মানুষ স্বস্তি পেলেও দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে ভয়-আতঙ্ক কাটছে না। বরং একের পর এক খুন, ছিনতাই, ডাকাতি, চুরির ঘটনা মানুষের মনে...
২০ ডিসেম্বর ২০২৪
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের পর ভল্ট ভেঙে অস্ত্র লুটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত কয়েকটি ঘটনায় পুলিশের অস্ত্র ও গুলি খোয়া যাওয়ার পর পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো।
৩৪ মিনিট আগে
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তাব বাতিলের ব্যাখ্যা দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। অল্পসংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে কার্যকর কোনো সুফল বয়ে আনবে না বিধায় এটি বাতিল করা হয়েছে মর্মে জানানো হয়।
১৬ ঘণ্টা আগে
সারা দেশের অধস্তন আদালতের হাজারের বেশি বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা পদোন্নতির জন্য প্যানেলভুক্ত হয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। আজ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের সভাপতিত্বে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের সব বিচারপতির অংশগ্রহণে...
১৭ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তাব বাতিলের ব্যাখ্যা দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। অল্পসংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে কার্যকর কোনো সুফল বয়ে আনবে না বিধায় এটি বাতিল করা হয়েছে মর্মে জানানো হয়।
আজ মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজ থেকে দেওয়া এক পোস্টে এমনটি জানানো হয়েছে।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তাব বাতিলের বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারের নজরে এসেছে।
সারা দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ২ হাজার ৫০০ ক্লাস্টারে সমসংখ্যক শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি সচিব কমিটির সুপারিশে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে।
সচিব কমিটি মনে করে, প্রকল্পটির পরিকল্পনায় ত্রুটি ছিল। এত অল্পসংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে কার্যকর কোনো সুফল বয়ে আনবে না এবং এতে বৈষম্যের সৃষ্টি হবে। সারা দেশে ৬৫ হাজার ৫৬৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ের অধিকাংশেই প্রস্তাবিত নিয়োগ বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। ক্লাস্টারভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হলে একই শিক্ষককে ২০টির বেশি বিদ্যালয়ে যুগপৎভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। এর ফলে তাঁর পক্ষে কর্মঘণ্টা ম্যানেজ করা সম্ভব হবে না বলে সচিব কমিটি মনে করে।
পরে অর্থের সংস্থান সাপেক্ষে সব স্কুলে এ রকম নতুন বিষয়ের শিক্ষকের পদ সৃজন ও সেসব পদে নিয়োগদানের বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে বলে কমিটি অভিমত ব্যক্ত করেছে।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তাব বাতিলের ব্যাখ্যা দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। অল্পসংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে কার্যকর কোনো সুফল বয়ে আনবে না বিধায় এটি বাতিল করা হয়েছে মর্মে জানানো হয়।
আজ মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজ থেকে দেওয়া এক পোস্টে এমনটি জানানো হয়েছে।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তাব বাতিলের বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারের নজরে এসেছে।
সারা দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ২ হাজার ৫০০ ক্লাস্টারে সমসংখ্যক শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি সচিব কমিটির সুপারিশে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে।
সচিব কমিটি মনে করে, প্রকল্পটির পরিকল্পনায় ত্রুটি ছিল। এত অল্পসংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে কার্যকর কোনো সুফল বয়ে আনবে না এবং এতে বৈষম্যের সৃষ্টি হবে। সারা দেশে ৬৫ হাজার ৫৬৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ের অধিকাংশেই প্রস্তাবিত নিয়োগ বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। ক্লাস্টারভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হলে একই শিক্ষককে ২০টির বেশি বিদ্যালয়ে যুগপৎভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। এর ফলে তাঁর পক্ষে কর্মঘণ্টা ম্যানেজ করা সম্ভব হবে না বলে সচিব কমিটি মনে করে।
পরে অর্থের সংস্থান সাপেক্ষে সব স্কুলে এ রকম নতুন বিষয়ের শিক্ষকের পদ সৃজন ও সেসব পদে নিয়োগদানের বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে বলে কমিটি অভিমত ব্যক্ত করেছে।

ঢাকার কেরানীগঞ্জে গতকাল বৃহস্পতিবার ব্যাংক ডাকাতির চেষ্টা কয়েক ঘণ্টা রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষায় রেখেছিল মানুষকে। বিনা রক্তপাতে ব্যাংকটিতে জিম্মি ঘটনার অবসানে মানুষ স্বস্তি পেলেও দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে ভয়-আতঙ্ক কাটছে না। বরং একের পর এক খুন, ছিনতাই, ডাকাতি, চুরির ঘটনা মানুষের মনে...
২০ ডিসেম্বর ২০২৪
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের পর ভল্ট ভেঙে অস্ত্র লুটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত কয়েকটি ঘটনায় পুলিশের অস্ত্র ও গুলি খোয়া যাওয়ার পর পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো।
৩৪ মিনিট আগে
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ নিয়ে নিজেদের অনৈক্য-বিভেদ দূর করে সমঝোতার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর মধ্যে আজ বুধবার কেটে যাচ্ছে দুই দিন। কিন্তু এ সংকট নিরসনে দলগুলোর মধ্যে কোনো হেলদোল আছে বলে মনে হচ্ছে না।
১১ ঘণ্টা আগে
সারা দেশের অধস্তন আদালতের হাজারের বেশি বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা পদোন্নতির জন্য প্যানেলভুক্ত হয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। আজ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের সভাপতিত্বে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের সব বিচারপতির অংশগ্রহণে...
১৭ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সারা দেশের অধস্তন আদালতের হাজারের বেশি বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা পদোন্নতির জন্য প্যানেলভুক্ত হয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। আজ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের সভাপতিত্বে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের সব বিচারপতির অংশগ্রহণে ফুল কোর্ট সভা অনুষ্ঠিত হয়। সে সভায় তাঁদের পদোন্নতির জন্য প্যানেলভুক্ত করা হয়।
সুপ্রিম কোর্টে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পদোন্নতির জন্য প্যানেলে ছিলেন– অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ থেকে জেলা ও দায়রা জজ পদের জন্য ৩৪৫ জন, যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ থেকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পদে ২০৭ এবং সিনিয়র সহকারী জজ থেকে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ পদে ৫৫১ জন। সব মিলিয়ে পদোন্নতির প্যানেলে ১ হাজার ১০৩ জন বিচারিক কর্মকর্তার নাম থাকলেও নানা কারণে বেশ কয়েকজনের নাম অনুমোদন হয়নি।
২০২৬ সালের সুপ্রিম কোর্টের ক্যালেন্ডারও ফুল কোর্ট সভায় অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছিল। তবে সরকারি ক্যালেন্ডার এখনো প্রকাশিত না হওয়ায় তা অনুমোদিত হয়নি।
সম্প্রতি ১ হাজার ১০৩ জন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাকে পদোন্নতির প্যানেলভুক্ত করতে আইন মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাঠানো হয়। পদোন্নতির প্যানেলে ছিল কয়েকজন বিতর্কিত বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তার নাম, যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে অনুসন্ধান চলমান।
বিচারকদের পদোন্নতি যেভাবে হয়
সব মন্ত্রণালয়ে পদোন্নতির জন্য ডিপিসি (বিভাগীয় পদোন্নতি কমিটি) থাকে। ওই কমিটি পদোন্নতির প্যানেল চূড়ান্ত করার পর তা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হয়ে রাষ্ট্রপতির দপ্তরে যায়। রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিলে এক দিনেই প্যানেলের সবার পদোন্নতির জিও জারি করা হয়।
তবে বিচারকদের ক্ষেত্রে প্যানেল চূড়ান্ত করার পর তা সুপ্রিম কোর্টে পাঠানো হয়। বাছাই কমিটির মাধ্যমে বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভায় ওঠে। সভায় অনুমোদন পাওয়ার পর তা আবার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। মন্ত্রণালয় থেকে তা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হয়ে রাষ্ট্রপতির দপ্তরে যায়। রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিলে ওই প্যানেল আইন মন্ত্রণালয়ে সংরক্ষিত থাকে এবং পদ খালি হওয়ার পর সময়ে সময়ে জিও জারি করা হয়।
বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস বিধিমালা ২০০৭ অনুযায়ী, সিনিয়র সহকারী জজ পদে পদোন্নতির জন্য সহকারী জজদের এই পদে চার বছর দায়িত্ব পালনের শর্ত পূরণ করতে হয়। সিনিয়র সহকারী জজদের যুগ্ম জেলা জজ পদে পদোন্নতির জন্য দুই বছর, যুগ্ম জেলা জজ থেকে অতিরিক্ত জেলা জজ পদে পদোন্নতির জন্য দুই বছর এবং অতিরিক্ত জেলা জজ থেকে জেলা জজ পদে পদোন্নতির জন্য দুই বছরের শর্ত পূরণ করতে হয়। তবে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে এই নিয়ম মানা হয় না। অনেকেই বছরের পর বছর প্যানেলভুক্ত হয়ে থাকেন।

সারা দেশের অধস্তন আদালতের হাজারের বেশি বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা পদোন্নতির জন্য প্যানেলভুক্ত হয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। আজ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের সভাপতিত্বে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের সব বিচারপতির অংশগ্রহণে ফুল কোর্ট সভা অনুষ্ঠিত হয়। সে সভায় তাঁদের পদোন্নতির জন্য প্যানেলভুক্ত করা হয়।
সুপ্রিম কোর্টে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পদোন্নতির জন্য প্যানেলে ছিলেন– অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ থেকে জেলা ও দায়রা জজ পদের জন্য ৩৪৫ জন, যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ থেকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পদে ২০৭ এবং সিনিয়র সহকারী জজ থেকে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ পদে ৫৫১ জন। সব মিলিয়ে পদোন্নতির প্যানেলে ১ হাজার ১০৩ জন বিচারিক কর্মকর্তার নাম থাকলেও নানা কারণে বেশ কয়েকজনের নাম অনুমোদন হয়নি।
২০২৬ সালের সুপ্রিম কোর্টের ক্যালেন্ডারও ফুল কোর্ট সভায় অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছিল। তবে সরকারি ক্যালেন্ডার এখনো প্রকাশিত না হওয়ায় তা অনুমোদিত হয়নি।
সম্প্রতি ১ হাজার ১০৩ জন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাকে পদোন্নতির প্যানেলভুক্ত করতে আইন মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাঠানো হয়। পদোন্নতির প্যানেলে ছিল কয়েকজন বিতর্কিত বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তার নাম, যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে অনুসন্ধান চলমান।
বিচারকদের পদোন্নতি যেভাবে হয়
সব মন্ত্রণালয়ে পদোন্নতির জন্য ডিপিসি (বিভাগীয় পদোন্নতি কমিটি) থাকে। ওই কমিটি পদোন্নতির প্যানেল চূড়ান্ত করার পর তা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হয়ে রাষ্ট্রপতির দপ্তরে যায়। রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিলে এক দিনেই প্যানেলের সবার পদোন্নতির জিও জারি করা হয়।
তবে বিচারকদের ক্ষেত্রে প্যানেল চূড়ান্ত করার পর তা সুপ্রিম কোর্টে পাঠানো হয়। বাছাই কমিটির মাধ্যমে বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভায় ওঠে। সভায় অনুমোদন পাওয়ার পর তা আবার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। মন্ত্রণালয় থেকে তা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হয়ে রাষ্ট্রপতির দপ্তরে যায়। রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিলে ওই প্যানেল আইন মন্ত্রণালয়ে সংরক্ষিত থাকে এবং পদ খালি হওয়ার পর সময়ে সময়ে জিও জারি করা হয়।
বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস বিধিমালা ২০০৭ অনুযায়ী, সিনিয়র সহকারী জজ পদে পদোন্নতির জন্য সহকারী জজদের এই পদে চার বছর দায়িত্ব পালনের শর্ত পূরণ করতে হয়। সিনিয়র সহকারী জজদের যুগ্ম জেলা জজ পদে পদোন্নতির জন্য দুই বছর, যুগ্ম জেলা জজ থেকে অতিরিক্ত জেলা জজ পদে পদোন্নতির জন্য দুই বছর এবং অতিরিক্ত জেলা জজ থেকে জেলা জজ পদে পদোন্নতির জন্য দুই বছরের শর্ত পূরণ করতে হয়। তবে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে এই নিয়ম মানা হয় না। অনেকেই বছরের পর বছর প্যানেলভুক্ত হয়ে থাকেন।

ঢাকার কেরানীগঞ্জে গতকাল বৃহস্পতিবার ব্যাংক ডাকাতির চেষ্টা কয়েক ঘণ্টা রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষায় রেখেছিল মানুষকে। বিনা রক্তপাতে ব্যাংকটিতে জিম্মি ঘটনার অবসানে মানুষ স্বস্তি পেলেও দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে ভয়-আতঙ্ক কাটছে না। বরং একের পর এক খুন, ছিনতাই, ডাকাতি, চুরির ঘটনা মানুষের মনে...
২০ ডিসেম্বর ২০২৪
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের পর ভল্ট ভেঙে অস্ত্র লুটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত কয়েকটি ঘটনায় পুলিশের অস্ত্র ও গুলি খোয়া যাওয়ার পর পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো।
৩৪ মিনিট আগে
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ নিয়ে নিজেদের অনৈক্য-বিভেদ দূর করে সমঝোতার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর মধ্যে আজ বুধবার কেটে যাচ্ছে দুই দিন। কিন্তু এ সংকট নিরসনে দলগুলোর মধ্যে কোনো হেলদোল আছে বলে মনে হচ্ছে না।
১১ ঘণ্টা আগে
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তাব বাতিলের ব্যাখ্যা দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। অল্পসংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে কার্যকর কোনো সুফল বয়ে আনবে না বিধায় এটি বাতিল করা হয়েছে মর্মে জানানো হয়।
১৬ ঘণ্টা আগে