তাসনিম মহসিন, ঢাকা

পশ্চিমা দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে রয়েছে। ঘাটতি বাজেট পুষিয়ে নেওয়া বা ঋণ ও অনুদানের জন্য তাদের ওপর বাংলাদেশের বড় ধরনের নির্ভরশীলতা ছিল। এতে বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, মানবাধিকার, বাক্স্বাধীনতা, শ্রম পরিবেশ ও মানসহ বিভিন্ন বিষয়ে দেশগুলোর তরফ থেকে এক ধরনের চাপ ছিল। এখন এই নির্ভরশীলতা অনেকাংশেই কমেছে। এই ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে বহুমুখী ও কৌশলী কূটনীতির পথে এগোচ্ছে বর্তমান বাংলাদেশ সরকার, যাতে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পশ্চিমাদের চাপ কমানো যায়।
পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে এক এক করে সম্পর্কের ব্যাপ্তি বাড়িয়ে কৌশলগত পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের গণতন্ত্র, নির্বাচন, শ্রম অধিকার, বাক্স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, শ্রমমান বা নির্বাচনের মতো বিষয়গুলো এত দিন পশ্চিমাদের কাছে প্রধান ছিল। এখন এ বিষয়গুলো দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় গৌণ বিষয়ে পরিণত হচ্ছে। সম্পর্কের ব্যাপ্তি বাড়ায় বিষয়গুলো অনেক আলোচনার ইস্যুর একটি ইস্যুতে পরিণত হচ্ছে।
এভাবে যদি আমরা সম্পর্ক বাড়াতে পারি, তাহলে মানবাধিকার, শ্রম আইন, এই শর্ত-সেই শর্ত নিয়ে কথা বলবে না। তখন হয়তো পুরো কথার ধরনই পাল্টে যাবে।
—পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন
পশ্চিমাদের সঙ্গে সম্পর্ককে কৌশলগত পর্যায়ে উন্নীত করার বিষয়ে কাজ করছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ ক্ষেত্রে অভিন্ন স্বার্থ নিয়ে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়া ও এর ব্যাপ্তি বাড়ানোর কৌশল নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘আমরা যদি শুধু বাণিজ্য নিয়ে কথা বলি, তখন তারা সুযোগটি পেয়ে যাবে। “তোমার শ্রমমান ভালো না বা তোমার কমপ্লায়েন্স ভালো না”—এ ইস্যুগুলোতে খালি কথা হবে। আরও বিভিন্ন ইস্যুতে যখন সম্পর্ক বাড়াতে পারব, তখন আলোচনা ছড়িয়ে যাবে। তখন বাণিজ্য শুধু ১০টি ইস্যুর একটি ইস্যু হবে। তখন আরও বড় ইস্যু সামনে চলে আসবে।’
পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘সম্পর্কের বিষয়টি যদি একপক্ষীয় হয়, আর আপনি গ্রহীতার দিকে থাকেন, তাহলে অবশ্যই অনেক কথা বেশি শুনতে হবে। আর নিজের অবস্থানটি যদি শক্ত থাকে, তাহলে বিনিয়োগ থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যুতে তাদের বাংলাদেশকে দরকার রয়েছে। এভাবে যদি আমরা সম্পর্ক বাড়াতে পারি, তাহলে মানবাধিকার, শ্রম আইন, এই শর্ত-সেই শর্ত নিয়ে কথা বলবে না। তখন হয়তো পুরো কথার ধরনই পাল্টে যাবে।’
স্বাধীনতার ৫০ বছরে তলাবিহীন ঝুড়ির ভঙ্গুর অর্থনীতি থেকে বিশ্বের অন্যতম অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির দেশ হিসেবে বিশ্বে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ। ভূরাজনৈতিক দৃষ্টিকোণে আগে থেকেই গুরুত্বপূর্ণ ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু এখন চীনের বিস্তার ও সেই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর আধিপত্য অক্ষুণ্ন রাখা ও কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা বিস্তারের যে সমীকরণ, তাতে বাংলাদেশ ঢুকে পড়েছে। বিশেষত ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশ হওয়ায় বাংলাদেশের গুরুত্ব এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি। এটি একদিকে চ্যালেঞ্জ, অন্যদিকে সুযোগ। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কে পরিবর্তন আনছে বাংলাদেশ।
খুব বেশি দিন আগে নয়, বাংলাদেশের বাজেটের ঘাটতি মেটাতে বড় অঙ্ক আসত বৈদেশিক অনুদান থেকে। আর এ কারণে বাংলাদেশকে নানাভাবে চাপে রাখার সুযোগ পেত পশ্চিমারা। কিন্তু বাজেটের তুলনায় বৈদেশিক অনুদানের পরিমাণ এখন একেবারে নগণ্য পর্যায়ে এসে ঠেকেছে। একটু পরিসংখ্যানে চোখ বোলানো যাক। অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭১-৭২ সালে বৈদেশিক সহায়তার পরিমাণ ছিল সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশের ইতিহাসে ওই অর্থবছরে অনুদান ছিল বাজেটের ৮৬ শতাংশ, আর ঋণ ছিল ৬ থেকে ৮ শতাংশ। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর ২০০৯-১০ অর্থবছরে ঘাটতি বাজেটের ৭০ শতাংশই এসেছিল বৈদেশিক ঋণ থেকে। বাকি ৩০ শতাংশ এসেছিল অনুদান থেকে। বর্তমানে এ বৈদেশিক অনুদানের পরিমাণ ঘাটতি বাজেটের ৩ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনা হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার জাতীয় বাজেট পাস হয়। এর মধ্যে বৈদেশিক অনুদান ধরা হয়েছে মাত্র ৩ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। পশ্চিমাদের ওপর ক্রমাগত নির্ভরশীলতা কমে আসাই এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে সম্পর্ককে এরই মধ্যে কৌশলগত পর্যায়ে উন্নীত করেছে বাংলাদেশ। অর্থনৈতিক সক্ষমতা বাড়ায় বাংলাদেশকে এখন নিয়মিত বাণিজ্যের পাশাপাশি সমরাস্ত্রের সম্ভাব্য বাজার হিসেবে বিবেচনা করছে পশ্চিমা দেশগুলো। এতে ঢুকে গেছে বাণিজ্য, ভূরাজনীতির মতো বহু বিষয়। এখন বাংলাদেশ ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে বিদ্যমান স্বার্থের সমীকরণটি অনেকাংশেই বদলে গেছে। নতুন এই সমীকরণে দাঁড়িয়ে পশ্চিমারা এমন অনেক কিছুতেই এখন চোখ বুজে থাকছে, যা আগে ভাবা যেত না। বর্তমানে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, আইনের শাসন, গণতান্ত্রিক চর্চা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতা, কার্যকর ও স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা, বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্বাচন, নির্বাচন কমিশন গঠন, বিরোধী মতের প্রতি সহনশীলতাসহ সার্বিক মানবাধিকার ইস্যুতে আগের মতো সমালোচনা করছে না পশ্চিমারা। বাংলাদেশকে না খেপিয়ে ব্যবসায়িক অংশীদারত্ব বাড়িয়ে নেওয়ার কৌশল নিয়েছে তারা। সেই সঙ্গে চীন ঠেকাতে ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে দেশগুলোর অভিন্ন কৌশল তো রয়েছেই।
ইউরোপের কয়েকটি দেশের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়ানো নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, দক্ষিণ এশিয়াসহ পুরো অঞ্চলে চীনের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বেশ কৌশলী পশ্চিমারা। জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের মতো দেশগুলো সঙ্গে সম্পর্ক কৌশলগত পর্যায়ে গিয়েছে। আর ইতালির সঙ্গে সম্পর্ক সেই স্তরে নিয়ে যাওয়া নিয়ে কাজ চলছে। আর এ দেশগুলোই ইউরোপের হর্তাকর্তা। ফলে সম্পর্কের ব্যাপ্তি বাড়িয়ে এদের হাতে রাখা গেলে বাকি দেশগুলো ও সংশ্লিষ্ট সংগঠন সব বিষয়ে খুব একটা সোচ্চার হতে পারবে না। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্প্রতি যে সমস্যাগুলো তৈরি হয়েছে, তা শিগগিরই কমে আসবে।
প্রসঙ্গত, গত ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষ বাহিনী র্যাব এবং এর সাবেক ও বর্তমান সাতজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আহুত গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশের ডাক না পাওয়ার বিষয়টি জুড়ে নিলে, এই নিষেধাজ্ঞা বেশ দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ওয়াশিংটনের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে। বিষয়টি সমাধানে আইনজীবী নিয়োগের প্রক্রিয়াও চলমান। এ অবস্থায় এ সংকট বেশি দূর গড়াবে না বলেই আশাবাদী ঢাকা।
কৌশলগত সম্পর্ক ও সম্পর্কের বহুমুখীকরণের কারণে অভ্যন্তরীণ নানা ইস্যুতে পশ্চিমা চাপ আগের তুলনায় কমার বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেননি বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি ও স্পেন ইইউয়ের গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র। তাদের প্রভাব ইইউতে রয়েছে। তবে তাদের ভোট কিন্তু একটা করে। ফলে বাকিদের গুরুত্বও কম নয়।’
তবে এ ক্ষেত্রে উন্নয়ন সহযোগিতার ওপর বাংলাদেশের নির্ভরশীলতা কমাকে বড় কারণ হিসেবে দেখছেন কূটনীতিকেরা। পশ্চিমা মিশনের এক রাজনৈতিক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, ‘এক সময় ওডিএর (উন্নয়ন সহযোগিতা) পরিমাণ বেশি ছিল। ফলে বাংলাদেশে যে সরকারই থাকুক না কেন, তাদের ওপর পশ্চিমাদের খবরদারি বেশি ছিল। কিন্তু ওডিএ কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পশ্চিমাদের সেই শক্তিও কমে গেছে। এখন তারা সমরাস্ত্র ও ব্যবসায় মনোযোগ দিয়েছে।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ২০০১ সালে বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছিল সেখানে সুশাসন, মানবাধিকার এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগ ছিল মূল ভিত্তি। এত দিন সুশাসন ও মানবাধিকারকে সামনে রেখে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের বিষয়টি আলোচনায় আসত। কিন্তু সেই পট পরিবর্তন হয়েছে। এখন প্রাধান্য পাচ্ছে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ। সম্পর্কে গৌণ হয়ে গিয়েছে সুশাসন ও মানবাধিকার।
এ ক্ষেত্রে ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ইউরোপের যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে আলাদা কৌশলকে একটা বড় কারণ হিসেবে দেখছেন সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ূন কবির। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, আগে একক দেশ ভিত্তিক নীতি নিলেও বর্তমানে ব্লকভিত্তিক নীতি গ্রহণ করা হচ্ছে। আগে একক দেশ থেকে তা সামাল দেওয়া সহজ হতো। আর এখন যেহেতু ব্লকভিত্তিক নীতি, সেহেতু তা সামাল দেওয়া কষ্টকর বিষয় হবে। কূটনীতিতে বাংলাদেশের কল্যাণ ও স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়ার ওপরই গুরুত্বারোপ করেন এ সাবেক কূটনীতিক।

পশ্চিমা দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে রয়েছে। ঘাটতি বাজেট পুষিয়ে নেওয়া বা ঋণ ও অনুদানের জন্য তাদের ওপর বাংলাদেশের বড় ধরনের নির্ভরশীলতা ছিল। এতে বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, মানবাধিকার, বাক্স্বাধীনতা, শ্রম পরিবেশ ও মানসহ বিভিন্ন বিষয়ে দেশগুলোর তরফ থেকে এক ধরনের চাপ ছিল। এখন এই নির্ভরশীলতা অনেকাংশেই কমেছে। এই ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে বহুমুখী ও কৌশলী কূটনীতির পথে এগোচ্ছে বর্তমান বাংলাদেশ সরকার, যাতে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পশ্চিমাদের চাপ কমানো যায়।
পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে এক এক করে সম্পর্কের ব্যাপ্তি বাড়িয়ে কৌশলগত পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের গণতন্ত্র, নির্বাচন, শ্রম অধিকার, বাক্স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, শ্রমমান বা নির্বাচনের মতো বিষয়গুলো এত দিন পশ্চিমাদের কাছে প্রধান ছিল। এখন এ বিষয়গুলো দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় গৌণ বিষয়ে পরিণত হচ্ছে। সম্পর্কের ব্যাপ্তি বাড়ায় বিষয়গুলো অনেক আলোচনার ইস্যুর একটি ইস্যুতে পরিণত হচ্ছে।
এভাবে যদি আমরা সম্পর্ক বাড়াতে পারি, তাহলে মানবাধিকার, শ্রম আইন, এই শর্ত-সেই শর্ত নিয়ে কথা বলবে না। তখন হয়তো পুরো কথার ধরনই পাল্টে যাবে।
—পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন
পশ্চিমাদের সঙ্গে সম্পর্ককে কৌশলগত পর্যায়ে উন্নীত করার বিষয়ে কাজ করছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ ক্ষেত্রে অভিন্ন স্বার্থ নিয়ে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়া ও এর ব্যাপ্তি বাড়ানোর কৌশল নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘আমরা যদি শুধু বাণিজ্য নিয়ে কথা বলি, তখন তারা সুযোগটি পেয়ে যাবে। “তোমার শ্রমমান ভালো না বা তোমার কমপ্লায়েন্স ভালো না”—এ ইস্যুগুলোতে খালি কথা হবে। আরও বিভিন্ন ইস্যুতে যখন সম্পর্ক বাড়াতে পারব, তখন আলোচনা ছড়িয়ে যাবে। তখন বাণিজ্য শুধু ১০টি ইস্যুর একটি ইস্যু হবে। তখন আরও বড় ইস্যু সামনে চলে আসবে।’
পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘সম্পর্কের বিষয়টি যদি একপক্ষীয় হয়, আর আপনি গ্রহীতার দিকে থাকেন, তাহলে অবশ্যই অনেক কথা বেশি শুনতে হবে। আর নিজের অবস্থানটি যদি শক্ত থাকে, তাহলে বিনিয়োগ থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যুতে তাদের বাংলাদেশকে দরকার রয়েছে। এভাবে যদি আমরা সম্পর্ক বাড়াতে পারি, তাহলে মানবাধিকার, শ্রম আইন, এই শর্ত-সেই শর্ত নিয়ে কথা বলবে না। তখন হয়তো পুরো কথার ধরনই পাল্টে যাবে।’
স্বাধীনতার ৫০ বছরে তলাবিহীন ঝুড়ির ভঙ্গুর অর্থনীতি থেকে বিশ্বের অন্যতম অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির দেশ হিসেবে বিশ্বে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ। ভূরাজনৈতিক দৃষ্টিকোণে আগে থেকেই গুরুত্বপূর্ণ ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু এখন চীনের বিস্তার ও সেই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর আধিপত্য অক্ষুণ্ন রাখা ও কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা বিস্তারের যে সমীকরণ, তাতে বাংলাদেশ ঢুকে পড়েছে। বিশেষত ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশ হওয়ায় বাংলাদেশের গুরুত্ব এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি। এটি একদিকে চ্যালেঞ্জ, অন্যদিকে সুযোগ। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কে পরিবর্তন আনছে বাংলাদেশ।
খুব বেশি দিন আগে নয়, বাংলাদেশের বাজেটের ঘাটতি মেটাতে বড় অঙ্ক আসত বৈদেশিক অনুদান থেকে। আর এ কারণে বাংলাদেশকে নানাভাবে চাপে রাখার সুযোগ পেত পশ্চিমারা। কিন্তু বাজেটের তুলনায় বৈদেশিক অনুদানের পরিমাণ এখন একেবারে নগণ্য পর্যায়ে এসে ঠেকেছে। একটু পরিসংখ্যানে চোখ বোলানো যাক। অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭১-৭২ সালে বৈদেশিক সহায়তার পরিমাণ ছিল সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশের ইতিহাসে ওই অর্থবছরে অনুদান ছিল বাজেটের ৮৬ শতাংশ, আর ঋণ ছিল ৬ থেকে ৮ শতাংশ। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর ২০০৯-১০ অর্থবছরে ঘাটতি বাজেটের ৭০ শতাংশই এসেছিল বৈদেশিক ঋণ থেকে। বাকি ৩০ শতাংশ এসেছিল অনুদান থেকে। বর্তমানে এ বৈদেশিক অনুদানের পরিমাণ ঘাটতি বাজেটের ৩ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনা হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার জাতীয় বাজেট পাস হয়। এর মধ্যে বৈদেশিক অনুদান ধরা হয়েছে মাত্র ৩ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। পশ্চিমাদের ওপর ক্রমাগত নির্ভরশীলতা কমে আসাই এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে সম্পর্ককে এরই মধ্যে কৌশলগত পর্যায়ে উন্নীত করেছে বাংলাদেশ। অর্থনৈতিক সক্ষমতা বাড়ায় বাংলাদেশকে এখন নিয়মিত বাণিজ্যের পাশাপাশি সমরাস্ত্রের সম্ভাব্য বাজার হিসেবে বিবেচনা করছে পশ্চিমা দেশগুলো। এতে ঢুকে গেছে বাণিজ্য, ভূরাজনীতির মতো বহু বিষয়। এখন বাংলাদেশ ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে বিদ্যমান স্বার্থের সমীকরণটি অনেকাংশেই বদলে গেছে। নতুন এই সমীকরণে দাঁড়িয়ে পশ্চিমারা এমন অনেক কিছুতেই এখন চোখ বুজে থাকছে, যা আগে ভাবা যেত না। বর্তমানে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, আইনের শাসন, গণতান্ত্রিক চর্চা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতা, কার্যকর ও স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা, বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্বাচন, নির্বাচন কমিশন গঠন, বিরোধী মতের প্রতি সহনশীলতাসহ সার্বিক মানবাধিকার ইস্যুতে আগের মতো সমালোচনা করছে না পশ্চিমারা। বাংলাদেশকে না খেপিয়ে ব্যবসায়িক অংশীদারত্ব বাড়িয়ে নেওয়ার কৌশল নিয়েছে তারা। সেই সঙ্গে চীন ঠেকাতে ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে দেশগুলোর অভিন্ন কৌশল তো রয়েছেই।
ইউরোপের কয়েকটি দেশের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়ানো নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, দক্ষিণ এশিয়াসহ পুরো অঞ্চলে চীনের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বেশ কৌশলী পশ্চিমারা। জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের মতো দেশগুলো সঙ্গে সম্পর্ক কৌশলগত পর্যায়ে গিয়েছে। আর ইতালির সঙ্গে সম্পর্ক সেই স্তরে নিয়ে যাওয়া নিয়ে কাজ চলছে। আর এ দেশগুলোই ইউরোপের হর্তাকর্তা। ফলে সম্পর্কের ব্যাপ্তি বাড়িয়ে এদের হাতে রাখা গেলে বাকি দেশগুলো ও সংশ্লিষ্ট সংগঠন সব বিষয়ে খুব একটা সোচ্চার হতে পারবে না। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্প্রতি যে সমস্যাগুলো তৈরি হয়েছে, তা শিগগিরই কমে আসবে।
প্রসঙ্গত, গত ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষ বাহিনী র্যাব এবং এর সাবেক ও বর্তমান সাতজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আহুত গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশের ডাক না পাওয়ার বিষয়টি জুড়ে নিলে, এই নিষেধাজ্ঞা বেশ দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ওয়াশিংটনের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে। বিষয়টি সমাধানে আইনজীবী নিয়োগের প্রক্রিয়াও চলমান। এ অবস্থায় এ সংকট বেশি দূর গড়াবে না বলেই আশাবাদী ঢাকা।
কৌশলগত সম্পর্ক ও সম্পর্কের বহুমুখীকরণের কারণে অভ্যন্তরীণ নানা ইস্যুতে পশ্চিমা চাপ আগের তুলনায় কমার বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেননি বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি ও স্পেন ইইউয়ের গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র। তাদের প্রভাব ইইউতে রয়েছে। তবে তাদের ভোট কিন্তু একটা করে। ফলে বাকিদের গুরুত্বও কম নয়।’
তবে এ ক্ষেত্রে উন্নয়ন সহযোগিতার ওপর বাংলাদেশের নির্ভরশীলতা কমাকে বড় কারণ হিসেবে দেখছেন কূটনীতিকেরা। পশ্চিমা মিশনের এক রাজনৈতিক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, ‘এক সময় ওডিএর (উন্নয়ন সহযোগিতা) পরিমাণ বেশি ছিল। ফলে বাংলাদেশে যে সরকারই থাকুক না কেন, তাদের ওপর পশ্চিমাদের খবরদারি বেশি ছিল। কিন্তু ওডিএ কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পশ্চিমাদের সেই শক্তিও কমে গেছে। এখন তারা সমরাস্ত্র ও ব্যবসায় মনোযোগ দিয়েছে।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ২০০১ সালে বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছিল সেখানে সুশাসন, মানবাধিকার এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগ ছিল মূল ভিত্তি। এত দিন সুশাসন ও মানবাধিকারকে সামনে রেখে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের বিষয়টি আলোচনায় আসত। কিন্তু সেই পট পরিবর্তন হয়েছে। এখন প্রাধান্য পাচ্ছে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ। সম্পর্কে গৌণ হয়ে গিয়েছে সুশাসন ও মানবাধিকার।
এ ক্ষেত্রে ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ইউরোপের যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে আলাদা কৌশলকে একটা বড় কারণ হিসেবে দেখছেন সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ূন কবির। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, আগে একক দেশ ভিত্তিক নীতি নিলেও বর্তমানে ব্লকভিত্তিক নীতি গ্রহণ করা হচ্ছে। আগে একক দেশ থেকে তা সামাল দেওয়া সহজ হতো। আর এখন যেহেতু ব্লকভিত্তিক নীতি, সেহেতু তা সামাল দেওয়া কষ্টকর বিষয় হবে। কূটনীতিতে বাংলাদেশের কল্যাণ ও স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়ার ওপরই গুরুত্বারোপ করেন এ সাবেক কূটনীতিক।

বক্তারা বলেন, জলবায়ু অর্থায়ন নিয়ে ধনী দেশগুলোর গড়িমসির কারণে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর কোটি কোটি মানুষ অস্তিত্ব সংকটে পড়ছে। বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতি ও বাস্তব পদক্ষেপের মধ্যকার ব্যবধান ক্রমেই বাড়ছে বলে তাঁরা উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
১৮ মিনিট আগে
জাতীয় নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিতকরণ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ফ্যাসিস্ট টেররিস্টদের দমনের উদ্দেশ্যে অবিলম্বে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২’ চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আজ দুপুরে বাংলাদেশ সচিবালয়ে এক সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ
৪ ঘণ্টা আগে
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির ওপর হামলাকারীকে ধরিয়ে দিতে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। একই সঙ্গে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সামনের সারিতে থাকা জুলাই যোদ্ধাদের বিশেষ নিরাপত্তা দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।
৫ ঘণ্টা আগে
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনাকে ‘জুলাই অভ্যুত্থান’ নস্যাৎ করার সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে উল্লেখ করে, রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা এই অভ্যুত্থানের অর্জনকে ব্যর্থ করার সব অপচেষ্টা রুখে দিতে ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে থাকার...
৫ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী ধনী দেশগুলোর জবাবদিহি, ক্ষতিপূরণ ও ন্যায্যতা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলেছেন, ঋণ নয়, অনুদান ও ক্ষতিপূরণের মাধ্যমেই জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর পাশে দাঁড়াতে হবে ধনী দেশগুলোকে।
রাজধানীতে শুরু হওয়া তৃতীয় জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ-২০২৫-এ বক্তারা এ আহ্বান জানান। আজ শনিবার রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই দিনব্যাপী এই সমাবেশের উদ্বোধন করা হয়।
নাগরিক প্ল্যাটফর্ম ধরিত্রী রক্ষায় আমরার (ধরা) আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে সরকারি প্রতিনিধি, আন্তর্জাতিক জলবায়ু আন্দোলনের কর্মী, গবেষক ও জলবায়ু-ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিসহ প্রায় দুই হাজার মানুষ অংশ নেন।
উদ্বোধনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার। সঞ্চালনা করেন ধরার সদস্যসচিব শরীফ জামিল। স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং।
বক্তারা বলেন, জলবায়ু অর্থায়ন নিয়ে ধনী দেশগুলোর গড়িমসির কারণে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর কোটি কোটি মানুষ অস্তিত্ব সংকটে পড়ছে। বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতি ও বাস্তব পদক্ষেপের মধ্যকার ব্যবধান ক্রমেই বাড়ছে বলে তাঁরা উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
সমাবেশের উদ্বোধনকালে সমাজকল্যাণ এবং নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ বলেন, বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণে বাংলাদেশের দায় খুবই কম হলেও দেশটি জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম বড় ভুক্তভোগী।
তিনি বলেন, ‘আমরা ধনী দেশগুলোর কাছে ঋণী নই, বরং তারা আমাদের কাছে ঋণী। জলবায়ু ন্যায্যতা এখন জবাবদিহি ও কার্যকর পদক্ষেপের প্রশ্ন।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনকে কেবল প্রযুক্তিগত বা অর্থনৈতিক সমস্যা হিসেবে দেখার সুযোগ নেই। জলবায়ু ন্যায্যতা মানে ন্যায়, টিকে থাকা এবং জবাবদিহি।’
জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা অব্যাহত রাখার সমালোচনা করে তিনি বলেন, প্যারিস জলবায়ু চুক্তিসহ বিভিন্ন বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে এখনো বড় ঘাটতি রয়ে গেছে। গ্লোবাল নর্থ প্রায়ই ন্যায়বিচারের বদলে ঋণ চাপিয়ে দেয়।
ধরার সদস্যসচিব শরীফ জামিল বলেন, ‘জলবায়ু ন্যায্যতা বাংলাদেশের জন্য কেবল একটি দাবির বিষয় নয়, এটি দেশের টিকে থাকার প্রশ্ন। আমরা যদি নিজেদের ঘর থেকে ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে না পারি, তাহলে বৈশ্বিক পর্যায়ে ন্যায্যতার দাবি প্রতিষ্ঠা করা কঠিন হবে।’
অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিরাও ধনী দেশগুলোর জলবায়ু অর্থায়ন নীতির সমালোচনা করেন।

জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী ধনী দেশগুলোর জবাবদিহি, ক্ষতিপূরণ ও ন্যায্যতা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলেছেন, ঋণ নয়, অনুদান ও ক্ষতিপূরণের মাধ্যমেই জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর পাশে দাঁড়াতে হবে ধনী দেশগুলোকে।
রাজধানীতে শুরু হওয়া তৃতীয় জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ-২০২৫-এ বক্তারা এ আহ্বান জানান। আজ শনিবার রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই দিনব্যাপী এই সমাবেশের উদ্বোধন করা হয়।
নাগরিক প্ল্যাটফর্ম ধরিত্রী রক্ষায় আমরার (ধরা) আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে সরকারি প্রতিনিধি, আন্তর্জাতিক জলবায়ু আন্দোলনের কর্মী, গবেষক ও জলবায়ু-ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিসহ প্রায় দুই হাজার মানুষ অংশ নেন।
উদ্বোধনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার। সঞ্চালনা করেন ধরার সদস্যসচিব শরীফ জামিল। স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং।
বক্তারা বলেন, জলবায়ু অর্থায়ন নিয়ে ধনী দেশগুলোর গড়িমসির কারণে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর কোটি কোটি মানুষ অস্তিত্ব সংকটে পড়ছে। বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতি ও বাস্তব পদক্ষেপের মধ্যকার ব্যবধান ক্রমেই বাড়ছে বলে তাঁরা উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
সমাবেশের উদ্বোধনকালে সমাজকল্যাণ এবং নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ বলেন, বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণে বাংলাদেশের দায় খুবই কম হলেও দেশটি জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম বড় ভুক্তভোগী।
তিনি বলেন, ‘আমরা ধনী দেশগুলোর কাছে ঋণী নই, বরং তারা আমাদের কাছে ঋণী। জলবায়ু ন্যায্যতা এখন জবাবদিহি ও কার্যকর পদক্ষেপের প্রশ্ন।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনকে কেবল প্রযুক্তিগত বা অর্থনৈতিক সমস্যা হিসেবে দেখার সুযোগ নেই। জলবায়ু ন্যায্যতা মানে ন্যায়, টিকে থাকা এবং জবাবদিহি।’
জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা অব্যাহত রাখার সমালোচনা করে তিনি বলেন, প্যারিস জলবায়ু চুক্তিসহ বিভিন্ন বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে এখনো বড় ঘাটতি রয়ে গেছে। গ্লোবাল নর্থ প্রায়ই ন্যায়বিচারের বদলে ঋণ চাপিয়ে দেয়।
ধরার সদস্যসচিব শরীফ জামিল বলেন, ‘জলবায়ু ন্যায্যতা বাংলাদেশের জন্য কেবল একটি দাবির বিষয় নয়, এটি দেশের টিকে থাকার প্রশ্ন। আমরা যদি নিজেদের ঘর থেকে ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে না পারি, তাহলে বৈশ্বিক পর্যায়ে ন্যায্যতার দাবি প্রতিষ্ঠা করা কঠিন হবে।’
অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিরাও ধনী দেশগুলোর জলবায়ু অর্থায়ন নীতির সমালোচনা করেন।

ঘাটতি বাজেট পুষিয়ে নেওয়া বা ঋণ ও অনুদানের জন্য পশ্চিমা দেশগুলোর ওপর বাংলাদেশের বড় ধরনের নির্ভরশীলতা ছিল। এতে বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, মানবাধিকার, বাক্স্বাধীনতা, শ্রম পরিবেশ ও মানসহ বিভিন্ন বিষয়ে দেশগুলোর তরফ থেকে এক ধরনের চাপ ছিল। এখন এই নির্ভরশীলতা অনেকাংশেই কমেছে। এই ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে বহ
০৩ জানুয়ারি ২০২২
জাতীয় নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিতকরণ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ফ্যাসিস্ট টেররিস্টদের দমনের উদ্দেশ্যে অবিলম্বে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২’ চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আজ দুপুরে বাংলাদেশ সচিবালয়ে এক সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ
৪ ঘণ্টা আগে
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির ওপর হামলাকারীকে ধরিয়ে দিতে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। একই সঙ্গে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সামনের সারিতে থাকা জুলাই যোদ্ধাদের বিশেষ নিরাপত্তা দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।
৫ ঘণ্টা আগে
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনাকে ‘জুলাই অভ্যুত্থান’ নস্যাৎ করার সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে উল্লেখ করে, রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা এই অভ্যুত্থানের অর্জনকে ব্যর্থ করার সব অপচেষ্টা রুখে দিতে ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে থাকার...
৫ ঘণ্টা আগেবিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা

জাতীয় নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিতকরণ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ফ্যাসিস্ট টেররিস্টদের দমনের উদ্দেশ্যে অবিলম্বে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২’ চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আজ শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বাংলাদেশ সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ কথা জানান।
উপদেষ্টা বলেন, লুট হওয়া ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান চলমান রয়েছে। এটিকে আরও জোরদার ও বেগবান করার জন্য এবং ফ্যাসিস্ট টেররিস্টদের দমনের উদ্দেশ্যে কোর কমিটি ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২’ অবিলম্বে চালু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স ইস্যুর ক্ষেত্রে এত দিন শুধু সামরিক ও বেসামরিক কর্মচারীদের অনুকূলে ইস্যু করা হতো। তিনি বলেন, এখন জাতীয় নির্বাচনের প্রার্থীদের মধ্যে যাঁরা আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স চাইবেন, তাঁদেরও লাইসেন্স ইস্যু করা হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরলে তাঁর নিরাপত্তায় কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে—এ-সংক্রান্ত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, সরকার তারেক রহমানের নিরাপত্তায় সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে এবং তাঁর সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।
ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি, আইজিপি বাহারুল আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিতকরণ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ফ্যাসিস্ট টেররিস্টদের দমনের উদ্দেশ্যে অবিলম্বে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২’ চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আজ শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বাংলাদেশ সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ কথা জানান।
উপদেষ্টা বলেন, লুট হওয়া ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান চলমান রয়েছে। এটিকে আরও জোরদার ও বেগবান করার জন্য এবং ফ্যাসিস্ট টেররিস্টদের দমনের উদ্দেশ্যে কোর কমিটি ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২’ অবিলম্বে চালু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স ইস্যুর ক্ষেত্রে এত দিন শুধু সামরিক ও বেসামরিক কর্মচারীদের অনুকূলে ইস্যু করা হতো। তিনি বলেন, এখন জাতীয় নির্বাচনের প্রার্থীদের মধ্যে যাঁরা আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স চাইবেন, তাঁদেরও লাইসেন্স ইস্যু করা হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরলে তাঁর নিরাপত্তায় কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে—এ-সংক্রান্ত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, সরকার তারেক রহমানের নিরাপত্তায় সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে এবং তাঁর সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।
ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি, আইজিপি বাহারুল আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ঘাটতি বাজেট পুষিয়ে নেওয়া বা ঋণ ও অনুদানের জন্য পশ্চিমা দেশগুলোর ওপর বাংলাদেশের বড় ধরনের নির্ভরশীলতা ছিল। এতে বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, মানবাধিকার, বাক্স্বাধীনতা, শ্রম পরিবেশ ও মানসহ বিভিন্ন বিষয়ে দেশগুলোর তরফ থেকে এক ধরনের চাপ ছিল। এখন এই নির্ভরশীলতা অনেকাংশেই কমেছে। এই ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে বহ
০৩ জানুয়ারি ২০২২
বক্তারা বলেন, জলবায়ু অর্থায়ন নিয়ে ধনী দেশগুলোর গড়িমসির কারণে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর কোটি কোটি মানুষ অস্তিত্ব সংকটে পড়ছে। বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতি ও বাস্তব পদক্ষেপের মধ্যকার ব্যবধান ক্রমেই বাড়ছে বলে তাঁরা উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
১৮ মিনিট আগে
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির ওপর হামলাকারীকে ধরিয়ে দিতে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। একই সঙ্গে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সামনের সারিতে থাকা জুলাই যোদ্ধাদের বিশেষ নিরাপত্তা দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।
৫ ঘণ্টা আগে
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনাকে ‘জুলাই অভ্যুত্থান’ নস্যাৎ করার সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে উল্লেখ করে, রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা এই অভ্যুত্থানের অর্জনকে ব্যর্থ করার সব অপচেষ্টা রুখে দিতে ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে থাকার...
৫ ঘণ্টা আগেবিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির ওপর হামলাকারী আততায়ীকে ধরিয়ে দিতে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। একই সঙ্গে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সামনের সারিতে থাকা জুলাই যোদ্ধাদের বিশেষ নিরাপত্তা দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।
আজ শনিবার সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত কোর কমিটির জরুরি বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।
মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ অন্তর্বর্তী সরকার গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে। এই বিষয়টিকে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। অবিলম্বে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা দুষ্কৃতকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পারব। এই হামলায় জড়িত কাউকে কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না। এ ব্যাপারে আমরা জনগণের সার্বিক সহযোগিতা পাব বলে বিশ্বাস করি। হাদির ওপর আক্রমণের ঘটনা আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার অপপ্রয়াস বলে আমরা মনে করি। নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত বা বানচাল করার সকল চেষ্টা সরকার দমন করবে।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান সরকার জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বদ্ধপরিকর। সরকারের পক্ষ থেকে তাঁদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। লুট হওয়া ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার চলমান। ডেভিল হান্ট ফেস-২ অবিলম্বে চালু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক হাদির ওপর হামলাকারী ফয়সালকে ধরিয়ে দিতে সরকার ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে বলে জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির ওপর হামলাকারী আততায়ীকে ধরিয়ে দিতে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। একই সঙ্গে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সামনের সারিতে থাকা জুলাই যোদ্ধাদের বিশেষ নিরাপত্তা দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।
আজ শনিবার সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত কোর কমিটির জরুরি বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।
মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ অন্তর্বর্তী সরকার গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে। এই বিষয়টিকে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। অবিলম্বে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা দুষ্কৃতকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পারব। এই হামলায় জড়িত কাউকে কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না। এ ব্যাপারে আমরা জনগণের সার্বিক সহযোগিতা পাব বলে বিশ্বাস করি। হাদির ওপর আক্রমণের ঘটনা আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার অপপ্রয়াস বলে আমরা মনে করি। নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত বা বানচাল করার সকল চেষ্টা সরকার দমন করবে।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান সরকার জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বদ্ধপরিকর। সরকারের পক্ষ থেকে তাঁদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। লুট হওয়া ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার চলমান। ডেভিল হান্ট ফেস-২ অবিলম্বে চালু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক হাদির ওপর হামলাকারী ফয়সালকে ধরিয়ে দিতে সরকার ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে বলে জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

ঘাটতি বাজেট পুষিয়ে নেওয়া বা ঋণ ও অনুদানের জন্য পশ্চিমা দেশগুলোর ওপর বাংলাদেশের বড় ধরনের নির্ভরশীলতা ছিল। এতে বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, মানবাধিকার, বাক্স্বাধীনতা, শ্রম পরিবেশ ও মানসহ বিভিন্ন বিষয়ে দেশগুলোর তরফ থেকে এক ধরনের চাপ ছিল। এখন এই নির্ভরশীলতা অনেকাংশেই কমেছে। এই ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে বহ
০৩ জানুয়ারি ২০২২
বক্তারা বলেন, জলবায়ু অর্থায়ন নিয়ে ধনী দেশগুলোর গড়িমসির কারণে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর কোটি কোটি মানুষ অস্তিত্ব সংকটে পড়ছে। বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতি ও বাস্তব পদক্ষেপের মধ্যকার ব্যবধান ক্রমেই বাড়ছে বলে তাঁরা উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
১৮ মিনিট আগে
জাতীয় নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিতকরণ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ফ্যাসিস্ট টেররিস্টদের দমনের উদ্দেশ্যে অবিলম্বে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২’ চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আজ দুপুরে বাংলাদেশ সচিবালয়ে এক সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ
৪ ঘণ্টা আগে
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনাকে ‘জুলাই অভ্যুত্থান’ নস্যাৎ করার সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে উল্লেখ করে, রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা এই অভ্যুত্থানের অর্জনকে ব্যর্থ করার সব অপচেষ্টা রুখে দিতে ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে থাকার...
৫ ঘণ্টা আগেযমুনায় বৈঠক
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনাকে ‘জুলাই অভ্যুত্থান’ নস্যাৎ করার সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে উল্লেখ করে, রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা এই অভ্যুত্থানের অর্জনকে ব্যর্থ করার সব অপচেষ্টা রুখে দিতে ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে থাকার জোরালো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
আজ শনিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর শীর্ষ নেতারা এ বিষয়ে মতৈক্য প্রকাশ করেন।
বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ ও হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আবদুল্লাহ আল জাবের এবং আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল অংশগ্রহণ করেন।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ওসমান হাদির ওপর হামলা পূর্ব-পরিকল্পিত ও গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ; এর পেছনে বিরাট শক্তি কাজ করছে।
তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রকারীদের উদ্দেশ্য হচ্ছে নির্বাচনটি হতে না দেওয়া। এই আক্রমণটি খুবই সিম্বলিক (প্রতীকী)। তারা তাদের শক্তি প্রদর্শন করতে চায়, নির্বাচনের সব আয়োজন ভেস্তে দিতে চায়। এগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যে তথ্য পাওয়া গেছে, তাতে মনে হচ্ছে ষড়যন্ত্রকারীরা তাদের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করেছে। তারা প্রশিক্ষিত শুটার নিয়ে মাঠে নেমেছে।’
বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এই পরিস্থিতিতে আমাদের অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। কোনো অবস্থাতেই পরস্পরের দোষারোপ থেকে বিরত থাকতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়াজ তুলতে হবে। কোনো ধরনের অপশক্তিকে আমরা বরদাশত করব না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মধ্যে যতই রাজনৈতিক বক্তব্যের বিরোধিতা থাকুক না কেন, জাতির স্বার্থে এবং জুলাইয়ের স্বার্থে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতেই হবে।’
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করার পরামর্শ দেন সালাহউদ্দিন।
জামায়াত নেতা গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের নানা বক্তব্য একে অন্যকে দোষারোপ করার প্রবণতা বাড়িয়েছে, যার ফলে আমাদের বিরোধীরা সুযোগ পেয়েছে। আমাদের পূর্বের ন্যায় ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘ক্ষুদ্র দলীয় স্বার্থে আমরা একে অন্যকে প্রতিপক্ষ বানিয়ে ফেলেছি। জাতিকে বিভক্ত করে এমন কথা আমরা কেন বলব? সব দলকে তাদের কমিটমেন্ট ঠিক করতে হবে।’
এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের পর থেকেই কিছু লোক এই অভ্যুত্থানকে খাটো করার জন্য নানা অপতৎপরতা চালিয়ে আসছে।’
তিনি বলেন, ‘সুসংগঠিতভাবে জুলাইয়ের বিরুদ্ধে ক্যাম্পেইন চলছে। মিডিয়া ও প্রশাসনের নানা স্তরে এই কাজ হচ্ছে। নির্বাচনের পর যারা ক্ষমতায় আসবে, তারাও এর ভুক্তভোগী হবে। কেউই একা সরকার চালাতে পারবে না।’
নাহিদ বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন ন্যারেটিভ তৈরি করা হচ্ছে যাতে মনে হয় যারা অভ্যুত্থান করেছে তারা অপরাধ করেছে। আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিকে নরমালাইজ করতে নানা চেষ্টা চলছে। টিভি টকশোতে তারা নিয়মিত অংশ নিচ্ছে, প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় বৈঠক করছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মিলিত হচ্ছে এবং আদালত প্রাঙ্গণে স্লোগান দিচ্ছে।’
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘আমাদের বিশেষ কোনো নিরাপত্তার প্রয়োজন নেই। আমরা এটা নেব না। জুলাইকে সবাই মিলে ওউন করতে হবে। জুলাইকে কে কী বলবে—এই টানাপোড়েনে আমরা জুলাইকে শেষ করে দিচ্ছি। ষড়যন্ত্রকারীরা আমাদের অনৈক্যকে আমাদের পরাজয় হিসেবে দেখছে। তারা ভারতে বসে যা ইচ্ছা তা-ই করছে, আর আমরা কিছুই করতে পারছি না।’
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ‘বুদ্ধিজীবী বেশে, সাংস্কৃতিক কর্মী বেশে আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নকারীদের থামাতে হবে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে।’
এ সময় এনসিপির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা নিজেরা ঐক্যবদ্ধ থাকতে না পারলে কোনো নিরাপত্তাই আমাদের কাজে আসবে না। রাজনৈতিক স্বার্থে দলগুলো আওয়ামী লীগকে নানা রকম সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের চিন্তা করতে হবে—ভবিষ্যতের জন্য আমরা কী করতে পারি।’ তিনি বলেন, ‘শুধু সরকার নয়, সবাইকে শক্ত থাকতে হবে। নিজেদের মধ্যে যেন দ্বন্দ্ব ছড়িয়ে না পড়ে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। রাজনৈতিক বক্তব্য থাকবে, কিন্তু কাউকে শত্রু ভাবা বা আক্রমণ করার সংস্কৃতি থেকে সরে আসতে হবে।’
‘নির্বাচনের সময় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়, তবে মাথায় রাখতে হবে—এটি যেন একটি নির্দিষ্ট মাত্রার মধ্যে নিয়ন্ত্রণে থাকে, ’ দলগুলোর প্রতি এই পরামর্শ দেন প্রধান উপদেষ্টা।
এ সময় আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে হানাহানি শুরু হওয়ার পর থেকেই আওয়ামী লীগ শক্তিশালী হয়েছে।’
রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনাদের শুধু দলীয় স্বার্থ নয়, জাতীয় স্বার্থের বিষয়েও সজাগ থাকতে হবে।’

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনাকে ‘জুলাই অভ্যুত্থান’ নস্যাৎ করার সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে উল্লেখ করে, রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা এই অভ্যুত্থানের অর্জনকে ব্যর্থ করার সব অপচেষ্টা রুখে দিতে ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে থাকার জোরালো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
আজ শনিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর শীর্ষ নেতারা এ বিষয়ে মতৈক্য প্রকাশ করেন।
বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ ও হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আবদুল্লাহ আল জাবের এবং আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল অংশগ্রহণ করেন।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ওসমান হাদির ওপর হামলা পূর্ব-পরিকল্পিত ও গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ; এর পেছনে বিরাট শক্তি কাজ করছে।
তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রকারীদের উদ্দেশ্য হচ্ছে নির্বাচনটি হতে না দেওয়া। এই আক্রমণটি খুবই সিম্বলিক (প্রতীকী)। তারা তাদের শক্তি প্রদর্শন করতে চায়, নির্বাচনের সব আয়োজন ভেস্তে দিতে চায়। এগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যে তথ্য পাওয়া গেছে, তাতে মনে হচ্ছে ষড়যন্ত্রকারীরা তাদের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করেছে। তারা প্রশিক্ষিত শুটার নিয়ে মাঠে নেমেছে।’
বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এই পরিস্থিতিতে আমাদের অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। কোনো অবস্থাতেই পরস্পরের দোষারোপ থেকে বিরত থাকতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়াজ তুলতে হবে। কোনো ধরনের অপশক্তিকে আমরা বরদাশত করব না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মধ্যে যতই রাজনৈতিক বক্তব্যের বিরোধিতা থাকুক না কেন, জাতির স্বার্থে এবং জুলাইয়ের স্বার্থে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতেই হবে।’
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করার পরামর্শ দেন সালাহউদ্দিন।
জামায়াত নেতা গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের নানা বক্তব্য একে অন্যকে দোষারোপ করার প্রবণতা বাড়িয়েছে, যার ফলে আমাদের বিরোধীরা সুযোগ পেয়েছে। আমাদের পূর্বের ন্যায় ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘ক্ষুদ্র দলীয় স্বার্থে আমরা একে অন্যকে প্রতিপক্ষ বানিয়ে ফেলেছি। জাতিকে বিভক্ত করে এমন কথা আমরা কেন বলব? সব দলকে তাদের কমিটমেন্ট ঠিক করতে হবে।’
এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের পর থেকেই কিছু লোক এই অভ্যুত্থানকে খাটো করার জন্য নানা অপতৎপরতা চালিয়ে আসছে।’
তিনি বলেন, ‘সুসংগঠিতভাবে জুলাইয়ের বিরুদ্ধে ক্যাম্পেইন চলছে। মিডিয়া ও প্রশাসনের নানা স্তরে এই কাজ হচ্ছে। নির্বাচনের পর যারা ক্ষমতায় আসবে, তারাও এর ভুক্তভোগী হবে। কেউই একা সরকার চালাতে পারবে না।’
নাহিদ বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন ন্যারেটিভ তৈরি করা হচ্ছে যাতে মনে হয় যারা অভ্যুত্থান করেছে তারা অপরাধ করেছে। আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিকে নরমালাইজ করতে নানা চেষ্টা চলছে। টিভি টকশোতে তারা নিয়মিত অংশ নিচ্ছে, প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় বৈঠক করছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মিলিত হচ্ছে এবং আদালত প্রাঙ্গণে স্লোগান দিচ্ছে।’
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘আমাদের বিশেষ কোনো নিরাপত্তার প্রয়োজন নেই। আমরা এটা নেব না। জুলাইকে সবাই মিলে ওউন করতে হবে। জুলাইকে কে কী বলবে—এই টানাপোড়েনে আমরা জুলাইকে শেষ করে দিচ্ছি। ষড়যন্ত্রকারীরা আমাদের অনৈক্যকে আমাদের পরাজয় হিসেবে দেখছে। তারা ভারতে বসে যা ইচ্ছা তা-ই করছে, আর আমরা কিছুই করতে পারছি না।’
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ‘বুদ্ধিজীবী বেশে, সাংস্কৃতিক কর্মী বেশে আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নকারীদের থামাতে হবে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে।’
এ সময় এনসিপির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা নিজেরা ঐক্যবদ্ধ থাকতে না পারলে কোনো নিরাপত্তাই আমাদের কাজে আসবে না। রাজনৈতিক স্বার্থে দলগুলো আওয়ামী লীগকে নানা রকম সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের চিন্তা করতে হবে—ভবিষ্যতের জন্য আমরা কী করতে পারি।’ তিনি বলেন, ‘শুধু সরকার নয়, সবাইকে শক্ত থাকতে হবে। নিজেদের মধ্যে যেন দ্বন্দ্ব ছড়িয়ে না পড়ে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। রাজনৈতিক বক্তব্য থাকবে, কিন্তু কাউকে শত্রু ভাবা বা আক্রমণ করার সংস্কৃতি থেকে সরে আসতে হবে।’
‘নির্বাচনের সময় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়, তবে মাথায় রাখতে হবে—এটি যেন একটি নির্দিষ্ট মাত্রার মধ্যে নিয়ন্ত্রণে থাকে, ’ দলগুলোর প্রতি এই পরামর্শ দেন প্রধান উপদেষ্টা।
এ সময় আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে হানাহানি শুরু হওয়ার পর থেকেই আওয়ামী লীগ শক্তিশালী হয়েছে।’
রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনাদের শুধু দলীয় স্বার্থ নয়, জাতীয় স্বার্থের বিষয়েও সজাগ থাকতে হবে।’

ঘাটতি বাজেট পুষিয়ে নেওয়া বা ঋণ ও অনুদানের জন্য পশ্চিমা দেশগুলোর ওপর বাংলাদেশের বড় ধরনের নির্ভরশীলতা ছিল। এতে বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, মানবাধিকার, বাক্স্বাধীনতা, শ্রম পরিবেশ ও মানসহ বিভিন্ন বিষয়ে দেশগুলোর তরফ থেকে এক ধরনের চাপ ছিল। এখন এই নির্ভরশীলতা অনেকাংশেই কমেছে। এই ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে বহ
০৩ জানুয়ারি ২০২২
বক্তারা বলেন, জলবায়ু অর্থায়ন নিয়ে ধনী দেশগুলোর গড়িমসির কারণে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর কোটি কোটি মানুষ অস্তিত্ব সংকটে পড়ছে। বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতি ও বাস্তব পদক্ষেপের মধ্যকার ব্যবধান ক্রমেই বাড়ছে বলে তাঁরা উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
১৮ মিনিট আগে
জাতীয় নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিতকরণ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ফ্যাসিস্ট টেররিস্টদের দমনের উদ্দেশ্যে অবিলম্বে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২’ চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আজ দুপুরে বাংলাদেশ সচিবালয়ে এক সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ
৪ ঘণ্টা আগে
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির ওপর হামলাকারীকে ধরিয়ে দিতে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। একই সঙ্গে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সামনের সারিতে থাকা জুলাই যোদ্ধাদের বিশেষ নিরাপত্তা দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।
৫ ঘণ্টা আগে