তাসনিম মহসিন, ঢাকা

পশ্চিমা দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে রয়েছে। ঘাটতি বাজেট পুষিয়ে নেওয়া বা ঋণ ও অনুদানের জন্য তাদের ওপর বাংলাদেশের বড় ধরনের নির্ভরশীলতা ছিল। এতে বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, মানবাধিকার, বাক্স্বাধীনতা, শ্রম পরিবেশ ও মানসহ বিভিন্ন বিষয়ে দেশগুলোর তরফ থেকে এক ধরনের চাপ ছিল। এখন এই নির্ভরশীলতা অনেকাংশেই কমেছে। এই ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে বহুমুখী ও কৌশলী কূটনীতির পথে এগোচ্ছে বর্তমান বাংলাদেশ সরকার, যাতে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পশ্চিমাদের চাপ কমানো যায়।
পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে এক এক করে সম্পর্কের ব্যাপ্তি বাড়িয়ে কৌশলগত পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের গণতন্ত্র, নির্বাচন, শ্রম অধিকার, বাক্স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, শ্রমমান বা নির্বাচনের মতো বিষয়গুলো এত দিন পশ্চিমাদের কাছে প্রধান ছিল। এখন এ বিষয়গুলো দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় গৌণ বিষয়ে পরিণত হচ্ছে। সম্পর্কের ব্যাপ্তি বাড়ায় বিষয়গুলো অনেক আলোচনার ইস্যুর একটি ইস্যুতে পরিণত হচ্ছে।
এভাবে যদি আমরা সম্পর্ক বাড়াতে পারি, তাহলে মানবাধিকার, শ্রম আইন, এই শর্ত-সেই শর্ত নিয়ে কথা বলবে না। তখন হয়তো পুরো কথার ধরনই পাল্টে যাবে।
—পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন
পশ্চিমাদের সঙ্গে সম্পর্ককে কৌশলগত পর্যায়ে উন্নীত করার বিষয়ে কাজ করছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ ক্ষেত্রে অভিন্ন স্বার্থ নিয়ে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়া ও এর ব্যাপ্তি বাড়ানোর কৌশল নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘আমরা যদি শুধু বাণিজ্য নিয়ে কথা বলি, তখন তারা সুযোগটি পেয়ে যাবে। “তোমার শ্রমমান ভালো না বা তোমার কমপ্লায়েন্স ভালো না”—এ ইস্যুগুলোতে খালি কথা হবে। আরও বিভিন্ন ইস্যুতে যখন সম্পর্ক বাড়াতে পারব, তখন আলোচনা ছড়িয়ে যাবে। তখন বাণিজ্য শুধু ১০টি ইস্যুর একটি ইস্যু হবে। তখন আরও বড় ইস্যু সামনে চলে আসবে।’
পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘সম্পর্কের বিষয়টি যদি একপক্ষীয় হয়, আর আপনি গ্রহীতার দিকে থাকেন, তাহলে অবশ্যই অনেক কথা বেশি শুনতে হবে। আর নিজের অবস্থানটি যদি শক্ত থাকে, তাহলে বিনিয়োগ থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যুতে তাদের বাংলাদেশকে দরকার রয়েছে। এভাবে যদি আমরা সম্পর্ক বাড়াতে পারি, তাহলে মানবাধিকার, শ্রম আইন, এই শর্ত-সেই শর্ত নিয়ে কথা বলবে না। তখন হয়তো পুরো কথার ধরনই পাল্টে যাবে।’
স্বাধীনতার ৫০ বছরে তলাবিহীন ঝুড়ির ভঙ্গুর অর্থনীতি থেকে বিশ্বের অন্যতম অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির দেশ হিসেবে বিশ্বে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ। ভূরাজনৈতিক দৃষ্টিকোণে আগে থেকেই গুরুত্বপূর্ণ ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু এখন চীনের বিস্তার ও সেই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর আধিপত্য অক্ষুণ্ন রাখা ও কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা বিস্তারের যে সমীকরণ, তাতে বাংলাদেশ ঢুকে পড়েছে। বিশেষত ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশ হওয়ায় বাংলাদেশের গুরুত্ব এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি। এটি একদিকে চ্যালেঞ্জ, অন্যদিকে সুযোগ। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কে পরিবর্তন আনছে বাংলাদেশ।
খুব বেশি দিন আগে নয়, বাংলাদেশের বাজেটের ঘাটতি মেটাতে বড় অঙ্ক আসত বৈদেশিক অনুদান থেকে। আর এ কারণে বাংলাদেশকে নানাভাবে চাপে রাখার সুযোগ পেত পশ্চিমারা। কিন্তু বাজেটের তুলনায় বৈদেশিক অনুদানের পরিমাণ এখন একেবারে নগণ্য পর্যায়ে এসে ঠেকেছে। একটু পরিসংখ্যানে চোখ বোলানো যাক। অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭১-৭২ সালে বৈদেশিক সহায়তার পরিমাণ ছিল সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশের ইতিহাসে ওই অর্থবছরে অনুদান ছিল বাজেটের ৮৬ শতাংশ, আর ঋণ ছিল ৬ থেকে ৮ শতাংশ। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর ২০০৯-১০ অর্থবছরে ঘাটতি বাজেটের ৭০ শতাংশই এসেছিল বৈদেশিক ঋণ থেকে। বাকি ৩০ শতাংশ এসেছিল অনুদান থেকে। বর্তমানে এ বৈদেশিক অনুদানের পরিমাণ ঘাটতি বাজেটের ৩ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনা হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার জাতীয় বাজেট পাস হয়। এর মধ্যে বৈদেশিক অনুদান ধরা হয়েছে মাত্র ৩ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। পশ্চিমাদের ওপর ক্রমাগত নির্ভরশীলতা কমে আসাই এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে সম্পর্ককে এরই মধ্যে কৌশলগত পর্যায়ে উন্নীত করেছে বাংলাদেশ। অর্থনৈতিক সক্ষমতা বাড়ায় বাংলাদেশকে এখন নিয়মিত বাণিজ্যের পাশাপাশি সমরাস্ত্রের সম্ভাব্য বাজার হিসেবে বিবেচনা করছে পশ্চিমা দেশগুলো। এতে ঢুকে গেছে বাণিজ্য, ভূরাজনীতির মতো বহু বিষয়। এখন বাংলাদেশ ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে বিদ্যমান স্বার্থের সমীকরণটি অনেকাংশেই বদলে গেছে। নতুন এই সমীকরণে দাঁড়িয়ে পশ্চিমারা এমন অনেক কিছুতেই এখন চোখ বুজে থাকছে, যা আগে ভাবা যেত না। বর্তমানে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, আইনের শাসন, গণতান্ত্রিক চর্চা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতা, কার্যকর ও স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা, বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্বাচন, নির্বাচন কমিশন গঠন, বিরোধী মতের প্রতি সহনশীলতাসহ সার্বিক মানবাধিকার ইস্যুতে আগের মতো সমালোচনা করছে না পশ্চিমারা। বাংলাদেশকে না খেপিয়ে ব্যবসায়িক অংশীদারত্ব বাড়িয়ে নেওয়ার কৌশল নিয়েছে তারা। সেই সঙ্গে চীন ঠেকাতে ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে দেশগুলোর অভিন্ন কৌশল তো রয়েছেই।
ইউরোপের কয়েকটি দেশের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়ানো নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, দক্ষিণ এশিয়াসহ পুরো অঞ্চলে চীনের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বেশ কৌশলী পশ্চিমারা। জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের মতো দেশগুলো সঙ্গে সম্পর্ক কৌশলগত পর্যায়ে গিয়েছে। আর ইতালির সঙ্গে সম্পর্ক সেই স্তরে নিয়ে যাওয়া নিয়ে কাজ চলছে। আর এ দেশগুলোই ইউরোপের হর্তাকর্তা। ফলে সম্পর্কের ব্যাপ্তি বাড়িয়ে এদের হাতে রাখা গেলে বাকি দেশগুলো ও সংশ্লিষ্ট সংগঠন সব বিষয়ে খুব একটা সোচ্চার হতে পারবে না। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্প্রতি যে সমস্যাগুলো তৈরি হয়েছে, তা শিগগিরই কমে আসবে।
প্রসঙ্গত, গত ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষ বাহিনী র্যাব এবং এর সাবেক ও বর্তমান সাতজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আহুত গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশের ডাক না পাওয়ার বিষয়টি জুড়ে নিলে, এই নিষেধাজ্ঞা বেশ দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ওয়াশিংটনের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে। বিষয়টি সমাধানে আইনজীবী নিয়োগের প্রক্রিয়াও চলমান। এ অবস্থায় এ সংকট বেশি দূর গড়াবে না বলেই আশাবাদী ঢাকা।
কৌশলগত সম্পর্ক ও সম্পর্কের বহুমুখীকরণের কারণে অভ্যন্তরীণ নানা ইস্যুতে পশ্চিমা চাপ আগের তুলনায় কমার বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেননি বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি ও স্পেন ইইউয়ের গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র। তাদের প্রভাব ইইউতে রয়েছে। তবে তাদের ভোট কিন্তু একটা করে। ফলে বাকিদের গুরুত্বও কম নয়।’
তবে এ ক্ষেত্রে উন্নয়ন সহযোগিতার ওপর বাংলাদেশের নির্ভরশীলতা কমাকে বড় কারণ হিসেবে দেখছেন কূটনীতিকেরা। পশ্চিমা মিশনের এক রাজনৈতিক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, ‘এক সময় ওডিএর (উন্নয়ন সহযোগিতা) পরিমাণ বেশি ছিল। ফলে বাংলাদেশে যে সরকারই থাকুক না কেন, তাদের ওপর পশ্চিমাদের খবরদারি বেশি ছিল। কিন্তু ওডিএ কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পশ্চিমাদের সেই শক্তিও কমে গেছে। এখন তারা সমরাস্ত্র ও ব্যবসায় মনোযোগ দিয়েছে।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ২০০১ সালে বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছিল সেখানে সুশাসন, মানবাধিকার এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগ ছিল মূল ভিত্তি। এত দিন সুশাসন ও মানবাধিকারকে সামনে রেখে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের বিষয়টি আলোচনায় আসত। কিন্তু সেই পট পরিবর্তন হয়েছে। এখন প্রাধান্য পাচ্ছে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ। সম্পর্কে গৌণ হয়ে গিয়েছে সুশাসন ও মানবাধিকার।
এ ক্ষেত্রে ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ইউরোপের যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে আলাদা কৌশলকে একটা বড় কারণ হিসেবে দেখছেন সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ূন কবির। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, আগে একক দেশ ভিত্তিক নীতি নিলেও বর্তমানে ব্লকভিত্তিক নীতি গ্রহণ করা হচ্ছে। আগে একক দেশ থেকে তা সামাল দেওয়া সহজ হতো। আর এখন যেহেতু ব্লকভিত্তিক নীতি, সেহেতু তা সামাল দেওয়া কষ্টকর বিষয় হবে। কূটনীতিতে বাংলাদেশের কল্যাণ ও স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়ার ওপরই গুরুত্বারোপ করেন এ সাবেক কূটনীতিক।

পশ্চিমা দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে রয়েছে। ঘাটতি বাজেট পুষিয়ে নেওয়া বা ঋণ ও অনুদানের জন্য তাদের ওপর বাংলাদেশের বড় ধরনের নির্ভরশীলতা ছিল। এতে বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, মানবাধিকার, বাক্স্বাধীনতা, শ্রম পরিবেশ ও মানসহ বিভিন্ন বিষয়ে দেশগুলোর তরফ থেকে এক ধরনের চাপ ছিল। এখন এই নির্ভরশীলতা অনেকাংশেই কমেছে। এই ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে বহুমুখী ও কৌশলী কূটনীতির পথে এগোচ্ছে বর্তমান বাংলাদেশ সরকার, যাতে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পশ্চিমাদের চাপ কমানো যায়।
পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে এক এক করে সম্পর্কের ব্যাপ্তি বাড়িয়ে কৌশলগত পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের গণতন্ত্র, নির্বাচন, শ্রম অধিকার, বাক্স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, শ্রমমান বা নির্বাচনের মতো বিষয়গুলো এত দিন পশ্চিমাদের কাছে প্রধান ছিল। এখন এ বিষয়গুলো দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় গৌণ বিষয়ে পরিণত হচ্ছে। সম্পর্কের ব্যাপ্তি বাড়ায় বিষয়গুলো অনেক আলোচনার ইস্যুর একটি ইস্যুতে পরিণত হচ্ছে।
এভাবে যদি আমরা সম্পর্ক বাড়াতে পারি, তাহলে মানবাধিকার, শ্রম আইন, এই শর্ত-সেই শর্ত নিয়ে কথা বলবে না। তখন হয়তো পুরো কথার ধরনই পাল্টে যাবে।
—পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন
পশ্চিমাদের সঙ্গে সম্পর্ককে কৌশলগত পর্যায়ে উন্নীত করার বিষয়ে কাজ করছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ ক্ষেত্রে অভিন্ন স্বার্থ নিয়ে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়া ও এর ব্যাপ্তি বাড়ানোর কৌশল নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘আমরা যদি শুধু বাণিজ্য নিয়ে কথা বলি, তখন তারা সুযোগটি পেয়ে যাবে। “তোমার শ্রমমান ভালো না বা তোমার কমপ্লায়েন্স ভালো না”—এ ইস্যুগুলোতে খালি কথা হবে। আরও বিভিন্ন ইস্যুতে যখন সম্পর্ক বাড়াতে পারব, তখন আলোচনা ছড়িয়ে যাবে। তখন বাণিজ্য শুধু ১০টি ইস্যুর একটি ইস্যু হবে। তখন আরও বড় ইস্যু সামনে চলে আসবে।’
পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘সম্পর্কের বিষয়টি যদি একপক্ষীয় হয়, আর আপনি গ্রহীতার দিকে থাকেন, তাহলে অবশ্যই অনেক কথা বেশি শুনতে হবে। আর নিজের অবস্থানটি যদি শক্ত থাকে, তাহলে বিনিয়োগ থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যুতে তাদের বাংলাদেশকে দরকার রয়েছে। এভাবে যদি আমরা সম্পর্ক বাড়াতে পারি, তাহলে মানবাধিকার, শ্রম আইন, এই শর্ত-সেই শর্ত নিয়ে কথা বলবে না। তখন হয়তো পুরো কথার ধরনই পাল্টে যাবে।’
স্বাধীনতার ৫০ বছরে তলাবিহীন ঝুড়ির ভঙ্গুর অর্থনীতি থেকে বিশ্বের অন্যতম অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির দেশ হিসেবে বিশ্বে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ। ভূরাজনৈতিক দৃষ্টিকোণে আগে থেকেই গুরুত্বপূর্ণ ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু এখন চীনের বিস্তার ও সেই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর আধিপত্য অক্ষুণ্ন রাখা ও কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা বিস্তারের যে সমীকরণ, তাতে বাংলাদেশ ঢুকে পড়েছে। বিশেষত ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশ হওয়ায় বাংলাদেশের গুরুত্ব এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি। এটি একদিকে চ্যালেঞ্জ, অন্যদিকে সুযোগ। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কে পরিবর্তন আনছে বাংলাদেশ।
খুব বেশি দিন আগে নয়, বাংলাদেশের বাজেটের ঘাটতি মেটাতে বড় অঙ্ক আসত বৈদেশিক অনুদান থেকে। আর এ কারণে বাংলাদেশকে নানাভাবে চাপে রাখার সুযোগ পেত পশ্চিমারা। কিন্তু বাজেটের তুলনায় বৈদেশিক অনুদানের পরিমাণ এখন একেবারে নগণ্য পর্যায়ে এসে ঠেকেছে। একটু পরিসংখ্যানে চোখ বোলানো যাক। অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭১-৭২ সালে বৈদেশিক সহায়তার পরিমাণ ছিল সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশের ইতিহাসে ওই অর্থবছরে অনুদান ছিল বাজেটের ৮৬ শতাংশ, আর ঋণ ছিল ৬ থেকে ৮ শতাংশ। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর ২০০৯-১০ অর্থবছরে ঘাটতি বাজেটের ৭০ শতাংশই এসেছিল বৈদেশিক ঋণ থেকে। বাকি ৩০ শতাংশ এসেছিল অনুদান থেকে। বর্তমানে এ বৈদেশিক অনুদানের পরিমাণ ঘাটতি বাজেটের ৩ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনা হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার জাতীয় বাজেট পাস হয়। এর মধ্যে বৈদেশিক অনুদান ধরা হয়েছে মাত্র ৩ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। পশ্চিমাদের ওপর ক্রমাগত নির্ভরশীলতা কমে আসাই এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে সম্পর্ককে এরই মধ্যে কৌশলগত পর্যায়ে উন্নীত করেছে বাংলাদেশ। অর্থনৈতিক সক্ষমতা বাড়ায় বাংলাদেশকে এখন নিয়মিত বাণিজ্যের পাশাপাশি সমরাস্ত্রের সম্ভাব্য বাজার হিসেবে বিবেচনা করছে পশ্চিমা দেশগুলো। এতে ঢুকে গেছে বাণিজ্য, ভূরাজনীতির মতো বহু বিষয়। এখন বাংলাদেশ ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে বিদ্যমান স্বার্থের সমীকরণটি অনেকাংশেই বদলে গেছে। নতুন এই সমীকরণে দাঁড়িয়ে পশ্চিমারা এমন অনেক কিছুতেই এখন চোখ বুজে থাকছে, যা আগে ভাবা যেত না। বর্তমানে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, আইনের শাসন, গণতান্ত্রিক চর্চা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতা, কার্যকর ও স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা, বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্বাচন, নির্বাচন কমিশন গঠন, বিরোধী মতের প্রতি সহনশীলতাসহ সার্বিক মানবাধিকার ইস্যুতে আগের মতো সমালোচনা করছে না পশ্চিমারা। বাংলাদেশকে না খেপিয়ে ব্যবসায়িক অংশীদারত্ব বাড়িয়ে নেওয়ার কৌশল নিয়েছে তারা। সেই সঙ্গে চীন ঠেকাতে ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে দেশগুলোর অভিন্ন কৌশল তো রয়েছেই।
ইউরোপের কয়েকটি দেশের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়ানো নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, দক্ষিণ এশিয়াসহ পুরো অঞ্চলে চীনের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বেশ কৌশলী পশ্চিমারা। জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের মতো দেশগুলো সঙ্গে সম্পর্ক কৌশলগত পর্যায়ে গিয়েছে। আর ইতালির সঙ্গে সম্পর্ক সেই স্তরে নিয়ে যাওয়া নিয়ে কাজ চলছে। আর এ দেশগুলোই ইউরোপের হর্তাকর্তা। ফলে সম্পর্কের ব্যাপ্তি বাড়িয়ে এদের হাতে রাখা গেলে বাকি দেশগুলো ও সংশ্লিষ্ট সংগঠন সব বিষয়ে খুব একটা সোচ্চার হতে পারবে না। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্প্রতি যে সমস্যাগুলো তৈরি হয়েছে, তা শিগগিরই কমে আসবে।
প্রসঙ্গত, গত ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষ বাহিনী র্যাব এবং এর সাবেক ও বর্তমান সাতজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আহুত গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশের ডাক না পাওয়ার বিষয়টি জুড়ে নিলে, এই নিষেধাজ্ঞা বেশ দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ওয়াশিংটনের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে। বিষয়টি সমাধানে আইনজীবী নিয়োগের প্রক্রিয়াও চলমান। এ অবস্থায় এ সংকট বেশি দূর গড়াবে না বলেই আশাবাদী ঢাকা।
কৌশলগত সম্পর্ক ও সম্পর্কের বহুমুখীকরণের কারণে অভ্যন্তরীণ নানা ইস্যুতে পশ্চিমা চাপ আগের তুলনায় কমার বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেননি বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি ও স্পেন ইইউয়ের গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র। তাদের প্রভাব ইইউতে রয়েছে। তবে তাদের ভোট কিন্তু একটা করে। ফলে বাকিদের গুরুত্বও কম নয়।’
তবে এ ক্ষেত্রে উন্নয়ন সহযোগিতার ওপর বাংলাদেশের নির্ভরশীলতা কমাকে বড় কারণ হিসেবে দেখছেন কূটনীতিকেরা। পশ্চিমা মিশনের এক রাজনৈতিক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, ‘এক সময় ওডিএর (উন্নয়ন সহযোগিতা) পরিমাণ বেশি ছিল। ফলে বাংলাদেশে যে সরকারই থাকুক না কেন, তাদের ওপর পশ্চিমাদের খবরদারি বেশি ছিল। কিন্তু ওডিএ কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পশ্চিমাদের সেই শক্তিও কমে গেছে। এখন তারা সমরাস্ত্র ও ব্যবসায় মনোযোগ দিয়েছে।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ২০০১ সালে বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছিল সেখানে সুশাসন, মানবাধিকার এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগ ছিল মূল ভিত্তি। এত দিন সুশাসন ও মানবাধিকারকে সামনে রেখে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের বিষয়টি আলোচনায় আসত। কিন্তু সেই পট পরিবর্তন হয়েছে। এখন প্রাধান্য পাচ্ছে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ। সম্পর্কে গৌণ হয়ে গিয়েছে সুশাসন ও মানবাধিকার।
এ ক্ষেত্রে ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ইউরোপের যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে আলাদা কৌশলকে একটা বড় কারণ হিসেবে দেখছেন সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ূন কবির। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, আগে একক দেশ ভিত্তিক নীতি নিলেও বর্তমানে ব্লকভিত্তিক নীতি গ্রহণ করা হচ্ছে। আগে একক দেশ থেকে তা সামাল দেওয়া সহজ হতো। আর এখন যেহেতু ব্লকভিত্তিক নীতি, সেহেতু তা সামাল দেওয়া কষ্টকর বিষয় হবে। কূটনীতিতে বাংলাদেশের কল্যাণ ও স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়ার ওপরই গুরুত্বারোপ করেন এ সাবেক কূটনীতিক।
তাসনিম মহসিন, ঢাকা

পশ্চিমা দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে রয়েছে। ঘাটতি বাজেট পুষিয়ে নেওয়া বা ঋণ ও অনুদানের জন্য তাদের ওপর বাংলাদেশের বড় ধরনের নির্ভরশীলতা ছিল। এতে বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, মানবাধিকার, বাক্স্বাধীনতা, শ্রম পরিবেশ ও মানসহ বিভিন্ন বিষয়ে দেশগুলোর তরফ থেকে এক ধরনের চাপ ছিল। এখন এই নির্ভরশীলতা অনেকাংশেই কমেছে। এই ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে বহুমুখী ও কৌশলী কূটনীতির পথে এগোচ্ছে বর্তমান বাংলাদেশ সরকার, যাতে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পশ্চিমাদের চাপ কমানো যায়।
পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে এক এক করে সম্পর্কের ব্যাপ্তি বাড়িয়ে কৌশলগত পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের গণতন্ত্র, নির্বাচন, শ্রম অধিকার, বাক্স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, শ্রমমান বা নির্বাচনের মতো বিষয়গুলো এত দিন পশ্চিমাদের কাছে প্রধান ছিল। এখন এ বিষয়গুলো দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় গৌণ বিষয়ে পরিণত হচ্ছে। সম্পর্কের ব্যাপ্তি বাড়ায় বিষয়গুলো অনেক আলোচনার ইস্যুর একটি ইস্যুতে পরিণত হচ্ছে।
এভাবে যদি আমরা সম্পর্ক বাড়াতে পারি, তাহলে মানবাধিকার, শ্রম আইন, এই শর্ত-সেই শর্ত নিয়ে কথা বলবে না। তখন হয়তো পুরো কথার ধরনই পাল্টে যাবে।
—পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন
পশ্চিমাদের সঙ্গে সম্পর্ককে কৌশলগত পর্যায়ে উন্নীত করার বিষয়ে কাজ করছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ ক্ষেত্রে অভিন্ন স্বার্থ নিয়ে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়া ও এর ব্যাপ্তি বাড়ানোর কৌশল নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘আমরা যদি শুধু বাণিজ্য নিয়ে কথা বলি, তখন তারা সুযোগটি পেয়ে যাবে। “তোমার শ্রমমান ভালো না বা তোমার কমপ্লায়েন্স ভালো না”—এ ইস্যুগুলোতে খালি কথা হবে। আরও বিভিন্ন ইস্যুতে যখন সম্পর্ক বাড়াতে পারব, তখন আলোচনা ছড়িয়ে যাবে। তখন বাণিজ্য শুধু ১০টি ইস্যুর একটি ইস্যু হবে। তখন আরও বড় ইস্যু সামনে চলে আসবে।’
পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘সম্পর্কের বিষয়টি যদি একপক্ষীয় হয়, আর আপনি গ্রহীতার দিকে থাকেন, তাহলে অবশ্যই অনেক কথা বেশি শুনতে হবে। আর নিজের অবস্থানটি যদি শক্ত থাকে, তাহলে বিনিয়োগ থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যুতে তাদের বাংলাদেশকে দরকার রয়েছে। এভাবে যদি আমরা সম্পর্ক বাড়াতে পারি, তাহলে মানবাধিকার, শ্রম আইন, এই শর্ত-সেই শর্ত নিয়ে কথা বলবে না। তখন হয়তো পুরো কথার ধরনই পাল্টে যাবে।’
স্বাধীনতার ৫০ বছরে তলাবিহীন ঝুড়ির ভঙ্গুর অর্থনীতি থেকে বিশ্বের অন্যতম অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির দেশ হিসেবে বিশ্বে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ। ভূরাজনৈতিক দৃষ্টিকোণে আগে থেকেই গুরুত্বপূর্ণ ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু এখন চীনের বিস্তার ও সেই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর আধিপত্য অক্ষুণ্ন রাখা ও কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা বিস্তারের যে সমীকরণ, তাতে বাংলাদেশ ঢুকে পড়েছে। বিশেষত ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশ হওয়ায় বাংলাদেশের গুরুত্ব এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি। এটি একদিকে চ্যালেঞ্জ, অন্যদিকে সুযোগ। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কে পরিবর্তন আনছে বাংলাদেশ।
খুব বেশি দিন আগে নয়, বাংলাদেশের বাজেটের ঘাটতি মেটাতে বড় অঙ্ক আসত বৈদেশিক অনুদান থেকে। আর এ কারণে বাংলাদেশকে নানাভাবে চাপে রাখার সুযোগ পেত পশ্চিমারা। কিন্তু বাজেটের তুলনায় বৈদেশিক অনুদানের পরিমাণ এখন একেবারে নগণ্য পর্যায়ে এসে ঠেকেছে। একটু পরিসংখ্যানে চোখ বোলানো যাক। অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭১-৭২ সালে বৈদেশিক সহায়তার পরিমাণ ছিল সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশের ইতিহাসে ওই অর্থবছরে অনুদান ছিল বাজেটের ৮৬ শতাংশ, আর ঋণ ছিল ৬ থেকে ৮ শতাংশ। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর ২০০৯-১০ অর্থবছরে ঘাটতি বাজেটের ৭০ শতাংশই এসেছিল বৈদেশিক ঋণ থেকে। বাকি ৩০ শতাংশ এসেছিল অনুদান থেকে। বর্তমানে এ বৈদেশিক অনুদানের পরিমাণ ঘাটতি বাজেটের ৩ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনা হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার জাতীয় বাজেট পাস হয়। এর মধ্যে বৈদেশিক অনুদান ধরা হয়েছে মাত্র ৩ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। পশ্চিমাদের ওপর ক্রমাগত নির্ভরশীলতা কমে আসাই এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে সম্পর্ককে এরই মধ্যে কৌশলগত পর্যায়ে উন্নীত করেছে বাংলাদেশ। অর্থনৈতিক সক্ষমতা বাড়ায় বাংলাদেশকে এখন নিয়মিত বাণিজ্যের পাশাপাশি সমরাস্ত্রের সম্ভাব্য বাজার হিসেবে বিবেচনা করছে পশ্চিমা দেশগুলো। এতে ঢুকে গেছে বাণিজ্য, ভূরাজনীতির মতো বহু বিষয়। এখন বাংলাদেশ ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে বিদ্যমান স্বার্থের সমীকরণটি অনেকাংশেই বদলে গেছে। নতুন এই সমীকরণে দাঁড়িয়ে পশ্চিমারা এমন অনেক কিছুতেই এখন চোখ বুজে থাকছে, যা আগে ভাবা যেত না। বর্তমানে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, আইনের শাসন, গণতান্ত্রিক চর্চা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতা, কার্যকর ও স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা, বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্বাচন, নির্বাচন কমিশন গঠন, বিরোধী মতের প্রতি সহনশীলতাসহ সার্বিক মানবাধিকার ইস্যুতে আগের মতো সমালোচনা করছে না পশ্চিমারা। বাংলাদেশকে না খেপিয়ে ব্যবসায়িক অংশীদারত্ব বাড়িয়ে নেওয়ার কৌশল নিয়েছে তারা। সেই সঙ্গে চীন ঠেকাতে ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে দেশগুলোর অভিন্ন কৌশল তো রয়েছেই।
ইউরোপের কয়েকটি দেশের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়ানো নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, দক্ষিণ এশিয়াসহ পুরো অঞ্চলে চীনের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বেশ কৌশলী পশ্চিমারা। জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের মতো দেশগুলো সঙ্গে সম্পর্ক কৌশলগত পর্যায়ে গিয়েছে। আর ইতালির সঙ্গে সম্পর্ক সেই স্তরে নিয়ে যাওয়া নিয়ে কাজ চলছে। আর এ দেশগুলোই ইউরোপের হর্তাকর্তা। ফলে সম্পর্কের ব্যাপ্তি বাড়িয়ে এদের হাতে রাখা গেলে বাকি দেশগুলো ও সংশ্লিষ্ট সংগঠন সব বিষয়ে খুব একটা সোচ্চার হতে পারবে না। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্প্রতি যে সমস্যাগুলো তৈরি হয়েছে, তা শিগগিরই কমে আসবে।
প্রসঙ্গত, গত ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষ বাহিনী র্যাব এবং এর সাবেক ও বর্তমান সাতজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আহুত গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশের ডাক না পাওয়ার বিষয়টি জুড়ে নিলে, এই নিষেধাজ্ঞা বেশ দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ওয়াশিংটনের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে। বিষয়টি সমাধানে আইনজীবী নিয়োগের প্রক্রিয়াও চলমান। এ অবস্থায় এ সংকট বেশি দূর গড়াবে না বলেই আশাবাদী ঢাকা।
কৌশলগত সম্পর্ক ও সম্পর্কের বহুমুখীকরণের কারণে অভ্যন্তরীণ নানা ইস্যুতে পশ্চিমা চাপ আগের তুলনায় কমার বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেননি বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি ও স্পেন ইইউয়ের গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র। তাদের প্রভাব ইইউতে রয়েছে। তবে তাদের ভোট কিন্তু একটা করে। ফলে বাকিদের গুরুত্বও কম নয়।’
তবে এ ক্ষেত্রে উন্নয়ন সহযোগিতার ওপর বাংলাদেশের নির্ভরশীলতা কমাকে বড় কারণ হিসেবে দেখছেন কূটনীতিকেরা। পশ্চিমা মিশনের এক রাজনৈতিক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, ‘এক সময় ওডিএর (উন্নয়ন সহযোগিতা) পরিমাণ বেশি ছিল। ফলে বাংলাদেশে যে সরকারই থাকুক না কেন, তাদের ওপর পশ্চিমাদের খবরদারি বেশি ছিল। কিন্তু ওডিএ কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পশ্চিমাদের সেই শক্তিও কমে গেছে। এখন তারা সমরাস্ত্র ও ব্যবসায় মনোযোগ দিয়েছে।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ২০০১ সালে বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছিল সেখানে সুশাসন, মানবাধিকার এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগ ছিল মূল ভিত্তি। এত দিন সুশাসন ও মানবাধিকারকে সামনে রেখে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের বিষয়টি আলোচনায় আসত। কিন্তু সেই পট পরিবর্তন হয়েছে। এখন প্রাধান্য পাচ্ছে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ। সম্পর্কে গৌণ হয়ে গিয়েছে সুশাসন ও মানবাধিকার।
এ ক্ষেত্রে ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ইউরোপের যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে আলাদা কৌশলকে একটা বড় কারণ হিসেবে দেখছেন সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ূন কবির। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, আগে একক দেশ ভিত্তিক নীতি নিলেও বর্তমানে ব্লকভিত্তিক নীতি গ্রহণ করা হচ্ছে। আগে একক দেশ থেকে তা সামাল দেওয়া সহজ হতো। আর এখন যেহেতু ব্লকভিত্তিক নীতি, সেহেতু তা সামাল দেওয়া কষ্টকর বিষয় হবে। কূটনীতিতে বাংলাদেশের কল্যাণ ও স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়ার ওপরই গুরুত্বারোপ করেন এ সাবেক কূটনীতিক।

পশ্চিমা দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে রয়েছে। ঘাটতি বাজেট পুষিয়ে নেওয়া বা ঋণ ও অনুদানের জন্য তাদের ওপর বাংলাদেশের বড় ধরনের নির্ভরশীলতা ছিল। এতে বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, মানবাধিকার, বাক্স্বাধীনতা, শ্রম পরিবেশ ও মানসহ বিভিন্ন বিষয়ে দেশগুলোর তরফ থেকে এক ধরনের চাপ ছিল। এখন এই নির্ভরশীলতা অনেকাংশেই কমেছে। এই ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে বহুমুখী ও কৌশলী কূটনীতির পথে এগোচ্ছে বর্তমান বাংলাদেশ সরকার, যাতে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পশ্চিমাদের চাপ কমানো যায়।
পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে এক এক করে সম্পর্কের ব্যাপ্তি বাড়িয়ে কৌশলগত পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের গণতন্ত্র, নির্বাচন, শ্রম অধিকার, বাক্স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, শ্রমমান বা নির্বাচনের মতো বিষয়গুলো এত দিন পশ্চিমাদের কাছে প্রধান ছিল। এখন এ বিষয়গুলো দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় গৌণ বিষয়ে পরিণত হচ্ছে। সম্পর্কের ব্যাপ্তি বাড়ায় বিষয়গুলো অনেক আলোচনার ইস্যুর একটি ইস্যুতে পরিণত হচ্ছে।
এভাবে যদি আমরা সম্পর্ক বাড়াতে পারি, তাহলে মানবাধিকার, শ্রম আইন, এই শর্ত-সেই শর্ত নিয়ে কথা বলবে না। তখন হয়তো পুরো কথার ধরনই পাল্টে যাবে।
—পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন
পশ্চিমাদের সঙ্গে সম্পর্ককে কৌশলগত পর্যায়ে উন্নীত করার বিষয়ে কাজ করছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ ক্ষেত্রে অভিন্ন স্বার্থ নিয়ে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়া ও এর ব্যাপ্তি বাড়ানোর কৌশল নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘আমরা যদি শুধু বাণিজ্য নিয়ে কথা বলি, তখন তারা সুযোগটি পেয়ে যাবে। “তোমার শ্রমমান ভালো না বা তোমার কমপ্লায়েন্স ভালো না”—এ ইস্যুগুলোতে খালি কথা হবে। আরও বিভিন্ন ইস্যুতে যখন সম্পর্ক বাড়াতে পারব, তখন আলোচনা ছড়িয়ে যাবে। তখন বাণিজ্য শুধু ১০টি ইস্যুর একটি ইস্যু হবে। তখন আরও বড় ইস্যু সামনে চলে আসবে।’
পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘সম্পর্কের বিষয়টি যদি একপক্ষীয় হয়, আর আপনি গ্রহীতার দিকে থাকেন, তাহলে অবশ্যই অনেক কথা বেশি শুনতে হবে। আর নিজের অবস্থানটি যদি শক্ত থাকে, তাহলে বিনিয়োগ থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যুতে তাদের বাংলাদেশকে দরকার রয়েছে। এভাবে যদি আমরা সম্পর্ক বাড়াতে পারি, তাহলে মানবাধিকার, শ্রম আইন, এই শর্ত-সেই শর্ত নিয়ে কথা বলবে না। তখন হয়তো পুরো কথার ধরনই পাল্টে যাবে।’
স্বাধীনতার ৫০ বছরে তলাবিহীন ঝুড়ির ভঙ্গুর অর্থনীতি থেকে বিশ্বের অন্যতম অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির দেশ হিসেবে বিশ্বে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ। ভূরাজনৈতিক দৃষ্টিকোণে আগে থেকেই গুরুত্বপূর্ণ ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু এখন চীনের বিস্তার ও সেই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর আধিপত্য অক্ষুণ্ন রাখা ও কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা বিস্তারের যে সমীকরণ, তাতে বাংলাদেশ ঢুকে পড়েছে। বিশেষত ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশ হওয়ায় বাংলাদেশের গুরুত্ব এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি। এটি একদিকে চ্যালেঞ্জ, অন্যদিকে সুযোগ। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কে পরিবর্তন আনছে বাংলাদেশ।
খুব বেশি দিন আগে নয়, বাংলাদেশের বাজেটের ঘাটতি মেটাতে বড় অঙ্ক আসত বৈদেশিক অনুদান থেকে। আর এ কারণে বাংলাদেশকে নানাভাবে চাপে রাখার সুযোগ পেত পশ্চিমারা। কিন্তু বাজেটের তুলনায় বৈদেশিক অনুদানের পরিমাণ এখন একেবারে নগণ্য পর্যায়ে এসে ঠেকেছে। একটু পরিসংখ্যানে চোখ বোলানো যাক। অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭১-৭২ সালে বৈদেশিক সহায়তার পরিমাণ ছিল সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশের ইতিহাসে ওই অর্থবছরে অনুদান ছিল বাজেটের ৮৬ শতাংশ, আর ঋণ ছিল ৬ থেকে ৮ শতাংশ। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর ২০০৯-১০ অর্থবছরে ঘাটতি বাজেটের ৭০ শতাংশই এসেছিল বৈদেশিক ঋণ থেকে। বাকি ৩০ শতাংশ এসেছিল অনুদান থেকে। বর্তমানে এ বৈদেশিক অনুদানের পরিমাণ ঘাটতি বাজেটের ৩ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনা হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার জাতীয় বাজেট পাস হয়। এর মধ্যে বৈদেশিক অনুদান ধরা হয়েছে মাত্র ৩ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। পশ্চিমাদের ওপর ক্রমাগত নির্ভরশীলতা কমে আসাই এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে সম্পর্ককে এরই মধ্যে কৌশলগত পর্যায়ে উন্নীত করেছে বাংলাদেশ। অর্থনৈতিক সক্ষমতা বাড়ায় বাংলাদেশকে এখন নিয়মিত বাণিজ্যের পাশাপাশি সমরাস্ত্রের সম্ভাব্য বাজার হিসেবে বিবেচনা করছে পশ্চিমা দেশগুলো। এতে ঢুকে গেছে বাণিজ্য, ভূরাজনীতির মতো বহু বিষয়। এখন বাংলাদেশ ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে বিদ্যমান স্বার্থের সমীকরণটি অনেকাংশেই বদলে গেছে। নতুন এই সমীকরণে দাঁড়িয়ে পশ্চিমারা এমন অনেক কিছুতেই এখন চোখ বুজে থাকছে, যা আগে ভাবা যেত না। বর্তমানে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, আইনের শাসন, গণতান্ত্রিক চর্চা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতা, কার্যকর ও স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা, বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্বাচন, নির্বাচন কমিশন গঠন, বিরোধী মতের প্রতি সহনশীলতাসহ সার্বিক মানবাধিকার ইস্যুতে আগের মতো সমালোচনা করছে না পশ্চিমারা। বাংলাদেশকে না খেপিয়ে ব্যবসায়িক অংশীদারত্ব বাড়িয়ে নেওয়ার কৌশল নিয়েছে তারা। সেই সঙ্গে চীন ঠেকাতে ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে দেশগুলোর অভিন্ন কৌশল তো রয়েছেই।
ইউরোপের কয়েকটি দেশের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়ানো নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, দক্ষিণ এশিয়াসহ পুরো অঞ্চলে চীনের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বেশ কৌশলী পশ্চিমারা। জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের মতো দেশগুলো সঙ্গে সম্পর্ক কৌশলগত পর্যায়ে গিয়েছে। আর ইতালির সঙ্গে সম্পর্ক সেই স্তরে নিয়ে যাওয়া নিয়ে কাজ চলছে। আর এ দেশগুলোই ইউরোপের হর্তাকর্তা। ফলে সম্পর্কের ব্যাপ্তি বাড়িয়ে এদের হাতে রাখা গেলে বাকি দেশগুলো ও সংশ্লিষ্ট সংগঠন সব বিষয়ে খুব একটা সোচ্চার হতে পারবে না। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্প্রতি যে সমস্যাগুলো তৈরি হয়েছে, তা শিগগিরই কমে আসবে।
প্রসঙ্গত, গত ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষ বাহিনী র্যাব এবং এর সাবেক ও বর্তমান সাতজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আহুত গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশের ডাক না পাওয়ার বিষয়টি জুড়ে নিলে, এই নিষেধাজ্ঞা বেশ দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ওয়াশিংটনের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে। বিষয়টি সমাধানে আইনজীবী নিয়োগের প্রক্রিয়াও চলমান। এ অবস্থায় এ সংকট বেশি দূর গড়াবে না বলেই আশাবাদী ঢাকা।
কৌশলগত সম্পর্ক ও সম্পর্কের বহুমুখীকরণের কারণে অভ্যন্তরীণ নানা ইস্যুতে পশ্চিমা চাপ আগের তুলনায় কমার বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেননি বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি ও স্পেন ইইউয়ের গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র। তাদের প্রভাব ইইউতে রয়েছে। তবে তাদের ভোট কিন্তু একটা করে। ফলে বাকিদের গুরুত্বও কম নয়।’
তবে এ ক্ষেত্রে উন্নয়ন সহযোগিতার ওপর বাংলাদেশের নির্ভরশীলতা কমাকে বড় কারণ হিসেবে দেখছেন কূটনীতিকেরা। পশ্চিমা মিশনের এক রাজনৈতিক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, ‘এক সময় ওডিএর (উন্নয়ন সহযোগিতা) পরিমাণ বেশি ছিল। ফলে বাংলাদেশে যে সরকারই থাকুক না কেন, তাদের ওপর পশ্চিমাদের খবরদারি বেশি ছিল। কিন্তু ওডিএ কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পশ্চিমাদের সেই শক্তিও কমে গেছে। এখন তারা সমরাস্ত্র ও ব্যবসায় মনোযোগ দিয়েছে।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ২০০১ সালে বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছিল সেখানে সুশাসন, মানবাধিকার এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগ ছিল মূল ভিত্তি। এত দিন সুশাসন ও মানবাধিকারকে সামনে রেখে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের বিষয়টি আলোচনায় আসত। কিন্তু সেই পট পরিবর্তন হয়েছে। এখন প্রাধান্য পাচ্ছে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ। সম্পর্কে গৌণ হয়ে গিয়েছে সুশাসন ও মানবাধিকার।
এ ক্ষেত্রে ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ইউরোপের যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে আলাদা কৌশলকে একটা বড় কারণ হিসেবে দেখছেন সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ূন কবির। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, আগে একক দেশ ভিত্তিক নীতি নিলেও বর্তমানে ব্লকভিত্তিক নীতি গ্রহণ করা হচ্ছে। আগে একক দেশ থেকে তা সামাল দেওয়া সহজ হতো। আর এখন যেহেতু ব্লকভিত্তিক নীতি, সেহেতু তা সামাল দেওয়া কষ্টকর বিষয় হবে। কূটনীতিতে বাংলাদেশের কল্যাণ ও স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়ার ওপরই গুরুত্বারোপ করেন এ সাবেক কূটনীতিক।

ড. কামাল সিদ্দিকী ২০০৬ সাল পর্যন্ত তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুখ্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া জাতিসংঘের শিশু অধিকার কমিটির নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশ কর্তৃক মনোনীত হন এবং ২০০৫ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
৭ মিনিট আগে
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ এবং পরিকল্পনা বিভাগে নতুন সচিব নিয়োগ দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে তিনজন অতিরিক্ত সচিবকে সচিব পদে পদোন্নতি এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত এক সচিবকে পদায়ন করে রোববার রাতে আলাদা আলাদা প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
১ ঘণ্টা আগে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে হত্যাসহ নানা অভিযোগে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় করা মামলাগুলোতে অনেককে পূর্বশত্রুতার জেরে ও হয়রানি করতে আসামি করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্ত শেষে এ পর্যন্ত ১৬৫টি মামলা থেকে এমন প্রায় দেড় হাজার আসামিকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
৮ ঘণ্টা আগে
পুলিশ কমিশন গঠন করতে অধ্যাদেশের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে এটি শিগগির অনুমোদন করা হচ্ছে। এরপর স্বাধীন এই কমিশন গঠনের কার্যক্রম শুরু হবে। পুলিশ সদস্যদের নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি, অভিযোগ তদন্ত ছাড়াও পুলিশি কর্মকাণ্ডের তদারকির দায়িত্ব থাকবে পুলিশ কমিশনের ওপর।
৮ ঘণ্টা আগেবিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা

সাবেক মুখ্যসচিব ড. কামাল সিদ্দিকী মারা গেছেন। আজ সোমবার ভোরে গুলশানে নিজ বাসভবনে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। সকালে এক সরকারি তথ্য বিবরণীতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আজ আছর নামাজের পর গুলশান আজাদ মসজিদে তাঁর নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাঁকে সমাহিত করা হবে।
কামাল সিদ্দিকী ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি ২০০৬ সাল পর্যন্ত তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মুখ্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জাতিসংঘের শিশু অধিকার কমিটির নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশ কর্তৃক মনোনীত হন এবং ২০০৫ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।
ড. কামাল সিদ্দিকী ২০০৬ সাল পর্যন্ত এনসাইক্লোপিডিয়া অব ফ্লোরা অ্যান্ড ফাউনা অব বাংলাদেশের প্রধান সম্পাদক ছিলেন। এটির প্রথম খণ্ড ২০০৮ সালে এশিয়াটিক সোসাইটি অব বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত হয়।

সাবেক মুখ্যসচিব ড. কামাল সিদ্দিকী মারা গেছেন। আজ সোমবার ভোরে গুলশানে নিজ বাসভবনে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। সকালে এক সরকারি তথ্য বিবরণীতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আজ আছর নামাজের পর গুলশান আজাদ মসজিদে তাঁর নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাঁকে সমাহিত করা হবে।
কামাল সিদ্দিকী ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি ২০০৬ সাল পর্যন্ত তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মুখ্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জাতিসংঘের শিশু অধিকার কমিটির নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশ কর্তৃক মনোনীত হন এবং ২০০৫ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।
ড. কামাল সিদ্দিকী ২০০৬ সাল পর্যন্ত এনসাইক্লোপিডিয়া অব ফ্লোরা অ্যান্ড ফাউনা অব বাংলাদেশের প্রধান সম্পাদক ছিলেন। এটির প্রথম খণ্ড ২০০৮ সালে এশিয়াটিক সোসাইটি অব বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত হয়।

ঘাটতি বাজেট পুষিয়ে নেওয়া বা ঋণ ও অনুদানের জন্য পশ্চিমা দেশগুলোর ওপর বাংলাদেশের বড় ধরনের নির্ভরশীলতা ছিল। এতে বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, মানবাধিকার, বাক্স্বাধীনতা, শ্রম পরিবেশ ও মানসহ বিভিন্ন বিষয়ে দেশগুলোর তরফ থেকে এক ধরনের চাপ ছিল। এখন এই নির্ভরশীলতা অনেকাংশেই কমেছে। এই ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে বহ
০৩ জানুয়ারি ২০২২
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ এবং পরিকল্পনা বিভাগে নতুন সচিব নিয়োগ দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে তিনজন অতিরিক্ত সচিবকে সচিব পদে পদোন্নতি এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত এক সচিবকে পদায়ন করে রোববার রাতে আলাদা আলাদা প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
১ ঘণ্টা আগে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে হত্যাসহ নানা অভিযোগে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় করা মামলাগুলোতে অনেককে পূর্বশত্রুতার জেরে ও হয়রানি করতে আসামি করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্ত শেষে এ পর্যন্ত ১৬৫টি মামলা থেকে এমন প্রায় দেড় হাজার আসামিকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
৮ ঘণ্টা আগে
পুলিশ কমিশন গঠন করতে অধ্যাদেশের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে এটি শিগগির অনুমোদন করা হচ্ছে। এরপর স্বাধীন এই কমিশন গঠনের কার্যক্রম শুরু হবে। পুলিশ সদস্যদের নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি, অভিযোগ তদন্ত ছাড়াও পুলিশি কর্মকাণ্ডের তদারকির দায়িত্ব থাকবে পুলিশ কমিশনের ওপর।
৮ ঘণ্টা আগেবিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ এবং পরিকল্পনা বিভাগে নতুন সচিব নিয়োগ দিয়েছে সরকার।
এর মধ্যে তিনজন অতিরিক্ত সচিবকে সচিব পদে পদোন্নতি এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত এক সচিবকে পদায়ন করে রোববার রাতে আলাদা আলাদা প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. নুরুন্নাহার চৌধুরীকে সচিব পদোন্নতি দিয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে পদায়ন করা হয়েছে।
অর্থ বিভাগে সংযুক্ত অতিরিক্ত সচিব বিলকিস জাহান রিমিকে পদোন্নতির পর বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. শওকত রশীদ চৌধুরী পদোন্নতিকে সচিব পদোন্নতি দিয়ে পেয়ে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত সচিব এস এম শাকিল আখতারকে পরিকল্পনা বিভাগের সচিব পদে পদায়ন করা হয়েছে।
গত ৩ আগস্ট পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সংযুক্ত অতিরিক্ত সচিব এস এম শাকিল আখতারকে সচিব পদে পদোন্নতি দিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু ওই পদে যোগ দিতে পারেননি তিনি। এরপর তাঁকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ এবং পরিকল্পনা বিভাগে নতুন সচিব নিয়োগ দিয়েছে সরকার।
এর মধ্যে তিনজন অতিরিক্ত সচিবকে সচিব পদে পদোন্নতি এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত এক সচিবকে পদায়ন করে রোববার রাতে আলাদা আলাদা প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. নুরুন্নাহার চৌধুরীকে সচিব পদোন্নতি দিয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে পদায়ন করা হয়েছে।
অর্থ বিভাগে সংযুক্ত অতিরিক্ত সচিব বিলকিস জাহান রিমিকে পদোন্নতির পর বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. শওকত রশীদ চৌধুরী পদোন্নতিকে সচিব পদোন্নতি দিয়ে পেয়ে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত সচিব এস এম শাকিল আখতারকে পরিকল্পনা বিভাগের সচিব পদে পদায়ন করা হয়েছে।
গত ৩ আগস্ট পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সংযুক্ত অতিরিক্ত সচিব এস এম শাকিল আখতারকে সচিব পদে পদোন্নতি দিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু ওই পদে যোগ দিতে পারেননি তিনি। এরপর তাঁকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়।

ঘাটতি বাজেট পুষিয়ে নেওয়া বা ঋণ ও অনুদানের জন্য পশ্চিমা দেশগুলোর ওপর বাংলাদেশের বড় ধরনের নির্ভরশীলতা ছিল। এতে বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, মানবাধিকার, বাক্স্বাধীনতা, শ্রম পরিবেশ ও মানসহ বিভিন্ন বিষয়ে দেশগুলোর তরফ থেকে এক ধরনের চাপ ছিল। এখন এই নির্ভরশীলতা অনেকাংশেই কমেছে। এই ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে বহ
০৩ জানুয়ারি ২০২২
ড. কামাল সিদ্দিকী ২০০৬ সাল পর্যন্ত তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুখ্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া জাতিসংঘের শিশু অধিকার কমিটির নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশ কর্তৃক মনোনীত হন এবং ২০০৫ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
৭ মিনিট আগে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে হত্যাসহ নানা অভিযোগে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় করা মামলাগুলোতে অনেককে পূর্বশত্রুতার জেরে ও হয়রানি করতে আসামি করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্ত শেষে এ পর্যন্ত ১৬৫টি মামলা থেকে এমন প্রায় দেড় হাজার আসামিকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
৮ ঘণ্টা আগে
পুলিশ কমিশন গঠন করতে অধ্যাদেশের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে এটি শিগগির অনুমোদন করা হচ্ছে। এরপর স্বাধীন এই কমিশন গঠনের কার্যক্রম শুরু হবে। পুলিশ সদস্যদের নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি, অভিযোগ তদন্ত ছাড়াও পুলিশি কর্মকাণ্ডের তদারকির দায়িত্ব থাকবে পুলিশ কমিশনের ওপর।
৮ ঘণ্টা আগেআমানুর রহমান রনি, ঢাকা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে হত্যাসহ নানা অভিযোগে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় করা মামলাগুলোতে অনেককে পূর্বশত্রুতার জেরে ও হয়রানি করতে আসামি করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্ত শেষে এ পর্যন্ত ১৬৫টি মামলা থেকে এমন প্রায় দেড় হাজার আসামিকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) বিভিন্ন থানায় করা ১৬৫টি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা প্রাথমিক তদন্তে ১ হাজার ৪৫৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগের সঙ্গে কোনো সংশ্লিষ্টতা পাননি। তাই তাঁরা হয়রানির শিকার এসব ব্যক্তিকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিতে আদালতে অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন দেন। পরে আদালত এসব ব্যক্তিকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন। তদন্তকারী কর্মকর্তারা এই আবেদন করেছেন ফৌজদারি কার্যবিধির সংশোধিত ধারার ক্ষমতাবলে।
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি) বাহারুল আলম বলেছেন, এটি চলমান প্রক্রিয়া। সারা দেশে এ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
ডিএমপির সূত্র জানায়, গত বছরের জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় হত্যা, হত্যাচেষ্টা, সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ, হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় ডিএমপির আট বিভাগের ৫০টি থানায় অনেক মামলা হয়েছে। এসব মামলায় আসামি অসংখ্য। এসব মামলায় অনেককে পূর্বশত্রুতার জেরে এবং হয়রানি করতে আসামি করা হয়েছে। হয়রানি ঠেকাতে এবং এমন ঘটনা যাতে আর না ঘটে, সে জন্য ফৌজদারি কার্যবিধির সংশোধিত ধারার ক্ষমতাবলে নিরপরাধ ব্যক্তিদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
সূত্রটি জানায়, ডিএমপির ৫০ থানায় বিভিন্ন অভিযোগে করা ১৬৫টি মামলায় ১ হাজার ৪৫৬ জনের অব্যাহতি চেয়ে আদালতে অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী কর্মকর্তারা। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাঁদের মামলার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। তবে মামলাগুলোর অন্য অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলবে। তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসব মামলার প্রতিটিতে আরেকটি করে প্রতিবেদন দেবেন। ওই প্রতিবেদনে ঘটনার সঙ্গে যে বা যারা জড়িত, তাদের বিষয়গুলো উল্লেখ থাকবে।
১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধনের প্রস্তাব গত ২৯ জুন উপদেষ্টা পরিষদ অনুমোদন করে। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের স্বাক্ষরের পর এটি ‘দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ নামে জারি করা হয়। নতুন এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে আইনে ১৭৩-ক নামে একটি ধারা যুক্ত হয়েছে, যার শিরোনাম ‘অন্তর্বর্তীকালীন তদন্ত প্রতিবেদন ইত্যাদি’। এতে বলা হয়েছে, তদন্ত চলাকালে মামলার যেকোনো পর্যায়ে পুলিশ কমিশনার, জেলার পুলিশ সুপার বা সমমর্যাদার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তদন্তকারী কর্মকর্তাকে মামলার অগ্রগতির বিষয়ে একটি অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিতে পারবেন। ওই প্রতিবেদনে যদি কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে অপর্যাপ্ত তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়, তবে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে সেটি আদালতে (ম্যাজিস্ট্রেট বা ট্রাইব্যুনাল) দাখিল করা যাবে এবং আদালত সন্তুষ্ট হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে মামলার কার্যক্রম থেকে অস্থায়ী অব্যাহতি দিতে পারবেন। তবে এ অব্যাহতি চূড়ান্ত নয়; তদন্ত শেষে যদি সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত ও বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে মূল ধারার (১৭৩) অধীনে তার নাম পুনরায় অন্তর্ভুক্ত করতে কোনো আইনি বাধা থাকবে না।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ২৪ জুলাই রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় করা পুলিশ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার কিশোর হাসনাতুল ইসলাম ফাইয়াজ (১৭) এই নতুন ধারার সুবাদে অব্যাহতি পেয়েছে। সংশোধিত ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৩(এ) ধারায় দাখিল করা অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন গ্রহণ করে চলতি বছরের ১৫ জুলাই ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জি এম ফারহান ইশতিয়াক তাকে অব্যাহতির আদেশ দেন।
ওই অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনে মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা ও গোয়েন্দা (ওয়ারী) বিভাগের পুলিশ পরিদর্শক মোল্লা মো. খালিদ হোসেন জানান, মামলায় উল্লিখিত ঘটনার সঙ্গে ফাইয়াজের কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। তদন্ত সম্পূর্ণ করতে সময় প্রয়োজন হওয়ায় সংশোধিত ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৩(এ) ধারায় ফাইয়াজের অব্যাহতি চেয়ে অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। তবে মামলার তদন্ত কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলবে।
পুলিশ সদর দপ্তর বলেছে, সারা দেশেই নিরপরাধ মানুষকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিতে কাজ করছে পুলিশ। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা এ জন্য প্রতিটি বিষয় তদন্ত করছেন। তবে কোনো অপরাধী যাতে এ সুযোগ নিতে না পারে, সে বিষয়টিও দেখতে হয়। তাই এ বিষয়ে ধীরে-সুস্থে সিদ্ধান্ত নিতে নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর।
দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে আইজিপি বাহারুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, মামলায় আসামির নাম দেন বাদী। তিনি যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, তাঁরাই আসামি। এরপর পুলিশ অভিযোগ তদন্ত করে যাদের সম্পৃক্ততা পায়, তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দেয়। যাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পায় না, তাদের অব্যাহতি দেয়। বাদী যদি হয়রানি করতে বা পূর্বশত্রুতার জেরে কারও নাম আসামির তালিকায় দেন, তখন পুলিশ তাতে বাধা দিতে পারে না। তবে তদন্তে তাঁদের অব্যাহতি দিতে পারে। ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধনের ফলে অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন দিয়ে সেটি করা যাচ্ছে। এই ধারায় সারা দেশে নিরপরাধ ব্যক্তিদের মামলার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিতে কাজ করছে পুলিশ। এটি চলমান প্রক্রিয়া।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে হত্যাসহ নানা অভিযোগে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় করা মামলাগুলোতে অনেককে পূর্বশত্রুতার জেরে ও হয়রানি করতে আসামি করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্ত শেষে এ পর্যন্ত ১৬৫টি মামলা থেকে এমন প্রায় দেড় হাজার আসামিকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) বিভিন্ন থানায় করা ১৬৫টি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা প্রাথমিক তদন্তে ১ হাজার ৪৫৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগের সঙ্গে কোনো সংশ্লিষ্টতা পাননি। তাই তাঁরা হয়রানির শিকার এসব ব্যক্তিকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিতে আদালতে অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন দেন। পরে আদালত এসব ব্যক্তিকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন। তদন্তকারী কর্মকর্তারা এই আবেদন করেছেন ফৌজদারি কার্যবিধির সংশোধিত ধারার ক্ষমতাবলে।
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি) বাহারুল আলম বলেছেন, এটি চলমান প্রক্রিয়া। সারা দেশে এ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
ডিএমপির সূত্র জানায়, গত বছরের জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় হত্যা, হত্যাচেষ্টা, সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ, হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় ডিএমপির আট বিভাগের ৫০টি থানায় অনেক মামলা হয়েছে। এসব মামলায় আসামি অসংখ্য। এসব মামলায় অনেককে পূর্বশত্রুতার জেরে এবং হয়রানি করতে আসামি করা হয়েছে। হয়রানি ঠেকাতে এবং এমন ঘটনা যাতে আর না ঘটে, সে জন্য ফৌজদারি কার্যবিধির সংশোধিত ধারার ক্ষমতাবলে নিরপরাধ ব্যক্তিদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
সূত্রটি জানায়, ডিএমপির ৫০ থানায় বিভিন্ন অভিযোগে করা ১৬৫টি মামলায় ১ হাজার ৪৫৬ জনের অব্যাহতি চেয়ে আদালতে অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী কর্মকর্তারা। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাঁদের মামলার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। তবে মামলাগুলোর অন্য অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলবে। তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসব মামলার প্রতিটিতে আরেকটি করে প্রতিবেদন দেবেন। ওই প্রতিবেদনে ঘটনার সঙ্গে যে বা যারা জড়িত, তাদের বিষয়গুলো উল্লেখ থাকবে।
১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধনের প্রস্তাব গত ২৯ জুন উপদেষ্টা পরিষদ অনুমোদন করে। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের স্বাক্ষরের পর এটি ‘দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ নামে জারি করা হয়। নতুন এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে আইনে ১৭৩-ক নামে একটি ধারা যুক্ত হয়েছে, যার শিরোনাম ‘অন্তর্বর্তীকালীন তদন্ত প্রতিবেদন ইত্যাদি’। এতে বলা হয়েছে, তদন্ত চলাকালে মামলার যেকোনো পর্যায়ে পুলিশ কমিশনার, জেলার পুলিশ সুপার বা সমমর্যাদার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তদন্তকারী কর্মকর্তাকে মামলার অগ্রগতির বিষয়ে একটি অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিতে পারবেন। ওই প্রতিবেদনে যদি কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে অপর্যাপ্ত তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়, তবে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে সেটি আদালতে (ম্যাজিস্ট্রেট বা ট্রাইব্যুনাল) দাখিল করা যাবে এবং আদালত সন্তুষ্ট হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে মামলার কার্যক্রম থেকে অস্থায়ী অব্যাহতি দিতে পারবেন। তবে এ অব্যাহতি চূড়ান্ত নয়; তদন্ত শেষে যদি সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত ও বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে মূল ধারার (১৭৩) অধীনে তার নাম পুনরায় অন্তর্ভুক্ত করতে কোনো আইনি বাধা থাকবে না।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ২৪ জুলাই রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় করা পুলিশ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার কিশোর হাসনাতুল ইসলাম ফাইয়াজ (১৭) এই নতুন ধারার সুবাদে অব্যাহতি পেয়েছে। সংশোধিত ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৩(এ) ধারায় দাখিল করা অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন গ্রহণ করে চলতি বছরের ১৫ জুলাই ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জি এম ফারহান ইশতিয়াক তাকে অব্যাহতির আদেশ দেন।
ওই অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনে মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা ও গোয়েন্দা (ওয়ারী) বিভাগের পুলিশ পরিদর্শক মোল্লা মো. খালিদ হোসেন জানান, মামলায় উল্লিখিত ঘটনার সঙ্গে ফাইয়াজের কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। তদন্ত সম্পূর্ণ করতে সময় প্রয়োজন হওয়ায় সংশোধিত ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৩(এ) ধারায় ফাইয়াজের অব্যাহতি চেয়ে অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। তবে মামলার তদন্ত কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলবে।
পুলিশ সদর দপ্তর বলেছে, সারা দেশেই নিরপরাধ মানুষকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিতে কাজ করছে পুলিশ। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা এ জন্য প্রতিটি বিষয় তদন্ত করছেন। তবে কোনো অপরাধী যাতে এ সুযোগ নিতে না পারে, সে বিষয়টিও দেখতে হয়। তাই এ বিষয়ে ধীরে-সুস্থে সিদ্ধান্ত নিতে নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর।
দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে আইজিপি বাহারুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, মামলায় আসামির নাম দেন বাদী। তিনি যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, তাঁরাই আসামি। এরপর পুলিশ অভিযোগ তদন্ত করে যাদের সম্পৃক্ততা পায়, তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দেয়। যাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পায় না, তাদের অব্যাহতি দেয়। বাদী যদি হয়রানি করতে বা পূর্বশত্রুতার জেরে কারও নাম আসামির তালিকায় দেন, তখন পুলিশ তাতে বাধা দিতে পারে না। তবে তদন্তে তাঁদের অব্যাহতি দিতে পারে। ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধনের ফলে অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন দিয়ে সেটি করা যাচ্ছে। এই ধারায় সারা দেশে নিরপরাধ ব্যক্তিদের মামলার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিতে কাজ করছে পুলিশ। এটি চলমান প্রক্রিয়া।

ঘাটতি বাজেট পুষিয়ে নেওয়া বা ঋণ ও অনুদানের জন্য পশ্চিমা দেশগুলোর ওপর বাংলাদেশের বড় ধরনের নির্ভরশীলতা ছিল। এতে বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, মানবাধিকার, বাক্স্বাধীনতা, শ্রম পরিবেশ ও মানসহ বিভিন্ন বিষয়ে দেশগুলোর তরফ থেকে এক ধরনের চাপ ছিল। এখন এই নির্ভরশীলতা অনেকাংশেই কমেছে। এই ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে বহ
০৩ জানুয়ারি ২০২২
ড. কামাল সিদ্দিকী ২০০৬ সাল পর্যন্ত তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুখ্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া জাতিসংঘের শিশু অধিকার কমিটির নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশ কর্তৃক মনোনীত হন এবং ২০০৫ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
৭ মিনিট আগে
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ এবং পরিকল্পনা বিভাগে নতুন সচিব নিয়োগ দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে তিনজন অতিরিক্ত সচিবকে সচিব পদে পদোন্নতি এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত এক সচিবকে পদায়ন করে রোববার রাতে আলাদা আলাদা প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
১ ঘণ্টা আগে
পুলিশ কমিশন গঠন করতে অধ্যাদেশের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে এটি শিগগির অনুমোদন করা হচ্ছে। এরপর স্বাধীন এই কমিশন গঠনের কার্যক্রম শুরু হবে। পুলিশ সদস্যদের নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি, অভিযোগ তদন্ত ছাড়াও পুলিশি কর্মকাণ্ডের তদারকির দায়িত্ব থাকবে পুলিশ কমিশনের ওপর।
৮ ঘণ্টা আগেশাহরিয়ার হাসান, ঢাকা

পুলিশ কমিশন গঠন করতে অধ্যাদেশের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে এটি শিগগির অনুমোদন করা হচ্ছে। এরপর স্বাধীন এই কমিশন গঠনের কার্যক্রম শুরু হবে।
পুলিশ সদস্যদের নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি, অভিযোগ তদন্ত ছাড়াও পুলিশি কর্মকাণ্ডের তদারকির দায়িত্ব থাকবে পুলিশ কমিশনের ওপর। কমিশনের পরামর্শ ছাড়াই যেকোনো পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে যে কেউ চাইলে মামলা করতে পারবেন। খসড়ায় আগের মতোই পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করার এই সুযোগ থাকায় চিন্তায় পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা। এ নিয়ে আপত্তি রয়েছে তাঁদের। নিজেদের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্নও তুলেছেন তাঁরা।
আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে গঠিত উপদেষ্টাদের একটি কমিটি পুলিশ কমিশনের কাঠামো ও কার্যপ্রণালির খসড়া করেছে। গত ৯ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয় সভায় খসড়াটি অনুমোদন করা হয়।
পুলিশ সদস্যরা বলছেন, নতুন এই কমিশন তাঁদের জবাবদিহির মুখে ফেলবে, কিন্তু সুরক্ষা নিশ্চিত করবে না। এদিকে সরকারি সিদ্ধান্তে সম্প্রতি ৪ হাজার নতুন এএসআই সরাসরি নিয়োগের প্রজ্ঞাপন মাঠের সদস্যদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি করেছে। কারণ, পদোন্নতির সুযোগ কমিয়ে সরাসরি নিয়োগ দিলে বাহিনীর সদস্যরা মনোবল হারাবেন।
পুলিশ সদস্যরা মনে করছেন, দণ্ডবিধির ৭৬ থেকে ১০৬ ধারায় দায়িত্ব পালনের জন্য পর্যাপ্ত আইনি সুরক্ষা নেই। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন থানায় পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে। সরকার ও রাষ্ট্রের হয়ে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনেক সদস্য অবসরের পরেও আসামি হচ্ছেন। তাঁরা বলছেন, যদি স্বাধীন কমিশন হয়, তাহলে পুলিশের বিরুদ্ধে সরাসরি মামলা নয়। আগে কমিশনের তদন্ত ও অনুমতির পরেই আইনি পদক্ষেপ হওয়া উচিত। কিন্তু কমিশনের খসড়ায় এমন কিছু নেই।
বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মনিরুল হক ডাবলু বলেন, ‘আমরা স্বাধীন কমিশন চাই। কিন্তু সেই স্বাধীনতার মধ্যে যেন আমাদের সুরক্ষাও নিশ্চিত হয়। ৯ সদস্যের কমিশনে মাত্র দুজন পুলিশ প্রতিনিধি রাখা হয়েছে। আমরা নন-ক্যাডার থেকে একজন সদস্য রাখার দাবি জানিয়েছি। না হলে মাঠপর্যায়ের বার্তা কোথাও পৌঁছাবে না। এতে বেশ কিছু অসংগতি রয়েছে।’
জানতে চাইলে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেন, স্বাধীন পুলিশ কমিশনের ইস্যুতে পুলিশের কিছু দাবি রয়েছে। তবে এখনই সেগুলো বাস্তবায়নের সুযোগ নেই। তিনি বলেন, অধ্যাদেশ জারি হোক, তারপর কার্যবিধির মধ্যে এসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পুলিশ উইং সূত্র জানায়, উপদেষ্টা পরিষদ অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদনের পর পুলিশ কমিশন গঠন করা হবে।
অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের জন্য যেসব কমিশন গঠন করেছিল, সেগুলোর মধ্যে পুলিশ সংস্কার কমিশনও ছিল। ওই কমিশন স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিল। সেই সুপারিশ অনুযায়ী, পুলিশ পরিচালিত হবে এই কমিশনের মাধ্যমে।
স্বাধীন পুলিশ কমিশনের অধ্যাদেশের খসড়া
অধ্যাদেশের খসড়া অনুযায়ী, পুলিশ কমিশন হবে একটি সংবিধিবদ্ধ, স্বাধীন ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। কমিশনের নিজস্ব দপ্তর, বাজেট ও জনবল থাকবে এবং এটি সরকারের কাছ থেকে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। কমিশনের প্রধান কার্যালয় হবে ঢাকায়। নতুন এই কমিশনের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের কর্মকাণ্ডের ওপর নজরদারি, অভিযোগ তদন্ত এবং প্রশাসনিক সংস্কার কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, নাগরিকদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার রক্ষায় পুলিশের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা হবে। নাগরিকদের অভিযোগ এবং পুলিশ সদস্যদের অভ্যন্তরীণ অভিযোগ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা গ্রহণ, নিয়োগ-পদোন্নতি ও বদলিসংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন ও পরামর্শ প্রদান, পুলিশের আইনানুগ কার্যক্রমে কোনো ব্যক্তি বা সত্তার বিধিবহির্ভূত প্রভাব প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ বা সুপারিশ প্রদান—এসব দায়িত্ব পালন করবে কমিশন।
এ ছাড়া আটক, জিজ্ঞাসাবাদ ও বলপ্রয়োগ-সংক্রান্ত পুলিশি কার্যক্রমের নিয়মিত নিরীক্ষা, আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর পুলিশ গঠনে সুপারিশ, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী পুলিশি কর্মকাণ্ড তদারকি, জন-আস্থা বৃদ্ধির জন্য গণশুনানি ও পরামর্শ সভা আয়োজন এবং পুলিশের কার্যক্রম ও জননিরাপত্তা-সংক্রান্ত বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশের দায়িত্বও কমিশনের ওপর বর্তাবে।
খসড়ায় বলা হয়েছে, কমিশনে মোট ৯ সদস্য থাকবেন। তাঁদের মধ্যে একজন চেয়ারম্যান, একজন সদস্যসচিব এবং সাতজন স্থায়ী সদস্য। চেয়ারম্যান হবেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, সদস্যসচিব হবেন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) পদমর্যাদার কর্মকর্তা। সদস্যদের মধ্যে থাকবেন জাতীয় সংসদের সংসদ নেতার প্রতিনিধি (অস্থায়ী সদস্য), বিরোধীদলীয় নেতার প্রতিনিধি (অস্থায়ী সদস্য), সচিব পদমর্যাদার নিচে নন এমন একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা, অতিরিক্ত আইজিপি পদমর্যাদার নিচে নন এমন একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা, জেলা জজ বা অন্তত ১৫ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন খ্যাতনামা আইনজীবী, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি ও ক্রিমিনাল জাস্টিস বিষয়ের একজন অধ্যাপক এবং অন্তত ১৫ বছরের বাস্তব অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একজন মানবাধিকারকর্মী। কমিশনে অন্তত একজন নারী সদস্য থাকা বাধ্যতামূলক। স্থায়ী সদস্যরা বেতনভুক্ত হবেন, তবে অস্থায়ী সদস্যরা অবৈতনিকভাবে দায়িত্ব পালন করবেন।
রাষ্ট্রপতির গঠিত বাছাই কমিটির সুপারিশে কমিশনের সদস্যরা পাঁচ বছরের জন্য নিয়োগ পাবেন। পাঁচ সদস্যের বাছাই কমিটির সভাপতি হবেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বা উপদেষ্টা। দেউলিয়া, ঋণখেলাপি, দ্বৈত নাগরিক, ফৌজদারি অপরাধে দণ্ডিত ব্যক্তি কিংবা দুর্নীতি বা অসদাচরণের কারণে বরখাস্ত কেউ কমিশনের সদস্য হতে পারবেন না। রাষ্ট্রপতি শারীরিক বা মানসিক অক্ষমতা, স্বার্থ গোপন কিংবা দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে সদস্যকে অপসারণ করতে পারবেন।
খসড়া অনুযায়ী, কমিশন পুলিশের বিরুদ্ধে নাগরিক অভিযোগের ন্যায়সংগত তদন্ত ও সমাধান নিশ্চিত করবে। নাগরিকদের অভিযোগের তদন্ত, বিভাগীয় কমিটি গঠন, অভিযোগকারীর নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা রক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে অভিযোগ পর্যালোচনা করে কমিশন প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা ও ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করবে।
পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের অভ্যন্তরীণ ক্ষোভ, বৈষম্য, পদোন্নতি বা পদায়নসংক্রান্ত অভিযোগ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রেও কমিশন সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে পারবে। প্রয়োজনে বিভাগীয় বা রেঞ্জ পর্যায়ে কমিটি গঠন করা হবে।
অধ্যাদেশের খসড়া অনুযায়ী, পুলিশে নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়নের ক্ষেত্রে নীতিমালা প্রণয়ন এবং মানদণ্ড নির্ধারণে সরকারের কাছে দিকনির্দেশনা দেবে কমিশন। কমিশন সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ডে আইজিপি এবং বিভাগীয় পদোন্নতি কমিটিতে অতিরিক্ত আইজিপিকে অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশনা দেবে। পাশাপাশি দক্ষ, পেশাদার ও প্রভাবমুক্ত পুলিশ বাহিনী গঠনে কৌশলগত দিকনির্দেশনাও দেবে।
আইজিপি পদে নিয়োগের ক্ষেত্রেও কমিশনের ভূমিকা থাকবে। সততা, মেধা, দক্ষতা, জ্যেষ্ঠতা ও সন্তোষজনক চাকরির ভিত্তিতে অতিরিক্ত আইজিপি পদমর্যাদার নিচে নন এমন তিনজন কর্মকর্তার নাম সরকারকে সুপারিশ করবে কমিশন। নিয়োগপ্রাপ্ত আইজিপির মেয়াদ হবে কমপক্ষে দুই বছর এবং সর্বোচ্চ তিন বছর।
এ ছাড়া আধুনিক পুলিশিং, সাইবার নিরাপত্তা, ফরেনসিক, তথ্যপ্রযুক্তি ও মানবিক আচরণভিত্তিক প্রশিক্ষণ বিষয়ে কমিশন সুপারিশ করবে। পাশাপাশি নারীবান্ধব কর্মপরিবেশ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা কার্যক্রমে দিকনির্দেশনা দেবে। পুলিশ আইন, ফৌজদারি আইন, প্রবিধান ও রেগুলেশন পর্যালোচনা এবং সংস্কারের প্রস্তাবও কমিশনের দায়িত্বের মধ্যে থাকবে।
জনগণ-পুলিশ আস্থা বৃদ্ধিতে গণশুনানি, পরামর্শ সভা ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম আয়োজনের মাধ্যমে পারস্পরিক বিশ্বাস পুনর্গঠনের ব্যবস্থাও খসড়ায় রাখা হয়েছে। প্রতিবছর কমিশন একটি বার্ষিক প্রতিবেদন তৈরি করবে, যেখানে তাদের কর্মকাণ্ড, সুপারিশ ও সাফল্যের বিবরণ থাকবে।
পুলিশ সদস্যরা যা বলছেন
কমিশনের বিষয়ে মাঠপর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, এই কমিশন স্বাধীন হলেও এটি পুলিশের বাস্তব সমস্যাগুলো সমাধান করবে না। তাঁরা মনে করেন, দায়িত্ব পালনের সময় মামলা ও হয়রানির আশঙ্কা দূর না হলে স্বাধীন কমিশনের তদারকি শুধু চাপই বাড়াবে।
পুলিশ সদর দপ্তরের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তাঁরা রাষ্ট্রের হয়ে কাজ করেন। কিন্তু যখন মামলা হয়, তখন রাষ্ট্রই পাশে থাকে না। এখন যদি কমিশন এসে নতুন তদন্ত শুরু করে, তাঁদের পেশাগত ঝুঁকি আরও বাড়বে। এই অবস্থায় পুলিশের সুরক্ষার প্রশ্নটাই এখন বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
অনেক পুলিশ কর্মকর্তার মতে, কমিশন যদি সত্যিকারের জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা করতে চায়, তাহলে আগে পুলিশের দায়িত্ব পালনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা দরকার।
জানতে চাইলে সাবেক আইজিপি মুহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, পুলিশের সংস্কার মানে শুধু নতুন কাঠামো নয়, কার্যকর স্বায়ত্তশাসনও জরুরি। স্বাধীন কমিশন গঠন করা হলে সেটিই হবে মূল সংস্কারের সূচনা। তবে স্বাধীনতা ও সুরক্ষা—দুটিই থাকতে হবে।

পুলিশ কমিশন গঠন করতে অধ্যাদেশের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে এটি শিগগির অনুমোদন করা হচ্ছে। এরপর স্বাধীন এই কমিশন গঠনের কার্যক্রম শুরু হবে।
পুলিশ সদস্যদের নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি, অভিযোগ তদন্ত ছাড়াও পুলিশি কর্মকাণ্ডের তদারকির দায়িত্ব থাকবে পুলিশ কমিশনের ওপর। কমিশনের পরামর্শ ছাড়াই যেকোনো পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে যে কেউ চাইলে মামলা করতে পারবেন। খসড়ায় আগের মতোই পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করার এই সুযোগ থাকায় চিন্তায় পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা। এ নিয়ে আপত্তি রয়েছে তাঁদের। নিজেদের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্নও তুলেছেন তাঁরা।
আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে গঠিত উপদেষ্টাদের একটি কমিটি পুলিশ কমিশনের কাঠামো ও কার্যপ্রণালির খসড়া করেছে। গত ৯ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয় সভায় খসড়াটি অনুমোদন করা হয়।
পুলিশ সদস্যরা বলছেন, নতুন এই কমিশন তাঁদের জবাবদিহির মুখে ফেলবে, কিন্তু সুরক্ষা নিশ্চিত করবে না। এদিকে সরকারি সিদ্ধান্তে সম্প্রতি ৪ হাজার নতুন এএসআই সরাসরি নিয়োগের প্রজ্ঞাপন মাঠের সদস্যদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি করেছে। কারণ, পদোন্নতির সুযোগ কমিয়ে সরাসরি নিয়োগ দিলে বাহিনীর সদস্যরা মনোবল হারাবেন।
পুলিশ সদস্যরা মনে করছেন, দণ্ডবিধির ৭৬ থেকে ১০৬ ধারায় দায়িত্ব পালনের জন্য পর্যাপ্ত আইনি সুরক্ষা নেই। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন থানায় পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে। সরকার ও রাষ্ট্রের হয়ে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনেক সদস্য অবসরের পরেও আসামি হচ্ছেন। তাঁরা বলছেন, যদি স্বাধীন কমিশন হয়, তাহলে পুলিশের বিরুদ্ধে সরাসরি মামলা নয়। আগে কমিশনের তদন্ত ও অনুমতির পরেই আইনি পদক্ষেপ হওয়া উচিত। কিন্তু কমিশনের খসড়ায় এমন কিছু নেই।
বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মনিরুল হক ডাবলু বলেন, ‘আমরা স্বাধীন কমিশন চাই। কিন্তু সেই স্বাধীনতার মধ্যে যেন আমাদের সুরক্ষাও নিশ্চিত হয়। ৯ সদস্যের কমিশনে মাত্র দুজন পুলিশ প্রতিনিধি রাখা হয়েছে। আমরা নন-ক্যাডার থেকে একজন সদস্য রাখার দাবি জানিয়েছি। না হলে মাঠপর্যায়ের বার্তা কোথাও পৌঁছাবে না। এতে বেশ কিছু অসংগতি রয়েছে।’
জানতে চাইলে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেন, স্বাধীন পুলিশ কমিশনের ইস্যুতে পুলিশের কিছু দাবি রয়েছে। তবে এখনই সেগুলো বাস্তবায়নের সুযোগ নেই। তিনি বলেন, অধ্যাদেশ জারি হোক, তারপর কার্যবিধির মধ্যে এসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পুলিশ উইং সূত্র জানায়, উপদেষ্টা পরিষদ অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদনের পর পুলিশ কমিশন গঠন করা হবে।
অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের জন্য যেসব কমিশন গঠন করেছিল, সেগুলোর মধ্যে পুলিশ সংস্কার কমিশনও ছিল। ওই কমিশন স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিল। সেই সুপারিশ অনুযায়ী, পুলিশ পরিচালিত হবে এই কমিশনের মাধ্যমে।
স্বাধীন পুলিশ কমিশনের অধ্যাদেশের খসড়া
অধ্যাদেশের খসড়া অনুযায়ী, পুলিশ কমিশন হবে একটি সংবিধিবদ্ধ, স্বাধীন ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। কমিশনের নিজস্ব দপ্তর, বাজেট ও জনবল থাকবে এবং এটি সরকারের কাছ থেকে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। কমিশনের প্রধান কার্যালয় হবে ঢাকায়। নতুন এই কমিশনের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের কর্মকাণ্ডের ওপর নজরদারি, অভিযোগ তদন্ত এবং প্রশাসনিক সংস্কার কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, নাগরিকদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার রক্ষায় পুলিশের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা হবে। নাগরিকদের অভিযোগ এবং পুলিশ সদস্যদের অভ্যন্তরীণ অভিযোগ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা গ্রহণ, নিয়োগ-পদোন্নতি ও বদলিসংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন ও পরামর্শ প্রদান, পুলিশের আইনানুগ কার্যক্রমে কোনো ব্যক্তি বা সত্তার বিধিবহির্ভূত প্রভাব প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ বা সুপারিশ প্রদান—এসব দায়িত্ব পালন করবে কমিশন।
এ ছাড়া আটক, জিজ্ঞাসাবাদ ও বলপ্রয়োগ-সংক্রান্ত পুলিশি কার্যক্রমের নিয়মিত নিরীক্ষা, আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর পুলিশ গঠনে সুপারিশ, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী পুলিশি কর্মকাণ্ড তদারকি, জন-আস্থা বৃদ্ধির জন্য গণশুনানি ও পরামর্শ সভা আয়োজন এবং পুলিশের কার্যক্রম ও জননিরাপত্তা-সংক্রান্ত বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশের দায়িত্বও কমিশনের ওপর বর্তাবে।
খসড়ায় বলা হয়েছে, কমিশনে মোট ৯ সদস্য থাকবেন। তাঁদের মধ্যে একজন চেয়ারম্যান, একজন সদস্যসচিব এবং সাতজন স্থায়ী সদস্য। চেয়ারম্যান হবেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, সদস্যসচিব হবেন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) পদমর্যাদার কর্মকর্তা। সদস্যদের মধ্যে থাকবেন জাতীয় সংসদের সংসদ নেতার প্রতিনিধি (অস্থায়ী সদস্য), বিরোধীদলীয় নেতার প্রতিনিধি (অস্থায়ী সদস্য), সচিব পদমর্যাদার নিচে নন এমন একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা, অতিরিক্ত আইজিপি পদমর্যাদার নিচে নন এমন একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা, জেলা জজ বা অন্তত ১৫ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন খ্যাতনামা আইনজীবী, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি ও ক্রিমিনাল জাস্টিস বিষয়ের একজন অধ্যাপক এবং অন্তত ১৫ বছরের বাস্তব অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একজন মানবাধিকারকর্মী। কমিশনে অন্তত একজন নারী সদস্য থাকা বাধ্যতামূলক। স্থায়ী সদস্যরা বেতনভুক্ত হবেন, তবে অস্থায়ী সদস্যরা অবৈতনিকভাবে দায়িত্ব পালন করবেন।
রাষ্ট্রপতির গঠিত বাছাই কমিটির সুপারিশে কমিশনের সদস্যরা পাঁচ বছরের জন্য নিয়োগ পাবেন। পাঁচ সদস্যের বাছাই কমিটির সভাপতি হবেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বা উপদেষ্টা। দেউলিয়া, ঋণখেলাপি, দ্বৈত নাগরিক, ফৌজদারি অপরাধে দণ্ডিত ব্যক্তি কিংবা দুর্নীতি বা অসদাচরণের কারণে বরখাস্ত কেউ কমিশনের সদস্য হতে পারবেন না। রাষ্ট্রপতি শারীরিক বা মানসিক অক্ষমতা, স্বার্থ গোপন কিংবা দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে সদস্যকে অপসারণ করতে পারবেন।
খসড়া অনুযায়ী, কমিশন পুলিশের বিরুদ্ধে নাগরিক অভিযোগের ন্যায়সংগত তদন্ত ও সমাধান নিশ্চিত করবে। নাগরিকদের অভিযোগের তদন্ত, বিভাগীয় কমিটি গঠন, অভিযোগকারীর নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা রক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে অভিযোগ পর্যালোচনা করে কমিশন প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা ও ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করবে।
পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের অভ্যন্তরীণ ক্ষোভ, বৈষম্য, পদোন্নতি বা পদায়নসংক্রান্ত অভিযোগ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রেও কমিশন সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে পারবে। প্রয়োজনে বিভাগীয় বা রেঞ্জ পর্যায়ে কমিটি গঠন করা হবে।
অধ্যাদেশের খসড়া অনুযায়ী, পুলিশে নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়নের ক্ষেত্রে নীতিমালা প্রণয়ন এবং মানদণ্ড নির্ধারণে সরকারের কাছে দিকনির্দেশনা দেবে কমিশন। কমিশন সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ডে আইজিপি এবং বিভাগীয় পদোন্নতি কমিটিতে অতিরিক্ত আইজিপিকে অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশনা দেবে। পাশাপাশি দক্ষ, পেশাদার ও প্রভাবমুক্ত পুলিশ বাহিনী গঠনে কৌশলগত দিকনির্দেশনাও দেবে।
আইজিপি পদে নিয়োগের ক্ষেত্রেও কমিশনের ভূমিকা থাকবে। সততা, মেধা, দক্ষতা, জ্যেষ্ঠতা ও সন্তোষজনক চাকরির ভিত্তিতে অতিরিক্ত আইজিপি পদমর্যাদার নিচে নন এমন তিনজন কর্মকর্তার নাম সরকারকে সুপারিশ করবে কমিশন। নিয়োগপ্রাপ্ত আইজিপির মেয়াদ হবে কমপক্ষে দুই বছর এবং সর্বোচ্চ তিন বছর।
এ ছাড়া আধুনিক পুলিশিং, সাইবার নিরাপত্তা, ফরেনসিক, তথ্যপ্রযুক্তি ও মানবিক আচরণভিত্তিক প্রশিক্ষণ বিষয়ে কমিশন সুপারিশ করবে। পাশাপাশি নারীবান্ধব কর্মপরিবেশ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা কার্যক্রমে দিকনির্দেশনা দেবে। পুলিশ আইন, ফৌজদারি আইন, প্রবিধান ও রেগুলেশন পর্যালোচনা এবং সংস্কারের প্রস্তাবও কমিশনের দায়িত্বের মধ্যে থাকবে।
জনগণ-পুলিশ আস্থা বৃদ্ধিতে গণশুনানি, পরামর্শ সভা ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম আয়োজনের মাধ্যমে পারস্পরিক বিশ্বাস পুনর্গঠনের ব্যবস্থাও খসড়ায় রাখা হয়েছে। প্রতিবছর কমিশন একটি বার্ষিক প্রতিবেদন তৈরি করবে, যেখানে তাদের কর্মকাণ্ড, সুপারিশ ও সাফল্যের বিবরণ থাকবে।
পুলিশ সদস্যরা যা বলছেন
কমিশনের বিষয়ে মাঠপর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, এই কমিশন স্বাধীন হলেও এটি পুলিশের বাস্তব সমস্যাগুলো সমাধান করবে না। তাঁরা মনে করেন, দায়িত্ব পালনের সময় মামলা ও হয়রানির আশঙ্কা দূর না হলে স্বাধীন কমিশনের তদারকি শুধু চাপই বাড়াবে।
পুলিশ সদর দপ্তরের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তাঁরা রাষ্ট্রের হয়ে কাজ করেন। কিন্তু যখন মামলা হয়, তখন রাষ্ট্রই পাশে থাকে না। এখন যদি কমিশন এসে নতুন তদন্ত শুরু করে, তাঁদের পেশাগত ঝুঁকি আরও বাড়বে। এই অবস্থায় পুলিশের সুরক্ষার প্রশ্নটাই এখন বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
অনেক পুলিশ কর্মকর্তার মতে, কমিশন যদি সত্যিকারের জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা করতে চায়, তাহলে আগে পুলিশের দায়িত্ব পালনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা দরকার।
জানতে চাইলে সাবেক আইজিপি মুহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, পুলিশের সংস্কার মানে শুধু নতুন কাঠামো নয়, কার্যকর স্বায়ত্তশাসনও জরুরি। স্বাধীন কমিশন গঠন করা হলে সেটিই হবে মূল সংস্কারের সূচনা। তবে স্বাধীনতা ও সুরক্ষা—দুটিই থাকতে হবে।

ঘাটতি বাজেট পুষিয়ে নেওয়া বা ঋণ ও অনুদানের জন্য পশ্চিমা দেশগুলোর ওপর বাংলাদেশের বড় ধরনের নির্ভরশীলতা ছিল। এতে বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, মানবাধিকার, বাক্স্বাধীনতা, শ্রম পরিবেশ ও মানসহ বিভিন্ন বিষয়ে দেশগুলোর তরফ থেকে এক ধরনের চাপ ছিল। এখন এই নির্ভরশীলতা অনেকাংশেই কমেছে। এই ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে বহ
০৩ জানুয়ারি ২০২২
ড. কামাল সিদ্দিকী ২০০৬ সাল পর্যন্ত তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুখ্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া জাতিসংঘের শিশু অধিকার কমিটির নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশ কর্তৃক মনোনীত হন এবং ২০০৫ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
৭ মিনিট আগে
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ এবং পরিকল্পনা বিভাগে নতুন সচিব নিয়োগ দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে তিনজন অতিরিক্ত সচিবকে সচিব পদে পদোন্নতি এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত এক সচিবকে পদায়ন করে রোববার রাতে আলাদা আলাদা প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
১ ঘণ্টা আগে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে হত্যাসহ নানা অভিযোগে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় করা মামলাগুলোতে অনেককে পূর্বশত্রুতার জেরে ও হয়রানি করতে আসামি করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্ত শেষে এ পর্যন্ত ১৬৫টি মামলা থেকে এমন প্রায় দেড় হাজার আসামিকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
৮ ঘণ্টা আগে