মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধের সরকারি টিকার (র্যাবিক্স-ভিসি) সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে প্রাণীর কামড় বা আঁচড়ের শিকার ব্যক্তিদের নিজের টাকায় টিকা কিনতে হচ্ছে। জানা গেছে, কেন্দ্রীয়ভাবে সরকারের কাছে মজুত টিকা চলতি মে মাসেই শেষ হচ্ছে। বেশির ভাগ জেলা-উপজেলায় স্বল্পসংখ্যক টিকা রাখা হয়েছে, যা জরুরি প্রয়োজনে প্রয়োগ করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, স্বাস্থ্যের কৌশলগত পরিকল্পনা বা অপারেশনাল প্ল্যান (ওপি) না থাকায় জলাতঙ্ক টিকার এই সংকট হয়েছে। স্বাস্থ্য খাতের সিংহভাগ অবকাঠামো, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, হাসপাতালের সেবা ব্যবস্থাপনা, সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ, টিকা ও পুষ্টি কার্যক্রমসহ ৩০টির বেশি কর্মসূচির কার্যক্রম চলে পাঁচ বছর মেয়াদি ওপির মাধ্যমে। গত বছরের জুনে শেষ হয়েছে ‘চতুর্থ স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি (এইচপিএনএসপি)’। জুলাইয়ে পাঁচ বছরের জন্য ১ লাখ ৬ হাজার ১০০ কোটি টাকার পঞ্চম এইচপিএনএসপি বা ওপি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তৎকালীন সরকার তা অনুমোদন দেয়নি। ওপি থেকে বের হওয়ার কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ।
জলাতঙ্ক রোগ নির্মূলের লক্ষ্যে ২০১১ সালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জাতীয় জলাতঙ্ক নির্মূল কর্মসূচি চালু করে। সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ (সিডিসি) শাখা এই কর্মসূচি পরিচালনা করছে। সিডিসি বলছে, জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মৃত্যু শতভাগ হওয়ায় ২০১১ সালে বিনা মূল্যে সারা দেশে টিকা দেওয়া শুরু করা হয়। সিডিসি সরাসরি টিকা কিনত। বর্তমানে ওপি না থাকায় সরকারের বিশেষ বরাদ্দে টিকা কিনছে কেন্দ্রীয় ঔষধাগার (সিএমএসডি)। গত ফেব্রুয়ারিতে সিএমএসডি ১ লাখ ৪ হাজার টিকা কেনে। বর্তমানে কেন্দ্রীয়ভাবে টিকা রয়েছে প্রায় ২ হাজার। এর বাইরে জেলা ও উপজেলায় জরুরি প্রয়োগের জন্য কিছু টিকা রয়েছে। চলতি মাসেই এই টিকার মজুত শেষ হবে। প্রাণীর আক্রমণে রক্তাক্ত আহতদের টিকা ছাড়াও অতিরিক্ত হিসেবে র্যাবিস ইমিউনোগ্লোবিউলিন (আরআইজি) দেওয়া হয়। সরকার এখন আরআইজি কিনছে না। এক ডোজ টিকার দাম স্থানীয় বাজারে ৫০০ টাকা। আরআইজির দাম ১ হাজার টাকা।
সরকারের হিসাবে, গত বছর কুকুরসহ প্রাণীর আক্রমণের শিকার হয়ে চিকিৎসা সেবাকেন্দ্রে এসেছিলেন সোয়া ৫ লাখ মানুষ। গত বছর জলাতঙ্কের কারণে ৫৬ জনের মৃত্যু হয়। প্রাণীর আক্রমণের শিকার একজন ব্যক্তিকে তিন থেকে চার ডোজ র্যাবিস টিকা দেওয়া হয়। ২০২৩ সালে ৫ লাখ, ২০২২ সালে সাড়ে ৪ লাখ মানুষ ন্যূনতম তিন ডোজ করে টিকা নিয়েছেন। সারা দেশে উপজেলা, জেলা ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ চার শতাধিক টিকাকেন্দ্রে প্রাণীর আক্রমণের শিকার ব্যক্তিদের টিকা দেওয়া হয়।
অন্তত পাঁচটি জেলা ও উপজেলায় খোঁজ নিয়ে র্যাবিক্স টিকার সংকটের তথ্য জানা গেছে। রোগীরা স্থানীয় বাজার থেকে টিকা কিনে দিচ্ছেন। আরআইজিও তাঁদের কিনতে হচ্ছে। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর আলম জানান, সরকারি হাসপাতালগুলোতে যে টিকা আছে, তা জরুরি মুহূর্তে দেওয়ার জন্য। একই কথা বলেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কিশলয় সাহা। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘পাঁচ মাস ধরে টিকার সংকট। জরুরি মুহূর্তে প্রয়োগের জন্য আমরা ৫০ ভায়াল এনে রেখেছি। কেউ গভীর রাতে আক্রান্ত হয়ে এলে তার জন্য টিকা সংগ্রহ করা কঠিন। অথবা যেসব রোগীর ক্রয়ক্ষমতা নেই, তাদের দেওয়া হচ্ছে। অথবা প্রথমটি বিনা মূল্যে দেওয়া হচ্ছে, পরে নিজেরা সংগ্রহ করে নিচ্ছে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, রাস্তাঘাটে কুকুরের সংখ্যা বেড়েছে। জলাতঙ্ক রোধে কুকুরকে টিকা দেওয়ার কার্যক্রম বর্তমানে বন্ধ। আবার আক্রান্ত মানুষকে দেওয়ার টিকারও সংকট দেখা দিয়েছে। কর্মসূচি না থাকায় দীর্ঘ দিনের অর্জন হুমকিতে পড়েছে। নীরবে রোগী বাড়ছে।
রাজধানীর মহাখালীতে ঢাকা সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে চলতি বছরের শুরু থেকে গত ৫ এপ্রিল পর্যন্ত কুকুর, বিড়াল, বেজি, বানর ও খ্যাঁকশিয়ালের আক্রমণের শিকার হয়ে চিকিৎসার জন্য এসেছেন সাড়ে ৪৪ হাজার মানুষ। আক্রমণে রক্তাক্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন সাড়ে ১৩ হাজার।
ওই হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট (মেডিসিন) ও তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আরিফুল বাসার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে আরআইজি সরবরাহ নেই কয়েক সপ্তাহ। যাঁদের প্রয়োজন তাঁরা নিজেরা সংগ্রহ করেন। টিকার সরবরাহ পাচ্ছি। তবে অন্যান্য হাসপাতালে টিকা নেই বলে রোগী এখানে পাঠানো হয়। রাজধানী ছাড়াও সারা দেশ থেকে বহু রোগী আসেন।’
শুধু এই হাসপাতালেই গত বছর প্রাণীর আক্রমণের শিকার হয়ে চিকিৎসা নেন ১ লাখ ২২ হাজার ২৬৩ জন। ২০২৩ সালে ৯৪ হাজার, ২০২২ সালে ৮৯ হাজার ৯২৮ জন চিকিৎসা নেন। এসব রোগীর মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশই কুকুরের আক্রমণের শিকার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রোগী বিড়ালের আক্রমণে শিকার। বেজি, বানর ও খ্যাঁকশিয়ালের আক্রমণের শিকার রোগীর সংখ্যা তুলনামূলক কম।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, এশিয়া ও আফ্রিকাতে জলাতঙ্ক রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি। এই রোগে মৃতদের ৪০ শতাংশের বয়স ১৫ বছরের কম।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক চিকিৎসাবিষয়ক সাময়িকী ল্যানসেটে প্রকাশিত সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বলা হয়, জলাতঙ্কে মানুষের মৃত্যুর সংখ্যায় বাংলাদেশ বিশ্বের জলাতঙ্ক-প্রবণ দেশগুলোর মধ্যে তৃতীয়। রোগটির ৯৬ শতাংশের কারণ কুকুরের কামড়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণের (সিডিসি) জুনোটিক ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রামের উপব্যবস্থাপক ডা. এস এম গোলাম কায়সার আজকের পত্রিকাকে বলেন, জলাতঙ্কে ২০১০ সালের আগে বছরে দুই হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হতো। জলাতঙ্ক রোগীর মৃত্যু শতভাগ। সিডিসি কর্মসূচি নেওয়ায় সেই মৃত্যু কমে দুই অঙ্কে নেমে এসেছে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলাতঙ্ক রোগে এক সপ্তাহ বা দেড় সপ্তাহের মধ্যে মৃত্যু হয়। ওপির কারণেই কালাজ্বর, গোদরোগ, জলাতঙ্কসহ এমন অনেক রোগ নির্মূল হয়েছে বা নির্মূলের পথে। পূর্বপ্রস্তুতি ছাড়া ওপি বন্ধের সিদ্ধান্ত সঠিক নয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর (সিডিসি) ডা. মো. হালিমুর রশিদ বলেন, ‘খুব হিসাব করে টিকা হাসপাতালগুলোকে দেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান আমাদের চাহিদা দিলে তা সিএমএসডিকে দেওয়া হয়, পরে তারা টিকা পাঠায়। আগে ওপির মাধ্যমে টিকা কেনা হতো। এখন সরকারের বিশেষ বরাদ্দে সিএমএসডি কিনেছে। তবে মজুত শেষের পথে। নতুন করে কেনার প্রক্রিয়া চলছে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দুই কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে জানান, স্থানীয় ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের তৈরি র্যাবিসের টিকা ডব্লিউএইচও-এর প্রি-কোয়ালিফাইড নয়। টিকা কিনতে সরকারের বিশেষজ্ঞ কমিটি স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে ডব্লিউএইচওর সনদ চাইলে তারা দিতে পারেনি। সরকার গত ১০ বছরের বেশি সময় দেশীয় প্রতিষ্ঠানের টিকা কিনছে।
স্থানীয় উৎপাদিত টিকা ডব্লিউএইচওর মানদণ্ডে পরীক্ষিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ও লাইন ডিরেক্টর (সিডিসি) অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘আমি ২০১১ সাল থেকে ২০১৫ পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলাম। তখন সারা দেশে জলাতঙ্ক টিকা প্রয়োগ সম্প্রসারণ করেছি। টিকাকে ডব্লিউএইচও প্রি-কোয়ালিফাইড হওয়ার বাধ্যবাধকতা করেছিলাম। আমি যত দিন ছিলাম তত দিন বিদেশি প্রি-কোয়ালিফাইড টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘টিকার সংকট এমনটি বলা ঠিক হবে না। সরকার বিশেষ বরাদ্দে কিনছে। স্থানীয় কোম্পানির টিকা প্রি-কোয়ালিফাইড নয়, এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তারা তাদের টিকা পরীক্ষার জন্য বিদেশে পাঠিয়েছে।’
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধের সরকারি টিকার (র্যাবিক্স-ভিসি) সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে প্রাণীর কামড় বা আঁচড়ের শিকার ব্যক্তিদের নিজের টাকায় টিকা কিনতে হচ্ছে। জানা গেছে, কেন্দ্রীয়ভাবে সরকারের কাছে মজুত টিকা চলতি মে মাসেই শেষ হচ্ছে। বেশির ভাগ জেলা-উপজেলায় স্বল্পসংখ্যক টিকা রাখা হয়েছে, যা জরুরি প্রয়োজনে প্রয়োগ করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, স্বাস্থ্যের কৌশলগত পরিকল্পনা বা অপারেশনাল প্ল্যান (ওপি) না থাকায় জলাতঙ্ক টিকার এই সংকট হয়েছে। স্বাস্থ্য খাতের সিংহভাগ অবকাঠামো, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, হাসপাতালের সেবা ব্যবস্থাপনা, সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ, টিকা ও পুষ্টি কার্যক্রমসহ ৩০টির বেশি কর্মসূচির কার্যক্রম চলে পাঁচ বছর মেয়াদি ওপির মাধ্যমে। গত বছরের জুনে শেষ হয়েছে ‘চতুর্থ স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি (এইচপিএনএসপি)’। জুলাইয়ে পাঁচ বছরের জন্য ১ লাখ ৬ হাজার ১০০ কোটি টাকার পঞ্চম এইচপিএনএসপি বা ওপি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তৎকালীন সরকার তা অনুমোদন দেয়নি। ওপি থেকে বের হওয়ার কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ।
জলাতঙ্ক রোগ নির্মূলের লক্ষ্যে ২০১১ সালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জাতীয় জলাতঙ্ক নির্মূল কর্মসূচি চালু করে। সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ (সিডিসি) শাখা এই কর্মসূচি পরিচালনা করছে। সিডিসি বলছে, জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মৃত্যু শতভাগ হওয়ায় ২০১১ সালে বিনা মূল্যে সারা দেশে টিকা দেওয়া শুরু করা হয়। সিডিসি সরাসরি টিকা কিনত। বর্তমানে ওপি না থাকায় সরকারের বিশেষ বরাদ্দে টিকা কিনছে কেন্দ্রীয় ঔষধাগার (সিএমএসডি)। গত ফেব্রুয়ারিতে সিএমএসডি ১ লাখ ৪ হাজার টিকা কেনে। বর্তমানে কেন্দ্রীয়ভাবে টিকা রয়েছে প্রায় ২ হাজার। এর বাইরে জেলা ও উপজেলায় জরুরি প্রয়োগের জন্য কিছু টিকা রয়েছে। চলতি মাসেই এই টিকার মজুত শেষ হবে। প্রাণীর আক্রমণে রক্তাক্ত আহতদের টিকা ছাড়াও অতিরিক্ত হিসেবে র্যাবিস ইমিউনোগ্লোবিউলিন (আরআইজি) দেওয়া হয়। সরকার এখন আরআইজি কিনছে না। এক ডোজ টিকার দাম স্থানীয় বাজারে ৫০০ টাকা। আরআইজির দাম ১ হাজার টাকা।
সরকারের হিসাবে, গত বছর কুকুরসহ প্রাণীর আক্রমণের শিকার হয়ে চিকিৎসা সেবাকেন্দ্রে এসেছিলেন সোয়া ৫ লাখ মানুষ। গত বছর জলাতঙ্কের কারণে ৫৬ জনের মৃত্যু হয়। প্রাণীর আক্রমণের শিকার একজন ব্যক্তিকে তিন থেকে চার ডোজ র্যাবিস টিকা দেওয়া হয়। ২০২৩ সালে ৫ লাখ, ২০২২ সালে সাড়ে ৪ লাখ মানুষ ন্যূনতম তিন ডোজ করে টিকা নিয়েছেন। সারা দেশে উপজেলা, জেলা ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ চার শতাধিক টিকাকেন্দ্রে প্রাণীর আক্রমণের শিকার ব্যক্তিদের টিকা দেওয়া হয়।
অন্তত পাঁচটি জেলা ও উপজেলায় খোঁজ নিয়ে র্যাবিক্স টিকার সংকটের তথ্য জানা গেছে। রোগীরা স্থানীয় বাজার থেকে টিকা কিনে দিচ্ছেন। আরআইজিও তাঁদের কিনতে হচ্ছে। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর আলম জানান, সরকারি হাসপাতালগুলোতে যে টিকা আছে, তা জরুরি মুহূর্তে দেওয়ার জন্য। একই কথা বলেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কিশলয় সাহা। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘পাঁচ মাস ধরে টিকার সংকট। জরুরি মুহূর্তে প্রয়োগের জন্য আমরা ৫০ ভায়াল এনে রেখেছি। কেউ গভীর রাতে আক্রান্ত হয়ে এলে তার জন্য টিকা সংগ্রহ করা কঠিন। অথবা যেসব রোগীর ক্রয়ক্ষমতা নেই, তাদের দেওয়া হচ্ছে। অথবা প্রথমটি বিনা মূল্যে দেওয়া হচ্ছে, পরে নিজেরা সংগ্রহ করে নিচ্ছে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, রাস্তাঘাটে কুকুরের সংখ্যা বেড়েছে। জলাতঙ্ক রোধে কুকুরকে টিকা দেওয়ার কার্যক্রম বর্তমানে বন্ধ। আবার আক্রান্ত মানুষকে দেওয়ার টিকারও সংকট দেখা দিয়েছে। কর্মসূচি না থাকায় দীর্ঘ দিনের অর্জন হুমকিতে পড়েছে। নীরবে রোগী বাড়ছে।
রাজধানীর মহাখালীতে ঢাকা সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে চলতি বছরের শুরু থেকে গত ৫ এপ্রিল পর্যন্ত কুকুর, বিড়াল, বেজি, বানর ও খ্যাঁকশিয়ালের আক্রমণের শিকার হয়ে চিকিৎসার জন্য এসেছেন সাড়ে ৪৪ হাজার মানুষ। আক্রমণে রক্তাক্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন সাড়ে ১৩ হাজার।
ওই হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট (মেডিসিন) ও তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আরিফুল বাসার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে আরআইজি সরবরাহ নেই কয়েক সপ্তাহ। যাঁদের প্রয়োজন তাঁরা নিজেরা সংগ্রহ করেন। টিকার সরবরাহ পাচ্ছি। তবে অন্যান্য হাসপাতালে টিকা নেই বলে রোগী এখানে পাঠানো হয়। রাজধানী ছাড়াও সারা দেশ থেকে বহু রোগী আসেন।’
শুধু এই হাসপাতালেই গত বছর প্রাণীর আক্রমণের শিকার হয়ে চিকিৎসা নেন ১ লাখ ২২ হাজার ২৬৩ জন। ২০২৩ সালে ৯৪ হাজার, ২০২২ সালে ৮৯ হাজার ৯২৮ জন চিকিৎসা নেন। এসব রোগীর মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশই কুকুরের আক্রমণের শিকার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রোগী বিড়ালের আক্রমণে শিকার। বেজি, বানর ও খ্যাঁকশিয়ালের আক্রমণের শিকার রোগীর সংখ্যা তুলনামূলক কম।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, এশিয়া ও আফ্রিকাতে জলাতঙ্ক রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি। এই রোগে মৃতদের ৪০ শতাংশের বয়স ১৫ বছরের কম।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক চিকিৎসাবিষয়ক সাময়িকী ল্যানসেটে প্রকাশিত সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বলা হয়, জলাতঙ্কে মানুষের মৃত্যুর সংখ্যায় বাংলাদেশ বিশ্বের জলাতঙ্ক-প্রবণ দেশগুলোর মধ্যে তৃতীয়। রোগটির ৯৬ শতাংশের কারণ কুকুরের কামড়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণের (সিডিসি) জুনোটিক ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রামের উপব্যবস্থাপক ডা. এস এম গোলাম কায়সার আজকের পত্রিকাকে বলেন, জলাতঙ্কে ২০১০ সালের আগে বছরে দুই হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হতো। জলাতঙ্ক রোগীর মৃত্যু শতভাগ। সিডিসি কর্মসূচি নেওয়ায় সেই মৃত্যু কমে দুই অঙ্কে নেমে এসেছে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলাতঙ্ক রোগে এক সপ্তাহ বা দেড় সপ্তাহের মধ্যে মৃত্যু হয়। ওপির কারণেই কালাজ্বর, গোদরোগ, জলাতঙ্কসহ এমন অনেক রোগ নির্মূল হয়েছে বা নির্মূলের পথে। পূর্বপ্রস্তুতি ছাড়া ওপি বন্ধের সিদ্ধান্ত সঠিক নয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর (সিডিসি) ডা. মো. হালিমুর রশিদ বলেন, ‘খুব হিসাব করে টিকা হাসপাতালগুলোকে দেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান আমাদের চাহিদা দিলে তা সিএমএসডিকে দেওয়া হয়, পরে তারা টিকা পাঠায়। আগে ওপির মাধ্যমে টিকা কেনা হতো। এখন সরকারের বিশেষ বরাদ্দে সিএমএসডি কিনেছে। তবে মজুত শেষের পথে। নতুন করে কেনার প্রক্রিয়া চলছে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দুই কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে জানান, স্থানীয় ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের তৈরি র্যাবিসের টিকা ডব্লিউএইচও-এর প্রি-কোয়ালিফাইড নয়। টিকা কিনতে সরকারের বিশেষজ্ঞ কমিটি স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে ডব্লিউএইচওর সনদ চাইলে তারা দিতে পারেনি। সরকার গত ১০ বছরের বেশি সময় দেশীয় প্রতিষ্ঠানের টিকা কিনছে।
স্থানীয় উৎপাদিত টিকা ডব্লিউএইচওর মানদণ্ডে পরীক্ষিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ও লাইন ডিরেক্টর (সিডিসি) অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘আমি ২০১১ সাল থেকে ২০১৫ পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলাম। তখন সারা দেশে জলাতঙ্ক টিকা প্রয়োগ সম্প্রসারণ করেছি। টিকাকে ডব্লিউএইচও প্রি-কোয়ালিফাইড হওয়ার বাধ্যবাধকতা করেছিলাম। আমি যত দিন ছিলাম তত দিন বিদেশি প্রি-কোয়ালিফাইড টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘টিকার সংকট এমনটি বলা ঠিক হবে না। সরকার বিশেষ বরাদ্দে কিনছে। স্থানীয় কোম্পানির টিকা প্রি-কোয়ালিফাইড নয়, এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তারা তাদের টিকা পরীক্ষার জন্য বিদেশে পাঠিয়েছে।’
মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধের সরকারি টিকার (র্যাবিক্স-ভিসি) সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে প্রাণীর কামড় বা আঁচড়ের শিকার ব্যক্তিদের নিজের টাকায় টিকা কিনতে হচ্ছে। জানা গেছে, কেন্দ্রীয়ভাবে সরকারের কাছে মজুত টিকা চলতি মে মাসেই শেষ হচ্ছে। বেশির ভাগ জেলা-উপজেলায় স্বল্পসংখ্যক টিকা রাখা হয়েছে, যা জরুরি প্রয়োজনে প্রয়োগ করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, স্বাস্থ্যের কৌশলগত পরিকল্পনা বা অপারেশনাল প্ল্যান (ওপি) না থাকায় জলাতঙ্ক টিকার এই সংকট হয়েছে। স্বাস্থ্য খাতের সিংহভাগ অবকাঠামো, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, হাসপাতালের সেবা ব্যবস্থাপনা, সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ, টিকা ও পুষ্টি কার্যক্রমসহ ৩০টির বেশি কর্মসূচির কার্যক্রম চলে পাঁচ বছর মেয়াদি ওপির মাধ্যমে। গত বছরের জুনে শেষ হয়েছে ‘চতুর্থ স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি (এইচপিএনএসপি)’। জুলাইয়ে পাঁচ বছরের জন্য ১ লাখ ৬ হাজার ১০০ কোটি টাকার পঞ্চম এইচপিএনএসপি বা ওপি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তৎকালীন সরকার তা অনুমোদন দেয়নি। ওপি থেকে বের হওয়ার কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ।
জলাতঙ্ক রোগ নির্মূলের লক্ষ্যে ২০১১ সালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জাতীয় জলাতঙ্ক নির্মূল কর্মসূচি চালু করে। সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ (সিডিসি) শাখা এই কর্মসূচি পরিচালনা করছে। সিডিসি বলছে, জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মৃত্যু শতভাগ হওয়ায় ২০১১ সালে বিনা মূল্যে সারা দেশে টিকা দেওয়া শুরু করা হয়। সিডিসি সরাসরি টিকা কিনত। বর্তমানে ওপি না থাকায় সরকারের বিশেষ বরাদ্দে টিকা কিনছে কেন্দ্রীয় ঔষধাগার (সিএমএসডি)। গত ফেব্রুয়ারিতে সিএমএসডি ১ লাখ ৪ হাজার টিকা কেনে। বর্তমানে কেন্দ্রীয়ভাবে টিকা রয়েছে প্রায় ২ হাজার। এর বাইরে জেলা ও উপজেলায় জরুরি প্রয়োগের জন্য কিছু টিকা রয়েছে। চলতি মাসেই এই টিকার মজুত শেষ হবে। প্রাণীর আক্রমণে রক্তাক্ত আহতদের টিকা ছাড়াও অতিরিক্ত হিসেবে র্যাবিস ইমিউনোগ্লোবিউলিন (আরআইজি) দেওয়া হয়। সরকার এখন আরআইজি কিনছে না। এক ডোজ টিকার দাম স্থানীয় বাজারে ৫০০ টাকা। আরআইজির দাম ১ হাজার টাকা।
সরকারের হিসাবে, গত বছর কুকুরসহ প্রাণীর আক্রমণের শিকার হয়ে চিকিৎসা সেবাকেন্দ্রে এসেছিলেন সোয়া ৫ লাখ মানুষ। গত বছর জলাতঙ্কের কারণে ৫৬ জনের মৃত্যু হয়। প্রাণীর আক্রমণের শিকার একজন ব্যক্তিকে তিন থেকে চার ডোজ র্যাবিস টিকা দেওয়া হয়। ২০২৩ সালে ৫ লাখ, ২০২২ সালে সাড়ে ৪ লাখ মানুষ ন্যূনতম তিন ডোজ করে টিকা নিয়েছেন। সারা দেশে উপজেলা, জেলা ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ চার শতাধিক টিকাকেন্দ্রে প্রাণীর আক্রমণের শিকার ব্যক্তিদের টিকা দেওয়া হয়।
অন্তত পাঁচটি জেলা ও উপজেলায় খোঁজ নিয়ে র্যাবিক্স টিকার সংকটের তথ্য জানা গেছে। রোগীরা স্থানীয় বাজার থেকে টিকা কিনে দিচ্ছেন। আরআইজিও তাঁদের কিনতে হচ্ছে। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর আলম জানান, সরকারি হাসপাতালগুলোতে যে টিকা আছে, তা জরুরি মুহূর্তে দেওয়ার জন্য। একই কথা বলেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কিশলয় সাহা। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘পাঁচ মাস ধরে টিকার সংকট। জরুরি মুহূর্তে প্রয়োগের জন্য আমরা ৫০ ভায়াল এনে রেখেছি। কেউ গভীর রাতে আক্রান্ত হয়ে এলে তার জন্য টিকা সংগ্রহ করা কঠিন। অথবা যেসব রোগীর ক্রয়ক্ষমতা নেই, তাদের দেওয়া হচ্ছে। অথবা প্রথমটি বিনা মূল্যে দেওয়া হচ্ছে, পরে নিজেরা সংগ্রহ করে নিচ্ছে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, রাস্তাঘাটে কুকুরের সংখ্যা বেড়েছে। জলাতঙ্ক রোধে কুকুরকে টিকা দেওয়ার কার্যক্রম বর্তমানে বন্ধ। আবার আক্রান্ত মানুষকে দেওয়ার টিকারও সংকট দেখা দিয়েছে। কর্মসূচি না থাকায় দীর্ঘ দিনের অর্জন হুমকিতে পড়েছে। নীরবে রোগী বাড়ছে।
রাজধানীর মহাখালীতে ঢাকা সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে চলতি বছরের শুরু থেকে গত ৫ এপ্রিল পর্যন্ত কুকুর, বিড়াল, বেজি, বানর ও খ্যাঁকশিয়ালের আক্রমণের শিকার হয়ে চিকিৎসার জন্য এসেছেন সাড়ে ৪৪ হাজার মানুষ। আক্রমণে রক্তাক্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন সাড়ে ১৩ হাজার।
ওই হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট (মেডিসিন) ও তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আরিফুল বাসার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে আরআইজি সরবরাহ নেই কয়েক সপ্তাহ। যাঁদের প্রয়োজন তাঁরা নিজেরা সংগ্রহ করেন। টিকার সরবরাহ পাচ্ছি। তবে অন্যান্য হাসপাতালে টিকা নেই বলে রোগী এখানে পাঠানো হয়। রাজধানী ছাড়াও সারা দেশ থেকে বহু রোগী আসেন।’
শুধু এই হাসপাতালেই গত বছর প্রাণীর আক্রমণের শিকার হয়ে চিকিৎসা নেন ১ লাখ ২২ হাজার ২৬৩ জন। ২০২৩ সালে ৯৪ হাজার, ২০২২ সালে ৮৯ হাজার ৯২৮ জন চিকিৎসা নেন। এসব রোগীর মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশই কুকুরের আক্রমণের শিকার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রোগী বিড়ালের আক্রমণে শিকার। বেজি, বানর ও খ্যাঁকশিয়ালের আক্রমণের শিকার রোগীর সংখ্যা তুলনামূলক কম।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, এশিয়া ও আফ্রিকাতে জলাতঙ্ক রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি। এই রোগে মৃতদের ৪০ শতাংশের বয়স ১৫ বছরের কম।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক চিকিৎসাবিষয়ক সাময়িকী ল্যানসেটে প্রকাশিত সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বলা হয়, জলাতঙ্কে মানুষের মৃত্যুর সংখ্যায় বাংলাদেশ বিশ্বের জলাতঙ্ক-প্রবণ দেশগুলোর মধ্যে তৃতীয়। রোগটির ৯৬ শতাংশের কারণ কুকুরের কামড়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণের (সিডিসি) জুনোটিক ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রামের উপব্যবস্থাপক ডা. এস এম গোলাম কায়সার আজকের পত্রিকাকে বলেন, জলাতঙ্কে ২০১০ সালের আগে বছরে দুই হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হতো। জলাতঙ্ক রোগীর মৃত্যু শতভাগ। সিডিসি কর্মসূচি নেওয়ায় সেই মৃত্যু কমে দুই অঙ্কে নেমে এসেছে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলাতঙ্ক রোগে এক সপ্তাহ বা দেড় সপ্তাহের মধ্যে মৃত্যু হয়। ওপির কারণেই কালাজ্বর, গোদরোগ, জলাতঙ্কসহ এমন অনেক রোগ নির্মূল হয়েছে বা নির্মূলের পথে। পূর্বপ্রস্তুতি ছাড়া ওপি বন্ধের সিদ্ধান্ত সঠিক নয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর (সিডিসি) ডা. মো. হালিমুর রশিদ বলেন, ‘খুব হিসাব করে টিকা হাসপাতালগুলোকে দেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান আমাদের চাহিদা দিলে তা সিএমএসডিকে দেওয়া হয়, পরে তারা টিকা পাঠায়। আগে ওপির মাধ্যমে টিকা কেনা হতো। এখন সরকারের বিশেষ বরাদ্দে সিএমএসডি কিনেছে। তবে মজুত শেষের পথে। নতুন করে কেনার প্রক্রিয়া চলছে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দুই কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে জানান, স্থানীয় ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের তৈরি র্যাবিসের টিকা ডব্লিউএইচও-এর প্রি-কোয়ালিফাইড নয়। টিকা কিনতে সরকারের বিশেষজ্ঞ কমিটি স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে ডব্লিউএইচওর সনদ চাইলে তারা দিতে পারেনি। সরকার গত ১০ বছরের বেশি সময় দেশীয় প্রতিষ্ঠানের টিকা কিনছে।
স্থানীয় উৎপাদিত টিকা ডব্লিউএইচওর মানদণ্ডে পরীক্ষিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ও লাইন ডিরেক্টর (সিডিসি) অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘আমি ২০১১ সাল থেকে ২০১৫ পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলাম। তখন সারা দেশে জলাতঙ্ক টিকা প্রয়োগ সম্প্রসারণ করেছি। টিকাকে ডব্লিউএইচও প্রি-কোয়ালিফাইড হওয়ার বাধ্যবাধকতা করেছিলাম। আমি যত দিন ছিলাম তত দিন বিদেশি প্রি-কোয়ালিফাইড টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘টিকার সংকট এমনটি বলা ঠিক হবে না। সরকার বিশেষ বরাদ্দে কিনছে। স্থানীয় কোম্পানির টিকা প্রি-কোয়ালিফাইড নয়, এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তারা তাদের টিকা পরীক্ষার জন্য বিদেশে পাঠিয়েছে।’
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধের সরকারি টিকার (র্যাবিক্স-ভিসি) সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে প্রাণীর কামড় বা আঁচড়ের শিকার ব্যক্তিদের নিজের টাকায় টিকা কিনতে হচ্ছে। জানা গেছে, কেন্দ্রীয়ভাবে সরকারের কাছে মজুত টিকা চলতি মে মাসেই শেষ হচ্ছে। বেশির ভাগ জেলা-উপজেলায় স্বল্পসংখ্যক টিকা রাখা হয়েছে, যা জরুরি প্রয়োজনে প্রয়োগ করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, স্বাস্থ্যের কৌশলগত পরিকল্পনা বা অপারেশনাল প্ল্যান (ওপি) না থাকায় জলাতঙ্ক টিকার এই সংকট হয়েছে। স্বাস্থ্য খাতের সিংহভাগ অবকাঠামো, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, হাসপাতালের সেবা ব্যবস্থাপনা, সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ, টিকা ও পুষ্টি কার্যক্রমসহ ৩০টির বেশি কর্মসূচির কার্যক্রম চলে পাঁচ বছর মেয়াদি ওপির মাধ্যমে। গত বছরের জুনে শেষ হয়েছে ‘চতুর্থ স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি (এইচপিএনএসপি)’। জুলাইয়ে পাঁচ বছরের জন্য ১ লাখ ৬ হাজার ১০০ কোটি টাকার পঞ্চম এইচপিএনএসপি বা ওপি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তৎকালীন সরকার তা অনুমোদন দেয়নি। ওপি থেকে বের হওয়ার কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ।
জলাতঙ্ক রোগ নির্মূলের লক্ষ্যে ২০১১ সালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জাতীয় জলাতঙ্ক নির্মূল কর্মসূচি চালু করে। সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ (সিডিসি) শাখা এই কর্মসূচি পরিচালনা করছে। সিডিসি বলছে, জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মৃত্যু শতভাগ হওয়ায় ২০১১ সালে বিনা মূল্যে সারা দেশে টিকা দেওয়া শুরু করা হয়। সিডিসি সরাসরি টিকা কিনত। বর্তমানে ওপি না থাকায় সরকারের বিশেষ বরাদ্দে টিকা কিনছে কেন্দ্রীয় ঔষধাগার (সিএমএসডি)। গত ফেব্রুয়ারিতে সিএমএসডি ১ লাখ ৪ হাজার টিকা কেনে। বর্তমানে কেন্দ্রীয়ভাবে টিকা রয়েছে প্রায় ২ হাজার। এর বাইরে জেলা ও উপজেলায় জরুরি প্রয়োগের জন্য কিছু টিকা রয়েছে। চলতি মাসেই এই টিকার মজুত শেষ হবে। প্রাণীর আক্রমণে রক্তাক্ত আহতদের টিকা ছাড়াও অতিরিক্ত হিসেবে র্যাবিস ইমিউনোগ্লোবিউলিন (আরআইজি) দেওয়া হয়। সরকার এখন আরআইজি কিনছে না। এক ডোজ টিকার দাম স্থানীয় বাজারে ৫০০ টাকা। আরআইজির দাম ১ হাজার টাকা।
সরকারের হিসাবে, গত বছর কুকুরসহ প্রাণীর আক্রমণের শিকার হয়ে চিকিৎসা সেবাকেন্দ্রে এসেছিলেন সোয়া ৫ লাখ মানুষ। গত বছর জলাতঙ্কের কারণে ৫৬ জনের মৃত্যু হয়। প্রাণীর আক্রমণের শিকার একজন ব্যক্তিকে তিন থেকে চার ডোজ র্যাবিস টিকা দেওয়া হয়। ২০২৩ সালে ৫ লাখ, ২০২২ সালে সাড়ে ৪ লাখ মানুষ ন্যূনতম তিন ডোজ করে টিকা নিয়েছেন। সারা দেশে উপজেলা, জেলা ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ চার শতাধিক টিকাকেন্দ্রে প্রাণীর আক্রমণের শিকার ব্যক্তিদের টিকা দেওয়া হয়।
অন্তত পাঁচটি জেলা ও উপজেলায় খোঁজ নিয়ে র্যাবিক্স টিকার সংকটের তথ্য জানা গেছে। রোগীরা স্থানীয় বাজার থেকে টিকা কিনে দিচ্ছেন। আরআইজিও তাঁদের কিনতে হচ্ছে। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর আলম জানান, সরকারি হাসপাতালগুলোতে যে টিকা আছে, তা জরুরি মুহূর্তে দেওয়ার জন্য। একই কথা বলেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কিশলয় সাহা। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘পাঁচ মাস ধরে টিকার সংকট। জরুরি মুহূর্তে প্রয়োগের জন্য আমরা ৫০ ভায়াল এনে রেখেছি। কেউ গভীর রাতে আক্রান্ত হয়ে এলে তার জন্য টিকা সংগ্রহ করা কঠিন। অথবা যেসব রোগীর ক্রয়ক্ষমতা নেই, তাদের দেওয়া হচ্ছে। অথবা প্রথমটি বিনা মূল্যে দেওয়া হচ্ছে, পরে নিজেরা সংগ্রহ করে নিচ্ছে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, রাস্তাঘাটে কুকুরের সংখ্যা বেড়েছে। জলাতঙ্ক রোধে কুকুরকে টিকা দেওয়ার কার্যক্রম বর্তমানে বন্ধ। আবার আক্রান্ত মানুষকে দেওয়ার টিকারও সংকট দেখা দিয়েছে। কর্মসূচি না থাকায় দীর্ঘ দিনের অর্জন হুমকিতে পড়েছে। নীরবে রোগী বাড়ছে।
রাজধানীর মহাখালীতে ঢাকা সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে চলতি বছরের শুরু থেকে গত ৫ এপ্রিল পর্যন্ত কুকুর, বিড়াল, বেজি, বানর ও খ্যাঁকশিয়ালের আক্রমণের শিকার হয়ে চিকিৎসার জন্য এসেছেন সাড়ে ৪৪ হাজার মানুষ। আক্রমণে রক্তাক্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন সাড়ে ১৩ হাজার।
ওই হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট (মেডিসিন) ও তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আরিফুল বাসার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে আরআইজি সরবরাহ নেই কয়েক সপ্তাহ। যাঁদের প্রয়োজন তাঁরা নিজেরা সংগ্রহ করেন। টিকার সরবরাহ পাচ্ছি। তবে অন্যান্য হাসপাতালে টিকা নেই বলে রোগী এখানে পাঠানো হয়। রাজধানী ছাড়াও সারা দেশ থেকে বহু রোগী আসেন।’
শুধু এই হাসপাতালেই গত বছর প্রাণীর আক্রমণের শিকার হয়ে চিকিৎসা নেন ১ লাখ ২২ হাজার ২৬৩ জন। ২০২৩ সালে ৯৪ হাজার, ২০২২ সালে ৮৯ হাজার ৯২৮ জন চিকিৎসা নেন। এসব রোগীর মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশই কুকুরের আক্রমণের শিকার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রোগী বিড়ালের আক্রমণে শিকার। বেজি, বানর ও খ্যাঁকশিয়ালের আক্রমণের শিকার রোগীর সংখ্যা তুলনামূলক কম।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, এশিয়া ও আফ্রিকাতে জলাতঙ্ক রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি। এই রোগে মৃতদের ৪০ শতাংশের বয়স ১৫ বছরের কম।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক চিকিৎসাবিষয়ক সাময়িকী ল্যানসেটে প্রকাশিত সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বলা হয়, জলাতঙ্কে মানুষের মৃত্যুর সংখ্যায় বাংলাদেশ বিশ্বের জলাতঙ্ক-প্রবণ দেশগুলোর মধ্যে তৃতীয়। রোগটির ৯৬ শতাংশের কারণ কুকুরের কামড়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণের (সিডিসি) জুনোটিক ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রামের উপব্যবস্থাপক ডা. এস এম গোলাম কায়সার আজকের পত্রিকাকে বলেন, জলাতঙ্কে ২০১০ সালের আগে বছরে দুই হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হতো। জলাতঙ্ক রোগীর মৃত্যু শতভাগ। সিডিসি কর্মসূচি নেওয়ায় সেই মৃত্যু কমে দুই অঙ্কে নেমে এসেছে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলাতঙ্ক রোগে এক সপ্তাহ বা দেড় সপ্তাহের মধ্যে মৃত্যু হয়। ওপির কারণেই কালাজ্বর, গোদরোগ, জলাতঙ্কসহ এমন অনেক রোগ নির্মূল হয়েছে বা নির্মূলের পথে। পূর্বপ্রস্তুতি ছাড়া ওপি বন্ধের সিদ্ধান্ত সঠিক নয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর (সিডিসি) ডা. মো. হালিমুর রশিদ বলেন, ‘খুব হিসাব করে টিকা হাসপাতালগুলোকে দেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান আমাদের চাহিদা দিলে তা সিএমএসডিকে দেওয়া হয়, পরে তারা টিকা পাঠায়। আগে ওপির মাধ্যমে টিকা কেনা হতো। এখন সরকারের বিশেষ বরাদ্দে সিএমএসডি কিনেছে। তবে মজুত শেষের পথে। নতুন করে কেনার প্রক্রিয়া চলছে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দুই কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে জানান, স্থানীয় ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের তৈরি র্যাবিসের টিকা ডব্লিউএইচও-এর প্রি-কোয়ালিফাইড নয়। টিকা কিনতে সরকারের বিশেষজ্ঞ কমিটি স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে ডব্লিউএইচওর সনদ চাইলে তারা দিতে পারেনি। সরকার গত ১০ বছরের বেশি সময় দেশীয় প্রতিষ্ঠানের টিকা কিনছে।
স্থানীয় উৎপাদিত টিকা ডব্লিউএইচওর মানদণ্ডে পরীক্ষিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ও লাইন ডিরেক্টর (সিডিসি) অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘আমি ২০১১ সাল থেকে ২০১৫ পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলাম। তখন সারা দেশে জলাতঙ্ক টিকা প্রয়োগ সম্প্রসারণ করেছি। টিকাকে ডব্লিউএইচও প্রি-কোয়ালিফাইড হওয়ার বাধ্যবাধকতা করেছিলাম। আমি যত দিন ছিলাম তত দিন বিদেশি প্রি-কোয়ালিফাইড টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘টিকার সংকট এমনটি বলা ঠিক হবে না। সরকার বিশেষ বরাদ্দে কিনছে। স্থানীয় কোম্পানির টিকা প্রি-কোয়ালিফাইড নয়, এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তারা তাদের টিকা পরীক্ষার জন্য বিদেশে পাঠিয়েছে।’
জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদল’ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বিএনপি। সেই সঙ্গে নির্বাচনকালে প্রশাসন, পুলিশ, বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে বলেছে দলটি। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক...
১ ঘণ্টা আগেবিগত ফ্যাসিবাদী শাসনামলের নিষ্ঠুর থেকে নিষ্ঠুরতম সব ঘটনা ও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সাক্ষী একেকটি পিলার। রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র কারওয়ান বাজার থেকে ফার্মগেটে মেট্রোরেলের পিলারগুলোতে (স্তম্ভ) ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এসব ঘটনা।
১ ঘণ্টা আগেজনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা হিসেবে নির্বাচনের আগে প্রশাসনের যাবতীয় রদবদল সরাসরি তাঁর তত্ত্বাবধানে হবে। নির্বাচনের আগে যোগ্যতার ভিত্তিতে কর্মকর্তাদের বাছাই করে জেলা প্রশাসক পদে যথোপযুক্ত স্থানে নিয়োগ দেওয়া হবে।
৩ ঘণ্টা আগেজুলাই অভ্যুত্থানে সারা দেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাঁর ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন আজ মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনের মতো যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেছেন।
৪ ঘণ্টা আগেপ্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদল’ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বিএনপি। সেই সঙ্গে নির্বাচনকালে প্রশাসন, পুলিশ, বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে বলেছে দলটি। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির নেতারা এসব দাবি জানান। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা নিরপেক্ষতা বজায় রাখার আশ্বাস দেন তাদের।
প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমদ।
বৈঠক শেষে বেরিয়ে এসে বিএনপির মহাসচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আজকে প্রধান উপদেষ্টার কাছে এসেছিলাম আমাদের কতগুলো রাজনৈতিক কনসার্ন নিয়ে কথা বলার জন্য; বিশেষ করে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সেই নির্বাচনকে অর্থবহ, নিরপেক্ষ, সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য এই মুহূর্ত থেকে যেটা প্রয়োজন, সেটা হচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকারকে এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদলে নিতে হবে। অর্থাৎ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে ভূমিকা, সেই ভূমিকায় তাদের যেতে হবে। সে জন্য প্রথমেই যে বিষয়টির প্রয়োজন হবে, তা হচ্ছে প্রশাসনকে পুরোপুরিভাবে নিরপেক্ষ একটা জনগণের মধ্যে তৈরি করতে হবে।’
ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকে নির্বাচনকালীন সরকারের প্রশাসন, পুলিশ, বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করাসহ আরও বেশ কিছু বিষয়ে কথা বলেছেন বিএনপি নেতারা। প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে এ সময় সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতা বজায় রাখার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে তাঁদের।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা সরকারকে সম্পূর্ণভাবে নিরপেক্ষতা বজায় রাখার জন্য বলেছি। এটাই ছিল মূলকথা। সরকারের মধ্যে যদি কোনো দলীয় লোক থেকে থাকেন, তাঁদের অপসারণের জন্য আমরা দাবি জানিয়ে এসেছি।’ এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট করে কোনো উপদেষ্টার কথা বলা হয়েছে কি না জানতে চাইলে কিছু বলেননি মির্জা ফখরুল।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের আলোচনা প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, ‘সচিবালয়ে এখনো যাঁরা আছেন, যাঁরা চিহ্নিত ফ্যাসিস্ট, তাঁদের সরিয়ে সেখানে নিরপেক্ষ কর্মকর্তা দেওয়ার জন্য বলেছি। আমরা বলেছি যে প্রশাসনে ও জেলা প্রশাসনে; বিশেষ করে, সেখানেও একইভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’
পুলিশে নিয়োগের বিষয়েও প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয় বলে জানান বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘আমরা কিছু কিছু কথা বলে এসেছি। যারা এখনো পুরোনো সরকারের স্বার্থ পূরণ করছে, তাদের অপসারণের কথা বলেছি। পুলিশের নিয়োগের ক্ষেত্রে; বিশেষ করে নতুন নিয়োগ অথবা পদোন্নতির ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা আমরা বলেছি।’
বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে বিচার বিভাগে নিরপেক্ষ বিচারক নিয়োগের কথাও বলা হয়েছে। এ বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা বলে এসেছি, বিচার বিভাগে; বিশেষ করে উচ্চ আদালতে এখনো যেসব ফ্যাসিস্টের দোসর আছে, তাদের সরিয়ে সেখানে নিরপেক্ষ বিচারকদের দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। যদিও এটা বিচার বিভাগের বিষয়, এরপরেও প্রধান উপদেষ্টা যেহেতু সবকিছুর দায়িত্বে আছেন। তাঁর কাছে আমাদের কথাটা জানিয়ে এসেছি।’
এর আগে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের উদ্দেশ্যে গতকাল সন্ধ্যা ৬টার দিকে যমুনায় প্রবেশ করে বিএনপির প্রতিনিধিদল। সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে সেখান থেকে বেরিয়ে আসে তারা। যমুনায় প্রবেশের আগে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য সময় চেয়েছিলাম। সেই অনুযায়ী উনি আজকে সময় দিয়েছেন। আমরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছি। ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন, প্রশাসনের কিছু বিষয়সহ দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আমরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলব।’
জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে বেশ কিছুদিন আগে থেকেই প্রশ্ন উঠেছে বিএনপিতে। দলটির অভিযোগ, প্রশাসন ও ভোটের কাজে একটি বিশেষ দলের লোকজনের প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচনের আগে বিষয়টি উদ্বেগে ফেলেছে বিএনপিকে। এ নিয়ে দলীয় ফোরামে একাধিক বৈঠক করেন বিএনপির নীতিনির্ধারকেরা। এসব বৈঠক থেকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। গত সোমবার রাতে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে নেতারা আলোচনা করেন বলে জানা গেছে।
দলীয় সূত্র বলছে, অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো কোনো উপদেষ্টার বক্তব্য, তৎপরতা ও কর্মকাণ্ডে সরকারের নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ণ হচ্ছে বলে মনে করে বিএনপি। দলটির বক্তব্য, প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ পদে রদবদল ও পদায়ন নিয়ে উপদেষ্টাদের কেউ কেউ পক্ষপাতমূলক আচরণ করছেন; বিশেষ করে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে কাজ করছেন। এ ছাড়া নির্বাচন সামনে রেখে মাঠপর্যায়ে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তার যে প্যানেল প্রস্তুত করা হচ্ছে, সেখানেও জামায়াতে ইসলামীর লোকজনকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। এসব ঘটনায় বিএনপি উদ্বিগ্ন। সরকার এই জায়গা থেকে বের হয়ে নিরপেক্ষতা বজায় না রাখলে নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে তাঁদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হচ্ছে। এই উদ্বেগের কথা জানাতেই প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করলেন দলটির নেতারা।
বৈঠকের পর প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ফেব্রুয়ারিতে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে সরকারের প্রস্তুতি নিয়ে বিএনপির নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। বৈঠকে নির্বাচনের আগে প্রশাসনে রদবদলে নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রাখতে প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানান বিএনপির নেতারা। প্রধান উপদেষ্টা বিএনপির নেতাদের জানান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা হিসেবে নির্বাচনের আগে প্রশাসনের যাবতীয় রদবদল সরাসরি তাঁর তত্ত্বাবধানে হবে। তিনি বলেন, জেলা প্রশাসক পদে নিয়োগের জন্য একাধিক ‘ফিট লিস্ট’ থেকে যোগ্য কর্মকর্তাদের বাছাই করে প্রত্যেককে নির্বাচনের আগে যথাযোগ্য স্থানে নিয়োগ দেওয়া হবে।’
প্রধান উপদেষ্টা বিএনপি নেতাদের আরও বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব নিরপেক্ষ থাকা। নির্বাচন একটি যুদ্ধক্ষেত্র। এখানে যিনি শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে পারবেন, সে রকম যোদ্ধাকেই আমরা বেছে নেব। এটা আমার হাতে থাকবে। নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ করার জন্য যা কিছু প্রয়োজন, আমরা করব।’
চলমান রাজনৈতিক সংলাপের অংশ হিসেবে আজ বুধবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধিদলের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদল’ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বিএনপি। সেই সঙ্গে নির্বাচনকালে প্রশাসন, পুলিশ, বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে বলেছে দলটি। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির নেতারা এসব দাবি জানান। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা নিরপেক্ষতা বজায় রাখার আশ্বাস দেন তাদের।
প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমদ।
বৈঠক শেষে বেরিয়ে এসে বিএনপির মহাসচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আজকে প্রধান উপদেষ্টার কাছে এসেছিলাম আমাদের কতগুলো রাজনৈতিক কনসার্ন নিয়ে কথা বলার জন্য; বিশেষ করে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সেই নির্বাচনকে অর্থবহ, নিরপেক্ষ, সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য এই মুহূর্ত থেকে যেটা প্রয়োজন, সেটা হচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকারকে এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদলে নিতে হবে। অর্থাৎ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে ভূমিকা, সেই ভূমিকায় তাদের যেতে হবে। সে জন্য প্রথমেই যে বিষয়টির প্রয়োজন হবে, তা হচ্ছে প্রশাসনকে পুরোপুরিভাবে নিরপেক্ষ একটা জনগণের মধ্যে তৈরি করতে হবে।’
ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকে নির্বাচনকালীন সরকারের প্রশাসন, পুলিশ, বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করাসহ আরও বেশ কিছু বিষয়ে কথা বলেছেন বিএনপি নেতারা। প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে এ সময় সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতা বজায় রাখার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে তাঁদের।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা সরকারকে সম্পূর্ণভাবে নিরপেক্ষতা বজায় রাখার জন্য বলেছি। এটাই ছিল মূলকথা। সরকারের মধ্যে যদি কোনো দলীয় লোক থেকে থাকেন, তাঁদের অপসারণের জন্য আমরা দাবি জানিয়ে এসেছি।’ এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট করে কোনো উপদেষ্টার কথা বলা হয়েছে কি না জানতে চাইলে কিছু বলেননি মির্জা ফখরুল।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের আলোচনা প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, ‘সচিবালয়ে এখনো যাঁরা আছেন, যাঁরা চিহ্নিত ফ্যাসিস্ট, তাঁদের সরিয়ে সেখানে নিরপেক্ষ কর্মকর্তা দেওয়ার জন্য বলেছি। আমরা বলেছি যে প্রশাসনে ও জেলা প্রশাসনে; বিশেষ করে, সেখানেও একইভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’
পুলিশে নিয়োগের বিষয়েও প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয় বলে জানান বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘আমরা কিছু কিছু কথা বলে এসেছি। যারা এখনো পুরোনো সরকারের স্বার্থ পূরণ করছে, তাদের অপসারণের কথা বলেছি। পুলিশের নিয়োগের ক্ষেত্রে; বিশেষ করে নতুন নিয়োগ অথবা পদোন্নতির ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা আমরা বলেছি।’
বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে বিচার বিভাগে নিরপেক্ষ বিচারক নিয়োগের কথাও বলা হয়েছে। এ বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা বলে এসেছি, বিচার বিভাগে; বিশেষ করে উচ্চ আদালতে এখনো যেসব ফ্যাসিস্টের দোসর আছে, তাদের সরিয়ে সেখানে নিরপেক্ষ বিচারকদের দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। যদিও এটা বিচার বিভাগের বিষয়, এরপরেও প্রধান উপদেষ্টা যেহেতু সবকিছুর দায়িত্বে আছেন। তাঁর কাছে আমাদের কথাটা জানিয়ে এসেছি।’
এর আগে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের উদ্দেশ্যে গতকাল সন্ধ্যা ৬টার দিকে যমুনায় প্রবেশ করে বিএনপির প্রতিনিধিদল। সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে সেখান থেকে বেরিয়ে আসে তারা। যমুনায় প্রবেশের আগে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য সময় চেয়েছিলাম। সেই অনুযায়ী উনি আজকে সময় দিয়েছেন। আমরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছি। ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন, প্রশাসনের কিছু বিষয়সহ দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আমরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলব।’
জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে বেশ কিছুদিন আগে থেকেই প্রশ্ন উঠেছে বিএনপিতে। দলটির অভিযোগ, প্রশাসন ও ভোটের কাজে একটি বিশেষ দলের লোকজনের প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচনের আগে বিষয়টি উদ্বেগে ফেলেছে বিএনপিকে। এ নিয়ে দলীয় ফোরামে একাধিক বৈঠক করেন বিএনপির নীতিনির্ধারকেরা। এসব বৈঠক থেকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। গত সোমবার রাতে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে নেতারা আলোচনা করেন বলে জানা গেছে।
দলীয় সূত্র বলছে, অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো কোনো উপদেষ্টার বক্তব্য, তৎপরতা ও কর্মকাণ্ডে সরকারের নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ণ হচ্ছে বলে মনে করে বিএনপি। দলটির বক্তব্য, প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ পদে রদবদল ও পদায়ন নিয়ে উপদেষ্টাদের কেউ কেউ পক্ষপাতমূলক আচরণ করছেন; বিশেষ করে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে কাজ করছেন। এ ছাড়া নির্বাচন সামনে রেখে মাঠপর্যায়ে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তার যে প্যানেল প্রস্তুত করা হচ্ছে, সেখানেও জামায়াতে ইসলামীর লোকজনকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। এসব ঘটনায় বিএনপি উদ্বিগ্ন। সরকার এই জায়গা থেকে বের হয়ে নিরপেক্ষতা বজায় না রাখলে নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে তাঁদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হচ্ছে। এই উদ্বেগের কথা জানাতেই প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করলেন দলটির নেতারা।
বৈঠকের পর প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ফেব্রুয়ারিতে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে সরকারের প্রস্তুতি নিয়ে বিএনপির নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। বৈঠকে নির্বাচনের আগে প্রশাসনে রদবদলে নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রাখতে প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানান বিএনপির নেতারা। প্রধান উপদেষ্টা বিএনপির নেতাদের জানান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা হিসেবে নির্বাচনের আগে প্রশাসনের যাবতীয় রদবদল সরাসরি তাঁর তত্ত্বাবধানে হবে। তিনি বলেন, জেলা প্রশাসক পদে নিয়োগের জন্য একাধিক ‘ফিট লিস্ট’ থেকে যোগ্য কর্মকর্তাদের বাছাই করে প্রত্যেককে নির্বাচনের আগে যথাযোগ্য স্থানে নিয়োগ দেওয়া হবে।’
প্রধান উপদেষ্টা বিএনপি নেতাদের আরও বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব নিরপেক্ষ থাকা। নির্বাচন একটি যুদ্ধক্ষেত্র। এখানে যিনি শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে পারবেন, সে রকম যোদ্ধাকেই আমরা বেছে নেব। এটা আমার হাতে থাকবে। নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ করার জন্য যা কিছু প্রয়োজন, আমরা করব।’
চলমান রাজনৈতিক সংলাপের অংশ হিসেবে আজ বুধবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধিদলের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধের সরকারি টিকার (র্যাবিক্স-ভিসি) সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে প্রাণীর কামড় বা আঁচড়ের শিকার ব্যক্তিদের নিজের টাকায় টিকা কিনতে হচ্ছে। জানা গেছে, কেন্দ্রীয়ভাবে সরকারের কাছে মজুত টিকা চলতি মে মাসেই শেষ হচ্ছে। বেশির ভাগ জেলা-উপজেলায় স্বল্পসংখ্যক টিকা রাখা হয়েছে...
০৯ মে ২০২৫বিগত ফ্যাসিবাদী শাসনামলের নিষ্ঠুর থেকে নিষ্ঠুরতম সব ঘটনা ও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সাক্ষী একেকটি পিলার। রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র কারওয়ান বাজার থেকে ফার্মগেটে মেট্রোরেলের পিলারগুলোতে (স্তম্ভ) ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এসব ঘটনা।
১ ঘণ্টা আগেজনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা হিসেবে নির্বাচনের আগে প্রশাসনের যাবতীয় রদবদল সরাসরি তাঁর তত্ত্বাবধানে হবে। নির্বাচনের আগে যোগ্যতার ভিত্তিতে কর্মকর্তাদের বাছাই করে জেলা প্রশাসক পদে যথোপযুক্ত স্থানে নিয়োগ দেওয়া হবে।
৩ ঘণ্টা আগেজুলাই অভ্যুত্থানে সারা দেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাঁর ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন আজ মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনের মতো যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেছেন।
৪ ঘণ্টা আগেশরীফ নাসরুল্লাহ, ঢাকা
বিগত ফ্যাসিবাদী শাসনামলের নিষ্ঠুর থেকে নিষ্ঠুরতম সব ঘটনা ও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সাক্ষী একেকটি পিলার। রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র কারওয়ান বাজার থেকে ফার্মগেটে মেট্রোরেলের পিলারগুলোতে (স্তম্ভ) ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এসব ঘটনা।
কারওয়ান বাজার স্টেশনের পিলার দিয়ে এই গ্রাফিতির শুরু। ফার্মগেট পদচারী-সেতুর কাছের পিলার পর্যন্ত উঠে এসেছে ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের ফ্যাসিস্ট সরকারের গুম, খুন, নির্যাতন ও নিপীড়নের চিত্র। তাতে স্পষ্ট হয়েছে দেশের জনগণকে একটি রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানের দিকে ঠেলে দেওয়ার গল্প।
২০২৪ সাল পর্যন্ত ১৬ বছরের নানা ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে পিলারে পিলারে। নামকরণ করা হয়েছে ‘ফিরে দেখা ফ্যাসিস্ট রেজিম’। একেকটি পিলারে স্থান পেয়েছে প্রতিবছরের কয়েকটি ঘটনা।
কারওয়ান বাজারে ২০০৯ সালে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের চিত্র দিয়ে এর শুরু। একে একে পিলারে ফুটে উঠেছে নিমতলী অগ্নিকাণ্ড, খালেদা জিয়াকে উচ্ছেদ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল, ফেলানী হত্যাকাণ্ড, শেয়ারবাজারে ধস, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড, বিশ্বজিৎ দাস হত্যা প্রভৃতি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন ড. আজহারুল ইসলাম শেখ বলেন, ‘শিল্পকলা প্রতিবাদের একটি মাধ্যম হিসেবে এই অভ্যুত্থানে উপস্থাপিত হয়েছে, এটি নতুন একটি দিক। ছেলে-মেয়েরা গ্রাফিতি এঁকে প্রতিবাদ জানিয়েছে। এখনো গ্রাফিতি আঁকা চলছে। শিল্পীর মনেও প্রতিবাদ থাকে, শিল্পের মাধ্যমে তিনি তা ফুটিয়ে তোলেন।’
গ্রাফিতিতে ফুটে উঠেছে ইলিয়াস আলীকে গুম করার ঘটনাও। রয়েছে রানা প্লাজা ধস, শাপলা চত্বর হত্যাকাণ্ড, তনু ধর্ষণের ঘটনা, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে আন্দোলন, নাসিরনগরে হামলা, হলি আর্টিজানে হামলাসহ নানা কিছু। রাতের ভোট, কোটা সংস্কার আন্দোলন, সুবর্ণচরে নারী ধর্ষণ, একরামুল হত্যাকাণ্ড, নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, খালেদা জিয়ার কারাবরণ, আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডও তুলে ধরা হয়েছে গ্রাফিতিগুলোতে। আছে মেজর সিনহা রাশেদ খান হত্যা, মুজিব বর্ষে বিপুল ব্যয়, কোভিড অব্যবস্থাপনা, বাঁশখালী বিদ্যুৎকেন্দ্রে শ্রমিক হত্যা, লেখক মুশতাক আহমেদ হত্যাকাণ্ড, বায়তুল মোকাররমে মুসল্লিদের ওপর হামলার চিত্র। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ সংকট, বিদ্যুৎ-বিভ্রাট, জ্বালানি সংকট, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা, লাগামহীন বাজারদরও উঠে এসেছে এতে। আর সবশেষ তুলে ধরা হয়েছে জুলাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান এবং ফ্যাসিবাদের পতন।
বর্ণিল এসব চিত্রকর্ম নগরের সৌন্দর্যও বাড়িয়েছে। কারণ শহরের প্রধান প্রধান সড়কসহ অলিগলির সব দেয়াল যেখানে নানা পোস্টারে কদর্য, সেখানে এই গ্রাফিতিগুলো নগরবাসীর চোখে ও মনে স্বস্তি এনে দিচ্ছে। এগুলো এঁকেছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার শিক্ষার্থীরা।
দেয়ালে এমন চিত্রশিল্পের মাধ্যমে জঘন্য অতীতকে তুলে ধরার বিষয়টি অভিনব লেগেছে নগরবাসী-পথচারীদের কাছেও। বেসরকারি চাকরিজীবী আনিসুর রহমান চা খাচ্ছিলেন কারওয়ান বাজারের একটি দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে। গ্রাফিতি নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা হয়। বললেন, আইডিয়াটা ভালো। হাঁটতে হাঁটতে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলনামা দেখা যায়।
গণ-অভ্যুত্থানের ইতিহাস তুলে ধরে ঢাকা মেট্রোরেলের পিলারে গ্রাফিতি আঁকার ধারণাটি ছিল স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার। বাস্তবায়ন করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। গত আগস্টে উদ্বোধন করা হয় এই আয়োজনের। তখন উপদেষ্টা বলছিলেন, ‘এই গ্রাফিতিগুলো আওয়ামী স্বৈরশাসনের ভয়াল দিনগুলো এবং জনগণের সাহসী প্রতিরোধের ইতিহাস বারবার আমাদের স্মরণ করিয়ে দেবে। ভবিষ্যতে এ দেশে যেন আর কোনো স্বৈরাচার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, সে লক্ষ্যে এসব গ্রাফিতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
এ ছাড়া শাহবাগে জাতীয় জাদুঘর থেকে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (সাবেক পিজি হাসপাতাল) পর্যন্ত বাংলাদেশ ও অভ্যুত্থান নিয়ে গ্রাফিতি এঁকেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল। সেগুলোতে দেখা গেছে ছাত্রদের এক দফার কথা, সবার আগে বাংলাদেশ স্লোগান, কোটা সংস্কার আন্দোলন, রক্তে আগুন লেগেছে স্লোগান, পুলিশি নির্যাতন ইত্যাদি। আবার পিজি হাসপাতাল থেকে শুরু হয়েছে ‘চূড়ান্ত লড়াইয়ের দিনগুলো’ শিরোনামে আরেকটি গ্রাফিতি শিল্প। এটি শেষ হয়েছে পরীবাগে। সেখানেও তুলে ধরা হয়েছে ফ্যাসিস্ট সরকারের নানা অপকর্ম এবং অভ্যুত্থানকালীন বিভিন্ন দৃশ্যপট। রয়েছে রিকশাচালকের দেওয়া সেই জনপ্রিয় স্যালুট, আন্দোলনরত ছাত্র-জনতা, রিকশায় শহীদ গোলাম নাফিজের লাশ প্রভৃতি। এর বাইরে ফ্লাইওভারের সাত রাস্তা থেকে মগবাজারের দিকের পিলারগুলোও রঙিন হয়েছে নিষ্ঠুর ঘটনার চিত্রে।
বিগত ফ্যাসিবাদী শাসনামলের নিষ্ঠুর থেকে নিষ্ঠুরতম সব ঘটনা ও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সাক্ষী একেকটি পিলার। রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র কারওয়ান বাজার থেকে ফার্মগেটে মেট্রোরেলের পিলারগুলোতে (স্তম্ভ) ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এসব ঘটনা।
কারওয়ান বাজার স্টেশনের পিলার দিয়ে এই গ্রাফিতির শুরু। ফার্মগেট পদচারী-সেতুর কাছের পিলার পর্যন্ত উঠে এসেছে ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের ফ্যাসিস্ট সরকারের গুম, খুন, নির্যাতন ও নিপীড়নের চিত্র। তাতে স্পষ্ট হয়েছে দেশের জনগণকে একটি রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানের দিকে ঠেলে দেওয়ার গল্প।
২০২৪ সাল পর্যন্ত ১৬ বছরের নানা ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে পিলারে পিলারে। নামকরণ করা হয়েছে ‘ফিরে দেখা ফ্যাসিস্ট রেজিম’। একেকটি পিলারে স্থান পেয়েছে প্রতিবছরের কয়েকটি ঘটনা।
কারওয়ান বাজারে ২০০৯ সালে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের চিত্র দিয়ে এর শুরু। একে একে পিলারে ফুটে উঠেছে নিমতলী অগ্নিকাণ্ড, খালেদা জিয়াকে উচ্ছেদ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল, ফেলানী হত্যাকাণ্ড, শেয়ারবাজারে ধস, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড, বিশ্বজিৎ দাস হত্যা প্রভৃতি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন ড. আজহারুল ইসলাম শেখ বলেন, ‘শিল্পকলা প্রতিবাদের একটি মাধ্যম হিসেবে এই অভ্যুত্থানে উপস্থাপিত হয়েছে, এটি নতুন একটি দিক। ছেলে-মেয়েরা গ্রাফিতি এঁকে প্রতিবাদ জানিয়েছে। এখনো গ্রাফিতি আঁকা চলছে। শিল্পীর মনেও প্রতিবাদ থাকে, শিল্পের মাধ্যমে তিনি তা ফুটিয়ে তোলেন।’
গ্রাফিতিতে ফুটে উঠেছে ইলিয়াস আলীকে গুম করার ঘটনাও। রয়েছে রানা প্লাজা ধস, শাপলা চত্বর হত্যাকাণ্ড, তনু ধর্ষণের ঘটনা, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে আন্দোলন, নাসিরনগরে হামলা, হলি আর্টিজানে হামলাসহ নানা কিছু। রাতের ভোট, কোটা সংস্কার আন্দোলন, সুবর্ণচরে নারী ধর্ষণ, একরামুল হত্যাকাণ্ড, নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, খালেদা জিয়ার কারাবরণ, আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডও তুলে ধরা হয়েছে গ্রাফিতিগুলোতে। আছে মেজর সিনহা রাশেদ খান হত্যা, মুজিব বর্ষে বিপুল ব্যয়, কোভিড অব্যবস্থাপনা, বাঁশখালী বিদ্যুৎকেন্দ্রে শ্রমিক হত্যা, লেখক মুশতাক আহমেদ হত্যাকাণ্ড, বায়তুল মোকাররমে মুসল্লিদের ওপর হামলার চিত্র। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ সংকট, বিদ্যুৎ-বিভ্রাট, জ্বালানি সংকট, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা, লাগামহীন বাজারদরও উঠে এসেছে এতে। আর সবশেষ তুলে ধরা হয়েছে জুলাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান এবং ফ্যাসিবাদের পতন।
বর্ণিল এসব চিত্রকর্ম নগরের সৌন্দর্যও বাড়িয়েছে। কারণ শহরের প্রধান প্রধান সড়কসহ অলিগলির সব দেয়াল যেখানে নানা পোস্টারে কদর্য, সেখানে এই গ্রাফিতিগুলো নগরবাসীর চোখে ও মনে স্বস্তি এনে দিচ্ছে। এগুলো এঁকেছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার শিক্ষার্থীরা।
দেয়ালে এমন চিত্রশিল্পের মাধ্যমে জঘন্য অতীতকে তুলে ধরার বিষয়টি অভিনব লেগেছে নগরবাসী-পথচারীদের কাছেও। বেসরকারি চাকরিজীবী আনিসুর রহমান চা খাচ্ছিলেন কারওয়ান বাজারের একটি দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে। গ্রাফিতি নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা হয়। বললেন, আইডিয়াটা ভালো। হাঁটতে হাঁটতে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলনামা দেখা যায়।
গণ-অভ্যুত্থানের ইতিহাস তুলে ধরে ঢাকা মেট্রোরেলের পিলারে গ্রাফিতি আঁকার ধারণাটি ছিল স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার। বাস্তবায়ন করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। গত আগস্টে উদ্বোধন করা হয় এই আয়োজনের। তখন উপদেষ্টা বলছিলেন, ‘এই গ্রাফিতিগুলো আওয়ামী স্বৈরশাসনের ভয়াল দিনগুলো এবং জনগণের সাহসী প্রতিরোধের ইতিহাস বারবার আমাদের স্মরণ করিয়ে দেবে। ভবিষ্যতে এ দেশে যেন আর কোনো স্বৈরাচার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, সে লক্ষ্যে এসব গ্রাফিতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
এ ছাড়া শাহবাগে জাতীয় জাদুঘর থেকে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (সাবেক পিজি হাসপাতাল) পর্যন্ত বাংলাদেশ ও অভ্যুত্থান নিয়ে গ্রাফিতি এঁকেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল। সেগুলোতে দেখা গেছে ছাত্রদের এক দফার কথা, সবার আগে বাংলাদেশ স্লোগান, কোটা সংস্কার আন্দোলন, রক্তে আগুন লেগেছে স্লোগান, পুলিশি নির্যাতন ইত্যাদি। আবার পিজি হাসপাতাল থেকে শুরু হয়েছে ‘চূড়ান্ত লড়াইয়ের দিনগুলো’ শিরোনামে আরেকটি গ্রাফিতি শিল্প। এটি শেষ হয়েছে পরীবাগে। সেখানেও তুলে ধরা হয়েছে ফ্যাসিস্ট সরকারের নানা অপকর্ম এবং অভ্যুত্থানকালীন বিভিন্ন দৃশ্যপট। রয়েছে রিকশাচালকের দেওয়া সেই জনপ্রিয় স্যালুট, আন্দোলনরত ছাত্র-জনতা, রিকশায় শহীদ গোলাম নাফিজের লাশ প্রভৃতি। এর বাইরে ফ্লাইওভারের সাত রাস্তা থেকে মগবাজারের দিকের পিলারগুলোও রঙিন হয়েছে নিষ্ঠুর ঘটনার চিত্রে।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধের সরকারি টিকার (র্যাবিক্স-ভিসি) সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে প্রাণীর কামড় বা আঁচড়ের শিকার ব্যক্তিদের নিজের টাকায় টিকা কিনতে হচ্ছে। জানা গেছে, কেন্দ্রীয়ভাবে সরকারের কাছে মজুত টিকা চলতি মে মাসেই শেষ হচ্ছে। বেশির ভাগ জেলা-উপজেলায় স্বল্পসংখ্যক টিকা রাখা হয়েছে...
০৯ মে ২০২৫জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদল’ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বিএনপি। সেই সঙ্গে নির্বাচনকালে প্রশাসন, পুলিশ, বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে বলেছে দলটি। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক...
১ ঘণ্টা আগেজনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা হিসেবে নির্বাচনের আগে প্রশাসনের যাবতীয় রদবদল সরাসরি তাঁর তত্ত্বাবধানে হবে। নির্বাচনের আগে যোগ্যতার ভিত্তিতে কর্মকর্তাদের বাছাই করে জেলা প্রশাসক পদে যথোপযুক্ত স্থানে নিয়োগ দেওয়া হবে।
৩ ঘণ্টা আগেজুলাই অভ্যুত্থানে সারা দেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাঁর ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন আজ মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনের মতো যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেছেন।
৪ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রশাসনের যাবতীয় রদবদল প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরাসরি তাঁর তত্ত্বাবধানে হবে বলে বিএনপিকে জানিয়েছেন। একই সঙ্গে যোগ্য কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে বাছাই করে জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ দেওয়া হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেছেন।
নির্বাচনে সরকারের প্রস্তুতি নিয়ে আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বিএনপির প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনার সময় প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বৈঠকে শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষভাবে আয়োজনে যা কিছু প্রয়োজন, তা করা হবে বলে বিএনপি নেতাদের আশ্বস্ত করেন ড. ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপির নেতারা বলেন, বিতর্কিত কোনো কর্মকর্তা, বিশেষ করে, স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ শাসনামলে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করেছেন—এমন কর্মকর্তাদের নির্বাচনে দায়িত্ব পালন থেকে নিবৃত্ত রাখতে হবে।
নির্বাচনের আগে প্রশাসনে রদবদলে নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রাখার আহ্বানের পাশাপাশি পুলিশের নিয়োগ ও বদলিপ্রক্রিয়া নিয়ে কিছু পর্যবেক্ষণ প্রধান উপদেষ্টার কাছে তুলে ধরেন নেতারা।
জবাবে প্রধান উপদেষ্টা জানান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা হিসেবে নির্বাচনের আগে প্রশাসনের যাবতীয় রদবদল সরাসরি তাঁর তত্ত্বাবধানে হবে। নির্বাচনের আগে যোগ্যতার ভিত্তিতে কর্মকর্তাদের বাছাই করে জেলা প্রশাসক পদে যথোপযুক্ত স্থানে নিয়োগ দেওয়া হবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব নিরপেক্ষ থাকা। নির্বাচন একটি মহা আয়োজন। এখানে যিনি শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সক্ষম, সেই ব্যক্তিকেই আমরা বেছে নেব। এটি আমার তত্ত্বাবধানে থাকবে। নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ করার জন্য যা কিছু প্রয়োজন, আমরা তা করব।’
জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে রাজনৈতিক নেতাদের সম্পৃক্ত করায় এবং ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান সফলভাবে আয়োজন করতে পারায় সরকারকে অভিনন্দন জানায় বিএনপি।
এর পাশাপাশি সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থাপনায় একাধিক অগ্নিকাণ্ডে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা। এসব ঘটনা অন্তর্ঘাতমূলক কি না, এ বিষয়ে অনুসন্ধানেরও আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।
বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমদ। সরকারের পক্ষ থেকে ছিলেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল ও শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রশাসনের যাবতীয় রদবদল প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরাসরি তাঁর তত্ত্বাবধানে হবে বলে বিএনপিকে জানিয়েছেন। একই সঙ্গে যোগ্য কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে বাছাই করে জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ দেওয়া হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেছেন।
নির্বাচনে সরকারের প্রস্তুতি নিয়ে আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বিএনপির প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনার সময় প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বৈঠকে শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষভাবে আয়োজনে যা কিছু প্রয়োজন, তা করা হবে বলে বিএনপি নেতাদের আশ্বস্ত করেন ড. ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপির নেতারা বলেন, বিতর্কিত কোনো কর্মকর্তা, বিশেষ করে, স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ শাসনামলে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করেছেন—এমন কর্মকর্তাদের নির্বাচনে দায়িত্ব পালন থেকে নিবৃত্ত রাখতে হবে।
নির্বাচনের আগে প্রশাসনে রদবদলে নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রাখার আহ্বানের পাশাপাশি পুলিশের নিয়োগ ও বদলিপ্রক্রিয়া নিয়ে কিছু পর্যবেক্ষণ প্রধান উপদেষ্টার কাছে তুলে ধরেন নেতারা।
জবাবে প্রধান উপদেষ্টা জানান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা হিসেবে নির্বাচনের আগে প্রশাসনের যাবতীয় রদবদল সরাসরি তাঁর তত্ত্বাবধানে হবে। নির্বাচনের আগে যোগ্যতার ভিত্তিতে কর্মকর্তাদের বাছাই করে জেলা প্রশাসক পদে যথোপযুক্ত স্থানে নিয়োগ দেওয়া হবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব নিরপেক্ষ থাকা। নির্বাচন একটি মহা আয়োজন। এখানে যিনি শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সক্ষম, সেই ব্যক্তিকেই আমরা বেছে নেব। এটি আমার তত্ত্বাবধানে থাকবে। নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ করার জন্য যা কিছু প্রয়োজন, আমরা তা করব।’
জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে রাজনৈতিক নেতাদের সম্পৃক্ত করায় এবং ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান সফলভাবে আয়োজন করতে পারায় সরকারকে অভিনন্দন জানায় বিএনপি।
এর পাশাপাশি সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থাপনায় একাধিক অগ্নিকাণ্ডে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা। এসব ঘটনা অন্তর্ঘাতমূলক কি না, এ বিষয়ে অনুসন্ধানেরও আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।
বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমদ। সরকারের পক্ষ থেকে ছিলেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল ও শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধের সরকারি টিকার (র্যাবিক্স-ভিসি) সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে প্রাণীর কামড় বা আঁচড়ের শিকার ব্যক্তিদের নিজের টাকায় টিকা কিনতে হচ্ছে। জানা গেছে, কেন্দ্রীয়ভাবে সরকারের কাছে মজুত টিকা চলতি মে মাসেই শেষ হচ্ছে। বেশির ভাগ জেলা-উপজেলায় স্বল্পসংখ্যক টিকা রাখা হয়েছে...
০৯ মে ২০২৫জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদল’ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বিএনপি। সেই সঙ্গে নির্বাচনকালে প্রশাসন, পুলিশ, বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে বলেছে দলটি। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক...
১ ঘণ্টা আগেবিগত ফ্যাসিবাদী শাসনামলের নিষ্ঠুর থেকে নিষ্ঠুরতম সব ঘটনা ও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সাক্ষী একেকটি পিলার। রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র কারওয়ান বাজার থেকে ফার্মগেটে মেট্রোরেলের পিলারগুলোতে (স্তম্ভ) ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এসব ঘটনা।
১ ঘণ্টা আগেজুলাই অভ্যুত্থানে সারা দেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাঁর ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন আজ মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনের মতো যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেছেন।
৪ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
জুলাই অভ্যুত্থানে সারা দেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাঁর ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন আজ মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনের মতো যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, শেখ হাসিনা ছাত্র-জনতাকে হত্যার নির্দেশ দেননি। কল রেকর্ড অন্য কাউকে দিয়ে ক্রস চেক করালে ভালো হতো।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ আসামিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন চলছে। এই মামলার অপর আসামি পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন রাজসাক্ষী হয়ে জবানবন্দি দিয়েছেন।
যুক্তিতর্ক উপস্থাপনকালে আমির হোসেন বলেন, শেখ হাসিনা আন্দোলন প্রতিহত করতে বলেছেন। ছাত্র-জনতাকে হত্যার নির্দেশ দেননি। ডিএমপি কমিশনারকে ওয়্যারলেস বার্তায় বলতে শোনা গেছে, পরিস্থিতি তৈরি হলে হাঁটু গেড়ে বসে গুলি করতে। যদি কোনো পুলিশ অতি উৎসাহী হয়ে গুলি করে হত্যা করে থাকেন, তাহলে সে দায় তাঁর ব্যক্তিগত। কারোর ব্যক্তিগত দায় শেখ হাসিনা নেবেন না। ড্রোন ব্যবহার করে হত্যা করলে হাজার হাজার মানুষ মারা যেত। সেটা তো হয়নি। তবে আন্দোলন দমন করতে গিয়ে কিছু মারা গেছে এটা সত্য। ড্রোন ব্যবহার করে ছাত্র-জনতাকে মারার কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। হেলিকপ্টার থেকে গুলিতে কেউ মারা গেছে, এটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এ পর্যায়ে ট্রাইব্যুনাল বলেন, সাক্ষী বলেছেন ওপর থেকে গুলি করেছে। শিশু ঘরে থেকে মারা গেছে। আমির হোসেন বলেন, ১০ তলা থেকেও তো কেউ গুলি করতে পারে। প্রধানমন্ত্রী তো বলেননি অমুক শিশুকে হেলিকপ্টার থেকে গুলি করো। ট্রাইব্যুনাল বলেন, লেথাল উইপেন ব্যবহার করতে নির্দেশ দেওয়ার কল রেকর্ড ফরেনসিক করে উপস্থাপন করা হয়েছে। আমির হোসেন বলেন, এই কল রেকর্ড আরও একটি সমপর্যায়ের পরীক্ষা করা উচিত ছিল। ট্রাইব্যুনাল বলেন, সেটি প্রয়োজন না হলে কেন করবে? রিপোর্ট ঠিক নেই তা আপনি কীভাবে প্রমাণ করবেন? আমির হোসেন বলেন, অন্য কাউকে দিয়ে ক্রস চেক করালে ভালো হতো। ট্রাইব্যুনাল বলেন, আপনি যদি বলেন যন্ত্রপাতি ঠিক ছিল না, তাহলে আমরা দেখব।
শুনানির একপর্যায়ে ট্রাইব্যুনাল আমির হোসেনের কাছে জানতে চান, লেথাল উইপেন ব্যবহারে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার বিষয়টি তিনি স্বীকার করেন কি না? আমির হোসেন জবাবে বলেন, তিনি ওই অডিও সন্দেহের ঊর্ধ্বে মনে করেন না। আবু সাঈদের মৃত্যুর বিষয়ে যা বলা হয়েছে তার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন তিনি। তিনি বলেন, প্রসিকিউশন অভিযোগ করেছে, শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের প্ররোচনায় পুলিশ গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা করেছে। অথচ ট্রাইব্যুনালে কোনো সাক্ষীর বর্ণনায় এমন কোনো বক্তব্য আসেনি। ষড়যন্ত্রমূলক পরিকল্পনার যে অভিযোগ, তা সঠিক নয়।
আমির হোসেন আরও বলেন, প্রসিকিউশন বলেছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসায় প্রতি রাতে কোর কমিটির বৈঠকে হয়েছে। আমার বক্তব্য হচ্ছে, কোর কমিটির বৈঠক হওয়া কোনো অপরাধ নয়। দেশে সৃষ্ট হওয়া অস্থিতিশীল পরিস্থিতি কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, সে বিষয়ে কোর কমিটির বৈঠকে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া একটি বৈধ প্রক্রিয়া ছিল।
জুলাই অভ্যুত্থানে সারা দেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাঁর ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন আজ মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনের মতো যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, শেখ হাসিনা ছাত্র-জনতাকে হত্যার নির্দেশ দেননি। কল রেকর্ড অন্য কাউকে দিয়ে ক্রস চেক করালে ভালো হতো।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ আসামিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন চলছে। এই মামলার অপর আসামি পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন রাজসাক্ষী হয়ে জবানবন্দি দিয়েছেন।
যুক্তিতর্ক উপস্থাপনকালে আমির হোসেন বলেন, শেখ হাসিনা আন্দোলন প্রতিহত করতে বলেছেন। ছাত্র-জনতাকে হত্যার নির্দেশ দেননি। ডিএমপি কমিশনারকে ওয়্যারলেস বার্তায় বলতে শোনা গেছে, পরিস্থিতি তৈরি হলে হাঁটু গেড়ে বসে গুলি করতে। যদি কোনো পুলিশ অতি উৎসাহী হয়ে গুলি করে হত্যা করে থাকেন, তাহলে সে দায় তাঁর ব্যক্তিগত। কারোর ব্যক্তিগত দায় শেখ হাসিনা নেবেন না। ড্রোন ব্যবহার করে হত্যা করলে হাজার হাজার মানুষ মারা যেত। সেটা তো হয়নি। তবে আন্দোলন দমন করতে গিয়ে কিছু মারা গেছে এটা সত্য। ড্রোন ব্যবহার করে ছাত্র-জনতাকে মারার কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। হেলিকপ্টার থেকে গুলিতে কেউ মারা গেছে, এটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এ পর্যায়ে ট্রাইব্যুনাল বলেন, সাক্ষী বলেছেন ওপর থেকে গুলি করেছে। শিশু ঘরে থেকে মারা গেছে। আমির হোসেন বলেন, ১০ তলা থেকেও তো কেউ গুলি করতে পারে। প্রধানমন্ত্রী তো বলেননি অমুক শিশুকে হেলিকপ্টার থেকে গুলি করো। ট্রাইব্যুনাল বলেন, লেথাল উইপেন ব্যবহার করতে নির্দেশ দেওয়ার কল রেকর্ড ফরেনসিক করে উপস্থাপন করা হয়েছে। আমির হোসেন বলেন, এই কল রেকর্ড আরও একটি সমপর্যায়ের পরীক্ষা করা উচিত ছিল। ট্রাইব্যুনাল বলেন, সেটি প্রয়োজন না হলে কেন করবে? রিপোর্ট ঠিক নেই তা আপনি কীভাবে প্রমাণ করবেন? আমির হোসেন বলেন, অন্য কাউকে দিয়ে ক্রস চেক করালে ভালো হতো। ট্রাইব্যুনাল বলেন, আপনি যদি বলেন যন্ত্রপাতি ঠিক ছিল না, তাহলে আমরা দেখব।
শুনানির একপর্যায়ে ট্রাইব্যুনাল আমির হোসেনের কাছে জানতে চান, লেথাল উইপেন ব্যবহারে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার বিষয়টি তিনি স্বীকার করেন কি না? আমির হোসেন জবাবে বলেন, তিনি ওই অডিও সন্দেহের ঊর্ধ্বে মনে করেন না। আবু সাঈদের মৃত্যুর বিষয়ে যা বলা হয়েছে তার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন তিনি। তিনি বলেন, প্রসিকিউশন অভিযোগ করেছে, শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের প্ররোচনায় পুলিশ গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা করেছে। অথচ ট্রাইব্যুনালে কোনো সাক্ষীর বর্ণনায় এমন কোনো বক্তব্য আসেনি। ষড়যন্ত্রমূলক পরিকল্পনার যে অভিযোগ, তা সঠিক নয়।
আমির হোসেন আরও বলেন, প্রসিকিউশন বলেছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসায় প্রতি রাতে কোর কমিটির বৈঠকে হয়েছে। আমার বক্তব্য হচ্ছে, কোর কমিটির বৈঠক হওয়া কোনো অপরাধ নয়। দেশে সৃষ্ট হওয়া অস্থিতিশীল পরিস্থিতি কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, সে বিষয়ে কোর কমিটির বৈঠকে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া একটি বৈধ প্রক্রিয়া ছিল।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধের সরকারি টিকার (র্যাবিক্স-ভিসি) সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে প্রাণীর কামড় বা আঁচড়ের শিকার ব্যক্তিদের নিজের টাকায় টিকা কিনতে হচ্ছে। জানা গেছে, কেন্দ্রীয়ভাবে সরকারের কাছে মজুত টিকা চলতি মে মাসেই শেষ হচ্ছে। বেশির ভাগ জেলা-উপজেলায় স্বল্পসংখ্যক টিকা রাখা হয়েছে...
০৯ মে ২০২৫জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদল’ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বিএনপি। সেই সঙ্গে নির্বাচনকালে প্রশাসন, পুলিশ, বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে বলেছে দলটি। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক...
১ ঘণ্টা আগেবিগত ফ্যাসিবাদী শাসনামলের নিষ্ঠুর থেকে নিষ্ঠুরতম সব ঘটনা ও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সাক্ষী একেকটি পিলার। রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র কারওয়ান বাজার থেকে ফার্মগেটে মেট্রোরেলের পিলারগুলোতে (স্তম্ভ) ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এসব ঘটনা।
১ ঘণ্টা আগেজনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা হিসেবে নির্বাচনের আগে প্রশাসনের যাবতীয় রদবদল সরাসরি তাঁর তত্ত্বাবধানে হবে। নির্বাচনের আগে যোগ্যতার ভিত্তিতে কর্মকর্তাদের বাছাই করে জেলা প্রশাসক পদে যথোপযুক্ত স্থানে নিয়োগ দেওয়া হবে।
৩ ঘণ্টা আগে