রেজা করিম, ঢাকা

রাষ্ট্র সংস্কারে অগ্রাধিকার দেওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর নির্বাচনের জন্য চাপ বাড়ছে। বিএনপি শুরুতে সরকারকে যৌক্তিক সময় দেওয়ার কথা বললেও এখন দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ চাইছে। সমমনা কয়েকটি দলও একই দাবি জানাচ্ছে। জামায়াতে ইসলামী সংস্কারে গুরুত্ব দিলেও বিলম্বিত নির্বাচন চায় না।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, দু-একটি ঘটনায় বিএনপি ও সমমনা কয়েকটি দলের অবস্থানের বদল হয়েছে। এর একটি রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের উদ্যোগ। বিএনপি এর বিরুদ্ধে অবস্থান স্পষ্ট করেছে। দলটির কোনো কোনো নেতা বলেছেন, এতে রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সংকট তৈরি হবে এবং নির্বাচন বিলম্বিত হবে। তাই নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করলে রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি জনগণের মধ্যেও আশ্বাস তৈরি হবে।
নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার চাপের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার এমন আশ্বাস তৈরির পদক্ষেপ হিসেবে গত মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য দুই বিচারপতির সমন্বয়ে একটি সার্চ কমিটি করেছে। একই দিন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেছেন, সরকার নির্বাচনের পথে অগ্রসর হচ্ছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা ভারতে চলে যান। অবসান ঘটে আওয়ামী লীগের টানা ১৫ বছরের শাসনের। ৮ আগস্ট শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে শপথ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে সরকার রাষ্ট্র সংস্কারে বেশ কয়েকটি কমিশন গঠন করেছে। চলতি বছরের মধ্যেই কমিশনগুলোর প্রতিবেদন দেওয়ার কথা। এরপর রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে সবার পরামর্শের ভিত্তিতে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করবে।
বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল অন্তর্বর্তী সরকারের এই উদ্যোগে সমর্থন দেয়। তবে বিএনপি শুরু থেকেই সরকারকে সংস্কার ও নির্বাচনের জন্য যৌক্তিক সময় দেওয়ার কথা বলে আসছে। তবে জামায়াতের অবস্থান কিছুটা ভিন্ন, দলটি সংস্কারের ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। তবে কবে নাগাদ নির্বাচন হতে পারে সে নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আভাস দেওয়া হয়নি।
সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান এক সাক্ষাৎকারে বলেন, গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার সম্পন্ন করে অন্তর্বর্তী সরকারকে ১৮ মাসের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের জন্য সেনাবাহিনীর পূর্ণ সহযোগিতা থাকবে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব এটিকে সেনাপ্রধানের ‘ব্যক্তিগত মত’ বলে উল্লেখ করেন।
এর পর থেকে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা ডালপালা মেলে। সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির রাষ্ট্রপতির অপসারণ দাবি করলে বিএনপি এতে আপত্তি তোলে। দলটি বলছে, রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ করলে সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক সংকট তৈরি হবে। এতে নির্বাচন বিলম্বিত হবে। ছাত্র নেতৃত্ব ও জাতীয় নাগরিক কমিটি তাদের দাবির বিষয়ে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করেছে। তবে বিএনপির অবস্থান বদলায়নি। এর পর থেকেই দলটি নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জোরালো করে।
সরকারের সংস্কার উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও বিএনপি মনে করে, শুধু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারই যথেষ্ট। দলটি বলছে, জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় এলে অন্য সংস্কারগুলো করা সম্ভব হবে। সাংবিধানিক বিধান এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিষয়ে তাড়াহুড়ো না করে সাবধানতার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিতে সরকারকে পরামর্শও দিয়েছে বিএনপি। এই অবস্থান থেকেই দলটি রাষ্ট্রপতির অপসারণের দাবির বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে এবং দ্রুত নির্বাচনের তাগিদ দিচ্ছে বলে জানান বিএনপির নেতারা।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল বুধবার রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর তাঁদের আস্থা রয়েছে এবং এই সরকার দ্রুত একটি নির্বাচন আয়োজন করবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। তিনি বলেন, ‘সরকার সময়ের সদ্ব্যবহার করবে বলে আশা করি। অন্য বিষয়গুলো এড়িয়ে নজর ইলেকশনের দিকে রাখলেই হবে—এটার কোনো বিকল্প নেই।’
বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির নেতারা গতকাল গণফোরাম, গণঅধিকার পরিষদের একাংশ ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের (এনডিএম) নেতাদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন। বৈঠক সূত্র বলেছে, বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত পৃথক এসব বৈঠকে ওই তিন দলের নেতারাও প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত নির্বাচনের দিকে যাওয়ার বিষয়ে বিএনপির সঙ্গে একমত হয়েছে। তাঁরা রাষ্ট্রপতির অপসারণ নিয়ে বিএনপির অবস্থানের সঙ্গেও একমত পোষণ করেন।
বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু উপস্থিত ছিলেন।
গণফোরামের চেয়ারম্যান মোস্তফা মোহসীন মন্টু, কো-চেয়ারম্যান সুব্রত চৌধুরী; গণঅধিকার পরিষদের একাংশের আহ্বায়ক মিয়া মসিউজ্জামান, সদস্যসচিব ফারুক হাসান এবং এনডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, মহাসচিব মোমিনুল আমিনসহ দলগুলোর শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
রাজনৈতিক কয়েকজন বিশ্লেষকও নির্বাচনকে অগ্রাধিকার দিয়ে শুধু প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো সম্পন্ন করার পরামর্শ দিচ্ছেন। তাঁরা বলেছেন, দ্রুত রোডম্যাপ ঘোষণা ও নির্বাচন সম্পর্কিত সংস্কার সম্পন্ন করার মাধ্যমে সরকার জনগণকে আশ্বস্ত করতে পারে। নির্বাচন বিলম্বিত হলে সংকট গভীর হবে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, শুধু রাজনৈতিক দলগুলো নয়, জনগণও নির্বাচন চায়। এ অবস্থায় রোডম্যাপ ঘোষণা করা হলে দলগুলো আশ্বস্ত হবে এবং দেরি হলে পরিস্থিতি জটিল হতে পারে।
বিএনপির সমমনা দলগুলোর পাশাপাশি আরও কিছু রাজনৈতিক দল দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। নির্বাচন বিলম্বিত হলে সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠবে বলে মনে করেন বিএনপির সমমনা দল বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। তিনি দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। তাঁর মতে, ২০২৫ সালের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠান করা সম্ভব। তবে এর আগে পুরো নির্বাচনীব্যবস্থার সংস্কার করতে হবে।
বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে না থাকা কিছু দলও দ্রুত নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে একমত। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টার বক্তব্যকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেন, ‘আশা করছি সরকারের কথা ও কাজের মিল থাকবে। প্রত্যাশা থাকবে নির্বাচন কমিশন গঠনের পর দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকার নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করবে।’
জামায়াত সংস্কারে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। এদিক থেকে বিএনপির সঙ্গে দলটির অবস্থানের কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে। জামায়াত যৌক্তিক সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলছে। তবে বিলম্বিত নির্বাচন চায় না। জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, ‘আমরাও নির্বাচন চাই। গত ১৫ বছর জনগণ ভোট দিতে পারেনি। সামনে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য পরিবেশ তৈরি করা জরুরি। আমরা সংস্কারে গুরুত্ব দিচ্ছি, কিন্তু তাই বলে নির্বাচন বিলম্বিত হোক, তা চাই না।’

রাষ্ট্র সংস্কারে অগ্রাধিকার দেওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর নির্বাচনের জন্য চাপ বাড়ছে। বিএনপি শুরুতে সরকারকে যৌক্তিক সময় দেওয়ার কথা বললেও এখন দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ চাইছে। সমমনা কয়েকটি দলও একই দাবি জানাচ্ছে। জামায়াতে ইসলামী সংস্কারে গুরুত্ব দিলেও বিলম্বিত নির্বাচন চায় না।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, দু-একটি ঘটনায় বিএনপি ও সমমনা কয়েকটি দলের অবস্থানের বদল হয়েছে। এর একটি রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের উদ্যোগ। বিএনপি এর বিরুদ্ধে অবস্থান স্পষ্ট করেছে। দলটির কোনো কোনো নেতা বলেছেন, এতে রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সংকট তৈরি হবে এবং নির্বাচন বিলম্বিত হবে। তাই নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করলে রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি জনগণের মধ্যেও আশ্বাস তৈরি হবে।
নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার চাপের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার এমন আশ্বাস তৈরির পদক্ষেপ হিসেবে গত মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য দুই বিচারপতির সমন্বয়ে একটি সার্চ কমিটি করেছে। একই দিন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেছেন, সরকার নির্বাচনের পথে অগ্রসর হচ্ছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা ভারতে চলে যান। অবসান ঘটে আওয়ামী লীগের টানা ১৫ বছরের শাসনের। ৮ আগস্ট শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে শপথ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে সরকার রাষ্ট্র সংস্কারে বেশ কয়েকটি কমিশন গঠন করেছে। চলতি বছরের মধ্যেই কমিশনগুলোর প্রতিবেদন দেওয়ার কথা। এরপর রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে সবার পরামর্শের ভিত্তিতে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করবে।
বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল অন্তর্বর্তী সরকারের এই উদ্যোগে সমর্থন দেয়। তবে বিএনপি শুরু থেকেই সরকারকে সংস্কার ও নির্বাচনের জন্য যৌক্তিক সময় দেওয়ার কথা বলে আসছে। তবে জামায়াতের অবস্থান কিছুটা ভিন্ন, দলটি সংস্কারের ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। তবে কবে নাগাদ নির্বাচন হতে পারে সে নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আভাস দেওয়া হয়নি।
সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান এক সাক্ষাৎকারে বলেন, গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার সম্পন্ন করে অন্তর্বর্তী সরকারকে ১৮ মাসের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের জন্য সেনাবাহিনীর পূর্ণ সহযোগিতা থাকবে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব এটিকে সেনাপ্রধানের ‘ব্যক্তিগত মত’ বলে উল্লেখ করেন।
এর পর থেকে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা ডালপালা মেলে। সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির রাষ্ট্রপতির অপসারণ দাবি করলে বিএনপি এতে আপত্তি তোলে। দলটি বলছে, রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ করলে সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক সংকট তৈরি হবে। এতে নির্বাচন বিলম্বিত হবে। ছাত্র নেতৃত্ব ও জাতীয় নাগরিক কমিটি তাদের দাবির বিষয়ে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করেছে। তবে বিএনপির অবস্থান বদলায়নি। এর পর থেকেই দলটি নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জোরালো করে।
সরকারের সংস্কার উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও বিএনপি মনে করে, শুধু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারই যথেষ্ট। দলটি বলছে, জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় এলে অন্য সংস্কারগুলো করা সম্ভব হবে। সাংবিধানিক বিধান এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিষয়ে তাড়াহুড়ো না করে সাবধানতার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিতে সরকারকে পরামর্শও দিয়েছে বিএনপি। এই অবস্থান থেকেই দলটি রাষ্ট্রপতির অপসারণের দাবির বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে এবং দ্রুত নির্বাচনের তাগিদ দিচ্ছে বলে জানান বিএনপির নেতারা।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল বুধবার রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর তাঁদের আস্থা রয়েছে এবং এই সরকার দ্রুত একটি নির্বাচন আয়োজন করবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। তিনি বলেন, ‘সরকার সময়ের সদ্ব্যবহার করবে বলে আশা করি। অন্য বিষয়গুলো এড়িয়ে নজর ইলেকশনের দিকে রাখলেই হবে—এটার কোনো বিকল্প নেই।’
বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির নেতারা গতকাল গণফোরাম, গণঅধিকার পরিষদের একাংশ ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের (এনডিএম) নেতাদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন। বৈঠক সূত্র বলেছে, বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত পৃথক এসব বৈঠকে ওই তিন দলের নেতারাও প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত নির্বাচনের দিকে যাওয়ার বিষয়ে বিএনপির সঙ্গে একমত হয়েছে। তাঁরা রাষ্ট্রপতির অপসারণ নিয়ে বিএনপির অবস্থানের সঙ্গেও একমত পোষণ করেন।
বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু উপস্থিত ছিলেন।
গণফোরামের চেয়ারম্যান মোস্তফা মোহসীন মন্টু, কো-চেয়ারম্যান সুব্রত চৌধুরী; গণঅধিকার পরিষদের একাংশের আহ্বায়ক মিয়া মসিউজ্জামান, সদস্যসচিব ফারুক হাসান এবং এনডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, মহাসচিব মোমিনুল আমিনসহ দলগুলোর শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
রাজনৈতিক কয়েকজন বিশ্লেষকও নির্বাচনকে অগ্রাধিকার দিয়ে শুধু প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো সম্পন্ন করার পরামর্শ দিচ্ছেন। তাঁরা বলেছেন, দ্রুত রোডম্যাপ ঘোষণা ও নির্বাচন সম্পর্কিত সংস্কার সম্পন্ন করার মাধ্যমে সরকার জনগণকে আশ্বস্ত করতে পারে। নির্বাচন বিলম্বিত হলে সংকট গভীর হবে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, শুধু রাজনৈতিক দলগুলো নয়, জনগণও নির্বাচন চায়। এ অবস্থায় রোডম্যাপ ঘোষণা করা হলে দলগুলো আশ্বস্ত হবে এবং দেরি হলে পরিস্থিতি জটিল হতে পারে।
বিএনপির সমমনা দলগুলোর পাশাপাশি আরও কিছু রাজনৈতিক দল দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। নির্বাচন বিলম্বিত হলে সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠবে বলে মনে করেন বিএনপির সমমনা দল বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। তিনি দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। তাঁর মতে, ২০২৫ সালের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠান করা সম্ভব। তবে এর আগে পুরো নির্বাচনীব্যবস্থার সংস্কার করতে হবে।
বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে না থাকা কিছু দলও দ্রুত নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে একমত। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টার বক্তব্যকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেন, ‘আশা করছি সরকারের কথা ও কাজের মিল থাকবে। প্রত্যাশা থাকবে নির্বাচন কমিশন গঠনের পর দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকার নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করবে।’
জামায়াত সংস্কারে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। এদিক থেকে বিএনপির সঙ্গে দলটির অবস্থানের কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে। জামায়াত যৌক্তিক সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলছে। তবে বিলম্বিত নির্বাচন চায় না। জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, ‘আমরাও নির্বাচন চাই। গত ১৫ বছর জনগণ ভোট দিতে পারেনি। সামনে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য পরিবেশ তৈরি করা জরুরি। আমরা সংস্কারে গুরুত্ব দিচ্ছি, কিন্তু তাই বলে নির্বাচন বিলম্বিত হোক, তা চাই না।’
রেজা করিম, ঢাকা

রাষ্ট্র সংস্কারে অগ্রাধিকার দেওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর নির্বাচনের জন্য চাপ বাড়ছে। বিএনপি শুরুতে সরকারকে যৌক্তিক সময় দেওয়ার কথা বললেও এখন দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ চাইছে। সমমনা কয়েকটি দলও একই দাবি জানাচ্ছে। জামায়াতে ইসলামী সংস্কারে গুরুত্ব দিলেও বিলম্বিত নির্বাচন চায় না।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, দু-একটি ঘটনায় বিএনপি ও সমমনা কয়েকটি দলের অবস্থানের বদল হয়েছে। এর একটি রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের উদ্যোগ। বিএনপি এর বিরুদ্ধে অবস্থান স্পষ্ট করেছে। দলটির কোনো কোনো নেতা বলেছেন, এতে রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সংকট তৈরি হবে এবং নির্বাচন বিলম্বিত হবে। তাই নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করলে রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি জনগণের মধ্যেও আশ্বাস তৈরি হবে।
নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার চাপের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার এমন আশ্বাস তৈরির পদক্ষেপ হিসেবে গত মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য দুই বিচারপতির সমন্বয়ে একটি সার্চ কমিটি করেছে। একই দিন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেছেন, সরকার নির্বাচনের পথে অগ্রসর হচ্ছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা ভারতে চলে যান। অবসান ঘটে আওয়ামী লীগের টানা ১৫ বছরের শাসনের। ৮ আগস্ট শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে শপথ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে সরকার রাষ্ট্র সংস্কারে বেশ কয়েকটি কমিশন গঠন করেছে। চলতি বছরের মধ্যেই কমিশনগুলোর প্রতিবেদন দেওয়ার কথা। এরপর রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে সবার পরামর্শের ভিত্তিতে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করবে।
বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল অন্তর্বর্তী সরকারের এই উদ্যোগে সমর্থন দেয়। তবে বিএনপি শুরু থেকেই সরকারকে সংস্কার ও নির্বাচনের জন্য যৌক্তিক সময় দেওয়ার কথা বলে আসছে। তবে জামায়াতের অবস্থান কিছুটা ভিন্ন, দলটি সংস্কারের ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। তবে কবে নাগাদ নির্বাচন হতে পারে সে নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আভাস দেওয়া হয়নি।
সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান এক সাক্ষাৎকারে বলেন, গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার সম্পন্ন করে অন্তর্বর্তী সরকারকে ১৮ মাসের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের জন্য সেনাবাহিনীর পূর্ণ সহযোগিতা থাকবে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব এটিকে সেনাপ্রধানের ‘ব্যক্তিগত মত’ বলে উল্লেখ করেন।
এর পর থেকে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা ডালপালা মেলে। সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির রাষ্ট্রপতির অপসারণ দাবি করলে বিএনপি এতে আপত্তি তোলে। দলটি বলছে, রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ করলে সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক সংকট তৈরি হবে। এতে নির্বাচন বিলম্বিত হবে। ছাত্র নেতৃত্ব ও জাতীয় নাগরিক কমিটি তাদের দাবির বিষয়ে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করেছে। তবে বিএনপির অবস্থান বদলায়নি। এর পর থেকেই দলটি নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জোরালো করে।
সরকারের সংস্কার উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও বিএনপি মনে করে, শুধু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারই যথেষ্ট। দলটি বলছে, জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় এলে অন্য সংস্কারগুলো করা সম্ভব হবে। সাংবিধানিক বিধান এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিষয়ে তাড়াহুড়ো না করে সাবধানতার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিতে সরকারকে পরামর্শও দিয়েছে বিএনপি। এই অবস্থান থেকেই দলটি রাষ্ট্রপতির অপসারণের দাবির বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে এবং দ্রুত নির্বাচনের তাগিদ দিচ্ছে বলে জানান বিএনপির নেতারা।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল বুধবার রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর তাঁদের আস্থা রয়েছে এবং এই সরকার দ্রুত একটি নির্বাচন আয়োজন করবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। তিনি বলেন, ‘সরকার সময়ের সদ্ব্যবহার করবে বলে আশা করি। অন্য বিষয়গুলো এড়িয়ে নজর ইলেকশনের দিকে রাখলেই হবে—এটার কোনো বিকল্প নেই।’
বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির নেতারা গতকাল গণফোরাম, গণঅধিকার পরিষদের একাংশ ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের (এনডিএম) নেতাদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন। বৈঠক সূত্র বলেছে, বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত পৃথক এসব বৈঠকে ওই তিন দলের নেতারাও প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত নির্বাচনের দিকে যাওয়ার বিষয়ে বিএনপির সঙ্গে একমত হয়েছে। তাঁরা রাষ্ট্রপতির অপসারণ নিয়ে বিএনপির অবস্থানের সঙ্গেও একমত পোষণ করেন।
বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু উপস্থিত ছিলেন।
গণফোরামের চেয়ারম্যান মোস্তফা মোহসীন মন্টু, কো-চেয়ারম্যান সুব্রত চৌধুরী; গণঅধিকার পরিষদের একাংশের আহ্বায়ক মিয়া মসিউজ্জামান, সদস্যসচিব ফারুক হাসান এবং এনডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, মহাসচিব মোমিনুল আমিনসহ দলগুলোর শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
রাজনৈতিক কয়েকজন বিশ্লেষকও নির্বাচনকে অগ্রাধিকার দিয়ে শুধু প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো সম্পন্ন করার পরামর্শ দিচ্ছেন। তাঁরা বলেছেন, দ্রুত রোডম্যাপ ঘোষণা ও নির্বাচন সম্পর্কিত সংস্কার সম্পন্ন করার মাধ্যমে সরকার জনগণকে আশ্বস্ত করতে পারে। নির্বাচন বিলম্বিত হলে সংকট গভীর হবে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, শুধু রাজনৈতিক দলগুলো নয়, জনগণও নির্বাচন চায়। এ অবস্থায় রোডম্যাপ ঘোষণা করা হলে দলগুলো আশ্বস্ত হবে এবং দেরি হলে পরিস্থিতি জটিল হতে পারে।
বিএনপির সমমনা দলগুলোর পাশাপাশি আরও কিছু রাজনৈতিক দল দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। নির্বাচন বিলম্বিত হলে সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠবে বলে মনে করেন বিএনপির সমমনা দল বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। তিনি দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। তাঁর মতে, ২০২৫ সালের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠান করা সম্ভব। তবে এর আগে পুরো নির্বাচনীব্যবস্থার সংস্কার করতে হবে।
বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে না থাকা কিছু দলও দ্রুত নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে একমত। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টার বক্তব্যকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেন, ‘আশা করছি সরকারের কথা ও কাজের মিল থাকবে। প্রত্যাশা থাকবে নির্বাচন কমিশন গঠনের পর দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকার নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করবে।’
জামায়াত সংস্কারে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। এদিক থেকে বিএনপির সঙ্গে দলটির অবস্থানের কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে। জামায়াত যৌক্তিক সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলছে। তবে বিলম্বিত নির্বাচন চায় না। জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, ‘আমরাও নির্বাচন চাই। গত ১৫ বছর জনগণ ভোট দিতে পারেনি। সামনে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য পরিবেশ তৈরি করা জরুরি। আমরা সংস্কারে গুরুত্ব দিচ্ছি, কিন্তু তাই বলে নির্বাচন বিলম্বিত হোক, তা চাই না।’

রাষ্ট্র সংস্কারে অগ্রাধিকার দেওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর নির্বাচনের জন্য চাপ বাড়ছে। বিএনপি শুরুতে সরকারকে যৌক্তিক সময় দেওয়ার কথা বললেও এখন দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ চাইছে। সমমনা কয়েকটি দলও একই দাবি জানাচ্ছে। জামায়াতে ইসলামী সংস্কারে গুরুত্ব দিলেও বিলম্বিত নির্বাচন চায় না।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, দু-একটি ঘটনায় বিএনপি ও সমমনা কয়েকটি দলের অবস্থানের বদল হয়েছে। এর একটি রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের উদ্যোগ। বিএনপি এর বিরুদ্ধে অবস্থান স্পষ্ট করেছে। দলটির কোনো কোনো নেতা বলেছেন, এতে রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সংকট তৈরি হবে এবং নির্বাচন বিলম্বিত হবে। তাই নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করলে রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি জনগণের মধ্যেও আশ্বাস তৈরি হবে।
নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার চাপের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার এমন আশ্বাস তৈরির পদক্ষেপ হিসেবে গত মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য দুই বিচারপতির সমন্বয়ে একটি সার্চ কমিটি করেছে। একই দিন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেছেন, সরকার নির্বাচনের পথে অগ্রসর হচ্ছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা ভারতে চলে যান। অবসান ঘটে আওয়ামী লীগের টানা ১৫ বছরের শাসনের। ৮ আগস্ট শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে শপথ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে সরকার রাষ্ট্র সংস্কারে বেশ কয়েকটি কমিশন গঠন করেছে। চলতি বছরের মধ্যেই কমিশনগুলোর প্রতিবেদন দেওয়ার কথা। এরপর রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে সবার পরামর্শের ভিত্তিতে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করবে।
বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল অন্তর্বর্তী সরকারের এই উদ্যোগে সমর্থন দেয়। তবে বিএনপি শুরু থেকেই সরকারকে সংস্কার ও নির্বাচনের জন্য যৌক্তিক সময় দেওয়ার কথা বলে আসছে। তবে জামায়াতের অবস্থান কিছুটা ভিন্ন, দলটি সংস্কারের ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। তবে কবে নাগাদ নির্বাচন হতে পারে সে নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আভাস দেওয়া হয়নি।
সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান এক সাক্ষাৎকারে বলেন, গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার সম্পন্ন করে অন্তর্বর্তী সরকারকে ১৮ মাসের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের জন্য সেনাবাহিনীর পূর্ণ সহযোগিতা থাকবে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব এটিকে সেনাপ্রধানের ‘ব্যক্তিগত মত’ বলে উল্লেখ করেন।
এর পর থেকে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা ডালপালা মেলে। সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির রাষ্ট্রপতির অপসারণ দাবি করলে বিএনপি এতে আপত্তি তোলে। দলটি বলছে, রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ করলে সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক সংকট তৈরি হবে। এতে নির্বাচন বিলম্বিত হবে। ছাত্র নেতৃত্ব ও জাতীয় নাগরিক কমিটি তাদের দাবির বিষয়ে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করেছে। তবে বিএনপির অবস্থান বদলায়নি। এর পর থেকেই দলটি নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জোরালো করে।
সরকারের সংস্কার উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও বিএনপি মনে করে, শুধু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারই যথেষ্ট। দলটি বলছে, জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় এলে অন্য সংস্কারগুলো করা সম্ভব হবে। সাংবিধানিক বিধান এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিষয়ে তাড়াহুড়ো না করে সাবধানতার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিতে সরকারকে পরামর্শও দিয়েছে বিএনপি। এই অবস্থান থেকেই দলটি রাষ্ট্রপতির অপসারণের দাবির বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে এবং দ্রুত নির্বাচনের তাগিদ দিচ্ছে বলে জানান বিএনপির নেতারা।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল বুধবার রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর তাঁদের আস্থা রয়েছে এবং এই সরকার দ্রুত একটি নির্বাচন আয়োজন করবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। তিনি বলেন, ‘সরকার সময়ের সদ্ব্যবহার করবে বলে আশা করি। অন্য বিষয়গুলো এড়িয়ে নজর ইলেকশনের দিকে রাখলেই হবে—এটার কোনো বিকল্প নেই।’
বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির নেতারা গতকাল গণফোরাম, গণঅধিকার পরিষদের একাংশ ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের (এনডিএম) নেতাদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন। বৈঠক সূত্র বলেছে, বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত পৃথক এসব বৈঠকে ওই তিন দলের নেতারাও প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত নির্বাচনের দিকে যাওয়ার বিষয়ে বিএনপির সঙ্গে একমত হয়েছে। তাঁরা রাষ্ট্রপতির অপসারণ নিয়ে বিএনপির অবস্থানের সঙ্গেও একমত পোষণ করেন।
বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু উপস্থিত ছিলেন।
গণফোরামের চেয়ারম্যান মোস্তফা মোহসীন মন্টু, কো-চেয়ারম্যান সুব্রত চৌধুরী; গণঅধিকার পরিষদের একাংশের আহ্বায়ক মিয়া মসিউজ্জামান, সদস্যসচিব ফারুক হাসান এবং এনডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, মহাসচিব মোমিনুল আমিনসহ দলগুলোর শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
রাজনৈতিক কয়েকজন বিশ্লেষকও নির্বাচনকে অগ্রাধিকার দিয়ে শুধু প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো সম্পন্ন করার পরামর্শ দিচ্ছেন। তাঁরা বলেছেন, দ্রুত রোডম্যাপ ঘোষণা ও নির্বাচন সম্পর্কিত সংস্কার সম্পন্ন করার মাধ্যমে সরকার জনগণকে আশ্বস্ত করতে পারে। নির্বাচন বিলম্বিত হলে সংকট গভীর হবে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, শুধু রাজনৈতিক দলগুলো নয়, জনগণও নির্বাচন চায়। এ অবস্থায় রোডম্যাপ ঘোষণা করা হলে দলগুলো আশ্বস্ত হবে এবং দেরি হলে পরিস্থিতি জটিল হতে পারে।
বিএনপির সমমনা দলগুলোর পাশাপাশি আরও কিছু রাজনৈতিক দল দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। নির্বাচন বিলম্বিত হলে সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠবে বলে মনে করেন বিএনপির সমমনা দল বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। তিনি দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। তাঁর মতে, ২০২৫ সালের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠান করা সম্ভব। তবে এর আগে পুরো নির্বাচনীব্যবস্থার সংস্কার করতে হবে।
বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে না থাকা কিছু দলও দ্রুত নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে একমত। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টার বক্তব্যকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেন, ‘আশা করছি সরকারের কথা ও কাজের মিল থাকবে। প্রত্যাশা থাকবে নির্বাচন কমিশন গঠনের পর দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকার নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করবে।’
জামায়াত সংস্কারে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। এদিক থেকে বিএনপির সঙ্গে দলটির অবস্থানের কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে। জামায়াত যৌক্তিক সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলছে। তবে বিলম্বিত নির্বাচন চায় না। জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, ‘আমরাও নির্বাচন চাই। গত ১৫ বছর জনগণ ভোট দিতে পারেনি। সামনে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য পরিবেশ তৈরি করা জরুরি। আমরা সংস্কারে গুরুত্ব দিচ্ছি, কিন্তু তাই বলে নির্বাচন বিলম্বিত হোক, তা চাই না।’

সাফল্যের সঙ্গে ক্রিয়াশীল সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বিরামহীন বৈঠক ও ঐকমত্যে পৌঁছে জুলাই জাতীয় সনদ তৈরি এবং বাস্তবায়নের রূপরেখা নির্ধারণ করায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
১ ঘণ্টা আগে
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করেছে সরকার। এর অংশ হিসেবে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সদস্যরাও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত থাকবেন।
৩ ঘণ্টা আগে
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠেয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ এবং উৎসবমুখর করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আজকের বৈঠকে নির্বাচনের জন্য সামরিক বাহিনী সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়ার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেছেন তিন বাহিনীর প্রধান।
৩ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত ‘একান্ত প্রয়োজন’ ছাড়া সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ না করার নির্দেশনা দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। বিদেশ ভ্রমণ-সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের আগের পরিপত্র এবং অর্থ বিভাগের গত ৮ জুলাইয়ের চিঠির বিষয়টি তুলে ধরে সম্প্রতি সরকারের...
১৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সাফল্যের সঙ্গে ক্রিয়াশীল সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বিরামহীন বৈঠক ও ঐকমত্যে পৌঁছে জুলাই জাতীয় সনদ তৈরি এবং বাস্তবায়নের রূপরেখা নির্ধারণ করায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ শনিবার প্রধান উপদেষ্টার অফিশিয়াল ফেসবুক পোস্টে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশে একটি স্থায়ী জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় কাঠামোগত সংস্কারের লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে সভাপতি করে ঐকমত্য কমিশনের যাত্রা শুরু হয় চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি; মেয়াদ শেষ হয় গতকাল, ৩১ অক্টোবর।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘জুলাই জাতীয় সনদ আমাদের ঐতিহাসিক অর্জন। এই সনদ আমাদের জাতির এক মূল্যবান দলিল, যা আগামী জাতীয় নির্বাচনের পথকে কেবল সুগমই করবে না, জাতীয় রাজনীতির ভবিষ্যৎ পথনির্দেশক হিসেবে কাজ করবে এবং আমাদের গণতন্ত্রকে সুসংহত করবে।’
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘জনগণ প্রত্যাশায় আছে জাতীয় জীবনে এমন কিছু পরিবর্তন দেখার জন্য, যা বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিকাশ ঘটাবে, এমন কিছু পরিবর্তন—যা এদেশে আর কখনো কোনো স্বৈরাচারের আগমন ঘটতে দেবে না, এমন কিছু পরিবর্তন—যা আমাদের জাতীয় জীবনে সামগ্রিক উন্নয়ন ঘটাবে, সবার নাগরিক অধিকার ও মর্যাদা রক্ষা করবে।’
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘সবচেয়ে আশার কথা হচ্ছে, আমরা নিজেরাই এই সংস্কারপ্রক্রিয়াগুলো নিয়ে কাজ করেছি, একমত হয়েছি। বাইরের কেউ আমাদের ওপর কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়নি। অতীতে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে যে সমস্ত রাজনৈতিক সংলাপ হয়েছে, তাতে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে আমরা বিদেশিদের আসতে দেখেছি। বন্ধুরাষ্ট্রসহ জাতিসংঘের প্রতিনিধিবৃন্দ বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে এক টেবিলে আনার চেষ্টা করেছেন। তবে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে যে আমাদের নিজেদের সংকট নিজেদেরই সমাধান করতে হবে। এই কারণেই সকল রাজনৈতিক দল এক কাতারে এসেছে, রাজনৈতিক বিতর্কে অংশ নিয়েছে এবং আমাদের সমাধানের পথ দেখিয়েছে। বিশ্ববাসীকে বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংকট সমাধানে আমন্ত্রণ জানানোর পরিবর্তে আমরা নিজেরাই বিশ্ববাসীর দরবারে আমাদের জাতীয় ঐক্যকে তুলে ধরেছি।’
প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দলকে এবং তাদের নেতাদের বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘রাজনৈতিক দলের নেতারা যারা এই সনদ তৈরিতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন তাদের সবাইকে আমি জাতির পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই।’
এই জুলাই সনদ সারা বিশ্বের জন্যই একটি অনন্য দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘পৃথিবীর আর কোথাও এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। এটা পৃথিবীর রাজনৈতিক ইতিহাসে এক উজ্জ্বল ঘটনা হয়ে থাকবে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশও সংকটকালীন সময়ে দেশগঠনের পদক্ষেপ হিসেবে ‘ঐকমত্য কমিশন’ গঠনের কথা বিবেচনা করবে।’
প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক ও ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া এবং বিশেষ সহকারী মনির হায়দারকে ধন্যবাদ জানান। এর পাশাপাশি, গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা যাঁরা মাসের পর মাস এই দীর্ঘ আলোচনার সঙ্গে থেকেছেন, ঐকমত্য কমিশনের সব কার্যকলাপ মানুষের কাছে সহজ ভাষায় পৌঁছে দিয়েছেন, তাঁদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান প্রধান উপদেষ্টা।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের সকলের মনে রাখতে হবে, যে অভূতপূর্ব ঐক্য আমাদের মাঝে রয়েছে রাষ্ট্র সংস্কারে এই জাতীয় ঐক্য ধরে রাখতেই হবে। কারণ ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠী এ জাতিকে বিভক্ত করতে সর্বশক্তি নিয়োজিত করেছে। গত ১৫ মাস আমরা তাদের নানা ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করেছি। ফ্যাসিবাদকে পরাস্ত করতে হলে, এই দেশকে বাঁচাতে হলে জাতীয় ঐক্য ধরে রাখা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নাই।’
এ দেশের ভবিষ্যৎ নির্মাণে আমাদের সামনে মহা চ্যালেঞ্জ আছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা কোনো একক ব্যক্তি, একক সংগঠন, একক সংস্থা অথবা একক সরকার দিয়ে সম্ভব হবে না; এ জন্য সকল রাজনৈতিক দল ও পক্ষের মধ্যে একতা থাকতে হবে, যত প্রতিকূলতাই আসুক না কেন ঐক্য ধরে রাখতে হবে।’

সাফল্যের সঙ্গে ক্রিয়াশীল সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বিরামহীন বৈঠক ও ঐকমত্যে পৌঁছে জুলাই জাতীয় সনদ তৈরি এবং বাস্তবায়নের রূপরেখা নির্ধারণ করায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ শনিবার প্রধান উপদেষ্টার অফিশিয়াল ফেসবুক পোস্টে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশে একটি স্থায়ী জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় কাঠামোগত সংস্কারের লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে সভাপতি করে ঐকমত্য কমিশনের যাত্রা শুরু হয় চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি; মেয়াদ শেষ হয় গতকাল, ৩১ অক্টোবর।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘জুলাই জাতীয় সনদ আমাদের ঐতিহাসিক অর্জন। এই সনদ আমাদের জাতির এক মূল্যবান দলিল, যা আগামী জাতীয় নির্বাচনের পথকে কেবল সুগমই করবে না, জাতীয় রাজনীতির ভবিষ্যৎ পথনির্দেশক হিসেবে কাজ করবে এবং আমাদের গণতন্ত্রকে সুসংহত করবে।’
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘জনগণ প্রত্যাশায় আছে জাতীয় জীবনে এমন কিছু পরিবর্তন দেখার জন্য, যা বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিকাশ ঘটাবে, এমন কিছু পরিবর্তন—যা এদেশে আর কখনো কোনো স্বৈরাচারের আগমন ঘটতে দেবে না, এমন কিছু পরিবর্তন—যা আমাদের জাতীয় জীবনে সামগ্রিক উন্নয়ন ঘটাবে, সবার নাগরিক অধিকার ও মর্যাদা রক্ষা করবে।’
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘সবচেয়ে আশার কথা হচ্ছে, আমরা নিজেরাই এই সংস্কারপ্রক্রিয়াগুলো নিয়ে কাজ করেছি, একমত হয়েছি। বাইরের কেউ আমাদের ওপর কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়নি। অতীতে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে যে সমস্ত রাজনৈতিক সংলাপ হয়েছে, তাতে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে আমরা বিদেশিদের আসতে দেখেছি। বন্ধুরাষ্ট্রসহ জাতিসংঘের প্রতিনিধিবৃন্দ বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে এক টেবিলে আনার চেষ্টা করেছেন। তবে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে যে আমাদের নিজেদের সংকট নিজেদেরই সমাধান করতে হবে। এই কারণেই সকল রাজনৈতিক দল এক কাতারে এসেছে, রাজনৈতিক বিতর্কে অংশ নিয়েছে এবং আমাদের সমাধানের পথ দেখিয়েছে। বিশ্ববাসীকে বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংকট সমাধানে আমন্ত্রণ জানানোর পরিবর্তে আমরা নিজেরাই বিশ্ববাসীর দরবারে আমাদের জাতীয় ঐক্যকে তুলে ধরেছি।’
প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দলকে এবং তাদের নেতাদের বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘রাজনৈতিক দলের নেতারা যারা এই সনদ তৈরিতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন তাদের সবাইকে আমি জাতির পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই।’
এই জুলাই সনদ সারা বিশ্বের জন্যই একটি অনন্য দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘পৃথিবীর আর কোথাও এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। এটা পৃথিবীর রাজনৈতিক ইতিহাসে এক উজ্জ্বল ঘটনা হয়ে থাকবে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশও সংকটকালীন সময়ে দেশগঠনের পদক্ষেপ হিসেবে ‘ঐকমত্য কমিশন’ গঠনের কথা বিবেচনা করবে।’
প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক ও ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া এবং বিশেষ সহকারী মনির হায়দারকে ধন্যবাদ জানান। এর পাশাপাশি, গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা যাঁরা মাসের পর মাস এই দীর্ঘ আলোচনার সঙ্গে থেকেছেন, ঐকমত্য কমিশনের সব কার্যকলাপ মানুষের কাছে সহজ ভাষায় পৌঁছে দিয়েছেন, তাঁদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান প্রধান উপদেষ্টা।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের সকলের মনে রাখতে হবে, যে অভূতপূর্ব ঐক্য আমাদের মাঝে রয়েছে রাষ্ট্র সংস্কারে এই জাতীয় ঐক্য ধরে রাখতেই হবে। কারণ ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠী এ জাতিকে বিভক্ত করতে সর্বশক্তি নিয়োজিত করেছে। গত ১৫ মাস আমরা তাদের নানা ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করেছি। ফ্যাসিবাদকে পরাস্ত করতে হলে, এই দেশকে বাঁচাতে হলে জাতীয় ঐক্য ধরে রাখা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নাই।’
এ দেশের ভবিষ্যৎ নির্মাণে আমাদের সামনে মহা চ্যালেঞ্জ আছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা কোনো একক ব্যক্তি, একক সংগঠন, একক সংস্থা অথবা একক সরকার দিয়ে সম্ভব হবে না; এ জন্য সকল রাজনৈতিক দল ও পক্ষের মধ্যে একতা থাকতে হবে, যত প্রতিকূলতাই আসুক না কেন ঐক্য ধরে রাখতে হবে।’

রাষ্ট্র সংস্কারে অগ্রাধিকার দেওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর নির্বাচনের জন্য চাপ বাড়ছে। বিএনপি শুরুতে সরকারকে যৌক্তিক সময় দেওয়ার কথা বললেও এখন দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ চাইছে।
৩১ অক্টোবর ২০২৪
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করেছে সরকার। এর অংশ হিসেবে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সদস্যরাও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত থাকবেন।
৩ ঘণ্টা আগে
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠেয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ এবং উৎসবমুখর করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আজকের বৈঠকে নির্বাচনের জন্য সামরিক বাহিনী সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়ার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেছেন তিন বাহিনীর প্রধান।
৩ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত ‘একান্ত প্রয়োজন’ ছাড়া সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ না করার নির্দেশনা দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। বিদেশ ভ্রমণ-সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের আগের পরিপত্র এবং অর্থ বিভাগের গত ৮ জুলাইয়ের চিঠির বিষয়টি তুলে ধরে সম্প্রতি সরকারের...
১৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করেছে সরকার। এর অংশ হিসেবে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সদস্যরাও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত থাকবেন।
আজ শনিবার (১ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নির্বাচনকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ৯০ হাজার সেনাসদস্য, আড়াই হাজারের বেশি নৌবাহিনীর সদস্য এবং দেড় হাজার বিমানবাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবেন। প্রতিটি উপজেলায় এক কোম্পানি সেনা মোতায়েন থাকবে।

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করেছে সরকার। এর অংশ হিসেবে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সদস্যরাও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত থাকবেন।
আজ শনিবার (১ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নির্বাচনকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ৯০ হাজার সেনাসদস্য, আড়াই হাজারের বেশি নৌবাহিনীর সদস্য এবং দেড় হাজার বিমানবাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবেন। প্রতিটি উপজেলায় এক কোম্পানি সেনা মোতায়েন থাকবে।

রাষ্ট্র সংস্কারে অগ্রাধিকার দেওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর নির্বাচনের জন্য চাপ বাড়ছে। বিএনপি শুরুতে সরকারকে যৌক্তিক সময় দেওয়ার কথা বললেও এখন দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ চাইছে।
৩১ অক্টোবর ২০২৪
সাফল্যের সঙ্গে ক্রিয়াশীল সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বিরামহীন বৈঠক ও ঐকমত্যে পৌঁছে জুলাই জাতীয় সনদ তৈরি এবং বাস্তবায়নের রূপরেখা নির্ধারণ করায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
১ ঘণ্টা আগে
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠেয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ এবং উৎসবমুখর করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আজকের বৈঠকে নির্বাচনের জন্য সামরিক বাহিনী সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়ার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেছেন তিন বাহিনীর প্রধান।
৩ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত ‘একান্ত প্রয়োজন’ ছাড়া সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ না করার নির্দেশনা দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। বিদেশ ভ্রমণ-সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের আগের পরিপত্র এবং অর্থ বিভাগের গত ৮ জুলাইয়ের চিঠির বিষয়টি তুলে ধরে সম্প্রতি সরকারের...
১৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠেয় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেন নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বজায় থাকে এবং নির্বাচন যেন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়, সে বিষয়ে সব ধরনের প্রস্তুতি নিতে তিন বাহিনীর প্রধানকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
আজ শনিবার (১ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান, বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
এ সময় এই নির্দেশনা দেন প্রধান উপদেষ্টা। সে সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান। প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বৈঠকে জাতীয় নিরাপত্তার পাশাপাশি দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সামরিক বাহিনীর সদস্যদের কঠোর পরিশ্রমের জন্য সাধুবাদ জানান প্রধান উপদেষ্টা।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গত ১৫ মাসে সেনাবাহিনীসহ সব বাহিনীর সদস্যরা দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অত্যন্ত কঠোর পরিশ্রম করেছেন। আসন্ন নির্বাচন যেন নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকে, সে জন্যও তিন বাহিনীকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠেয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ এবং উৎসবমুখর করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আজকের বৈঠকে নির্বাচনের জন্য সামরিক বাহিনী সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়ার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেছেন তিন বাহিনীর প্রধান।
নির্বাচনকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ৯০ হাজার সেনাসদস্য, আড়াই হাজারের বেশি নৌবাহিনীর সদস্য এবং দেড় হাজার বিমানবাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবেন। প্রতিটি উপজেলায় এক কোম্পানি সেনা মোতায়েন থাকবে।
আজকের বৈঠকে ২১ নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবসের আয়োজনে প্রধান উপদেষ্টাকে আমন্ত্রণ জানান তিন বাহিনীর প্রধান।

আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠেয় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেন নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বজায় থাকে এবং নির্বাচন যেন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়, সে বিষয়ে সব ধরনের প্রস্তুতি নিতে তিন বাহিনীর প্রধানকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
আজ শনিবার (১ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান, বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
এ সময় এই নির্দেশনা দেন প্রধান উপদেষ্টা। সে সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান। প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বৈঠকে জাতীয় নিরাপত্তার পাশাপাশি দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সামরিক বাহিনীর সদস্যদের কঠোর পরিশ্রমের জন্য সাধুবাদ জানান প্রধান উপদেষ্টা।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গত ১৫ মাসে সেনাবাহিনীসহ সব বাহিনীর সদস্যরা দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অত্যন্ত কঠোর পরিশ্রম করেছেন। আসন্ন নির্বাচন যেন নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকে, সে জন্যও তিন বাহিনীকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠেয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ এবং উৎসবমুখর করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আজকের বৈঠকে নির্বাচনের জন্য সামরিক বাহিনী সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়ার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেছেন তিন বাহিনীর প্রধান।
নির্বাচনকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ৯০ হাজার সেনাসদস্য, আড়াই হাজারের বেশি নৌবাহিনীর সদস্য এবং দেড় হাজার বিমানবাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবেন। প্রতিটি উপজেলায় এক কোম্পানি সেনা মোতায়েন থাকবে।
আজকের বৈঠকে ২১ নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবসের আয়োজনে প্রধান উপদেষ্টাকে আমন্ত্রণ জানান তিন বাহিনীর প্রধান।

রাষ্ট্র সংস্কারে অগ্রাধিকার দেওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর নির্বাচনের জন্য চাপ বাড়ছে। বিএনপি শুরুতে সরকারকে যৌক্তিক সময় দেওয়ার কথা বললেও এখন দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ চাইছে।
৩১ অক্টোবর ২০২৪
সাফল্যের সঙ্গে ক্রিয়াশীল সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বিরামহীন বৈঠক ও ঐকমত্যে পৌঁছে জুলাই জাতীয় সনদ তৈরি এবং বাস্তবায়নের রূপরেখা নির্ধারণ করায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
১ ঘণ্টা আগে
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করেছে সরকার। এর অংশ হিসেবে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সদস্যরাও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত থাকবেন।
৩ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত ‘একান্ত প্রয়োজন’ ছাড়া সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ না করার নির্দেশনা দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। বিদেশ ভ্রমণ-সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের আগের পরিপত্র এবং অর্থ বিভাগের গত ৮ জুলাইয়ের চিঠির বিষয়টি তুলে ধরে সম্প্রতি সরকারের...
১৩ ঘণ্টা আগেবিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত ‘একান্ত প্রয়োজন’ ছাড়া সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ না করার নির্দেশনা দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়।
বিদেশ ভ্রমণ-সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের আগের পরিপত্র এবং অর্থ বিভাগের গত ৮ জুলাইয়ের চিঠির বিষয়টি তুলে ধরে সম্প্রতি সরকারের সব সচিবের কাছে নতুন পরিপত্র পাঠানো হয়েছে। পরিপত্রের অনুলিপি উপদেষ্টাদের একান্ত সচিবদেরও দেওয়া হয়েছে।
পরিপত্রে বলা হয়েছে, লক্ষ করা যাচ্ছে, জারিকৃত পরিপত্রগুলোর নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ না করে বিদেশ ভ্রমণের ঘটনা ঘটছে। মন্ত্রণালয়গুলোর দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা ও সচিব একই সময়ে বৈদেশিক সফরে যাচ্ছেন। একই মন্ত্রণালয়ের অনেক কর্মকর্তা একসঙ্গে বিদেশে যাচ্ছেন। এ ধরনের প্রস্তাব প্রায়ই প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পাঠানো হচ্ছে, যা আগের নির্দেশনাগুলোর পরিপন্থী।
সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ-সংক্রান্ত আগের সব নির্দেশনা প্রতিপালনের নির্দেশনা দিয়ে পরিপত্রে বলা হয়েছে, ‘এখন থেকে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া পর্যন্ত একান্ত অপরিহার্য কারণ ছাড়া বিদেশ ভ্রমণ পরিহার করার অনুরোধ করা হলো।’
আরও খবর পড়ুন:

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত ‘একান্ত প্রয়োজন’ ছাড়া সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ না করার নির্দেশনা দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়।
বিদেশ ভ্রমণ-সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের আগের পরিপত্র এবং অর্থ বিভাগের গত ৮ জুলাইয়ের চিঠির বিষয়টি তুলে ধরে সম্প্রতি সরকারের সব সচিবের কাছে নতুন পরিপত্র পাঠানো হয়েছে। পরিপত্রের অনুলিপি উপদেষ্টাদের একান্ত সচিবদেরও দেওয়া হয়েছে।
পরিপত্রে বলা হয়েছে, লক্ষ করা যাচ্ছে, জারিকৃত পরিপত্রগুলোর নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ না করে বিদেশ ভ্রমণের ঘটনা ঘটছে। মন্ত্রণালয়গুলোর দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা ও সচিব একই সময়ে বৈদেশিক সফরে যাচ্ছেন। একই মন্ত্রণালয়ের অনেক কর্মকর্তা একসঙ্গে বিদেশে যাচ্ছেন। এ ধরনের প্রস্তাব প্রায়ই প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পাঠানো হচ্ছে, যা আগের নির্দেশনাগুলোর পরিপন্থী।
সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ-সংক্রান্ত আগের সব নির্দেশনা প্রতিপালনের নির্দেশনা দিয়ে পরিপত্রে বলা হয়েছে, ‘এখন থেকে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া পর্যন্ত একান্ত অপরিহার্য কারণ ছাড়া বিদেশ ভ্রমণ পরিহার করার অনুরোধ করা হলো।’
আরও খবর পড়ুন:

রাষ্ট্র সংস্কারে অগ্রাধিকার দেওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর নির্বাচনের জন্য চাপ বাড়ছে। বিএনপি শুরুতে সরকারকে যৌক্তিক সময় দেওয়ার কথা বললেও এখন দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ চাইছে।
৩১ অক্টোবর ২০২৪
সাফল্যের সঙ্গে ক্রিয়াশীল সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বিরামহীন বৈঠক ও ঐকমত্যে পৌঁছে জুলাই জাতীয় সনদ তৈরি এবং বাস্তবায়নের রূপরেখা নির্ধারণ করায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
১ ঘণ্টা আগে
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করেছে সরকার। এর অংশ হিসেবে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সদস্যরাও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত থাকবেন।
৩ ঘণ্টা আগে
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠেয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ এবং উৎসবমুখর করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আজকের বৈঠকে নির্বাচনের জন্য সামরিক বাহিনী সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়ার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেছেন তিন বাহিনীর প্রধান।
৩ ঘণ্টা আগে