Ajker Patrika

৮০ শতাংশ মানুষকে টিকা দিতে লাগবে সাড়ে ৪ বছর

আজাদুল আদনান, ঢাকা
৮০ শতাংশ  মানুষকে টিকা দিতে লাগবে সাড়ে ৪ বছর

আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ৫ কোটি মানুষকে টিকাকরণের আওতায় আনার লক্ষ্যে টিকা সরবরাহে নেমেছে সরকার। নানা জটিলতার পর সেই দৌড়ে সুফলও মিলেছে অনেকটা। চীনের সঙ্গে চুক্তি ও কোভ্যাক্সের সুবিধায় টিকার প্রাথমিক সংকট কিছুটা কেটেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আওতায় সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) বলছে, প্রতি মাসে ২৫ লাখ মানুষকে টিকা দিতে চায় সরকার। সে অনুযায়ী মাসে দুই ডোজের টিকা লাগবে ৫০ লাখ। বর্তমানে দৈনিক টিকা দেওয়ার সক্ষমতা ২ লাখ। সে হিসেবে দেশের ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকা দিতে সময় লাগবে সাড়ে ৪ বছরেরও বেশি।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি গণটিকাদান শুরুর পর এখন পর্যন্ত (গতকাল রোববার) ৬৮ লাখ ১৩ হাজার ১৫০ জনকে টিকা দিতে পেরেছে সরকার। এর মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন মাত্র ৪২ লাখ ৯৭ হাজার ৪০৮ জন। ফলে পরিকল্পনা অনুযায়ী ডিসেম্বরের মধ্যে ৪ কোটি ২৫ লাখের বেশি মানুষের সাড়ে ৮ কোটি টিকার প্রয়োজন। কিন্তু বর্তমান হারে টিকা দেওয়া হলে আগামী আগস্ট থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ৫ মাসে ১ কোটি ২৫ লাখ মানুষের টিকা দেওয়া সম্ভব হবে। ফলে আরও সোয়া ৪ কোটি লোককে টিকা দেওয়া কঠিন হবে।  

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশ কেনা ও বিভিন্ন উপায়ে ২ কোটি টিকা পাবে। এর মধ্যে গত শনিবার চীন থেকে দ্বিতীয় দফায় চুক্তির আরও ২০ লাখ টিকা এসেছে। দেশটির সঙ্গে দেড় কোটি টিকা কেনার চুক্তি করেছে সরকার। টিকা পাওয়ার দুয়ার খুলেছে রাশিয়া থেকেও। চলতি মাসেই চুক্তিতে সই হতে পারে দুই দেশের।

অন্যদিকে টিকার বৈশ্বিক উদ্যোগ কোভ্যাক্স থেকেও ভালো সাড়া পাচ্ছে বাংলাদেশ। তৃতীয় দফায় এই মাধ্যমে আজ সোমবার ৩০ লাখ মডার্নার টিকা আসছে। এর আগে ফাইজার ও মডার্নার মোট ২৬ লাখ ৬২০ ডোজ টিকা এসেছে। আগামী মাসে একই মাধ্যমে ২৯ লাখ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা আসার কথা রয়েছে। এ ছাড়া সেরাম থেকেও টিকা পাওয়ার নিশ্চয়তা পেয়েছে সরকার। 

আগামী মাসেই চুক্তির বাকি ২ কোটি ৩০ লাখ টিকার চালান ধীরে ধীরে আসা শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ইপিআইয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সরবরাহ বাড়লেও চলতি বছর ১০ কোটি টিকা পাওয়া নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। ফলে টিকা হাতে না পাওয়া পর্যন্ত খুব বেশি আশান্বিত হওয়া যাচ্ছে না।

চীনের সঙ্গে চুক্তি ও কোভ্যাক্স সুবিধার আওতায় টিকার সংস্থান হওয়ায় বর্তমানে দ্বিতীয় দফায় চলছে প্রথম ডোজের টিকাদান কার্যক্রম। প্রতিদিন প্রায় দুই লাখ মানুষকে টিকা দেওয়া হচ্ছে।

বন্ধের দিন ছাড়া রাজধানী ঢাকাসহ বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে চলছে টিকাদান কার্যক্রম। এর মধ্যে ফাইজার রাজধানীর সাতটি সরকারি হাসপাতালে, মডার্না দেশের সব সিটি করপোরেশন এলাকায় এবং সিনোফার্ম দেওয়া হচ্ছে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে।

দেশের ৮০ শতাংশ জনগোষ্ঠী বা ১৩ কোটি ৮২ লাখ ৪৭ হাজার ৫০৮ মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্য সরকারের। বিপুলসংখ্যক এই জনগোষ্ঠীকে চার ধাপে টিকা দেওয়া হবে। প্রথম ধাপকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে জনসংখ্যার ৩ শতাংশ মানুষ বা ৫১ লাখ ৮৪ হাজার ২৮২ জনকে ইতিমধ্যে টিকা দেওয়া হয়েছে। প্রথম ভাগের দ্বিতীয় ভাগে ৭ শতাংশ বা ১ কোটি ২০ লাখ ৯৬ হাজার ৬৫৭ জনকে টিকা দেওয়া হবে। যা বর্তমানে চলমান রয়েছে।

এ ছাড়া দ্বিতীয় ধাপে ১১ থেকে ২০ শতাংশ, তৃতীয় ধাপে ২১ থেকে ৪০ শতাংশ এবং চতুর্থ ধাপে ৪১ থেকে ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্য রয়েছে। টিকার দেওয়ার সক্ষমতা সম্পর্কে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, ‘বর্তমানে দিনে দুই লাখের মতো টিকা দেওয়া যাবে। এক দিনে আমরা ১ কোটি টিকাও দিতে পারি, সে ক্ষেত্রে গ্রামাঞ্চলে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে টিকা দিতে হবে। সেটি করতে হলে সেই পরিমাণ স্বাস্থ্য সহকারী লাগবে। এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এখনো কোনো নির্দেশনা আসেনি।’

খুরশীদ আলম বলেন, ‘এখনো প্রায় ১১ হাজার পদ খালি। আমি চাইলেই তো হবে না। সামনে আবার সাধারণ টিকা দেওয়া শুরু হবে। এর মধ্যে হাসপাতালের অন্য সেবা ও ডেঙ্গু নিয়ে কাজ করতে হয়। এখন যদি সরকারি সব হাসপাতালে বেশি টিকা দেওয়া শুরু করি, তাহলে কোভিডসহ অন্য সেবাগুলো ব্যাহত হবে।’

মোট টিকাদানের সময়সীমা কমিয়ে আনার ব্যাপারে ডিজি বলেন, ‘আগে বড় মাপের একটা টিকার চালান পেয়ে নিই, তারপর একেবারে গ্রাম পর্যন্ত আমরা টিকা কার্যক্রম নিয়ে যাব। তখন আশা করা যায় সময় কমে আসবে।’

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টিকা শুধু সরবরাহ যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োগের সক্ষমতা বাড়ানো। মাসে অন্তত ১ কোটি মানুষকে টিকাকরণ করতে হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বে–নজির আহমেদ বলছেন, ‘লোকবল নয়, পরিকল্পনার অভাব। আমরা চাইলে দিনে এক কোটি টিকা দেওয়া সম্ভব। আমাদের ৫০০ উপজেলা রয়েছে, সেখানে ভাগ করে দেওয়া যায়। আমার যদি লক্ষ্য হয়, তাহলে মাসে ১ কোটি মানুষকে টিকা দেব, তাহলে দিনে ২ লাখ নয়, ৪ লাখ টিকা দিতে হবে। তাহলে এক বছরেই ১২ কোটি মানুষকে দেওয়া যাবে। তাই, সক্ষমতা বাড়াতে হবে।’

প্রতি মাসে ৫০ লাখ টিকা পাওয়ার নিশ্চয়তা কতটুকু জানতে চাইলে ডিজি খুরশীদ আলম বলেন, এ জন্য জনসনের এক ডোজের টিকা কেনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চীন, রাশিয়া ও কোভ্যাক্স থেকে ভালো পরিমাণ টিকা আসবে। এ ছাড়া সেরাম থেকে আগামী আগস্ট–সেপ্টেম্বরের দিকে কোভিশিল্ডের টিকাও আসবে। সুতরাং, আশা করা যায় টিকা পাওয়ায় সমস্যা হবে না।

এদিকে টিকার সরবরাহ বাড়লেও সংরক্ষণ জটিলতা নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছেই। কোভিশিল্ড ও সিনোফার্ম টিকার সংরক্ষণ ঠিকঠাক করা গেলেও মডার্না ও ফাইজার নিয়ে বেশ চিন্তায় পড়তে হচ্ছে সরকারকে। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্যের ডিজি বলেন, ফাইজারের টিকার সংরক্ষণ টেকনিক্যালি অনেক ডিমান্ডিং, দিতেও অনেক ঝামেলা। এই টিকা দিতে হলে যে অভিজ্ঞতা দরকার, তা করতে যত লোক লাগাবে তাতে সব জনবল ওখানেই লেগে যাবে। আর আমি চাইলেই জনবল বাড়িয়ে দিতে পারব এমন সুযোগ নেই।

গ্রাম পর্যায়ের হতদরিদ্র ও নিরক্ষর মানুষের টিকাকরণের ব্যাপারে ডিজি বলেন, তাদের টিকা কোন প্রক্রিয়ায় দেওয়া যায়, তা নিয়ে সভা ডাকা হয়েছে। দ্রুত সিদ্ধান্ত আসবে। যে নিয়মে বর্তমানে টিকার নিবন্ধন হচ্ছে, তাতে গ্রামের মানুষ এটি করতে পারবে না। তাই, সাধারণ নিয়মে টিকা দেওয়া যায় কি না, ভাবা হচ্ছে।

এদিকে শিশু–কিশোর ও গর্ভবতী মায়েদের টিকাকরণের ব্যাপারে এখনো নীতিগত সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি সরকার। যুক্তরাষ্ট্রে এই শ্রেণির মানুষদের টিকা দেওয়া হলেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এখনো ইতিবাচক বার্তা না দেওয়ায় অনুমতি দিতে চাচ্ছে না ন্যাশনাল ইমিউনাইজেশন টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজরি (নাইট্যাগ)। বিষয়টি নিয়ে আরও গবেষণা ও পর্যালোচনার প্রয়োজন আছে জানিয়েছেন নাইট্যাগের সদস্য অধ্যাপক বে–নজির আহমেদ।

আর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, বিশ্বব্যাপী এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এটা জাতীয় ইস্যু, আলোচনার প্রয়োজন আছে। যতক্ষণ না জাতীয়ভাবে এটির ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত আসে, ততক্ষণ কিছু বলতে চাই না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাসা থেকে গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গের তরুণী ‘যুব মহিলা লীগের সদস্য’

বিএনপির ফাঁকা রাখা ঢাকার আসনে এনসিপির মনোনয়নপত্র নিলেন তাসনিম জারা

চার জেলায় কর্মী নেবে সিটি ব্যাংক, আবেদন শেষ ১৬ নভেম্বর

ঘুষ হিসেবে নেওয়া টাকা ভাগাভাগিতে ফাঁকি দেন না তিনি

ভারতীয় গণমাধ্যমে বলিউডের ‘হি-ম্যান’ ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর খবর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এ বছরেই চূড়ান্ত হচ্ছে ন্যাশনাল পোর্ট স্ট্র্যাটেজি: নৌপরিবহন উপদেষ্টা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর একটি হোটেলে মঙ্গলবার আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর একটি হোটেলে মঙ্গলবার আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, দেশের স্থল, নৌ ও সমুদ্রবন্দরগুলোর দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে বর্তমান সরকার ‘ন্যাশনাল পোর্ট স্ট্র্যাটেজি’ শীর্ষক একটি জাতীয় কৌশলপত্র তৈরি করছে।

রাজধানীর একটি হোটেলে আজ মঙ্গলবার দুপুরে জাপান সরকার ও জাপান আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (জাইকা) সহযোগিতায় প্রণয়ন হতে যাওয়া ‘বাংলাদেশ ন্যাশনাল পোর্ট স্ট্র্যাটেজি-২০২৫’ চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এ সভার আয়োজন করে।

নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, ‘ন্যাশনাল পোর্ট স্ট্র্যাটেজির খসড়া প্রণয়নের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আশা করছি, এ বছরের মধ্যেই এই স্ট্র্যাটেজি চূড়ান্তকরণের কাজ শেষ হবে এবং আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে কার্যকর করা হবে।’

উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘বিশ্বের বিখ্যাত বন্দরগুলো এখন ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এর ফলে সেখানে বিদেশি বিনিয়োগ হচ্ছে বেশি। আমাদের মেরিটাইম সেক্টরে আরও বেশি দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করতে এবং একটি কার্যকর ও টেকসই বন্দর ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে “ন্যাশনাল পোর্ট স্ট্র্যাটেজি” প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়।’

এ কৌশলপত্রের মাধ্যমে একটি ‘সমন্বিত, শক্তিশালী ও যুগোপযোগী বন্দর কাঠামো’ গড়ে তোলা হবে জানিয়ে নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, বন্দরকেন্দ্রিক সব সেবাকে একটি প্ল্যাটফর্মে আনতে মেরিটাইম সিঙ্গেল উইন্ডো চালু করা হবে, যেখানে ব্যবসায়ীরা স্বল্পতম সময়ের মধ্যে হয়রানিমুক্ত সেবা পাবেন।

‘ন্যাশনাল পোর্ট স্ট্র্যাটেজি’ প্রণয়নের মাধ্যমে দেশের বন্দর ব্যবস্থাপনায় ‘নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে যাচ্ছে’ বলেও উল্লেখ করেন সাখাওয়াত হোসেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাসা থেকে গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গের তরুণী ‘যুব মহিলা লীগের সদস্য’

বিএনপির ফাঁকা রাখা ঢাকার আসনে এনসিপির মনোনয়নপত্র নিলেন তাসনিম জারা

চার জেলায় কর্মী নেবে সিটি ব্যাংক, আবেদন শেষ ১৬ নভেম্বর

ঘুষ হিসেবে নেওয়া টাকা ভাগাভাগিতে ফাঁকি দেন না তিনি

ভারতীয় গণমাধ্যমে বলিউডের ‘হি-ম্যান’ ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর খবর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিমানবাহিনীর সাবেক প্রধান হান্নানের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ, সহযোগী সানজিদার ২টি ফ্ল্যাট ক্রোক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিমানবাহিনীর সাবেক প্রধান শেখ আব্দুল হান্নান। ছবি: সংগৃহীত
বিমানবাহিনীর সাবেক প্রধান শেখ আব্দুল হান্নান। ছবি: সংগৃহীত

বিমানবাহিনীর সাবেক প্রধান শেখ আব্দুল হান্নানের ১০টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ এবং তাঁর সহযোগী সানজিদা আক্তারের দুটি ফ্ল্যাট ক্রোকের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. সাব্বির ফয়েজ আজ মঙ্গলবার এ নির্দেশ দেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ নির্দেশ দেন বলে জানান সংস্থাটির জনসংযোগ কর্মকর্তা আক্তারুল ইসলাম।

দুদকের আবেদন থেকে দেখা যায়, ফ্ল্যাট দুটি ঢাকার নিকুঞ্জে অবস্থিত। এ ছাড়া ১০টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ওই ব্যাংক হিসাবগুলোতে ৪০ লাখ ৫৬ হাজার ৫৮৩ টাকা রয়েছে।

দুদকের সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান বিমানবাহিনীর সাবেক প্রধানের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ ক্রোকের আদেশ চেয়ে আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়, আব্দুল হান্নান ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করে নিজ নামে ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট অন্য ব্যক্তিদের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগের অনুসন্ধান শেষে দুর্নীতি দমন কমিশনে মামলা করা হয়।

মামলার তদন্তকালে বিভিন্ন নথিপত্র ও জব্দ করা আলামত পর্যালোচনায় দেখা যায়, শেখ আব্দুল হান্নান বিভিন্ন সময় অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদ গোপন করার উদ্দেশ্যে তাঁর সহযোগী সানজিদা আক্তারের নামে তা ক্রয় করেছেন এবং এ বিষয়ে সানজিদা আক্তার তাঁকে সহযোগিতা করেছেন। তিনি সানজিদা আক্তারের নামে ঢাকার খিলক্ষেত এলাকার নিকুঞ্জে ৯৫ লাখ টাকার দুটি ফ্ল্যাট করে দিয়েছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন ব্যাংকে তাঁর নামে প্রায় ৪৫ লাখ টাকার এফডিআর সংরক্ষিত আছে এবং তল্লাশিকালে তাঁর বাসা থেকে প্রায় ২৬ লাখ টাকার বিভিন্ন দেশের মুদ্রা উদ্ধার করা হয়, যা তাঁর জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে প্রতীয়মান হয়।

তদন্তকালে বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, সানজিদা আক্তার এসব স্থাবর সম্পদ ও আব্দুল হান্নান তাঁর অস্থাবর সম্পদ অন্যত্র হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করার চেষ্টা করছেন।

তদন্ত নিষ্পত্তির আগে এসব সম্পদ হস্তান্তর বা স্থানান্তর হয়ে গেলে পরবর্তী সময়ে ওই টাকা উদ্ধার করা কঠিন হয়ে পড়বে। তাই তাঁদের এসব স্থাবর সম্পদ জরুরি ভিত্তিতে ক্রোক এবং অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাসা থেকে গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গের তরুণী ‘যুব মহিলা লীগের সদস্য’

বিএনপির ফাঁকা রাখা ঢাকার আসনে এনসিপির মনোনয়নপত্র নিলেন তাসনিম জারা

চার জেলায় কর্মী নেবে সিটি ব্যাংক, আবেদন শেষ ১৬ নভেম্বর

ঘুষ হিসেবে নেওয়া টাকা ভাগাভাগিতে ফাঁকি দেন না তিনি

ভারতীয় গণমাধ্যমে বলিউডের ‘হি-ম্যান’ ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর খবর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দুদকের মামলায় ইটিভি চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম খালাস

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আব্দুস সালাম। ছবি: সংগৃহীত
আব্দুস সালাম। ছবি: সংগৃহীত

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা একটি মামলায় একুশে টেলিভিশনের (ইটিভি) চেয়ারম্যান ও সিইও আব্দুস সালামকে খালাস দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন এ রায় ঘোষণা করেন।

সম্পদের হিসাব দাখিল না করায় দুদকের করা মামলার রায় ঘোষণার সময় আব্দুস সালাম আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

রায় ঘোষণার সময় আদালত বলেন, অভিযোগের প্রমাণ উপস্থাপন করতে না পারায় আসামিকে খালাস দেওয়া হলো।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, দুদক ২০১৬ সালের ২১ নভেম্বর আব্দুস সালামকে সম্পদের হিসাব দাখিলের নোটিশ পাঠায়। আইন অনুযায়ী সাত কার্যদিবসের মধ্যে সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়ার কথা থাকলেও একাধিকবার সময় নেন তিনি। এরপরেও তিনি তা দাখিল করেননি। ২০১৭ সালের ৮ জানুয়ারি সময়সীমা শেষ হয় এবং একই বছরের ১৩ এপ্রিল দুদকের তৎকালীন উপপরিচালক মো. সামছুল আলম রমনা মডেল থানায় মামলা করেন।

পরে মামলাটি তদন্ত করেন দুদকের উপপরিচালক মোহা. নূরুল হুদা। তদন্ত শেষে ২০২৫ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি আব্দুস সালামকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হয়।

আদালত মামলার বিচার চলাকালে নয়জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাসা থেকে গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গের তরুণী ‘যুব মহিলা লীগের সদস্য’

বিএনপির ফাঁকা রাখা ঢাকার আসনে এনসিপির মনোনয়নপত্র নিলেন তাসনিম জারা

চার জেলায় কর্মী নেবে সিটি ব্যাংক, আবেদন শেষ ১৬ নভেম্বর

ঘুষ হিসেবে নেওয়া টাকা ভাগাভাগিতে ফাঁকি দেন না তিনি

ভারতীয় গণমাধ্যমে বলিউডের ‘হি-ম্যান’ ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর খবর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মডেল মেঘনা আলমের পাসপোর্ট ফেরতের আবেদন আবারও নামঞ্জুর

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
মডেল মেঘনা আলম। ছবি: সংগৃহীত
মডেল মেঘনা আলম। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর ধানমন্ডি থানার প্রতারণা ও চাঁদা দাবির মামলায় আলোচিত মডেল মেঘনা আলমের জব্দ করা পাসপোর্ট ফেরত চেয়ে করা আবেদন আবারও নামঞ্জুর করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলাম নামঞ্জুরের এই আদেশ দেন।

এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর একই আদালত মেঘনা আলমের পাসপোর্ট ফেরতের আবেদন নামঞ্জুর করেছিলেন।

আজ মেঘনা আলমের পক্ষে তাঁর আইনজীবী মহিমা বাঁধন ও মহাসিন রেজা পলাশ পাসপোর্ট ফেরত চেয়ে আবেদন করেন। তাঁরা আদালতকে বলেন, পেশাগত কারণে মেঘনা আলমকে প্রায়ই বিদেশ যেতে হয়। তাই তাঁর পাসপোর্ট ফেরত দেওয়া হোক।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এর বিরোধিতা করে বলেন, মামলাটি গুরুতর অভিযোগের। এখনো তদন্ত চলছে। এ কারণে পাসপোর্ট ফেরত দেওয়া যুক্তিযুক্ত হবে না। শুনানি শেষে আদালত নামঞ্জুর করেন।

এদিকে মেঘনা আলমকে গ্রেপ্তারের সময় জব্দ করা ম্যাকবুক, দুটি মোবাইল ফোনসেট ও ল্যাপটপের বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা আজও প্রতিবেদন দাখিল না করায় সেগুলো ফেরতের বিষয়ে আদেশ হয়নি।

গত ২২ জুন মেঘনা আলম তাঁর কাছ থেকে জব্দ করা ম্যাকবুক, পাসপোর্ট, মোবাইল ও ল্যাপটপ জিম্মায় নেওয়ার আবেদন করেন। গত ২৯ জুলাই ওই আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আদালত তদন্ত কর্মকর্তাকে মোবাইল ও ল্যাপটপে রাষ্ট্রবিরোধী কোনো উপাদান আছে কি না, তা তদন্তের নির্দেশ দেন।

গত ২৮ এপ্রিল মেঘনা আলমের ৩০ দিনের আটকাদেশ বাতিল করা হয়। অন্যদিকে আদালত তাঁকে জামিন দেন। ওই দিনই কারামুক্ত হন তিনি। এর পর থেকে তিনি জামিনে আছেন।

গত ৯ এপ্রিল বাসা থেকে আটক হন মেঘনা আলম। পরদিন ১০ এপ্রিল বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিনের আটকাদেশ দিয়ে মডেল মেঘনাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

গত ১৭ এপ্রিল কারাগার থেকে আদালতে হাজির করে মেঘনাকে ধানমন্ডি থানার চাঁদাবাজি ও প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।

মেঘনা আলম ও তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী দেওয়ান সমির এবং আরও দু-তিনজন পরস্পর যোগসাজশে বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের সুন্দরী নারীদের মাধ্যমে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আদায়ের পরিকল্পনা করেন। এই অভিযোগে গত ১৫ এপ্রিল ধানমন্ডি থানার পরিদর্শক মোহাম্মদ আবদুল আলিম মামলাটি দায়ের করেন।​

মামলার এজাহারে বলা হয়, অভিযুক্তরা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য, যারা সুন্দরী নারীদের মাধ্যমে বিদেশি কূটনীতিক ও ধনী ব্যবসায়ীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তুলে ব্ল্যাকমেল করে অর্থ আদায় করতেন।​

অভিযোগে বলা হয়, গত ২৯ মার্চ ধানমন্ডির একটি জাপানি রেস্টুরেন্টে এক কূটনীতিকের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আদায়ের পরিকল্পনায় বৈঠক করে তারা।​

মেঘনা আলম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। শুনানি শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার পাসপোর্ট ফেরতের আবেদন নামঞ্জুর করা হয়েছে। অন্যদিকে ল্যাপটপ এবং মোবাইলের ফরেনসিক রিপোর্ট তদন্ত কর্মকর্তা দাখিল না করায় সেগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। বিচারব্যবস্থা ধীর গতিতে চলছে। আমি ত্বরান্বিত করার দাবি জানাই।’

অবশ্য মেঘনা আলম বলেন, ‘আজ বিজ্ঞ আদালত তদন্ত কর্মকর্তাকে ফরেনসিক রিপোর্ট দাখিল করার জন্য তাগিদ দিয়েছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাসা থেকে গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গের তরুণী ‘যুব মহিলা লীগের সদস্য’

বিএনপির ফাঁকা রাখা ঢাকার আসনে এনসিপির মনোনয়নপত্র নিলেন তাসনিম জারা

চার জেলায় কর্মী নেবে সিটি ব্যাংক, আবেদন শেষ ১৬ নভেম্বর

ঘুষ হিসেবে নেওয়া টাকা ভাগাভাগিতে ফাঁকি দেন না তিনি

ভারতীয় গণমাধ্যমে বলিউডের ‘হি-ম্যান’ ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর খবর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত