
বাংলাদেশে রাজনৈতিক প্রকল্পের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির ২৯ মিলিয়ন বা ২ কোটি ৯০ ডলার সহায়তার খবর সপ্তাহখানেক আগের। দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিসিয়েন্সি (ডিওজিই)’ নামে যে নতুন দপ্তর খুলেছেন, সেই দপ্তর গত ১৬ ফেব্রুয়ারি এই সহায়তার কথা জানায়। তবে কাদের বা কোন সংস্থার জন্য এই সহায়তা দেওয়ার কথা ছিল, তা জানানো হয়নি। শুধু বাংলাদেশের ‘রাজনৈতিক পরিবেশ শক্তিশালীকরণের’ জন্য এই অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়।
এরপর বিষয়টি নিয়ে তেমন আলোচনা না হলেও গত শুক্রবার ট্রাম্পের এক মন্তব্যের পর এই সহায়তা কারা পেয়েছে, তা নিয়ে বাংলাদেশে সাড়া পড়ে গেছে। ট্রাম্প বলেছেন, এই তহবিল বাংলাদেশের এমন একটি ফার্ম বা প্রতিষ্ঠান নিয়েছে, যেখানে মাত্র দুজন কাজ করেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশ শক্তিশালীকরণের নামে এই তহবিল বরাদ্দ ছিল।
গত শুক্রবার মার্কিন অঙ্গরাজ্যগুলোর গভর্নরদের এক সভায় প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতি শক্তিশালী করতে ২৯ মিলিয়ন ডলার দেওয়া হয়েছে এমন একটি প্রতিষ্ঠানকে, যার নাম শোনেনি কেউ, ২৯ মিলিয়ন ডলার! তারা চেক পেয়েছে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘কল্পনা করতে পারেন! আপনার একটা ছোট্ট প্রতিষ্ঠান আছে, এখান থেকে ১০ হাজার ডলার, ওখান থেকে ১০ হাজার ডলার পান। তারপর হঠাৎ যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছ থেকে ২৯ মিলিয়ন ডলার পেলেন!’
সেই তহবিল কারা পেলেন, সে প্রসঙ্গ তুলে ট্রাম্প বলেন, ‘ওই প্রতিষ্ঠানে মাত্র দুজন লোক কাজ করে। দুজন! আমি মনে করি, তারা খুব খুশি, কারণ, খুব ধনী হয়ে গেছে। খুব বড় প্রতারক হিসেবে তারা শিগগিরই কোনো নামিদামি বিজনেস ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে জায়গা পাবে।’
ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর ইউএসএআইডির সব সহায়তা স্থগিত করা হয়েছে। এরপর ডিওজিই ঘোষণা দিয়েছে, তারা মার্কিন সরকারের বিভিন্ন সংস্থার ব্যয় পর্যালোচনা করছে। সেটি করতে গিয়েই তারা অন্য বহু দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশে সহায়তার তথ্য পেয়েছে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০১৭ সালের মার্চ মাসে ‘স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ (এসপিএল) ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক ইউএসএআইডির পাঁচ বছর মেয়াদি এই প্রকল্প শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে ২০২৩ সাল পর্যন্ত থাকলেও পরে মেয়াদ বেড়ে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল (ডিআই)।
তাদের ওয়েবসাইটে এই প্রকল্পে ইউএসএআইডির অর্থায়নের তথ্য উল্লেখ রয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সক্ষমতা বৃদ্ধি, রাজনৈতিক দল ও ভোটারদের সম্পর্কোন্নয়ন এবং রাজনৈতিক সহিংসতা হ্রাসের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে ডিআইয়ের এই প্রকল্প।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, ডিআই এই প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা হলেও ইউএসএআইডি বাংলাদেশের পলিটিক্যাল প্রসেস অ্যাডভাইজার লুবাইন চৌধুরী মাসুম এই প্রকল্পের ম্যানেজারের দায়িত্বে আছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, লুবাইন চৌধুরী মাসুম ২০১৮ সালের জুলাই থেকে এই প্রকল্পের ম্যানেজারের দায়িত্বে আছেন। ২৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ‘স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ (এসপিএল) প্রকল্প ছাড়াও তিনি ২১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের নির্বাচনকেন্দ্রিক ‘নাগরিক’ প্রকল্প পরিচালনা করছেন।
পলিটিক্যাল প্রসেস অ্যাডভাইজার হিসেবে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতি, রাজনৈতিক প্রক্রিয়া, রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক দল, নির্বাচন পরিচালনা এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও শাসন (ডিআরজি) অফিসকে পরামর্শ ও বিশ্লেষণ সরবরাহ করেন। এ ছাড়া ইউএসএআইডির গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক শাসন, রাজনৈতিক দলকে সহায়তা, নির্বাচন প্রকল্প এবং অন্যান্য সুশাসন কার্যক্রম পরিচালনা করেন তিনি।
গত বছরের ২ ডিসেম্বর ওয়াশিংটন ডিসিতে এনডিআই সদর দপ্তর পরিদর্শনের পর লুবাইন চৌধুরী মাসুম লিংকডইন পোস্টে ইউএসএআইডির ২ কোটি ১০ লাখ ডলারের তহবিল প্রতিশ্রুতির তথ্য নিশ্চিত করেন। তিন বছর মেয়াদি ইউএসএআইডির এই নাগরিক প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ করছে ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইলেক্টোরাল সিস্টেমস (আইএফইএস), ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই)। এটি কনসোর্টিয়াম ফর ইলকেশনস অ্যান্ড পলিটিক্যাল প্রসেস স্ট্রেনদেনিংয়ের (সিইপিপিএস) আওতায় বাস্তবায়িত হচ্ছে।
মাইক্রো গভর্ন্যান্স রিসার্চ (এমজিআর) নামের একটি গবেষণা সংস্থার পরিচালকের দায়িত্বে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আইনুল ইসলাম।
গত ১১ সেপ্টেম্বর ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, ‘হ্যালো বাংলাদেশ ২.০! গত দুই বছরে এমজিআর, সেইভ ইয়ুথ ও ডিএফটিপি দেশজুড়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তরুণদের জন্য ৫৪৪টি অনুষ্ঠান ও কর্মসূচি পরিচালনা করেছে। কর্মশালার আকারে, প্রশিক্ষণ, কথোপকথন, সামিট, অ্যাকশন প্রকল্পসহ তরুণ গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব এবং নাগরিক সংশ্লিষ্টতার জন্য সরাসরি ২২১টি অ্যাকশন প্রকল্প, ১৭০টি গণতন্ত্র সেশনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ হাজার ২৬৪ তরুণের কাছে পৌঁছেছিল এমজিআর, সেইভ ইয়ুথ ও ডিএফটিপি! এসব কর্মসূচি বাস্তবায়ন নাগরিক প্রোগ্রামের আওতায় ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইলেক্টোরাল সিস্টেমস (আইএফইএস) এবং ইউএসএআইডি বাংলাদেশের উদার সমর্থন ও অংশীদারত্বে সম্ভব হয়েছে।’
আইনুল ইসলাম আইএফইএসের সিনিয়র কনসালট্যান্টের দায়িত্বেও রয়েছেন। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত অ্যাপ্লায়েড ডেমোক্রেসি ল্যাবের (এডিএল) প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক তিনি। ইউএসএআইডি ও আইএফইএসের সহায়তায় এই ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনুল ইসলাম।
এসপিএল প্রকল্প সম্পর্কে লুবাইন মাসুম বলেন, এর লক্ষ্য হলো বাংলাদেশের রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক চর্চার উন্নয়ন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়ানো। এই লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলের কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়ন ও সংঘাত নিরসনবিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়; নারীদের রাজনৈতিক ও নির্বাচনী অংশগ্রহণ বাড়ানো হয়; রাজনৈতিক সহিংসতা পর্যবেক্ষণ করা হয় এবং শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন প্রচার করা হয়। দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট ও দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশনকে প্রকল্পের প্রধান উপগ্রহিতা হিসেবে তুলে ধরেন তিনি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই প্রকল্পের একটি অংশের কাজ বাস্তবায়ন করা হয়। এর আওতায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় ইয়ুথ মোবিলাইজেশন অফিসার নিয়োগ করা হয়।
দ্য হাংগার প্রজেক্ট বাংলাদেশের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশের পাঁচটি বিভাগের ৯টি জেলার ১৫টি উপজেলায় তারা এসপিএল প্রকল্পের কাজ করে। তাদের কাজ হলো ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের বিদ্যমান ‘মনিটরিং-ম্যাপিং-মিটিগেশন’ মডেল সম্প্রসারণে সহায়তা করা।
অনুসন্ধানে আরও দেখা যায়, প্রকল্প চলাকালে দ্য হাংগার প্রজেক্টের বাংলাদেশ প্রধান ছিলেন অন্তবর্তী সরকারের নির্বাচন সংস্কারবিষয়ক কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার। তিনি একই সঙ্গে দ্য হাংগার প্রজেক্টের বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর ও গ্লোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তিনি ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে অবসরে যান। ১৯৯৩ সালে তিনি এই সংস্থায় যোগ দেন। ২০০৩ সালে তিনি দ্য হাংগার প্রজেক্টের গ্লোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
এদিকে ২০২৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ইউএসএআইডির অর্থায়নে বাংলাদেশে পরিচালিত বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য পণ্য সরবরাহ বা সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) অব্যাহতির সিদ্ধান্ত দিয়েছে। তাতে দেখা যায়, ২০১৭ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত মেয়াদে প্রকল্পের বাস্তবায়নকারী ডেমোক্র্যাসি ইন্টারন্যাশনাল এই কাজে দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশনকে সঙ্গে নিয়েছে।
ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের বিষয়ে জানতে অনুসন্ধান করে দেখা যায়, ডিআই নিজেকে অরাজনৈতিক সংস্থা হিসেবে উপস্থাপন করে। তবে এর নেতৃত্ব ও কার্যক্রম গণতন্ত্র প্রচারের প্রচেষ্টার সঙ্গে যুক্ত, যা ঐতিহাসিকভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাটিক পার্টিঘনিষ্ঠ প্রতিষ্ঠানগুলোর দ্বারা বেশি সমর্থিত।
উদাহরণস্বরূপ, ডিআইয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট এরিক বেয়ার্নল্যান্ড এনডিআইয়ের সঙ্গে ব্যাপকভাবে কাজ করেছেন, যা মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সঙ্গে সম্পর্কিত।
এছাড়া গ্লেন কাউয়ান নামে ডিআইয়ের আরেক সহপ্রতিষ্ঠাতা রাজনৈতিক পরামর্শদাতার ভূমিকা পালন করেছেন এবং প্রগতিশীল ও গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের সঙ্গে কাজ করেছেন।
ইউএসএআইডি ও স্টেট ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছে ডিআই। গণতন্ত্র প্রচারের ক্ষেত্রে ডিআই আনুষ্ঠানিকভাবে অরাজনৈতিক অবস্থানে থাকলেও এর শাসনব্যবস্থা উন্নয়ন, নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ও গণতান্ত্রিক বিকাশের প্রচেষ্টা প্রায়ই উদারপন্থী আন্তর্জাতিকতাবাদী মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এটি সাধারণত ডেমোক্র্যাটদের আদর্শের সঙ্গে মেলে, যেখানে রিপাবলিকানরা বাস্তববাদী এবং সার্বভৌমত্বের ওপর অধিক জোর দেয় এবং গণতন্ত্র প্রচারের পরিবর্তে ভূরাজনৈতিক কৌশলকে অগ্রাধিকার দেয়।
আরও খবর পড়ুন:

বাংলাদেশে রাজনৈতিক প্রকল্পের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির ২৯ মিলিয়ন বা ২ কোটি ৯০ ডলার সহায়তার খবর সপ্তাহখানেক আগের। দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিসিয়েন্সি (ডিওজিই)’ নামে যে নতুন দপ্তর খুলেছেন, সেই দপ্তর গত ১৬ ফেব্রুয়ারি এই সহায়তার কথা জানায়। তবে কাদের বা কোন সংস্থার জন্য এই সহায়তা দেওয়ার কথা ছিল, তা জানানো হয়নি। শুধু বাংলাদেশের ‘রাজনৈতিক পরিবেশ শক্তিশালীকরণের’ জন্য এই অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়।
এরপর বিষয়টি নিয়ে তেমন আলোচনা না হলেও গত শুক্রবার ট্রাম্পের এক মন্তব্যের পর এই সহায়তা কারা পেয়েছে, তা নিয়ে বাংলাদেশে সাড়া পড়ে গেছে। ট্রাম্প বলেছেন, এই তহবিল বাংলাদেশের এমন একটি ফার্ম বা প্রতিষ্ঠান নিয়েছে, যেখানে মাত্র দুজন কাজ করেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশ শক্তিশালীকরণের নামে এই তহবিল বরাদ্দ ছিল।
গত শুক্রবার মার্কিন অঙ্গরাজ্যগুলোর গভর্নরদের এক সভায় প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতি শক্তিশালী করতে ২৯ মিলিয়ন ডলার দেওয়া হয়েছে এমন একটি প্রতিষ্ঠানকে, যার নাম শোনেনি কেউ, ২৯ মিলিয়ন ডলার! তারা চেক পেয়েছে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘কল্পনা করতে পারেন! আপনার একটা ছোট্ট প্রতিষ্ঠান আছে, এখান থেকে ১০ হাজার ডলার, ওখান থেকে ১০ হাজার ডলার পান। তারপর হঠাৎ যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছ থেকে ২৯ মিলিয়ন ডলার পেলেন!’
সেই তহবিল কারা পেলেন, সে প্রসঙ্গ তুলে ট্রাম্প বলেন, ‘ওই প্রতিষ্ঠানে মাত্র দুজন লোক কাজ করে। দুজন! আমি মনে করি, তারা খুব খুশি, কারণ, খুব ধনী হয়ে গেছে। খুব বড় প্রতারক হিসেবে তারা শিগগিরই কোনো নামিদামি বিজনেস ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে জায়গা পাবে।’
ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর ইউএসএআইডির সব সহায়তা স্থগিত করা হয়েছে। এরপর ডিওজিই ঘোষণা দিয়েছে, তারা মার্কিন সরকারের বিভিন্ন সংস্থার ব্যয় পর্যালোচনা করছে। সেটি করতে গিয়েই তারা অন্য বহু দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশে সহায়তার তথ্য পেয়েছে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০১৭ সালের মার্চ মাসে ‘স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ (এসপিএল) ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক ইউএসএআইডির পাঁচ বছর মেয়াদি এই প্রকল্প শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে ২০২৩ সাল পর্যন্ত থাকলেও পরে মেয়াদ বেড়ে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল (ডিআই)।
তাদের ওয়েবসাইটে এই প্রকল্পে ইউএসএআইডির অর্থায়নের তথ্য উল্লেখ রয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সক্ষমতা বৃদ্ধি, রাজনৈতিক দল ও ভোটারদের সম্পর্কোন্নয়ন এবং রাজনৈতিক সহিংসতা হ্রাসের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে ডিআইয়ের এই প্রকল্প।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, ডিআই এই প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা হলেও ইউএসএআইডি বাংলাদেশের পলিটিক্যাল প্রসেস অ্যাডভাইজার লুবাইন চৌধুরী মাসুম এই প্রকল্পের ম্যানেজারের দায়িত্বে আছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, লুবাইন চৌধুরী মাসুম ২০১৮ সালের জুলাই থেকে এই প্রকল্পের ম্যানেজারের দায়িত্বে আছেন। ২৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ‘স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ (এসপিএল) প্রকল্প ছাড়াও তিনি ২১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের নির্বাচনকেন্দ্রিক ‘নাগরিক’ প্রকল্প পরিচালনা করছেন।
পলিটিক্যাল প্রসেস অ্যাডভাইজার হিসেবে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতি, রাজনৈতিক প্রক্রিয়া, রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক দল, নির্বাচন পরিচালনা এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও শাসন (ডিআরজি) অফিসকে পরামর্শ ও বিশ্লেষণ সরবরাহ করেন। এ ছাড়া ইউএসএআইডির গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক শাসন, রাজনৈতিক দলকে সহায়তা, নির্বাচন প্রকল্প এবং অন্যান্য সুশাসন কার্যক্রম পরিচালনা করেন তিনি।
গত বছরের ২ ডিসেম্বর ওয়াশিংটন ডিসিতে এনডিআই সদর দপ্তর পরিদর্শনের পর লুবাইন চৌধুরী মাসুম লিংকডইন পোস্টে ইউএসএআইডির ২ কোটি ১০ লাখ ডলারের তহবিল প্রতিশ্রুতির তথ্য নিশ্চিত করেন। তিন বছর মেয়াদি ইউএসএআইডির এই নাগরিক প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ করছে ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইলেক্টোরাল সিস্টেমস (আইএফইএস), ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই)। এটি কনসোর্টিয়াম ফর ইলকেশনস অ্যান্ড পলিটিক্যাল প্রসেস স্ট্রেনদেনিংয়ের (সিইপিপিএস) আওতায় বাস্তবায়িত হচ্ছে।
মাইক্রো গভর্ন্যান্স রিসার্চ (এমজিআর) নামের একটি গবেষণা সংস্থার পরিচালকের দায়িত্বে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আইনুল ইসলাম।
গত ১১ সেপ্টেম্বর ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, ‘হ্যালো বাংলাদেশ ২.০! গত দুই বছরে এমজিআর, সেইভ ইয়ুথ ও ডিএফটিপি দেশজুড়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তরুণদের জন্য ৫৪৪টি অনুষ্ঠান ও কর্মসূচি পরিচালনা করেছে। কর্মশালার আকারে, প্রশিক্ষণ, কথোপকথন, সামিট, অ্যাকশন প্রকল্পসহ তরুণ গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব এবং নাগরিক সংশ্লিষ্টতার জন্য সরাসরি ২২১টি অ্যাকশন প্রকল্প, ১৭০টি গণতন্ত্র সেশনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ হাজার ২৬৪ তরুণের কাছে পৌঁছেছিল এমজিআর, সেইভ ইয়ুথ ও ডিএফটিপি! এসব কর্মসূচি বাস্তবায়ন নাগরিক প্রোগ্রামের আওতায় ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইলেক্টোরাল সিস্টেমস (আইএফইএস) এবং ইউএসএআইডি বাংলাদেশের উদার সমর্থন ও অংশীদারত্বে সম্ভব হয়েছে।’
আইনুল ইসলাম আইএফইএসের সিনিয়র কনসালট্যান্টের দায়িত্বেও রয়েছেন। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত অ্যাপ্লায়েড ডেমোক্রেসি ল্যাবের (এডিএল) প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক তিনি। ইউএসএআইডি ও আইএফইএসের সহায়তায় এই ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনুল ইসলাম।
এসপিএল প্রকল্প সম্পর্কে লুবাইন মাসুম বলেন, এর লক্ষ্য হলো বাংলাদেশের রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক চর্চার উন্নয়ন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়ানো। এই লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলের কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়ন ও সংঘাত নিরসনবিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়; নারীদের রাজনৈতিক ও নির্বাচনী অংশগ্রহণ বাড়ানো হয়; রাজনৈতিক সহিংসতা পর্যবেক্ষণ করা হয় এবং শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন প্রচার করা হয়। দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট ও দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশনকে প্রকল্পের প্রধান উপগ্রহিতা হিসেবে তুলে ধরেন তিনি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই প্রকল্পের একটি অংশের কাজ বাস্তবায়ন করা হয়। এর আওতায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় ইয়ুথ মোবিলাইজেশন অফিসার নিয়োগ করা হয়।
দ্য হাংগার প্রজেক্ট বাংলাদেশের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশের পাঁচটি বিভাগের ৯টি জেলার ১৫টি উপজেলায় তারা এসপিএল প্রকল্পের কাজ করে। তাদের কাজ হলো ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের বিদ্যমান ‘মনিটরিং-ম্যাপিং-মিটিগেশন’ মডেল সম্প্রসারণে সহায়তা করা।
অনুসন্ধানে আরও দেখা যায়, প্রকল্প চলাকালে দ্য হাংগার প্রজেক্টের বাংলাদেশ প্রধান ছিলেন অন্তবর্তী সরকারের নির্বাচন সংস্কারবিষয়ক কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার। তিনি একই সঙ্গে দ্য হাংগার প্রজেক্টের বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর ও গ্লোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তিনি ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে অবসরে যান। ১৯৯৩ সালে তিনি এই সংস্থায় যোগ দেন। ২০০৩ সালে তিনি দ্য হাংগার প্রজেক্টের গ্লোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
এদিকে ২০২৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ইউএসএআইডির অর্থায়নে বাংলাদেশে পরিচালিত বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য পণ্য সরবরাহ বা সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) অব্যাহতির সিদ্ধান্ত দিয়েছে। তাতে দেখা যায়, ২০১৭ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত মেয়াদে প্রকল্পের বাস্তবায়নকারী ডেমোক্র্যাসি ইন্টারন্যাশনাল এই কাজে দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশনকে সঙ্গে নিয়েছে।
ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের বিষয়ে জানতে অনুসন্ধান করে দেখা যায়, ডিআই নিজেকে অরাজনৈতিক সংস্থা হিসেবে উপস্থাপন করে। তবে এর নেতৃত্ব ও কার্যক্রম গণতন্ত্র প্রচারের প্রচেষ্টার সঙ্গে যুক্ত, যা ঐতিহাসিকভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাটিক পার্টিঘনিষ্ঠ প্রতিষ্ঠানগুলোর দ্বারা বেশি সমর্থিত।
উদাহরণস্বরূপ, ডিআইয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট এরিক বেয়ার্নল্যান্ড এনডিআইয়ের সঙ্গে ব্যাপকভাবে কাজ করেছেন, যা মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সঙ্গে সম্পর্কিত।
এছাড়া গ্লেন কাউয়ান নামে ডিআইয়ের আরেক সহপ্রতিষ্ঠাতা রাজনৈতিক পরামর্শদাতার ভূমিকা পালন করেছেন এবং প্রগতিশীল ও গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের সঙ্গে কাজ করেছেন।
ইউএসএআইডি ও স্টেট ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছে ডিআই। গণতন্ত্র প্রচারের ক্ষেত্রে ডিআই আনুষ্ঠানিকভাবে অরাজনৈতিক অবস্থানে থাকলেও এর শাসনব্যবস্থা উন্নয়ন, নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ও গণতান্ত্রিক বিকাশের প্রচেষ্টা প্রায়ই উদারপন্থী আন্তর্জাতিকতাবাদী মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এটি সাধারণত ডেমোক্র্যাটদের আদর্শের সঙ্গে মেলে, যেখানে রিপাবলিকানরা বাস্তববাদী এবং সার্বভৌমত্বের ওপর অধিক জোর দেয় এবং গণতন্ত্র প্রচারের পরিবর্তে ভূরাজনৈতিক কৌশলকে অগ্রাধিকার দেয়।
আরও খবর পড়ুন:

বাংলাদেশে রাজনৈতিক প্রকল্পের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির ২৯ মিলিয়ন বা ২ কোটি ৯০ ডলার সহায়তার খবর সপ্তাহখানেক আগের। দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিসিয়েন্সি (ডিওজিই)’ নামে যে নতুন দপ্তর খুলেছেন, সেই দপ্তর গত ১৬ ফেব্রুয়ারি এই সহায়তার কথা জানায়। তবে কাদের বা কোন সংস্থার জন্য এই সহায়তা দেওয়ার কথা ছিল, তা জানানো হয়নি। শুধু বাংলাদেশের ‘রাজনৈতিক পরিবেশ শক্তিশালীকরণের’ জন্য এই অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়।
এরপর বিষয়টি নিয়ে তেমন আলোচনা না হলেও গত শুক্রবার ট্রাম্পের এক মন্তব্যের পর এই সহায়তা কারা পেয়েছে, তা নিয়ে বাংলাদেশে সাড়া পড়ে গেছে। ট্রাম্প বলেছেন, এই তহবিল বাংলাদেশের এমন একটি ফার্ম বা প্রতিষ্ঠান নিয়েছে, যেখানে মাত্র দুজন কাজ করেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশ শক্তিশালীকরণের নামে এই তহবিল বরাদ্দ ছিল।
গত শুক্রবার মার্কিন অঙ্গরাজ্যগুলোর গভর্নরদের এক সভায় প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতি শক্তিশালী করতে ২৯ মিলিয়ন ডলার দেওয়া হয়েছে এমন একটি প্রতিষ্ঠানকে, যার নাম শোনেনি কেউ, ২৯ মিলিয়ন ডলার! তারা চেক পেয়েছে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘কল্পনা করতে পারেন! আপনার একটা ছোট্ট প্রতিষ্ঠান আছে, এখান থেকে ১০ হাজার ডলার, ওখান থেকে ১০ হাজার ডলার পান। তারপর হঠাৎ যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছ থেকে ২৯ মিলিয়ন ডলার পেলেন!’
সেই তহবিল কারা পেলেন, সে প্রসঙ্গ তুলে ট্রাম্প বলেন, ‘ওই প্রতিষ্ঠানে মাত্র দুজন লোক কাজ করে। দুজন! আমি মনে করি, তারা খুব খুশি, কারণ, খুব ধনী হয়ে গেছে। খুব বড় প্রতারক হিসেবে তারা শিগগিরই কোনো নামিদামি বিজনেস ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে জায়গা পাবে।’
ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর ইউএসএআইডির সব সহায়তা স্থগিত করা হয়েছে। এরপর ডিওজিই ঘোষণা দিয়েছে, তারা মার্কিন সরকারের বিভিন্ন সংস্থার ব্যয় পর্যালোচনা করছে। সেটি করতে গিয়েই তারা অন্য বহু দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশে সহায়তার তথ্য পেয়েছে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০১৭ সালের মার্চ মাসে ‘স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ (এসপিএল) ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক ইউএসএআইডির পাঁচ বছর মেয়াদি এই প্রকল্প শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে ২০২৩ সাল পর্যন্ত থাকলেও পরে মেয়াদ বেড়ে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল (ডিআই)।
তাদের ওয়েবসাইটে এই প্রকল্পে ইউএসএআইডির অর্থায়নের তথ্য উল্লেখ রয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সক্ষমতা বৃদ্ধি, রাজনৈতিক দল ও ভোটারদের সম্পর্কোন্নয়ন এবং রাজনৈতিক সহিংসতা হ্রাসের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে ডিআইয়ের এই প্রকল্প।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, ডিআই এই প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা হলেও ইউএসএআইডি বাংলাদেশের পলিটিক্যাল প্রসেস অ্যাডভাইজার লুবাইন চৌধুরী মাসুম এই প্রকল্পের ম্যানেজারের দায়িত্বে আছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, লুবাইন চৌধুরী মাসুম ২০১৮ সালের জুলাই থেকে এই প্রকল্পের ম্যানেজারের দায়িত্বে আছেন। ২৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ‘স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ (এসপিএল) প্রকল্প ছাড়াও তিনি ২১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের নির্বাচনকেন্দ্রিক ‘নাগরিক’ প্রকল্প পরিচালনা করছেন।
পলিটিক্যাল প্রসেস অ্যাডভাইজার হিসেবে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতি, রাজনৈতিক প্রক্রিয়া, রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক দল, নির্বাচন পরিচালনা এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও শাসন (ডিআরজি) অফিসকে পরামর্শ ও বিশ্লেষণ সরবরাহ করেন। এ ছাড়া ইউএসএআইডির গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক শাসন, রাজনৈতিক দলকে সহায়তা, নির্বাচন প্রকল্প এবং অন্যান্য সুশাসন কার্যক্রম পরিচালনা করেন তিনি।
গত বছরের ২ ডিসেম্বর ওয়াশিংটন ডিসিতে এনডিআই সদর দপ্তর পরিদর্শনের পর লুবাইন চৌধুরী মাসুম লিংকডইন পোস্টে ইউএসএআইডির ২ কোটি ১০ লাখ ডলারের তহবিল প্রতিশ্রুতির তথ্য নিশ্চিত করেন। তিন বছর মেয়াদি ইউএসএআইডির এই নাগরিক প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ করছে ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইলেক্টোরাল সিস্টেমস (আইএফইএস), ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই)। এটি কনসোর্টিয়াম ফর ইলকেশনস অ্যান্ড পলিটিক্যাল প্রসেস স্ট্রেনদেনিংয়ের (সিইপিপিএস) আওতায় বাস্তবায়িত হচ্ছে।
মাইক্রো গভর্ন্যান্স রিসার্চ (এমজিআর) নামের একটি গবেষণা সংস্থার পরিচালকের দায়িত্বে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আইনুল ইসলাম।
গত ১১ সেপ্টেম্বর ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, ‘হ্যালো বাংলাদেশ ২.০! গত দুই বছরে এমজিআর, সেইভ ইয়ুথ ও ডিএফটিপি দেশজুড়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তরুণদের জন্য ৫৪৪টি অনুষ্ঠান ও কর্মসূচি পরিচালনা করেছে। কর্মশালার আকারে, প্রশিক্ষণ, কথোপকথন, সামিট, অ্যাকশন প্রকল্পসহ তরুণ গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব এবং নাগরিক সংশ্লিষ্টতার জন্য সরাসরি ২২১টি অ্যাকশন প্রকল্প, ১৭০টি গণতন্ত্র সেশনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ হাজার ২৬৪ তরুণের কাছে পৌঁছেছিল এমজিআর, সেইভ ইয়ুথ ও ডিএফটিপি! এসব কর্মসূচি বাস্তবায়ন নাগরিক প্রোগ্রামের আওতায় ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইলেক্টোরাল সিস্টেমস (আইএফইএস) এবং ইউএসএআইডি বাংলাদেশের উদার সমর্থন ও অংশীদারত্বে সম্ভব হয়েছে।’
আইনুল ইসলাম আইএফইএসের সিনিয়র কনসালট্যান্টের দায়িত্বেও রয়েছেন। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত অ্যাপ্লায়েড ডেমোক্রেসি ল্যাবের (এডিএল) প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক তিনি। ইউএসএআইডি ও আইএফইএসের সহায়তায় এই ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনুল ইসলাম।
এসপিএল প্রকল্প সম্পর্কে লুবাইন মাসুম বলেন, এর লক্ষ্য হলো বাংলাদেশের রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক চর্চার উন্নয়ন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়ানো। এই লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলের কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়ন ও সংঘাত নিরসনবিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়; নারীদের রাজনৈতিক ও নির্বাচনী অংশগ্রহণ বাড়ানো হয়; রাজনৈতিক সহিংসতা পর্যবেক্ষণ করা হয় এবং শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন প্রচার করা হয়। দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট ও দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশনকে প্রকল্পের প্রধান উপগ্রহিতা হিসেবে তুলে ধরেন তিনি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই প্রকল্পের একটি অংশের কাজ বাস্তবায়ন করা হয়। এর আওতায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় ইয়ুথ মোবিলাইজেশন অফিসার নিয়োগ করা হয়।
দ্য হাংগার প্রজেক্ট বাংলাদেশের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশের পাঁচটি বিভাগের ৯টি জেলার ১৫টি উপজেলায় তারা এসপিএল প্রকল্পের কাজ করে। তাদের কাজ হলো ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের বিদ্যমান ‘মনিটরিং-ম্যাপিং-মিটিগেশন’ মডেল সম্প্রসারণে সহায়তা করা।
অনুসন্ধানে আরও দেখা যায়, প্রকল্প চলাকালে দ্য হাংগার প্রজেক্টের বাংলাদেশ প্রধান ছিলেন অন্তবর্তী সরকারের নির্বাচন সংস্কারবিষয়ক কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার। তিনি একই সঙ্গে দ্য হাংগার প্রজেক্টের বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর ও গ্লোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তিনি ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে অবসরে যান। ১৯৯৩ সালে তিনি এই সংস্থায় যোগ দেন। ২০০৩ সালে তিনি দ্য হাংগার প্রজেক্টের গ্লোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
এদিকে ২০২৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ইউএসএআইডির অর্থায়নে বাংলাদেশে পরিচালিত বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য পণ্য সরবরাহ বা সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) অব্যাহতির সিদ্ধান্ত দিয়েছে। তাতে দেখা যায়, ২০১৭ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত মেয়াদে প্রকল্পের বাস্তবায়নকারী ডেমোক্র্যাসি ইন্টারন্যাশনাল এই কাজে দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশনকে সঙ্গে নিয়েছে।
ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের বিষয়ে জানতে অনুসন্ধান করে দেখা যায়, ডিআই নিজেকে অরাজনৈতিক সংস্থা হিসেবে উপস্থাপন করে। তবে এর নেতৃত্ব ও কার্যক্রম গণতন্ত্র প্রচারের প্রচেষ্টার সঙ্গে যুক্ত, যা ঐতিহাসিকভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাটিক পার্টিঘনিষ্ঠ প্রতিষ্ঠানগুলোর দ্বারা বেশি সমর্থিত।
উদাহরণস্বরূপ, ডিআইয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট এরিক বেয়ার্নল্যান্ড এনডিআইয়ের সঙ্গে ব্যাপকভাবে কাজ করেছেন, যা মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সঙ্গে সম্পর্কিত।
এছাড়া গ্লেন কাউয়ান নামে ডিআইয়ের আরেক সহপ্রতিষ্ঠাতা রাজনৈতিক পরামর্শদাতার ভূমিকা পালন করেছেন এবং প্রগতিশীল ও গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের সঙ্গে কাজ করেছেন।
ইউএসএআইডি ও স্টেট ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছে ডিআই। গণতন্ত্র প্রচারের ক্ষেত্রে ডিআই আনুষ্ঠানিকভাবে অরাজনৈতিক অবস্থানে থাকলেও এর শাসনব্যবস্থা উন্নয়ন, নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ও গণতান্ত্রিক বিকাশের প্রচেষ্টা প্রায়ই উদারপন্থী আন্তর্জাতিকতাবাদী মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এটি সাধারণত ডেমোক্র্যাটদের আদর্শের সঙ্গে মেলে, যেখানে রিপাবলিকানরা বাস্তববাদী এবং সার্বভৌমত্বের ওপর অধিক জোর দেয় এবং গণতন্ত্র প্রচারের পরিবর্তে ভূরাজনৈতিক কৌশলকে অগ্রাধিকার দেয়।
আরও খবর পড়ুন:

বাংলাদেশে রাজনৈতিক প্রকল্পের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির ২৯ মিলিয়ন বা ২ কোটি ৯০ ডলার সহায়তার খবর সপ্তাহখানেক আগের। দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিসিয়েন্সি (ডিওজিই)’ নামে যে নতুন দপ্তর খুলেছেন, সেই দপ্তর গত ১৬ ফেব্রুয়ারি এই সহায়তার কথা জানায়। তবে কাদের বা কোন সংস্থার জন্য এই সহায়তা দেওয়ার কথা ছিল, তা জানানো হয়নি। শুধু বাংলাদেশের ‘রাজনৈতিক পরিবেশ শক্তিশালীকরণের’ জন্য এই অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়।
এরপর বিষয়টি নিয়ে তেমন আলোচনা না হলেও গত শুক্রবার ট্রাম্পের এক মন্তব্যের পর এই সহায়তা কারা পেয়েছে, তা নিয়ে বাংলাদেশে সাড়া পড়ে গেছে। ট্রাম্প বলেছেন, এই তহবিল বাংলাদেশের এমন একটি ফার্ম বা প্রতিষ্ঠান নিয়েছে, যেখানে মাত্র দুজন কাজ করেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশ শক্তিশালীকরণের নামে এই তহবিল বরাদ্দ ছিল।
গত শুক্রবার মার্কিন অঙ্গরাজ্যগুলোর গভর্নরদের এক সভায় প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতি শক্তিশালী করতে ২৯ মিলিয়ন ডলার দেওয়া হয়েছে এমন একটি প্রতিষ্ঠানকে, যার নাম শোনেনি কেউ, ২৯ মিলিয়ন ডলার! তারা চেক পেয়েছে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘কল্পনা করতে পারেন! আপনার একটা ছোট্ট প্রতিষ্ঠান আছে, এখান থেকে ১০ হাজার ডলার, ওখান থেকে ১০ হাজার ডলার পান। তারপর হঠাৎ যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছ থেকে ২৯ মিলিয়ন ডলার পেলেন!’
সেই তহবিল কারা পেলেন, সে প্রসঙ্গ তুলে ট্রাম্প বলেন, ‘ওই প্রতিষ্ঠানে মাত্র দুজন লোক কাজ করে। দুজন! আমি মনে করি, তারা খুব খুশি, কারণ, খুব ধনী হয়ে গেছে। খুব বড় প্রতারক হিসেবে তারা শিগগিরই কোনো নামিদামি বিজনেস ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে জায়গা পাবে।’
ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর ইউএসএআইডির সব সহায়তা স্থগিত করা হয়েছে। এরপর ডিওজিই ঘোষণা দিয়েছে, তারা মার্কিন সরকারের বিভিন্ন সংস্থার ব্যয় পর্যালোচনা করছে। সেটি করতে গিয়েই তারা অন্য বহু দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশে সহায়তার তথ্য পেয়েছে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০১৭ সালের মার্চ মাসে ‘স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ (এসপিএল) ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক ইউএসএআইডির পাঁচ বছর মেয়াদি এই প্রকল্প শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে ২০২৩ সাল পর্যন্ত থাকলেও পরে মেয়াদ বেড়ে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল (ডিআই)।
তাদের ওয়েবসাইটে এই প্রকল্পে ইউএসএআইডির অর্থায়নের তথ্য উল্লেখ রয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সক্ষমতা বৃদ্ধি, রাজনৈতিক দল ও ভোটারদের সম্পর্কোন্নয়ন এবং রাজনৈতিক সহিংসতা হ্রাসের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে ডিআইয়ের এই প্রকল্প।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, ডিআই এই প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা হলেও ইউএসএআইডি বাংলাদেশের পলিটিক্যাল প্রসেস অ্যাডভাইজার লুবাইন চৌধুরী মাসুম এই প্রকল্পের ম্যানেজারের দায়িত্বে আছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, লুবাইন চৌধুরী মাসুম ২০১৮ সালের জুলাই থেকে এই প্রকল্পের ম্যানেজারের দায়িত্বে আছেন। ২৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ‘স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ (এসপিএল) প্রকল্প ছাড়াও তিনি ২১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের নির্বাচনকেন্দ্রিক ‘নাগরিক’ প্রকল্প পরিচালনা করছেন।
পলিটিক্যাল প্রসেস অ্যাডভাইজার হিসেবে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতি, রাজনৈতিক প্রক্রিয়া, রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক দল, নির্বাচন পরিচালনা এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও শাসন (ডিআরজি) অফিসকে পরামর্শ ও বিশ্লেষণ সরবরাহ করেন। এ ছাড়া ইউএসএআইডির গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক শাসন, রাজনৈতিক দলকে সহায়তা, নির্বাচন প্রকল্প এবং অন্যান্য সুশাসন কার্যক্রম পরিচালনা করেন তিনি।
গত বছরের ২ ডিসেম্বর ওয়াশিংটন ডিসিতে এনডিআই সদর দপ্তর পরিদর্শনের পর লুবাইন চৌধুরী মাসুম লিংকডইন পোস্টে ইউএসএআইডির ২ কোটি ১০ লাখ ডলারের তহবিল প্রতিশ্রুতির তথ্য নিশ্চিত করেন। তিন বছর মেয়াদি ইউএসএআইডির এই নাগরিক প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ করছে ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইলেক্টোরাল সিস্টেমস (আইএফইএস), ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই)। এটি কনসোর্টিয়াম ফর ইলকেশনস অ্যান্ড পলিটিক্যাল প্রসেস স্ট্রেনদেনিংয়ের (সিইপিপিএস) আওতায় বাস্তবায়িত হচ্ছে।
মাইক্রো গভর্ন্যান্স রিসার্চ (এমজিআর) নামের একটি গবেষণা সংস্থার পরিচালকের দায়িত্বে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আইনুল ইসলাম।
গত ১১ সেপ্টেম্বর ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, ‘হ্যালো বাংলাদেশ ২.০! গত দুই বছরে এমজিআর, সেইভ ইয়ুথ ও ডিএফটিপি দেশজুড়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তরুণদের জন্য ৫৪৪টি অনুষ্ঠান ও কর্মসূচি পরিচালনা করেছে। কর্মশালার আকারে, প্রশিক্ষণ, কথোপকথন, সামিট, অ্যাকশন প্রকল্পসহ তরুণ গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব এবং নাগরিক সংশ্লিষ্টতার জন্য সরাসরি ২২১টি অ্যাকশন প্রকল্প, ১৭০টি গণতন্ত্র সেশনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ হাজার ২৬৪ তরুণের কাছে পৌঁছেছিল এমজিআর, সেইভ ইয়ুথ ও ডিএফটিপি! এসব কর্মসূচি বাস্তবায়ন নাগরিক প্রোগ্রামের আওতায় ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইলেক্টোরাল সিস্টেমস (আইএফইএস) এবং ইউএসএআইডি বাংলাদেশের উদার সমর্থন ও অংশীদারত্বে সম্ভব হয়েছে।’
আইনুল ইসলাম আইএফইএসের সিনিয়র কনসালট্যান্টের দায়িত্বেও রয়েছেন। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত অ্যাপ্লায়েড ডেমোক্রেসি ল্যাবের (এডিএল) প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক তিনি। ইউএসএআইডি ও আইএফইএসের সহায়তায় এই ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনুল ইসলাম।
এসপিএল প্রকল্প সম্পর্কে লুবাইন মাসুম বলেন, এর লক্ষ্য হলো বাংলাদেশের রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক চর্চার উন্নয়ন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়ানো। এই লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলের কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়ন ও সংঘাত নিরসনবিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়; নারীদের রাজনৈতিক ও নির্বাচনী অংশগ্রহণ বাড়ানো হয়; রাজনৈতিক সহিংসতা পর্যবেক্ষণ করা হয় এবং শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন প্রচার করা হয়। দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট ও দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশনকে প্রকল্পের প্রধান উপগ্রহিতা হিসেবে তুলে ধরেন তিনি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই প্রকল্পের একটি অংশের কাজ বাস্তবায়ন করা হয়। এর আওতায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় ইয়ুথ মোবিলাইজেশন অফিসার নিয়োগ করা হয়।
দ্য হাংগার প্রজেক্ট বাংলাদেশের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশের পাঁচটি বিভাগের ৯টি জেলার ১৫টি উপজেলায় তারা এসপিএল প্রকল্পের কাজ করে। তাদের কাজ হলো ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের বিদ্যমান ‘মনিটরিং-ম্যাপিং-মিটিগেশন’ মডেল সম্প্রসারণে সহায়তা করা।
অনুসন্ধানে আরও দেখা যায়, প্রকল্প চলাকালে দ্য হাংগার প্রজেক্টের বাংলাদেশ প্রধান ছিলেন অন্তবর্তী সরকারের নির্বাচন সংস্কারবিষয়ক কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার। তিনি একই সঙ্গে দ্য হাংগার প্রজেক্টের বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর ও গ্লোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তিনি ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে অবসরে যান। ১৯৯৩ সালে তিনি এই সংস্থায় যোগ দেন। ২০০৩ সালে তিনি দ্য হাংগার প্রজেক্টের গ্লোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
এদিকে ২০২৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ইউএসএআইডির অর্থায়নে বাংলাদেশে পরিচালিত বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য পণ্য সরবরাহ বা সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) অব্যাহতির সিদ্ধান্ত দিয়েছে। তাতে দেখা যায়, ২০১৭ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত মেয়াদে প্রকল্পের বাস্তবায়নকারী ডেমোক্র্যাসি ইন্টারন্যাশনাল এই কাজে দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশনকে সঙ্গে নিয়েছে।
ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের বিষয়ে জানতে অনুসন্ধান করে দেখা যায়, ডিআই নিজেকে অরাজনৈতিক সংস্থা হিসেবে উপস্থাপন করে। তবে এর নেতৃত্ব ও কার্যক্রম গণতন্ত্র প্রচারের প্রচেষ্টার সঙ্গে যুক্ত, যা ঐতিহাসিকভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাটিক পার্টিঘনিষ্ঠ প্রতিষ্ঠানগুলোর দ্বারা বেশি সমর্থিত।
উদাহরণস্বরূপ, ডিআইয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট এরিক বেয়ার্নল্যান্ড এনডিআইয়ের সঙ্গে ব্যাপকভাবে কাজ করেছেন, যা মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সঙ্গে সম্পর্কিত।
এছাড়া গ্লেন কাউয়ান নামে ডিআইয়ের আরেক সহপ্রতিষ্ঠাতা রাজনৈতিক পরামর্শদাতার ভূমিকা পালন করেছেন এবং প্রগতিশীল ও গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের সঙ্গে কাজ করেছেন।
ইউএসএআইডি ও স্টেট ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছে ডিআই। গণতন্ত্র প্রচারের ক্ষেত্রে ডিআই আনুষ্ঠানিকভাবে অরাজনৈতিক অবস্থানে থাকলেও এর শাসনব্যবস্থা উন্নয়ন, নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ও গণতান্ত্রিক বিকাশের প্রচেষ্টা প্রায়ই উদারপন্থী আন্তর্জাতিকতাবাদী মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এটি সাধারণত ডেমোক্র্যাটদের আদর্শের সঙ্গে মেলে, যেখানে রিপাবলিকানরা বাস্তববাদী এবং সার্বভৌমত্বের ওপর অধিক জোর দেয় এবং গণতন্ত্র প্রচারের পরিবর্তে ভূরাজনৈতিক কৌশলকে অগ্রাধিকার দেয়।
আরও খবর পড়ুন:

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণা করা হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন সন্ধ্যা ৬টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) ভোট গ্রহণ করা হতে পারে।
২৮ মিনিট আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগের দিন গতকাল বুধবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মো. মাহফুজ আলম। সন্ধ্যায় তাঁরা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। প্রধান উপদেষ্টা তাঁদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন।
৩৫ মিনিট আগে
মোবাইল ফোন চোরাচালান, ব্যবহৃত ও নকল ফোনের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ এবং অপরাধ প্রতিরোধে ১৬ ডিসেম্বর থেকে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) ব্যবস্থা চালু হবে। তবে বর্তমানে দেশে থাকা সব অনিবন্ধিত মোবাইল ফোন আগামী বছরের ১৫ মার্চ পর্যন্ত নিবন্ধন করা যাবে।
২ ঘণ্টা আগে
জুলাই–আগস্ট অভ্যুত্থানে সংঘটিত হতাহতের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্তভাবে ভারতের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
২ ঘণ্টা আগেসংসদ নির্বাচন ও গণভোট
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণা করা হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন সন্ধ্যা ৬টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) ভোট গ্রহণ করা হতে পারে।
ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ গতকাল বুধবার সাংবাদিকদের জানান, প্রধান নির্বাচন কমিশনারের ভাষণ ইতোমধ্যে গতকাল বিকেলে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারের জন্য সিইসির ভাষণ রেকর্ড করা হয়েছে। আজ সন্ধ্যা ৬টায় সেই ভাষণ প্রচার করা হবে।
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ইসির সাক্ষাৎ
প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনের একটি প্রতিনিধিদল গতকাল বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সংসদ নির্বাচন ও গণভোট আয়োজনের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে তাঁকে অবহিত করে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমানেল মাছউদ, বেগম তাহমিদা আহমদ, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ এবং ইসি সিনিয়র সচিব মো. আখতার আহমেদ।
সাক্ষাতে রাষ্ট্রপতিকে ভোটার তালিকা হালনাগাদ, নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন, প্রবাসী ভোটারদের ভোটাধিকার (ওসিভি) এবং দেশের ভেতরে ডাকযোগে ভোট (আইসিপিভি) চালুর প্রস্তুতিসহ বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত করা হয়।
এ ছাড়া একই দিনে একযোগে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের জন্য দুটি আলাদা ব্যালট পেপার ব্যবহারের পরিকল্পনার কথাও রাষ্ট্রপতিকে জানানো হয়।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশনকে একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের জন্য সব ধরনের সহযোগিতা ও সমর্থন দেওয়ার আশ্বাস দেন।
সাক্ষাৎ শেষে ইসি সচিব সাংবাদিকদের জানান, ‘আমরা বিস্তারিতভাবে অবহিত করার পর রাষ্ট্রপতি সামগ্রিক প্রস্তুতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।’
সচিব আরও বলেন, ভোট গ্রহণের সময় এক ঘণ্টা বাড়ানোর সিদ্ধান্তের কথাও রাষ্ট্রপতিকে জানানো হয়েছে। এবার ভোট গ্রহণ হবে সকাল ৭টা ৩০ মিনিট থেকে বিকেল ৪টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত। এ সিদ্ধান্তকে রাষ্ট্রপতি যৌক্তিক বলে উল্লেখ করে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
এবারের নির্বাচনে ৩০০টি সংসদীয় আসনের ৪২ হাজার ৭৬১টি ভোটকেন্দ্রে ১২ কোটি ৭৬ লাখ ভোটার তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। সংসদ ও গণভোটের কারণে কিছু ভোটকক্ষ ও গোপন কক্ষ (যেখানে ব্যালটে সিল দেওয়া হয়) বাড়াবে ইসি। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য বরাবরের মতো সাদা রঙের ব্যালট পেপার আর গণভোটের জন্য গোলাপি রঙের ব্যালট পেপার ব্যবহৃত হবে।
বাগেরহাটে চারটি আসন বহাল
বাগেরহাটের সংসদীয় আসন একটি কমিয়ে আনার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের গেজেটকে অবৈধ ঘোষণা করা হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে গতকাল আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। ফলে নতুন করে সংসদীয় আসনের সীমানার গেজেট প্রকাশ না করে ৩০০ আসনে তফসিল ঘোষণা করতে পারবে না নির্বাচন কমিশন।
আজ তফসিল ঘোষণা করতে হলে আদালতের আদেশ অনুযায়ী নতুন করে সংসদীয় আসনের সীমানার গেজেট প্রকাশ করতে হবে। তা ছাড়া আইন অনুযায়ী, ৩০০ আসনের তফসিল ঘোষণা করতে পারবে না। এ ক্ষেত্রে বাগেরহাট ও গাজীপুর জেলার আসনগুলো বাদ রেখে ২৯১টি আসনে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে।
সূত্র আরও জানায়, কমিশনের এই বিষয়ে রিভিউ করার সুযোগ রয়েছে। তবে কমিশন বর্তমান পরিস্থিতিতে আর রিভিউ করতে চায় না। কমিশন মনে করছে, এটা ইসির পক্ষে যাবে না, ইসি আদালতের রায় মেনে নিয়েছে। আজ তফসিলের আগেই আদালতের আদেশ ইসিতে চলে আসবে। কমিশনের পক্ষে যেসব কাজ করা প্রয়োজন, সেগুলো করা হচ্ছে। দ্রুতই গেজেট প্রকাশ করা হবে।
যদিও নির্বাচন কমিশন ভবনে গতকাল এক ব্রিফিংয়ে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ সীমানা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আমরা এখনো আদালতের রায় হাতে পাইনি। সে জন্য আপাতত ৩০০ সংসদীয় আসনেই তফসিল ঘোষণা করা হবে।’
এর আগে গত ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন ৩০০ আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ চূড়ান্ত করে। এতে ১৬ জেলার ৪৬টি সংসদীয় আসনের সীমানায় পরিবর্তন আনা হয়। এর ফলে বাগেরহাটে আসনসংখ্যা ৪টি থেকে কমিয়ে ৩টি করা হয় এবং গাজীপুরে আসন সংখ্যা ৫টি থেকে একটি বাড়িয়ে ৬টি করা হয়। আপিল বিভাগের রায়ের পর এখন নির্বাচন কমিশনকে বাগেরহাটে আবার ৪টি আসন এবং গাজীপুরে ৫টি আসন পুনর্বহাল করতে হবে।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণা করা হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন সন্ধ্যা ৬টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) ভোট গ্রহণ করা হতে পারে।
ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ গতকাল বুধবার সাংবাদিকদের জানান, প্রধান নির্বাচন কমিশনারের ভাষণ ইতোমধ্যে গতকাল বিকেলে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারের জন্য সিইসির ভাষণ রেকর্ড করা হয়েছে। আজ সন্ধ্যা ৬টায় সেই ভাষণ প্রচার করা হবে।
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ইসির সাক্ষাৎ
প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনের একটি প্রতিনিধিদল গতকাল বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সংসদ নির্বাচন ও গণভোট আয়োজনের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে তাঁকে অবহিত করে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমানেল মাছউদ, বেগম তাহমিদা আহমদ, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ এবং ইসি সিনিয়র সচিব মো. আখতার আহমেদ।
সাক্ষাতে রাষ্ট্রপতিকে ভোটার তালিকা হালনাগাদ, নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন, প্রবাসী ভোটারদের ভোটাধিকার (ওসিভি) এবং দেশের ভেতরে ডাকযোগে ভোট (আইসিপিভি) চালুর প্রস্তুতিসহ বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত করা হয়।
এ ছাড়া একই দিনে একযোগে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের জন্য দুটি আলাদা ব্যালট পেপার ব্যবহারের পরিকল্পনার কথাও রাষ্ট্রপতিকে জানানো হয়।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশনকে একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের জন্য সব ধরনের সহযোগিতা ও সমর্থন দেওয়ার আশ্বাস দেন।
সাক্ষাৎ শেষে ইসি সচিব সাংবাদিকদের জানান, ‘আমরা বিস্তারিতভাবে অবহিত করার পর রাষ্ট্রপতি সামগ্রিক প্রস্তুতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।’
সচিব আরও বলেন, ভোট গ্রহণের সময় এক ঘণ্টা বাড়ানোর সিদ্ধান্তের কথাও রাষ্ট্রপতিকে জানানো হয়েছে। এবার ভোট গ্রহণ হবে সকাল ৭টা ৩০ মিনিট থেকে বিকেল ৪টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত। এ সিদ্ধান্তকে রাষ্ট্রপতি যৌক্তিক বলে উল্লেখ করে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
এবারের নির্বাচনে ৩০০টি সংসদীয় আসনের ৪২ হাজার ৭৬১টি ভোটকেন্দ্রে ১২ কোটি ৭৬ লাখ ভোটার তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। সংসদ ও গণভোটের কারণে কিছু ভোটকক্ষ ও গোপন কক্ষ (যেখানে ব্যালটে সিল দেওয়া হয়) বাড়াবে ইসি। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য বরাবরের মতো সাদা রঙের ব্যালট পেপার আর গণভোটের জন্য গোলাপি রঙের ব্যালট পেপার ব্যবহৃত হবে।
বাগেরহাটে চারটি আসন বহাল
বাগেরহাটের সংসদীয় আসন একটি কমিয়ে আনার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের গেজেটকে অবৈধ ঘোষণা করা হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে গতকাল আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। ফলে নতুন করে সংসদীয় আসনের সীমানার গেজেট প্রকাশ না করে ৩০০ আসনে তফসিল ঘোষণা করতে পারবে না নির্বাচন কমিশন।
আজ তফসিল ঘোষণা করতে হলে আদালতের আদেশ অনুযায়ী নতুন করে সংসদীয় আসনের সীমানার গেজেট প্রকাশ করতে হবে। তা ছাড়া আইন অনুযায়ী, ৩০০ আসনের তফসিল ঘোষণা করতে পারবে না। এ ক্ষেত্রে বাগেরহাট ও গাজীপুর জেলার আসনগুলো বাদ রেখে ২৯১টি আসনে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে।
সূত্র আরও জানায়, কমিশনের এই বিষয়ে রিভিউ করার সুযোগ রয়েছে। তবে কমিশন বর্তমান পরিস্থিতিতে আর রিভিউ করতে চায় না। কমিশন মনে করছে, এটা ইসির পক্ষে যাবে না, ইসি আদালতের রায় মেনে নিয়েছে। আজ তফসিলের আগেই আদালতের আদেশ ইসিতে চলে আসবে। কমিশনের পক্ষে যেসব কাজ করা প্রয়োজন, সেগুলো করা হচ্ছে। দ্রুতই গেজেট প্রকাশ করা হবে।
যদিও নির্বাচন কমিশন ভবনে গতকাল এক ব্রিফিংয়ে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ সীমানা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আমরা এখনো আদালতের রায় হাতে পাইনি। সে জন্য আপাতত ৩০০ সংসদীয় আসনেই তফসিল ঘোষণা করা হবে।’
এর আগে গত ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন ৩০০ আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ চূড়ান্ত করে। এতে ১৬ জেলার ৪৬টি সংসদীয় আসনের সীমানায় পরিবর্তন আনা হয়। এর ফলে বাগেরহাটে আসনসংখ্যা ৪টি থেকে কমিয়ে ৩টি করা হয় এবং গাজীপুরে আসন সংখ্যা ৫টি থেকে একটি বাড়িয়ে ৬টি করা হয়। আপিল বিভাগের রায়ের পর এখন নির্বাচন কমিশনকে বাগেরহাটে আবার ৪টি আসন এবং গাজীপুরে ৫টি আসন পুনর্বহাল করতে হবে।

গত শুক্রবার ট্রাম্পের এক মন্তব্যের পর এই সহায়তা কারা পেয়েছেন, তা নিয়ে বাংলাদেশে সাড়া পড়ে গেছে। ট্রাম্প বলেছেন, এই তহবিল বাংলাদেশের এমন একটি ফার্ম বা প্রতিষ্ঠান নিয়েছে, যেখানে মাত্র দুজন কাজ করেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশ শক্তিশালীকরণের নামে এই তহবিল বরাদ্দ ছিল।
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগের দিন গতকাল বুধবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মো. মাহফুজ আলম। সন্ধ্যায় তাঁরা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। প্রধান উপদেষ্টা তাঁদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন।
৩৫ মিনিট আগে
মোবাইল ফোন চোরাচালান, ব্যবহৃত ও নকল ফোনের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ এবং অপরাধ প্রতিরোধে ১৬ ডিসেম্বর থেকে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) ব্যবস্থা চালু হবে। তবে বর্তমানে দেশে থাকা সব অনিবন্ধিত মোবাইল ফোন আগামী বছরের ১৫ মার্চ পর্যন্ত নিবন্ধন করা যাবে।
২ ঘণ্টা আগে
জুলাই–আগস্ট অভ্যুত্থানে সংঘটিত হতাহতের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্তভাবে ভারতের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
২ ঘণ্টা আগেবিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগের দিন গতকাল বুধবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মো. মাহফুজ আলম। সন্ধ্যায় তাঁরা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। প্রধান উপদেষ্টা তাঁদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে এই দুই উপদেষ্টার পদত্যাগপত্র কার্যকর হবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
তফসিল ঘোষণার তোড়জোড়ের মধ্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের পদত্যাগের গুঞ্জন ওঠে। গতকাল দুপুরে আসিফ মাহমুদ জরুরি সংবাদ সম্মেলন করবেন বলে গত মঙ্গলবার রাতে জানায় স্থানীয় সরকার বিভাগ।
দুপুরে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে আসিফ মাহমুদ জানান, তাঁর পদত্যাগের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানাবে। এ বিষয়ে তিনি কিছু জানাতে পারবেন না। পরে সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় গিয়ে আসিফ ও মাহফুজ তাঁর কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন।
পরে সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম যমুনার সামনে সংবাদ সম্মেলনে জানান, উপদেষ্টা আসিফ ও মাহফুজের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। তাঁদের পদত্যাগ নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে কার্যকর হবে।
আসিফ ও মাহফুজ পদত্যাগ করায় অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার সংখ্যা কমে ২০ জনে দাঁড়াবে। এই দুই উপদেষ্টার হাতে থাকা তিনটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব কাদের দেওয়া হবে, এমন প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, ‘এই বিষয়টি পুরোপুরি প্রধান উপদেষ্টার এখতিয়ার। তিনি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে পারবেন। আমি পদত্যাগপত্র দেখিনি।’
উপদেষ্টার পদে থেকে নির্বাচন করতে আইনি বাধা না থাকলেও অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের অনেকেই মত দিয়েছিলেন, তফসিল ঘোষণার পর দুই ছাত্র উপদেষ্টার সরকারে থাকা উচিত হবে না। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া সমন্বয়কদের নেতৃত্বে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) গঠনের পর অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন, উপদেষ্টা আসিফ ও মাহফুজ এই দলে যোগ দেবেন। তাঁরা দুজন সরকারে থাকার কারণে এনসিপি বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে বলেও অভিযোগ ওঠে।
বিএনপি গত ২৪ মে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে লিখিতভাবে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠনের দাবি জানায়। সেদিন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছিলেন, ‘পদত্যাগের ব্যাপারে আমরা লিখিত বক্তব্যে জানিয়েছি, আগেও জানিয়েছি। নিরাপত্তা উপদেষ্টা (খলিলুর রহমান) এবং দুজন ছাত্র উপদেষ্টার (আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও মাহফুজ আলম) কারণে এই সরকারের নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন হচ্ছে, তাঁদের বাদ দেওয়ার জন্য আজকেও লিখিত বক্তব্য দিয়েছি, মুখেও বলেছি।’
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে তিনজন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে জায়গা পান। মো. নাহিদ ইসলামকে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। আসিফ মাহমুদকে প্রথমে শ্রম মন্ত্রণালয় দেওয়া হলেও পরে তাঁকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
মাহফুজ আলম প্রথমে উপদেষ্টা পদমর্যাদায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীর দায়িত্ব পান। এরপর তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিয়ে দপ্তরবিহীন ছিলেন। গত ফেব্রুয়ারিতে নাহিদ ইসলাম উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করে এনসিপির আহ্বায়ক হলে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান মাহফুজ আলম।
এনসিপিতে যাচ্ছেন না আসিফ
পদত্যাগের গুঞ্জনের মধ্যে দুপুরে সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলনকক্ষে সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘কোন অবস্থায় দায়িত্ব পেয়েছিলাম আর কোন অবস্থায় রেখে যাচ্ছি, সেটা আপনাদের জানাব। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ১২-১৩ মাসের কার্যক্রম তুলে ধরছি।’ এরপর নিজের হাতে থাকা দুই মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কার্যক্রমের বিস্তারিত ঘণ্টাব্যাপী তুলে ধরেন তিনি।
এরপর সাংবাদিকেরা তাঁর পদত্যাগের বিষয়ে প্রশ্ন করলে স্পষ্ট করে কিছু না বললেও আসিফ জানান, তিনি এবারের নির্বাচনে অংশ নেবেন। কোন দল থেকে নির্বাচন করবেন, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমি নির্বাচন করব, এটা স্পষ্টভাবেই বলা যায়। কিন্তু কোথায় থেকে করব, কোন দল থেকে, সেটা পরবর্তী সিদ্ধান্ত। আমরা এখন একটা পর্যায়ে আছি, পরের পর্যায় সবার সামনে আসবে।’
এনসিপি বা অন্য কোনো দল থেকে নির্বাচন করবেন কি না, এ প্রশ্নে আসিফ বলেন, ‘এ বিষয়ে সত্যিকার অর্থে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এ বিষয়ে যদি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়, তাহলে সবাই জানতে পারবেন।’ এনসিপিতে যোগ দেবেন কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, যাঁরা গণ-অভ্যুত্থানে তাঁর সহযোগী ছিলেন, তাঁরাই সেই দলটা করেছেন। তিনি অনেক আগেই বলেছেন, এটা ধরে নেওয়া ঠিক হবে না, তিনি সেই দলেই যুক্ত হবেন বা অংশগ্রহণ করবেন।
আসিফ জানান, সকালে তিনি সম্পদের হিসাব দিয়েছেন এবং নিজের কূটনৈতিক পাসপোর্টও বাতিল করেছেন।
কিছুদিন আগে কুমিল্লা থেকে ঢাকা-১০ এলাকার ভোটার হয়েছেন আসিফ মাহমুদ। শোনা যাচ্ছে, তিনি ঢাকা-১০ আসনে নির্বাচন করবেন।
মাহফুজ আলম নির্বাচন করবেন কি না, সে বিষয়ে কিছুই জানাননি। মাহফুজ লক্ষ্মীপুর-১ আসনের ভোটার। আসিফ ও মাহফুজ বিএনপির প্রার্থী হতে পারেন বলে গুঞ্জন থাকলেও ঢাকা-১০ আসনে ইতিমধ্যে দলীয় প্রার্থী দিয়েছে বিএনপি। বাংলাদেশ এলডিপিকে বিলুপ্ত করে ৮ ডিসেম্বর বিএনপিতে যোগ দেওয়া দলটির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিমকে লক্ষ্মীপুর-১ আসনে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে বলে বিএনপির সূত্র বলেছে।
এনসিপি গতকাল ১২৫ আসনে দলীয় প্রার্থীদের যে তালিকা ঘোষণা করেছে, সেখানে ঢাকা-১০ ও লক্ষ্মীপুর-১ আসনে কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি।
প্রধান উপদেষ্টার মঙ্গল কামনা
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখসারিতে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া দুই ছাত্র উপদেষ্টার পদত্যাগপত্র গ্রহণের পর প্রধান উপদেষ্টা তাঁদের ভবিষ্যৎ জীবনের মঙ্গল কামনা করেছেন বলে জানান প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তাঁদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিয়ে তোমরা যেভাবে জাতিকে ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে মুক্তির পথে অবদান রেখেছ, তা জাতি মনে রাখবে। আমি বিশ্বাস করি, ভবিষ্যতেও গণতান্ত্রিক উত্তরণ ও বিকাশে তোমরা একইভাবে সক্রিয় ভূমিকা রাখবে।’
শফিকুল বলেন, নিজেদের কর্মের মাধ্যমে দেশের মঙ্গলে নিয়োজিত থাকার আহ্বান জানিয়ে দুই ছাত্র উপদেষ্টার উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সরকারে থেকে যে অভিজ্ঞতা তাঁরা অর্জন করেছেন, তা ভবিষ্যৎ জীবনে অবশ্যই কাজে লাগাতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা সরকারের তরফ থেকে সব সময় একই কথা বলছি, নির্বাচন ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে হবে। আমরা যখন গ্রামে বা বিভিন্ন জেলা শহরে যাই, আমরা দেখেছি সেখানেও নির্বাচনের জোয়ার বইছে। কিন্তু কিছু কিছু তথাকথিত কমেন্টেটর ইউটিউবে বা বিভিন্ন টিভিতে বসে এই সন্দেহগুলো ছড়িয়েছে। তাদের মধ্যে তথাকথিত কিছু জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকও আছেন।’

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগের দিন গতকাল বুধবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মো. মাহফুজ আলম। সন্ধ্যায় তাঁরা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। প্রধান উপদেষ্টা তাঁদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে এই দুই উপদেষ্টার পদত্যাগপত্র কার্যকর হবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
তফসিল ঘোষণার তোড়জোড়ের মধ্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের পদত্যাগের গুঞ্জন ওঠে। গতকাল দুপুরে আসিফ মাহমুদ জরুরি সংবাদ সম্মেলন করবেন বলে গত মঙ্গলবার রাতে জানায় স্থানীয় সরকার বিভাগ।
দুপুরে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে আসিফ মাহমুদ জানান, তাঁর পদত্যাগের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানাবে। এ বিষয়ে তিনি কিছু জানাতে পারবেন না। পরে সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় গিয়ে আসিফ ও মাহফুজ তাঁর কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন।
পরে সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম যমুনার সামনে সংবাদ সম্মেলনে জানান, উপদেষ্টা আসিফ ও মাহফুজের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। তাঁদের পদত্যাগ নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে কার্যকর হবে।
আসিফ ও মাহফুজ পদত্যাগ করায় অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার সংখ্যা কমে ২০ জনে দাঁড়াবে। এই দুই উপদেষ্টার হাতে থাকা তিনটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব কাদের দেওয়া হবে, এমন প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, ‘এই বিষয়টি পুরোপুরি প্রধান উপদেষ্টার এখতিয়ার। তিনি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে পারবেন। আমি পদত্যাগপত্র দেখিনি।’
উপদেষ্টার পদে থেকে নির্বাচন করতে আইনি বাধা না থাকলেও অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের অনেকেই মত দিয়েছিলেন, তফসিল ঘোষণার পর দুই ছাত্র উপদেষ্টার সরকারে থাকা উচিত হবে না। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া সমন্বয়কদের নেতৃত্বে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) গঠনের পর অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন, উপদেষ্টা আসিফ ও মাহফুজ এই দলে যোগ দেবেন। তাঁরা দুজন সরকারে থাকার কারণে এনসিপি বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে বলেও অভিযোগ ওঠে।
বিএনপি গত ২৪ মে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে লিখিতভাবে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠনের দাবি জানায়। সেদিন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছিলেন, ‘পদত্যাগের ব্যাপারে আমরা লিখিত বক্তব্যে জানিয়েছি, আগেও জানিয়েছি। নিরাপত্তা উপদেষ্টা (খলিলুর রহমান) এবং দুজন ছাত্র উপদেষ্টার (আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও মাহফুজ আলম) কারণে এই সরকারের নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন হচ্ছে, তাঁদের বাদ দেওয়ার জন্য আজকেও লিখিত বক্তব্য দিয়েছি, মুখেও বলেছি।’
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে তিনজন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে জায়গা পান। মো. নাহিদ ইসলামকে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। আসিফ মাহমুদকে প্রথমে শ্রম মন্ত্রণালয় দেওয়া হলেও পরে তাঁকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
মাহফুজ আলম প্রথমে উপদেষ্টা পদমর্যাদায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীর দায়িত্ব পান। এরপর তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিয়ে দপ্তরবিহীন ছিলেন। গত ফেব্রুয়ারিতে নাহিদ ইসলাম উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করে এনসিপির আহ্বায়ক হলে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান মাহফুজ আলম।
এনসিপিতে যাচ্ছেন না আসিফ
পদত্যাগের গুঞ্জনের মধ্যে দুপুরে সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলনকক্ষে সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘কোন অবস্থায় দায়িত্ব পেয়েছিলাম আর কোন অবস্থায় রেখে যাচ্ছি, সেটা আপনাদের জানাব। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ১২-১৩ মাসের কার্যক্রম তুলে ধরছি।’ এরপর নিজের হাতে থাকা দুই মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কার্যক্রমের বিস্তারিত ঘণ্টাব্যাপী তুলে ধরেন তিনি।
এরপর সাংবাদিকেরা তাঁর পদত্যাগের বিষয়ে প্রশ্ন করলে স্পষ্ট করে কিছু না বললেও আসিফ জানান, তিনি এবারের নির্বাচনে অংশ নেবেন। কোন দল থেকে নির্বাচন করবেন, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমি নির্বাচন করব, এটা স্পষ্টভাবেই বলা যায়। কিন্তু কোথায় থেকে করব, কোন দল থেকে, সেটা পরবর্তী সিদ্ধান্ত। আমরা এখন একটা পর্যায়ে আছি, পরের পর্যায় সবার সামনে আসবে।’
এনসিপি বা অন্য কোনো দল থেকে নির্বাচন করবেন কি না, এ প্রশ্নে আসিফ বলেন, ‘এ বিষয়ে সত্যিকার অর্থে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এ বিষয়ে যদি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়, তাহলে সবাই জানতে পারবেন।’ এনসিপিতে যোগ দেবেন কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, যাঁরা গণ-অভ্যুত্থানে তাঁর সহযোগী ছিলেন, তাঁরাই সেই দলটা করেছেন। তিনি অনেক আগেই বলেছেন, এটা ধরে নেওয়া ঠিক হবে না, তিনি সেই দলেই যুক্ত হবেন বা অংশগ্রহণ করবেন।
আসিফ জানান, সকালে তিনি সম্পদের হিসাব দিয়েছেন এবং নিজের কূটনৈতিক পাসপোর্টও বাতিল করেছেন।
কিছুদিন আগে কুমিল্লা থেকে ঢাকা-১০ এলাকার ভোটার হয়েছেন আসিফ মাহমুদ। শোনা যাচ্ছে, তিনি ঢাকা-১০ আসনে নির্বাচন করবেন।
মাহফুজ আলম নির্বাচন করবেন কি না, সে বিষয়ে কিছুই জানাননি। মাহফুজ লক্ষ্মীপুর-১ আসনের ভোটার। আসিফ ও মাহফুজ বিএনপির প্রার্থী হতে পারেন বলে গুঞ্জন থাকলেও ঢাকা-১০ আসনে ইতিমধ্যে দলীয় প্রার্থী দিয়েছে বিএনপি। বাংলাদেশ এলডিপিকে বিলুপ্ত করে ৮ ডিসেম্বর বিএনপিতে যোগ দেওয়া দলটির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিমকে লক্ষ্মীপুর-১ আসনে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে বলে বিএনপির সূত্র বলেছে।
এনসিপি গতকাল ১২৫ আসনে দলীয় প্রার্থীদের যে তালিকা ঘোষণা করেছে, সেখানে ঢাকা-১০ ও লক্ষ্মীপুর-১ আসনে কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি।
প্রধান উপদেষ্টার মঙ্গল কামনা
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখসারিতে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া দুই ছাত্র উপদেষ্টার পদত্যাগপত্র গ্রহণের পর প্রধান উপদেষ্টা তাঁদের ভবিষ্যৎ জীবনের মঙ্গল কামনা করেছেন বলে জানান প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তাঁদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিয়ে তোমরা যেভাবে জাতিকে ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে মুক্তির পথে অবদান রেখেছ, তা জাতি মনে রাখবে। আমি বিশ্বাস করি, ভবিষ্যতেও গণতান্ত্রিক উত্তরণ ও বিকাশে তোমরা একইভাবে সক্রিয় ভূমিকা রাখবে।’
শফিকুল বলেন, নিজেদের কর্মের মাধ্যমে দেশের মঙ্গলে নিয়োজিত থাকার আহ্বান জানিয়ে দুই ছাত্র উপদেষ্টার উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সরকারে থেকে যে অভিজ্ঞতা তাঁরা অর্জন করেছেন, তা ভবিষ্যৎ জীবনে অবশ্যই কাজে লাগাতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা সরকারের তরফ থেকে সব সময় একই কথা বলছি, নির্বাচন ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে হবে। আমরা যখন গ্রামে বা বিভিন্ন জেলা শহরে যাই, আমরা দেখেছি সেখানেও নির্বাচনের জোয়ার বইছে। কিন্তু কিছু কিছু তথাকথিত কমেন্টেটর ইউটিউবে বা বিভিন্ন টিভিতে বসে এই সন্দেহগুলো ছড়িয়েছে। তাদের মধ্যে তথাকথিত কিছু জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকও আছেন।’

গত শুক্রবার ট্রাম্পের এক মন্তব্যের পর এই সহায়তা কারা পেয়েছেন, তা নিয়ে বাংলাদেশে সাড়া পড়ে গেছে। ট্রাম্প বলেছেন, এই তহবিল বাংলাদেশের এমন একটি ফার্ম বা প্রতিষ্ঠান নিয়েছে, যেখানে মাত্র দুজন কাজ করেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশ শক্তিশালীকরণের নামে এই তহবিল বরাদ্দ ছিল।
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণা করা হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন সন্ধ্যা ৬টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) ভোট গ্রহণ করা হতে পারে।
২৮ মিনিট আগে
মোবাইল ফোন চোরাচালান, ব্যবহৃত ও নকল ফোনের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ এবং অপরাধ প্রতিরোধে ১৬ ডিসেম্বর থেকে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) ব্যবস্থা চালু হবে। তবে বর্তমানে দেশে থাকা সব অনিবন্ধিত মোবাইল ফোন আগামী বছরের ১৫ মার্চ পর্যন্ত নিবন্ধন করা যাবে।
২ ঘণ্টা আগে
জুলাই–আগস্ট অভ্যুত্থানে সংঘটিত হতাহতের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্তভাবে ভারতের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
২ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

মোবাইল ফোন চোরাচালান, ব্যবহৃত ও নকল ফোনের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ এবং অপরাধ প্রতিরোধে ১৬ ডিসেম্বর থেকে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) ব্যবস্থা চালু হবে। তবে বর্তমানে দেশে থাকা সব অনিবন্ধিত মোবাইল ফোন আগামী বছরের ১৫ মার্চ পর্যন্ত নিবন্ধন করা যাবে।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মুহম্মদ জসীম উদ্দিন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মোবাইল বিজনেস কমিউনিটি বাংলাদেশের (এমবিসিবি) সঙ্গে এ বিষয়ে গত তিন দিন ধারাবাহিক আলোচনা শেষে ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে দেশে থাকা সব অনিবন্ধিত মোবাইল ফোন ১৬ ডিসেম্বরের পরিবর্তে ১৫ মার্চের মধ্যে নিবন্ধন করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মোবাইল ফোন আমদানিতে কোনো বাধা নেই। কত পুরোনো ও কোন কোন মডেলের ফোন আমদানি করা যাবে, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ তা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ উপযুক্ত কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবে। তবে সরকারের উপযুক্ত কর্তৃপক্ষকে আমদানির বিষয়ে জানাতে হবে। সব পক্ষকে আগামীকাল বৃহস্পতিবারের (১১ ডিসেম্বর) মধ্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগকে লিখিতভাবে এ বিষয়ে জানাতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া মোবাইল ফোন আমদানিতে শুল্ক পুনর্নির্ধারণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা চলমান রয়েছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এ বিষয়ে মধ্যস্থতা করবে। আমদানিকারক ও উৎপাদনকারীরা একসঙ্গে বসে সরকারকে লিখিতভাবে জানাবে।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় আন্দোলনরত মোবাইল ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলেছে, এ সিদ্ধান্তের পর দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নষ্ট করার অপচেষ্টা থেকে বিরত থাকার জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ১৬ ডিসেম্বর এনইআইআর উদ্বোধন হবে। যেখানে মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এবং মোবাইল বিজনেস কমিউনিটির নেতারা দৃঢ় সমর্থন জানিয়েছেন।

মোবাইল ফোন চোরাচালান, ব্যবহৃত ও নকল ফোনের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ এবং অপরাধ প্রতিরোধে ১৬ ডিসেম্বর থেকে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) ব্যবস্থা চালু হবে। তবে বর্তমানে দেশে থাকা সব অনিবন্ধিত মোবাইল ফোন আগামী বছরের ১৫ মার্চ পর্যন্ত নিবন্ধন করা যাবে।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মুহম্মদ জসীম উদ্দিন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মোবাইল বিজনেস কমিউনিটি বাংলাদেশের (এমবিসিবি) সঙ্গে এ বিষয়ে গত তিন দিন ধারাবাহিক আলোচনা শেষে ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে দেশে থাকা সব অনিবন্ধিত মোবাইল ফোন ১৬ ডিসেম্বরের পরিবর্তে ১৫ মার্চের মধ্যে নিবন্ধন করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মোবাইল ফোন আমদানিতে কোনো বাধা নেই। কত পুরোনো ও কোন কোন মডেলের ফোন আমদানি করা যাবে, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ তা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ উপযুক্ত কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবে। তবে সরকারের উপযুক্ত কর্তৃপক্ষকে আমদানির বিষয়ে জানাতে হবে। সব পক্ষকে আগামীকাল বৃহস্পতিবারের (১১ ডিসেম্বর) মধ্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগকে লিখিতভাবে এ বিষয়ে জানাতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া মোবাইল ফোন আমদানিতে শুল্ক পুনর্নির্ধারণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা চলমান রয়েছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এ বিষয়ে মধ্যস্থতা করবে। আমদানিকারক ও উৎপাদনকারীরা একসঙ্গে বসে সরকারকে লিখিতভাবে জানাবে।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় আন্দোলনরত মোবাইল ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলেছে, এ সিদ্ধান্তের পর দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নষ্ট করার অপচেষ্টা থেকে বিরত থাকার জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ১৬ ডিসেম্বর এনইআইআর উদ্বোধন হবে। যেখানে মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এবং মোবাইল বিজনেস কমিউনিটির নেতারা দৃঢ় সমর্থন জানিয়েছেন।

গত শুক্রবার ট্রাম্পের এক মন্তব্যের পর এই সহায়তা কারা পেয়েছেন, তা নিয়ে বাংলাদেশে সাড়া পড়ে গেছে। ট্রাম্প বলেছেন, এই তহবিল বাংলাদেশের এমন একটি ফার্ম বা প্রতিষ্ঠান নিয়েছে, যেখানে মাত্র দুজন কাজ করেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশ শক্তিশালীকরণের নামে এই তহবিল বরাদ্দ ছিল।
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণা করা হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন সন্ধ্যা ৬টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) ভোট গ্রহণ করা হতে পারে।
২৮ মিনিট আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগের দিন গতকাল বুধবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মো. মাহফুজ আলম। সন্ধ্যায় তাঁরা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। প্রধান উপদেষ্টা তাঁদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন।
৩৫ মিনিট আগে
জুলাই–আগস্ট অভ্যুত্থানে সংঘটিত হতাহতের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্তভাবে ভারতের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
২ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

জুলাই–আগস্ট অভ্যুত্থানে সংঘটিত হতাহতের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্তভাবে ভারতের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
দিল্লির আশ্রয়ে থাকা কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ সভাপতি হাসিনার প্রত্যর্পণের ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বক্তব্যের প্রেক্ষাপটে আজ বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এমন তথ্য দেন।
জয়শঙ্করের বক্তব্যের বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান কী তা জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা কী করতে পারি, বলেন তো? করণীয় তেমন কিছু আসলে নেই। কারণ ভারতকে রাজি হতে হবে অথবা চাইতে হবে তাকে ফেরত পাঠাতে।’
ভারত রাজি না হলে কিছুই কি করার নেই— এমন প্রশ্নের মুখে তৌহিদ হোসেন আবারও বলেন, ‘রাজি না হলে আসলেতো করার কিছু নাই। আমরা রাজি করানোর চেষ্টা চালিয়ে যেতে পারি, এইটুকুই। এর চেয়ে বেশি কিছু করতে পারি না।’
গত বছরের ৫ আগস্ট রক্তক্ষয়ী গণঅভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। তারপর তিনি সেখানেই আছেন। তাঁর সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালও ভারতে আছেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ট্রাইব্যুনাল ১৭ নভেম্বর শেখ হাসিনা ও কামালকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। সেদিন এক বিবৃতিতে দুজনকে ফেরত দিতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানায় সরকার। এরপর ২৩ নভেম্বর ভারতকে কূটনৈতিকপত্র পাঠায় সরকার।
তার তিনদিন পর দিল্লি চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করে। তবে শেখ হাসিনা ও কামালকে ফেরত দেওয়া হবে কি না সে বিষয়ে ভারত এখনো কিছু জানায়নি।
আওয়ামী লীগ সভাপতির ভারতে থাকার বিষয়টি তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত মন্তব্য করে সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অনুষ্ঠানে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর বলেন, হাসিনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর ‘ভারতে আসতে বাধ্য হওয়ার পরিস্থিতি’র প্রভাব থাকবে।
গত শনিবার এনডিটিভি লিখেছে, হিন্দুস্তান টাইমস লিডারশিপ সামিটে এনডিটিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রধান সম্পাদক রাহুল কানওয়ালের সঙ্গে আলাপচারিতায় জয়শঙ্করের কাছে জানতে চাওয়া হয়, শেখ হাসিনা ‘যতদিন চান ততদিনই ভারতে থাকতে পারবেন কিনা’
জবাবে জয়শঙ্কর বলেন, ‘এটা একটা ভিন্ন বিষয়, তাই না? তিনি একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে এখানে এসেছেন। তাকে ঘিরে যা ঘটছে তাতে সেই পরিস্থিতির স্পষ্ট প্রভাব রয়েছে বলে আমি মনে করি। কিন্তু তারপরও, এটা এমন এক বিষয় যে বিষয়ে সিদ্ধান্ত তাকেই নিতে হবে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের প্রেক্ষাপটে শেখ হাসিনাকে ফেরতের বিষয়টিতে দেশটির সরকারের ভূমিকার কথাও বলেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। ভারতের বাইরে তৃতীয় কোনো দেশে শেখ হাসিনা যাওয়ার পরিকল্পনার বিষয়েও কোনো কোনো সংবাদমাধ্যমে খবর হয়েছে।
এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘এটাও তো আমার কিছু করার নেই, বাংলাদেশেও খুব বেশি কিছু করার নেই। আমরা তো চাই যে, উনি ফেরত আসুক।’

জুলাই–আগস্ট অভ্যুত্থানে সংঘটিত হতাহতের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্তভাবে ভারতের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
দিল্লির আশ্রয়ে থাকা কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ সভাপতি হাসিনার প্রত্যর্পণের ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বক্তব্যের প্রেক্ষাপটে আজ বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এমন তথ্য দেন।
জয়শঙ্করের বক্তব্যের বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান কী তা জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা কী করতে পারি, বলেন তো? করণীয় তেমন কিছু আসলে নেই। কারণ ভারতকে রাজি হতে হবে অথবা চাইতে হবে তাকে ফেরত পাঠাতে।’
ভারত রাজি না হলে কিছুই কি করার নেই— এমন প্রশ্নের মুখে তৌহিদ হোসেন আবারও বলেন, ‘রাজি না হলে আসলেতো করার কিছু নাই। আমরা রাজি করানোর চেষ্টা চালিয়ে যেতে পারি, এইটুকুই। এর চেয়ে বেশি কিছু করতে পারি না।’
গত বছরের ৫ আগস্ট রক্তক্ষয়ী গণঅভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। তারপর তিনি সেখানেই আছেন। তাঁর সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালও ভারতে আছেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ট্রাইব্যুনাল ১৭ নভেম্বর শেখ হাসিনা ও কামালকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। সেদিন এক বিবৃতিতে দুজনকে ফেরত দিতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানায় সরকার। এরপর ২৩ নভেম্বর ভারতকে কূটনৈতিকপত্র পাঠায় সরকার।
তার তিনদিন পর দিল্লি চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করে। তবে শেখ হাসিনা ও কামালকে ফেরত দেওয়া হবে কি না সে বিষয়ে ভারত এখনো কিছু জানায়নি।
আওয়ামী লীগ সভাপতির ভারতে থাকার বিষয়টি তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত মন্তব্য করে সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অনুষ্ঠানে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর বলেন, হাসিনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর ‘ভারতে আসতে বাধ্য হওয়ার পরিস্থিতি’র প্রভাব থাকবে।
গত শনিবার এনডিটিভি লিখেছে, হিন্দুস্তান টাইমস লিডারশিপ সামিটে এনডিটিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রধান সম্পাদক রাহুল কানওয়ালের সঙ্গে আলাপচারিতায় জয়শঙ্করের কাছে জানতে চাওয়া হয়, শেখ হাসিনা ‘যতদিন চান ততদিনই ভারতে থাকতে পারবেন কিনা’
জবাবে জয়শঙ্কর বলেন, ‘এটা একটা ভিন্ন বিষয়, তাই না? তিনি একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে এখানে এসেছেন। তাকে ঘিরে যা ঘটছে তাতে সেই পরিস্থিতির স্পষ্ট প্রভাব রয়েছে বলে আমি মনে করি। কিন্তু তারপরও, এটা এমন এক বিষয় যে বিষয়ে সিদ্ধান্ত তাকেই নিতে হবে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের প্রেক্ষাপটে শেখ হাসিনাকে ফেরতের বিষয়টিতে দেশটির সরকারের ভূমিকার কথাও বলেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। ভারতের বাইরে তৃতীয় কোনো দেশে শেখ হাসিনা যাওয়ার পরিকল্পনার বিষয়েও কোনো কোনো সংবাদমাধ্যমে খবর হয়েছে।
এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘এটাও তো আমার কিছু করার নেই, বাংলাদেশেও খুব বেশি কিছু করার নেই। আমরা তো চাই যে, উনি ফেরত আসুক।’

গত শুক্রবার ট্রাম্পের এক মন্তব্যের পর এই সহায়তা কারা পেয়েছেন, তা নিয়ে বাংলাদেশে সাড়া পড়ে গেছে। ট্রাম্প বলেছেন, এই তহবিল বাংলাদেশের এমন একটি ফার্ম বা প্রতিষ্ঠান নিয়েছে, যেখানে মাত্র দুজন কাজ করেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশ শক্তিশালীকরণের নামে এই তহবিল বরাদ্দ ছিল।
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণা করা হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন সন্ধ্যা ৬টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) ভোট গ্রহণ করা হতে পারে।
২৮ মিনিট আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগের দিন গতকাল বুধবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মো. মাহফুজ আলম। সন্ধ্যায় তাঁরা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। প্রধান উপদেষ্টা তাঁদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন।
৩৫ মিনিট আগে
মোবাইল ফোন চোরাচালান, ব্যবহৃত ও নকল ফোনের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ এবং অপরাধ প্রতিরোধে ১৬ ডিসেম্বর থেকে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) ব্যবস্থা চালু হবে। তবে বর্তমানে দেশে থাকা সব অনিবন্ধিত মোবাইল ফোন আগামী বছরের ১৫ মার্চ পর্যন্ত নিবন্ধন করা যাবে।
২ ঘণ্টা আগে