Ajker Patrika

কারাগারে ৫ বছরে ৩৮৫ বন্দীর মৃত্যু, শুধু গত বছরই ১০৬

সুলতান মাহমুদ, ঢাকা
আপডেট : ২১ জানুয়ারি ২০২৪, ১৮: ৩৩
কারাগারে ৫ বছরে ৩৮৫ বন্দীর মৃত্যু, শুধু গত বছরই ১০৬

গত বছর কারাগারে হাজতি ও কয়েদির মৃত্যু বেড়েছে। ২০২৩ সালে কারা হেফাজতে মারা গেছে ১০৬ জন। এর মধ্যে দণ্ডিত ৪২ জন এবং বিচারাধীন মামলার আসামি ৬৪ জন। গত বছর শুধু ঢাকা বিভাগেই মারা গেছে ৭১ জন। এর মধ্যে ৪২ জনের মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে অন্তত ছয়জন বিএনপি নেতা। 

যেখানে ২০২২ সালে কারা হেফাজতে মারা গেছেন ৬৫ জন। এর মধ্যে বিভিন্ন মামলায় দণ্ডিত ছিলেন ২৮ জন এবং বিচারাধীন মামলার আসামি ছিলেন ৩৭ জন। 

মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

সংগঠনটির চেয়ারপারসন জেড আই খান পান্না আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যে সংখ্যা আমরা প্রকাশ করেছি, তা বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত নিউজ সংগ্রহের পর নিজস্ব পদ্ধতিতে যাচাই-বাছাই শেষে প্রকাশ করা হয়েছে। বাস্তবে এই চিত্র আরও অনেক বেশি।’ 

আসকের তথ্যমতে, গত ৫ বছরের ৩৮৫ জন কারা হেফাজতে মারা গেছেন। ২০২৩ সালে মারা গেছেন ১০৬ জন। এর মধ্যে দণ্ডিত ৪২ জন ও মামলার বিচার এখনো শেষ হয়নি—এমন ৬৪ জন। ২০২২ সালে মারা গেছেন ৬৫ জন, এর মধ্যে দণ্ডিত ২৮ এবং বিচার শেষ হয়নি এমন ৩৭ জন। ২০২১ সালে মারা যান ৮১ জন, দণ্ডিত ৫২ ও বিচার শেষ হয়নি এমন ২৯ জন। ২০২০ সালে মারা যান ৭৫ জন। এর মধ্যে দণ্ডিত ৩০ ও বিচার শেষ হয়নি ৪৫ জন। আর ২০১৯ সালে মারা গেছেন ৫৮ জন, এর মধ্যে দণ্ডিত ৪২ ও বিচার শেষ হয়নি, এমন বন্দী ৩৬ জন। 

 ২০২২ সালের মার্চে মো. সায়েদ হোসেন নামে মাদক মামলার এক আসামি লক্ষ্মীপুর কারা হেফাজতে মারা যান। ওই ঘটনায় তখন ক্ষোভ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছিলেন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) প্রধান সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল। এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তিনি ওই ঘটনায় ক্ষোভ ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে অভিযোগটির সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, লক্ষ্মীপুর জেলা কারাগারের মাদক মামলার অভিযুক্ত হাজতি মো. সায়েদ হোসেন ১৬ মার্চ, ২০২২ বেলা ১১টার দিকে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে অচেতন হয়ে পড়লে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পরিবারের দাবি মো. সায়েদ হোসেনকে ষড়যন্ত্রমূলক গ্রেপ্তারের পর পুলিশের দাবিকৃত টাকা দিতে না পারায় থানা হাজতে বেদম মারধর ও নির্যাতন করা হয়। এ কারণেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে সায়েদ মারা যান। পুলিশি নির্যাতন ও কারা হেফাজতে মো. সায়েদ হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় মানবাধিকার এমএসএফে ক্ষোভ ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। পাশাপাশি অভিযোগটির সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছে। 

তখন লক্ষ্মীপুর জেলা কারাগারের জেলার মো. সাখাওয়াত হোসেন সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, সকালে সায়েদের বুকে ব্যথা শুরু হলে তিনি একপর্যায়ে অচেতন হয়ে পড়েন। তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়। তবে সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক জয়নাল আবেদিন জানান, হাসপাতালে আনার আগেই সায়েদের মৃত্যু হয়।

এমএসএফ মনে করে, পুলিশের বিরুদ্ধে আনা নির্যাতনের অভিযোগ ও পরবর্তীকালে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো এবং পরবর্তী সময় কারা হেফাজতে মৃত্যু কখনোই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। 

সর্বশেষ ১৪ জানুয়ারি চাঁদপুর কারাগারে বিচারাধীন হত্যা মামলার আসামি ব্রজলাল পাটিকর মারা যান। চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার আগেই ব্রজলাল মারা যান বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

চাঁদপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মুহাম্মদ মুনীর হোসাইন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত ২৮ ডিসেম্বর হত্যা মামলার আসামি হিসেবে ব্রজলাল পাটিকরকে কারাগারে নিয়ে আসা হয়। তিনি আগে থেকেই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ছিলেন। সকাল ৬টা ৪০ মিনিটের দিকে তিনি অসুস্থ বোধ করলে কারাগারের স্বাস্থ্য সহকারী প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।’ 

চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ওমর ফারুক সবুজ বলেন, ‘হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই মারা যান ব্রজলাল পাটিকর।’ 

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্য অনুযায়ী, পাঁচ বছরের মধ্যে কারা হেফাজতে সবচেয়ে বেশি বন্দী মারা গেছেন ২০২৩ সালে। গত বছর ১০৬ জন মানুষ কারা হেফাজতে মারা যান। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মারা গেছের ঢাকা বিভাগে—৭১ জন। 

এ প্রসঙ্গে আসকের চেয়ারপারসন জেড আই খান পান্না আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মৃত্যুর প্রধান কারণ নির্যাতন না। প্রধান কারণ অবহেলা।’ নিজের জেল জীবনের উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘ওখানে (কারাগার) সর্ব রোগের ওষুধ প্যারাসিটামল। যাদের ডিভিশন নাই, তারা থাকে ফ্লোরে। একটা রুমের অ্যাকোমোডেশন (স্থান সংকুলান) আছে হয়তো ৫০, থাকে ২৫০। মশার কামড়সহ নানা সমস্যা আছে। খাবার অতি নিম্নমানের। যাদের মামলা বিচারাধীন, কারাগারে আটক—এমন ব্যক্তি এবং যারা দণ্ডিত হয়ে কারাগারে আছে, যে কেউই কারাগারে মারা গেলে তা মানবাধিকার লঙ্ঘন।’ 

আসক চেয়ারপারসন আরও বলেন, ‘কারাগারে যদি কেউ মারা যান, সরকারকে তার ব্যাখ্যা দিতে হবে। কারাগারে আটক থাকা যাঁদের বিচার হচ্ছে, তাঁরা সবাই তো দণ্ডিত হন না। তাহলে যিনি দণ্ডিত হলেন না, তাঁকে কারাগারে আটক রাখা হয়—এর দায়দায়িত্ব কে বহন করবে? এর দায়দায়িত্ব সরকারের।’ তিনি আরও বলেন, ‘মামলা হলেই জেলে ঢুকাও, এই কনসেপ্ট রং। কারাগারে কেউ বন্দী থাকলে, আর যদি তাঁর টাকাপয়সা থাকে, তাহলে তিনি আরামে থাকতে পারেন!’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। ফাইল ছবি
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। ফাইল ছবি

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বাংলাদেশ টেলিভিশন, বিটিভি নিউজ ও বাংলাদেশ বেতার ভাষণটি একযোগে সম্প্রচার করবে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এর আগে আজ বিজয় দিবস উপলক্ষে সশস্ত্র বাহিনীর আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশ নেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। রাজধানীর তেজগাঁওয়ে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে সশস্ত্র বাহিনীর আয়োজনে অংশ নেন তিনি।

মহান বিজয় দিবসটিকে আরও মহিমান্বিত ও আকর্ষণীয় করার জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় সশস্ত্র বাহিনীর তত্ত্বাবধানে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে একটি মনোজ্ঞ ফ্লাই পাস্ট, প্যারাজাম্প এবং বিশেষ অ্যারোবেটিক প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।

বিজয়ের ৫৪তম বছর পূর্তিতে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিকুর রহমান এবং সশস্ত্র বাহিনীর ৫৩ জনসহ সর্বমোট ৫৪ জন প্যারাট্রুপার বাংলাদেশের জাতীয় পতাকাসহ ফ্রি ফল জাম্পের মাধ্যমে আকাশ হতে ভূমিতে অবতরণ করেন, যা এ যাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ এবং অদ্যাবধি এ রেকর্ডটি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে লিপিবদ্ধ হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মিয়ানমারে ই-পাসপোর্ট সেবা উদ্বোধন করল বাংলাদেশ দূতাবাস

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মঙ্গলবার ইয়াঙ্গুনে বাংলাদেশ দূতাবাসে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রমে উদ্বোধন করা হয়। ছবি: সংগৃহীত
মঙ্গলবার ইয়াঙ্গুনে বাংলাদেশ দূতাবাসে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রমে উদ্বোধন করা হয়। ছবি: সংগৃহীত

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মিয়ানমারে বাংলাদেশ দূতাবাস, ইয়াঙ্গুনে আজ মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মিয়ানমারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মো. মনোয়ার হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. শামস আখতার এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব ইসরাত জাহান। এ ছাড়া দূতাবাস কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং মিয়ানমারে বসবাসরত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি নাগরিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত ড. মো. মনোয়ার হোসেন গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণ করেন। একই সঙ্গে, তিনি ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের প্রতিও গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তিনি প্রধান উপদেষ্টার দিকনির্দেশনায় প্রবাসীদের কাছে ই-পাসপোর্ট সেবা দ্রুত পৌঁছে দেওয়ায় পাসপোর্ট ও অভিবাসন অধিদপ্তরকে ধন্যবাদ জানান।

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘ই-পাসপোর্ট চালু হওয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের আধুনিক, নিরাপদ ও কার্যকর সেবা প্রদানের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। এটি প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট সংক্রান্ত প্রক্রিয়াসমূহকে আরও সহজতর ও নিরাপদ করবে।’ তিনি এই কার্যক্রম বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের আন্তরিক সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

এর আগে উপ-প্রকল্প পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. শামস আখতার তাঁর বক্তব্যে ই-পাসপোর্ট প্রকল্পের প্রযুক্তি এবং এর সঠিক ব্যবহারের ওপর সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন এবং এর গুরুত্ব তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিরা আনুষ্ঠানিকভাবে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রমের উদ্বোধন ঘোষণা করেন এবং উপস্থিত প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে ই-পাসপোর্ট ডেলিভারি স্লিপ বিতরণ করেন। পরে তারা দূতাবাসে স্থাপিত নতুন ই-পাসপোর্ট সিস্টেম পরিদর্শন করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মনোমুগ্ধকর এয়ার শো দেখে উচ্ছ্বসিত হাজারো দর্শক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
মনোমুগ্ধকর এয়ার শো দেখে উচ্ছ্বসিত হাজারো দর্শক

বাংলাদেশের বিজয়ের ৫৪ বছর উপলক্ষে তেজগাঁওয়ের পুরোনো বিমানবন্দরে অনুষ্ঠিত হয়েছে মনোমুগ্ধকর এয়ার শো। যাতে ৫৪ জন জাতীয় পতাকা নিয়ে প্যারাট্রুপিং করেন। আজ মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে এই প্যারাট্রুপিং করা হয়।

সশস্ত্র বাহিনীর আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এতে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, বিভিন্ন বাহিনী প্রধান, রাজনৈতিক নেতা, বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।

‘টিম বাংলাদেশ’-এর ৫৪ জন প্যারাট্রুপারের এই পতাকাবাহী স্কাইডাইভ প্রদর্শন বিশ্বের সর্ববৃহৎ পতাকা-প্যারাট্রুপিং প্রদর্শনী। এটি একটি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড।

air-show

১২ হাজার উচ্চতা থেকে এই ফ্রি ফল জাম্পে অংশ নেওয়া এই ৫৪ জন হলেন—সেনা বাহিনীর ৪৬, নৌ বাহিনীর ৫, বিমানবাহিনীর ২ জন এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। আশিক চৌধুরী গুলিবিদ্ধ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদির ছবি আঁকা হেলমেট পরেন। ৪৯ থেকে ৫৪ বক্ষ নম্বরধারী ফ্রি ফল জাম্পাররা সুদানে নিহত ৬ জন শান্তিরক্ষীর নাম বুকে ধারণ করেন।

air-show-2

এই ফ্রি ফল জাম্পের সার্বিক তত্ত্বাবধায়ক এবং ড্রপ জোন কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম এম ইমরুল হাসান।

perasut-2

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এয়ার শো শুরু হয়। এতে অংশ নেওয়া উড়োজাহাজগুলো হরেক রকমের রং ছড়ায় আকাশে। সেখানে জাতীয় পতাকার লাল-সবুজ ছাড়াও অন্যান্য রং ছিল। অন্যদিকে হেলিকপ্টারগুলো বহন করে জাতীয় পতাকা ও সশস্ত্র বাহিনীর পতাকা।

air-show-3

‘এয়ার শো’ দেখতে ঢাকার তেজগাঁওয়ের পুরোনো বিমানবন্দরে দর্শনার্থীদের ঢল নামে। আগত দর্শনার্থীদের অনেকের হাতে জাতীয় পতাকা। কপালে বাঁধা জাতীয় পতাকার আদলের ফিতা কিংবা বিজয় দিবস লেখা কাপড়। লাল-সবুজের পোশাক পরেও এসেছেন অনেকেই। পুরোনো বিমানবন্দরে প্রবেশের ফটক সকাল ১০টা ৪০ মিনিটের দিকে বন্ধ করে দেওয়া হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তেজগাঁও বিমানবন্দরে এয়ার শো দেখতে জনস্রোত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ১৮
পুরাতন বিমানবন্দরে এয়ার শো দেখতে সকাল থেকেই মানুষের ভিড়। ছবি: ফেসবুক
পুরাতন বিমানবন্দরে এয়ার শো দেখতে সকাল থেকেই মানুষের ভিড়। ছবি: ফেসবুক

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পুরোনো বিমানবন্দরে জমকালো ‘এয়ার শো’ দেখতে মানুষের ঢল নেমেছে। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকেই বিমানবন্দরমুখী মানুষের স্রোত দেখা যায়। তবে নির্ধারিত সময়ের পরও এয়ার শো শুরু না হওয়ায় অপেক্ষার প্রহর গুনছেন হাজারো দর্শক।

সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল পৌনে ১০টার দিকে আগারগাঁও-সংলগ্ন পুরোনো বিমানবন্দরের ফটকে দর্শনার্থীদের দীর্ঘ সারি তৈরি হয়। নিরাপত্তা তল্লাশি শেষে সবাইকে একে একে প্রবেশ করানো হচ্ছে। ততক্ষণে শত শত পরিবার, শিশু ও উৎসুক জনতা বিমানবন্দরে প্রবেশ করে ভিড় জমিয়েছে।

আগত দর্শনার্থীদের হাতে শোভা পাচ্ছে জাতীয় পতাকা। অনেকের কপালে বাঁধা জাতীয় পতাকার আদলের ফিতা কিংবা ‘বিজয় দিবস’ লেখা কাপড়। অনেকেই পরিবারের সঙ্গে লাল-সবুজের পোশাক পরে এসেছে বিজয় উৎসবের এই বিশেষ প্রদর্শনী উপভোগ করতে।

গতকাল সোমবার এক তথ্যবিবরণীতে জানানো হয়েছিল মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আজ সকাল ১০টায় তেজগাঁওয়ের পুরোনো বিমানবন্দরে এই জমকালো এয়ার শো অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। কিন্তু সকাল ১০টা ২০ মিনিটে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এয়ার শো শুরু হয়নি। জনসমাগম হলেও অনুষ্ঠান শুরু হতে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে বলে জানা গেছে।

তথ্যবিবরণীতে সরকার জানিয়েছে, এই এয়ার শো সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। একই সঙ্গে তেজগাঁও পুরোনো বিমানবন্দর ও এর আশপাশ এলাকায় আজ কোনো প্রকার ড্রোন না ওড়ানোর জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।

বিজয়ের ৫৪তম বছর উপলক্ষে এয়ার শোতে ৫৪ জন প্যারাট্রুপার বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে প্যারাট্রুপিং করে বিশ্ব রেকর্ড গড়তে যাচ্ছেন। এই ৫৪ জনের শেষ ৬ জন পোশাকে নিজেদের নেমপ্লেটের পরিবর্তে সুদানের ইউএন ঘাঁটিতে নিহত ৬ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁদের নেমপ্লেট পরে প্যারাট্র‍্যুপিং করবেন।

এই ৫৪ জনের একজন আশিক চৌধুরী। তিনি বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) বর্তমান নির্বাহী চেয়ারম্যান। আশিক চৌধুরী জাম্প করবেন শরিফ ওসমান বিন হাদির ছবি আঁকা হেলমেট পরে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত