অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৪
মাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা

গত এক দশকে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) আকার বেড়েছে ৪০ লাখ কোটি টাকা। একই সময়ে দেশে নতুন করে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হয়েছে ছোট-বড় মাত্র ৪০ লাখ ৫৮ হাজার খানা ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে সেবা খাতে ৩৯ লাখ ১৯ হাজার এবং ম্যানুফ্যাকচারিং (উৎপাদন) খাতে যুক্ত হয়েছে ১ লাখ ৩৮ হাজার ৮৮৫টি প্রতিষ্ঠান। গত ১০ বছরে কর্মসংস্থান হয়েছে মাত্র ৬২ লাখ মানুষের। অথচ ২০১৩ সালে বেড়েছিল দ্বিগুণ।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) বাস্তবায়নাধীন অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৪-এর প্রাক্-প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে। অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, বিগত সময়ে জিডিপির আকার যে হারে বেড়েছে, সেভাবে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্র বাড়েনি। এ কারণে প্রত্যাশা অনুসারে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়নি, বেকারত্বের সংখ্যা বাড়ছেই। গত ১০ বছরে সাড়ে ৬২ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হলেও ২০২৪ সালেই বেকার হয়েছে ৬২ লাখ মানুষ। টেকসই অর্থনীতির স্বার্থে এই অবস্থার উন্নতি করতে হবে।
জানতে চাইলে অর্থনৈতিক শুমারি প্রকল্পের পরিচালক এস এম শাকিল আখতার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গত ১০ বছর বড় শিল্পকারখানা গড়ে ওঠেনি বললেই চলে। নানা কারণে ম্যানুফ্যাকচারিং সেক্টর বৃদ্ধি না পেলেও ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠান বেড়েছে। এতেই বোঝা যায়, অর্থনৈতিক অগ্রগতি হয়নি।
সরকার অর্থনীতির প্রকৃত অবস্থা জানতে ১০ বছর পর অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৪-এর প্রাক্-প্রতিবেদন তৈরি করেছে। অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৩ প্রকল্পের অধীনে নেওয়া এ প্রতিবেদন আজ বুধবার বিবিএস অডিটরিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি অন্তর্বর্তী সরকারের পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করবেন।
এটি সরকারের চতুর্থ অর্থনৈতিক শুমারি। এর আগে ২০১৩ সালে তৃতীয় এবং ২০০৩ সালে দ্বিতীয় অর্থনৈতিক শুমারি করা হয়। চতুর্থবারের শুমারিতে প্রথম ট্যাবের মাধ্যমে ক্যাপি পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। শুমারিতে সারা দেশকে ১৩টি ভাগে ভাগ করে ৯০ হাজার গণনাকারী অংশ নেন। এতে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে আঞ্চলিক বৈষম্য, আঞ্চলিক পর্যায়ে ব্যবসা ও শিল্পায়নে ভারসাম্যপূর্ণ অগ্রগতি তুলে ধরা হয়েছে।
বিবিএসের তথ্যমতে, ২০১৩ সালে জিডিপির আকার ছিল ১৫ লাখ ১৩ হাজার ৫৯৯ কোটি টাকা। ১০ বছরে সেই আকার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৫ লাখ ৯৭ হাজার ৪১৪ কোটি টাকা। পক্ষান্তরে ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের হার ধরে শিল্প খাতে বছরের পর বছর ধরে দেখানো জিডিপি প্রবৃদ্ধির এই হিসাব মিলছে না অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৪-এর প্রাথমিক হিসাবের সঙ্গে। গত ১৩ বছরে ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে অর্থনৈতিক ইউনিটের (প্রতিষ্ঠান) সংখ্যা বেড়েছে মাত্র ১৫.৩৯ শতাংশ। অথচ ২০০১-০৩ সাল পর্যন্ত সময়ে পরিচালিত শুমারির তুলনায় ২০১৩ সালের শুমারিতে এ খাতে অর্থনৈতিক ইউনিটের সংখ্যা বেড়েছিল ১০০.৪২ শতাংশ।
প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, সার্বিকভাবে দেশে অর্থনৈতিক ইউনিটের প্রবৃদ্ধি কমেছে। বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে দেশে মোট অর্থনৈতিক ইউনিটের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ১৮ লাখ ৭৭ হাজার ৩৬৪টিতে, যা ২০১৩ সালে ছিল ৭৮ লাখ ১৮ হাজার ৫৬৫টি। এ হিসাবে ১৩ বছরে অর্থনৈতিক ইউনিটের সংখ্যা ৪০ লাখ ৫৮ হাজার ৭৯৯টি বা ৫১.৯১ শতাংশ বেড়েছে। এর আগের জরিপে অর্থনৈতিক ইউনিটের সংখ্যা ৪১ লাখ ১০ হাজার ৪২১টি বেড়েছিল, যা ২০০৩ সালের ৩৭ লাখ ৪৮ হাজার ১৪৪টি ইউনিটের তুলনায় ১১০.৮৫ শতাংশ বেশি।
ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের প্রতিষ্ঠানে তুলনামূলক কম প্রবৃদ্ধি হওয়ায় অর্থনৈতিক ইউনিটে এ খাতের অবদান ৮.৭৭ শতাংশে নেমে এসেছে বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। বলা হয়েছে, ২০০৩ সালে মোট অর্থনৈতিক ইউনিটে ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের অংশ ছিল ১২.১৪ শতাংশ, যা ২০১৩ সালে ১১.৫৪ শতাংশে নেমে আসে। অর্থাৎ টানা দুই শুমারিতে কমেছে ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের প্রতিষ্ঠানের অংশ।
গত ১৩ বছরে সেবা খাতের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৬৯ লাখ ১৫ হাজার ৯৮২ থেকে ৫৬.৬৮ শতাংশ বেড়ে ১ কোটি ৮ লাখ ৩৫ হাজার ৮৯৬টিতে দাঁড়িয়েছে। ফলে মোট প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সেবা খাত ৮৮.৮৬ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯১.২৩ শতাংশে।
এ বিষয়ে অস্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এবিসিসিআই) সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জাম হোসেন বলেন, দেশের অর্থনীতির মূল শক্তি বেসরকারি খাত। গত ৪-৫ বছর এ খাতের অবস্থা খুবই খারাপ। করোনার পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে ম্যানুফ্যাকচারিং সেক্টরে বিনিয়োগ ৭০ শতাংশ কমেছে। সুতরাং অর্থনীতি যে সঠিক অবস্থায় চলছে না, তার প্রমাণ উঠে এসেছে। তিনি বলেন, বিগত সময়ে উন্নয়ন ও এফডিআইয়ের ফুলঝুরি ছড়ানো হলেও বাস্তবে কোনো এফডিআই আসেনি। এ অবস্থা চললে দেশ ও অর্থনীতি বড় ক্ষতির দিকে এগিয়ে যাবে। এ জন্য প্রয়োজন দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, সুদহার কমানো, শিল্পের কাঁচামালের দাম কমানোর উদ্যোগ।
স্থায়ী-অস্থায়ী পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১ কোটি ১৮ লাখ ৭৭ হাজার ৩৬৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে স্থায়ী ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দেখানো হয়েছে ৬২ লাখ ৮৮ হাজার ২১৪টি। অস্থায়ী ৫ লাখ ৭৬ হাজার ৬২১টি এবং পারিবারিক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান দেখানো হয়েছে ৫০ লাখ ১২ হাজার ৫২৯টি। অথচ ২০১৩ সালে অর্থনৈতিক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান দেখানো হয়েছিল ৭৮ লাখ ১৮ হাজার ৫৬৫টি। এর মধ্যে স্থায়ী ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ছিল ৪৫ লাখ ১৪ হাজার ৯১টি, অস্থায়ী ৪ লাখ ৮২ হাজার ৯০৩ এবং পারিবারিক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান ছিল ২৮ লাখ ২১ হাজার ৫৭১টি।
অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে গ্রামাঞ্চলে রয়েছে ৮৩ লাখ ৪৬ হাজার ১৬১টি, শহরাঞ্চলে ৩৫ লাখ ৩১ হাজার ২০৩টি। ২০১৩ সালে গ্রামাঞ্চলে ছিল ৫৫ লাখ ৮৯ হাজার ১৯টি এবং শহরাঞ্চলে ২২ লাখ ২৯ হাজার ৫৪৬টি।
বিভাগওয়ারি অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ঢাকায় ৩২ লাখ ৯ হাজার ৫৫০, চট্টগ্রামে ২০ লাখ ৭৯ হাজার ৯৫১, রাজশাহীতে ১৬ লাখ ৯২ হাজার ৬০৪, খুলনায় ১৫ লাখ ১৮ হাজার ১৩৪, বরিশালে ৬ লাখ ৬৮ হাজার ৭৩৬, রংপুরে ১৩ লাখ ৬১ হাজার ৪২৩, ময়মনসিংহে ৭ লাখ ৯১ হাজার ৬৩২ এবং সিলেটে ৫ লাখ ৫৫ হাজার ৩৪টি।
কর্মসংস্থান বেড়েছে ৬২ লাখ ৬০ হাজার: শুমারির প্রাক্-প্রতিবেদন অনুসারে, বর্তমানে প্রতিষ্ঠানগুলোতে ৩ কোটি ৭ লাখ ৬১ হাজার ৩৪ জন কর্মরত। এর মধ্যে পুরুষ ২ কোটি ৫৬ লাখ ৩০ হাজার ২৯৮ এবং মহিলা ৫১ লাখ ২৮ হাজার ৬৭৭ জন। এ ছাড়া হিজড়ার সংখ্যা ২ হাজার ৫৯ জন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১০ বছরে ই-কর্মাস খাতে ১ লাখ ১৬ হাজার ৯৭৮টি প্রতিষ্ঠানে গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৫৫ হাজার ৪৭৪, চট্টগ্রামে ২২ হাজার ৪২, খুলনায় ১০ হাজার ৪৩২, রাজশাহীতে ৮ হাজার ৬৯০, রংপুরে ৭ হাজার ৮৩৭, সিলেটে ৪ হাজার ৯৭৮ এবং বরিশালে ৪ হাজার ৫৬টি।
জানতে চাইলে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম আজকের পত্রিকাকে বলেন, জিডিপির আকারের সঙ্গে অর্থনৈতিক ইউনিট বেড়েছে, এটি ইতিবাচক। কিন্তু অর্থনীতির আকারের সঙ্গে শিল্পের আকার সেভাবে বাড়েনি। অর্থনীতির আকারের সঙ্গে শিল্পায়ন না হওয়ার পেছনে সরকারের প্রক্রিয়াগত দুর্বলতা রয়েছে, তা দূর করতে হবে। নীতি-কাঠামোগত সংস্কার করতে হবে। তিনি বলেন, অর্থনীতির স্বার্থে সরকারের নীতি-কাঠামো পর্যালোচনা করে গতানুগতিক কাঠামো থেকে বেরিয়ে আসতে হবে, টেকসই উন্নয়নে এগিয়ে যেতে হবে।

গত এক দশকে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) আকার বেড়েছে ৪০ লাখ কোটি টাকা। একই সময়ে দেশে নতুন করে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হয়েছে ছোট-বড় মাত্র ৪০ লাখ ৫৮ হাজার খানা ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে সেবা খাতে ৩৯ লাখ ১৯ হাজার এবং ম্যানুফ্যাকচারিং (উৎপাদন) খাতে যুক্ত হয়েছে ১ লাখ ৩৮ হাজার ৮৮৫টি প্রতিষ্ঠান। গত ১০ বছরে কর্মসংস্থান হয়েছে মাত্র ৬২ লাখ মানুষের। অথচ ২০১৩ সালে বেড়েছিল দ্বিগুণ।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) বাস্তবায়নাধীন অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৪-এর প্রাক্-প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে। অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, বিগত সময়ে জিডিপির আকার যে হারে বেড়েছে, সেভাবে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্র বাড়েনি। এ কারণে প্রত্যাশা অনুসারে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়নি, বেকারত্বের সংখ্যা বাড়ছেই। গত ১০ বছরে সাড়ে ৬২ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হলেও ২০২৪ সালেই বেকার হয়েছে ৬২ লাখ মানুষ। টেকসই অর্থনীতির স্বার্থে এই অবস্থার উন্নতি করতে হবে।
জানতে চাইলে অর্থনৈতিক শুমারি প্রকল্পের পরিচালক এস এম শাকিল আখতার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গত ১০ বছর বড় শিল্পকারখানা গড়ে ওঠেনি বললেই চলে। নানা কারণে ম্যানুফ্যাকচারিং সেক্টর বৃদ্ধি না পেলেও ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠান বেড়েছে। এতেই বোঝা যায়, অর্থনৈতিক অগ্রগতি হয়নি।
সরকার অর্থনীতির প্রকৃত অবস্থা জানতে ১০ বছর পর অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৪-এর প্রাক্-প্রতিবেদন তৈরি করেছে। অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৩ প্রকল্পের অধীনে নেওয়া এ প্রতিবেদন আজ বুধবার বিবিএস অডিটরিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি অন্তর্বর্তী সরকারের পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করবেন।
এটি সরকারের চতুর্থ অর্থনৈতিক শুমারি। এর আগে ২০১৩ সালে তৃতীয় এবং ২০০৩ সালে দ্বিতীয় অর্থনৈতিক শুমারি করা হয়। চতুর্থবারের শুমারিতে প্রথম ট্যাবের মাধ্যমে ক্যাপি পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। শুমারিতে সারা দেশকে ১৩টি ভাগে ভাগ করে ৯০ হাজার গণনাকারী অংশ নেন। এতে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে আঞ্চলিক বৈষম্য, আঞ্চলিক পর্যায়ে ব্যবসা ও শিল্পায়নে ভারসাম্যপূর্ণ অগ্রগতি তুলে ধরা হয়েছে।
বিবিএসের তথ্যমতে, ২০১৩ সালে জিডিপির আকার ছিল ১৫ লাখ ১৩ হাজার ৫৯৯ কোটি টাকা। ১০ বছরে সেই আকার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৫ লাখ ৯৭ হাজার ৪১৪ কোটি টাকা। পক্ষান্তরে ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের হার ধরে শিল্প খাতে বছরের পর বছর ধরে দেখানো জিডিপি প্রবৃদ্ধির এই হিসাব মিলছে না অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৪-এর প্রাথমিক হিসাবের সঙ্গে। গত ১৩ বছরে ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে অর্থনৈতিক ইউনিটের (প্রতিষ্ঠান) সংখ্যা বেড়েছে মাত্র ১৫.৩৯ শতাংশ। অথচ ২০০১-০৩ সাল পর্যন্ত সময়ে পরিচালিত শুমারির তুলনায় ২০১৩ সালের শুমারিতে এ খাতে অর্থনৈতিক ইউনিটের সংখ্যা বেড়েছিল ১০০.৪২ শতাংশ।
প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, সার্বিকভাবে দেশে অর্থনৈতিক ইউনিটের প্রবৃদ্ধি কমেছে। বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে দেশে মোট অর্থনৈতিক ইউনিটের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ১৮ লাখ ৭৭ হাজার ৩৬৪টিতে, যা ২০১৩ সালে ছিল ৭৮ লাখ ১৮ হাজার ৫৬৫টি। এ হিসাবে ১৩ বছরে অর্থনৈতিক ইউনিটের সংখ্যা ৪০ লাখ ৫৮ হাজার ৭৯৯টি বা ৫১.৯১ শতাংশ বেড়েছে। এর আগের জরিপে অর্থনৈতিক ইউনিটের সংখ্যা ৪১ লাখ ১০ হাজার ৪২১টি বেড়েছিল, যা ২০০৩ সালের ৩৭ লাখ ৪৮ হাজার ১৪৪টি ইউনিটের তুলনায় ১১০.৮৫ শতাংশ বেশি।
ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের প্রতিষ্ঠানে তুলনামূলক কম প্রবৃদ্ধি হওয়ায় অর্থনৈতিক ইউনিটে এ খাতের অবদান ৮.৭৭ শতাংশে নেমে এসেছে বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। বলা হয়েছে, ২০০৩ সালে মোট অর্থনৈতিক ইউনিটে ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের অংশ ছিল ১২.১৪ শতাংশ, যা ২০১৩ সালে ১১.৫৪ শতাংশে নেমে আসে। অর্থাৎ টানা দুই শুমারিতে কমেছে ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের প্রতিষ্ঠানের অংশ।
গত ১৩ বছরে সেবা খাতের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৬৯ লাখ ১৫ হাজার ৯৮২ থেকে ৫৬.৬৮ শতাংশ বেড়ে ১ কোটি ৮ লাখ ৩৫ হাজার ৮৯৬টিতে দাঁড়িয়েছে। ফলে মোট প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সেবা খাত ৮৮.৮৬ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯১.২৩ শতাংশে।
এ বিষয়ে অস্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এবিসিসিআই) সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জাম হোসেন বলেন, দেশের অর্থনীতির মূল শক্তি বেসরকারি খাত। গত ৪-৫ বছর এ খাতের অবস্থা খুবই খারাপ। করোনার পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে ম্যানুফ্যাকচারিং সেক্টরে বিনিয়োগ ৭০ শতাংশ কমেছে। সুতরাং অর্থনীতি যে সঠিক অবস্থায় চলছে না, তার প্রমাণ উঠে এসেছে। তিনি বলেন, বিগত সময়ে উন্নয়ন ও এফডিআইয়ের ফুলঝুরি ছড়ানো হলেও বাস্তবে কোনো এফডিআই আসেনি। এ অবস্থা চললে দেশ ও অর্থনীতি বড় ক্ষতির দিকে এগিয়ে যাবে। এ জন্য প্রয়োজন দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, সুদহার কমানো, শিল্পের কাঁচামালের দাম কমানোর উদ্যোগ।
স্থায়ী-অস্থায়ী পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১ কোটি ১৮ লাখ ৭৭ হাজার ৩৬৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে স্থায়ী ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দেখানো হয়েছে ৬২ লাখ ৮৮ হাজার ২১৪টি। অস্থায়ী ৫ লাখ ৭৬ হাজার ৬২১টি এবং পারিবারিক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান দেখানো হয়েছে ৫০ লাখ ১২ হাজার ৫২৯টি। অথচ ২০১৩ সালে অর্থনৈতিক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান দেখানো হয়েছিল ৭৮ লাখ ১৮ হাজার ৫৬৫টি। এর মধ্যে স্থায়ী ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ছিল ৪৫ লাখ ১৪ হাজার ৯১টি, অস্থায়ী ৪ লাখ ৮২ হাজার ৯০৩ এবং পারিবারিক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান ছিল ২৮ লাখ ২১ হাজার ৫৭১টি।
অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে গ্রামাঞ্চলে রয়েছে ৮৩ লাখ ৪৬ হাজার ১৬১টি, শহরাঞ্চলে ৩৫ লাখ ৩১ হাজার ২০৩টি। ২০১৩ সালে গ্রামাঞ্চলে ছিল ৫৫ লাখ ৮৯ হাজার ১৯টি এবং শহরাঞ্চলে ২২ লাখ ২৯ হাজার ৫৪৬টি।
বিভাগওয়ারি অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ঢাকায় ৩২ লাখ ৯ হাজার ৫৫০, চট্টগ্রামে ২০ লাখ ৭৯ হাজার ৯৫১, রাজশাহীতে ১৬ লাখ ৯২ হাজার ৬০৪, খুলনায় ১৫ লাখ ১৮ হাজার ১৩৪, বরিশালে ৬ লাখ ৬৮ হাজার ৭৩৬, রংপুরে ১৩ লাখ ৬১ হাজার ৪২৩, ময়মনসিংহে ৭ লাখ ৯১ হাজার ৬৩২ এবং সিলেটে ৫ লাখ ৫৫ হাজার ৩৪টি।
কর্মসংস্থান বেড়েছে ৬২ লাখ ৬০ হাজার: শুমারির প্রাক্-প্রতিবেদন অনুসারে, বর্তমানে প্রতিষ্ঠানগুলোতে ৩ কোটি ৭ লাখ ৬১ হাজার ৩৪ জন কর্মরত। এর মধ্যে পুরুষ ২ কোটি ৫৬ লাখ ৩০ হাজার ২৯৮ এবং মহিলা ৫১ লাখ ২৮ হাজার ৬৭৭ জন। এ ছাড়া হিজড়ার সংখ্যা ২ হাজার ৫৯ জন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১০ বছরে ই-কর্মাস খাতে ১ লাখ ১৬ হাজার ৯৭৮টি প্রতিষ্ঠানে গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৫৫ হাজার ৪৭৪, চট্টগ্রামে ২২ হাজার ৪২, খুলনায় ১০ হাজার ৪৩২, রাজশাহীতে ৮ হাজার ৬৯০, রংপুরে ৭ হাজার ৮৩৭, সিলেটে ৪ হাজার ৯৭৮ এবং বরিশালে ৪ হাজার ৫৬টি।
জানতে চাইলে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম আজকের পত্রিকাকে বলেন, জিডিপির আকারের সঙ্গে অর্থনৈতিক ইউনিট বেড়েছে, এটি ইতিবাচক। কিন্তু অর্থনীতির আকারের সঙ্গে শিল্পের আকার সেভাবে বাড়েনি। অর্থনীতির আকারের সঙ্গে শিল্পায়ন না হওয়ার পেছনে সরকারের প্রক্রিয়াগত দুর্বলতা রয়েছে, তা দূর করতে হবে। নীতি-কাঠামোগত সংস্কার করতে হবে। তিনি বলেন, অর্থনীতির স্বার্থে সরকারের নীতি-কাঠামো পর্যালোচনা করে গতানুগতিক কাঠামো থেকে বেরিয়ে আসতে হবে, টেকসই উন্নয়নে এগিয়ে যেতে হবে।

টাঙ্গাইলের শাড়ি বুনন শিল্পকে অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেসকো। গতকাল মঙ্গলবার ভারতের নয়াদিল্লিতে ইউনেসকো কনভেনশনের চলমান ২০তম আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
১২ মিনিট আগে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনে অন্যতম সমন্বয়ক হিসেবে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আসিফ মাহমুদ।
১৬ মিনিট আগে
মুক্তিবাহিনীর অগ্রাভিযানে পাকিস্তানি বাহিনীর একের পর এক অবস্থানের পতনে মুক্ত হচ্ছিল বাংলাদেশের একেকটি অঞ্চল। এগিয়ে আসছিল স্বাধীনতার মুহূর্তটি। যদিও ঠিক কখন, কীভাবে সেদিনটি আসবে, তখনো তা স্পষ্ট নয় সাধারণ মানুষের কাছে। তবে সবাই অধীর আগ্রহে ক্ষণ গুনছিল।
১ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং গণভোটের তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে এসেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ বুধবার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করবে কমিশন। এরপর জাতির উদ্দেশে দেওয়ার জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের ভাষণ রেকর্ড করা হবে। তিনি আগামীকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ টেলিভিশন
৯ ঘণ্টা আগেবাসস, ঢাকা

টাঙ্গাইলের শাড়ি বুনন শিল্পকে অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেসকো। গতকাল মঙ্গলবার ভারতের নয়াদিল্লিতে ইউনেসকো কনভেনশনের চলমান ২০তম আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এই কনভেনশনের আওতায় এটি বাংলাদেশের ষষ্ঠ একক নিবন্ধন। সভায় প্রথমবারের মতো সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর বিগত চার বছরে এটি দ্বিতীয় নিবন্ধন।
সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের প্রধান এবং ইউনেসকো সাধারণ পরিষদের সভাপতি ও বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জানান, ‘এই স্বীকৃতি বাংলাদেশের জন্য অসামান্য গৌরবের বিষয়। দীর্ঘ দুই শতকের বেশি সময় ধরে টাঙ্গাইলের তাঁতিদের অনবদ্য শিল্পকর্মের বৈশ্বিক স্বীকৃতি এটি।’
তিনি আরও বলেন, ‘টাঙ্গাইল শাড়ি বাংলাদেশের সকল নারীর নিত্য পরিধেয়, যা এই শাড়ি বুনন শিল্পের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনের পেছনে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে।’
এই অর্জনকে বাংলাদেশের সকল তাঁতি ও নারীদের প্রতি উৎসর্গ করেছেন রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা।
বাংলাদেশের অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সামগ্রিক সুরক্ষায় এই স্বীকৃতি নতুন মাত্রা যোগ করবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত তালহা বলেন, ঐতিহ্য হিসেবে ইউনেসকোর স্বীকৃতি অর্জনের মতো বাংলাদেশের অপরিমেয় সাংস্কৃতিক উপাদান রয়েছে।
নথি প্রস্তুত করার সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং কনভেনশন সংক্রান্ত অভিজ্ঞ জনবল তৈরি করার মাধ্যমে আরও অনেক ঐতিহ্যের ইউনেসকো-স্বীকৃতি অর্জনের সুযোগ রয়েছে।
এর আগে, গত ৭ ডিসেম্বর আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের চলমান ২০তম সভা উদ্বোধন করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শংকর। অনুষ্ঠানে ইউনেসকোর নবনিযুক্ত মহাপরিচালক খালেদ এল. এনানি উপস্থিত ছিলেন।

টাঙ্গাইলের শাড়ি বুনন শিল্পকে অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেসকো। গতকাল মঙ্গলবার ভারতের নয়াদিল্লিতে ইউনেসকো কনভেনশনের চলমান ২০তম আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এই কনভেনশনের আওতায় এটি বাংলাদেশের ষষ্ঠ একক নিবন্ধন। সভায় প্রথমবারের মতো সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর বিগত চার বছরে এটি দ্বিতীয় নিবন্ধন।
সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের প্রধান এবং ইউনেসকো সাধারণ পরিষদের সভাপতি ও বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জানান, ‘এই স্বীকৃতি বাংলাদেশের জন্য অসামান্য গৌরবের বিষয়। দীর্ঘ দুই শতকের বেশি সময় ধরে টাঙ্গাইলের তাঁতিদের অনবদ্য শিল্পকর্মের বৈশ্বিক স্বীকৃতি এটি।’
তিনি আরও বলেন, ‘টাঙ্গাইল শাড়ি বাংলাদেশের সকল নারীর নিত্য পরিধেয়, যা এই শাড়ি বুনন শিল্পের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনের পেছনে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে।’
এই অর্জনকে বাংলাদেশের সকল তাঁতি ও নারীদের প্রতি উৎসর্গ করেছেন রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা।
বাংলাদেশের অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সামগ্রিক সুরক্ষায় এই স্বীকৃতি নতুন মাত্রা যোগ করবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত তালহা বলেন, ঐতিহ্য হিসেবে ইউনেসকোর স্বীকৃতি অর্জনের মতো বাংলাদেশের অপরিমেয় সাংস্কৃতিক উপাদান রয়েছে।
নথি প্রস্তুত করার সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং কনভেনশন সংক্রান্ত অভিজ্ঞ জনবল তৈরি করার মাধ্যমে আরও অনেক ঐতিহ্যের ইউনেসকো-স্বীকৃতি অর্জনের সুযোগ রয়েছে।
এর আগে, গত ৭ ডিসেম্বর আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের চলমান ২০তম সভা উদ্বোধন করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শংকর। অনুষ্ঠানে ইউনেসকোর নবনিযুক্ত মহাপরিচালক খালেদ এল. এনানি উপস্থিত ছিলেন।

গত এক দশকে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) আকার বেড়েছে ৪০ লাখ কোটি টাকা। একই সময়ে দেশে নতুন করে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হয়েছে ছোট-বড় মাত্র ৪০ লাখ ৫৮ হাজার খানা ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে সেবা খাতে ৩৯ লাখ ১৯ হাজার এবং ম্যানুফ্যাকচারিং (উৎপাদন) খাতে যুক্ত হয়েছে ১ লাখ ৩৮ হাজার ৮৮৫টি প্রতিষ্ঠান। গত ১০ ব
২৯ জানুয়ারি ২০২৫
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনে অন্যতম সমন্বয়ক হিসেবে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আসিফ মাহমুদ।
১৬ মিনিট আগে
মুক্তিবাহিনীর অগ্রাভিযানে পাকিস্তানি বাহিনীর একের পর এক অবস্থানের পতনে মুক্ত হচ্ছিল বাংলাদেশের একেকটি অঞ্চল। এগিয়ে আসছিল স্বাধীনতার মুহূর্তটি। যদিও ঠিক কখন, কীভাবে সেদিনটি আসবে, তখনো তা স্পষ্ট নয় সাধারণ মানুষের কাছে। তবে সবাই অধীর আগ্রহে ক্ষণ গুনছিল।
১ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং গণভোটের তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে এসেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ বুধবার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করবে কমিশন। এরপর জাতির উদ্দেশে দেওয়ার জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের ভাষণ রেকর্ড করা হবে। তিনি আগামীকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ টেলিভিশন
৯ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তোড়জোড়ের মধ্যে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে আসছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
সমসাময়িক বিষয়ে আজ বুধবার দুপুর ৩টায় স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আসিফ মাহমুদের সংবাদ সম্মেলন হবে বলে মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।
সমসাময়িক কোন বিষয়ে আসিফ মাহমুদ সংবাদ সম্মেলনে কথা বলবেন মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণপত্রে তা উল্লেখ করা হয়নি। তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজকের সংবাদ সম্মেলন থেকে উপদেষ্টা পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিতে পারেন তিনি।
আজ রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করার পর ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার জন্য ভাষণের রেকর্ড করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। আজ সন্ধ্যায় বা আগামীকাল বৃহস্পতিবার এই তফসিল ঘোষণা করা হবে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
আরেক উপদেষ্টা তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমও আজ পদত্যাগের ঘোষণা দিতে পারেন বলে আলোচনা রয়েছে।
উপদেষ্টার পদে থেকে নির্বাচন করতে আইনি বাধা না থাকলেও তফসিল ঘোষণার আগে সরকারে থাকা দুজন ছাত্র উপদেষ্টা পদত্যাগ করবেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনে অন্যতম সমন্বয়ক হিসেবে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আসিফ মাহমুদ। তাদের আন্দোলন একপর্যায়ে সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনের রূপ নেয়। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয় আওয়ামী লীগ সরকার। এরপর ওই বছরের ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন আসিফ মাহমুদ।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তোড়জোড়ের মধ্যে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে আসছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
সমসাময়িক বিষয়ে আজ বুধবার দুপুর ৩টায় স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আসিফ মাহমুদের সংবাদ সম্মেলন হবে বলে মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।
সমসাময়িক কোন বিষয়ে আসিফ মাহমুদ সংবাদ সম্মেলনে কথা বলবেন মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণপত্রে তা উল্লেখ করা হয়নি। তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজকের সংবাদ সম্মেলন থেকে উপদেষ্টা পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিতে পারেন তিনি।
আজ রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করার পর ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার জন্য ভাষণের রেকর্ড করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। আজ সন্ধ্যায় বা আগামীকাল বৃহস্পতিবার এই তফসিল ঘোষণা করা হবে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
আরেক উপদেষ্টা তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমও আজ পদত্যাগের ঘোষণা দিতে পারেন বলে আলোচনা রয়েছে।
উপদেষ্টার পদে থেকে নির্বাচন করতে আইনি বাধা না থাকলেও তফসিল ঘোষণার আগে সরকারে থাকা দুজন ছাত্র উপদেষ্টা পদত্যাগ করবেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনে অন্যতম সমন্বয়ক হিসেবে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আসিফ মাহমুদ। তাদের আন্দোলন একপর্যায়ে সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনের রূপ নেয়। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয় আওয়ামী লীগ সরকার। এরপর ওই বছরের ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন আসিফ মাহমুদ।

গত এক দশকে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) আকার বেড়েছে ৪০ লাখ কোটি টাকা। একই সময়ে দেশে নতুন করে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হয়েছে ছোট-বড় মাত্র ৪০ লাখ ৫৮ হাজার খানা ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে সেবা খাতে ৩৯ লাখ ১৯ হাজার এবং ম্যানুফ্যাকচারিং (উৎপাদন) খাতে যুক্ত হয়েছে ১ লাখ ৩৮ হাজার ৮৮৫টি প্রতিষ্ঠান। গত ১০ ব
২৯ জানুয়ারি ২০২৫
টাঙ্গাইলের শাড়ি বুনন শিল্পকে অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেসকো। গতকাল মঙ্গলবার ভারতের নয়াদিল্লিতে ইউনেসকো কনভেনশনের চলমান ২০তম আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
১২ মিনিট আগে
মুক্তিবাহিনীর অগ্রাভিযানে পাকিস্তানি বাহিনীর একের পর এক অবস্থানের পতনে মুক্ত হচ্ছিল বাংলাদেশের একেকটি অঞ্চল। এগিয়ে আসছিল স্বাধীনতার মুহূর্তটি। যদিও ঠিক কখন, কীভাবে সেদিনটি আসবে, তখনো তা স্পষ্ট নয় সাধারণ মানুষের কাছে। তবে সবাই অধীর আগ্রহে ক্ষণ গুনছিল।
১ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং গণভোটের তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে এসেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ বুধবার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করবে কমিশন। এরপর জাতির উদ্দেশে দেওয়ার জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের ভাষণ রেকর্ড করা হবে। তিনি আগামীকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ টেলিভিশন
৯ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

মুক্তিবাহিনীর অগ্রাভিযানে পাকিস্তানি বাহিনীর একের পর এক অবস্থানের পতনে মুক্ত হচ্ছিল বাংলাদেশের একেকটি অঞ্চল। এগিয়ে আসছিল স্বাধীনতার মুহূর্তটি। যদিও ঠিক কখন, কীভাবে সেদিনটি আসবে, তখনো তা স্পষ্ট নয় সাধারণ মানুষের কাছে। তবে সবাই অধীর আগ্রহে ক্ষণ গুনছিল।
সেতু বিধ্বস্ত হওয়ায় ১০ ডিসেম্বর রায়পুরা অঞ্চলে ১৪টি হেলিকপ্টারের সাহায্যে ভারতীয় মিত্র বাহিনীর অগ্রবর্তী অংশ তখনকার বিশাল, প্রশস্ত মেঘনা পার হয়। স্থানীয় জনসাধারণ ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনায় শত শত নৌকার সাহায্যে অবশিষ্ট সেনা ও যুদ্ধ-সরঞ্জাম পরিবহনে সহায়তা করে।
প্রচণ্ড চাপে পড়ে আগের দিন ঢাকায় পাকিস্তানের সামরিক নেতৃত্ব ও গভর্নর মালেক সৈন্যসহ পূর্ব পাকিস্তান ত্যাগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। সেদিন দাউদকান্দির পতনের পর তাঁরা বুঝে গিয়েছিলেন, ঢাকাই যৌথ বাহিনীর পরবর্তী লক্ষ্য। পাকিস্তানিদের সম্পূর্ণ পশ্চাদপসরণের সিদ্ধান্ত প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের পূর্ণ অনুমোদন লাভ করে।
সহায়তাকারী ভারতীয় বাহিনীর রায়পুরায় অবতরণের পর প্রায় ৩ ঘণ্টা ঢাকার পাকিস্তানি সামরিক লক্ষ্যবস্তুগুলোর ওপর বিমান হামলা চলে। তখন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নরের সামরিক উপদেষ্টা, গণহত্যার অন্যতম সহযোগী রাও ফরমান আলী ঢাকায় অবস্থানকারী জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব পল মার্ক হেনরিকে ‘অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির’ আয়োজন করার আবেদন জানান। বাঙালিদের ওপর ৯ মাস হত্যাযজ্ঞ চলার পর এত দিনে এসে তিনি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা এবং এই অঞ্চলে থাকা পাকিস্তানি বাহিনীকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা সম্পন্ন করার আহ্বান জানান। জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব এ প্রস্তাব জাতিসংঘ সদর দপ্তরে পাঠিয়ে দেন।
নিরাপত্তা পরিষদে রাও ফরমান আলীর এ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার উদ্যোগ চলার সময় হঠাৎ খবর আসে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া প্রস্তাবটি নাকচ করে দিয়েছেন। ঘটনা হচ্ছে, খবরটি ওয়াশিংটনে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে মার্কিন সরকার ইয়াহিয়াকে জানান, পাকিস্তানি বাহিনীকে সাহায্য করার জন্য সপ্তম নৌবহর ইতিমধ্যেই বঙ্গোপসাগরের দিকে রওনা হয়েছে। এ কারণেই ইয়াহিয়ার মত বদলে যায়। পাকিস্তান নিজে থেকে ‘সম্মানজনকভাবে’ সেনা প্রত্যাহারের জন্য উদ্যোগী হলেও সেই উদ্যোগকে সমর্থন না করে মার্কিন সরকার বরং তা রদ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করে। তার ওপর ভারতকে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে সম্মত করানোর তাগিদ দিয়ে ৯ ও ১০ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্ট নিক্সন সোভিয়েত নেতা ব্রেজনেভকে দুই দফা বার্তা পাঠান। যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার ব্যাপারে ভারতকে সম্মত করতে ব্রেজনেভের ওপর চাপের মাত্রা বাড়ানো হয়। তাঁকে জানানো হয়, ভারত যদি এরপরও সম্মত না হয়, তবে যুক্তরাষ্ট্র নিজে এ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে।
উপমহাদেশের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র ‘শক্ত ব্যবস্থা’ গ্রহণ করতে পারে, তা সোভিয়েত ইউনিয়নের ভালো করেই জানা ছিল। সোভিয়েত সরকার তাদের নৌবাহিনীকে সতর্ক রাখে। মার্কিন সপ্তম নৌবহরের যাত্রারম্ভের আগেই সোভিয়েতরা তাদের ভারত মহাসাগরীয় নৌবহরের শক্তি বৃদ্ধি শুরু করে।
১০ ডিসেম্বর মার্কিন সপ্তম নৌবহর চীন সাগর ও ভারত মহাসাগরকে সংযোগকারী পাঁচ শ’ মাইল দীর্ঘ মালাক্কা প্রণালির ওপারে ছিল। ভারত মহাসাগরে সোভিয়েত নৌবহরের সমাবেশ তখন সম্পূর্ণ হয়নি। এই অবস্থায় জানা যায়, মার্কিন সপ্তম নৌবহরের গতিবিধি জানার জন্যই সোভিয়েত সরকার কসমস নামের নজরদারি কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করে।
এদিকে চূড়ান্ত পর্বের রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের আশঙ্কায় ঢাকা ছেড়ে চলে যেতে থাকেন অনেক সাধারণ মানুষ। আগের দিন সরকার স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করেছিল। গুজব ছড়িয়ে পড়ে, রাস্তায় রাস্তায় পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে লড়াই হবে বলে মুক্তিযোদ্ধারা লোকজনকে শহর ছেড়ে চলে যেতে বলেছেন। অনেক লোককে দেখা যায়, পরিবার-পরিজন, পোঁটলাপুঁটলি নিয়ে রিকশা বা বেবিট্যাক্সিতে (সিএনজি অটোর আগের সংস্করণ) করে শহর থেকে বাইরে চলে যাচ্ছে। কেউ কেউ লটবহর মাথায় নিয়ে হেঁটেই চলেছেন। এ যেন ২৫ মার্চের গণহত্যার পর ঢাকা ছাড়ার যে ঢল নেমেছিল কিছুটা প্রতিচ্ছবি।

মুক্তিবাহিনীর অগ্রাভিযানে পাকিস্তানি বাহিনীর একের পর এক অবস্থানের পতনে মুক্ত হচ্ছিল বাংলাদেশের একেকটি অঞ্চল। এগিয়ে আসছিল স্বাধীনতার মুহূর্তটি। যদিও ঠিক কখন, কীভাবে সেদিনটি আসবে, তখনো তা স্পষ্ট নয় সাধারণ মানুষের কাছে। তবে সবাই অধীর আগ্রহে ক্ষণ গুনছিল।
সেতু বিধ্বস্ত হওয়ায় ১০ ডিসেম্বর রায়পুরা অঞ্চলে ১৪টি হেলিকপ্টারের সাহায্যে ভারতীয় মিত্র বাহিনীর অগ্রবর্তী অংশ তখনকার বিশাল, প্রশস্ত মেঘনা পার হয়। স্থানীয় জনসাধারণ ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনায় শত শত নৌকার সাহায্যে অবশিষ্ট সেনা ও যুদ্ধ-সরঞ্জাম পরিবহনে সহায়তা করে।
প্রচণ্ড চাপে পড়ে আগের দিন ঢাকায় পাকিস্তানের সামরিক নেতৃত্ব ও গভর্নর মালেক সৈন্যসহ পূর্ব পাকিস্তান ত্যাগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। সেদিন দাউদকান্দির পতনের পর তাঁরা বুঝে গিয়েছিলেন, ঢাকাই যৌথ বাহিনীর পরবর্তী লক্ষ্য। পাকিস্তানিদের সম্পূর্ণ পশ্চাদপসরণের সিদ্ধান্ত প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের পূর্ণ অনুমোদন লাভ করে।
সহায়তাকারী ভারতীয় বাহিনীর রায়পুরায় অবতরণের পর প্রায় ৩ ঘণ্টা ঢাকার পাকিস্তানি সামরিক লক্ষ্যবস্তুগুলোর ওপর বিমান হামলা চলে। তখন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নরের সামরিক উপদেষ্টা, গণহত্যার অন্যতম সহযোগী রাও ফরমান আলী ঢাকায় অবস্থানকারী জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব পল মার্ক হেনরিকে ‘অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির’ আয়োজন করার আবেদন জানান। বাঙালিদের ওপর ৯ মাস হত্যাযজ্ঞ চলার পর এত দিনে এসে তিনি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা এবং এই অঞ্চলে থাকা পাকিস্তানি বাহিনীকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা সম্পন্ন করার আহ্বান জানান। জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব এ প্রস্তাব জাতিসংঘ সদর দপ্তরে পাঠিয়ে দেন।
নিরাপত্তা পরিষদে রাও ফরমান আলীর এ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার উদ্যোগ চলার সময় হঠাৎ খবর আসে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া প্রস্তাবটি নাকচ করে দিয়েছেন। ঘটনা হচ্ছে, খবরটি ওয়াশিংটনে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে মার্কিন সরকার ইয়াহিয়াকে জানান, পাকিস্তানি বাহিনীকে সাহায্য করার জন্য সপ্তম নৌবহর ইতিমধ্যেই বঙ্গোপসাগরের দিকে রওনা হয়েছে। এ কারণেই ইয়াহিয়ার মত বদলে যায়। পাকিস্তান নিজে থেকে ‘সম্মানজনকভাবে’ সেনা প্রত্যাহারের জন্য উদ্যোগী হলেও সেই উদ্যোগকে সমর্থন না করে মার্কিন সরকার বরং তা রদ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করে। তার ওপর ভারতকে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে সম্মত করানোর তাগিদ দিয়ে ৯ ও ১০ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্ট নিক্সন সোভিয়েত নেতা ব্রেজনেভকে দুই দফা বার্তা পাঠান। যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার ব্যাপারে ভারতকে সম্মত করতে ব্রেজনেভের ওপর চাপের মাত্রা বাড়ানো হয়। তাঁকে জানানো হয়, ভারত যদি এরপরও সম্মত না হয়, তবে যুক্তরাষ্ট্র নিজে এ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে।
উপমহাদেশের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র ‘শক্ত ব্যবস্থা’ গ্রহণ করতে পারে, তা সোভিয়েত ইউনিয়নের ভালো করেই জানা ছিল। সোভিয়েত সরকার তাদের নৌবাহিনীকে সতর্ক রাখে। মার্কিন সপ্তম নৌবহরের যাত্রারম্ভের আগেই সোভিয়েতরা তাদের ভারত মহাসাগরীয় নৌবহরের শক্তি বৃদ্ধি শুরু করে।
১০ ডিসেম্বর মার্কিন সপ্তম নৌবহর চীন সাগর ও ভারত মহাসাগরকে সংযোগকারী পাঁচ শ’ মাইল দীর্ঘ মালাক্কা প্রণালির ওপারে ছিল। ভারত মহাসাগরে সোভিয়েত নৌবহরের সমাবেশ তখন সম্পূর্ণ হয়নি। এই অবস্থায় জানা যায়, মার্কিন সপ্তম নৌবহরের গতিবিধি জানার জন্যই সোভিয়েত সরকার কসমস নামের নজরদারি কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করে।
এদিকে চূড়ান্ত পর্বের রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের আশঙ্কায় ঢাকা ছেড়ে চলে যেতে থাকেন অনেক সাধারণ মানুষ। আগের দিন সরকার স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করেছিল। গুজব ছড়িয়ে পড়ে, রাস্তায় রাস্তায় পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে লড়াই হবে বলে মুক্তিযোদ্ধারা লোকজনকে শহর ছেড়ে চলে যেতে বলেছেন। অনেক লোককে দেখা যায়, পরিবার-পরিজন, পোঁটলাপুঁটলি নিয়ে রিকশা বা বেবিট্যাক্সিতে (সিএনজি অটোর আগের সংস্করণ) করে শহর থেকে বাইরে চলে যাচ্ছে। কেউ কেউ লটবহর মাথায় নিয়ে হেঁটেই চলেছেন। এ যেন ২৫ মার্চের গণহত্যার পর ঢাকা ছাড়ার যে ঢল নেমেছিল কিছুটা প্রতিচ্ছবি।

গত এক দশকে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) আকার বেড়েছে ৪০ লাখ কোটি টাকা। একই সময়ে দেশে নতুন করে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হয়েছে ছোট-বড় মাত্র ৪০ লাখ ৫৮ হাজার খানা ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে সেবা খাতে ৩৯ লাখ ১৯ হাজার এবং ম্যানুফ্যাকচারিং (উৎপাদন) খাতে যুক্ত হয়েছে ১ লাখ ৩৮ হাজার ৮৮৫টি প্রতিষ্ঠান। গত ১০ ব
২৯ জানুয়ারি ২০২৫
টাঙ্গাইলের শাড়ি বুনন শিল্পকে অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেসকো। গতকাল মঙ্গলবার ভারতের নয়াদিল্লিতে ইউনেসকো কনভেনশনের চলমান ২০তম আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
১২ মিনিট আগে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনে অন্যতম সমন্বয়ক হিসেবে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আসিফ মাহমুদ।
১৬ মিনিট আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং গণভোটের তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে এসেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ বুধবার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করবে কমিশন। এরপর জাতির উদ্দেশে দেওয়ার জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের ভাষণ রেকর্ড করা হবে। তিনি আগামীকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ টেলিভিশন
৯ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং গণভোটের তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে এসেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ বুধবার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করবে কমিশন। এরপর জাতির উদ্দেশে দেওয়ার জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের ভাষণ রেকর্ড করা হবে। তিনি আগামীকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং বাংলাদেশ বেতারে দেওয়া ভাষণে তফসিল ঘোষণা করতে পারেন। সব ঠিক থাকলে ভোট অনুষ্ঠিত হতে পারে ১২ ফেব্রুয়ারি।
আগামী ৫, ৮ ও ১২ ফেব্রুয়ারির যেকোনো দিন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রস্তুতি নিয়ে কাজ শুরু করেছিল নির্বাচন কমিশন। পরে কমিশন জানায়, ৮ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ভোট হবে। এর মধ্যে ৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট করার বিষয়ে প্রাথমিক প্রস্তুতিও নিয়েছিল ইসি। সেখান থেকে সরে ১২ ফেব্রুয়ারি ভোটের তারিখ চূড়ান্ত হয়েছে বলে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় এবং নির্বাচন কমিশন সূত্র জানিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসির এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, ১২ ফেব্রুয়ারি ভোটের তারিখ চূড়ান্ত করা হয়েছে। দিনটি বৃহস্পতিবার। ভোট গ্রহণের পর ভোটের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিশ্রামের প্রয়োজন হয়। ভোটের পরের দুই দিন সরকারি ছুটি থাকায় তাঁরা সেই সুযোগ পাবেন। এ জন্য ১২ ফেব্রুয়ারিকে ভোটের দিন হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বারবার বলে আসছেন, আগামী সংসদ নির্বাচনের ভোট হবে ঈদ উৎসবের মতো। ফলে এবারই প্রথম ভোটের আগের দিন ১১ ফেব্রুয়ারি বুধবার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হতে পারে। ১২ ফেব্রুয়ারি ভোটের দিন সাধারণ ছুটি থাকবে। পরের দুই দিন ১৩ ও ১৪ ফেব্রুয়ারি শুক্র, শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি।
ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ জানান, জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে সিইসি তফসিল ঘোষণা করবেন। আজ সেই ভাষণ রেকর্ড করা হবে। আর নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ জানান, তফসিল ঘোষণায় ভাষণের সবকিছু চূড়ান্ত হয়ে গেছে। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে আজ সন্ধ্যায় অথবা বৃহস্পতিবার তফসিল ঘোষণা করা হবে।
সূত্র জানায়, সিইসির ভাষণ রেকর্ড করার বিষয়ে গতকাল মঙ্গলবার বিটিভির একটি প্রতিনিধিদল ইসিতে গিয়েছিল। আজ দুপুর ১২টায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে কমিশন। এরপর সিইসির ভাষণ রেকর্ড করার কথা রয়েছে। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বৃহস্পতিবার তফসিল ঘোষণা করা হবে। তবে আজ বিকেলেও তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে।
নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, তফসিল ঘোষণার পর রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা পদে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। বিভিন্ন বিষয়ে ২০টির মতো পরিপত্র জারি করতে হবে। ভ্রাম্যমাণ আদালত, ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ, ইলেকটোরাল ইনকোয়ারি কমিটি নিয়োগ, মনিটরিং সেল এবং আইনশৃঙ্খলা-বিষয়ক সেল গঠনের সব প্রস্তুতি রাখা হয়েছে।
তফসিল ঘোষণার পর ধারাবাহিকভাবে এগুলো জারি করা হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে একধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল নির্বাচন কমিশন। জাতীয় সংসদ ভোটের সঙ্গে গণভোটের ঘোষণা আসায় অতিরিক্ত ব্যালট পেপার ছাপানো, গোপন কক্ষের সংখ্যা বাড়ানো এবং বাজেট বাড়ানোর বাড়তি প্রস্তুতি নিতে হয়েছে কমিশনকে। এরই মধ্যে ভোটার তালিকা হালনাগাদ, আইনবিধি সংশোধন, রাজনৈতিক দল ও পর্যবেক্ষক নিবন্ধন, অধিকাংশ ছাপার কাজ, অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সরকারের সব বিভাগের প্রধানদের সঙ্গে দুই দফা বৈঠকও হয়েছে।
সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একসঙ্গে হওয়ায় ভোট দিতে একজন ভোটারের কত সময় লাগবে, সেই ধারণা নিতে গত ২৯ নভেম্বর ভোটের মহড়া করে ইসি। এই অভিজ্ঞতা থেকে ভোটের সময় ১ ঘণ্টা বাড়ানো হয়েছে। এবার সকাল সাড়ে ৭টায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে বিকেল সাড়ে ৪টায় শেষ হবে। আগের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ করা হয়েছিল।
নির্বাচন কমিশনার সানাউল্লাহ জানান, আচরণবিধি প্রতিপালনে তফসিল ঘোষণার দিন থেকে প্রতিটি উপজেলায় দুজন ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। এরপর ভোটের পাঁচ দিন আগে ম্যাজিস্ট্রেট বাড়ানো হবে। তফসিল ঘোষণার পর ৪৮ ঘণ্টা সময় দেওয়া হবে পোস্টার সরাতে। এ সময়ের মধ্যে পোস্টার না সরালে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এবার প্রিসাইডিং, সহকারী প্রিসাইডিং এবং পোলিং কর্মকর্তা হিসেবে সরকারি ও আধা সরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের নেওয়া হবে। বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তাদের এসব পদে দায়িত্ব না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি।
একই দিন সংসদ নির্বাচন ও গণভোট সামনে রেখে গত রোববার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে এবং গতকাল প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন সিইসি। রেওয়াজ অনুযায়ী, আজ রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের পর সিইসির তফসিল ঘোষণার ভাষণ রেকর্ড করা হবে।
তফসিলের পর বেআইনি জনসমাবেশ করলে কঠোরভাবে দমন
তফসিল ঘোষণার পর সব ধরনের বেআইনি ও অনুমোদনহীন জনসমাবেশ, আন্দোলন পরিচালনা থেকে বিরত থাকতে সবাইকে আহ্বান জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে গতকাল পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এই আহ্বান জানানো হয়। এতে বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে গতকাল দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
নির্বাচন যেন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও উৎসবমুখর হয়—এটিই সরকারের মূল লক্ষ্য। এ কথা জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচন পর্যন্ত যেকোনো ধরনের বেআইনি ও অনুমোদনহীন জনসমাবেশ, জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে এমন আন্দোলন কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। যাঁরা বেআইনিভাবে সভা-সমাবেশে অংশ নেবেন, তাঁদের আইনের আওতায় আনা হবে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা এখন নির্বাচনমুখী সময়ে আছি। এ কারণে, সবার যা কিছু দাবিদাওয়া আছে, তা নির্বাচন-পরবর্তী সরকারের কাছে উপস্থাপনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হচ্ছে। আশা করব, এ সময়ের মধ্যে কেউ দাবিদাওয়া নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি বা স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘ্নিত করবেন না।’

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং গণভোটের তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে এসেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ বুধবার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করবে কমিশন। এরপর জাতির উদ্দেশে দেওয়ার জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের ভাষণ রেকর্ড করা হবে। তিনি আগামীকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং বাংলাদেশ বেতারে দেওয়া ভাষণে তফসিল ঘোষণা করতে পারেন। সব ঠিক থাকলে ভোট অনুষ্ঠিত হতে পারে ১২ ফেব্রুয়ারি।
আগামী ৫, ৮ ও ১২ ফেব্রুয়ারির যেকোনো দিন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রস্তুতি নিয়ে কাজ শুরু করেছিল নির্বাচন কমিশন। পরে কমিশন জানায়, ৮ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ভোট হবে। এর মধ্যে ৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট করার বিষয়ে প্রাথমিক প্রস্তুতিও নিয়েছিল ইসি। সেখান থেকে সরে ১২ ফেব্রুয়ারি ভোটের তারিখ চূড়ান্ত হয়েছে বলে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় এবং নির্বাচন কমিশন সূত্র জানিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসির এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, ১২ ফেব্রুয়ারি ভোটের তারিখ চূড়ান্ত করা হয়েছে। দিনটি বৃহস্পতিবার। ভোট গ্রহণের পর ভোটের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিশ্রামের প্রয়োজন হয়। ভোটের পরের দুই দিন সরকারি ছুটি থাকায় তাঁরা সেই সুযোগ পাবেন। এ জন্য ১২ ফেব্রুয়ারিকে ভোটের দিন হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বারবার বলে আসছেন, আগামী সংসদ নির্বাচনের ভোট হবে ঈদ উৎসবের মতো। ফলে এবারই প্রথম ভোটের আগের দিন ১১ ফেব্রুয়ারি বুধবার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হতে পারে। ১২ ফেব্রুয়ারি ভোটের দিন সাধারণ ছুটি থাকবে। পরের দুই দিন ১৩ ও ১৪ ফেব্রুয়ারি শুক্র, শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি।
ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ জানান, জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে সিইসি তফসিল ঘোষণা করবেন। আজ সেই ভাষণ রেকর্ড করা হবে। আর নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ জানান, তফসিল ঘোষণায় ভাষণের সবকিছু চূড়ান্ত হয়ে গেছে। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে আজ সন্ধ্যায় অথবা বৃহস্পতিবার তফসিল ঘোষণা করা হবে।
সূত্র জানায়, সিইসির ভাষণ রেকর্ড করার বিষয়ে গতকাল মঙ্গলবার বিটিভির একটি প্রতিনিধিদল ইসিতে গিয়েছিল। আজ দুপুর ১২টায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে কমিশন। এরপর সিইসির ভাষণ রেকর্ড করার কথা রয়েছে। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বৃহস্পতিবার তফসিল ঘোষণা করা হবে। তবে আজ বিকেলেও তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে।
নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, তফসিল ঘোষণার পর রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা পদে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। বিভিন্ন বিষয়ে ২০টির মতো পরিপত্র জারি করতে হবে। ভ্রাম্যমাণ আদালত, ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ, ইলেকটোরাল ইনকোয়ারি কমিটি নিয়োগ, মনিটরিং সেল এবং আইনশৃঙ্খলা-বিষয়ক সেল গঠনের সব প্রস্তুতি রাখা হয়েছে।
তফসিল ঘোষণার পর ধারাবাহিকভাবে এগুলো জারি করা হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে একধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল নির্বাচন কমিশন। জাতীয় সংসদ ভোটের সঙ্গে গণভোটের ঘোষণা আসায় অতিরিক্ত ব্যালট পেপার ছাপানো, গোপন কক্ষের সংখ্যা বাড়ানো এবং বাজেট বাড়ানোর বাড়তি প্রস্তুতি নিতে হয়েছে কমিশনকে। এরই মধ্যে ভোটার তালিকা হালনাগাদ, আইনবিধি সংশোধন, রাজনৈতিক দল ও পর্যবেক্ষক নিবন্ধন, অধিকাংশ ছাপার কাজ, অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সরকারের সব বিভাগের প্রধানদের সঙ্গে দুই দফা বৈঠকও হয়েছে।
সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একসঙ্গে হওয়ায় ভোট দিতে একজন ভোটারের কত সময় লাগবে, সেই ধারণা নিতে গত ২৯ নভেম্বর ভোটের মহড়া করে ইসি। এই অভিজ্ঞতা থেকে ভোটের সময় ১ ঘণ্টা বাড়ানো হয়েছে। এবার সকাল সাড়ে ৭টায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে বিকেল সাড়ে ৪টায় শেষ হবে। আগের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ করা হয়েছিল।
নির্বাচন কমিশনার সানাউল্লাহ জানান, আচরণবিধি প্রতিপালনে তফসিল ঘোষণার দিন থেকে প্রতিটি উপজেলায় দুজন ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। এরপর ভোটের পাঁচ দিন আগে ম্যাজিস্ট্রেট বাড়ানো হবে। তফসিল ঘোষণার পর ৪৮ ঘণ্টা সময় দেওয়া হবে পোস্টার সরাতে। এ সময়ের মধ্যে পোস্টার না সরালে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এবার প্রিসাইডিং, সহকারী প্রিসাইডিং এবং পোলিং কর্মকর্তা হিসেবে সরকারি ও আধা সরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের নেওয়া হবে। বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তাদের এসব পদে দায়িত্ব না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি।
একই দিন সংসদ নির্বাচন ও গণভোট সামনে রেখে গত রোববার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে এবং গতকাল প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন সিইসি। রেওয়াজ অনুযায়ী, আজ রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের পর সিইসির তফসিল ঘোষণার ভাষণ রেকর্ড করা হবে।
তফসিলের পর বেআইনি জনসমাবেশ করলে কঠোরভাবে দমন
তফসিল ঘোষণার পর সব ধরনের বেআইনি ও অনুমোদনহীন জনসমাবেশ, আন্দোলন পরিচালনা থেকে বিরত থাকতে সবাইকে আহ্বান জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে গতকাল পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এই আহ্বান জানানো হয়। এতে বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে গতকাল দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
নির্বাচন যেন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও উৎসবমুখর হয়—এটিই সরকারের মূল লক্ষ্য। এ কথা জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচন পর্যন্ত যেকোনো ধরনের বেআইনি ও অনুমোদনহীন জনসমাবেশ, জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে এমন আন্দোলন কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। যাঁরা বেআইনিভাবে সভা-সমাবেশে অংশ নেবেন, তাঁদের আইনের আওতায় আনা হবে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা এখন নির্বাচনমুখী সময়ে আছি। এ কারণে, সবার যা কিছু দাবিদাওয়া আছে, তা নির্বাচন-পরবর্তী সরকারের কাছে উপস্থাপনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হচ্ছে। আশা করব, এ সময়ের মধ্যে কেউ দাবিদাওয়া নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি বা স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘ্নিত করবেন না।’

গত এক দশকে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) আকার বেড়েছে ৪০ লাখ কোটি টাকা। একই সময়ে দেশে নতুন করে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হয়েছে ছোট-বড় মাত্র ৪০ লাখ ৫৮ হাজার খানা ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে সেবা খাতে ৩৯ লাখ ১৯ হাজার এবং ম্যানুফ্যাকচারিং (উৎপাদন) খাতে যুক্ত হয়েছে ১ লাখ ৩৮ হাজার ৮৮৫টি প্রতিষ্ঠান। গত ১০ ব
২৯ জানুয়ারি ২০২৫
টাঙ্গাইলের শাড়ি বুনন শিল্পকে অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেসকো। গতকাল মঙ্গলবার ভারতের নয়াদিল্লিতে ইউনেসকো কনভেনশনের চলমান ২০তম আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
১২ মিনিট আগে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনে অন্যতম সমন্বয়ক হিসেবে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আসিফ মাহমুদ।
১৬ মিনিট আগে
মুক্তিবাহিনীর অগ্রাভিযানে পাকিস্তানি বাহিনীর একের পর এক অবস্থানের পতনে মুক্ত হচ্ছিল বাংলাদেশের একেকটি অঞ্চল। এগিয়ে আসছিল স্বাধীনতার মুহূর্তটি। যদিও ঠিক কখন, কীভাবে সেদিনটি আসবে, তখনো তা স্পষ্ট নয় সাধারণ মানুষের কাছে। তবে সবাই অধীর আগ্রহে ক্ষণ গুনছিল।
১ ঘণ্টা আগে