নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ঘরহীন মানুষের বসবাসের জন্য একটি করে পাকা বাড়ি নির্মাণ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মুজিববর্ষে এসব বাড়ি ভূমিহীনদের হাতে উপহার হিসেবে তুলে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। উপহারের সেই বাড়ির অবস্থা এমন হয়েছে যে, বাড়ি পাওয়া ব্যক্তিরা আর সেখানে থাকতে চান না। কোনো বাড়িতে বসবাস শুরুর আগে, কোনোটা বসবাস শুরুর পর ধসে পড়ছে। কোনোটিতে ফাটল দেখা দিয়েছে আবার কোনোটি পানিতে ডুবে গেছে। কিছু কিছু বাড়ির নিচ থেকে মাটি সরে গিয়ে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
স্বপ্নের এই প্রকল্পের অনিয়ম, দুর্নীতি আর নিম্নমানের কাজের কথা শুনে চরম ক্ষুব্ধ হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি এ ব্যাপারে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি নির্মাণ করতে গিয়ে ঠিকাদারেরা পুকুরচুরি করেছেন। আর তদারকির দায়িত্ব যাঁদের দেওয়া হয়েছিল, তাঁরা হয় দায়িত্বে অবহেলা করেছেন, নয়তো ‘ম্যানেজ’ হয়েছেন। কিছু কিছু স্থানে বাড়ি পেতে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের পরিচালক মাহবুব হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রকল্পের ডিজাইন আমাদের প্রকল্পের প্রকৌশলীরা করেছেন। আমরা নদীর পাড়, বন্যাপ্রবণ জায়গায় ঘর বানাতে নিষেধ করেছি। যাঁরা এগুলো করেছেন তাঁদের দায় নিতে হবে।’
সরকারি সূত্র জানায়, মুজিববর্ষে গৃহহীনদের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্প-২–এর আওতায় ২ শতাংশ করে জমির ওপর ১ লাখ ২৩ হাজার ২৪৪টি পরিবারকে ঘর করে দেওয়ার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়। এর প্রথম পর্যায়ে ছিল ৬৬ হাজার ১৮৯ পরিবারকে ঘর এবং ৩ হাজার ৭১৫ পরিবারকে ব্যারাকে পুনর্বাসন করা। প্রতিটি ঘর নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ লাখ ৭১ হাজার, সঙ্গে পরিবহন ব্যয় ৪ হাজার টাকা করে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ৫৩ হাজার ৩৪০ ঘরের প্রতিটিতে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয়ের সঙ্গে পরিবহন ব্যয় ধরা হয় ৫ হাজার টাকা করে। হাওর ও পাহাড়ি অঞ্চলে পরিবহন ব্যয় ধরা হয় ৭ হাজার। এই প্রকল্পে মোট ব্যয় হয়েছে ২ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা।
আশ্রয়ণ প্রকল্পে নির্মিত বাড়ি ভেঙে পড়ার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নড়েচড়ে বসেছেন। ইতিমধ্যে এ ঘটনায় দায়িত্বপ্রাপ্ত পাঁচ কর্মকর্তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের নির্দেশে পাঁচটি তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনও এ জন্য পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
প্রকল্পের বাড়িগুলোর অবস্থা দেখতে আজকের পত্রিকার ২৫টি জেলা ও ৩৬টি উপজেলার ৬১ জন প্রতিনিধি সেখানে গেছেন। তাঁদের পাঠানো বিবরণে ফুটে উঠেছে সেখানকার অনিয়মের চিত্র।
মাটি শক্ত হওয়ার আগেই ভবন
বেশির ভাগ ভবনই নির্মাণ করা হয়েছে নিচু খাসজমিতে। এসব জমি ভরাটের পর মাটি শক্ত হতে পর্যপ্ত সময় দেওয়া হয়নি। ফলে বৃষ্টিতে ঘরের নিচের মাটি সরে তা ভেঙে পড়ছে। উপকারভোগীরা বলছেন, তাঁদের ঘরগুলো আলগা মাটিতে ইটের মেঝে তৈরি করা হয়েছে। বৃষ্টিতে নিচের মাটি সরে গেছে। মেঝে ভেঙে গেছে। পরে তাড়াহুড়ো করে আবার প্রশাসনের পক্ষ থেকে মেরামত করা হচ্ছে। ভরা বর্ষায় এসব ঘর আবার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর আলাদীপুর ইউনিয়নের বাসুদেবপুরের আশ্রয়ণ প্রকল্প সামান্য ঝড়ে ভেঙে গেছে। কিছু ঘর দেবে গেছে। ঘরের মেঝে ফাটল ধরেছে, খুলে গেছে জানালার পাল্লা। ঝড়সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভয়ে এখন ওসব বাড়িতে অনেকে থাকতে চাইছেন না। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের উপকারভোগী রেসন্ড শব্দকার ও ছরিন্ড শব্দকর বলেন, ঘরগুলোতে চিড় ধরেছে।
বরিশালের –বিভাগীয় কমিশনার মো. সাইফুল হাসান শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, ঘর নির্মাণে বরাদ্দ ছিল সীমিত, সময়ও দেওয়া হয়েছে মাত্র দুই মাস। তাড়াহুড়ো করে কাজ শেষ করতে হয়েছে বলে এসব জটিলতা তৈরি হয়েছে।
নিচু জমিতে ঘর নির্মাণ
সাতক্ষীরা সদরের চিংড়ি ইউনিয়নের গাবা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ১২০টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। মরিচঝাঁপ নদীর বাঁধ ও বেড়িবাঁধের মাঝখানে নিচু ফসলি জমিতে নির্মাণ করা হয়েছে এসব ঘর।
রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিপুরের নলপুকুরে গত শনিবার গিয়ে দেখা যায়, ১৮টি ঘরের চারপাশে হাঁটুপানি। ১০টি ঘরে তালা। কোনো ঘরেই কেউ নেই। কয়েকটি ঘরের জানালা ও বাথরুমের দরজার পাল্লা খুলে গেছে। পাশের এক বাসিন্দা সুমি খাতুন বলেন, ‘বাড়িতে তো থাকারই পরিবেশ নাই। পানিতে ডুবে আছে। এখানে রাতে মাদকসেবীদের আড্ডা জমে।’
পবার ইউএনও শিমুল আকতার বলেন, ‘আমরা ভূমি উন্নয়ন ও রাস্তা নির্মাণ করব। তখন কোনো সমস্যা থাকবে না।’
নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী
আশ্রয়ণ প্রকল্পের অনেক জায়গায় নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। মানহীন ইট, বালু, সিমেন্ট, টিন ব্যবহার করা হয়েছে। এতে মেঝে, দেয়ালে ফাটল ধরেছে। অল্প বৃষ্টিতেই টিনের চালা চুয়ে পানি পড়ছে। ঝালকাঠির রাজাপুরে নির্মাণাধীন ১১টি ঘর গত ২৭ মে ভেঙে পড়ে। ভিত ছাড়া নামমাত্র বালু দিয়ে ইট বিছিয়ে ঘর করা হয়। বৃষ্টিতে নিচের বালু সরে ১১টি ঘরের বারান্দা আংশিক ধসে পড়েছে।
প্রথম ধাপে পাবনার আটঘরিয়া উপজেলায় ৮৫টি ও দেবোত্তর ইউনিয়নের অভিরামপুর গ্রামে ৪০টি ঘর নির্মাণ করা হয়। এর মধ্যে ৩২টি ঘরেই দেখা দিয়েছে ফাটল। আতঙ্কে অনেকেই ঘরে উঠছেন না। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, প্রশাসন কারও সঙ্গে কথা না বলেই ইচ্ছেমতো ঘর নির্মাণ করেছে। মেঝেতে কোনো ইট বা খোয়া-সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই দেওয়া হয়নি। ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী। ইউপি চেয়ারম্যান মোহাঈম্মীন হোসেন চঞ্চল বলেন, ঘরগুলো মাত্র হস্তান্তর করা হয়েছে। এর মধ্যে ফাটল দেখা দেওয়ায় অনেকেই আতঙ্কে ঘরে উঠছেন না।
চট্টগ্রাম বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঠিকাদার দাবি করেন, প্রতিটি ঘরের বরাদ্দ ১ লাখ ৭১ হাজার হলে তাঁকে গড়ে ১ লাখ ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। ফলে তাঁকে ৬ টাকা দরের নিম্নমানের স্থানীয় ইট ব্যবহার করতে হয়েছে। বালুও ব্যবহার করতে হয়েছে নিম্নমানের। সিমেন্টও কম দামি। একটি ঘরের জন্য সর্বোচ্চ ২০ কেজি রড দেওয়া হয়েছে। একইভাবে দরজা, জানালা, কাঠ, ইটের খোয়াও ছিল নিম্নমানের।
সচ্ছলরা পেল ঘর
বরিশাল, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড, টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরসহ বেশ কিছু উপজেলায় প্রকৃত গৃহহীনদের বাদ দিয়ে সচ্ছল ব্যক্তিদের ঘর দেওয়া হয়েছে। টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের গোবিন্দাসী ইউনিয়নের রাউৎবাড়ি গ্রামের সচ্ছল জামান ও আবদুর রশিদ ঘর পেয়েছেন। স্থানীয়রা জানান, দুজনেরই ভালো ঘর আছে, জমিজমাও রয়েছে। স্থানীয়রা বলেন, জামান ও রশিদ কীভাবে ঘর পেলেন, এটা জেনেও বলার সাধ্য নেই। এখন পর্যন্ত তাঁরা ঘরের তালাও খোলেননি। জামানের সঙ্গে কথা বলতে তাঁর মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। ভূঞাপুরের ইউএনও ইশরাত জাহান বলেন, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঘুষের টাকায় ঘর
বরিশাল বারের আইনজীবীর সহকারী (মহুরি) ইউনুসের বাড়ি জেলার মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলায়। নদীভাঙনে ঘর হারিয়েছেন। পরিবার নিয়ে শহরের থাকেন। উপজেলার শ্রীপুর ইউপির চেয়ারম্যানকে ৩০ হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পে একটি ঘর পেয়েছেন বলে অভিযোগ। বসবাসের অনুপযোগী হওয়ায় ঘরে উঠছেন না ইউনুস। নির্মাণের কয়েক দিনের মধ্যে ঘরের পলেস্তারা খসে পড়েছে, ঘরে ঢুকেছে বৃষ্টির পানি। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওই ঘরে উইঠ্যা জানডা খোয়ামু?’ অবশ্য ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ দাবি করেন, ঘর বরাদ্দে তাঁর কোনো হস্তক্ষেপ ছিল না।
বান্দরবানে গৃহহীনদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য। সদর উপজেলার সুয়ালক ইউপির ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আমতলী মারমাপাড়া, তঞ্চঙ্গ্যাপাড়া ও গণেশপাড়ায় ২০ পরিবারের কাছ থেকে ইউপি সদস্য শৈকহ্লা মারমা ৩০ হাজার করে টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে শৈকহ্লা দাবি করেন, ওই টাকা গৃহনির্মাণেই ব্যয় হয়েছে।
ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় ঘর নির্মাণ
আশ্রয়ণ প্রকল্পের নীতিমালায় বলা হয়েছে, ১৯৮৮ সালের বন্যার বিপৎসীমার ওপর পর্যন্ত মাটি ভরাট করে অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী ভিটি প্রস্তুত নিশ্চিত করতে হবে। সংশ্লিষ্টরা দাবি করছেন, খাসজমির অপ্রতুলতার কারণে কিছু কিছু জায়গায় তাদের নদীর তীরবর্তী এলাকায় ঘর নির্মাণ করতে হয়েছে। অনেক ঘর বানানো হয়েছে নদীভাঙনপ্রবণ এলাকা চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের ডাকাতিয়া নদী, গোপালগঞ্জে মধুমতী নদী, মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় নদীর তীরে।
ফরিদগঞ্জের বাগড়ার স্থানীয়রা বলছেন, ডাকাতিয়া নদীর তীরে ঘর করায় ভাঙনের ঝুঁকি আছে। এখানে বাস করা কষ্টকর ও ঝুঁকির। যাতায়াতের পথ ভালো না। ইট, বালু, সিমেন্ট, কাঠ ও টিন ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের।
বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জের শ্রীপুরে ইউনিয়নে নির্মিত ৪০টি ঘরের ৯টি ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের সময় জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে যায়। নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের ফলে ৮টি ঘর ভেঙে পড়েছে। জোয়ারের পানিতে আটকা পড়েছেন বাসিন্দারা।
মেহেন্দীগঞ্জের ইউএনও শাহাদত হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে ঘর তলিয়ে যাওয়া ও ৯টি ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি তিনি জেনেছেন।
জমির অপচয়
ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশের মাটির ধরন এলাকাভেদে ভিন্ন ভিন্ন। বর্ষার পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধস হয়। উপকূলীয় অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় হয়। উত্তরাঞ্চলে বন্যা হয় নিয়মিত। তাই অঞ্চলভেদে ঘরের নকশা ও নির্মাণে ভিন্নতা থাকার কথা। কিন্তু আশ্রয়ণ প্রকল্পে বিষয়টি বিবেচনাতেই রাখা হয়নি বলে একাধিক স্থপতি আজকের পত্রিকাকে বলেছেন।
জানতে চাইলে স্থপতি ইকবাল হাবিব আজকের পত্রিকাকে বলেন, গরিব মানুষকে দেওয়ার নামে যাচ্ছেতাই ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এদের উচিত ছিল, প্রকৌশলী ও স্থপতিদের যুক্ত করে কম খরচে মজবুত ও স্থিতিশীল এবং পরিবেশবান্ধব ঘর তৈরি করা। এটা যারা করছে, তারা গর্হিত অপরাধ করেছে। ঘর নির্মাণের নামে এরা দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও প্রতারণা করেছে।

ঘরহীন মানুষের বসবাসের জন্য একটি করে পাকা বাড়ি নির্মাণ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মুজিববর্ষে এসব বাড়ি ভূমিহীনদের হাতে উপহার হিসেবে তুলে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। উপহারের সেই বাড়ির অবস্থা এমন হয়েছে যে, বাড়ি পাওয়া ব্যক্তিরা আর সেখানে থাকতে চান না। কোনো বাড়িতে বসবাস শুরুর আগে, কোনোটা বসবাস শুরুর পর ধসে পড়ছে। কোনোটিতে ফাটল দেখা দিয়েছে আবার কোনোটি পানিতে ডুবে গেছে। কিছু কিছু বাড়ির নিচ থেকে মাটি সরে গিয়ে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
স্বপ্নের এই প্রকল্পের অনিয়ম, দুর্নীতি আর নিম্নমানের কাজের কথা শুনে চরম ক্ষুব্ধ হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি এ ব্যাপারে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি নির্মাণ করতে গিয়ে ঠিকাদারেরা পুকুরচুরি করেছেন। আর তদারকির দায়িত্ব যাঁদের দেওয়া হয়েছিল, তাঁরা হয় দায়িত্বে অবহেলা করেছেন, নয়তো ‘ম্যানেজ’ হয়েছেন। কিছু কিছু স্থানে বাড়ি পেতে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের পরিচালক মাহবুব হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রকল্পের ডিজাইন আমাদের প্রকল্পের প্রকৌশলীরা করেছেন। আমরা নদীর পাড়, বন্যাপ্রবণ জায়গায় ঘর বানাতে নিষেধ করেছি। যাঁরা এগুলো করেছেন তাঁদের দায় নিতে হবে।’
সরকারি সূত্র জানায়, মুজিববর্ষে গৃহহীনদের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্প-২–এর আওতায় ২ শতাংশ করে জমির ওপর ১ লাখ ২৩ হাজার ২৪৪টি পরিবারকে ঘর করে দেওয়ার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়। এর প্রথম পর্যায়ে ছিল ৬৬ হাজার ১৮৯ পরিবারকে ঘর এবং ৩ হাজার ৭১৫ পরিবারকে ব্যারাকে পুনর্বাসন করা। প্রতিটি ঘর নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ লাখ ৭১ হাজার, সঙ্গে পরিবহন ব্যয় ৪ হাজার টাকা করে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ৫৩ হাজার ৩৪০ ঘরের প্রতিটিতে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয়ের সঙ্গে পরিবহন ব্যয় ধরা হয় ৫ হাজার টাকা করে। হাওর ও পাহাড়ি অঞ্চলে পরিবহন ব্যয় ধরা হয় ৭ হাজার। এই প্রকল্পে মোট ব্যয় হয়েছে ২ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা।
আশ্রয়ণ প্রকল্পে নির্মিত বাড়ি ভেঙে পড়ার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নড়েচড়ে বসেছেন। ইতিমধ্যে এ ঘটনায় দায়িত্বপ্রাপ্ত পাঁচ কর্মকর্তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের নির্দেশে পাঁচটি তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনও এ জন্য পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
প্রকল্পের বাড়িগুলোর অবস্থা দেখতে আজকের পত্রিকার ২৫টি জেলা ও ৩৬টি উপজেলার ৬১ জন প্রতিনিধি সেখানে গেছেন। তাঁদের পাঠানো বিবরণে ফুটে উঠেছে সেখানকার অনিয়মের চিত্র।
মাটি শক্ত হওয়ার আগেই ভবন
বেশির ভাগ ভবনই নির্মাণ করা হয়েছে নিচু খাসজমিতে। এসব জমি ভরাটের পর মাটি শক্ত হতে পর্যপ্ত সময় দেওয়া হয়নি। ফলে বৃষ্টিতে ঘরের নিচের মাটি সরে তা ভেঙে পড়ছে। উপকারভোগীরা বলছেন, তাঁদের ঘরগুলো আলগা মাটিতে ইটের মেঝে তৈরি করা হয়েছে। বৃষ্টিতে নিচের মাটি সরে গেছে। মেঝে ভেঙে গেছে। পরে তাড়াহুড়ো করে আবার প্রশাসনের পক্ষ থেকে মেরামত করা হচ্ছে। ভরা বর্ষায় এসব ঘর আবার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর আলাদীপুর ইউনিয়নের বাসুদেবপুরের আশ্রয়ণ প্রকল্প সামান্য ঝড়ে ভেঙে গেছে। কিছু ঘর দেবে গেছে। ঘরের মেঝে ফাটল ধরেছে, খুলে গেছে জানালার পাল্লা। ঝড়সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভয়ে এখন ওসব বাড়িতে অনেকে থাকতে চাইছেন না। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের উপকারভোগী রেসন্ড শব্দকার ও ছরিন্ড শব্দকর বলেন, ঘরগুলোতে চিড় ধরেছে।
বরিশালের –বিভাগীয় কমিশনার মো. সাইফুল হাসান শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, ঘর নির্মাণে বরাদ্দ ছিল সীমিত, সময়ও দেওয়া হয়েছে মাত্র দুই মাস। তাড়াহুড়ো করে কাজ শেষ করতে হয়েছে বলে এসব জটিলতা তৈরি হয়েছে।
নিচু জমিতে ঘর নির্মাণ
সাতক্ষীরা সদরের চিংড়ি ইউনিয়নের গাবা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ১২০টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। মরিচঝাঁপ নদীর বাঁধ ও বেড়িবাঁধের মাঝখানে নিচু ফসলি জমিতে নির্মাণ করা হয়েছে এসব ঘর।
রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিপুরের নলপুকুরে গত শনিবার গিয়ে দেখা যায়, ১৮টি ঘরের চারপাশে হাঁটুপানি। ১০টি ঘরে তালা। কোনো ঘরেই কেউ নেই। কয়েকটি ঘরের জানালা ও বাথরুমের দরজার পাল্লা খুলে গেছে। পাশের এক বাসিন্দা সুমি খাতুন বলেন, ‘বাড়িতে তো থাকারই পরিবেশ নাই। পানিতে ডুবে আছে। এখানে রাতে মাদকসেবীদের আড্ডা জমে।’
পবার ইউএনও শিমুল আকতার বলেন, ‘আমরা ভূমি উন্নয়ন ও রাস্তা নির্মাণ করব। তখন কোনো সমস্যা থাকবে না।’
নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী
আশ্রয়ণ প্রকল্পের অনেক জায়গায় নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। মানহীন ইট, বালু, সিমেন্ট, টিন ব্যবহার করা হয়েছে। এতে মেঝে, দেয়ালে ফাটল ধরেছে। অল্প বৃষ্টিতেই টিনের চালা চুয়ে পানি পড়ছে। ঝালকাঠির রাজাপুরে নির্মাণাধীন ১১টি ঘর গত ২৭ মে ভেঙে পড়ে। ভিত ছাড়া নামমাত্র বালু দিয়ে ইট বিছিয়ে ঘর করা হয়। বৃষ্টিতে নিচের বালু সরে ১১টি ঘরের বারান্দা আংশিক ধসে পড়েছে।
প্রথম ধাপে পাবনার আটঘরিয়া উপজেলায় ৮৫টি ও দেবোত্তর ইউনিয়নের অভিরামপুর গ্রামে ৪০টি ঘর নির্মাণ করা হয়। এর মধ্যে ৩২টি ঘরেই দেখা দিয়েছে ফাটল। আতঙ্কে অনেকেই ঘরে উঠছেন না। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, প্রশাসন কারও সঙ্গে কথা না বলেই ইচ্ছেমতো ঘর নির্মাণ করেছে। মেঝেতে কোনো ইট বা খোয়া-সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই দেওয়া হয়নি। ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী। ইউপি চেয়ারম্যান মোহাঈম্মীন হোসেন চঞ্চল বলেন, ঘরগুলো মাত্র হস্তান্তর করা হয়েছে। এর মধ্যে ফাটল দেখা দেওয়ায় অনেকেই আতঙ্কে ঘরে উঠছেন না।
চট্টগ্রাম বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঠিকাদার দাবি করেন, প্রতিটি ঘরের বরাদ্দ ১ লাখ ৭১ হাজার হলে তাঁকে গড়ে ১ লাখ ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। ফলে তাঁকে ৬ টাকা দরের নিম্নমানের স্থানীয় ইট ব্যবহার করতে হয়েছে। বালুও ব্যবহার করতে হয়েছে নিম্নমানের। সিমেন্টও কম দামি। একটি ঘরের জন্য সর্বোচ্চ ২০ কেজি রড দেওয়া হয়েছে। একইভাবে দরজা, জানালা, কাঠ, ইটের খোয়াও ছিল নিম্নমানের।
সচ্ছলরা পেল ঘর
বরিশাল, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড, টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরসহ বেশ কিছু উপজেলায় প্রকৃত গৃহহীনদের বাদ দিয়ে সচ্ছল ব্যক্তিদের ঘর দেওয়া হয়েছে। টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের গোবিন্দাসী ইউনিয়নের রাউৎবাড়ি গ্রামের সচ্ছল জামান ও আবদুর রশিদ ঘর পেয়েছেন। স্থানীয়রা জানান, দুজনেরই ভালো ঘর আছে, জমিজমাও রয়েছে। স্থানীয়রা বলেন, জামান ও রশিদ কীভাবে ঘর পেলেন, এটা জেনেও বলার সাধ্য নেই। এখন পর্যন্ত তাঁরা ঘরের তালাও খোলেননি। জামানের সঙ্গে কথা বলতে তাঁর মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। ভূঞাপুরের ইউএনও ইশরাত জাহান বলেন, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঘুষের টাকায় ঘর
বরিশাল বারের আইনজীবীর সহকারী (মহুরি) ইউনুসের বাড়ি জেলার মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলায়। নদীভাঙনে ঘর হারিয়েছেন। পরিবার নিয়ে শহরের থাকেন। উপজেলার শ্রীপুর ইউপির চেয়ারম্যানকে ৩০ হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পে একটি ঘর পেয়েছেন বলে অভিযোগ। বসবাসের অনুপযোগী হওয়ায় ঘরে উঠছেন না ইউনুস। নির্মাণের কয়েক দিনের মধ্যে ঘরের পলেস্তারা খসে পড়েছে, ঘরে ঢুকেছে বৃষ্টির পানি। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওই ঘরে উইঠ্যা জানডা খোয়ামু?’ অবশ্য ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ দাবি করেন, ঘর বরাদ্দে তাঁর কোনো হস্তক্ষেপ ছিল না।
বান্দরবানে গৃহহীনদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য। সদর উপজেলার সুয়ালক ইউপির ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আমতলী মারমাপাড়া, তঞ্চঙ্গ্যাপাড়া ও গণেশপাড়ায় ২০ পরিবারের কাছ থেকে ইউপি সদস্য শৈকহ্লা মারমা ৩০ হাজার করে টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে শৈকহ্লা দাবি করেন, ওই টাকা গৃহনির্মাণেই ব্যয় হয়েছে।
ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় ঘর নির্মাণ
আশ্রয়ণ প্রকল্পের নীতিমালায় বলা হয়েছে, ১৯৮৮ সালের বন্যার বিপৎসীমার ওপর পর্যন্ত মাটি ভরাট করে অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী ভিটি প্রস্তুত নিশ্চিত করতে হবে। সংশ্লিষ্টরা দাবি করছেন, খাসজমির অপ্রতুলতার কারণে কিছু কিছু জায়গায় তাদের নদীর তীরবর্তী এলাকায় ঘর নির্মাণ করতে হয়েছে। অনেক ঘর বানানো হয়েছে নদীভাঙনপ্রবণ এলাকা চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের ডাকাতিয়া নদী, গোপালগঞ্জে মধুমতী নদী, মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় নদীর তীরে।
ফরিদগঞ্জের বাগড়ার স্থানীয়রা বলছেন, ডাকাতিয়া নদীর তীরে ঘর করায় ভাঙনের ঝুঁকি আছে। এখানে বাস করা কষ্টকর ও ঝুঁকির। যাতায়াতের পথ ভালো না। ইট, বালু, সিমেন্ট, কাঠ ও টিন ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের।
বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জের শ্রীপুরে ইউনিয়নে নির্মিত ৪০টি ঘরের ৯টি ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের সময় জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে যায়। নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের ফলে ৮টি ঘর ভেঙে পড়েছে। জোয়ারের পানিতে আটকা পড়েছেন বাসিন্দারা।
মেহেন্দীগঞ্জের ইউএনও শাহাদত হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে ঘর তলিয়ে যাওয়া ও ৯টি ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি তিনি জেনেছেন।
জমির অপচয়
ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশের মাটির ধরন এলাকাভেদে ভিন্ন ভিন্ন। বর্ষার পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধস হয়। উপকূলীয় অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় হয়। উত্তরাঞ্চলে বন্যা হয় নিয়মিত। তাই অঞ্চলভেদে ঘরের নকশা ও নির্মাণে ভিন্নতা থাকার কথা। কিন্তু আশ্রয়ণ প্রকল্পে বিষয়টি বিবেচনাতেই রাখা হয়নি বলে একাধিক স্থপতি আজকের পত্রিকাকে বলেছেন।
জানতে চাইলে স্থপতি ইকবাল হাবিব আজকের পত্রিকাকে বলেন, গরিব মানুষকে দেওয়ার নামে যাচ্ছেতাই ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এদের উচিত ছিল, প্রকৌশলী ও স্থপতিদের যুক্ত করে কম খরচে মজবুত ও স্থিতিশীল এবং পরিবেশবান্ধব ঘর তৈরি করা। এটা যারা করছে, তারা গর্হিত অপরাধ করেছে। ঘর নির্মাণের নামে এরা দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও প্রতারণা করেছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ঘরহীন মানুষের বসবাসের জন্য একটি করে পাকা বাড়ি নির্মাণ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মুজিববর্ষে এসব বাড়ি ভূমিহীনদের হাতে উপহার হিসেবে তুলে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। উপহারের সেই বাড়ির অবস্থা এমন হয়েছে যে, বাড়ি পাওয়া ব্যক্তিরা আর সেখানে থাকতে চান না। কোনো বাড়িতে বসবাস শুরুর আগে, কোনোটা বসবাস শুরুর পর ধসে পড়ছে। কোনোটিতে ফাটল দেখা দিয়েছে আবার কোনোটি পানিতে ডুবে গেছে। কিছু কিছু বাড়ির নিচ থেকে মাটি সরে গিয়ে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
স্বপ্নের এই প্রকল্পের অনিয়ম, দুর্নীতি আর নিম্নমানের কাজের কথা শুনে চরম ক্ষুব্ধ হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি এ ব্যাপারে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি নির্মাণ করতে গিয়ে ঠিকাদারেরা পুকুরচুরি করেছেন। আর তদারকির দায়িত্ব যাঁদের দেওয়া হয়েছিল, তাঁরা হয় দায়িত্বে অবহেলা করেছেন, নয়তো ‘ম্যানেজ’ হয়েছেন। কিছু কিছু স্থানে বাড়ি পেতে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের পরিচালক মাহবুব হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রকল্পের ডিজাইন আমাদের প্রকল্পের প্রকৌশলীরা করেছেন। আমরা নদীর পাড়, বন্যাপ্রবণ জায়গায় ঘর বানাতে নিষেধ করেছি। যাঁরা এগুলো করেছেন তাঁদের দায় নিতে হবে।’
সরকারি সূত্র জানায়, মুজিববর্ষে গৃহহীনদের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্প-২–এর আওতায় ২ শতাংশ করে জমির ওপর ১ লাখ ২৩ হাজার ২৪৪টি পরিবারকে ঘর করে দেওয়ার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়। এর প্রথম পর্যায়ে ছিল ৬৬ হাজার ১৮৯ পরিবারকে ঘর এবং ৩ হাজার ৭১৫ পরিবারকে ব্যারাকে পুনর্বাসন করা। প্রতিটি ঘর নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ লাখ ৭১ হাজার, সঙ্গে পরিবহন ব্যয় ৪ হাজার টাকা করে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ৫৩ হাজার ৩৪০ ঘরের প্রতিটিতে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয়ের সঙ্গে পরিবহন ব্যয় ধরা হয় ৫ হাজার টাকা করে। হাওর ও পাহাড়ি অঞ্চলে পরিবহন ব্যয় ধরা হয় ৭ হাজার। এই প্রকল্পে মোট ব্যয় হয়েছে ২ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা।
আশ্রয়ণ প্রকল্পে নির্মিত বাড়ি ভেঙে পড়ার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নড়েচড়ে বসেছেন। ইতিমধ্যে এ ঘটনায় দায়িত্বপ্রাপ্ত পাঁচ কর্মকর্তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের নির্দেশে পাঁচটি তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনও এ জন্য পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
প্রকল্পের বাড়িগুলোর অবস্থা দেখতে আজকের পত্রিকার ২৫টি জেলা ও ৩৬টি উপজেলার ৬১ জন প্রতিনিধি সেখানে গেছেন। তাঁদের পাঠানো বিবরণে ফুটে উঠেছে সেখানকার অনিয়মের চিত্র।
মাটি শক্ত হওয়ার আগেই ভবন
বেশির ভাগ ভবনই নির্মাণ করা হয়েছে নিচু খাসজমিতে। এসব জমি ভরাটের পর মাটি শক্ত হতে পর্যপ্ত সময় দেওয়া হয়নি। ফলে বৃষ্টিতে ঘরের নিচের মাটি সরে তা ভেঙে পড়ছে। উপকারভোগীরা বলছেন, তাঁদের ঘরগুলো আলগা মাটিতে ইটের মেঝে তৈরি করা হয়েছে। বৃষ্টিতে নিচের মাটি সরে গেছে। মেঝে ভেঙে গেছে। পরে তাড়াহুড়ো করে আবার প্রশাসনের পক্ষ থেকে মেরামত করা হচ্ছে। ভরা বর্ষায় এসব ঘর আবার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর আলাদীপুর ইউনিয়নের বাসুদেবপুরের আশ্রয়ণ প্রকল্প সামান্য ঝড়ে ভেঙে গেছে। কিছু ঘর দেবে গেছে। ঘরের মেঝে ফাটল ধরেছে, খুলে গেছে জানালার পাল্লা। ঝড়সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভয়ে এখন ওসব বাড়িতে অনেকে থাকতে চাইছেন না। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের উপকারভোগী রেসন্ড শব্দকার ও ছরিন্ড শব্দকর বলেন, ঘরগুলোতে চিড় ধরেছে।
বরিশালের –বিভাগীয় কমিশনার মো. সাইফুল হাসান শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, ঘর নির্মাণে বরাদ্দ ছিল সীমিত, সময়ও দেওয়া হয়েছে মাত্র দুই মাস। তাড়াহুড়ো করে কাজ শেষ করতে হয়েছে বলে এসব জটিলতা তৈরি হয়েছে।
নিচু জমিতে ঘর নির্মাণ
সাতক্ষীরা সদরের চিংড়ি ইউনিয়নের গাবা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ১২০টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। মরিচঝাঁপ নদীর বাঁধ ও বেড়িবাঁধের মাঝখানে নিচু ফসলি জমিতে নির্মাণ করা হয়েছে এসব ঘর।
রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিপুরের নলপুকুরে গত শনিবার গিয়ে দেখা যায়, ১৮টি ঘরের চারপাশে হাঁটুপানি। ১০টি ঘরে তালা। কোনো ঘরেই কেউ নেই। কয়েকটি ঘরের জানালা ও বাথরুমের দরজার পাল্লা খুলে গেছে। পাশের এক বাসিন্দা সুমি খাতুন বলেন, ‘বাড়িতে তো থাকারই পরিবেশ নাই। পানিতে ডুবে আছে। এখানে রাতে মাদকসেবীদের আড্ডা জমে।’
পবার ইউএনও শিমুল আকতার বলেন, ‘আমরা ভূমি উন্নয়ন ও রাস্তা নির্মাণ করব। তখন কোনো সমস্যা থাকবে না।’
নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী
আশ্রয়ণ প্রকল্পের অনেক জায়গায় নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। মানহীন ইট, বালু, সিমেন্ট, টিন ব্যবহার করা হয়েছে। এতে মেঝে, দেয়ালে ফাটল ধরেছে। অল্প বৃষ্টিতেই টিনের চালা চুয়ে পানি পড়ছে। ঝালকাঠির রাজাপুরে নির্মাণাধীন ১১টি ঘর গত ২৭ মে ভেঙে পড়ে। ভিত ছাড়া নামমাত্র বালু দিয়ে ইট বিছিয়ে ঘর করা হয়। বৃষ্টিতে নিচের বালু সরে ১১টি ঘরের বারান্দা আংশিক ধসে পড়েছে।
প্রথম ধাপে পাবনার আটঘরিয়া উপজেলায় ৮৫টি ও দেবোত্তর ইউনিয়নের অভিরামপুর গ্রামে ৪০টি ঘর নির্মাণ করা হয়। এর মধ্যে ৩২টি ঘরেই দেখা দিয়েছে ফাটল। আতঙ্কে অনেকেই ঘরে উঠছেন না। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, প্রশাসন কারও সঙ্গে কথা না বলেই ইচ্ছেমতো ঘর নির্মাণ করেছে। মেঝেতে কোনো ইট বা খোয়া-সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই দেওয়া হয়নি। ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী। ইউপি চেয়ারম্যান মোহাঈম্মীন হোসেন চঞ্চল বলেন, ঘরগুলো মাত্র হস্তান্তর করা হয়েছে। এর মধ্যে ফাটল দেখা দেওয়ায় অনেকেই আতঙ্কে ঘরে উঠছেন না।
চট্টগ্রাম বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঠিকাদার দাবি করেন, প্রতিটি ঘরের বরাদ্দ ১ লাখ ৭১ হাজার হলে তাঁকে গড়ে ১ লাখ ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। ফলে তাঁকে ৬ টাকা দরের নিম্নমানের স্থানীয় ইট ব্যবহার করতে হয়েছে। বালুও ব্যবহার করতে হয়েছে নিম্নমানের। সিমেন্টও কম দামি। একটি ঘরের জন্য সর্বোচ্চ ২০ কেজি রড দেওয়া হয়েছে। একইভাবে দরজা, জানালা, কাঠ, ইটের খোয়াও ছিল নিম্নমানের।
সচ্ছলরা পেল ঘর
বরিশাল, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড, টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরসহ বেশ কিছু উপজেলায় প্রকৃত গৃহহীনদের বাদ দিয়ে সচ্ছল ব্যক্তিদের ঘর দেওয়া হয়েছে। টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের গোবিন্দাসী ইউনিয়নের রাউৎবাড়ি গ্রামের সচ্ছল জামান ও আবদুর রশিদ ঘর পেয়েছেন। স্থানীয়রা জানান, দুজনেরই ভালো ঘর আছে, জমিজমাও রয়েছে। স্থানীয়রা বলেন, জামান ও রশিদ কীভাবে ঘর পেলেন, এটা জেনেও বলার সাধ্য নেই। এখন পর্যন্ত তাঁরা ঘরের তালাও খোলেননি। জামানের সঙ্গে কথা বলতে তাঁর মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। ভূঞাপুরের ইউএনও ইশরাত জাহান বলেন, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঘুষের টাকায় ঘর
বরিশাল বারের আইনজীবীর সহকারী (মহুরি) ইউনুসের বাড়ি জেলার মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলায়। নদীভাঙনে ঘর হারিয়েছেন। পরিবার নিয়ে শহরের থাকেন। উপজেলার শ্রীপুর ইউপির চেয়ারম্যানকে ৩০ হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পে একটি ঘর পেয়েছেন বলে অভিযোগ। বসবাসের অনুপযোগী হওয়ায় ঘরে উঠছেন না ইউনুস। নির্মাণের কয়েক দিনের মধ্যে ঘরের পলেস্তারা খসে পড়েছে, ঘরে ঢুকেছে বৃষ্টির পানি। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওই ঘরে উইঠ্যা জানডা খোয়ামু?’ অবশ্য ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ দাবি করেন, ঘর বরাদ্দে তাঁর কোনো হস্তক্ষেপ ছিল না।
বান্দরবানে গৃহহীনদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য। সদর উপজেলার সুয়ালক ইউপির ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আমতলী মারমাপাড়া, তঞ্চঙ্গ্যাপাড়া ও গণেশপাড়ায় ২০ পরিবারের কাছ থেকে ইউপি সদস্য শৈকহ্লা মারমা ৩০ হাজার করে টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে শৈকহ্লা দাবি করেন, ওই টাকা গৃহনির্মাণেই ব্যয় হয়েছে।
ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় ঘর নির্মাণ
আশ্রয়ণ প্রকল্পের নীতিমালায় বলা হয়েছে, ১৯৮৮ সালের বন্যার বিপৎসীমার ওপর পর্যন্ত মাটি ভরাট করে অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী ভিটি প্রস্তুত নিশ্চিত করতে হবে। সংশ্লিষ্টরা দাবি করছেন, খাসজমির অপ্রতুলতার কারণে কিছু কিছু জায়গায় তাদের নদীর তীরবর্তী এলাকায় ঘর নির্মাণ করতে হয়েছে। অনেক ঘর বানানো হয়েছে নদীভাঙনপ্রবণ এলাকা চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের ডাকাতিয়া নদী, গোপালগঞ্জে মধুমতী নদী, মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় নদীর তীরে।
ফরিদগঞ্জের বাগড়ার স্থানীয়রা বলছেন, ডাকাতিয়া নদীর তীরে ঘর করায় ভাঙনের ঝুঁকি আছে। এখানে বাস করা কষ্টকর ও ঝুঁকির। যাতায়াতের পথ ভালো না। ইট, বালু, সিমেন্ট, কাঠ ও টিন ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের।
বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জের শ্রীপুরে ইউনিয়নে নির্মিত ৪০টি ঘরের ৯টি ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের সময় জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে যায়। নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের ফলে ৮টি ঘর ভেঙে পড়েছে। জোয়ারের পানিতে আটকা পড়েছেন বাসিন্দারা।
মেহেন্দীগঞ্জের ইউএনও শাহাদত হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে ঘর তলিয়ে যাওয়া ও ৯টি ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি তিনি জেনেছেন।
জমির অপচয়
ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশের মাটির ধরন এলাকাভেদে ভিন্ন ভিন্ন। বর্ষার পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধস হয়। উপকূলীয় অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় হয়। উত্তরাঞ্চলে বন্যা হয় নিয়মিত। তাই অঞ্চলভেদে ঘরের নকশা ও নির্মাণে ভিন্নতা থাকার কথা। কিন্তু আশ্রয়ণ প্রকল্পে বিষয়টি বিবেচনাতেই রাখা হয়নি বলে একাধিক স্থপতি আজকের পত্রিকাকে বলেছেন।
জানতে চাইলে স্থপতি ইকবাল হাবিব আজকের পত্রিকাকে বলেন, গরিব মানুষকে দেওয়ার নামে যাচ্ছেতাই ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এদের উচিত ছিল, প্রকৌশলী ও স্থপতিদের যুক্ত করে কম খরচে মজবুত ও স্থিতিশীল এবং পরিবেশবান্ধব ঘর তৈরি করা। এটা যারা করছে, তারা গর্হিত অপরাধ করেছে। ঘর নির্মাণের নামে এরা দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও প্রতারণা করেছে।

ঘরহীন মানুষের বসবাসের জন্য একটি করে পাকা বাড়ি নির্মাণ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মুজিববর্ষে এসব বাড়ি ভূমিহীনদের হাতে উপহার হিসেবে তুলে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। উপহারের সেই বাড়ির অবস্থা এমন হয়েছে যে, বাড়ি পাওয়া ব্যক্তিরা আর সেখানে থাকতে চান না। কোনো বাড়িতে বসবাস শুরুর আগে, কোনোটা বসবাস শুরুর পর ধসে পড়ছে। কোনোটিতে ফাটল দেখা দিয়েছে আবার কোনোটি পানিতে ডুবে গেছে। কিছু কিছু বাড়ির নিচ থেকে মাটি সরে গিয়ে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
স্বপ্নের এই প্রকল্পের অনিয়ম, দুর্নীতি আর নিম্নমানের কাজের কথা শুনে চরম ক্ষুব্ধ হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি এ ব্যাপারে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি নির্মাণ করতে গিয়ে ঠিকাদারেরা পুকুরচুরি করেছেন। আর তদারকির দায়িত্ব যাঁদের দেওয়া হয়েছিল, তাঁরা হয় দায়িত্বে অবহেলা করেছেন, নয়তো ‘ম্যানেজ’ হয়েছেন। কিছু কিছু স্থানে বাড়ি পেতে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের পরিচালক মাহবুব হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রকল্পের ডিজাইন আমাদের প্রকল্পের প্রকৌশলীরা করেছেন। আমরা নদীর পাড়, বন্যাপ্রবণ জায়গায় ঘর বানাতে নিষেধ করেছি। যাঁরা এগুলো করেছেন তাঁদের দায় নিতে হবে।’
সরকারি সূত্র জানায়, মুজিববর্ষে গৃহহীনদের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্প-২–এর আওতায় ২ শতাংশ করে জমির ওপর ১ লাখ ২৩ হাজার ২৪৪টি পরিবারকে ঘর করে দেওয়ার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়। এর প্রথম পর্যায়ে ছিল ৬৬ হাজার ১৮৯ পরিবারকে ঘর এবং ৩ হাজার ৭১৫ পরিবারকে ব্যারাকে পুনর্বাসন করা। প্রতিটি ঘর নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ লাখ ৭১ হাজার, সঙ্গে পরিবহন ব্যয় ৪ হাজার টাকা করে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ৫৩ হাজার ৩৪০ ঘরের প্রতিটিতে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয়ের সঙ্গে পরিবহন ব্যয় ধরা হয় ৫ হাজার টাকা করে। হাওর ও পাহাড়ি অঞ্চলে পরিবহন ব্যয় ধরা হয় ৭ হাজার। এই প্রকল্পে মোট ব্যয় হয়েছে ২ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা।
আশ্রয়ণ প্রকল্পে নির্মিত বাড়ি ভেঙে পড়ার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নড়েচড়ে বসেছেন। ইতিমধ্যে এ ঘটনায় দায়িত্বপ্রাপ্ত পাঁচ কর্মকর্তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের নির্দেশে পাঁচটি তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনও এ জন্য পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
প্রকল্পের বাড়িগুলোর অবস্থা দেখতে আজকের পত্রিকার ২৫টি জেলা ও ৩৬টি উপজেলার ৬১ জন প্রতিনিধি সেখানে গেছেন। তাঁদের পাঠানো বিবরণে ফুটে উঠেছে সেখানকার অনিয়মের চিত্র।
মাটি শক্ত হওয়ার আগেই ভবন
বেশির ভাগ ভবনই নির্মাণ করা হয়েছে নিচু খাসজমিতে। এসব জমি ভরাটের পর মাটি শক্ত হতে পর্যপ্ত সময় দেওয়া হয়নি। ফলে বৃষ্টিতে ঘরের নিচের মাটি সরে তা ভেঙে পড়ছে। উপকারভোগীরা বলছেন, তাঁদের ঘরগুলো আলগা মাটিতে ইটের মেঝে তৈরি করা হয়েছে। বৃষ্টিতে নিচের মাটি সরে গেছে। মেঝে ভেঙে গেছে। পরে তাড়াহুড়ো করে আবার প্রশাসনের পক্ষ থেকে মেরামত করা হচ্ছে। ভরা বর্ষায় এসব ঘর আবার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর আলাদীপুর ইউনিয়নের বাসুদেবপুরের আশ্রয়ণ প্রকল্প সামান্য ঝড়ে ভেঙে গেছে। কিছু ঘর দেবে গেছে। ঘরের মেঝে ফাটল ধরেছে, খুলে গেছে জানালার পাল্লা। ঝড়সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভয়ে এখন ওসব বাড়িতে অনেকে থাকতে চাইছেন না। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের উপকারভোগী রেসন্ড শব্দকার ও ছরিন্ড শব্দকর বলেন, ঘরগুলোতে চিড় ধরেছে।
বরিশালের –বিভাগীয় কমিশনার মো. সাইফুল হাসান শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, ঘর নির্মাণে বরাদ্দ ছিল সীমিত, সময়ও দেওয়া হয়েছে মাত্র দুই মাস। তাড়াহুড়ো করে কাজ শেষ করতে হয়েছে বলে এসব জটিলতা তৈরি হয়েছে।
নিচু জমিতে ঘর নির্মাণ
সাতক্ষীরা সদরের চিংড়ি ইউনিয়নের গাবা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ১২০টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। মরিচঝাঁপ নদীর বাঁধ ও বেড়িবাঁধের মাঝখানে নিচু ফসলি জমিতে নির্মাণ করা হয়েছে এসব ঘর।
রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিপুরের নলপুকুরে গত শনিবার গিয়ে দেখা যায়, ১৮টি ঘরের চারপাশে হাঁটুপানি। ১০টি ঘরে তালা। কোনো ঘরেই কেউ নেই। কয়েকটি ঘরের জানালা ও বাথরুমের দরজার পাল্লা খুলে গেছে। পাশের এক বাসিন্দা সুমি খাতুন বলেন, ‘বাড়িতে তো থাকারই পরিবেশ নাই। পানিতে ডুবে আছে। এখানে রাতে মাদকসেবীদের আড্ডা জমে।’
পবার ইউএনও শিমুল আকতার বলেন, ‘আমরা ভূমি উন্নয়ন ও রাস্তা নির্মাণ করব। তখন কোনো সমস্যা থাকবে না।’
নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী
আশ্রয়ণ প্রকল্পের অনেক জায়গায় নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। মানহীন ইট, বালু, সিমেন্ট, টিন ব্যবহার করা হয়েছে। এতে মেঝে, দেয়ালে ফাটল ধরেছে। অল্প বৃষ্টিতেই টিনের চালা চুয়ে পানি পড়ছে। ঝালকাঠির রাজাপুরে নির্মাণাধীন ১১টি ঘর গত ২৭ মে ভেঙে পড়ে। ভিত ছাড়া নামমাত্র বালু দিয়ে ইট বিছিয়ে ঘর করা হয়। বৃষ্টিতে নিচের বালু সরে ১১টি ঘরের বারান্দা আংশিক ধসে পড়েছে।
প্রথম ধাপে পাবনার আটঘরিয়া উপজেলায় ৮৫টি ও দেবোত্তর ইউনিয়নের অভিরামপুর গ্রামে ৪০টি ঘর নির্মাণ করা হয়। এর মধ্যে ৩২টি ঘরেই দেখা দিয়েছে ফাটল। আতঙ্কে অনেকেই ঘরে উঠছেন না। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, প্রশাসন কারও সঙ্গে কথা না বলেই ইচ্ছেমতো ঘর নির্মাণ করেছে। মেঝেতে কোনো ইট বা খোয়া-সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই দেওয়া হয়নি। ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী। ইউপি চেয়ারম্যান মোহাঈম্মীন হোসেন চঞ্চল বলেন, ঘরগুলো মাত্র হস্তান্তর করা হয়েছে। এর মধ্যে ফাটল দেখা দেওয়ায় অনেকেই আতঙ্কে ঘরে উঠছেন না।
চট্টগ্রাম বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঠিকাদার দাবি করেন, প্রতিটি ঘরের বরাদ্দ ১ লাখ ৭১ হাজার হলে তাঁকে গড়ে ১ লাখ ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। ফলে তাঁকে ৬ টাকা দরের নিম্নমানের স্থানীয় ইট ব্যবহার করতে হয়েছে। বালুও ব্যবহার করতে হয়েছে নিম্নমানের। সিমেন্টও কম দামি। একটি ঘরের জন্য সর্বোচ্চ ২০ কেজি রড দেওয়া হয়েছে। একইভাবে দরজা, জানালা, কাঠ, ইটের খোয়াও ছিল নিম্নমানের।
সচ্ছলরা পেল ঘর
বরিশাল, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড, টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরসহ বেশ কিছু উপজেলায় প্রকৃত গৃহহীনদের বাদ দিয়ে সচ্ছল ব্যক্তিদের ঘর দেওয়া হয়েছে। টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের গোবিন্দাসী ইউনিয়নের রাউৎবাড়ি গ্রামের সচ্ছল জামান ও আবদুর রশিদ ঘর পেয়েছেন। স্থানীয়রা জানান, দুজনেরই ভালো ঘর আছে, জমিজমাও রয়েছে। স্থানীয়রা বলেন, জামান ও রশিদ কীভাবে ঘর পেলেন, এটা জেনেও বলার সাধ্য নেই। এখন পর্যন্ত তাঁরা ঘরের তালাও খোলেননি। জামানের সঙ্গে কথা বলতে তাঁর মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। ভূঞাপুরের ইউএনও ইশরাত জাহান বলেন, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঘুষের টাকায় ঘর
বরিশাল বারের আইনজীবীর সহকারী (মহুরি) ইউনুসের বাড়ি জেলার মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলায়। নদীভাঙনে ঘর হারিয়েছেন। পরিবার নিয়ে শহরের থাকেন। উপজেলার শ্রীপুর ইউপির চেয়ারম্যানকে ৩০ হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পে একটি ঘর পেয়েছেন বলে অভিযোগ। বসবাসের অনুপযোগী হওয়ায় ঘরে উঠছেন না ইউনুস। নির্মাণের কয়েক দিনের মধ্যে ঘরের পলেস্তারা খসে পড়েছে, ঘরে ঢুকেছে বৃষ্টির পানি। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওই ঘরে উইঠ্যা জানডা খোয়ামু?’ অবশ্য ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ দাবি করেন, ঘর বরাদ্দে তাঁর কোনো হস্তক্ষেপ ছিল না।
বান্দরবানে গৃহহীনদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য। সদর উপজেলার সুয়ালক ইউপির ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আমতলী মারমাপাড়া, তঞ্চঙ্গ্যাপাড়া ও গণেশপাড়ায় ২০ পরিবারের কাছ থেকে ইউপি সদস্য শৈকহ্লা মারমা ৩০ হাজার করে টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে শৈকহ্লা দাবি করেন, ওই টাকা গৃহনির্মাণেই ব্যয় হয়েছে।
ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় ঘর নির্মাণ
আশ্রয়ণ প্রকল্পের নীতিমালায় বলা হয়েছে, ১৯৮৮ সালের বন্যার বিপৎসীমার ওপর পর্যন্ত মাটি ভরাট করে অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী ভিটি প্রস্তুত নিশ্চিত করতে হবে। সংশ্লিষ্টরা দাবি করছেন, খাসজমির অপ্রতুলতার কারণে কিছু কিছু জায়গায় তাদের নদীর তীরবর্তী এলাকায় ঘর নির্মাণ করতে হয়েছে। অনেক ঘর বানানো হয়েছে নদীভাঙনপ্রবণ এলাকা চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের ডাকাতিয়া নদী, গোপালগঞ্জে মধুমতী নদী, মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় নদীর তীরে।
ফরিদগঞ্জের বাগড়ার স্থানীয়রা বলছেন, ডাকাতিয়া নদীর তীরে ঘর করায় ভাঙনের ঝুঁকি আছে। এখানে বাস করা কষ্টকর ও ঝুঁকির। যাতায়াতের পথ ভালো না। ইট, বালু, সিমেন্ট, কাঠ ও টিন ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের।
বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জের শ্রীপুরে ইউনিয়নে নির্মিত ৪০টি ঘরের ৯টি ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের সময় জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে যায়। নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের ফলে ৮টি ঘর ভেঙে পড়েছে। জোয়ারের পানিতে আটকা পড়েছেন বাসিন্দারা।
মেহেন্দীগঞ্জের ইউএনও শাহাদত হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে ঘর তলিয়ে যাওয়া ও ৯টি ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি তিনি জেনেছেন।
জমির অপচয়
ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশের মাটির ধরন এলাকাভেদে ভিন্ন ভিন্ন। বর্ষার পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধস হয়। উপকূলীয় অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় হয়। উত্তরাঞ্চলে বন্যা হয় নিয়মিত। তাই অঞ্চলভেদে ঘরের নকশা ও নির্মাণে ভিন্নতা থাকার কথা। কিন্তু আশ্রয়ণ প্রকল্পে বিষয়টি বিবেচনাতেই রাখা হয়নি বলে একাধিক স্থপতি আজকের পত্রিকাকে বলেছেন।
জানতে চাইলে স্থপতি ইকবাল হাবিব আজকের পত্রিকাকে বলেন, গরিব মানুষকে দেওয়ার নামে যাচ্ছেতাই ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এদের উচিত ছিল, প্রকৌশলী ও স্থপতিদের যুক্ত করে কম খরচে মজবুত ও স্থিতিশীল এবং পরিবেশবান্ধব ঘর তৈরি করা। এটা যারা করছে, তারা গর্হিত অপরাধ করেছে। ঘর নির্মাণের নামে এরা দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও প্রতারণা করেছে।

কক্সবাজার অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে জারি করা প্রজ্ঞাপন স্থগিত করেছে সরকার। ফলে আপাতত কক্সবাজার থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হচ্ছে না।
১ ঘণ্টা আগে
আজ শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে পুনর্ব্যক্ত করছে যে, পূর্ব জেরুজালেমসহ দখল করা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের কোনো অংশে ইসরায়েলের কোনো সার্বভৌমত্ব নেই।
২ ঘণ্টা আগে
ওমরাহ হজ পালন করতে গিয়ে এজেন্সির প্রতারণার শিকার হয়েছেন ১৭ জন যাত্রী। পরে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে দুটি এজেন্সি টাকা ফেরত দিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি করেছে। অন্য একটি এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
৪ ঘণ্টা আগে
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী (আনসার-ভিডিপি) পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি নিয়েছে। এবারের নির্বাচনে ৬ লাখ আনসার সদস্য মাঠে থাকবে, যারা ভোটকেন্দ্রগুলোতে ‘প্রথম প্রতিরক্ষা স্তর’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
৭ ঘণ্টা আগেবিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা

কক্সবাজার অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে জারি করা প্রজ্ঞাপন স্থগিত করেছে সরকার। ফলে আপাতত কক্সবাজার থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হচ্ছে না।
আজ শুক্রবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক বিমান উড্ডয়ন কমিটির সভাপতি ও বিমানবন্দর পরিচালক এয়ার কমোডর মো. নুর-ই-আজম।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সূত্রে জানা গেছে, সরকারের পক্ষ থেকে বিমানবন্দরটিকে আন্তর্জাতিক ঘোষণা করার প্রজ্ঞাপন স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত আগের মতোই অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনা চলবে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল। এর মাধ্যমে কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু হয়।
বিমানবন্দরসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অবকাঠামোগত ও প্রশাসনিক কিছু প্রস্তুতি সম্পূর্ণ না হওয়ায় সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
উল্লেখ্য, দেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন নগরী কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর উদ্যোগ পর্যটন খাতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে বলে আশা করা হচ্ছিল। বিশেষ করে, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও ভারতের সঙ্গে সরাসরি আকাশপথে সংযোগের পরিকল্পনাও ছিল সরকারের।

কক্সবাজার অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে জারি করা প্রজ্ঞাপন স্থগিত করেছে সরকার। ফলে আপাতত কক্সবাজার থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হচ্ছে না।
আজ শুক্রবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক বিমান উড্ডয়ন কমিটির সভাপতি ও বিমানবন্দর পরিচালক এয়ার কমোডর মো. নুর-ই-আজম।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সূত্রে জানা গেছে, সরকারের পক্ষ থেকে বিমানবন্দরটিকে আন্তর্জাতিক ঘোষণা করার প্রজ্ঞাপন স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত আগের মতোই অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনা চলবে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল। এর মাধ্যমে কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু হয়।
বিমানবন্দরসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অবকাঠামোগত ও প্রশাসনিক কিছু প্রস্তুতি সম্পূর্ণ না হওয়ায় সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
উল্লেখ্য, দেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন নগরী কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর উদ্যোগ পর্যটন খাতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে বলে আশা করা হচ্ছিল। বিশেষ করে, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও ভারতের সঙ্গে সরাসরি আকাশপথে সংযোগের পরিকল্পনাও ছিল সরকারের।

ঘরহীন মানুষের বসবাসের জন্য একটি করে পাকা বাড়ি নির্মাণ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা। মুজিববর্ষে এসব বাড়ি ভূমিহীনদের হাতে উপহার হিসেবে তুলে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। উপহারের সেই বাড়ির অবস্থা এমন হয়েছে যে, বাড়ি পাওয়া ব্যক্তিরা আর সেখানে থাকতে চান না।
১৩ জুলাই ২০২১
আজ শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে পুনর্ব্যক্ত করছে যে, পূর্ব জেরুজালেমসহ দখল করা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের কোনো অংশে ইসরায়েলের কোনো সার্বভৌমত্ব নেই।
২ ঘণ্টা আগে
ওমরাহ হজ পালন করতে গিয়ে এজেন্সির প্রতারণার শিকার হয়েছেন ১৭ জন যাত্রী। পরে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে দুটি এজেন্সি টাকা ফেরত দিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি করেছে। অন্য একটি এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
৪ ঘণ্টা আগে
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী (আনসার-ভিডিপি) পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি নিয়েছে। এবারের নির্বাচনে ৬ লাখ আনসার সদস্য মাঠে থাকবে, যারা ভোটকেন্দ্রগুলোতে ‘প্রথম প্রতিরক্ষা স্তর’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
৭ ঘণ্টা আগেবাসস, ঢাকা

ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরকে ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্ত করতে সম্প্রতি খসড়া আইন অনুমোদন দিয়েছে দেশটির পার্লামেন্ট নেসেট।
তথাকথিত ‘ইসরায়েলি সার্বভৌমত্ব’ আরোপের নামে এই আইনের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ।
আজ শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে পুনর্ব্যক্ত করছে যে, পূর্ব জেরুজালেমসহ দখল করা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের কোনো অংশে ইসরায়েলের কোনো সার্বভৌমত্ব নেই।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ইসরায়েল পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতি সম্প্রসারণের মাধ্যমে বেআইনি দখলদারি চালিয়ে যাচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘ সনদ ও নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব, বিশেষ করে রেজল্যুশন ২৩৩৪-এর স্পষ্ট লঙ্ঘন।
২২ অক্টোবর আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) দেওয়া অ্যাডভাইজরি ওপিনিয়ন বা পরামর্শমূলক মতামতকে স্বাগত জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ওই মতামতে আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের অধীনে ইসরায়েলের বাধ্যবাধকতাগুলো তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সাধারণ জনগণকে, ক্ষুধাকে যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা নিষিদ্ধ।
বিবৃতিতে ফিলিস্তিনি জনগণের অবিচ্ছেদ্য অধিকার, তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার এবং ১৯৬৭ সালের আগের সীমানার ভিত্তিতে পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ।

ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরকে ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্ত করতে সম্প্রতি খসড়া আইন অনুমোদন দিয়েছে দেশটির পার্লামেন্ট নেসেট।
তথাকথিত ‘ইসরায়েলি সার্বভৌমত্ব’ আরোপের নামে এই আইনের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ।
আজ শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে পুনর্ব্যক্ত করছে যে, পূর্ব জেরুজালেমসহ দখল করা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের কোনো অংশে ইসরায়েলের কোনো সার্বভৌমত্ব নেই।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ইসরায়েল পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতি সম্প্রসারণের মাধ্যমে বেআইনি দখলদারি চালিয়ে যাচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘ সনদ ও নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব, বিশেষ করে রেজল্যুশন ২৩৩৪-এর স্পষ্ট লঙ্ঘন।
২২ অক্টোবর আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) দেওয়া অ্যাডভাইজরি ওপিনিয়ন বা পরামর্শমূলক মতামতকে স্বাগত জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ওই মতামতে আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের অধীনে ইসরায়েলের বাধ্যবাধকতাগুলো তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সাধারণ জনগণকে, ক্ষুধাকে যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা নিষিদ্ধ।
বিবৃতিতে ফিলিস্তিনি জনগণের অবিচ্ছেদ্য অধিকার, তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার এবং ১৯৬৭ সালের আগের সীমানার ভিত্তিতে পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ।

ঘরহীন মানুষের বসবাসের জন্য একটি করে পাকা বাড়ি নির্মাণ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা। মুজিববর্ষে এসব বাড়ি ভূমিহীনদের হাতে উপহার হিসেবে তুলে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। উপহারের সেই বাড়ির অবস্থা এমন হয়েছে যে, বাড়ি পাওয়া ব্যক্তিরা আর সেখানে থাকতে চান না।
১৩ জুলাই ২০২১
কক্সবাজার অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে জারি করা প্রজ্ঞাপন স্থগিত করেছে সরকার। ফলে আপাতত কক্সবাজার থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হচ্ছে না।
১ ঘণ্টা আগে
ওমরাহ হজ পালন করতে গিয়ে এজেন্সির প্রতারণার শিকার হয়েছেন ১৭ জন যাত্রী। পরে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে দুটি এজেন্সি টাকা ফেরত দিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি করেছে। অন্য একটি এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
৪ ঘণ্টা আগে
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী (আনসার-ভিডিপি) পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি নিয়েছে। এবারের নির্বাচনে ৬ লাখ আনসার সদস্য মাঠে থাকবে, যারা ভোটকেন্দ্রগুলোতে ‘প্রথম প্রতিরক্ষা স্তর’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
৭ ঘণ্টা আগেআয়নাল হোসেন, ঢাকা

ওমরাহ হজ পালন করতে গিয়ে এজেন্সির প্রতারণার শিকার হয়েছেন ১৭ জন যাত্রী। পরে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে দুটি এজেন্সি টাকা ফেরত দিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি করেছে। অন্য একটি এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, প্রতারণার শিকার ওমরাহযাত্রীরা প্রতিকার চেয়ে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। গত বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুনানি শেষে দুটি এজেন্সি টাকা ফেরত দিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি করেছে। আর একটি প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে ত্রুটিগুলো লিখিতভাবে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী সময়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রেখে দেওয়া হয়েছে।
প্রতারণার অভিযোগ ওঠা তিন এজেন্সির একটি হলো দেশ ও বিদেশ হজ এজেন্সি। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে অভিযোগ করা ওমরাহ যাত্রীরা হলেন আজহারুল ইসলাম, খোরশেদ আলম, নূর মোহাম্মদ, মো. খোরশেদ আলম, খোদেজা আলম, কোহিনুর আক্তার, রহিমা আক্তার, সারোয়ার আলম চৌধুরী ফরিদা ইয়াসমিন লাভলী, শফিকুল আলম ও শাহেনা আকতার। এজেন্সির বিরুদ্ধে তাঁদের দেওয়া অভিযোগের মধ্যে রয়েছে ওমরাহ পালনকালে জেদ্দা বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর সুনির্দিষ্ট হোটেল বুকিং না থাকা, নিজ উদ্যোগে হোটেলে লাগেজ বহন, হোটেল ব্যবস্থাপনায় চরম ভোগান্তি, সংকীর্ণ আবাসস্থল, অতিরিক্ত টাকা নেওয়া, হজের পাঁচ দিন বাস সার্ভিসে চরম অব্যবস্থাপনা এবং নিম্নমানের খাবার পরিবেশন।
জানতে চাইলে দেশ ও বিদেশ এজেন্সির মালিক এহসানুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ওমরাহ যাত্রীরা মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন। কয়েকজন টাকা বকেয়া রেখেই ওমরাহ পালনে যান। এ-সংক্রান্ত সব কাগজপত্র মন্ত্রণালয়ে দাখিল করা হয়েছে।
মো. শামীম হোসেন নামের একজন অভিযোগ করেন ড. মুফতি এম এ আজিজ হজ অ্যান্ড ট্যুরস এজেন্সির কাছে। তিনজনে ওমরা পালনের জন্য গত ১০ ফেব্রুয়ারি ৩ লাখ টাকা জমা দেন। অফিসে গিয়ে সেটি তালাবদ্ধ দেখেন। এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ড. মুফতি এম এ আজিজ হজ অ্যান্ড ট্যুরস প্রতিষ্ঠানের কাছে ধর্ম মন্ত্রণালয় নোটিশ পাঠায়। এতে বুধবার বেলা সাড়ে ৩টায় অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিবের কক্ষে শুনানির জন্য ডাকা হয়। শুনানিতে উপস্থিত হতে ব্যর্থ হলে ধরে নেওয়া হবে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য দিতে ইচ্ছুক নয়। পরে জমা দেওয়া টাকার মধ্যে২ লাখ মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে ফেরত দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
শাহনেওয়াজ নামের অন্য একটি ব্যক্তি লাইম স্টোন রিসোর্ট অ্যান্ড ট্যুরিজম লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, জনপ্রতি ১ লাখ ৭০ হাজার করে তিনজনের জন্য ৫ লাখ ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ওমরাহ পালনে যান তাঁরা। মদিনায় ৪ দিন ও মক্কায় ১০ দিন রাখার শর্তে টাকা দেওয়া হয়। এজেন্সি মদিনায় ফ্লাইট না দিয়ে জেদ্দায় ফ্লাইট দেয়। এরপর জেদ্দা-মদিনায় যাতায়াতের জন্য অতিরিক্ত ৩০০ রিয়াল করে আদায় করে। মদিনায় হোটেল নিম্নমানের দেওয়া হয়। একই কক্ষে নারী-পুরুষকে রাখা হয়। মক্কায়ও নিম্নমানের হোটেল দেওয়া হয়। সেখানেও নারী-পুরুষকে একত্রে রাখা হয়। মক্কা থেকে ফ্লাইট না দিয়ে মদিনা থেকে ঢাকায় ফ্লাইট দেওয়া হয়।

ওমরাহ হজ পালন করতে গিয়ে এজেন্সির প্রতারণার শিকার হয়েছেন ১৭ জন যাত্রী। পরে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে দুটি এজেন্সি টাকা ফেরত দিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি করেছে। অন্য একটি এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, প্রতারণার শিকার ওমরাহযাত্রীরা প্রতিকার চেয়ে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। গত বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুনানি শেষে দুটি এজেন্সি টাকা ফেরত দিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি করেছে। আর একটি প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে ত্রুটিগুলো লিখিতভাবে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী সময়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রেখে দেওয়া হয়েছে।
প্রতারণার অভিযোগ ওঠা তিন এজেন্সির একটি হলো দেশ ও বিদেশ হজ এজেন্সি। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে অভিযোগ করা ওমরাহ যাত্রীরা হলেন আজহারুল ইসলাম, খোরশেদ আলম, নূর মোহাম্মদ, মো. খোরশেদ আলম, খোদেজা আলম, কোহিনুর আক্তার, রহিমা আক্তার, সারোয়ার আলম চৌধুরী ফরিদা ইয়াসমিন লাভলী, শফিকুল আলম ও শাহেনা আকতার। এজেন্সির বিরুদ্ধে তাঁদের দেওয়া অভিযোগের মধ্যে রয়েছে ওমরাহ পালনকালে জেদ্দা বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর সুনির্দিষ্ট হোটেল বুকিং না থাকা, নিজ উদ্যোগে হোটেলে লাগেজ বহন, হোটেল ব্যবস্থাপনায় চরম ভোগান্তি, সংকীর্ণ আবাসস্থল, অতিরিক্ত টাকা নেওয়া, হজের পাঁচ দিন বাস সার্ভিসে চরম অব্যবস্থাপনা এবং নিম্নমানের খাবার পরিবেশন।
জানতে চাইলে দেশ ও বিদেশ এজেন্সির মালিক এহসানুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ওমরাহ যাত্রীরা মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন। কয়েকজন টাকা বকেয়া রেখেই ওমরাহ পালনে যান। এ-সংক্রান্ত সব কাগজপত্র মন্ত্রণালয়ে দাখিল করা হয়েছে।
মো. শামীম হোসেন নামের একজন অভিযোগ করেন ড. মুফতি এম এ আজিজ হজ অ্যান্ড ট্যুরস এজেন্সির কাছে। তিনজনে ওমরা পালনের জন্য গত ১০ ফেব্রুয়ারি ৩ লাখ টাকা জমা দেন। অফিসে গিয়ে সেটি তালাবদ্ধ দেখেন। এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ড. মুফতি এম এ আজিজ হজ অ্যান্ড ট্যুরস প্রতিষ্ঠানের কাছে ধর্ম মন্ত্রণালয় নোটিশ পাঠায়। এতে বুধবার বেলা সাড়ে ৩টায় অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিবের কক্ষে শুনানির জন্য ডাকা হয়। শুনানিতে উপস্থিত হতে ব্যর্থ হলে ধরে নেওয়া হবে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য দিতে ইচ্ছুক নয়। পরে জমা দেওয়া টাকার মধ্যে২ লাখ মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে ফেরত দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
শাহনেওয়াজ নামের অন্য একটি ব্যক্তি লাইম স্টোন রিসোর্ট অ্যান্ড ট্যুরিজম লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, জনপ্রতি ১ লাখ ৭০ হাজার করে তিনজনের জন্য ৫ লাখ ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ওমরাহ পালনে যান তাঁরা। মদিনায় ৪ দিন ও মক্কায় ১০ দিন রাখার শর্তে টাকা দেওয়া হয়। এজেন্সি মদিনায় ফ্লাইট না দিয়ে জেদ্দায় ফ্লাইট দেয়। এরপর জেদ্দা-মদিনায় যাতায়াতের জন্য অতিরিক্ত ৩০০ রিয়াল করে আদায় করে। মদিনায় হোটেল নিম্নমানের দেওয়া হয়। একই কক্ষে নারী-পুরুষকে রাখা হয়। মক্কায়ও নিম্নমানের হোটেল দেওয়া হয়। সেখানেও নারী-পুরুষকে একত্রে রাখা হয়। মক্কা থেকে ফ্লাইট না দিয়ে মদিনা থেকে ঢাকায় ফ্লাইট দেওয়া হয়।

ঘরহীন মানুষের বসবাসের জন্য একটি করে পাকা বাড়ি নির্মাণ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা। মুজিববর্ষে এসব বাড়ি ভূমিহীনদের হাতে উপহার হিসেবে তুলে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। উপহারের সেই বাড়ির অবস্থা এমন হয়েছে যে, বাড়ি পাওয়া ব্যক্তিরা আর সেখানে থাকতে চান না।
১৩ জুলাই ২০২১
কক্সবাজার অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে জারি করা প্রজ্ঞাপন স্থগিত করেছে সরকার। ফলে আপাতত কক্সবাজার থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হচ্ছে না।
১ ঘণ্টা আগে
আজ শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে পুনর্ব্যক্ত করছে যে, পূর্ব জেরুজালেমসহ দখল করা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের কোনো অংশে ইসরায়েলের কোনো সার্বভৌমত্ব নেই।
২ ঘণ্টা আগে
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী (আনসার-ভিডিপি) পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি নিয়েছে। এবারের নির্বাচনে ৬ লাখ আনসার সদস্য মাঠে থাকবে, যারা ভোটকেন্দ্রগুলোতে ‘প্রথম প্রতিরক্ষা স্তর’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
৭ ঘণ্টা আগেবাসস, ঢাকা

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী (আনসার-ভিডিপি) পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি নিয়েছে। এবারের নির্বাচনে ৬ লাখ আনসার সদস্য মাঠে থাকবে, যারা ভোটকেন্দ্রগুলোতে ‘প্রথম প্রতিরক্ষা স্তর’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। একই সঙ্গে তাঁরা অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গেও সমন্বয় করে কাজ করবেন।
আনসার ও ভিডিপির সদরদপ্তরে গতকাল বৃহস্পতিবার বাহিনীর মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ এই প্রস্তুতির কথা জানান।
বাসসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ডিজি সাজ্জাদ মাহমুদ বলেন, এবারের নির্বাচনে নিরপেক্ষ দায়িত্ব পালনের নিশ্চয়তা দিতে এবং কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আনতে আনসার বাহিনী প্রথমবারের মতো ডিজিটাল মনিটরিং সিস্টেম চালু করছে। তিনি বলেন, ‘এবার ভোট কেন্দ্রে প্রশিক্ষিত আনসার সদস্যদের পাঠানো হচ্ছে। তারা সদরদপ্তরের সঙ্গে ডিজিটাল সিস্টেমে যুক্ত থাকবে। ফলে নিরপেক্ষ দায়িত্ব পালনের নিশ্চয়তা থাকবে।’
এই ডিজিটাল ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রতিটি সদস্যের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নম্বর, কিউআর কোড এবং কর্মতথ্য সফটওয়্যারে সংরক্ষিত থাকবে। ফলে দায়িত্ব পালনের দক্ষতা, অবস্থান ও আচরণ রিয়েল টাইমে ট্র্যাক করা সম্ভব হবে। মহাপরিচালক বলেন, নির্বাচনের দিন আনসার বাহিনী জনগণের নিরাপত্তা ও আস্থার প্রতীক হয়ে কাজ করবে।
নির্বাচনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশিক্ষণের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। গত বছরের ৬ আগস্ট থেকে আনসার সদস্যদের মৌলিক বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, যার মধ্যে লিডারশিপ ট্রেনিং, অ্যাডভান্স ট্রেনিং এবং ইয়ুথ লিডারশিপ ট্রেনিং অন্তর্ভুক্ত।
মহাপরিচালক জানান, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর দুই বা তিনদিনের রিফ্রেশার ট্রেনিং দেওয়া হবে, যেখানে আচরণবিধি, ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা, ভিড় নিয়ন্ত্রণ এবং যোগাযোগের কৌশল শেখানো হবে; নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে এবং পেশাগত ভূমিকায় একনিষ্ঠ সদস্যদের নির্বাচন করার জন্য পুরোনো সদস্যদের তথ্য ফিল্টারিং করা হবে; বাহিনীতে তরুণ ও কর্মক্ষম সদস্যদের অন্তর্ভুক্তি বাড়াতে বয়সসীমা কমিয়ে ১৮ থেকে ২৫ বছর করা হয়েছে; বাহিনীতে নারী সদস্যের সংখ্যা প্রায় ৫০ শতাংশ; নারী-পুরুষ সমানভাবে নেতৃত্বে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং প্রতিটি উপজেলা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে একজন পুরুষ ও একজন নারী প্রশিক্ষক রাখা হয়েছে।
মেজর জেনারেল সাজ্জাদ মাহমুদ আরও জানান, এবার নির্বাচনী সশস্ত্র ও নিরস্ত্র উভয় ধরনের আনসার সদস্যরা দায়িত্বে থাকবেন। তাদের জন্য নতুন ইউনিফর্ম, জ্যাকেট ও নিরাপত্তা সরঞ্জাম সরবরাহ করা হচ্ছে।
ডিজি বলেন, এখন থেকে আনসার বাহিনী ব্যক্তিনির্ভর নয় বরং সিস্টেম নির্ভর হবে। অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা রক্ষায় আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ পেলে দ্রুত তদন্ত ও শাস্তির ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।
তিনি আনসার বাহিনীর বৃহত্তর ভূমিকা তুলে ধরে বলেন, বাহিনীটি শুধু নির্বাচনের সময়ই নয়, বরং সারাবছরই উন্নয়ন, দুর্যোগ মোকাবিলা ও সামাজিক সচেতনতা কার্যক্রমে ভূমিকা রাখছে। বর্তমানে প্রায় ৬০ লাখ আনসার সদস্যের মধ্যে ৫৯ লাখই স্বেচ্ছাসেবক। তাদের জীবনমান উন্নয়নে ‘সঞ্জীবন প্রকল্প’ চালু করা হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে সদস্যরা দলভিত্তিক ক্ষুদ্রঋণ, উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ (যেমন ড্রাইভিং, নার্সিং, ফ্রিল্যান্সিং) সহায়তা পাচ্ছেন।

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী (আনসার-ভিডিপি) পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি নিয়েছে। এবারের নির্বাচনে ৬ লাখ আনসার সদস্য মাঠে থাকবে, যারা ভোটকেন্দ্রগুলোতে ‘প্রথম প্রতিরক্ষা স্তর’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। একই সঙ্গে তাঁরা অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গেও সমন্বয় করে কাজ করবেন।
আনসার ও ভিডিপির সদরদপ্তরে গতকাল বৃহস্পতিবার বাহিনীর মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ এই প্রস্তুতির কথা জানান।
বাসসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ডিজি সাজ্জাদ মাহমুদ বলেন, এবারের নির্বাচনে নিরপেক্ষ দায়িত্ব পালনের নিশ্চয়তা দিতে এবং কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আনতে আনসার বাহিনী প্রথমবারের মতো ডিজিটাল মনিটরিং সিস্টেম চালু করছে। তিনি বলেন, ‘এবার ভোট কেন্দ্রে প্রশিক্ষিত আনসার সদস্যদের পাঠানো হচ্ছে। তারা সদরদপ্তরের সঙ্গে ডিজিটাল সিস্টেমে যুক্ত থাকবে। ফলে নিরপেক্ষ দায়িত্ব পালনের নিশ্চয়তা থাকবে।’
এই ডিজিটাল ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রতিটি সদস্যের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নম্বর, কিউআর কোড এবং কর্মতথ্য সফটওয়্যারে সংরক্ষিত থাকবে। ফলে দায়িত্ব পালনের দক্ষতা, অবস্থান ও আচরণ রিয়েল টাইমে ট্র্যাক করা সম্ভব হবে। মহাপরিচালক বলেন, নির্বাচনের দিন আনসার বাহিনী জনগণের নিরাপত্তা ও আস্থার প্রতীক হয়ে কাজ করবে।
নির্বাচনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশিক্ষণের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। গত বছরের ৬ আগস্ট থেকে আনসার সদস্যদের মৌলিক বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, যার মধ্যে লিডারশিপ ট্রেনিং, অ্যাডভান্স ট্রেনিং এবং ইয়ুথ লিডারশিপ ট্রেনিং অন্তর্ভুক্ত।
মহাপরিচালক জানান, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর দুই বা তিনদিনের রিফ্রেশার ট্রেনিং দেওয়া হবে, যেখানে আচরণবিধি, ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা, ভিড় নিয়ন্ত্রণ এবং যোগাযোগের কৌশল শেখানো হবে; নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে এবং পেশাগত ভূমিকায় একনিষ্ঠ সদস্যদের নির্বাচন করার জন্য পুরোনো সদস্যদের তথ্য ফিল্টারিং করা হবে; বাহিনীতে তরুণ ও কর্মক্ষম সদস্যদের অন্তর্ভুক্তি বাড়াতে বয়সসীমা কমিয়ে ১৮ থেকে ২৫ বছর করা হয়েছে; বাহিনীতে নারী সদস্যের সংখ্যা প্রায় ৫০ শতাংশ; নারী-পুরুষ সমানভাবে নেতৃত্বে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং প্রতিটি উপজেলা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে একজন পুরুষ ও একজন নারী প্রশিক্ষক রাখা হয়েছে।
মেজর জেনারেল সাজ্জাদ মাহমুদ আরও জানান, এবার নির্বাচনী সশস্ত্র ও নিরস্ত্র উভয় ধরনের আনসার সদস্যরা দায়িত্বে থাকবেন। তাদের জন্য নতুন ইউনিফর্ম, জ্যাকেট ও নিরাপত্তা সরঞ্জাম সরবরাহ করা হচ্ছে।
ডিজি বলেন, এখন থেকে আনসার বাহিনী ব্যক্তিনির্ভর নয় বরং সিস্টেম নির্ভর হবে। অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা রক্ষায় আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ পেলে দ্রুত তদন্ত ও শাস্তির ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।
তিনি আনসার বাহিনীর বৃহত্তর ভূমিকা তুলে ধরে বলেন, বাহিনীটি শুধু নির্বাচনের সময়ই নয়, বরং সারাবছরই উন্নয়ন, দুর্যোগ মোকাবিলা ও সামাজিক সচেতনতা কার্যক্রমে ভূমিকা রাখছে। বর্তমানে প্রায় ৬০ লাখ আনসার সদস্যের মধ্যে ৫৯ লাখই স্বেচ্ছাসেবক। তাদের জীবনমান উন্নয়নে ‘সঞ্জীবন প্রকল্প’ চালু করা হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে সদস্যরা দলভিত্তিক ক্ষুদ্রঋণ, উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ (যেমন ড্রাইভিং, নার্সিং, ফ্রিল্যান্সিং) সহায়তা পাচ্ছেন।

ঘরহীন মানুষের বসবাসের জন্য একটি করে পাকা বাড়ি নির্মাণ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা। মুজিববর্ষে এসব বাড়ি ভূমিহীনদের হাতে উপহার হিসেবে তুলে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। উপহারের সেই বাড়ির অবস্থা এমন হয়েছে যে, বাড়ি পাওয়া ব্যক্তিরা আর সেখানে থাকতে চান না।
১৩ জুলাই ২০২১
কক্সবাজার অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে জারি করা প্রজ্ঞাপন স্থগিত করেছে সরকার। ফলে আপাতত কক্সবাজার থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হচ্ছে না।
১ ঘণ্টা আগে
আজ শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে পুনর্ব্যক্ত করছে যে, পূর্ব জেরুজালেমসহ দখল করা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের কোনো অংশে ইসরায়েলের কোনো সার্বভৌমত্ব নেই।
২ ঘণ্টা আগে
ওমরাহ হজ পালন করতে গিয়ে এজেন্সির প্রতারণার শিকার হয়েছেন ১৭ জন যাত্রী। পরে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে দুটি এজেন্সি টাকা ফেরত দিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি করেছে। অন্য একটি এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
৪ ঘণ্টা আগে