নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
দীর্ঘ সাত মাসের আলোচনায় কোথাও মতৈক্য এসেছে, আবার কোথাও থেকে গেছে মতানৈক্য। এসব মত-দ্বিমত, দোলাচলের মধ্যেই তৈরি হয় জুলাই জাতীয় সনদ। রাজনৈতিক দলগুলোর মতপার্থক্যের কারণে সনদে স্বাক্ষর সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল শেষ দিন পর্যন্ত। তবে সব সংশয় ও অনিশ্চয়তা কাটিয়ে অবশেষে সই হলো ঐতিহাসিক ‘জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫’। গতকাল শুক্রবার বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় এক জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সনদে স্বাক্ষর করেন ২৪টি রাজনৈতিক দল ও জোটের প্রতিনিধিরা। তবে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও চারটি বামপন্থী দল সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ছিল না। অন্যদিকে অনুষ্ঠানে গেলেও সনদে সই করেনি ড. কামাল হোসেনের দল গণফোরাম।
রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের পর জুলাই সনদে সই করেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও কমিশনের সদস্যরা। যেসব দল গতকাল স্বাক্ষর করেনি, তারা চাইলে পরেও স্বাক্ষর করতে পারবে বলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন থেকে জানানো হয়েছে।
জুলাই সনদ স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের নবজন্ম হয়েছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘এই স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশের সূচনা হলো। সারা জাতি এর থেকে নতুন পথের দিশা পাবে। যে ঐক্যের সুর আজকে বেজে উঠেছে, তা নিয়ে আমরা নির্বাচনের দিকে যাব। ইতিহাসে স্মরণীয় নির্বাচন করব।’
জুলাই সনদে স্বাক্ষরের জন্য জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় উন্মুক্ত মঞ্চ তৈরি করা হয়। মঞ্চে প্রধান উপদেষ্টা, কমিশনের সদস্য এবং ৩০টি রাজনৈতিক দল ও জোটের দুজন করে প্রতিনিধির বসার ব্যবস্থা রাখা হয়। এ ছাড়া শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকে শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধর বাবা মীর মোস্তাফিজুর রহমান এবং শহীদ তাহির জামান প্রিয়র মা শামসী আরা বেগম জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। তবে বৃষ্টি ও কথিত জুলাই যোদ্ধাদের বিক্ষোভের কারণে অনুষ্ঠান কিছুটা দেরিতে শুরু হয়। পূর্বনির্ধারিত সময় অনুযায়ী বিকেল ৪টায় অনুষ্ঠানের কথা থাকলেও আধ ঘণ্টার মতো দেরি হয়। বিকেল ৪টা ৩৭ মিনিটে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, সরকারের পদস্থ কর্মকর্তা ও বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকেরা অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
বিকেল সাড়ে চারটার দিকে অনুষ্ঠানস্থলে যান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ। অনুষ্ঠান শুরুর পর আলী রীয়াজ স্বাগত বক্তব্য দেন। এরপর অনুষ্ঠিত হয় ঐতিহাসিক স্বাক্ষর অনুষ্ঠান। প্রথমে রাজনৈতিক দলের নেতারা জুলাই জাতীয় সনদের অঙ্গীকারনামার ওপর স্বাক্ষর করেন। এরপর জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস স্বাক্ষর করেন। স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে এই সনদ জাতীয় সম্পদে পরিণত হয়েছে বলে ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিএনপির পক্ষে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে দলের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের ও সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার সনদে সই করেন। জুলাই সনদে স্বাক্ষর করা অন্য দলগুলো হচ্ছে নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এলডিপি, খেলাফত মজলিস, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, এবি পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জেএসডি, গণঅধিকার পরিষদ, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, লেবার পার্টি, ভাসানী জনশক্তি পার্টি, ইসলামী ঐক্যজোট, জাতীয় গণফ্রন্ট, জাকের পার্টি, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, ১২ দলীয় জোট, এনডিএম এবং আমজনতার দল। মঞ্চে উপস্থিত থাকলেও গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুব্রত চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান উপস্থিত থাকলেও স্বাক্ষর করেননি।
এনসিপি, সিপিবি, বাংলাদেশ জাসদ, বাসদ ও বাসদ মার্ক্সবাদী দলের নেতারা স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন। এ দলগুলো আগেই সংবাদ সম্মেলন করে জুলাই সনদে সই করবে না বলে জানিয়েছে। এসব দলের কোনো প্রতিনিধিও স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশ নেননি।
স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘এগুলো বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক এবং সাংবিধানিক সংস্কারের রাষ্ট্রকাঠামো অর্জন করতে পারব। সেই রাষ্ট্রকাঠামোর মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হবে। শক্তিশালী গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নির্মিত হবে। রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রে ভারসাম্য বজায় থাকবে।’ নির্বাচনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কীভাবে হবে, সেটা সংবিধানে লেখা আছে। বিভ্রান্তি তৈরির সুযোগ নেই। এরপরও প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে বসতে চাইলে বসা হবে।’
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে বিলম্ব হলে তা জাতির সঙ্গে গাদ্দারি বলে গণ্য হবে—মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। তিনি বলেছেন, ‘ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেটা যেন এই সরকার বাস্তবায়ন করে।’
আইনি ভিত্তি দেওয়ার আগেই জুলাই সনদে জামায়াতের স্বাক্ষর করার কারণ জানতে চাইলে তাহের বলেন, ‘সংলাপে যেসব সংস্কার নিয়ে আলোচনা হয়েছে, সেগুলোর সঙ্গে সব দলের মতো জামায়াতও একমত। তাই আমরা স্বাক্ষর করেছি।’
এদিকে স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শুরুর আগে সকালে ‘জুলাই শহীদ পরিবার ও আহত যোদ্ধা’ ব্যানারে শতাধিক মানুষ জুলাই আন্দোলনে অবদানের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি, আইনি সুরক্ষা, পুনর্বাসনের বিষয়টি সনদে অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। বিক্ষোভের একপর্যায়ে তাঁরা সংসদ ভবন এলাকার গেট টপকে ভেতরে ঢোকেন। সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের মঞ্চের সামনে অবস্থান নেন। মঞ্চের সামনে নির্ধারিত অতিথিদের চেয়ারে বসে স্লোগান দিতে থাকেন। বেলা একটার দিকে পুলিশ তাদের সরিয়ে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে নিয়ে যায়। সেখানে পুলিশের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। রাস্তা থেকে সরাতে পুলিশ টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় তৈরি করা দুটি অস্থায়ী তাঁবুতে আগুন দেয়। বেলা সোয়া তিনটার দিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। এ সময় থমথমে পরিস্থিতি তৈরি হয়। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতেও তারা মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে এবং তাদের দাবি মানা না হলে সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান প্রতিহতের ঘোষণা দেয়।
আন্দোলনকারীদের দাবির মুখে কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, জুলাই জাতীয় সনদের অঙ্গীকারনামার ৫ ধারা সংশোধন করা হবে। সংশোধিত অংশে বলা হয়েছে, ‘গণ অভ্যুত্থানপূর্ব বাংলাদেশে ১৬ বছরের আওয়ামী ফ্যাসিবাদ বিরোধী গণতান্ত্রিক সংগ্রামে গুম, খুন ও নির্যাতনের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের এবং ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানকালে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কতিপয় সদস্যদের দ্বারা সংঘটিত সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার, শহীদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদান ও শহীদ পরিবারকে এবং জুলাই আহতদের রাষ্ট্রীয় বীর, আহত জুলাই বীর যোদ্ধাদের যথোপযুক্ত সহায়তা প্রদান যেমন মাসিক ভাতা, সুচিকিৎসা, পুনর্বাসন ব্যবস্থা এবং শহীদ পরিবার ও আহত বীর যোদ্ধাদের আইনগত দায়মুক্তি, মৌলিক অধিকার সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করব।’
বিকেল ৪টায় অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে অনুষ্ঠানের সময়সূচিতে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়। প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে অনুষ্ঠান কিছুটা পেছানোর আগাম বার্তা দেওয়া হয়। তবে বেলা তিনটা থেকেই অনুষ্ঠানস্থলে আসতে থাকেন আমন্ত্রিত অতিথিরা। বৃষ্টির কারণে একাধিকবার অতিথিদের নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে দেখা যায়। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ, কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আবদুল হালিম, মাওলানা মো. শাহজাহান চৌধুরীকে দেখা যায়।
অতিথিদের সারিতে ছিলেন আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মো. ফাওজুল কবির খান, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম, শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি আর আবরার, পরিবেশবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীসহ উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা। স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম কিছুক্ষণ বসে মঞ্চের পেছনে চলে যান বলে জানা গেছে। সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানসহ তিন বাহিনীর প্রধানেরা এবং বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রধানেরাও জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে জুলাই সনদ স্বাক্ষর ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্যের পর বাংলাদেশের ৫৪ বছরের ইতিহাস তুলে ধরে ৭ মিনিটের একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। এতে মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও বিডিআর বিদ্রোহে সেনা কর্মকর্তাদের নৃশংস হত্যার চিত্র তুলে ধরা হয়; বিশেষ করে এই ডকুমেন্টারিতে শেখ হাসিনার সাড়ে ১৫ বছরের গুম-খুন, মানবাধিকার লঙ্ঘন, অর্থ পাচার বর্ণনার পাশাপাশি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার ওপর চালানো বর্বর হামলার চিত্র তুলে ধরা হয়। অনুষ্ঠান শেষে ফেরার সময় অতিথিদের হাতে জুলাই সনদের বই দেওয়া হয়।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (জাতীয় ঐকমত্য) মনির হায়দারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, এই জুলাই জাতীয় সনদ কেবল রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি নয়, এটা নাগরিকের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর ও রাষ্ট্রের একটি সামাজিক চুক্তি। আশাবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যে জাতীয় দলিল তৈরি হয়েছে, তার বাস্তবায়ন ঘটবে। দ্রুততার সঙ্গে বাস্তবায়ন ঘটবে। নাগরিকদের মতামতের মধ্য দিয়ে এই দিকদিশা নির্দেশক বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে ভবিষ্যতে পরিচালনা করবে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আস্থা রেখেই জুলাই সনদে সই করেছি বলে মন্তব্য করে তাহের বলেন, ‘আমরা আশা করি, উনিও উনার কথা ঠিক রাখবেন। বাংলাদেশে নতুন কোনো সংকট তৈরির ক্ষেত্রে উনারা যেন কোনো ধরনের কর্তৃত্ব তৈরি না করেন।’
দীর্ঘ সাত মাসের আলোচনায় কোথাও মতৈক্য এসেছে, আবার কোথাও থেকে গেছে মতানৈক্য। এসব মত-দ্বিমত, দোলাচলের মধ্যেই তৈরি হয় জুলাই জাতীয় সনদ। রাজনৈতিক দলগুলোর মতপার্থক্যের কারণে সনদে স্বাক্ষর সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল শেষ দিন পর্যন্ত। তবে সব সংশয় ও অনিশ্চয়তা কাটিয়ে অবশেষে সই হলো ঐতিহাসিক ‘জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫’। গতকাল শুক্রবার বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় এক জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সনদে স্বাক্ষর করেন ২৪টি রাজনৈতিক দল ও জোটের প্রতিনিধিরা। তবে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও চারটি বামপন্থী দল সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ছিল না। অন্যদিকে অনুষ্ঠানে গেলেও সনদে সই করেনি ড. কামাল হোসেনের দল গণফোরাম।
রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের পর জুলাই সনদে সই করেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও কমিশনের সদস্যরা। যেসব দল গতকাল স্বাক্ষর করেনি, তারা চাইলে পরেও স্বাক্ষর করতে পারবে বলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন থেকে জানানো হয়েছে।
জুলাই সনদ স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের নবজন্ম হয়েছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘এই স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশের সূচনা হলো। সারা জাতি এর থেকে নতুন পথের দিশা পাবে। যে ঐক্যের সুর আজকে বেজে উঠেছে, তা নিয়ে আমরা নির্বাচনের দিকে যাব। ইতিহাসে স্মরণীয় নির্বাচন করব।’
জুলাই সনদে স্বাক্ষরের জন্য জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় উন্মুক্ত মঞ্চ তৈরি করা হয়। মঞ্চে প্রধান উপদেষ্টা, কমিশনের সদস্য এবং ৩০টি রাজনৈতিক দল ও জোটের দুজন করে প্রতিনিধির বসার ব্যবস্থা রাখা হয়। এ ছাড়া শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকে শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধর বাবা মীর মোস্তাফিজুর রহমান এবং শহীদ তাহির জামান প্রিয়র মা শামসী আরা বেগম জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। তবে বৃষ্টি ও কথিত জুলাই যোদ্ধাদের বিক্ষোভের কারণে অনুষ্ঠান কিছুটা দেরিতে শুরু হয়। পূর্বনির্ধারিত সময় অনুযায়ী বিকেল ৪টায় অনুষ্ঠানের কথা থাকলেও আধ ঘণ্টার মতো দেরি হয়। বিকেল ৪টা ৩৭ মিনিটে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, সরকারের পদস্থ কর্মকর্তা ও বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকেরা অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
বিকেল সাড়ে চারটার দিকে অনুষ্ঠানস্থলে যান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ। অনুষ্ঠান শুরুর পর আলী রীয়াজ স্বাগত বক্তব্য দেন। এরপর অনুষ্ঠিত হয় ঐতিহাসিক স্বাক্ষর অনুষ্ঠান। প্রথমে রাজনৈতিক দলের নেতারা জুলাই জাতীয় সনদের অঙ্গীকারনামার ওপর স্বাক্ষর করেন। এরপর জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস স্বাক্ষর করেন। স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে এই সনদ জাতীয় সম্পদে পরিণত হয়েছে বলে ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিএনপির পক্ষে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে দলের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের ও সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার সনদে সই করেন। জুলাই সনদে স্বাক্ষর করা অন্য দলগুলো হচ্ছে নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এলডিপি, খেলাফত মজলিস, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, এবি পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জেএসডি, গণঅধিকার পরিষদ, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, লেবার পার্টি, ভাসানী জনশক্তি পার্টি, ইসলামী ঐক্যজোট, জাতীয় গণফ্রন্ট, জাকের পার্টি, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, ১২ দলীয় জোট, এনডিএম এবং আমজনতার দল। মঞ্চে উপস্থিত থাকলেও গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুব্রত চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান উপস্থিত থাকলেও স্বাক্ষর করেননি।
এনসিপি, সিপিবি, বাংলাদেশ জাসদ, বাসদ ও বাসদ মার্ক্সবাদী দলের নেতারা স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন। এ দলগুলো আগেই সংবাদ সম্মেলন করে জুলাই সনদে সই করবে না বলে জানিয়েছে। এসব দলের কোনো প্রতিনিধিও স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশ নেননি।
স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘এগুলো বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক এবং সাংবিধানিক সংস্কারের রাষ্ট্রকাঠামো অর্জন করতে পারব। সেই রাষ্ট্রকাঠামোর মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হবে। শক্তিশালী গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নির্মিত হবে। রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রে ভারসাম্য বজায় থাকবে।’ নির্বাচনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কীভাবে হবে, সেটা সংবিধানে লেখা আছে। বিভ্রান্তি তৈরির সুযোগ নেই। এরপরও প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে বসতে চাইলে বসা হবে।’
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে বিলম্ব হলে তা জাতির সঙ্গে গাদ্দারি বলে গণ্য হবে—মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। তিনি বলেছেন, ‘ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেটা যেন এই সরকার বাস্তবায়ন করে।’
আইনি ভিত্তি দেওয়ার আগেই জুলাই সনদে জামায়াতের স্বাক্ষর করার কারণ জানতে চাইলে তাহের বলেন, ‘সংলাপে যেসব সংস্কার নিয়ে আলোচনা হয়েছে, সেগুলোর সঙ্গে সব দলের মতো জামায়াতও একমত। তাই আমরা স্বাক্ষর করেছি।’
এদিকে স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শুরুর আগে সকালে ‘জুলাই শহীদ পরিবার ও আহত যোদ্ধা’ ব্যানারে শতাধিক মানুষ জুলাই আন্দোলনে অবদানের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি, আইনি সুরক্ষা, পুনর্বাসনের বিষয়টি সনদে অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। বিক্ষোভের একপর্যায়ে তাঁরা সংসদ ভবন এলাকার গেট টপকে ভেতরে ঢোকেন। সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের মঞ্চের সামনে অবস্থান নেন। মঞ্চের সামনে নির্ধারিত অতিথিদের চেয়ারে বসে স্লোগান দিতে থাকেন। বেলা একটার দিকে পুলিশ তাদের সরিয়ে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে নিয়ে যায়। সেখানে পুলিশের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। রাস্তা থেকে সরাতে পুলিশ টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় তৈরি করা দুটি অস্থায়ী তাঁবুতে আগুন দেয়। বেলা সোয়া তিনটার দিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। এ সময় থমথমে পরিস্থিতি তৈরি হয়। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতেও তারা মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে এবং তাদের দাবি মানা না হলে সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান প্রতিহতের ঘোষণা দেয়।
আন্দোলনকারীদের দাবির মুখে কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, জুলাই জাতীয় সনদের অঙ্গীকারনামার ৫ ধারা সংশোধন করা হবে। সংশোধিত অংশে বলা হয়েছে, ‘গণ অভ্যুত্থানপূর্ব বাংলাদেশে ১৬ বছরের আওয়ামী ফ্যাসিবাদ বিরোধী গণতান্ত্রিক সংগ্রামে গুম, খুন ও নির্যাতনের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের এবং ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানকালে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কতিপয় সদস্যদের দ্বারা সংঘটিত সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার, শহীদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদান ও শহীদ পরিবারকে এবং জুলাই আহতদের রাষ্ট্রীয় বীর, আহত জুলাই বীর যোদ্ধাদের যথোপযুক্ত সহায়তা প্রদান যেমন মাসিক ভাতা, সুচিকিৎসা, পুনর্বাসন ব্যবস্থা এবং শহীদ পরিবার ও আহত বীর যোদ্ধাদের আইনগত দায়মুক্তি, মৌলিক অধিকার সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করব।’
বিকেল ৪টায় অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে অনুষ্ঠানের সময়সূচিতে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়। প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে অনুষ্ঠান কিছুটা পেছানোর আগাম বার্তা দেওয়া হয়। তবে বেলা তিনটা থেকেই অনুষ্ঠানস্থলে আসতে থাকেন আমন্ত্রিত অতিথিরা। বৃষ্টির কারণে একাধিকবার অতিথিদের নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে দেখা যায়। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ, কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আবদুল হালিম, মাওলানা মো. শাহজাহান চৌধুরীকে দেখা যায়।
অতিথিদের সারিতে ছিলেন আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মো. ফাওজুল কবির খান, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম, শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি আর আবরার, পরিবেশবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীসহ উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা। স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম কিছুক্ষণ বসে মঞ্চের পেছনে চলে যান বলে জানা গেছে। সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানসহ তিন বাহিনীর প্রধানেরা এবং বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রধানেরাও জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে জুলাই সনদ স্বাক্ষর ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্যের পর বাংলাদেশের ৫৪ বছরের ইতিহাস তুলে ধরে ৭ মিনিটের একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। এতে মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও বিডিআর বিদ্রোহে সেনা কর্মকর্তাদের নৃশংস হত্যার চিত্র তুলে ধরা হয়; বিশেষ করে এই ডকুমেন্টারিতে শেখ হাসিনার সাড়ে ১৫ বছরের গুম-খুন, মানবাধিকার লঙ্ঘন, অর্থ পাচার বর্ণনার পাশাপাশি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার ওপর চালানো বর্বর হামলার চিত্র তুলে ধরা হয়। অনুষ্ঠান শেষে ফেরার সময় অতিথিদের হাতে জুলাই সনদের বই দেওয়া হয়।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (জাতীয় ঐকমত্য) মনির হায়দারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, এই জুলাই জাতীয় সনদ কেবল রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি নয়, এটা নাগরিকের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর ও রাষ্ট্রের একটি সামাজিক চুক্তি। আশাবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যে জাতীয় দলিল তৈরি হয়েছে, তার বাস্তবায়ন ঘটবে। দ্রুততার সঙ্গে বাস্তবায়ন ঘটবে। নাগরিকদের মতামতের মধ্য দিয়ে এই দিকদিশা নির্দেশক বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে ভবিষ্যতে পরিচালনা করবে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আস্থা রেখেই জুলাই সনদে সই করেছি বলে মন্তব্য করে তাহের বলেন, ‘আমরা আশা করি, উনিও উনার কথা ঠিক রাখবেন। বাংলাদেশে নতুন কোনো সংকট তৈরির ক্ষেত্রে উনারা যেন কোনো ধরনের কর্তৃত্ব তৈরি না করেন।’
দেশে ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। চলতি বছর চিকিৎসাধীন যত রোগীর মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশের (৭৩ শতাংশ) বেশির মৃত্যু হয়েছে সরকারি সাত হাসপাতালে।
২ ঘণ্টা আগেজাতীয় ঐকমত্যের বহুল প্রতীক্ষিত ‘জুলাই সনদ’ স্বাক্ষর সম্পন্ন হয়েছে। আজ শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে জাতীয় সংসদের এলডি হলে এ স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়।
৭ ঘণ্টা আগেসিপিবি-বাসদসহ চারটি বামপন্থী দলের আপত্তির পর জুলাই জাতীয় সনদ–২০২৫-এ পরিবর্তন আনা হয়েছে। এর ফলে সংবিধান থেকে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র বাদ পড়ছে না। স্বাক্ষর শেষে রাজনৈতিক দল ও আমন্ত্রিত অতিথিদের দেওয়া জুলাই সনদে বিষয়টি উল্লেখ করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
৭ ঘণ্টা আগে‘জুলাই যোদ্ধাদের’ দাবি মেনে সনদের অঙ্গীকারনামায় জরুরি সংশোধন এনেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ আন্দোলনরত ‘জুলাই বীর যোদ্ধাদের’ উদ্দেশে বলেছেন, গতকাল বৃহস্পতিবারের আলোচনা ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’-এর অঙ্গীকারনামার ৫ নম্বর দফার পরিবর্ত
৭ ঘণ্টা আগে