Ajker Patrika

চাকরির জন্য সিভি তৈরিতে যেদিকে খেয়াল রাখবেন

নাজমুল ইসলাম
আপডেট : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৫: ২৫
চাকরির জন্য সিভি তৈরিতে যেদিকে খেয়াল রাখবেন

চাকরির বাজার বরাবরই চড়া। একটি শূন্য পদের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হলে জমা পড়ে কয়েক শ আবেদন। এত এত আবেদন থেকে সঠিক প্রার্থীকে বাছাই করা সহজ নয়। আবার সবাইকে ডেকে কথা বলাও নিয়োগকর্তার পক্ষে সম্ভব হয় না সময় স্বল্পতার কারণে। ফলে নিয়োগকর্তারা সিভি বা রেজুমে দেখেই হয়তো চাকরিপ্রার্থী সম্পর্কে প্রাথমিক সিদ্ধান্তটি নিয়ে নিতে পারেন। কারণ, সিভিতেই থাকে একজন প্রার্থীর সংক্ষিপ্ত বিবরণী। এ কারণে এই সিভি তৈরিতে কিছু বিষয়ের দিকে নজর রাখা ভীষণ জরুরি। 

নিয়োগকর্তারা চাকরিপ্রার্থীর যোগ্যতা বা দক্ষতা দেখেই তাকে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করেন। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির বিপরীতে নিয়োগকর্তারা অসংখ্য সিভি পান। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কথা আর না বললেও চলে। এই অসংখ্য সিভির মধ্যে আপনারটা যদি একটু ব্যতিক্রম ও আকর্ষণীয় না হয়, তবে নিয়োগকর্তারা আপনাকে কেন বাছাই করবেন? তাই সিভি বা রেজুমে লেখার ক্ষেত্রে সচেতন হতে হবে। সিভি লেখার সময় কিছু বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। সে সম্পর্কে এখানে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো—

আপনার রেজুমের প্রথম ২০-২৫ শব্দ খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই শব্দগুলোর মাধ্যমে আপনি নিয়োগকর্তার মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারেন অথবা মনোযোগ আকর্ষণে ব্যর্থ হতে পারেন। এখানে আপনার কাজের দক্ষতা সম্পর্কে খুব সংক্ষেপে বলতে পারেন। সিভির পরের অংশে তা বিস্তারিত আকারে লেখা যেতে পারে। এই সংক্ষিপ্ত বর্ণনায় আপনি চাকরির জন্য কেন যোগ্য, তা স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে হবে। অস্পষ্ট বর্ণনা এড়িয়ে যেতে হবে। নিচের উদাহরণটি দেখলে বিষয়টি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে—

 ‘Strategy and business development executive with substantial experience designing, leading, and implementing a broad range of corporate growth and realignment initiatives. ’ (Harvard Business Review) 

এখানে অল্প কয়েকটি শব্দের মাধ্যমে নিজের দক্ষতার বিষয়গুলোকে তুলে ধরা হয়েছে। 

দ্বিতীয় অংশে বুলেট পয়েন্টে আপনার যোগ্যতা, দক্ষতা বা কাজের অভিজ্ঞতা ইত্যাদি তুলে ধরতে পারেন। আপনি যে কাজে সবচেয়ে বেশি পারদর্শী, সেগুলো বুলেট পয়েন্টে প্রথম দিকে উল্লেখ করতে পারেন। আপনার কাজের মধ্য দিয়ে কোনো প্রতিষ্ঠানে কী বা কীভাবে পরিবর্তন আসছে, তা বলতে পারেন। শুরুর দিকে কী চ্যালেঞ্জ ছিল এবং আপনি কীভাবে তা অতিক্রম করতে সাহায্য করছেন, তা বলুন। আপনার হাত ধরে সেই প্রতিষ্ঠানে কী কী সাফল্য এসেছে—সে বিষয়গুলো আপনি আলাদা আলাদা বুলেট পয়েন্টে দেখাতে পারেন। নিয়োগকর্তারা আপনি আগে কী কাজ করেছেন, সেটা বিবেচনা করবেন। কারণ, এখান থেকেই তাঁরা বুঝতে পারবেন আপনি তাঁদের জন্য কী করতে পারবেন। তাই আপনাকে পূর্ব-অভিজ্ঞতার আলোকে দেখাতে হবে আপনি তাঁদের প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে কীভাবে সাহায্য করতে পারবেন। 

সব চাকরির জন্য একই ধরনের সিভি হওয়া উচিত নয়। চাকরির ধরন অনুযায়ী সিভিতে কিছু পরিবর্তন আসতে পারে। চাকরির দায়িত্ব বা কর্তব্যের বিবরণ থেকে আপনাকে কিছু মূল শব্দ বাছাই করতে হবে। দায়িত্ব বা কর্তব্যের সঙ্গে সম্পর্কিত যোগ্যতা বা দক্ষতাগুলো আপনি উল্লেখ করতে পারেন। 

চাকরির বিজ্ঞাপনটি ভালো করে পড়ুন। কারণ, বিজ্ঞাপনে উল্লিখিত চাহিদার সঙ্গে আপনার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার একটি সামঞ্জস্য থাকতে হবে। আপনার কাজের অভিজ্ঞতা যেন নিয়োগকর্তার কাছে প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়। এমন যেন না হয় যে, আপনার কাজের অভিজ্ঞতার সঙ্গে চাকরির রিকোয়ারমেন্টের কোনো মিল নেই। এ ক্ষেত্রে নিয়োগকর্তার চাহিদার অনুযায়ী প্রাসঙ্গিক অভিজ্ঞতাগুলো উল্লেখ করতে হবে। আপনি অনেক অভিজ্ঞতার কথা বললেন, কিন্তু সুনির্দিষ্টভাবে ওই চাকরির জন্য দরকারি অভিজ্ঞতাগুলো বাদ পড়ে গেল; যা বললেন, তা আবার ওই চাকরির জন্য প্রাসঙ্গিক নয়, তবে তা খুব একটা ইতিবাচক ফল দেবে না। 

সিভিতে আপনার সব কর্মকাণ্ড সম্পর্কে উল্লেখ করার প্রয়োজন নেই। যেমন, আপনি কোন কোন প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন, স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কী কী কাজ করেছেন, কী কী ডিগ্রি ও দক্ষতা অর্জন করেছেন। সিভিতে উল্লিখিত বিষয়বস্তু বাছাইকৃত হতে হবে। সবকিছু বিস্তারিত লেখার প্রয়োজন নেই। শুধু সেই বিষয়গুলোই উল্লেখ করুন, যা ওই চাকরির সঙ্গে প্রাসঙ্গিক।

লেখার ফন্ট সাইজ যথাযথ হতে হবে। লেখা পড়তে কষ্ট হয় অথবা অস্পষ্ট—এমন যেন না হয়। বর্তমানে দু-তিন পৃষ্ঠায় সিভি লেখা যায়। এক পৃষ্ঠায় সিভি লেখার দিন শেষ। তাই ফন্ট সাইজ একটু বড় হলে সমস্যা নেই। 

চাকরির জন্য সিভি লেখার সময় শিক্ষাগত যোগ্যতার বিষয়গুলো শেষে দেওয়া যেতে পারে। কারণ, যেকোনো কাজের জন্য নিয়োগকর্তারা প্রথমেই জানতে চান, ওই কাজের জন্য আপনি কতটা যথাযথ। সে জন্য ওই কাজের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাগুলো উল্লেখ করুন শুরুতে। 

একটি ভালো সিভি তৈরির ক্ষেত্রে দরকারি টিপস পেতে ইন্টারনেটের সহায়তা নিতে পারেন। হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউতেই এই সময়ের বিভিন্ন স্ট্যান্ডার্ড সিভি তৈরির ভালো টিপস পেতে পারেন। এ ছাড়া আরও নানা ওয়েবসাইট রয়েছে। সব সময় মনে রাখবেন, অন্য কারও সিভি কপি করবেন না। এ ধরনের সিভি শুরুতেই নিয়োগকর্তার মনে নেতিবাচক ধারণার জন্ম দেয়। বিশেষত, সিভিতে ক্যারিয়ার অবজেকটিভ নিজেই লিখুন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ফায়ার সেফটি বিভাগে নিয়োগ দেবে হা-মীম গ্রুপ

চাকরি ডেস্ক 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে হা-মীম গ্রুপ। প্রতিষ্ঠানটিতে ফায়ার সেফটি বিভাগের শূন্য পদে লোকবল নিয়োগ দেওয়া হবে। গত ২ নভেম্বর এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। আগ্রহী ও যোগ্য প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।

পদের নাম: অফিসার/সিনিয়র অফিসার, (ফায়ার সেফটি)।

পদসংখ্যা: নির্ধারিত নয়।

শিক্ষাগত যোগ্যতা: ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি।

অভিজ্ঞতা: সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ২–৬ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

চাকরির ধরন: ফুল টাইম।

প্রার্থীর ধরন: আগ্রহী নারী ও পুরুষ উভয় প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।

কর্মক্ষেত্র: অফিসে।

বয়সসীমা: ২৪–৩৫ বছর।

কর্মস্থল: গাজীপুর (টঙ্গী)।

বেতন: আলোচনা সাপেক্ষে। প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা অনুযায়ী স্বাস্থ্য বিমা, মোবাইল বিল, প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাচুইটি, প্রতি বছর ইনক্রিমেন্ট, ২টি উৎসব বোনাসের ব্যবস্থা রয়েছে।

আবেদন পদ্ধতি: আগ্রহী প্রার্থীরা এখানে ক্লিক করে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।

আবেদনের শেষ সময়: ২ ডিসেম্বর, ২০২৫।

সূত্র: বিজ্ঞপ্তি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এমসিকিউ পরীক্ষার ফল প্রকাশ

চাকরি ডেস্ক 
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এমসিকিউ পরীক্ষার ফল প্রকাশ

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বিভিন্ন পদের প্রিলিমিনারি (এমসিকিউ) পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। এতে মোট ৭৪১ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটির উপপরিচালক (প্রশাসন) রাজিব মিনা স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

পদগুলো হলো: স্টোরকিপার (গ্রেড-১৪), ডেটা এন্ট্রি কন্ট্রোল অপারেটর (গ্রেড-১৬) এবং অফিস সহায়ক (গ্রেড-২০)। এর আগে, গত ২৬ আগস্ট প্রতিষ্ঠানটির এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। এরপর ১ নভেম্বর এসব পদের এমসিকিউ পরীক্ষা ঢাকা মহানগরের ১৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনুষ্ঠিত হয়। এতে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের রোল নম্বর প্রতিষ্ঠানটির অফিশিয়াল বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ রয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রিলিমিনারি (এমসিকিউ) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের লিখিত পরীক্ষা আগামী ৮ নভেম্বর (শনিবার) সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে।

প্রিলিমিনারি (এমসিকিউ) পরীক্ষার প্রবেশপত্রই (রঙিন কপি) পরবর্তী সব পরীক্ষার জন্য প্রযোজ্য হবে। লিখিত পরীক্ষার দিন পরীক্ষাকেন্দ্রে সব প্রার্থীকে আবশ্যিকভাবে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে প্রবেশ করতে হবে। পরীক্ষার হলে শুধু সাধারণ মানের কালো কালির কলম (পেনসিল নয়) ও প্রবেশপত্র সঙ্গে রাখা যাবে।

মোবাইল ফোন, ঘড়ি (ডিজিটাল বা অ্যানালগ), ক্যালকুলেটর, হেডফোন, ওয়ালেট, মানিব্যাগসহ যেকোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস পরীক্ষাকেন্দ্রের অভ্যন্তরে বহন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। পরীক্ষা চলাকালে কোনো পরীক্ষার্থীর সঙ্গে উল্লিখিত সরঞ্জমাদি পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থীকে তাৎক্ষণিকভাবে বহিষ্কার করা হবে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কর্মী নেবে ইসলামী ব্যাংক ফাউন্ডেশন, ৫০ বছরেও আবেদনের সুযোগ

চাকরি ডেস্ক 
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১১: ৩৭
কর্মী নেবে ইসলামী ব্যাংক ফাউন্ডেশন, ৫০ বছরেও আবেদনের সুযোগ

জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে ইসলামী ব্যাংক ফাউন্ডেশন (আইবিএফ)। প্রতিষ্ঠানটিতে চুক্তিভিত্তিক ‘জেনারেল ম্যানেজার’ পদে লোকবল নিয়োগ দেওয়া হবে। ৩ নভেম্বর এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। আগ্রহী প্রার্থীদের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত ঠিকানায় আবেদনপত্র পাঠাতে হবে।

পদের নাম: জেনারেল ম্যানেজার ।

পদসংখ্যা: নির্ধারিত নয়।

শিক্ষাগত যোগ্যতা: স্নাতকোত্তর।

অভিজ্ঞতা: সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ১৫-২০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

চাকরির ধরন: ফুল টাইম।

প্রার্থীর ধরন: আগ্রহী নারী ও পুরুষ উভয় প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।

কর্মক্ষেত্র: অফিসে।

বয়সসীমা: ৪০-৫০ বছর।

চাকরির ধরন: চুক্তিভিত্তিক, প্রাথমিকভাবে ১ বছরের জন্য (প্রতিষ্ঠানের কর্মক্ষমতা এবং প্রয়োজনীয়তার ওপর ভিত্তি করে নবায়নযোগ্য)।

কর্মস্থল: ঢাকা।

বেতন: আলোচনা সাপেক্ষে। ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী আরও সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা রয়েছে।

আবেদন পদ্ধতি: আগ্রহী প্রার্থীরা ‘জেনারেল ম্যানেজার, অ্যাডমিন অ্যান্ড এইচআর, ইসলামী ব্যাংক ফাউন্ডেশন, আল রাজি কমপ্লেক্স, ১৬৬, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি (১০তম ফ্লোর) পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০’ বরাবর আবেদনপত্র পাঠাতে পারবেন।

আবেদনের শেষ সময়: ১৫ নভেম্বর ২০২৫।

সূত্র: বিজ্ঞপ্তি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

লিখিত পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি পরামর্শ

ক্যারিয়ার ডেস্ক
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১১: ৩২
মো. মাসুম কামাল
মো. মাসুম কামাল

২৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ৪৭তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা। বিসিএস পরীক্ষায় ভালো ক্যাডার পাওয়া নির্ভর করে লিখিত পরীক্ষার ওপর। আসন্ন ৪৭তম বিসিএস পরীক্ষায় লিখিত পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতিমূলক পরামর্শ দিয়েছেন ‎৪১তম বিসিএসের সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার মো. মাসুম কামাল।

সিলেবাস অনুযায়ী পড়ুন

পিএসসি প্রদত্ত লিখিত পরীক্ষার সিলেবাস অনুযায়ী প্রতিটি বিষয় অন্তত একবার দ্রুত পড়ুন।

বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি

বাংলা: বাংলায় মোট ২০০ নম্বর এবং এখানে খুব সহজে ভালো নম্বর পাওয়া যায়। প্রথমে সাহিত্য অংশ বিগত প্রশ্নসহ টপিক ধরে রিডিং পড়ুন। গুরুত্বপূর্ণ লেখকদের গল্প, উপন্যাস চরিত্রসহ মূল কাহিনি ভালোভাবে পড়ুন। ব্যাকরণ অংশের জন্য বাংলা বানানের নিয়ম ভালোভাবে মুখস্থ রাখুন। এখান থেকে প্রায়ই প্রশ্ন আসতে দেখা যায়। বাকি অংশের জন্য বিগত প্রশ্ন এবং সিলেবাস ধরে পড়ুন। সাহিত্য ও ব্যাকরণ অংশের জন্য মোহসীনা নাজিলার লেখা বই দেখতে পারেন। পত্র, আবেদন, সংলাপ, সারাংশ-সারমর্ম, গ্রন্থ সমালোচনার জন্য তারেক মনজুর স্যার (প্রফেসর, ঢাবি, বাংলা বিভাগ) প্রদত্ত ফরম্যাট অনুসরণ করতে পারেন। গ্রন্থ সমালোচনার জন্য ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, গণ-অভ্যুত্থান, বাংলার ইতিহাস এবং গুরুত্বপূর্ণ লেখকদের লেখার ওপর জোর দিন। রচনার ক্ষেত্রে সমসাময়িক বিষয়ে গুরুত্ব দিন। বাংলা ও ইংরেজি রচনা একসঙ্গে মিলিয়ে পড়ুন। বাংলাদেশ বিষয়াবলির গুরুত্বপূর্ণ ডেটা এখানে কাজে লাগানোর চেষ্টা করুন।

ইংরেজি: ইংরেজিতে মোট ২০০ নম্বর। বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় অনেকে ফেল করেন ইংরেজিতে। তাই ইংরেজিতে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। নিয়মিত অনুবাদ চর্চা করুন এবং ফ্রি হ্যান্ড রাইটিংয়ে গুরুত্ব দিন। এসব ক্ষেত্রে গুগল ট্রান্সলেটর অথবা এক্সপার্টের সাহায্য নিতে পারেন। সময় নিয়ে নিয়মিত প্যাসেজ চর্চা করুন। সম্ভব হলে অনলাইন বা অফলাইন কোচিংয়ে পরীক্ষা দিন। লেখার ক্ষেত্রে Sentence structure, grammar, spelling খেয়াল রাখুন। রচনার ক্ষেত্রে আগে থেকে গুরুত্বপূর্ণ রচনার শুরু এবং শেষের অংশের জন্য মনীষীদের কোটেশনসহ নোট করে রাখুন। বাংলা ও ইংরেজি রচনা মিলিয়ে পড়ুন। বিসিএস ইংরেজি লিখিত পরীক্ষায় ভালো করতে নিয়মিত অনুশীলনের বিকল্প নেই।

গণিত ও মানসিক দক্ষতা: গণিত ও মানসিক দক্ষতায় ৫০ করে মোট ১০০ নম্বর। এখানে সহজে ৮০+ নম্বর তোলা সম্ভব। দুই অংশের জন্য আগে বিগত সালের প্রশ্ন বুঝে পড়ুন। কারণ এই অংশে প্রচুর রিপিট হয়। সিলেবাস ধরে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্কগুলো বুঝে করুন। প্রয়োজনে দক্ষদের সাহায্য নিন। খুব জটিল চ্যাপ্টার বুঝতে না পারলে স্কিপ করুন। তবে অঙ্ক অবশ্যই বুঝে করবেন। মানসিক দক্ষতার ক্ষেত্রে প্রিলিমিনারি+ লিখিত বিগত প্রশ্ন ভালোভাবে পড়লে এখান থেকে অনেক কমন প্রশ্ন পাওয়া যায়।

বিজ্ঞান: বিজ্ঞানে মোট ১০০ নম্বর। বিজ্ঞান ব্যাকগ্রাউন্ডের শিক্ষার্থীরা এখানে ভালো করবেন। অন্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা প্রথমে বিগত বছরের প্রশ্ন এবং সিলেবাসের টপিক ধরে ধরে বুঝে পড়ুন। বিজ্ঞানের ক্ষেত্রেও প্রশ্ন রিপিট হয়। তাই এখানেও বিগত বছরের প্রশ্নের ওপর গুরুত্ব দিন। বিজ্ঞানে লেখার ক্ষেত্রে চিত্র দেওয়ার চেষ্টা করুন। টু দ্য পয়েন্ট লিখলে অল্প লেখায়ও ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব। বিজ্ঞানের জন্য সায়েন্স আওয়ার বইটি দেখতে পারেন।

বাংলাদেশ বিষয়াবলি: বাংলাদেশ বিষয়াবলিতে মোট ২০০ নম্বর। সিলেবাসও অনেক বড়। তাই সিলেবাস ধরে সব টপিক অন্তত একবার দ্রুত পড়ুন। সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট, সমসাময়িক অর্থনীতি-সম্পর্কিত ডেটা পত্রিকা থেকে নোট করে রাখুন। এই অংশে প্রচুর লিখতে হবে। তাই দ্রুত লেখার অভ্যাস করুন। টপিক অনুযায়ী গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের নোট রাখলে পরীক্ষার আগে দ্রুত রিভিশন সম্ভব হবে।

আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি: এখানে মোট ১০০ নম্বর। কনসেপচুয়াল অংশের ৪০ নম্বর আগে পড়ে নিন। এই অংশের বিগত প্রশ্নগুলো ভালোভাবে পড়ুন। পাশাপাশি সমসাময়িক বিভিন্ন কনসেপ্ট নোট করুন। আন্তর্জাতিক বিষয়াবলিতে পত্রিকা পড়ার বিকল্প নেই। পত্রিকা থেকে সমসাময়িক ফিলিস্তিন-ইসরায়েল, রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া-ইউক্রেন, চীন-ভারত-পাকিস্তান, ইরান, সিরিয়া, সুদানসহ সমসাময়িক ঘটনাবলি ভালোভাবে পড়ুন। প্রয়োজনে নোট করে রাখুন। পরীক্ষার আগে আপডেট কিছু বই বের হয়। প্রয়োজনে সেগুলোর সহায়তা নিন।

বিসিএসের সিলেবাস অনেক বড়। তাই টপিক ধরে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো দ্রুত পড়ার চেষ্টা করুন। বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় অনেক বেশি লিখতে হয়। তাই সময় ধরে দ্রুত লেখার চেষ্টা করুন। শেষ সময় অনলাইন বা অফলাইনে কোচিংয়ে মডেল টেস্ট দিলে টাইম ম্যানেজমেন্ট সম্পর্কে ভালো ধারণা হবে। সিলেবাস ধরে পড়ুন এবং দ্রুত লেখার অভ্যাস করুন। সবার জন্য শুভকামনা।

অনুলিখন: জেলি খাতুন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত