Ajker Patrika

বিজেএস পরীক্ষা: বাংলায় ভালো করতে যা দরকার

শাহ বিলিয়া জুলফিকার
আপডেট : ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৮: ১৯
আবু সাঈদ
আবু সাঈদ

বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (বিজেএস) পরীক্ষায় প্রিলিমিনারি ও লিখিত—উভয় ধাপেই বাংলা বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই শুরু থেকে এই বিষয়ে দৃঢ় প্রস্তুতি নেওয়া অপরিহার্য। ১৭তম বিজেএসে সহকারী জজ হিসেবে সুপারিশপ্রাপ্ত আবু সাঈদ তাঁর বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে জানিয়েছেন কীভাবে পরিকল্পিতভাবে পড়াশোনা করলে বাংলায় ভালো করা সম্ভব। তাঁর অভিজ্ঞতালব্ধ পরামর্শ শুনেছেন শাহ বিলিয়া জুলফিকার

বাংলা বিষয়ের প্রস্তুতি

বিজেএস প্রস্তুতিতে বাংলা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত লিখিত পরীক্ষার প্রথম পরীক্ষাটি বাংলা হয়ে থাকে। প্রথম পরীক্ষা খারাপ হলে বাকি পরীক্ষায় এর খারাপ প্রভাব পড়তে পারে, আবার ভালো হলে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পাবে। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ১০টির মতো প্রশ্ন বাংলা থেকে আসে এবং লিখিত পরীক্ষায় ১০০ নম্বর থাকে। এ জন্য বিজেএস পরীক্ষায় ভালো করতে হলে বাংলায় ভালো প্রস্তুতি নেওয়ার বিকল্প নেই।

লিখিত পরীক্ষার মান বণ্টন

(ক) রচনা লিখন (সংকেতসহ অথবা সংকেতবিহীন):

  • ২০ নম্বর

(খ) ভাবসম্প্রসারণ: ১০ নম্বর

(গ) সারমর্ম বা সারাংশ

  • লিখন: ৫ নম্বর

(ঘ) বিষয়ভিত্তিক প্রতিবেদন

  • তৈরি: ১০ নম্বর

(ঙ) ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদ: ৫ নম্বর

(চ) পত্রলিখন (সরকারি, আধা সরকারি, স্মারকপত্র, ব্যবসা-সংক্রান্ত, ব্যক্তিগত, আবেদনপত্র বা পত্রিকার সম্পাদক বরাবর পত্র ইত্যাদি): ১০ নম্বর

(ছ) ব্যাকরণ: ৩০ নম্বর

(জ) বাংলা ভাষা ও সাহিত্য সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর বা টিকা লিখন: ১০ নম্বর

ব্যাকরণে অন্তর্ভুক্ত বিষয়াবলি

ধ্বনি, দ্বিরুক্তি শব্দ, উপসর্গ, ধাতু, প্রত্যয়, শব্দ, পদ-প্রকরণ, ভাষা, ক্রিয়াপদ, কাল ও পুরুষ এবং কালের বিশিষ্ট প্রয়োগ, সমাপিকা, অসমাপিকা ও যৌগিক ক্রিয়ার প্রয়োগ, বাংলা অনুজ্ঞা, ক্রিয়া-বিভক্তি, সাধু ও চলিত ভাষা, কারক ও বিভক্তি, সম্বন্ধ পদ ও সম্বোধন পদ, অনুসর্গ, বাক্য শুদ্ধিকরণ, সন্ধি, সমাস, বচন, সমার্থক ও বিপরীত শব্দ, শব্দ বা শব্দগুচ্ছ দ্বারা শূন্যস্থান পূরণ, বাগধারা ও প্রবাদ-প্রবচন, দাপ্তরিক পরিভাষার ব্যবহারে বাক্য গঠন, যতি চিহ্নের ব্যবহার, এককথায় প্রকাশ, একই শব্দ ভিন্ন অর্থে প্রয়োগ, উক্তি পরিবর্তন এবং বাক্য রূপান্তর।

বাংলা ভাষা ও সাহিত্য অংশে অন্তর্ভুক্ত লেখকেরা

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, মাইকেল মধুসূদন দত্ত, মীর মশাররফ হোসেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, জীবনানন্দ দাশ, সুকান্ত ভট্টাচার্য, জসীমউদ্‌দীন, বেগম রোকেয়া, ফররুখ আহমদ, কায়কোবাদ, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, শামসুর রাহমান, হ‌ুমায়ূন আহমেদ, রফিক আজাদ, নির্মলেন্দু গ‌ুণ, হাসান হাফিজুর রহমান, সৈয়দ শামসুল হক, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ, হাসান আজিজুল হক এবং বাংলা সাহিত্যের আধুনিক যুগের অন্যান্য কবি, সাহিত্যিক ও নাট্যকার।

ভালো করার টিপস

অবশ্যই ধৈর্য ধরে পড়ার টেবিলে বসতে হবে। বিজেএস পরীক্ষায় ভালো করতে হলে আপনি নিচের বিষয়গুলোর ওপর গুরুত্ব দিতে পারেন।

বিগত বছরের প্রশ্ন বিশ্লেষণ: বিজেএস পরীক্ষার সিলেবাস যদি আপনি হাতে নেন, তাহলে আপনার সমুদ্রের অতল গহ্বরে হারিয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা তৈরি হতে পারে। এ জন্য অবশ্যই আপনাকে বিগত বছরের প্রশ্ন বিশ্লেষণ করতে হবে। তারপর আপনি বুঝতে পারবেন কোন বিষয়গুলো আপনাকে পড়তে হবে এবং কোন বিষয়গুলো অধিক গুরুত্বপূর্ণ ও কোনগুলো কম গুরুত্বপূর্ণ।

নোট তৈরি করা: নোট করে পড়াটাই ভালো। কারণ নোট করে পড়লে আপনি রিভিশন দেওয়ার ক্ষেত্রে সুবিধা পাবেন।

রিভিশন দেওয়া: আপনি যা পড়বেন, তা অবশ্যই রিভিশন দিন। এতে পঠিত তথ্যগুলো

স্থায়ী স্মৃতিতে গেঁথে যায়। আর রিভিশন না দিলে আপনি আগের সব পড়া ভুলে যাবেন।

নিয়মিত পড়াশোনা: পড়াশোনা এমন একটি বিষয়, টানা না পড়তে পারলে ফলপ্রসূ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। তিন দিন পড়লাম, তিন দিন বিরতি দিলাম—এভাবে পড়াশোনা করলে হবে না। আপনাকে নিয়মিত পড়াশোনা করতে হবে। পড়াটাকে চাকরির ডিউটি মনে করে পড়ুন।

আত্মবিশ্বাসী হওয়া: আপনি যে পরীক্ষাটা দিচ্ছেন, সেই পরীক্ষায় সফল হতে পারবেন—এই বিশ্বাস থাকাটা জরুরি। আপনাকে কনফিডেন্ট হতে হবে, তবে ওভার কনফিডেন্ট নয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত