Ajker Patrika

পানামা খালের মালিকানা কেড়ে নেওয়ার হুমকি ট্রাম্পের

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭: ২১
Thumbnail image
পানামা খালের মালিকানা পানামা সরকারের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবিতে পানা খালের একাংশ। ছবি: এএফপি

বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম জলপথ পানামা খালের মালিকা পানামা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি অভিযোগ করেছেন, পানামা কর্তৃপক্ষ মার্কিন বাণিজ্যিক জাহাজগুলোর ওপর অত্যধিক ফি আরোপ করছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

ট্রাম্প তাঁর নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে শেয়ার করা এক পোস্টে বলেছেন, ‘আমাদের নৌবাহিনী এবং বাণিজ্যিক জাহাজ বহরের সঙ্গে অত্যন্ত অন্যায় আচরণ করা হয়েছে। পানামা যা ফি নিচ্ছে তা হাস্যকর। আমাদের দেশের সঙ্গে এই জালিয়াতি অবিলম্বে বন্ধ হয়ে যাবে।’

উল্লেখ্য, ১৯১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি অংশগ্রহণে পানামা খাল নির্মিত হয় এবং এর আশপাশের এলাকায় কয়েক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের অধীনে ছিল। তবে ১৯৯৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র এবং পানামার মধ্যে একটি যৌথ চুক্তির পর পানামাকে পুরোপুরিভাবেই খালটির নিয়ন্ত্রণ প্রদান করা হয়।

ট্রাম্প তাঁর পোস্টে পানামা খাল এবং এর আশপাশে চীনের প্রভাব বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘এটি (খালটি) কেবল পানামার ব্যবস্থাপনার জন্যই ছিল, চীন বা অন্য কারও জন্য নয়। আমরা এবং আমরা কখনোই এটি ভুল হাতে পড়তে দেব না!’

এই সময়ে এসেও যুক্তরাষ্ট্রের মতো একটি দেশ অন্য একটি সার্বভৌম দেশের কাছে তার ভূখণ্ড ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য দাবি জানাচ্ছে—এমন ঘটনা বেশ বিরল। ট্রাম্প বলেন, ‘এটি অন্যদের উপকারের জন্য দেওয়া হয়নি, বরং কেবল আমাদের এবং পানামার মধ্যে সহযোগিতার একটি চিহ্ন হিসেবে নির্মাণ করা হয়েছিল। যদি এই মহানুভব উপহারের ব্যবহারের ক্ষেত্রে নৈতিক ও আইনগত মূলনীতি অনুসরণ না করা হয়, তবে আমরা দাবি করব যে—পানামা খালটি পুরোপুরি এবং প্রশ্নবিহীনভাবে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হোক।’

ট্রাম্পের এই মন্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী পররাষ্ট্রনীতিতে একটি বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। বিশেষ করে তাঁর আগের আমলের কূটনৈতিক অবস্থান থেকে। যেখানে তিনি মিত্র দেশগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য হুমকি এবং কঠোর ভাষা ব্যবহার করতে কখনোই পিছপা হননি। এই ধরনের মন্তব্য তাঁর রাজনৈতিক শৈলীকে আরও দৃঢ়ভাবে উপস্থাপন করে, যেখানে তিনি দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক সমস্যাগুলোর সমাধান না হওয়া পর্যন্ত অন্য দেশগুলোকে ‘চড়া মূল্য’ দিতে বাধ্য করতে প্রস্তুত।

এ ছাড়া, গত মাসে ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন, তিনি মেক্সিকো ও কানাডার আমদানির ওপর তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম দিন থেকেই শুল্ক আরোপ করবেন এবং তা চালু থাকবে যত দিন না ‘অবৈধ অভিবাসী এবং মাদকদ্রব্যের প্রবেশ’ বন্ধ না হচ্ছে। তিনি বলেছিলেন, ‘মেক্সিকো এবং কানাডার পুরো অধিকার ও ক্ষমতা আছে সহজেই এই দীর্ঘস্থায়ী সমস্যার সমাধান করার। আমরা এখানে তাদের কাছে দাবি জানাচ্ছি যে তারা এই ক্ষমতা ব্যবহার করুক এবং যত দিন তারা তা না করবে, তত দিন তাদের চড়া মূল্য দিতে হবে!’

এদিকে, পানামা কর্তৃপক্ষ ট্রাম্পের এই পোস্টের প্রতি কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাননি। তবে, পানামা খালটি পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ত জলপথগুলোর মধ্যে একটি। প্রতিবছর বিশ্ব বাণিজ্যের প্রায় ৫ শতাংশ পরিবাহিত হয় এই খাল হয়ে। এই খালটির কারণে এশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলের মধ্যে চলাচলকারী জাহাজগুলোকে দক্ষিণ আমেরিকার দক্ষিণ প্রান্তে বিপজ্জনক পথ অতিক্রম করতে হয় না। গত অক্টোবরে, পানামা খাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা গত অর্থবছরে রেকর্ড পাঁচ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত