Ajker Patrika

এপস্টাইনের জন্মদিনে চিঠি পাঠিয়েছিলেন ট্রাম্প, প্রকাশ হলো নথি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০: ৩১
২০০০ সালে মার-এ-লাগোতে (বাম দিক থেকে) ডোনাল্ড ট্রাম্প, মেলানিয়া নাউস (বর্তমানে মেলানিয়া ট্রাম্প), জেফরি এপস্টেইন ও তাঁর সঙ্গী ঘিসলেন ম্যাক্সওয়েল। ছবি: এএফপি
২০০০ সালে মার-এ-লাগোতে (বাম দিক থেকে) ডোনাল্ড ট্রাম্প, মেলানিয়া নাউস (বর্তমানে মেলানিয়া ট্রাম্প), জেফরি এপস্টেইন ও তাঁর সঙ্গী ঘিসলেন ম্যাক্সওয়েল। ছবি: এএফপি

গত কয়েক মাস ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে বেশ ‘হট টপিক’ জেফ্রি এপস্টাইন। এবার সামনে এল আলোচিত ওই ব্যক্তির জন্মিদন উপলক্ষে তৈরি একটি বিশেষ অ্যালবাম। সঙ্গে পাওয়া গেছে এপস্টাইনকে লেখা ট্রাম্পের একটি চিঠিও! চিঠিটিতে যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ ছিল বলে অভিযোগ উঠছে। মার্কিন কংগ্রেসের হাউস ওভারসাইট কমিটির ডেমোক্র্যাট সদস্যরা চিঠিটি প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এপি।

তবে, ওই চিঠি আর অ্যালবাম সামনে আসার পরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট দাবি করছেন সেটি তিনি লেখেননি। তাঁর দাবি—চিঠিতে যে স্বাক্ষর দেখা যাচ্ছে সেটি জাল স্বাক্ষর।

এপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, সামনে আসা ওই চিঠিতে ট্রাম্প লিখেছিলেন, ‘একজন বন্ধু থাকা অপূর্ব এক অনুভূতি। শুভ জন্মদিন। তোমার প্রতিটি দিনই যেন এক একটি চমৎকার গোপন রহস্য হয়ে ওঠে।’ সাদা কাগজে একজন নারীর অবয়ব এঁকে তার ভেতর এই লেখাগুলো লেখা ছিল ওই চিঠিতে। আর নিচে ছিল ট্রাম্পের স্বাক্ষর।

উল্লেখ্য, এর আগে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এমনই একটি চিঠির কথা উল্লেখ করে জেফ্রি এপস্টাইনের সঙ্গে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠতা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। এর জেরে সংবাদমাধ্যমটির বিরুদ্ধে ১০০ কোটি ডলারের মানহানি মামলা করেন ট্রাম্প।

তবে, হোয়াইট হাউস এবং ট্রাম্প খোদ বেশ দৃঢ়ভাবে এই চিঠির সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে আসছেন। ট্রাম্পের ভাষ্য—এই চিঠি যে ভাষায় লেখা হয়েছে সেভাবে তিনি কথাই বলেন না। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘এগুলো আমার লেখা নয়। আমি এভাবে কথা বলি না। আর আমি ছবি আঁকি না।’

হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট এক বিবৃতিতে জানান, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই লেখা লিখেননি, ছবিও আঁকেননি। তাঁর আইনজীবী দল এ নিয়ে দৃঢ়ভাবে আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছে।’ হোয়াইট হাউসের ডেপুটি চিফ অব স্টাফ টেইলর বুদোভিচ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রাম্পের অতীত স্বাক্ষরের ছবি প্রকাশ করে দাবি করেন, ‘এটা একেবারেই তাঁর স্বাক্ষর নয়।’

Letter

ফ্লোরিডার রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান বায়রন ডোনাল্ডস সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অসংখ্যবার সই করতে দেখেছি। এটা তাঁর স্বাক্ষর নয়।’ অন্যদিকে কংগ্রেসম্যান থমাস ম্যাসি, যিনি এপস্টাইনের নথি প্রকাশের জন্য জোর দিচ্ছেন, মন্তব্য করেন, ‘এই চিঠি কোনো কিছু প্রমাণ তরে না। জেফ্রি এপস্টাইনের ট্রাম্পের কাছ থেকে জন্মদিনের কার্ড পাওয়ার প্রমাণ ভুক্তভোগীদের জন্য কোনো সহায়তা নিশ্চিত করবে না।’

এপস্টাইনকে ঘিরে বহু বছর ধরেই নানা জল্পনা-কল্পনা চলছে। এপস্টাইনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি নাবালিকা মেয়েদের অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে যৌন নির্যাতন করতেন। তাঁর সহযোগী গিসলেইন ম্যাক্সওয়েলকেও কিশোরীদের প্রলুব্ধ করার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। ট্রাম্প দাবি করেন, প্রায় দুই দশক আগে তিনি এপস্টাইনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন। কারণ, এপস্টাইন তাঁর মার-এ-লাগো রিসোর্টে কর্মরত তরুণীদের ‘চুরি’ করছিলেন, যার মধ্যে ছিলেন আলোচিত অভিযোগকারী ভার্জিনিয়া জিউফ্রে।

Letter-2

এপস্টাইনের মৃত্যুর পর থেকে তাঁর নথি প্রকাশের দাবি জানিয়ে আসছে মার্কিনিরা। গত আগস্টে বিচার বিভাগ কংগ্রেসের কাছে এপস্টাইন-সংশ্লিষ্ট তদন্ত নথি হস্তান্তর শুরু করেছে। গত মাসে হাউস ওভারসাইট কমিটি এপস্টাইনের সম্পত্তি ও এস্টেট থেকে নথি চেয়ে সমন জারি করে। এর মধ্যে ছিল তাঁর শেষ উইল, প্রসিকিউটরদের সঙ্গে করা চুক্তি, কন্টাক্ট বুক, আর্থিক লেনদেন ও সম্পত্তির বিস্তারিত বিবরণ।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই অ্যালবামের প্রকাশ শুধু এপস্টাইনের অপরাধ নয়, তাঁর সঙ্গে সম্পর্কিত প্রভাবশালী রাজনীতিক ও ধনীদের নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত