Ajker Patrika

স্পেসএক্সের রকেট উৎক্ষেপন একসঙ্গে দেখলেন মাস্ক ও ট্রাম্প

আপডেট : ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১৬: ৪৫
রকেট উৎক্ষেপণের সময় ট্রাম্পের উপস্থিতি মাস্ককের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার ইঙ্গিত দেয়।  ছবি: সংগৃহীত
রকেট উৎক্ষেপণের সময় ট্রাম্পের উপস্থিতি মাস্ককের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার ইঙ্গিত দেয়। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের মহাকাশ সংস্থা স্পেস এক্সের পরবর্তী প্রজন্মের রকেট স্টারশিপের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ দেখতে সশরীরে হাজির হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্পেস এক্সের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে এ উৎক্ষেপণ পর্যবেক্ষণ করেছেন তিনি। এ সময় মাস্ক তাঁর পাশে ছিলেন।

স্থানীয় সময় (১৯ নভেম্বর) মঙ্গলবার সংস্থাটির টেক্সাসের ব্রাউনসভিলের বোকা চিকা লঞ্চ প্যাড থেকে এ রকেট উৎক্ষেপণ করা হয়। প্রায় ৪০০ ফুট (১২২ মিটার) উচ্চতার রকেট সিস্টেমটি নভোচারীদের চাঁদে অবতরণ করানোর এবং মঙ্গলগ্রহে পাঠানোর জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।

রকেটের ২৩৩ ফুট (৭১ মিটার) উচ্চতার প্রথম স্তরের বুস্টারের ‘সুপার হেভি’। প্রায় ৪০ মাইল (৬২ কিলোমিটার) উচ্চতায় এর দ্বিতীয় স্তর ‘স্টারশিপ’ থেকে আলাদা হয়ে যায় এটি। এরপর মহাকাশের দিকে যেতে থাকে রকেটটিকে।

স্টারশিপ রকেটের মহাকাশে যাওয়ার পর বুস্টারটি মেক্সিকো উপসাগরে পড়ে যায়। তবে এটি উৎক্ষেপণের টাওয়ারে সংযুক্ত বড় যান্ত্রিক বাহুতে ফিরে আসার কথা ছিল। তবে কিছু ত্রুটির কারণে শেষ মুহূর্তে এটি সাগরে পড়ে যায়।

অপরদিকে মহাকাশে পৃথিবী ঘুরে প্রায় এক ঘণ্টা পরে দিনের বেলায় ভারত মহাসাগরে পড়েছে স্টারশিপ রকেটটি।

মহাকাশে প্রথমবারের মতো অন্তর্নির্মিত ইঞ্জিন পুনরায় সফলভাবে চালু করে রকেটটি। মহাকাশে এভাবে চালক বিহীন রকেটটির ইঞ্জিন চালুর ক্ষেত্রে প্রথমবার সফল হলো স্পেসএক্স।

সোশ্যাল মিডিয়ার এক পোস্টে স্পেসএক্সকে অভিনন্দন জানিয়েছেন নাসার প্রধান বিল নেলসন। তিনি স্টারশিপের মহাকাশে ইঞ্জিন পুনরায় প্রজ্বলন ‘অরবিটাল ফ্লাইটের গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি’ চিহ্নিত করেছে। আগামী জানুয়ারিতে ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণ করার পর প্রেসিডেন্ট অফিস থেকে পদ থেকে সরে যাওয়ার কথা রয়েছে।

রকেট উৎক্ষেপণের সময় ট্রাম্পের উপস্থিতি মাস্ক সঙ্গে মধ্যের ঘনিষ্ঠতার ইঙ্গিত দেয়। মাস্ক এবারের মার্কিন নির্বাচনে ট্রাম্পকে সমর্থন দেন এবং তার নির্বাচনী প্রচারণায় ১৩০ মিলিয়নেরও বেশি ডলার খরচ করেন। সম্প্রতি ট্রাম্প তাকে তার সম্ভাব্য মন্ত্রিপরিষদে স্থান দিয়েছেন। এর ফলে ইলন মাস্ক ও তার কোম্পানিগুলো লাভবান হতে পারে।

গত ১৩ নভেম্বর ডিপার্টমেন্ট অব গভমেন্ট ইফিশিয়েন্সি নামের নতুন বিভাগে ইলন মাস্কে দায়িত্ব দেন ট্রাম্প। সরকারের বিভিন্ন বিভাগে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় সংকোচনে তিনি দায়িত্ব পালন করবেন।

মার্কিন ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) কর্তৃক বাণিজ্যিক রকেট উৎক্ষেপণের নিয়ন্ত্রণ মাস্কের জন্য হতাশার কারণ। তিনি অভিযোগ করেছেন, এই সংস্থা মঙ্গলগ্রহে পৌঁছানোর কোম্পানির অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করছে।

তবে রকেটটির এর আগে উৎক্ষেপণের এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে গত মঙ্গলবার স্টারশিপ উৎক্ষেপণের জন্য এফএএ–এর অনুমোদন পেল স্পেসএক্স।

গত মঙ্গলবারের মাস্ক পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণের জন্য চারটি মূল লক্ষ্য তালিকাভুক্ত করেন—মহাকাশে থাকা অবস্থায় স্টারশিপের মহাকাশ উপযোগী ইঞ্জিন পুনরায় চালু করা, দিনের বেলা রকেটটিকে সাগরে অবতরণ করানো (অতীতের প্রচেষ্টাগুলো ছিল রাতে), পৃথিবীতে পুনঃপ্রবেশের সময় স্টারশিপকে আরও তীব্র তাপ সহ্য করানো এবং বুস্টারের অবতরণ দ্রুততর করা।

ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে স্পেসএক্স উন্নয়নে দ্রুত অগ্রগতি করবে বলে আশা করছে স্টারশিপ।

ট্রাম্পের দ্বিতীয় প্রশাসনের অধীনে। প্রশাসনের মহাকাশ সংক্রান্ত পরিকল্পনা নাসা-এর আর্টেমিস প্রোগ্রামকে আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়ার আশা করা হচ্ছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে চাঁদের পৃষ্ঠে নভোচারীদের আবা পাঠানো হবে। এর পাশাপাশি আরও উচ্চাকাঙ্ক্ষী লক্ষ্য হিসেবে মঙ্গলগ্রহে মানুষকে পাঠানো হবে যা ইলন মাস্কের একটি বড় স্বপ্ন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এবার জাপানের সঙ্গে বিরল খনিজ নিয়ে চুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১২: ৩৫
বিরল মৃত্তিকা খনিজ নিয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি। ছবি: এএফপি
বিরল মৃত্তিকা খনিজ নিয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি। ছবি: এএফপি

যুক্তরাষ্ট্র এবার জাপানের সঙ্গে বিরল খনিজ নিয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। জাপান সফররত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তির লক্ষ্য গুরুত্বপূর্ণ খনিজ ও ‘রেয়ার আর্থ বা বিরল মৃত্তিকা খনিজ’ উপাদানের খনন ও প্রক্রিয়াজাতকরণে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা জোরদার করা।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, টোকিওতে বৈঠকের শুরুতেই জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের এক ‘সুবর্ণ যুগ’ গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেন।

এশিয়া সফরের দ্বিতীয় ধাপে বর্তমানে জাপানে অবস্থান করছেন ট্রাম্প। বৈঠকের শুরুতেই তাকাইচি ও ট্রাম্প চুক্তি স্বাক্ষর করেন, যার লক্ষ্য হলো—গুরুত্বপূর্ণ খনিজ ও ‘রেয়ার আর্থ বা বিরল মৃত্তিকা খনিজের’ উপাদানের খনন ও প্রক্রিয়াজাতকরণে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা জোরদার করা।

সম্প্রতি চীন বিরল মৃত্তিকা খনিজের রপ্তানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করার পর এই চুক্তির ঘোষণা এল। এই বিরল মৃত্তিকা খনিজ বৈশ্বিক প্রযুক্তি ও শিল্প উৎপাদনের জন্য অপরিহার্য উপাদান। ট্রাম্প এ সপ্তাহে দক্ষিণ কোরিয়ায় চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন—বাণিজ্যযুদ্ধের টানাপোড়েনের মধ্যেই এই উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

চুক্তির বিষয়ে হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দুই দেশ অর্থনৈতিক নীতি ও যৌথ বিনিয়োগের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ এবং রেয়ার আর্থ উপাদানের জন্য বৈচিত্র্যময়, স্বচ্ছ ও ন্যায্য বাজার গড়ে তুলতে একসঙ্গে কাজ করবে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, চুক্তির মূল উদ্দেশ্য হলো ‘গুরুত্বপূর্ণ খনিজ ও রেয়ার আর্থ সরবরাহ শৃঙ্খলে স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দুই দেশকে সহায়তা করা।’

তাকাইচি বৈঠকের আগে বলেন, ‘আমি এমন এক নতুন সুবর্ণ যুগ দেখতে চাই, যেখানে জাপান-যুক্তরাষ্ট্র মিত্রতা আরও শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ হবে।’ গোপন বৈঠকের বিষয়ে হোয়াইট হাউস জানায়, তাকাইচি ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দেবেন। এই পুরস্কারের প্রতি ট্রাম্পের আগ্রহ বহুদিনের। ট্রাম্প দাবি করেন, তিনি কয়েকটি সংঘাতের অবসান ঘটিয়েছেন, যদিও অনেক বিশেষজ্ঞ তাঁর ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।

গত সপ্তাহে জাপানের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন তাকাইচি। তিনি গাজা ও থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়ার সীমান্ত সংঘাতের অস্ত্রবিরতি প্রচেষ্টায় ট্রাম্পের ভূমিকার প্রশংসা করেন। পরে দুই নেতা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেকে স্মরণ করেন।

তাদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল বাণিজ্য ও নিরাপত্তা। কয়েক মাস আগেই তাকাইচির পূর্বসূরি শিগেরু ইশিবা যুক্তরাষ্ট্রে বিশাল বিনিয়োগের বিনিময়ে হোয়াইট হাউস থেকে শুল্ক ছাড় পেয়েছিলেন। এবারও যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আরও ছাড় পেতে জাপান আমেরিকান সয়াবিন, পিকআপ ট্রাক ও অন্যান্য পণ্য কেনার পরিকল্পনা করছে। আজ মঙ্গলবার এক যৌথ বিবৃতিতে দুই নেতা বলেন, ‘আমরা এই মহান চুক্তি বাস্তবায়নে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ’, যা ‘দুই দেশের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা জোরদার করবে, প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করবে এবং বৈশ্বিক সমৃদ্ধির ধারাকে অব্যাহত রাখবে।’

তাকাইচি যুক্তরাষ্ট্র-জাপান নিরাপত্তা সম্পর্ককে ‘বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ জোট’ হিসেবে অভিহিত করেন এবং বলেন, জাপান ‘বিশ্ব শান্তি ও স্থিতিশীলতায় অবদান রাখতে প্রস্তুত।’ টোকিও পৌঁছানোর পর সোমবার সন্ধ্যায় সম্রাট নারুহিতোর সঙ্গে সাক্ষাতের পর ট্রাম্প বলেন, জাপানের পক্ষ থেকে মার্কিন সামরিক সরঞ্জাম কেনা ‘অত্যন্ত ইতিবাচক সংকেত।’ তিনি যোগ করেন, ‘দুই অর্থনীতি এখন প্রচুর বাণিজ্য করবে।’

ট্রাম্প তাকাইচিকে জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘এটি সত্যিই বড় অর্জন।’ তিনি বলেন, ‘জাপানের জন্য আমি যা পারি, করব। তুমি অসাধারণ কাজ করবে, আর আমাদের সম্পর্কও হবে অসাধারণ।’

উল্লেখ্য, এর আগে যুক্তরাষ্ট্র বিরল মৃত্তিকা খনিজ নিয়ে অস্ট্রেলিয়া, ইউক্রেন ও আফ্রিকার কয়েকটি দেশের সঙ্গে চুক্তি করেছে, কিংবা চুক্তি করার পথে রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভেনেজুয়েলায় ‘মাদুরোর দিন ফুরিয়ে আসছে’, ‘ভেতরে বা বাইরে’ থেকে কিছু একটা ঘটবে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১১: ৩৩
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান পার্টির সিনেটর রিক স্কট। ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান পার্টির সিনেটর রিক স্কট। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন সিনেটর রিক স্কট বলেছেন, ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর এখনই দেশ ছেড়ে চলে যাওয়া উচিত। কারণ, ভেনেজুয়েলায় তাঁর ক্ষমতার দিন শেষের পথে। তিনি বলেছেন, ভেনেজুয়েলায় ‘মাদুরোর দিন ফুরিয়ে আসছে।’ তুরস্কের রাষ্ট্র পরিচালিত সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।

মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিবিএসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ফ্লোরিডার রিপাবলিকান সিনেটর রিক স্কট বলেন, ‘আমি যদি মাদুরোর জায়গায় হতাম, এখনই রাশিয়া বা চীনে চলে যেতাম।’ স্কট সতর্ক করে বলেন, মাদুরোর ‘দিন গোনা শুরু হয়ে গেছে।’ তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেন, ‘ভেতর থেকে হোক বা বাইরে থেকে কিছু একটা ঘটবেই।’

তাঁকে সরাসরি জিজ্ঞেস করা হয়, যুক্তরাষ্ট্র কি ভেনেজুয়েলায় সামরিক অভিযান চালাতে যাচ্ছে? জবাবে স্কট বলেন, ‘আমি তা মনে করি না। যদি এমন হয়ও, তাহলে আমি বিস্মিত হব।’ তাঁর এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এল, যখন ওই অঞ্চলে সামরিক উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে। গত রোববার যুক্তরাষ্ট্রের একটি যুদ্ধজাহাজ ত্রিনিদাদ ও টোবাগোতে পৌঁছেছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি ভেনেজুয়েলার ওপর চাপ বাড়িয়েছে।

মাসের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন, তিনি ভেনেজুয়েলায় সিআইএর অভিযান পরিচালনার অনুমোদন দিয়েছেন। স্কট আরও বলেন, মাদুরোকে সরিয়ে দেওয়া মানে ওই অঞ্চলে আমেরিকার প্রভাব দীর্ঘদিন প্রতিরোধকারী দেশ ‘কিউবার পতনের সূচনা’। তাঁর ভাষায়, ‘আমেরিকা এখন দক্ষিণ গোলার্ধের দেখভাল করবে।’

স্থলযুদ্ধের সম্ভাবনা প্রসঙ্গে স্কট স্বীকার করেন, যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ-ক্লান্ত জনগণকে নতুন করে সামরিক অভিযানে রাজি করানো ‘খুব কঠিন’। তবে তিনি ইঙ্গিত দেন, প্রয়োজনে ‘আন্তর্জাতিক বাহিনী হস্তক্ষেপ করতে পারে’। স্কটের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ভেনেজুয়েলা তাৎক্ষণিকভাবে কোনো বিবৃতি দেয়নি।

এর আগে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক তৎপরতার নিন্দা জানিয়ে অভিযোগ করেন, ওয়াশিংটন ‘এক নতুন, অনন্ত যুদ্ধের আগুন জ্বালাতে চাইছে’। সম্প্রতি ভেনেজুয়েলা সারা দেশে ৫ হাজার রুশ নির্মিত ইগলা-এস অ্যান্টি-এয়ারক্র্যাফট ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছে, আকাশ প্রতিরক্ষা জোরদারের অংশ হিসেবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বেতন–ভাতা বাড়িয়ে ১ ট্রিলিয়ন ডলার না করলে টেসলা ছাড়তে পারেন মাস্ক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ইলন মাস্ক। ছবি: টেকইনসাইড
ইলন মাস্ক। ছবি: টেকইনসাইড

বিশ্বের শীর্ষ ধনকুবের ও উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক তাঁর প্রতিষ্ঠান টেসলা ছেড়ে যেতে পারেন, যদি না তাঁকে তাঁর কাঙ্ক্ষিত প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ডলারের বেতন–ভাতা না দেওয়া হয়। এমনটাই জানিয়েছেন টেসলার পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান রবিন ডেনহম। মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওস এই খবর জানিয়েছে।

ডেনহম টেসলার শেয়ারহোল্ডারদের আহ্বান জানিয়েছেন, কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইলন মাস্কের প্রস্তাবিত বেতন কাঠামো অনুমোদন করতে, নইলে তিনি কোম্পানি ছেড়ে যেতে পারেন। গত সপ্তাহে কোম্পানির ত্রৈমাসিক আয় সংক্রান্ত বৈঠকে মাস্ক ইঙ্গিত দেন, কোম্পানির ওপর তার পর্যাপ্ত নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করা না হলে তিনি ‘বৃহৎ এক রোবট বাহিনী’ গড়ে তোলার কাজে সময় দিতে চান না।

গতকাল সোমবার এক্সে প্রকাশিত এক চিঠিতে টেসলার চেয়ারম্যান রবিন ডেনহম আসন্ন শেয়ারহোল্ডার ভোটকে বিনিয়োগকারীদের জন্য এক ‘মৌলিক প্রশ্ন’ হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি লিখেন, ‘আপনারা কি ইলনকে টেসলার সিইও হিসেবে ধরে রাখতে চান এবং তাঁকে অনুপ্রাণিত করতে চান টেসলাকে বিশ্বের শীর্ষ স্বচালিত সমাধান প্রদানকারী ও সবচেয়ে মূল্যবান কোম্পানিতে পরিণত করার জন্য?’

সাধারণত প্রচারবিমুখ ডেনহম বলেন, ইলনের মাস্কের জন্য প্রেরণাদায়ক পরিবেশ তৈরি করতে ব্যর্থ হলে, তিনি কোম্পানি ছেড়ে যেতে পারেন। তাঁর ভাষায়, ‘তাহলে টেসলা হারাতে পারে ইলনের সময়, মেধা ও দূরদর্শিতা—যা কোম্পানির অসাধারণ শেয়ারমূল্য বৃদ্ধির মূল চালিকা শক্তি ছিল।’

তবে শর্ত হলো, আগামী সাড়ে ৭ বছর টেলসা যে একাধিক উচ্চাভিলাষী প্রকল্প হাতে নিয়েছে সেগুলো পূর্ণাঙ্গভাবে পূরণ করতে পারেন মাস্ক তবেই তাঁকে এই সুবিধা দেওয়া হবে। গত বুধবার বিশ্লেষকদের সঙ্গে আলোচনায় মাস্ক আবারও উদ্বেগ প্রকাশ করেন যে, টেসলার মানবাকৃতি রোবট প্রকল্পে তাঁর স্বপ্ন বাস্তবায়নে বিপুল পরিশ্রম করার পরও ‘কোনো একসময় তাঁকে কোম্পানি থেকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে।’

তিনি বলেন, এটাই আমার সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তা। এই তথাকথিত ‘বেতন কাঠামো’ আসলে সেটাই সমাধান করার চেষ্টা। তিনি আরও বলেন, ‘যদি কোম্পানিতে আমার যথেষ্ট প্রভাব না থাকে, আমি সেই রোবট বাহিনী গড়তে স্বস্তি বোধ করব না।’

বর্তমানে মাস্কের হাতে টেসলার প্রায় ১৫ শতাংশ শেয়ার আছে। এরই মধ্যে শেয়ারহোল্ডার পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান আইএসএস ও গ্লাস লুইস শেয়ারহোল্ডারদের এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের পরামর্শ দিয়েছে, কারণ তাদের মতে প্যাকেজটির অঙ্ক অতি বিশাল এবং তা বিদ্যমান শেয়ারহোল্ডারদের অংশীদারত্বকে ক্ষীণ করবে।

কয়েকটি মার্কিন অঙ্গরাজ্যের কোষাধ্যক্ষসহ আরও কয়েকজন বিনিয়োগকারী, যেমন এসওসি ইনভেস্টমেন্ট গ্রুপ প্রস্তাবটির বিরোধিতা করেছে। তারা বলেছে, বোর্ডের ওপর তাদের আস্থা নেই যে, তারা ইলনের কর্মকাণ্ড যথাযথভাবে তদারকি করতে পারবে কিংবা দীর্ঘমেয়াদি টেকসই মুনাফা নিশ্চিত করতে পারবে।

উল্লেখ্য, শেয়ারহোল্ডারদের ভোট গ্রহণ শেষ হবে আগামী ৫ নভেম্বর, আর কোম্পানি ৬ নভেম্বর বার্ষিক সভায় প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশ করবে বলে জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যুক্তরাজ্য থেকে ২০ ইউরোফাইটার কিনছে তুরস্ক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১০: ০০
ইউরোফাইটার কিনতে স্টারমারের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন এরদোয়ান। ছবি: সংগৃহীত
ইউরোফাইটার কিনতে স্টারমারের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন এরদোয়ান। ছবি: সংগৃহীত

তুরস্ক যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে ২০টি ইউরোফাইটার টাইফুন যুদ্ধবিমান কিনতে যাচ্ছে। এতে ব্যয় হবে প্রায় ১১ বিলিয়ন ডলার। নিজস্ব প্রযুক্তির পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান ‘কান’ (KAAN)-এর তৈরি চলাকালে আকাশ প্রতিরক্ষা জোরদার করতেই এই উদ্যোগ নিয়েছে আঙ্কারা।

গতকাল সোমবার তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ বিষয়ে চুক্তিতে সই করেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় একে ‘এক প্রজন্মের মধ্যে সবচেয়ে বড় যুদ্ধবিমান চুক্তি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। অপর দিকে এরদোয়ান একে বর্ণনা করেছেন ‘দুই ঘনিষ্ঠ মিত্রের কৌশলগত সম্পর্কের নতুন প্রতীক’ বলে।

আঙ্কারায় দেওয়া বক্তব্যে স্টারমার বলেন, এই চুক্তি শুধু তুরস্ক-যুক্তরাজ্যের জন্য নয়, ন্যাটোর জন্যও একটি সাফল্য। তিনি বলেন, ‘এটি (তুরস্ক) ন্যাটোর দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্ত। তাই এই সক্ষমতা যুক্তরাজ্যের সঙ্গে যুক্ত হওয়া ন্যাটোর জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ তাঁর ভাষ্য অনুযায়ী, সোমবার স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় প্রথম ব্যাচের টাইফুন যুদ্ধবিমান ২০৩০ সালে তুরস্কে পৌঁছাবে।

এর আগে, গত জুলাইয়ে তুরস্ক ও যুক্তরাজ্য ৪০টি টাইফুন সরবরাহের বিষয়ে একটি প্রাথমিক চুক্তি করে, যা পরে ইউরোফাইটার কনসোর্টিয়ামের অন্য সদস্যদেশ জার্মানি, ইতালি ও স্পেন অনুমোদন দেয়।

তুর্কি কর্মকর্তাদের মতে, নিজস্ব ‘কান’ যুদ্ধবিমান পুরোপুরি কার্যকর হওয়ার আগে বহর শক্তিশালী করতে আঙ্কারা মোট ১২০টি যুদ্ধবিমান কিনতে চায়। ইসরায়েলের মতো আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে সামরিক ভারসাম্য রক্ষার প্রয়াসে তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা কাতার ও ওমানের কাছ থেকেও প্রতিটি দেশ থেকে আরও ১২টি করে টাইফুন কেনার পরিকল্পনা করছে। এর আগে গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ৪০টি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান কেনার জন্য ৭ বিলিয়ন ডলারের একটি চুক্তি করে তুরস্ক। তবে সেই সরবরাহ এখনো বিলম্বিত।

সম্প্রতি এরদোয়ান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কথাও বলেছেন। ২০১৯ সালে রুশ এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা কেনার কারণে বহিষ্কৃত হওয়ার পর আবারও ওয়াশিংটন নেতৃত্বাধীন এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান কর্মসূচিতে ফিরতে চায় তুরস্ক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত