Ajker Patrika

ফিলিস্তিনিদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে নিউ ইয়র্ক টাইমস, গোপন নথি ফাঁস 

আপডেট : ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৪: ০৯
ফিলিস্তিনিদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে নিউ ইয়র্ক টাইমস, গোপন নথি ফাঁস 

প্রখ্যাত মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস তার কর্মীদের ফিলিস্তিন বা গাজাসংক্রান্ত খবরগুলোতে ‘গণহত্যা’, ‘জাতিগত নিধন’, ‘অধিকৃত ভূখণ্ড’ ও ‘শরণার্থীশিবিরের’ মতো শব্দগুলো লিখতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অনুসন্ধানী সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্টারসেপ্টের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। 

ইন্টারসেপ্টের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, নিউ ইয়র্ক টাইমসের গোপন সম্পাদকীয় নীতি জারি করা হয় গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরুর পরপরই। সেখানে নির্দেশনা দেওয়া হয় গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিষয়ে প্রতিবেদন কীভাবে করতে হবে। দ্য ইন্টারসেপ্টের এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর নিউ ইয়র্ক টাইমসের সাংবাদিকতা নীতি ও জনমত গঠনে তাদের অবস্থান নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

নিউ ইয়র্ক টাইমস আনুষ্ঠানিকভাবে এই সম্পাদকীয় নীতি গ্রহণ করেনি। তবে সংবাদমাধ্যমটির স্ট্যান্ডার্ড এডিটর সুসান ওয়েসলিং, আন্তর্জাতিক সম্পাদক ফিলিপ প্যান ও তাঁদের সহযোগীরা যৌথভাবে এক মেমোতে অধস্তন সাংবাদিকদের এই নির্দেশনা দেন। ২০২৩ সালের নভেম্বরে প্রথমবারের মতো এই নির্দেশনা দেওয়া হয় বলে উঠে এসেছে গতকাল সোমবার প্রকাশিত ইন্টারসেপ্টের প্রতিবেদনে। 

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘গণহত্যা’, ‘জাতিগত নিধন’, ‘অধিকৃত ভূখণ্ড’ ও ‘শরণার্থীশিবিরের’ মতো শব্দগুলো গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনসংক্রান্ত সংবাদে এড়িয়ে যেতে হবে। প্রসঙ্গত, অবরুদ্ধ গাজায় খোদ জাতিসংঘ পরিচালিত আটটি শরণার্থীশিবির আছে। 

নিউ ইয়র্ক টাইমসের সেই মেমোতে উল্লিখিত শব্দগুলো ব্যবহার না করে পরামর্শ দিয়ে বলা হয়েছে, ‘আমরা কি বলতে পারি যে কেন আমরা কিছু শব্দকে একটি নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে প্রয়োগ করছি এবং কিছু শব্দকে করছি না? বরাবরের মতো আমাদের স্পষ্টতা ও নির্ভুলতার ওপর ফোকাস করা উচিত। কোনো ঘটনার ওপর নির্দিষ্ট “লেবেল” ব্যবহারের পরিবর্তে কী ঘটনা ঘটেছে, তা স্পষ্টভাবে তুলে ধরুন।’ 

দ্য ইন্টারসেপ্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই মেমোতে সাংবাদিকদের ফিলিস্তিনিদের নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে ‘যোদ্ধা’ বলে আখ্যায়িত না করে তার পরিবর্তে ‘সন্ত্রাসী’ বলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ইন্টারসেপ্টের বিশ্লেষণ বলছে, নিউ ইয়র্ক টাইমসের এই পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ চলমান যুদ্ধে ইসরায়েলের দৃষ্টিভঙ্গিকেই সমর্থন করছে।

ওই মেমোতে ফিলিস্তিনসংক্রান্ত খবরে নিয়মিতভাবে ‘ফিলিস্তিন’ শব্দটি ব্যবহারেও নিরুৎসাহিত করা হয়। কেবল বিভিন্ন ঐতিহাসিক বিবরণ, উল্লেখযোগ্য কোনো রাজনৈতিক ঘটনা এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় স্বীকৃত বিভিন্ন ঘটনার সময় সীমিত আকারে ‘ফিলিস্তিন’ শব্দটি ব্যবহার করতে পরামর্শ দেওয়া হয়। 

এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ইন্টারসেপ্ট ৭ অক্টোবর থেকে ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত গাজা ও ইসরায়েলে যা যা ঘটেছে, সে বিষয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমস, ওয়াশিংটন পোস্ট, লস অ্যাঞ্জেলস টাইমসের সংবাদ আধেয় বিশ্লেষণ করেছে। সেখানে দেখা গেছে, ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলে যা করেছে, তার বর্ণনা দিতে এসব সংবাদমাধ্যম প্রায়শই ‘নির্মম হত্যা’, ‘হত্যাকাণ্ড’ ও ‘নৃশংস’ শব্দগুলো ব্যবহার করেছে। 

বিপরীতে ইসরায়েল গাজায় যা করেছে, তার বর্ণনায় এসব শব্দ কখনোই ব্যবহার হয়নি বললেই চলে। ইন্টারসেপ্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৭ অক্টোবর থেকে ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত ইসরায়েলে ফিলিস্তিনিদের হামলা বোঝাতে অন্তত ৫৩ বার ‘হত্যাকাণ্ড’ শব্দটি ব্যবহার করেছে, কিন্তু ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি হামলা বর্ণনা করতে এই শব্দ মাত্র একবার ব্যবহৃত হয়েছে। 

একই সঙ্গে ইসরায়েলে ফিলিস্তিনিদের দ্বারা ‘নির্মম হত্যা’ সংঘটিত হয়েছে বলে বারবার উল্লেখ করেছে নিউ ইয়র্ক টাইমস, যা ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি আগ্রাসন বোঝানোর ক্ষেত্রে আসেনি বললেই চলে। এই দুইয়ের মধ্যে তুলনা করলে ইসরায়েলে ফিলিস্তিনি নির্মমতা বোঝাতে সংবাদমাধ্যমটি ‘নির্মম হত্যা’ অন্তত ২২ গুণ বেশি বার ব্যবহার করেছে। 

নিউ ইয়র্ক টাইমসের ফাঁস হওয়া ওই মেমোতে বলা হয়েছে, ‘অক্টোবরের হামলার বর্ণনায় সন্ত্রাস ও সন্ত্রাসী শব্দদ্বয় ব্যবহার উপযুক্ত।’ কিন্তু ইসরায়েল বারবার গাজায় বেসামরিক লোকদের হত্যা, বেসামরিক স্থাপনায় হামলা চালালেও সেটিকে ‘সন্ত্রাসবাদ’ বলা হয়নি। এমনকি ওই মেমোতে ‘সম্ভব হলে গাজা, পশ্চিম তীরসহ বিভিন্ন নির্দিষ্ট স্থান নির্দেশক শব্দ’ ব্যবহারেও নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিউ ইয়র্ক টাইমসের একটি সূত্রের বরাত দিয়ে দ্য ইন্টারসেপ্ট বলেছে, ‘অধিকৃত অঞ্চল শব্দটি এড়িয়ে যাওয়া মূলত ইসরায়েলের সরকারি বর্ণনার সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং তা সংঘাতের প্রকৃত প্রকৃতিকে অস্পষ্ট করে।’ 

ওই সূত্র আরও বলেছে, ‘এর মাধ্যমে আপনি মূলত (ইসরায়েলি) দখলকে সংবাদ কভারেজের বাইরে ঠেলে দিচ্ছেন এবং সেটাই সংঘর্ষের আসল কারণ।’ তিনি বলেন, ‘বিষয়টি (নিউ ইয়র্ক টাইমস কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে) এ রকম যে, আসুন আমরা দখলকে দখল না বলি। কারণ, এটি দেখে মনে হতে পারে যে আমরা (নিউ ইয়র্ক টাইমস) একটি সন্ত্রাসী হামলাকে ন্যায্যতা দিচ্ছি।’ 

দ্য ইন্টারসেপ্ট থেকে সংক্ষেপিত। অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মাদ্রাসাছাত্রীকে তুলে রেস্তোরাঁয় নিয়ে ধর্ষণ, আড়াল করতে সাউন্ডবক্সে চলে গান

পর্নো সাইটে বাংলাদেশি যুগলের ১১২ ভিডিও, র‍্যাঙ্কিংয়ে অষ্টম: সিআইডি

৯ সচিবকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠাল সরকার

সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান

জুবায়েদ হত্যায় ‎সন্দেহভাজন ছেলেকে যে কারণে থানায় দেন মা, জানালেন স্বজনেরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তেলাপোকা মারতে গিয়ে অ্যাপার্টমেন্ট জ্বালিয়ে দিল তরুণী, প্রতিবেশীর মৃত্যু

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

দক্ষিণ কোরিয়ার এক তরুণী তেলাপোকা মারতে গিয়ে নিজের অ্যাপার্টমেন্টেই আগুন লাগিয়ে ফেলেছেন। ভয়ংকর এই আগুনে প্রাণ গেছে তাঁরই এক প্রতিবেশীর। ঘটনাটি ঘটেছে দেশটির উত্তরাঞ্চলের ওসান শহরে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, ওই তরুণী গত সোমবার বিকেলে লাইটার আর দাহ্য স্প্রে একসঙ্গে ব্যবহার করে তেলাপোকা পোড়ানোর চেষ্টা করছিলেন। অর্থাৎ, তিনি নিজের ঘরেই বানিয়েছিলেন একধরনের অস্থায়ী ফ্লেমথ্রোয়ার। আগেও নাকি এমনভাবে তেলাপোকা মারার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। কিন্তু এবার ভাগ্য সহায় হয়নি। মুহূর্তের মধ্যে আগুন ধরে যায় তাঁর ঘরের আসবাবে, তারপর তা ছড়িয়ে পড়ে পুরো অ্যাপার্টমেন্টে।

দমকল বিভাগ খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। তবে ততক্ষণে আগুনের ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে পুরো ভবনে। আতঙ্কে বাসিন্দারা ছুটোছুটি শুরু করে দেন। ভবনের পঞ্চম তলায় থাকা এক চীনা দম্পতি প্রথমে জানালা খুলে সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে থাকেন। তাঁরা তাদের দুই মাস বয়সী শিশুটিকে পাশের ভবনের এক প্রতিবেশীর হাতে জানালা দিয়ে তুলে দিতে সক্ষম হন। এরপর নিজেরাও পালানোর চেষ্টা করেন।

স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, ধোঁয়ায় ভরে যাওয়ায় সিঁড়ি দিয়ে নামার পথ বন্ধ হয়ে যায়। তাই তারা জানালা দিয়েই পাশের ভবনে যাওয়ার চেষ্টা করেন। স্বামীটি কোনোভাবে পাশের ভবনের দেয়াল ধরে উঠতে সক্ষম হলেও তাঁর স্ত্রী হাত ফসকে নিচে পড়ে যান। দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলেও কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মারা যান ওই নারী।

মারা যাওয়া ওই নারী ছিলেন ৩০ বছর বয়সী চীনা নাগরিক। তিনি স্বামী ও নবজাতক শিশুসহ ওসান শহরের ওই ভবনে বসবাস করতেন। ওসান পুলিশ জানিয়েছে, আগুন লাগানোর ঘটনায় ২০ বছরের বেশি বয়সী ওই তরুণীর বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। তাঁর বিরুদ্ধে অসাবধানতাবশত আগুন লাগানো এবং তাতে মৃত্যুর কারণ হওয়ার অভিযোগ আনা হতে পারে।

আগুন লাগার পর ভবনের নিচতলায় থাকা দোকানগুলোতেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। নিচতলায় বেশ কয়েকটি বাণিজ্যিক দোকান এবং ওপরের তলাগুলোতে ৩২টি ফ্ল্যাট রয়েছে। দমকলের সাতটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রায় এক ঘণ্টা সময় নেয়। ততক্ষণে ভবনের ভেতরের অন্তত আটজন বাসিন্দা ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হন।

পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, তরুণীটি লাইটার ও স্প্রে একসঙ্গে ব্যবহার করে তেলাপোকা মারার চেষ্টায়ই এই আগুনের সূত্রপাত ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে লাইটার, স্প্রে এবং দাহ্য পদার্থের বেশ কিছু অবশিষ্ট অংশ উদ্ধার করা হয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘ফ্লেমথ্রোয়ার’ বা আগুন নিক্ষেপ যন্ত্র দিয়ে তেলাপোকা মারার ভিডিও ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। অনেকেই এই ভিডিও দেখে একইভাবে পোকামাকড় মারার চেষ্টা করছেন। অথচ এই কায়দায় একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে।

এর আগে, ২০১৮ সালে অস্ট্রেলিয়াতেও এক ব্যক্তি কীটনাশক স্প্রে ও আগুনের মিশ্রণে বানানো ফ্লেমথ্রোয়ার দিয়ে তেলাপোকা মারতে গিয়ে নিজের রান্নাঘর জ্বালিয়ে ফেলেছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মাদ্রাসাছাত্রীকে তুলে রেস্তোরাঁয় নিয়ে ধর্ষণ, আড়াল করতে সাউন্ডবক্সে চলে গান

পর্নো সাইটে বাংলাদেশি যুগলের ১১২ ভিডিও, র‍্যাঙ্কিংয়ে অষ্টম: সিআইডি

৯ সচিবকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠাল সরকার

সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান

জুবায়েদ হত্যায় ‎সন্দেহভাজন ছেলেকে যে কারণে থানায় দেন মা, জানালেন স্বজনেরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ইসরায়েল থেকে ফেরত আসা ১৩৫ ফিলিস্তিনির মরদেহে অঙ্গচ্ছেদ-নির্যাতনের চিহ্ন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ অক্টোবর ২০২৫, ০৯: ৫৮
সরায়েলের কারাগারগুলোতে এমন অমানবিক অবস্থায় বিনা বিচারে বছরের পর বছর বন্দী করে রাখা হয় ফিলিস্তিনিদের। ছবি: সংগৃহীত
সরায়েলের কারাগারগুলোতে এমন অমানবিক অবস্থায় বিনা বিচারে বছরের পর বছর বন্দী করে রাখা হয় ফিলিস্তিনিদের। ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েল থেকে ফেরত আসা অন্তত ১৩৫ ফিলিস্তিনির মরদেহে ভয়াবহ নির্যাতনের চিহ্ন পাওয়া গেছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মরদেহগুলো ইসরায়েলের একটি কুখ্যাত আটককেন্দ্র ‘স্‌দে তেইমান’-এ রাখা হয়েছিল। যেখানে আগে থেকেই বন্দীদের ওপর নির্যাতন ও মৃত্যুর অভিযোগ রয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মুনির আল-বুরশ জানান, প্রতিটি মরদেহের ব্যাগে থাকা নথিতে লেখা আছে যে এগুলো স্‌দে তেইমান ঘাঁটি থেকেই এসেছে। ওই ট্যাগগুলো হিব্রু ভাষায় লেখা এবং কিছু মরদেহের ডিএনএ পরীক্ষা সেখানেই করা হয়েছিল।

নেগেভ মরুভূমিতে অবস্থিত স্‌দে তেইমান আটককেন্দ্রের বিরুদ্ধে গত বছরও নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, ফিলিস্তিনি বন্দীদের খাঁচায় আটকে রাখা, চোখ বেঁধে হাত-পা শৃঙ্খলিত করে রাখা ও হাসপাতালের খাটে বেঁধে রাখার মতো অমানবিক আচরণ করা হতো।

চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ফেরত পাওয়া মরদেহগুলো পরীক্ষা করে দেখা গেছে, অনেকের চোখ বাঁধা, হাত পেছনে বাঁধা এবং শরীরে গুলির দাগ রয়েছে। কিছু মরদেহে ট্যাংকের চাকায় পিষ্ট হওয়ার চিহ্নও পাওয়া গেছে। তারা বলছেন, এসব প্রমাণে স্পষ্ট যে ইসরায়েল বন্দীদের ওপর হত্যা ও নির্যাতন চালিয়েছে।

নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সের পরিচালক আইয়াদ বারহুম বলেন, ‘মরদেহগুলোর নাম নেই, শুধু কোড নম্বর দেওয়া আছে। শনাক্তকরণের কাজ চলছে।’

মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, তদন্তের মাধ্যমে বের করতে হবে মরদেহগুলোর কেউ আটক অবস্থায় নিহত হয়েছে কি না এবং হলে কতজন।

উত্তর গাজার বাসিন্দা মাহমুদ ইসমাইল শাবাতের মরদেহেও নির্যাতনের স্পষ্ট চিহ্ন পাওয়া গেছে। তাঁর ভাই রামি জানান, মাথার পুরোনো অস্ত্রোপচারের দাগ দেখে ভাইয়ের মরদেহ শনাক্ত করেন তিনি। রামি বলেন, ‘তাঁর হাত বাঁধা ছিল, শরীরে নির্যাতনের দাগ ছিল। এটা দেখা খুব কষ্টের।’

মাহমুদের মা বলেন, ‘বিশ্ব কোথায়? আমাদের সন্তানদের সবাইকে নির্যাতিত অবস্থায় ফিরিয়ে দিয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মাদ্রাসাছাত্রীকে তুলে রেস্তোরাঁয় নিয়ে ধর্ষণ, আড়াল করতে সাউন্ডবক্সে চলে গান

পর্নো সাইটে বাংলাদেশি যুগলের ১১২ ভিডিও, র‍্যাঙ্কিংয়ে অষ্টম: সিআইডি

৯ সচিবকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠাল সরকার

সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান

জুবায়েদ হত্যায় ‎সন্দেহভাজন ছেলেকে যে কারণে থানায় দেন মা, জানালেন স্বজনেরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গাজায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে এক দিনে ১৫৩ টন বোমা ফেলেছে ইসরায়েল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ অক্টোবর ২০২৫, ০৯: ৩৩
গাজায় ইসরায়েলের হামলা। ছবি: আনাদোলু
গাজায় ইসরায়েলের হামলা। ছবি: আনাদোলু

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গতকাল সোমবার গর্ব করে জানিয়েছেন, তাঁর দেশের সেনাবাহিনী গত রোববার গাজা উপত্যকায় ১৫৩ টন বোমা বর্ষণ করেছে, যা কার্যত যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের স্বীকারোক্তি। তুরস্কের রাষ্ট্র পরিচালিত সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।

ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেটের শীতকালীন অধিবেশনের উদ্বোধনী ভাষণে নেতানিয়াহু এই কথা বলেন। এ সময় তিনি একাধিকবার বিরোধী এমপিদের বাধার মুখে পড়েন। তাঁরা সরকারের নীতি ও গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করার পরিকল্পনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান।

নেতানিয়াহু বলেন, ‘যুদ্ধবিরতির সময় আমাদের দুই সৈনিক শহীদ হয়েছে…আমরা তাদের ওপর ১৫৩ টন বোমা বর্ষণ করেছি এবং গাজা উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে ডজনখানেক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছি।’

গাজার সরকারি জনসংযোগ কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি ১০ অক্টোবর কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েল ৮০ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে। এতে ৯৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যার মধ্যে শুধু রোববারই প্রাণ হারিয়েছে ৪৪ জন। আহত হয়েছে আরও ২৩৬ জন।

তেল আবিব দাবি করেছে, ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ শহরে ইসরায়েলি বাহিনীর ওপর হামলা চালিয়েছে। তবে হামাস এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে চলার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।

১০ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপস্থাপিত এক ধাপে ধাপে বাস্তবায়নযোগ্য পরিকল্পনার ভিত্তিতে এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি ঘোষণা করা হয়। এর প্রথম ধাপে ইসরায়েলি বন্দীদের মুক্তির বিনিময়ে ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি অন্তর্ভুক্ত ছিল।

পরিকল্পনায় গাজা পুনর্গঠন এবং হামাসবিহীন একটি নতুন শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার কথাও বলা হয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলের গণহত্যামূলক আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ৬৮ হাজার ২০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার ২০০ জন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মাদ্রাসাছাত্রীকে তুলে রেস্তোরাঁয় নিয়ে ধর্ষণ, আড়াল করতে সাউন্ডবক্সে চলে গান

পর্নো সাইটে বাংলাদেশি যুগলের ১১২ ভিডিও, র‍্যাঙ্কিংয়ে অষ্টম: সিআইডি

৯ সচিবকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠাল সরকার

সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান

জুবায়েদ হত্যায় ‎সন্দেহভাজন ছেলেকে যে কারণে থানায় দেন মা, জানালেন স্বজনেরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দীপাবলিতে ভারতীয়দের শুভেচ্ছা জানিয়ে বাংলাদেশি হাইকমিশনের ভিডিও প্রকাশ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ভিডিও থেকে নেওয়া
ভিডিও থেকে নেওয়া

কালীপূজা ও দীপাবলি উপলক্ষে ভারতীয়দের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম রিয়াজ হামিদুল্লাহ। গতকাল রোববার (১৯ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি অ্যানিমেশন ভিডিও শেয়ার করে এ শুভেচ্ছা জানান।

ভিডিওটি শেয়ার করে রিয়াজ হামিদুল্লাহ লেখেন, ‘আমি এটি শেয়ার করছি কারণ এটি বাংলাদেশে দীর্ঘদিনের লালিত মূল্যবোধের পাশাপাশি সংস্কৃতিগত বহুত্ববাদ ও সহনশীলতার প্রতিফলন ঘটায়। একই সঙ্গে এটি বাংলাদেশ ও ভারতের জনগণের মধ্যে সাংস্কৃতিক বন্ধনকেও তুলে ধরে।’

প্রকাশিত অ্যানিমেশন ভিডিওটিতে দেখা যায় ভাইফোঁটা, কালীপূজা ও দীপাবলির প্রতীক হিসেবে প্রদীপ জ্বালানোর দৃশ্য।

ভিডিওটির সঙ্গে সংযুক্ত লেখায় বলা হয়েছে, ‘বাংলা কার্তিক মাসের অমাবস্যার রাতে বাংলাদেশজুড়ে হাজারো প্রদীপ জ্বলে ওঠে—যেন দেবী কালী মুণ্ডমালিনীর ত্রিনয়নের অগ্নিতেজে অন্ধকার ভেদ করে অসংখ্য তারা জেগে উঠছে। মায়ের আহ্বানের মন্ত্রধ্বনিতে নদীমাতৃক এই ভূখণ্ডে মেয়েরা ভাইদের কপালে শুভচিহ্ন এঁকে দেয়। ভারতের, বাংলাদেশের ও বিশ্বের প্রত্যেক হিন্দু ভাই-বোনকে জানাই শুভ দীপাবলি, কালীপূজা ও ভাইফোঁটার শুভেচ্ছা।’

ভিডিওতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ক্ষমতাসীন বিজেপি, বিরোধী কংগ্রেসসহ কয়েকটি ভারতীয় গণমাধ্যমকে ট্যাগ করা হয়েছে।

তথ্যসূত্র: দ্য প্রিন্ট

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মাদ্রাসাছাত্রীকে তুলে রেস্তোরাঁয় নিয়ে ধর্ষণ, আড়াল করতে সাউন্ডবক্সে চলে গান

পর্নো সাইটে বাংলাদেশি যুগলের ১১২ ভিডিও, র‍্যাঙ্কিংয়ে অষ্টম: সিআইডি

৯ সচিবকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠাল সরকার

সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান

জুবায়েদ হত্যায় ‎সন্দেহভাজন ছেলেকে যে কারণে থানায় দেন মা, জানালেন স্বজনেরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত