Ajker Patrika

সমুদ্রপথে নিঃসঙ্গ বিশ্বভ্রমণে রেকর্ড গড়লেন মার্কিন নারী

আপডেট : ০৭ মার্চ ২০২৪, ২০: ৫৮
সমুদ্রপথে নিঃসঙ্গ বিশ্বভ্রমণে রেকর্ড গড়লেন মার্কিন নারী

শেষ পর্যন্ত ইতিহাসই গড়লেন মার্কিন অভিযাত্রী কোল ব্রোনার। আজ বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ডের ২৯ বছর বয়সী এই নারী একটি ইনস্টাগ্রাম পোস্ট দিয়ে সফল অভিযান সমাপ্তির ঘোষণা দিয়েছেন। এই অভিযানের মধ্য দিয়ে এখন নিঃসঙ্গ অবস্থায় পৃথিবীকে চক্কর দেওয়া তিনিই আমেরিকার প্রথম নারী। 

ইনস্টাগ্রাম পোস্টে সফল অভিযানের খবর দিতে গিয়ে ‘ফিনিশ লাইন’ স্পেনের জলসীমায় পৌঁছে উদ্‌যাপনের একটি ছবিও পোস্ট করেছেন কোল। ছবির ক্যাপশনে লিখেছে, ‘দারুণ সমাপ্তি! সবাইকে ধন্যবাদ যারা একত্রিত হয়ে এই প্রক্রিয়াটিকে সম্ভব করেছেন।’ 

পরবর্তীকালে ‘র‍্যাগেটা রেসকিউ’ নামে একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টের স্টোরিতে কোল একটি শ্যাম্পেন বোতলের মুখ খুলছেন—এমন ছবি দিয়ে ক্যাপশনে লিখেছে, ‘সে ফিরে এসেছে!’ 

অভিযাত্রী কোল ব্রোনারের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে তাঁর মিডিয়া ম্যানেজার লিডিয়া মুলান আরেকটি পোস্ট দিয়ে লিখেছেন, ‘কোল আবারও স্থলে ফিরেছেন। চার মাস ধরে আমাদের সঙ্গে থেকে এই অভিযানের এমন দারুণ সমর্থক হওয়ার জন্য আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ। আমরা আপনাকে ভালোবাসি।’ 

চার মাসেরও বেশি সময় আগে একটি বৈশ্বিক সলো চ্যালেঞ্জে অংশ নেওয়া ১৬ জন অভিযাত্রীর মধ্যে সবচেয়ে কম বয়সী ও একমাত্র নারী ছিলেন কোল। মাত্র ৫ ফুট ২ ইঞ্চি উচ্চতা ও ৪৬ কেজি ওজন নিয়ে তিনি সবার চেয়ে ক্ষুদ্রাকৃতিরও ছিলেন। 

২০২৩ সালের ২৯ অক্টোবর স্পেনের করোনা উপকূল থেকে একটি ফার্স্ট লাইট মডেলের ছোট্ট নৌকা নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন কোল ব্রোনার। পরে তিনি ভারত মহাসাগরে পৌঁছানোর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার কেপ অব গুড হোপ ঘুরে পশ্চিম আফ্রিকার উপকূল ধরে এগিয়ে চলেন। এভাবে তিনি প্রশান্ত মহাসাগর পেরিয়ে অস্ট্রেলিয়ার কেপ লিউউইন হয়ে দক্ষিণ আমেরিকার দিকে যাত্রা করেছিলেন। মাত্র চার মাসের মধ্যে ২৭ হাজার মাইল পাড়ি দিয়েছেন কোল। 

বিশাল আকৃতির ঢেউয়ের মধ্যে ভয়ানক ড্রেক প্যাসেজ হিসেবে পরিচিত প্রশান্ত এবং আটলান্টিক মহাসাগরের মিলনস্থলে প্রাণে বেঁচে গত ২৬ জানুয়ারি চিলির ক্যাপ হর্নে পৌঁছান কোল। ভয়ানক এই পথটির একপাশে দক্ষিণ আমেরিকা ও অন্যপাশে অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশ। এই পথ পাড়ি দেওয়ার মুহূর্তটিকে কোলের ক্যারিয়ারের সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ বা ‘এভারেস্ট চূড়া’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। 

ভয়ানক ড্রেক প্যাসেজ পাড়ি দেওয়ার পর যাত্রাপথে থাকা অবস্থায়ই গত মাসে দ্য পিপলকে একটি সাক্ষাৎকার দেন কোল ব্রোনার। তিনি জানান, ভারত মহাসাগরের ১৫ ফুট উঁচু ঢেউ তাঁর ৪০ ফুটের নৌকাটির ওপর অসংখ্যবার আছড়ে পড়েছিল এবং নৌকাটির স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এ অবস্থায় পা ব্যবহার করে নড়বড়ে হয়ে যাওয়া টিলার মেশিনটি চালানো ছাড়াও অনেক কষ্টসাধ্য উপায়ে দুটি পাল পরিচালনা করতেও বাধ্য হয়েছেন তিনি। 

কোল পারতপক্ষে পাল দুটির পরিচালনা এড়াতে চাইছিলেন। কারণ, ছোটখাটো শরীর নিয়ে তিনি এগুলোর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারছিলেন না। সেই সময়টিতে নিজের নৌকাটিকে হাইওয়েতে অ্যাক্সিলারেটর বা ব্রেক ছাড়া গাড়ির সঙ্গে তুলনা করেছেন কোল। তিনি বলেন, ‘আমি অবাধে ঢেউয়ের নিচে পড়ে যাচ্ছিলাম। এত দ্রুত যাচ্ছিলাম যে ঢেউয়ের চূড়ায় উঠে যাচ্ছিলাম, তারপর অবাধে নিচে পড়ছিলাম।’ 

ঘটনাটি আরও চ্যালেঞ্জিং হয়ে ওঠে যখন কোলের পাঁজর ফেটে যায়। এই ব্যথা দূর করতে তাঁর অন্তত দুই দিন সময় লেগেছিল। কোল মনে করেন, নিঃসঙ্গ সমুদ্রযাত্রায় হাল ছেড়ে দেওয়ার কোনো উপায় নেই। তিনি বলেন, ‘আপনি সাগরের মাঝখানে আছেন মানে কোনো ছাড় নেই। কেউ এসে আপনাকে বাঁচাতে পারবে না। নিজের সমস্যা নিজেকেই সামলাতে হবে। সামনে এগিয়ে যেতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইতিহাস দরজায় কড়া নেড়ে বলছে, ১৯৭১ থেকে পাকিস্তান কি শেখেনি কিছুই

‘আমাদের মরদেহ বাড়িতে নিয়ো না’

কৃষি ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের খামারবাড়ি অবরোধের ঘোষণা

মারধর করে ছাত্রলীগ কর্মীর পিঠে পাড়া দিয়ে অটোরিকশায় শহর ঘোরাল ছাত্রদল, সঙ্গে উচ্চ স্বরে গান

যশোরে আত্মগোপনে থাকা আ.লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বাড়িতে পুলিশের অভিযান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত