Ajker Patrika

আমাজন গোষ্ঠীর পর্নো আসক্তি নিয়ে রিপোর্ট করে মামলা খেল নিউইয়র্ক টাইমস

অনলাইন ডেস্ক
স্টারলিংক ইন্টারনেট সেবা ব্যবহার করছেন আমাজনের প্রত্যন্ত মারুবো সম্প্রদায়ের এক নারী। ছবি: সিয়াটল টাইমস
স্টারলিংক ইন্টারনেট সেবা ব্যবহার করছেন আমাজনের প্রত্যন্ত মারুবো সম্প্রদায়ের এক নারী। ছবি: সিয়াটল টাইমস

আমাজনের একটি আদিবাসী গোষ্ঠী মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস-এর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছে। সম্প্রদায়টির অভিযোগ, হাই-স্পিড ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ পাওয়ার পর নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে তাদের সমাজকে ‘পর্নোগ্রাফি আসক্ত’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

মানহানির মামলায় বলা হয়েছে—মার্কিন এই সংবাদপত্রটি মারুবো গোষ্ঠীকে এমনভাবে উপস্থাপন করেছে, যেন তারা ইন্টারনেট ব্যবহারের প্রাথমিক সুযোগই নিতে অক্ষম এবং তরুণ প্রজন্ম পর্নোগ্রাফিতে ডুবে গেছে।

মামলাটিতে মার্কিন অপর দুটি মাধ্যম টিএমজেড ও ইয়াহু নিউজকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে। এই দুটি মাধ্যমের বিরুদ্ধ অভিযোগ, তাদের প্রকাশিত সংবাদের ভাষা মারুবো তরুণদের উপহাস করে এবং তাদের সংস্কৃতিকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে।

এদিকে নিউইয়র্ক টাইমস দাবি করেছে, তাদের প্রতিবেদনে কোথাও বলা হয়নি যে, মারুবো সম্প্রদায়ের কেউ পর্নে আসক্ত। আর টিএমজেড ও ইয়াহু নিউজের কাছ থেকে অভিযোগের বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

শুক্রবার বিবিসি জানিয়েছে, প্রায় ২ হাজার সদস্যবিশিষ্ট মারুবো আদিবাসী গোষ্ঠী কমপক্ষে ১৮ কোটি মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা) ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে।

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছিল—ইলন মাস্কের ইন্টারনেট সেবা ‘স্টারলিংক’ চালু হওয়ার মাত্র ৯ মাসের মধ্যেই মারুবো গোষ্ঠী ‘আমেরিকান পরিবারগুলোর দীর্ঘদিনের সমস্যার’ মুখোমুখি হয়েছে। বিশেষ করে, মোবাইল ফোনে আসক্ত কিশোর-কিশোরী, সহিংস ভিডিও গেমস এবং নাবালকদের পর্নোগ্রাফি দেখার মতো সমস্যাগুলো।

প্রতিবেদনটিতে ওই সম্প্রদায়ের এক নেতার উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছিল, তিনি ইন্টারনেটের প্রবল সমালোচক এবং পর্নোগ্রাফির বিষয়টি তাঁকে সবচেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন করেছে। তরুণদের মধ্যে আগ্রাসী যৌন আচরণের ঘটনা বাড়ছে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।

তবে একই প্রতিবেদনে ইন্টারনেটের ইতিবাচক দিকও তুলে ধরা হয়, যেমন—স্বাস্থ্য সমস্যা বা পরিবেশগত ধ্বংসের ক্ষেত্রে দ্রুত প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ এবং দূরবর্তী আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন সম্ভব হচ্ছে।

মামলায় অভিযোগ, টিএমজেড সহ অন্যান্য সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনকে অতিরঞ্জিতভাবে উপস্থাপন করেছে। টিএমজেড একটি প্রতিবেদনের শিরোনামে সরাসরি পর্নোগ্রাফি আসক্তির কথা উল্লেখ করেছে।

প্রতিক্রিয়ার মুখে মূল প্রতিবেদনটি প্রকাশের এক সপ্তাহ পর নিউইয়র্ক টাইমস অবশ্য এই বিষয়ে আরও একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। সেই প্রতিবেদনটির তারা শিরোনাম করে—‘না, প্রত্যন্ত আমাজন গোষ্ঠীটি পর্নে আসক্ত হয়নি।’

তবু মামলায় দাবি করা হয়েছে, মূল প্রতিবেদনেই মারুবো গোষ্ঠীকে এমনভাবে চিত্রিত করা হয়েছে যেন তারা ইন্টারনেটের প্রাথমিক ব্যবহার সামাল দিতে অক্ষম এবং তাদের তরুণেরা পর্নে নিমজ্জিত।

মামলায় বাদী হিসেবে যারা নাম উল্লেখ করেছেন, তাঁরা হলেন—মারুবো সমাজের নেতা এনোক মারুবো এবং ব্রাজিলিয়ান মানবাধিকারকর্মী ফ্লোরা ডুত্রা। মূলত ফ্লোরা ডুত্রাই ১৫ হাজার ডলার মূল্যের ২০টি স্টারলিংক অ্যানটেনা বিতরণে সহায়তা করেছিলেন।

এনোক মারুবো ও ফ্লোরা ডুত্রার ভাষ্য অনুযায়ী, নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন বিশ্বজুড়ে মিডিয়া ঝড়ের জন্ম দেয়। এর ফলে তাঁরা অপমান, হয়রানির শিকার হয়েছেন এবং তাঁদের সম্মান ও নিরাপত্তা অপূরণীয় ক্ষতির মুখে পড়েছে।

টিএমজেড-এর প্রতিবেদনটিতে এনোক মারুবো ও ফ্লোরা ডুত্রাকে স্টারলিংক অ্যানটেনা বিতরণ করতেও দেখা গেছে। বাদীরা মনে করছেন, এর মাধ্যমে এমন একটি বার্তা দেওয়া হয়, যেন তাঁরাই ওই সম্প্রদায়ে অশ্লীল কনটেন্ট সরবরাহ করেছেন এবং সমাজ ও নৈতিকতার অবক্ষয় ঘটিয়েছেন।

নিউইয়র্ক টাইমসের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘ওই প্রতিবেদনটি গভীরভাবে সংবেদনশীল এবং একটি গর্বিত ঐতিহ্য ও সংরক্ষিত সংস্কৃতি সম্পন্ন দূরবর্তী আদিবাসী গ্রামের প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের সুফল ও জটিলতা তুলে ধরেছে। আমরা এই মামলার বিরুদ্ধে জোরালোভাবে অবস্থান নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চট্টগ্রামে নারীকে লাথি মেরে ফেলে দেওয়া ‘শিবিরের লোক’ আকাশ চৌধুরীকে ধরছে না পুলিশ

প্রফেসর আনোয়ারা আ.লীগের লোক হলে এত অপমান নিয়ে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়তে হত না: ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময়

বৈষম্যবিরোধীদের মিছিল থেকে জি এম কাদেরের বাড়ি ভাঙচুর, মোটরসাইকেলে আগুন

ফারুক কেন নিঃসঙ্গ হলেন

পরিচালক পদ বাতিল, বিসিবি সভাপতির পদ থেকে ফারুককে অপসারণ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত