Ajker Patrika

ফিলিস্তিন রাষ্ট্র হবে না, এই জায়গা আমাদের: নেতানিয়াহু

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০: ৩৩
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ছবি: এএফপি
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ছবি: এএফপি

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু অধিকৃত পশ্চিম তীরে নতুন করে ইহুদি বসতি সম্প্রসারণের পরিকল্পনা নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছেন। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ভবিষ্যতে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠন কার্যত অসম্ভব হয়ে যাবে। এমনকি নেতানিয়াহু প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েছেন, কোনো ‘ফিলিস্তিন রাষ্ট্র হবে না।’

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার নেতানিয়াহু এক চুক্তিতে সই করেন। এই চুক্তির মাধ্যমে পশ্চিম তীরকে কার্যত দুই ভাগে বিভক্ত করে নতুন ইহুদি বসতি গড়ে তোলা হবে। জেরুসালেমের পূর্বে অবস্থিত ইসরায়েলি বসতি মা’আলে আদুমিমে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমরা আমাদের অঙ্গীকার পূরণ করতে যাচ্ছি—ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র হবে না। এই জায়গা আমাদের। আমরা শহরের জনসংখ্যা দ্বিগুণ করতে যাচ্ছি।’

প্রায় ১২ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ভূখণ্ডে তৈরি হতে যাওয়া এই প্রকল্প ‘ইস্ট ওয়ান বা ই১’ নামে পরিচিত। এর আওতায় ৩ হাজার ৪০০টি নতুন বাড়ি নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে ইসরায়েল। এতে পশ্চিম তীরের বড় অংশ কার্যত দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেম থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে এবং আশপাশের হাজারো ইসরায়েলি বসতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাবে।

ফিলিস্তিনিদের কাছে পূর্ব জেরুজালেম বিশেষ গুরুত্ব বহন করে, কারণ এটিকে তাঁরা ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে দেখেন। ১৯৬৭ সালে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের সব ধরনের বসতিই আন্তর্জাতিক আইনে অবৈধ হিসেবে গণ্য হয়।

ইসরায়েল আল–জাজিরাকে পশ্চিম তীর ও নিজ দেশে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায়, সংস্থাটির সাংবাদিক হামদাহ সালহুত আম্মান থেকে জানান, এই সম্প্রসারণ বিতর্কিত। কারণ এটি পশ্চিম তীর থেকে পূর্ব জেরুজালেমকে বিচ্ছিন্ন করবে। ফলে ভবিষ্যতে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের সম্ভাবনা আরও ভেঙে পড়বে।

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র নাবিল আবু রুদেইনা বৃহস্পতিবার বলেছেন, পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রই হলো শান্তির মূল চাবিকাঠি। তিনি একে এবং দুই-রাষ্ট্র সমাধানকে ‘অনিবার্য’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। রুদেইনা ইসরায়েলি বসতিগুলোকে আন্তর্জাতিক আইনে অবৈধ বলে নিন্দা করেন এবং অভিযোগ করেন যে নেতানিয়াহু পুরো অঞ্চলকে ‘সহ্যের চূড়ান্ত সীমায় ঠেলে দিচ্ছেন।’

তিনি আরও জানান, জাতিসংঘের ১৪৯টি সদস্য দেশ ইতিমধ্যে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। আর যেসব দেশ এখনো স্বীকৃতি দেয়নি, তাদের অবিলম্বে তা দিতে আহ্বান জানান। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়, যেখানে ইসরায়েলকে পশ্চিম তীর থেকে সেনা প্রত্যাহার, নতুন বসতি নির্মাণ বন্ধ এবং দখল করা জমি থেকে সব বসতি উচ্ছেদের দাবি জানানো হয়। প্রস্তাবের পক্ষে শতাধিক দেশ ভোট দেয়, বিপক্ষে ভোট দেয় ১৪ দেশ।

এর আগে, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) এক পরামর্শমূলক মতামত দেয়, যেখানে বলা হয়, দখলকৃত এলাকায় ইসরায়েলের উপস্থিতি বেআইনি এবং দেশটি ‘অবিলম্বে সব ধরনের বসতি কার্যক্রম বন্ধ করে বসতি স্থাপনকারীদের সরিয়ে নিতে বাধ্য।’ তবে নেতানিয়াহু তখন এই মতামতকে ‘মিথ্যার সিদ্ধান্ত’ বলে আখ্যায়িত করেন।

সম্প্রতি যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও জাপানসহ ২১টি দেশ ইসরায়েলের নতুন বসতি পরিকল্পনার নিন্দা জানিয়েছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের খবরে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার জার্মানি জানিয়েছে তারা ফ্রান্সের নেতৃত্বে উত্থাপিত দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের প্রস্তাবকে সমর্থন করবে।

এ সপ্তাহে জাতিসংঘে ফ্রান্স ও সৌদি আরবের নেতৃত্বে গৃহীত হতে যাওয়া নিউইয়র্ক ঘোষণার পক্ষে বার্লিন ভোট দেবে। এতে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠন এবং শরণার্থীদের প্রত্যাবর্তনের অধিকার নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে।

এ মাসেই জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ অধিবেশনে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে বেলজিয়াম, ফ্রান্স ও মাল্টা। অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও যুক্তরাজ্য শর্তসাপেক্ষ স্বীকৃতির ঘোষণা দিয়েছে। তবে তাঁরা অধিবেশনে ফিলিস্তিনকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেবে কি না, তা এখনো পরিষ্কার নয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডাকসুতে শিবিরের জয়ে উদ্বেগ শশী থারুরের, জবাব দিলেন মেঘমল্লার

‘বেয়াদবি ছুটায় দেব’: সরি বলতে অসুবিধা নেই, বললেন সেই জামায়াত নেতা

শাহজালাল বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ টার্মিনালের সামনে কোমরপানি

ইসরায়েলের হামলার কী জবাব হবে—আরব-ইসলামিক সম্মেলন ডাকল কাতার

রাজাকারের বাচ্চারা মুক্তিযুদ্ধকে বিনাশ করতে পারবে না: ফজলুর

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত