Ajker Patrika

জ্বালানি না থাকায় সয়াবিন তেলে গাড়ি চলছে গাজায়

জ্বালানি না থাকায় সয়াবিন তেলে গাড়ি চলছে গাজায়

ইসরায়েলের টানা বোমাবর্ষণ এবং অবরোধের কারণে বেঁচে থাকার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে গাজার বাসিন্দারা। আজ বুধবার আমিরাত-ভিত্তিক দ্য ন্যাশনালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জ্বালানি না থাকায় যানবাহন চালানোর জন্য গাজা শহরের চালকেরা এখন রান্নার তেল ব্যবহার করছেন। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় জ্বালানি প্রবেশ করতে দিচ্ছে না ইসরায়েলি বাহিনী। এর ফলে গাড়ি চালানোর জন্য ‘ফালাফেল’ পদ্ধতি বেছে নিয়েছে গাজাবাসী। মূলত গাড়ি চালু করতে অল্প পেট্রলের সঙ্গে রান্নার করার সয়াবিন জাতীয় তেল মিশিয়ে যে মিশ্রণ তৈরি হয় সেই মিশ্রণকেই ‘ফালাফেল জ্বালানি’ বলে ডাকে গাজার বাসিন্দারা। 

গাড়ির ইঞ্জিন সাধারণত পেট্রল দিয়ে চালানো হয়। এ ক্ষেত্রে রান্নার তেল ব্যবহার করলে ইঞ্জিনের ক্ষতি হতে পারে। তবে গাজার গাড়ি চালকেরা দাবি করেছেন, ইঞ্জিনের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও তাদের কাছে অন্য কোনো বিকল্প নেই। 

 ৩৮ বছর বয়সী মোহাম্মদ বারাকা নামে গাজার খান ইউনিসের একজন ট্যাক্সি চালক বলেন, ‘আমার গাড়ি চালাতে হবে। আমি জানি এই তেল আমার গাড়ির ইঞ্জিনের ক্ষতি করবে এবং এর আয়ু কমিয়ে দেবে।’ 

তিনি বলেন, ‘গাজায় কোনো জ্বালানি নেই। কিন্তু গাড়ি আমাকে চালাতেই হবে। কারণ এটিই আমার আয়ের একমাত্র উৎস।’ 

বারাকা জানান, যে যেভাবে পারছে—বেঁচে থাকার চেষ্টা করছে গাজার মানুষ। যখন যে বাধা আসছে তা মোকাবিলা করার জন্য বিকল্প উপায়গুলো ব্যবহার করছে তারা। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিশর থেকে রাফাহ সীমান্ত দিয়ে বর্তমানে গাজায় কিছু ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করলেও খাদ্য, পানি এবং জ্বালানি সরবরাহ কম হচ্ছে। 

বর্তমানে এক লিটার রান্নার তেলের দাম ৮ ইসরায়েলি শেকেল; যা প্রায় ২ ডলারের সমান। এই তেলের প্রতি লিটারে বেশির ভাগ গাড়ি ১৩ কিলোমিটার পর্যন্ত চলতে পারে। উপরন্তু গাজার রাস্তাগুলো বর্তমানে গাড়ি চালানোর জন্য অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। কারণ বোমা হামলার ফলে রাস্তায় বড় বড় গর্ত ছাড়াও বিধ্বস্ত ভবনগুলোর ধ্বংসাবশেষ যেখানে সেখানে ছড়িয়ে আছে। 

খান ইউনিসের আরেক ট্যাক্সি চালক সামি আলবিত্তার জানান, কোনো পাম্পেই এখন আর পেট্রল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আর কোথাও এক লিটার পাওয়া গেলেও তা অনেক দামে বিক্রি হচ্ছে। এ অবস্থায় বেশি দাম দিয়েই তিনি এক লিটার পেট্রল কিনে তার সঙ্গে ১০ লিটার রান্নার তেল মিশিয়ে ফালাফেল জ্বালানি তৈরি করছেন। 

আলবিত্তাল আরও জানান, এর আগে ২০০৭ সালেও গাড়ি চালানোর জন্য তিনি রান্নার তেল ব্যবহার করেছিলেন। কারণ সেই বছরও ইসরায়েল গাজা অবরোধ করে জ্বালানি প্রবেশে বাধা দিয়েছিল। 

গাড়িতে রান্নার তেল ব্যবহারের আবার অন্য ঝুঁকিও আছে। গাজার চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এর ফলে উচ্চ মাত্রার বায়ু দূষণ হয়। 

খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালের চিকিৎসক মোহাম্মদ কান্দেল বলেন, ‘এখন বেশির ভাগ গাড়ি রান্নার তেলে চলছে। যা বায়ু দূষণকে আরও বাড়িয়ে পরিবেশ ও মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে শিশুদের শরীর এই ধরনের দূষণের সংস্পর্শে আসা উচিত নয়।’ 

গাজার বাসিন্দা ২৮ বছর বয়সী ওলা হাসান দ্য ন্যাশনালকে জানিয়েছেন, রান্নার তেল ব্যবহার করে গাড়ি চালালে যে গন্ধটি বাতাসে ভেসে বেড়ায় তা অনেক সময় শ্বাস বন্ধ করে দেওয়ার মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কুয়েটে ক্লাস বর্জন নিয়ে শিক্ষক সমিতিতে মতবিরোধ, এক শিক্ষকের পদত্যাগ

এনবিআর বিলুপ্তির জেরে প্রায় অচল দেশের রাজস্ব কর্মকাণ্ড

দুটি নোবেলের গৌরব বোধ করতে পারে চবি: প্রধান উপদেষ্টা

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের প্রশ্নে যে প্রতিক্রিয়া জানাল যুক্তরাষ্ট্র

২ ম্যাচ খেলেই মোস্তাফিজ কীভাবে ৬ কোটি রুপি পাবেন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত