Ajker Patrika

দামেস্ক অভিমুখে বিদ্রোহীদের অগ্রযাত্রা বাধা ছাড়াই চলতে থাক: এরদোয়ান

অনলাইন ডেস্ক    
Thumbnail image
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। ছবি: আনাদোলু

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান আশা প্রকাশ করেছেন, সিরিয়ার বিদ্রোহীরা দেশটির দক্ষিণাঞ্চল দখলের পর রাজধানী দামেস্ক অভিমুখে যে যাত্রা শুরু করেছে তা দুর্ঘটনা বা বিপর্যয় ছাড়াই চলতে থাকবে। গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই কথা বলেন।

লেবাননের সম্প্রচারমাধ্যম আল-মায়েদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এরদোয়ান সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সিরিয়া সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক ইস্যু নিয়ে বক্তব্য দেন এবং বিরোধী বাহিনীর দামেস্কের দিকে অগ্রসর হওয়া নির্বিঘ্নে অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

এরদোয়ান বলেন, ‘...ইদলিব, হামা, হোমস এবং অবশ্যই লক্ষ্য হলো দামেস্ক। বিরোধীদের মার্চ অব্যাহত রয়েছে। আমাদের ইচ্ছা, সিরিয়ায় এই অগ্রগতি কোনো দুর্ঘটনা বা বিপর্যয় ছাড়াই চলতে থাকবে।’ সিরিয়ার নেতৃত্বের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমরা (বাশার আল— ) আসাদকে আহ্বান জানিয়েছিলাম। বলেছিলাম, আসুন, সিরিয়ার ভবিষ্যৎ একসঙ্গে নির্ধারণ করি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা ইতিবাচক সাড়া পাইনি।’

লেবানন প্রসঙ্গে এরদোয়ান দেশটির কঠিন পরিস্থিতি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘লেবানন অত্যন্ত কঠিন অবস্থার মধ্যে রয়েছে। সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেছে। সহায়তার জন্য আবেদন আসছে। বিশ্ব যখন নীরব, আমরা সহায়তা চালিয়ে যাব।’ লেবাননে ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে এবং সংকটে আক্রান্ত দেশটির পাশে থাকার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট।

এর ঠিক আগে সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, হামা প্রদেশের উত্তর ও দক্ষিণ অঞ্চলে সন্ত্রাসী বাহিনীর যানবাহন ও জড়ো হওয়া স্থানগুলোতে সমন্বিত আর্টিলারি, ক্ষেপণাস্ত্র এবং আকাশ হামলা চালানো হয়েছে। এসব হামলায় রাশিয়ার বিমান সহায়তা ছিল। মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে যে, এই হামলায় বহু সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে।

এদিকে, বিদ্রোহী বাহিনী দক্ষিণ সিরিয়ার পুরো অঞ্চলেরই নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বলে জানিয়েছে লন্ডনভিত্তিক অধিকার গোষ্ঠী সিরিয়ার অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচআর)। এই অঞ্চল থেকেই ২০১১ সালে আরব বসন্তের সময় প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ বিরোধী আন্দোলনের শুরু হয়েছিল।

এসওএইচআর জানিয়েছে, স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সহিংস লড়াই শেষে অনেক সামরিক ঘাঁটি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। রয়টার্স বার্তা সংস্থার মতে, বিদ্রোহী সূত্রগুলো জানিয়েছে, তারা সিরিয়ান সেনাবাহিনীকে পিছু হটতে দিতে এবং সামরিক কর্মকর্তাদের রাজধানী দামেস্কে নিরাপদে সরে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে একটি চুক্তি করেছে।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, শুক্রবার পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলের বিদ্রোহীরা দেরা অঞ্চলের ৯০ শতাংশেরও বেশি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে এবং কেবল সানামাইন অঞ্চল এখনো সরকারি বাহিনীর অধীনে আছে।

দেরা শহর কৌশলগত ও প্রতীকী দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। এটি একটি প্রাদেশিক রাজধানী এবং জর্ডান সীমান্তের প্রধান ক্রসিং পয়েন্টগুলোর নিকটবর্তী। ২০১১ সালে এখানেই গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল, যা সিরিয়ার চলমান গৃহযুদ্ধের সূচনা করে। এই যুদ্ধে ইতিমধ্যে পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত